• free web stats
  • At-Tahreek
    তাজদীদে মিল্লাত

    জুম‘আর পূর্বে করণীয় : একটি বিভ্রান্তি নিরসন

    (পূর্ব প্রকাশিতের পর)

    আহমাদুল্লাহ

    লেখক : গবেষণা সহকারী, হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ

    (২) মওকূফ রেওয়ায়াতসমূহ :

    মারফূ‘ বর্ণনাগুলির আলোচনা শেষ করার পর আমরা এখন এ সম্পর্কে কতিপয় মওকূফ হাদীছের পর্যালোচনা করব ইনশাআল্লাহ। এ বিষয়ে অনেক মওকূফ হাদীছ থাকলেও আমরা এখানে প্রসিদ্ধ কিন্তু বিশুদ্ধ নয় এমন কতগুলি হাদীছের আলোকপাত করব।

    নিমেণ মওকূফ বর্ণনাগুলির তাহক্বীক তুলে ধরা হ’ল-

    দলীল-১ :

    عَنِ الثَّوْرِيِّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ قَالَ: كَانَ عَبْدُ اللَّهِ يَأْمُرُنَا أَنْ نُصَلِّيَ قَبْلَ الْجُمُعَةِ أَرْبَعًا، وَبَعْدَهَا أَرْبَعًا، حَتَّى جَاءَنَا عَلِيٌّ فَأَمَرَنَا أَنْ نُصَلِّيَ بَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَرْبَعً-

    ছাওরী হ’তে, তিনি আত্বা ইবনুস সায়েব হ’তে, তিনি আবু আব্দুর রহমান আস-সুলামী হ’তে। তিনি বলেছেন, আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) আমাদেরকে জুম‘আর পূর্বে চার রাক‘আত, জুম‘আর পরে চার রাক‘আত পড়ার নির্দেশ দিতেন। অবশেষে হযরত আলী (রাঃ) যখন আমাদের এখানে আসলেন, তখন তিনি আমাদেরকে জুম‘আ পর দুই রাক‘আত তারপর চার রাক‘আত পড়ার আদেশ দিলেন’।[1]

    পর্যালোচনা : হাদীছটি যঈফ। এর রাবী সুফিয়ান ছাওরী (রহঃ) এখানে তাদলীস করেছেন। তিনি মুদাল্লিস রাবী হিসাবে প্রসিদ্ধ। যেমন-

    (১) ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) তাঁর সম্পর্কে বলেছেন,سفيان ابن سعيد ابن مسروق الثوري أبو عبد الله الكوفي ثقة حافظ فقيه عابد إمام حجة من رؤوس الطبقة السابعة وكان ربما دلس ‘সুফিয়ান ইবনু সাঈদ ইবনু মাসরূক্ব আছ-ছাওরী আবু আব্দুল্লাহ আল-কূফী আস্থাভাজন, (হাদীছের) হাফেয, ফক্বীহ, ইবাদতগুযার, সপ্তম স্তরের শীর্ষস্থানীয় হুজ্জাত ইমামদের অন্তর্ভুক্ত। আর তিনি কখনো কখনো তাদলীস করতেন (তাক্বরীবুত তাহযীব, রাবী নং ২৪৪৫)।

    (২) জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী (রহঃ) বলেছেন, সুফিয়ান ছাওরী তাদলীসে প্রসিদ্ধ (আসমাউল মুদাল্লিসীন, রাবী নং ১৮)। অর্থাৎ তিনি মুদাল্লিস রাবী হিসাবে প্রসিদ্ধ।

    (৩) ইবনুল ইরাক্বী (রহঃ) বলেছেন, سفيان بن سعيد الثوري مشهور بالتدليس ‘তিনি তাদলীসের কারণে প্রসিদ্ধ (আল-মুদাল্লিসীন, রাবী নং ২১)।

    (৪) বুরহানুদ্দীন হালাবী (রহঃ) বলেছেন, سفيان الثوري مشهور به তিনি তাদলীসের জন্য বিখ্যাত (আত-তাবঈন, রাবী নং ২৫)।

    (৫) ইবনুত তুরকুমানী হানাফী (রহঃ) বলেছেন, الثوري مدلس وقد عنعن (সুফিয়ান) ছাওরী মুদাল্লিস। তিনি ‘আন’ শব্দে বর্ণনা করতেন (আল-জাওহারুন নাক্বী ৮/২৬২)।

    (৬) ইমাম যাহাবী (রহঃ) বলেছেন, كان يدلس عن الضعفاء তিনি যঈফ রাবীদের থেকে তাদলীস করতেন (মীযানুল ই‘তিদাল, রাবী নং ৩৩২২)।

