নারীর তিনটি ভূমিকা (৩য় কিস্তি)

লিলবর আল-বারাদী 971 বার পঠিত

পর্ব ১। পর্ব ২। 

৯. সন্তানের দো‘আ পিতা-মাতার নাজাতের অসীলা :

আল্লাহর ইবাদত যেমন বান্দার উপর অপরিহার্য, পিতা-মাতার সেবাও তেমনি সন্তানের উপর অপরিহার্য। পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার ও দো‘আ করার জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا- وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُلْ رَبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا - رَبُّكُمْ أَعْلَمُ بِمَا فِي نُفُوسِكُمْ إِنْ تَكُونُوا صَالِحِينَ فَإِنَّهُ كَانَ لِلْأَوَّابِينَ غَفُورًا ‘আর তোমার প্রতিপালক আদেশ করেছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারু উপাসনা করো না এবং তোমরা পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণ করো। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়ে যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হন, তাহ’লে তুমি তাদের প্রতি উহ্ শব্দটিও উচ্চারণ করো না এবং তাদেরকে ধমক দিয়ো না। তুমি তাদের সাথে নম্রভাবে কথা বল। আর তাদের প্রতি মমতাবশে নম্রতার পক্ষপুট অবনমিত কর এবং বল, হে আমার প্রতিপালক! তুমি তাদের প্রতি দয়া কর যেমন তারা আমাকে শৈশবে দয়াপরবশে লালন-পালন করেছিলেন। তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের অন্তরে যা আছে তা ভালভাবেই জানেন। যদি তোমরা সৎকর্ম পরায়ণ হও, তবে তিনি তওবাকারীদের জন্য ক্ষমাশীল’ (ইসরা ১৭/২৩-২৫)। অন্যত্র বলেন,أَنِ اشْكُرْ لِي وَلِوَالِدَيْكَ إِلَيَّ الْمَصِيرُ ‘অতএব তুমি আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। (মনে রেখ, তোমার) প্রত্যাবর্তন আমার কাছেই’ (লোকমান ৩১/১৪)

পিতা-মাতা জন্য দো‘আ ছালাতের ভেতরে ও বাহিরে পাঠ করা প্রত্যেক সন্তানের জন্য ওয়াজিব। মানুষ মারা গেলে তিনটি আমল ব্যতীত সকল আমল বন্ধ হয়ে যায়। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِذَا مَاتَ الإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلاَّ مِنْ ثَلاَثَةٍ إِلاَّ مِنْ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ. ‘যখন মানুষ মৃত্যুবরণ করে তখন তার আমল বন্ধ হয়ে যায়, তিনটি আমল ব্যতিত। ঐ তিনটি আমল হ’ল প্রবাহমান দান-ছাদাক্বা, এমন ইলম যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় এবং এমন নেক সন্তান যে তার জন্য দো‘আ করে’।[1]

পিতা-মাতা জীবিত থাকা অবস্থায় তাদের সাথে সদ্ব্যবহার যেমন করা যায়, অনুরূপ তাদের মৃত্যুর পরেও তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করা সম্ভব। আবূ উসাইদ (রাঃ) বলেন, আমরা নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। এ সময় বনু সালমা গোত্রের এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা-মাতার মৃত্যুর পর তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করার কোন অবকাশ আছে কি? রাসূল (ছাঃ) বললেন, نَعَم الصَّلاَةُ عَلَيْهِمَا وَالاِسْتِغْفَارُ لَهُمَا وَإِنْفَاذُ عَهْدِهِمَا مِنْ بَعْدِهِمَا وَصِلَةُ الرَّحِمِ الَّتِى لاَ تُوصَلُ إِلاَّ بِهِمَا وَإِكْرَامُ صَدِيقِهِمَا. ‘হ্যাঁ (চারটি উপায় আছে)। (১) তাদের জন্য দো‘আ করা, (২) তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা, (৩) তাদের প্রতিশ্রুতিসমূহ পূর্ণ করা এবং (৪) তাদের বন্ধু-বান্ধবদের সম্মান করা ও তাদের আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদ্ব্যবহার করা, যারা তাদের মাধ্যমে তোমার আত্মীয়’।[2] অন্যত্র এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন,إِنَّ مِنْ أَبَرِّ الْبِرِّ صِلَةَ الرَّجُلِ أَهْلَ وُدِّ أَبِيهِ بَعْدَ أَنْ يُوَلِّىَ. ‘সবচেয়ে বড় সদ্ব্যবহার হ’ল পিতার অবর্তমানে তার বন্ধুদের সাথে সদ্ব্যবহার করা’।[3]

