একজন আদর্শবান ব্যক্তির গুণাবলী
(৩য় কিস্তি)
(৯) আমানতদারী :
এ পর্যায়ে যে গুণটি নিয়ে আলোচনা করা হবে তা হ’ল আমানতদারী। এটি এমন একটি স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে প্রত্যেকটি মানুষকে এর হক আদায় করতেই হবে। অন্যথায় ক্বিয়ামতের দিন জাহান্নামের বর্ণনাহীন আযাব ভোগ করতে হবে। এমন কি শহীদদেরকেও ছাড় দেয়া হবে না। মহান আল্লাহ বলেন, إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تُؤَدُّوا الْأَمَانَاتِ إِلَى أَهْلِهَا ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা আমানত সমূহকে তার যথার্থ হকদারগণের নিকট পৌঁছে দাও’ (নিসা ৪/৫৮)।
মহান আল্লাহ অত্র আয়াতের মাধ্যমে গচ্ছিত বিষয় ও ওর মালিককে ফেরত দেয়ার আদেশ দিচ্ছেন। এর মাধ্যমে আল্লাহর হক ও বান্দার হক উভয়টিই রয়েছে। আল্লাহর হক বলতে তাঁর যাবতীয় বিধি-নিষেধ পালন করা বুঝায়। আর বান্দার হক বলতে গচ্ছিত রাখা দ্রব্য এবং তার অধিকার বুঝায়। সুতরাং যে ব্যক্তি হক আদায় করবে না তার জন্য ক্বিয়ামতের দিন তাকে ধরা হবে। সাক্ষ্য দানের কারণে সমস্ত পাপ মুছে যায় কিন্তু আমানত মুছে যায় না। আমানত খিয়ানতকারীকে বলা হবে তোমার আমানত পূরণ কর। পূরণ করতে না পারলে জাহান্নামের তলদেশে তাকে নিক্ষেপ করা হবে। অতঃপর সে ঐ শাস্তিতেই জড়িত থাকবে।
মহান আল্লাহ এরশাদ করেন,إِنَّا عَرَضْنَا الْأَمَانَةَ عَلَى السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَالْجِبَالِ فَأَبَيْنَ أَنْ يَحْمِلْنَهَا وَأَشْفَقْنَ مِنْهَا وَحَمَلَهَا الْإِنْسَانُ إِنَّهُ كَانَ ظَلُومًا جَهُولًا ‘আমরা আকাশ, পৃথিবী ও পর্বতমালার নিকট এই আমানত পেশ করেছিলাম। অতঃপর তারা তা বহন করতে অস্বীকার করল এবং এ থেকে শংকিত হ’ল। কিন্তু মানুষ তা বহন করল। বস্ত্ততঃ সে অতিশয় যালেম ও অজ্ঞ’ (আহযাব ৩৩/৭২)।
ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, এখানে আমানত অর্থ আনুগত্য বুঝানো হয়েছে। এটা আদম (আঃ) এর উপর পেশ করার পূর্বে আসমান, যমীন ও পাহাড়ের উপর পেশ করা হয়। কিন্তু তারা সবাই এই বিরাট দায়িত্ব পালনে অক্ষমতা প্রকাশ করে। তখন মহান আল্লাহ ওটা আদমের (আঃ) -এর সামনে পেশ করে বললেন, ওরা সবাই তো অস্বীকার করলো, এখন তুমি কি বলছ? আদম (আঃ) বললেন, ব্যাপার কি? আল্লাহ উত্তরে বললেন, এতে যা রয়েছে তা যদি তুমি মেনে চল তবে তুমি পুণ্যলাভ করবে ও ক্ষমাপ্রাপ্ত হবে। আর যদি অমান্য কর তবে শাস্তি পাবে। তখন আদম (আঃ) বললেন, আমি এ দায়িত্ব পালনে প্রস্ত্তত আছি।
উবাই (রাঃ) বলেন, নারীদের সতীত্ব রক্ষা ও আমানত। কাতাদা (রাঃ) বলেন, ‘ফারায়েয, হুদুদ ইত্যাদি সবই আল্লাহর আমানত’। যায়েদ বিন আসলাম বলেন, ‘তিনটি জিনিস আল্লাহর আমানত। তা হ’ল অপবিত্রতার গোসল, ছিয়াম ও ছালাত’। ভাবার্থ এই যে এগুলি সবই আল্লাহর আমানতের অন্তর্ভূক্ত। সমস্ত আদেশ পালন ও সমস্ত নিষিদ্ধ জিনিস হ’তে বিরত থাকা মানুষের দায়িত্ব। যে ঐ দায়িত্ব পালন করবে সে ছওয়াব পাবে এবং যে পালন করবে না সে পাপী হবে এবং শাস্তি পাবে। ইবনু আববাস (রাঃ) আরো বলেন, প্রায় আসরের সময় মানুষ এই আমানত উঠিয়ে নিয়েছিল এবং মাগরিবের পূর্বেই ভুল প্রকাশ পেয়েছিল।