    (৭) বদরুদ্দীন ‘আইনী হানাফী (রহঃ) বলেছেন, وسُفْيَان من المدلسين এবং সুফিয়ান মুদাল্লিসদের মধ্য হ’তে রয়েছেন’।[2]

    (৮) ইমাম নববী (রহঃ) বলেছেন, أَنَّ سُفْيَانَ مُدَلِّسٌ নিশ্চয়ই সুফিয়ান হ’লেন মুদাল্লিস রাবী’।[3]

    দলীল-২ : عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، أَنَّ ابْنَ مَسْعُودٍ كَانَ يُصَلِّي قَبْلَ الْجُمُعَةِ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ، وَبَعْدَهَا أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ "، قَالَ أَبُو إِسْحَاقَ: وَكَانَ عَلِيٌّ يُصَلِّي بَعْدَ الْجُمُعَةِ سِتَّ رَكَعَاتٍ، وَبِهِ يَأْخُذُ عَبْدُ الرَّزَّاقِ

    মা‘মার হ’তে, তিনি ক্বাতাদা হ’তে বর্ণনা করেছেন যে, নিশ্চয়ই ইবনে মাসঊদ (রাঃ) জুম‘আর পূর্বে চার রাক‘আত এবং পরে চার রাক‘আত পড়তেন। আবূ ইসহাক্ব বলেছেন, আলী (রাঃ) জুম‘আর পর ছয় রাক‘আত পড়তেন। আর আব্দুর রায্যাক্ব এটি গ্রহণ করেছেন’।[4]

    পর্যালোচনা : যঈফ। কারণ এখানে ক্বাতাদা (রহঃ) তাদলীস করেছেন। তিনি ৬০ হিজরীতে জন্ম গ্রহণ করেছেন (সিয়ারু আলামিন নুবালা, রাবী নং ১৩২)। তাঁর সম্পর্কে ইমামদের বক্তব্য নিমণরূপ-

    (১) হাফেয যাহাবী (রহঃ) বলেছেন, وَهُوَ حُجّةٌ بِالإِجْمَاعِ إِذَا بَيَّنَ السَّمَاعَ، فَإِنَّهُ مُدَلِّسٌ مَعْرُوْفٌ بِذَلِكَ، وَكَانَ يَرَى القَدَرَ - نَسْأَلُ اللهَ العَفْوَ  ‘তিনি ইজমানুপাতে হুজ্জাত হয়ে থাকেন যখন তিনি সামার বিষয়টি উল্লেখ করেন। কেননা তিনি মুদাল্লিস। এ সম্পর্কে তিনি প্রসিদ্ধ। তিনি ক্বাদরিয়া আক্বীদা পোষণ করতেন। আমরা আল্লাহর কাছে তার জন্য ক্ষমা চাই (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, রাবী নং ১৩২)।

    তিনি অন্যত্র বলেছেন,

    حافظ ثقة ثبت، لكنه مدلس: ورمى بالقدر، قاله يحيى بن معين، ومع هذا فاحتج به أصحاب الصحاح، لا سيما إذا قال حدثنا ‘তিনি হাফেয, ছিক্বাহ। কিন্তু মুদাল্লিস রাবী।  আর তাকে ক্বাদরী হওয়ার দোষে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। তার সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেছেন তা সত্বেও আছহাবে ছিহাহ-গণ তার দ্বারা দলীল পেশ করতেন বিশেষভাবে যখন তিনি বলতেন ‘আমাদেরকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন’ (মীযানুল ই‘তিদাল, রাবী নং  ৬৮৬৪।

    (২) হাফেয আলাঈ (রহঃ) বলেছেন, قتادة بن دعامة السدوسي أحد المشهورين بالتدليس وهو أيضا يكثر من الإرسال ক্বাতাদা বিন দি‘আমাহ আস-সাদূসী অন্যতম প্রসিদ্ধ মুদাল্লিস রাবী। তিনি প্রচুর পরিমাণে মুরসাল বর্ণনাও উদ্ধৃত করেছেন (জামেঊত তাহছীল, রাবী নং ৬৩৩)।

    (৩) ‘আল-মুদাল্লিসীন’ গ্রন্থে আছে, قتادة بن دعامة السدوسي مشهور به أيضاً ক্বাতাদা বিন দি‘আমাহ আস-সাদূসী তাদলীসের কারণেও প্রসিদ্ধ। (আল-মুদাল্লিসীন, রাবী নং ৪৯)।

    (৪) ‘আত-তাবঈন লি-আসমাইল মুদাল্লিসীন’ গ্রন্থে তাঁকে উল্লেখ করা হয়েছে (রাবী নং ৫৭)।