পিতা-মাতার মৃত্যুর পরে সন্তানের দো‘আ ও মাগফিরাত কামনা করার ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাদের ক্ষমা করেন এবং জান্নাতের মর্যাদা উন্নীত করেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ لَيَرْفَعُ الدَّرَجَةَ لِلْعَبْدِ الصَّالِحِ فِى الْجَنَّةِ فَيَقُولُ يَارَبِّ أَنَّى لِى هَذِهِ فَيَقُولُ بِاسْتِغْفَارِ وَلَدِكَ لَكَ ‘আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে তাঁর কোন নেক বান্দার মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন। এ অবস্থা দেখে সে (নেক বান্দা) বলবে, হে আমার রব! আমার এ মর্যাদা কিভাবে বৃদ্ধি হ’ল? তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তোমার সন্তান-সন্ততি তোমার জন্য মাগফিরাত কামনা করার কারণে’।[4] অন্যত্র তিনি বলেন, تُرْفَعُ لِلْمَيِتِ بَعْدَ مَوْتِهِ دَرَجَتُهُ، فَيَقُولُ أَيْ رَبِّ، أَيُّ شَيْءٍ هَذَا؟ فَيُقَالُ وَلَدُكَ اسْتَغْفَرَ لَكَ ‘মানুষের মৃত্যুর পর যখন তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়, তখন সে বলে, হে প্রভু! এটা কি জিনিস? তাকে বলা হয়, তোমার সন্তান তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছে’।[5]

স্ত্রী হিসাবে নারী

আদর্শ স্ত্রীর গুণাবলী :

আদর্শবতী মুমিনা মুসলিমা স্ত্রী হবে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পালনে সর্বদা প্রস্ত্তত। অন্তরে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল প্রীতি থাকবে একনিষ্ঠতার সাথে। দ্বীন অনুসরণে হবে দৃঢ় ও নির্ভিক। আদর্শ নারীর বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তারা হবে মুসলিমা, মুমিনা, অনুগতা, সত্যবাদিনী, ধৈর্যশীলা, বিনীতা, দানশীলা, ছিয়াম পালনকারীনী, লজ্জাস্থান হিফাযাতকারীনী এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণকারীনী। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, إِنَّ الْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ وَالْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَالْقَانِتِينَ وَالْقَانِتَاتِ وَالصَّادِقِينَ وَالصَّادِقَاتِ وَالصَّابِرِينَ وَالصَّابِرَاتِ وَالْخَاشِعِينَ وَالْخَاشِعَاتِ وَالْمُتَصَدِّقِينَ وَالْمُتَصَدِّقَاتِ وَالصَّائِمِينَ وَالصَّائِمَاتِ وَالْحَافِظِينَ فُرُوجَهُمْ وَالْحَافِظَاتِ وَالذَّاكِرِينَ اللهَ كَثِيراً وَالذَّاكِرَاتِ أَعَدَّ اللهُ لَهُمْ مَغْفِرَةً وَأَجْراً عَظِيماً - وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللهُ وَرَسُولُهُ أَمْراً أَنْ يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلالاً مُبِيناً ‘অবশ্যই মুসলিম পুরুষ ও মুসলিমা নারী, মু’মিন পুরুষ ও মু’মিনা নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগতা নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদিনী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীলা নারী, বিনীত পুরুষ ও বিনীতা নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীলা নারী, ছিয়াম পালনকারী পুরুষ ও ছিয়াম পালনকারীনী নারী, লজ্জাস্থান হিফাযাতকারী পুরুষ ও লজ্জাস্থান হিফাযাতকারীনী নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও অধিক স্মরণকারীনী নারী - এদের জন্য আল্লাহ প্রস্ত্তত রেখেছেন ক্ষমা ও মহা প্রতিদান। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ে নির্দেশ দিলে কোন মু’মিন পুরুষ কিংবা মু’মিনা নারীর সে বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে না। কেহ আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে অমান্য করলে সে তো স্পষ্টই পথভ্রষ্ট’ (আহযাব ৩৩/৩৫-৩৬)। আবার নারী যখন স্বামীর ঘরে স্ত্রী রূপে প্রবেশ করলে যে সমস্ত গুণাবলী অর্জন করা আবশ্যক তা নিমেণ তুলে ধরা হ’ল-

১. আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি আনুগত্যশীলা :

আদর্শবতী স্ত্রী তারাই, যারা প্রথমতঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের যথাযথ অনুগত্য করে এবং আদেশ-নিষেধ পালনে সর্বদা সচেষ্ট থাকে। অতঃপর দ্বিতীয়তঃ তারা স্বামীর প্রতি সারাক্ষণ অনুগত থাকতে বাধ্য থাকে। কোন প্রকার ওযর আপত্তি প্রকাশ করে না। যা শারঈ বিধান মতে তা পালনে যথাযথ সচেষ্ট থাকে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لاَ تُقَدِّمُوْا بَيْنَ يَدَيِ اللهِ وَرَسُوْلِهِ وَاتَّقُوا اللهَ إِنَّ اللهَ سَمِيْعٌ عَلِيْمٌ، يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لاَ تَرْفَعُوْا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সামনে অগ্রণী হয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ। হে ঈমানদারগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উচুঁ করো না’ (হুজুরাত ৪৯/১-২)

সর্বপ্রথম আল্লাহ ও তাঁর বিধান কুরআন এবং তারপর রাসূল (ছাঃ) ও তাঁর সুন্নাহর আনুগত্য করতে হবে। অপরদিকে রাসূলের আনুগত্য ব্যতীত আল্লাহর সান্নিধ্য অসম্ভব। আল্লাহ বিধানদাতা ও রাসূল বিধানের ব্যাখ্যাদাতা ও পথ প্রদর্শক। তাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য মুমিন ব্যক্তির প্রধান প্রধান গুণাবলীর মধ্যে অন্যতম। মহান আল্লাহ বলেন, مَنْ يُطِعِ الرَّسُوْلَ فَقَدْ أَطَاعَ اللهَ ‘যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করে, সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল’ (নিসা ৪/৮০)। তিনি আরো বলেন, وَأَطِيْعُوا اللهَ وَالرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ ‘আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করো, যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও’ (আলে ইমরান ৩/১৩২)

রাসূলের আনুগত্য হ’ল আল্লাহর আনুগত্য। এ সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, فَمَنْ أَطَاعَ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَقَدْ أَطَاعَ اللهَ، وَمَنْ عَصَى مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَقَدْ عَصَى اللهَ ‘যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর আনুগত্য করল, সে যেন আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর অবাধ্যতা করল, সে যেন আল্লাহরই অবাধ্যতা করল’।[6] অন্যত্র তিনি বলেন, فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِىْ فَلَيْسَ مِنِّى ‘যে ব্যক্তি আমার সুন্নাত হ’তে মুখ ফিরিয়ে নিল, সে আমার দলভুক্ত নয়’।[7]

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا أَطِيْعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَلاَ تُبْطِلُوْا أَعْمَالَكُمْ ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো এবং স্বীয় আমল বিনষ্ট করো না’ (মুহাম্মাদ ৪৭/৩৩)। তিনি আরো বলেন, قُلْ هَلْ نُنَبِّئُكُمْ بِالْأَخْسَرِيْنَ أَعْمَالاً، الَّذِيْنَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُوْنَ أَنَّهُمْ يُحْسِنُوْنَ صُنْعًا ‘তুমি বলো, আমি কি তোমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের সম্পর্কে খবর দিব? দুনিয়ার জীবনে যাদের সমস্ত আমল বরবাদ হয়েছে। অথচ তারা ভাবে যে, তারা সুন্দর আমল করে যাচ্ছে’ (কাহ্ফ ১৮/১০৩-১০৪)

প্রত্যেক মানুষের আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করার সাথে সাথে আমীর বা নেতার আনুগত্য করতে হবে। হোক তা রাষ্ট্র বা সমাজ কিংবা পরিবারের। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللَّهِ وَالرَّسُولِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا ‘হে ইমানদারগণ! মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো ও রাসূলের আনুগত্য করো এবং তোমাদের মধ্যকার আদেশদাতাগণের। অতঃপর তোমাদের মধ্যে কোন বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে আল্লাহ ও রাসূলের দিকে সেটাকে ফিরিয়ে দাও। যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস করে থাকো। এটাই কল্যাণকর ও পরিণামে প্রকৃষ্টতর’ (আন-নিসা ৪/৫৯)