মানুষের ৪টি জিনিস খুবই যরূরী আর তা হলো আমানত রক্ষা করা, সত্য কথা বলা, চরিত্র ভালো হওয়া এবং খাদ্য হালাল ও পবিত্র হওয়া।
আমানত আদায়ের ব্যাপারে হাদীছে নববীতে এসেছে,عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلاَثٌ إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ، وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, মুনাফিকের চিহ্ন তিনটি; ১. কথা বললে মিথ্যা বলে। ২. ওয়াদা করলে ভঙ্গ করে ৩. তার কাছে আমানত রাখা হলে খেয়ানত করে’।[1]
মুসলিমের অন্য বর্ণনায় আছে, যদিও সে ছিয়াম পালন করে ছালাত আদায় করে এবং ধারণা করে সে মুসলিম’।[2]عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَتُؤَدُّنَّ الْحُقُوقَ إِلَى أَهْلِهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يُقَادَ لِلشَّاةِ الْجَلْحَاءِ مِنَ الشَّاةِ الْقَرْنَاءِ আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ক্বিয়ামতের দিন প্রত্যেক হকদারের হক অবশ্যই আদায় করা হবে। এমনকি শিংবিহীন ছাগলকে শিংযুক্ত ছাগলের নিকট থেকে বদলা দেওয়া হবে’।[3]
(১০) স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার করা :
একজন আদর্শ মানুষ হ’তে হলে অবশ্যই স্ত্রী বা সহধর্মীনীর সাথে উত্তম আচরণ করতে হবে। কারণ একজন পুরুষ বাহিরে যত ভালই হোক যদি সে তার স্ত্রীর নিকট ভাল না হয় তবে তার এই ভাল মানুষীর কোন মূল্যই নেই। কেননা একজন পুরুষের চরিত্র বা ব্যবহার কেমন তা তার স্ত্রীই অধিক জানে। সুতরাং আমাদের উচিৎ স্ত্রীদের সাথে উত্তম ব্যবহার করা।
এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ ‘তোমরা স্ত্রীদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস কর’ (নিসা ৪/১৯)। অত্র আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন যে তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সদ্ভাবে অবস্থান কর, তাদের সাথে নম্র ব্যবহার কর। সাধ্যানুযায়ী নিজের অবস্থাও ভালো রাখ। তোমরা যেমন চাও যে তোমাদের স্ত্রীরা উত্তম সাজে সুসজ্জিতা থাকুক, তোমরাও তাদের মনস্ত্তষ্টির জন্য নিজেকে সুন্দর সাজে সজ্জিত রাখ। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ ‘যেমন তাদের উপর স্বামীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার রয়েছে’ (বাক্বারাহ ২/২২৮)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) স্বীয় স্ত্রীদের সাথে খুবই উত্তম আচরণ করতেন। তাদের সাথে হাসি মুখে কথা বলতেন। তাদেরকে সদা খুশী রাখতেন, মনোমুগ্ধকর কথা বলতেন, তাদের অন্তর তিনি স্বীয় খুশীর মধ্যে রাখতেন। তাদের জন্য উত্তম খাওয়া পরার ব্যবস্থা করতেন। প্রশান্ত মনে তাদের উপর খরচ করতেন। মাঝে মাঝে তিনি এমন কথাও বলতেন যে তারা হেসে উঠতেন। এমনও ঘটেছে যে তিনি আয়েশা (রাঃ)-এর সাথে দৌড় প্রতিযোগিতা করেছেন।