দ্বীনদার নারী আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য যথাযথ করে এবং বলে আমরা যা শুনলাম তা মেনে নিলাম। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِينَ إِذَا دُعُوا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَنْ يَقُولُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ. وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَخْشَ اللَّهَ وَيَتَّقْهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ ‘মুমিনদের বক্তব্য কেবল এ কথাই যখন তাদের মধ্যে ফায়সালা করার জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে তাদেরকে আহবান করা হয়, তখন তারা বলে, আমরা শুনলাম ও আদেশ মান্য করলাম। মূলতঃ তারাই সফলকাম এবং যারা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর শাস্তি থেকে বেঁচে থাকে, তারাই কৃতকার্য’ (আন-নূর ২৪/৫১-৫২)

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্যকারীনী গোমরাহীর মধ্যে নিপতিত হবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُبِينًا. ‘আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল কোনো কাজের আদেশ করলে কোনো ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করার অধিকার নেই। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের বিরোধীতা করবে, সে সুস্পষ্ট গোমরাহীতে পতিত হবে’(আহযাব হা/৩৬)। অন্যত্র তিনি বলেন, وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيرًا ‘হিদায়াতের পথ সুস্পষ্ট হওয়ার পর যে কেউ রাসূলের বিরোধীতা করবে এবং ঈমানদারদের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলবে, আমি তাকে ঐ দিকেই ফেরাব যে দিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা কতই না নিকৃষ্ট গন্তব্যস্থান’ (নিসা ৪/১১৫)। মেয়েদের বিবাহের পরে স্বামী হ’ল পরিবারের প্রধান নেতা। মেয়েদের ক্ষেত্রে সর্বাবস্থায় আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং পরিবারের নেতা হিসাবে স্বামীর আনুগত্য করতে হবে। স্বামীর আদেশ শ্রবণের ক্ষেত্রেও এরা বলে যা আদেশ প্রাপ্ত হলাম তা মেনে নিলাম এবং তা পালনে যত্নবান হয়, যদি তা কুরআন সুন্নাহ বিরোধী না হয়। এর পরে পিতা-মাতার আনুগত্য করা আবশ্যক।

২. অধিক তাওবাকারী ও বিনয়ী :

তারা এমন আদর্শবতী স্ত্রী হবে, যারা সবসময়ই আল্লাহর কাছে নিজের গুনাহ ও অপরাধের জন্য ক্ষমা চায়। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেন, إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ. ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাহকারীদেরকে ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরকেও ভালবাসেন’ (বাক্বারাহ ২/২২২)। অন্যত্র বলেন, وَهُوَ الَّذِيْ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَعْفُو عَنِ السَّيِّئَاتِ- ‘তিনিই তাঁর বান্দাদের তওবা কবূল করেন ও পাপ মোচন করেন’ (শূরা ৪২/২৫)। তিনি আরো বলেন, أَفَلاَ يَتُوْبُوْنَ إِلَى اللهِ وَيَسْتَغْفِرُوْنَهُ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَحِيْمٌ ‘এরপরেও কি তারা আল্লাহর দিকে ফিরে তওবা করবে না ও তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে না? অথচ আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (মায়েদাহ ৫/৭৪)

প্রতিদিন প্রত্যেক মুমিন বান্দার ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিৎ। আগার আল মুযানী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, يَا أَيُّهَا النَّاسُ تُوبُوا إِلَى رَبِّكُمْ فَإِنِّى أَتُوبُ إِلَيْهِ فِى الْيَوْمِ مِائَةَ مَرَّةٍ. ‘হে মানুষ! আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। আমিও দৈনিক একশবার তাওবা করি’।[8] তিনি আরো বলেন, .فَإِنَّ الْعَبْدَ إِذَا اعْتَرَفَ ثُمَّ تَابَ تَابَ اللهُ عَلَيْهِ ‘যখন বান্দা গোনাহ স্বীকার করে এবং অনুতপ্ত হয়ে তওবা করে ক্ষমা চায় আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন এবং তাকে ক্ষমা করে দেন’।[9] অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) বলেন,إنَّ الله تَعَالَى يَبْسُطُ يَدَهُ بِاللَّيْلِ لِيَتُوْبَ مُسِيْئ النَّهَارِ، ويَبْسُطُ يَدَهُ بِالنَّهَارِ لِيَتُوْبَ مُسِيْئ اللَّيْلِ، حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا. ‘আল্লাহ তা‘আলা রাতে স্বীয় হাত প্রসারিত করেন, যাতে দিনের গোনাহগার যারা তারা তওবা করে। আবার দিনের বেলায় হাত প্রসারিত করেন যাতে রাতের গোনাহগার ব্যক্তিরা তওবা করে। এভাবে তিনি ক্ষমার হাত প্রসারিত করতে থাকবেন পশ্চিম দিকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত’।[10]

অধিক তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনাকারীকে আল্লাহ পসন্দ করেন এবং ভালবাসেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, وَاسْتَغْفِرُوا اللهَ إِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَحِيْمٌ ‘আর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (বাক্বারাহ ২/১৯৯; মুযযাম্মিল ৭৩/২০)। তিনি আরো বলেন,وَمَنْ يَّعْمَلْ سُوْءًا أَوْ يَظْلِمْ نَفْسَهُ ثُمَّ يَسْتَغْفِرِ اللهَ يَجِدِ اللهَ غَفُوْرًا رَحِيْمًا. ‘যে কেউ দুষ্কর্ম করে অথবা স্বীয় জীবনের প্রতি অবিচার করে, অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমাপ্রার্থী হয়, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল ও দয়ালু পাবে’ (নিসা ৪/১১০)। অন্যত্র বলেন, فَاعْلَمْ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَاللهُ يَعْلَمُ مُتَقَلَّبَكُمْ وَمَثْوَاكُمْ ‘জেনে রাখো, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। ক্ষমা প্রার্থনা করো, তোমার ক্রটির জন্যে এবং মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্যে। আল্লাহ তোমাদের গতিবিধি ও অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞাত’ (মুহাম্মাদ ৪৭/১৯)

দিনে ও রাতের অপরাধগুলো ক্ষমা করার জন্য আল্লাহ তাঁর বান্দাদের আহবান করেন। আবূ যর গিফারী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,يَا عِبَادِيْ إِنَّكُمْ تُخْطِئُوْنَ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَأَنَا أَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِيْعًا فَاسْتَغْفِرُوْنِيْ أَغْفِرْ لَكُمْ. ‘হে আমার বান্দারা! তোমরা অপরাধ করে থাক রাতে-দিনে। আমি সমস্ত অপরাধ মাফ করে দেই। সুতরাং তোমরা আমার নিকট ক্ষমা চাও, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিব’।[11] অন্যত্র আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَنْ يَدْعُونِيْ فَأَسْتَجِيْبَ لَهُ، مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ. ‘কে আছে আমাকে আহবান করবে? আমি তার ডাকে সাড়া দিবো। কে আছে আমার কাছে চাইবে? আমি তাকে তা দিবো। আমার কাছে কে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করে দিবো’।[12] 

তাছাড়া নিজের দুর্বলতা ও পদস্খলনের অনুভূতি সবসময় দংশন করে এবং সেজন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়। এ ধরনের স্ত্রীর মধ্যে কোন সময়ই অহংকার, গৌরব, অহমিকতা ও আম্ভরিতার ভাবধারা জাগতে পারে না। এমন স্ত্রী স্বভাবতই নম্র প্রকৃতির এবং বিনীত মনোভাবের হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ادْفَعْ بِالَّتِيْ هِيَ أَحْسَنُ السَّيِّئَةَ نَحْنُ أَعْلَمُ بِمَا يَصِفُوْنَ ‘মন্দের মুকাবিলা করো যা উত্তম তা দ্বারা; তারা যা বলে আমরা সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত’ (মুমিনূন ২৩/৯৬)

মহান আল্লাহ নরম হৃদয় ও আল্লাহর উপর ভরসাকারীকে ভালবাসেন। তিনি বলেন, فَبِمَا رَحْمَةٍ مِنَ اللَّهِ لِنْتَ لَهُمْ وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِينَ ‘আল্লাহর অনুগ্রহে তুমি তাদের প্রতি কোমল হৃদয় হয়েছিলে; যদি রূঢ় ও কঠোরচিত্ত হ’তে, তবে তারা তোমার আশপাশ হ’তে দূরে সরে পড়ত। সুতরাং তুমি তাদেরকে ক্ষমা করো এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর। আর কাজকর্মে তাদের সাথে পরামর্শ কর। অতঃপর কোন সংকল্প করলে আল্লাহর উপর ভরসা কর। ভরসাকারীদের আল্লাহ ভালবাসেন’ (আলে ইমরান ৩/১৫৯)। অন্যত্র বলেন, فَإِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَلَهُ أَسْلِمُوا وَبَشِّرِ الْمُخْبِتِينَ ‘তোমাদের সত্য মা’বুদ একজন মাত্র। সুতরাং তোমরা তাঁরই জন্য অনুগত হও। আপনি বিনয়ীদেরকে সুসংবাদ প্রদান করুন’ (হজ্জ ২২/৩৪)