যে স্ত্রীর ঘরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পালা পড়ত সেখানে সকল স্ত্রীগণ একত্রিত হয়ে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতেন। আলাপ-আলোচনা হত এবং মাঝে মাঝে এমনও হত যে রাসূল (ছাঃ) তাদের সাথে রাতের খাবার খেতেন। অতঃপর তারা নিজ নিজ ঘরে চলে যেতেন এবং তিনি (ছাঃ) সেখানে রাত্রি যাপন করতেন।
মোট কথা তিনি স্ত্রীদেরকে অত্যন্ত ভালবাসার সাথে রাখতেন। সুতরাং মুসলমানদেরও স্ত্রীদের সাথে প্রেম-প্রীতি বজায় রাখা যরূরী।
স্ত্রীদের সাথে সদাচরণের হাদীছ, عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ، فَإِنَّ الْمَرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلَعٍ، وَإِنَّ أَعْوَجَ شَىْءٍ فِى الضِّلَعِ أَعْلاَهُ، فَإِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهُ كَسَرْتَهُ، وَإِنْ تَرَكْتَهُ لَمْ يَزَلْ أَعْوَجَ، فَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা স্ত্রীদের জন্য মঙ্গলকামী হও। কারণ নারীকে পাঁজরের (বাঁকা) হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর পাঁজরের হাড়ের সবচেয়ে বাঁকা হ’ল তার উপরের অংশ। যদি তুমি এটাকে সোজা করতে যাও তবে ভেঙ্গে ফেলবে। আর যদি তাকে ছেড়ে দাও তাহলে তো বাঁকাই থাকবে। তাই তোমরা নারীদের জন্য মঙ্গলকামী হও’।[4]
বুখারীর অপর বর্ণনায় রাসূল (ছাঃ), الْمَرْأَةُ كَالضِّلَعِ، إِنْ أَقَمْتَهَا كَسَرْتَهَا، وَإِنِ اسْتَمْتَعْتَ بِهَا اسْتَمْتَعْتَ بِهَا وَفِيهَا عِوَجٌ ‘মহিলা পাঁজরের হাড়ের মত। যদি তুমি তাকে সোজা করতে চাও তাহলে ভেঙ্গে ফেলবে। আর যদি তুমি তার দ্বারা উপকৃত হতে চাও তবে তার এ বাঁকা অবস্থাতেই হতে হবে’।[5]
মুসলিমের অন্য বর্ণনায় আছে, إِنَّ الْمَرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلَعٍ لَنْ تَسْتَقِيمَ لَكَ عَلَى طَرِيقَةٍ فَإِنِ اسْتَمْتَعْتَ بِهَا اسْتَمْتَعْتَ بِهَا وَبِهَا عِوَجٌ وَإِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهَا كَسَرْتَهَا وَكَسْرُهَا طَلاَقُهَا ‘মহিলাকে পাঁজরের বাঁকা হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। সে কখনই একভাবে তোমার জন্য সোজা থাকবে না। অতএব তুমি যদি তার থেকে উপকৃত হতে চাও তাহলে তার এই বাঁকা অবস্থাতেই হতে হবে। আর যদি তুমি তা সোজা করতে চাও তাহলে ভেঙ্গে ফেলবে। আর তাকে ভেঙ্গে ফেলা হ’ল তালাক্ব দেওয়া’।[6]
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ يَفْرَكْ مُؤْمِنٌ مُؤْمِنَةً إِنْ كَرِهَ مِنْهَا خُلُقًا رَضِىَ مِنْهَا آخَرَ আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কোন মুমিন পুরুষ যেন কোন মুমিনা নারী (স্ত্রীকে) ঘৃণা না করে। যদি সে তার একটি আচরণে অসন্তুষ্ট হয় তবে অন্য আচরণে সন্তুষ্ট হবে’।[7]