কঠোরতা পরিহার করে বিনয়ী হ’তে হবে এবং বিভেদ সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,يَسِّرُوْا وَلاَ تُعَسِّرُوْا،وَسَكِّنُوْا وَلاَ تُنَفِّرُوْا ‘তোমরা নম্র হও, কঠোর হয়ো না। শান্তি দান করো, বিদ্বেষ সৃষ্টি করো না’।[13] বিনয় ও নম্রতা মুমিনের গুণাবলীর অন্যতম মর্মে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, الْمُؤْمِنُ غِرٌّ كَرِيْمٌ وَالْفَاجِرُ خِبٌّ لَئِيْمٌ ‘মুমিন ব্যক্তি নম্র ও ভদ্র হয়। পক্ষান্তরে পাপী মানুষ ধূর্ত ও চরিত্রহীন হয়’।[14] অন্যত্র বলেন, وَمَا تَوَاضَعَ أَحَدٌ لِلَّهِ إِلاَّ رَفَعَهُ اللهُ ‘যে বান্দাহ আল্লাহর জন্য বিনীত হয়, আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন’।[15]

আল্লাহর ভালবাসার প্রতীক বিনম্রতা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, إن الله إذا أحب أهل بيت أدخل عليهم الرفق ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ যখন কোন গৃহবাসীকে ভালবাসেন, তখন তাদের মাঝে নম্রতা প্রবেশ করান’।[16] অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ما أعطي أهل بيت الرفق إلا نفعهم ولا منعوه إلا ضرهم ‘আল্লাহ কোন গৃহবাসীকে নম্রতা দান করে তাদেরকে উপকৃতই করেন। আর কারো নিকট থেকে তা উঠিয়ে নিলে তারা ক্ষতিগ্রস্থই হয়’।[17]

(চলবে)

 লেখক : যশপুর, তানোর, রাজশাহী


[1]. মুসলিম হা/১৬৩১; আহমাদ হা/৮৮৩১।

[2]. আবুদাউদ হা/৫১৪২; মিশকাত হা/৪৯৩৬; ইবনু হিববান হা/৪১৮: হাকেম হা/৭২৬০

[3]. মুসলিম হা/২৫৫২; মিশকাত হা/৪৯১৭; সদন ছহীহ।

[4]. ইবনু মাজাহ হা/৩৬৬০; মিশকাত হা/২৩৫৪; ছহীহাহ হা/১৫৯৮।

[5]. আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৩৬; সনদ হাসান।

[6]. বুখারী হা/৭২৮১; মিশকাত হা/১৪৪, ‘কুরআন-সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ।

[7]. বুখারী হা/৫০৬৩; মুসলিম হা/১৪০১; মিশকাত হা/১৪৫।

[8]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৩২৫ ‘ক্ষমা প্রার্থনা ও তওবা করা’ অনুচ্ছেদ-৪; আহমাদ হা/১৭৮৮০।

[9]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৩৩০।

[10]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৩২৯।

[11]. মুসলিম হা/২৫৭৭; মিশকাত হা/২৩২৬; ইবনে হিববান হা/৬১৯।

[12]. বুখারী হা/১১৪৫; আবূদাঊদ হা/১৩১৫; মিশকাত হা/১২২৩;।

[13]. বুখারী হা/৬১২৫; মুসলিম হা/১৭৩৪; আহমাদ হা/১২৩৫৫।

[14]. তিরমিযী হা/১৯৬৪; মিশকাত হা/৫০৮৫।

[15]. মুসলিম হা/২৫৮৮।

[16]. ছহীহুল জামি‘ হা/৩০৩, ১৭০৪; সিলসিলা ছহীহাহ ২/৫২৩।

[17]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/৯৪২।



বিষয়সমূহ: নারী অধিকার নারী
আরও