عَنْ حَكِيمِ بْنِ مُعَاوِيَةَ الْقُشَيْرِىِّ عَنْ أَبِيهِ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا حَقُّ زَوْجَةِ أَحَدِنَا عَلَيْهِ قَالَ أَنْ تُطْعِمَهَا إِذَا طَعِمْتَ وَتَكْسُوَهَا إِذَا اكْتَسَيْتَ أَوِ اكْتَسَبْتَ وَلاَ تَضْرِبِ الْوَجْهَ وَلاَ تُقَبِّحْ وَلاَ تَهْجُرْ إِلاَّ فِى الْبَيْتِ মু‘আবিয়া বিন হাইছান (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) আমাদের কারো স্ত্রীর অধিকার স্বামীর উপর কতটুকু? তিনি বললেন, তুমি খেলে তাকে খাওয়াবে এবং তুমি পরলে তাকে পরাবে। তার চেহারায় মারবে না, তাকে কুৎসিত বলবেনা এবং তার থেকে পৃথক থাকলে বাড়ীর ভিতরই থাকবে (বিছানা পৃথক থাকবে কিন্তু রুম আলাদা নয়)।[8]
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَكْمَلُ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا وَخِيَارُكُمْ خِيَارُكُمْ لِنِسَائِهِمْ خُلُقًا আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, মুমিনদের মধ্যে সবচেয়ে পূর্ণ মুমিন ঐ ব্যক্তি যে চরিত্রে সবার চেয়ে সুন্দর, আর তাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে নিজের স্ত্রীর জন্য সর্বোত্তম’।[9]
(১১)
পরিবার পরিজনের ভরণ পোষণ করা :
আদর্শ মানুষ হওয়ার আর একটি গুণ হল পুরুষরা তাদের পরিবারের ভরণ পোষণ করবে উত্তমভাবে। কেননা পুরুষরা পরিবারের কর্তা। আর কর্তার কর্তব্য হল অধীনস্তদের সঠিকভাবে তত্ত্ববধান করা। এ ব্যাপারে মহা গ্রন্থ আল-কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে وَعَلَى الْمَوْلُودِ لَهُ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ ‘আর জন্মদাতা পিতার দায়িত্ব হ’ল ন্যায়সঙ্গতভাবে প্রসূতি মায়েদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করা’ (বাক্বারাহ ২/২৩৩)। অত্র আয়াতের মাধ্যমে বুঝা যায় যে, সন্তান ও তার মায়ের খরচ বহন করা পিতার উপর দায়িত্ব। সচ্ছল ব্যক্তি সচ্ছলতা অনুপাতে আর দরিদ্র ব্যক্তি দারিদ্রতা অনুপাতে খরচ করবে। আল্লাহ তা‘আলা কাউকে সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না।
মহান আল্লাহ বলেন, لِيُنْفِقْ ذُو سَعَةٍ مِنْ سَعَتِهِ وَمَنْ قُدِرَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ فَلْيُنْفِقْ مِمَّا آتَاهُ اللَّهُ لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا مَا آتَاهَا ‘তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যেখানে তোমরা বসবাস কর সেখানে তাদেরকেও বাস করতে দিও, তাদেরকে সঙ্কটে ফেলার জন্য কষ্ট দিয়ো না। আর তারা গর্ভবতী হলে তাদের সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত তাদের জন্য তোমরা ব্যয় কর; আর তারা তোমাদের জন্য সন্তানকে দুধ পান করালে তাদের পাওনা তাদেরকে দিয়ে দাও এবং (সন্তানের কল্যাণের জন্য) সংগতভাবে তোমাদের মাঝে পরস্পর পরামর্শ কর’ (তালাক্ব ৬৫/৭)। এ ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دِينَارٌ أَنْفَقْتَهُ فِى سَبِيلِ اللَّهِ وَدِينَارٌ أَنْفَقْتَهُ فِى رَقَبَةٍ وَدِينَارٌ تَصَدَّقْتَ بِهِ عَلَى مِسْكِينٍ وَدِينَارٌ أَنْفَقْتَهُ عَلَى أَهْلِكَ أَعْظَمُهَا أَجْرًا الَّذِى أَنْفَقْتَهُ عَلَى أَهْلِكَ আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, এক দিনার তুমি আল্লাহর পথে ব্যয় কর এক দিনার ক্রীতদাস মুক্তি করার কাজে ব্যয় কর, এক দিনার কোন মিসকীনকে দান কর এবং দীনার তুমি পরিবারের জন্য ব্যয় কর। এর মধ্যে ঐ দীনার বেশী নেকী রয়েছে যেটি তুমি পরিবারের জন্য ব্যয় করবে’।[10]
عَنْ ثَوْبَانَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَفْضَلُ دِينَارٍ يُنْفِقُهُ الرَّجُلُ دِينَارٌ يُنْفِقُهُ عَلَى عِيَالِهِ وَدِينَارٌ يُنْفِقُهُ الرَّجُلُ عَلَى دَابَّتِهِ فِى سَبِيلِ اللَّهِ وَدِينَارٌ يُنْفِقُهُ عَلَى أَصْحَابِهِ فِى سَبِيلِ اللَّهِ. قَالَ أَبُو قِلاَبَةَ وَبَدَأَ بِالْعِيَالِ ثُمَّ قَالَ أَبُو قِلاَبَةَ وَأَىُّ رَجُلٍ أَعْظَمُ أَجْرًا مِنْ رَجُلٍ يُنْفِقُ عَلَى عِيَالٍ صِغَارٍ يُعِفُّهُمْ أَوْ يَنْفَعُهُمُ اللَّهُ بِهِ وَيُغْنِيهِمْ. হযরত ছাওবান (রাঃ) সর্বশ্রেষ্ঠ দীনার সেটি যা মানুষ নিজ পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করে। আর যে দীনারটি আল্লাহর রাস্তায় তার সাওয়ারীর উপর ব্যয় কর এবং সেই দীনার যা আল্লাহর রাস্তায় তার পথে তার সঙ্গীদের পিছনে খরচ করে’।[11]
عَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِى وَقَّاصٍ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّكَ لَنْ تُنْفِقَ نَفَقَةً تَبْتَغِى بِهَا وَجْهَ اللَّهِ إِلاَّ أُجِرْتَ عَلَيْهَا، حَتَّى مَا تَجْعَلُ فِى فِى امْرَأَتِكَ সা’দ বিন আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য তুমি যা ব্যয় করবে, তোমাকে তার বিনিময় দেয়া হবে। এমনকি তুমি যে গ্লাতোমার স্ত্রীর মুখ তুলে দাও তারও বিনিময় তুমি পাবে’।[12]
عَنْ أَبِى مَسْعُودٍ عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا أَنْفَقَ الرَّجُلُ عَلَى أَهْلِهِ يَحْتَسِبُهَا فَهُوَ لَهُ صَدَقَةٌ আবু মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ছওয়াবের আশায় কোন মুসলমান যখন তার পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করে, তখন তা ছাদাক্বাহ হিসাবে গণ্য হয়’।[13]
(১২) অন্যের দোষ ত্রুটি গোপন রাখা :
শ্রেষ্ট মানব হতে গেলে আমাদের অবশ্যই অন্যের দোষত্রুটি গোপন রাখতে হবে। কেননা একজন আদর্শ মানুষ কখনো অন্যের সমালোচনা করতে পারেনা। বরং সে নিজেই সর্বদা নিজের দোষ ত্রুটি গুলি বের করে তা সংশোধনের চেষ্টা করে। (তবে হ্যাঁ যদি কেউ এমন কাজ কর যা না বললে মানুষ ও দ্বীনের ক্ষতি হতে পারে সেক্ষেত্রে তাকে সংশোধনের জন্য এবং তার অনিষ্ট হতে অপরকে রক্ষার জন্য তার সমালোচনা করা বৈধ। শুধু বৈধই নয় বরং যরূরী। যেমন কেউ ইসলাম বিরোধী কথা বা কাজ করলে। তাই আমাদের অবশ্য কর্তব্য হল অপরের দোষ ত্রুটি গোপন রাখা। কারণ এটি চর্চা করা অত্যন্ত গুনাহের কাজ। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, وَيْلٌ لِكُلِّ هُمَزَةٍ لُمَزَةٍ ‘দুর্ভোগ প্রত্যেক সম্মুখে ও পিছনে নিন্দাকারীর জন্য’ (হুমাযাহ ১০৪/১)।
আল্লাহ তাআলা وَيْلٌ দিয়ে সূরা শুরু করেছন, যা দুঃসংবাদবাহী শব্দ। অর্থাৎ দুর্ভোগ প্রত্যেক পরনিন্দা কারীর জন্য। আবুল আলিয়া, হাসান বছরী রবী বিন আনাস মুজাহিদ, আত্বা প্রমুখ বিদ্বান বলেন, হুমাযাহ হল ঐ ব্যক্তি যে পিছনে নিন্দা করে তার অনুপস্থিতিতে।
ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, এরা ঐসব লোক যারা একে কথা অন্যকে লাগিয়ে চোগল খুরী করে। বন্ধুদের মধ্য ভাঙ্গন ধরায় ও নির্দোষ ব্যক্তিদের দোষ খুঁজে বেড়ায়’।[14] ক্বাতাদাহ (রাঃ) বলেন, এর ভাবার্থ হল মুখের ভাষায় ও চোখের ইশারায় আল্লাহর বান্দাকে কষ্ট দেয়া’।[15]
অন্যের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখার ব্যাপারে হাদীছে এসেছে, عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يَسْتُرُ اللَّهُ عَلَى عَبْدٍ فِى الدُّنْيَا إِلاَّ سَتَرَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ. আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে দুনিয়াতে কোন বান্দার দোষ গোপন রাখে আল্লাহ ক্বিয়ামতের দিন তার দোষ গোপন রাখবেন’।[16]
অন্য হাদীছ এসেছে, هُرَيْرَةَ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ كُلُّ أُمَّتِى مُعَافًى إِلاَّ الْمُجَاهِرِينَ، وَإِنَّ مِنَ الْمَجَانَةِ أَنْ يَعْمَلَ الرَّجُلُ بِاللَّيْلِ عَمَلاً، ثُمَّ يُصْبِحَ وَقَدْ سَتَرَهُ اللَّهُ، فَيَقُولَ يَا فُلاَنُ عَمِلْتُ الْبَارِحَةَ كَذَا وَكَذَا، وَقَدْ بَاتَ يَسْتُرُهُ رَبُّهُ وَيُصْبِحُ يَكْشِفُ سِتْرَ اللَّهِ عَنْهُ. আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি আমার সকল উম্মত মাফ পাবে তবে পাপ প্রকাশকারী ব্যতীত। আর এক প্রকাশ এই যে কোন ব্যক্তি রাতে কোন পাপ কাজ করে যা আল্লাহ গোপন রাখেন। কিন্তু সকাল হলে সে বলে বেড়ায় হে অমুক আমি আজ রাতে এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত্রি অতিবাহিত করেছিল যা আল্লাহ তার পাপ গোপন রেখেছিল। কিন্তু সে সকালে উঠে তার উপর আল্লাহর আবৃত পর্দা খুলে ফেলে’।[17]
অপর হাদীছে এসেছে, عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رضى الله عنه أَنَّهُ سَمِعَهُ يَقُولُ قَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا زَنَتِ الأَمَةُ فَتَبَيَّنَ زِنَاهَا فَلْيَجْلِدْهَا، وَلاَ يُثَرِّبْ، ثُمَّ إِنْ زَنَتْ فَلْيَجْلِدْهَا، وَلاَ يُثَرِّبْ، ثُمَّ إِنْ زَنَتِ الثَّالِثَةَ فَلْيَبِعْهَا، وَلَوْ بِحَبْلٍ مِنْ شَعَرٍ আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যদি দাসী ব্যভিচার করে এবং তা প্রমাণিত হয় তবে তাকে বেত্রাঘাত করবে। আর তিরস্কার করবে না। অতঃপর ২য় বার যদি ব্যভিচার কর তবে তাকে বেত্রাঘাত করবে। আর তিরস্কার করবে না। অতঃপর যদি সে ৩য় বার ব্যভিচার করে তাহলে তাকে বিক্রি করে দিবে। যদিও পশমের রশির (ন্যায় ক্ষুদ্র বস্ত্তর দ্বারা) বিনিময় হয়’।[18]
(১৩) প্রতিবেশীর অধিকার আদায় করা :
একজন মানুষ ভাল না মন্দ তা পরিবার-পরিজনেরর পরেই সর্বাধিকার ভাল জানে তার প্রতিবেশী। তাই একজন মানুষক পূর্ণ আদর্শ মানুষ হতে হলে অবশ্যই তাকে তার প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহার করতে হবে এবং প্রতিবেশীর অধিকারগুলি যথাযথ আদায় করতে হবে। তাহলে ইহকালে সকলের ভালবাসাও সম্মান এবং পরকালে জাহান্নামের কঠিন আযাব হতে রেহাই পাওয়া যাবে। প্রতিবেশীর সাথে সদচারণের নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন,
وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَبِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَالْجَارِ ذِي الْقُرْبَى وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنْبِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ مَنْ كَانَ مُخْتَالًا فَخُورًا-
‘আর তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তার সাথে কাউকে শরীক করো না। তোমরা পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার কর এবং আত্মীয় পরিজন, ইয়াতীম, মিসকীন, আত্মীয় প্রতিবেশী, অনাত্মীয় প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সাথী, পথের সাথী ও তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক (দাস-দাসী, তাদের সাথে সদ্ব্যবহার কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ অহংকারী ও গর্বিতকে ভালবাসেন না’ (নিসা ৪/৩৬)।
অত্র আয়াতে মহান আল্লাহ প্রতিবেশীর প্রতি লক্ষ্য রাখতে ও তাদের সাথে ভাল আচারণের নির্দেশ দিয়েছেন। তারা আত্মীয় প্রতিবেশীই হোক বা অনাত্মীয় প্রতিবেশী হোক, তারা মুসলমান হোক বা অমুসলমান সর্ববস্থায় তাদের সাথে সদাচরণ করতে হবে।
প্রতিবেশীদের ব্যাপারে হাদীছে এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا زَالَ يُوصِينِى جِبْرِيلُ بِالْجَارِ حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُوَرِّثُهُ.
আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, জিব্রাঈল (আঃ) আমাকে সব সময় প্রতিবেশীর সম্পর্কে অছীয়ত করে থাকেন। এমনকি আমার মনে হয় যে, শীঘ্রই তিনি প্রতিবেশীকে উত্তরাধীকারী বানিয়ে দিবেন’। [19]
অন্য হাদীছে এসেছে,
عَنْ أَبِى ذَرٍّ قَالَ إِنَّ خَلِيلِى صلى الله عليه وسلم أَوْصَانِى إِذَا طَبَخْتَ مَرَقًا فَأَكْثِرْ مَاءَهُ ثُمَّ انْظُرْ أَهْلَ بَيْتٍ مِنْ جِيرَانِكَ فَأَصِبْهُمْ مِنْهَا بِمَعْرُوفٍ .
আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘হে আবু যার! যখন তুমি ঝোল ওয়ালা তরকারী রান্না করব, তখন তাতে বেশী কর পানি দাও এবং তোমার প্রতিবেশীকেও পৌঁছে দাও’। [20]
হাদীছে এসেছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত নাবী (ছাঃ) বলেছেন, আল্লাহর কসম সে মুমিন নয়! আল্লাহর কসম সে মুমিন নয়! আল্লাহর কসম সে মুমিন নয়! জিজ্ঞেস করা হল সে কোন ব্যক্তি হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, যে লোকের প্রতিবেশী তার অনিষ্ট হতে নিরাপদ থাকে না। মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় বলা হয়েছে, ঐ ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না’।[21]
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, হে মুসলিম মহিলাগণ! কোন প্রতিবেশিনী যেন তার অপর প্রতিবেশিনীর উপঢৌকন তুচ্ছ মনে না করে। যদিও তা ছাগলের পায়ের ক্ষুর হোক না কেন’। [22]
অপর হাদীছ, আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘কোন প্রতিবেশী যেন তার প্রতিবেশীকে তার দেওয়ালে কাঠ/বাঁশ গাড়তে নিষেধ না করে’।[23]
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন মেহমানের সম্মান করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের বিশ্বাস রাখে সে যেন ভাল কথা বলে নয়ত চুপ থাকে’।[24]
অন্য হাদীছে এসেছে, আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কে বললাম, আমার দুজন প্রতিবেশী আছে, আমি তাদের মধ্যে কার নিকট হাদিয়া পাঠাব? তিনি বললেন, যার দরজা তোমার বেশী নিকটবর্তী তার কাছে পাঠাও’। [25]
এ বিষয়ে অপর হাদীছে এসেছে, আব্দুল্লাহ বিন উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম সঙ্গী সে যে তার সঙ্গীর কাছে উত্তম। আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম প্রতিবেশী সে যে তার প্রতিবেশীর দৃষ্টিতে সর্বাধিক উত্তম’।[26]
(ক্রমশ:)
[লেখক: সভাপতি, দিনাজপুর সাংগঠনিক যেলা ]
[1]. বুখারী হা/৩৩; মুসলিম হা/৫৯১৩।
[2]. মুসলিম হা/২২২।
[3]. মুসলিম হা/৬৭৪৫।
[4]. বুখারী হা/৩৩৩১; মুসলিম হা/৪৭, ১৪৬৮।
[5]. বুখারী হা/৫১৮৪।
[6]. মুসলিম হা/৩৭১৯।
[7]. মুসলিম হা/১৪৬৯; আহমাদ হা/৮১৬৩; রিয়াযুছ ছালেহীন ৩/২৮০।
[8]. আবু দাঊদ হা/২১৪২, ২১৪৩ সনদ হাসান; ইবনু মাজাহ হা/১৮৫০; রিয়াযুছ ছালেহীন ৫/২৮২।
[9]. আহমাদ হা/৭৩৫৪; তিরমিযী হা/১১৬২; দারেমী হা/২৭৯২; রিয়াযুছ ছালেহীন ৬/২৮৩।
[10]. মুসলিম হা/ ৯৯৫; রিয়াযুস সালেহীন ১/২৯৫।
[11]. মুসলিমহা/৯৯৪; তিরমিযী হা/১৯৬৬; ইবনু মাজাহ হা/২৭৬০।
[12]. বুখারী হা/৫৬, মুসলিম হা/১৬২৮; তিরিমিযী হা/৯৭৫; আবু দাঊদ হা/২৭৪০।
[13]. বুখারী হা/৫৫, মুসলিম হা/১০০২; তিরমিযি হা/১৯৬৫)।
[14]. তাফসীরুল কুরআন ৪৭৪ পৃঃ।
[15]. ইবনু কাছীর ১৮/২৭৩ পৃঃ।
[16]. মুসলিম হা/৬৭৫৯।
[17]. বুখারী হা/৬০৬৯; মুসসিল হা/২৯৯০; রিয়াযুস সালেহীন ২/২৪৬।
[18]. বুখারী হা/২১৫২; মুসলিম হা/১৭০৩; তিরমিযি হা/ ১৪৩৩; আহমাদ হা/৭৩৪৭; রিয়াযুস সালেহীন ৩/২৪৭।
[19]. বুখারী হা/৬০১৪; মুসলিম হা/২৬২৪।
[20]. মুসলিম হা/২৬২৫; আবু দাঊদ হা/২০৮১৭।
[21]. বুখারী হা/৬০১৬; মুসলিম হা/৪৬।
[22]. বুখারী হা/২৫৬৬; মুসলিম হা/১০৩০; আহমাদ হা/৭৫৩৭; তিরিমিযী হা/২১৩০।
[23]. বুখারী হা/২৪৬৩; মুসলিম হা/১৬০৯; তিরিমিযী হা/১৩৫৩; আদাবুল মুফরাদ হা/৩৬৩৪; ইবনে মাজাহ হা/২৩৩৫।
[24]. বুখারী হা/৬০১৮; মুসলিম হা/৪৭; তিরমিযী হা/১১৮৮; আহমাদ হা/৭৫৭১; দারেমী হা/২২২২।
[25]. বুখারী হা/৬০২০; আহমাদ হা/৫১৫৫।
[26]. তিরমিযী হা/১৯৪৪; সনদ হাসান।