    (৫) ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেছেন, قتادة بن دعامة السدوسي البصري صاحب أنس بن مالك رضي الله تعالى عنه كان حافظ عصره وهو مشهور بالتدليس وصفه به النسائي وغيره ক্বাতাদা বিন দি‘আমাহ আস-সাদূসী আল-বছরী আনাস বিন মালেক (রাঃ)-এর ছাত্র। তিনি তার যামানার শ্রেষ্ঠ হাফেয ছিলেন। তিনি তাদলীসের কারণে প্রসিদ্ধ। ইমাম নাসাঈ এবং অন্যরা তাকে মুদালিলস রাবী হিসাবে উল্লেখ করেছেন (রাবী নং ৯২)।

    আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) ৩২ হিজরীতে বা পরে মদীনায় এসে মারা গিয়েছিলেন (তাক্বরীবুত তাহযীব, রাবী নং ৩৬১৩)। সুতরাং এই সনদটি বিচ্ছিন্ন। ক্বাতাদার সাথে ইবনে মাসঊদের সরাসরি হাদীছ শ্রবণ করা অসম্ভব।

    দলীল-৩ : حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، أَنَّ ابْنَ مَسْعُودٍ كَانَ يُصَلِّي قَبْلَ الْجُمُعَةِ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ، وَبَعْدَهَا أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ قَالَ أَبُو إِسْحَاقَ: وَكَانَ عَلِيٌّ يُصَلِّي بَعْدَ الْجُمُعَةِ سِتَّ رَكَعَاتٍ  আমাদেরকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন ইসহাক্ব বিন ইবরাহীম আব্দুর রাযযাক্ব হ’তে, তিনি মা‘মার হ’তে, তিনি আবু ইসহাক্ব হ’তে যে, নিশ্চয়ই ইবনে মাসঊদ জুম‘আর পূর্বে চার রাক‘আত এবং পরে চার রাক‘আত পড়তেন। আবু ইসহাক্ব বলেছেন, আলী জুম‘আর পরে ছয় রাক‘আত পড়তেন’।[5]

    পর্যালোচনা : যঈফ। এ হাদীছের সনদে ‘আবু ইসহাক্ব আস-সাবীঈ’ (রহঃ) নামক মুদাল্লিস রাবী রয়েছেন। যেমন-

    (১) ‘আসমাউল মুদাল্লিসীন’ গ্রন্থে আছে যে, كثير التدليس  তিনি অত্যধিক তাদলীসকারী (রাবী নং ৪৫)।

    (২) ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) তাঁকে স্বীয় ‘ত্বাবাক্বাতুল মুদাল্লিসীন’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন (রাবী নং ৬৬)।

    (৩) ‘যিকরুল মুদাল্লিসীন’ (রাবী নং ৯), ‘আল-মুদাল্লিসীন’ প্রভৃতি বইয়ে তাকে প্রসিদ্ধ মুদাল্লিস রাবী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে (রাবী নং ৪৭)।

    (৪) শায়খ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) তাঁকে মুদাল্লিস রাবী বলেছেন (ছহীহা হা/১৭০১)। অন্যত্র তিনি বলেছেন, الثانية: أبو إسحاق السبيعي، ثقة ولكنه على اختلاطه مدلس

    দ্বিতীয়ত : আবু ইসহাক্ব আস-সাবীঈ ছিক্বাহ। কিন্তু তিনি তার ইখতিলাত্ব থাকা সত্বেও মুদাল্লিস রাবী ছিলেন (ঐ, হা/২০৩৫)।

    দলীল-৪ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ أَبِي رِزْمَةَ الْمَرْوَزِيُّ، أَخْبَرَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ جَعْفَرٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: كَانَ إِذَا كَانَ بِمَكَّةَ فَصَلَّى الْجُمُعَةَ، تَقَدَّمَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ تَقَدَّمَ فَصَلَّى أَرْبَعًا، وَإِذَا كَانَ بِالْمَدِينَةِ صَلَّى الْجُمُعَةَ، ثُمَّ رَجَعَ إِلَى بَيْتِهِ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، وَلَمْ يُصَلِّ فِي الْمَسْجِدِ، فَقِيلَ لَهُ، فَقَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَفْعَلُ ذَلِكَ আমাদেরকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল আযীয বিন আবী রিমযাহ আল-মারওয়াযী। (তিনি বলেছেন) আমাদেরকে ফাযল বিন মূসা সংবাদ দিয়েছেন আব্দুল হামীদ বিন জা‘ফর হ’তে, তিনি ইয়াযীদ বিন আবী হাবীব হ’তে, তিনি আত্বা হ’তে, তিনি ইবনে ওমর হ’তে। তিনি বলেছেন, তিনি যখন মক্কায় থাকতেন তখন জুম‘আ পড়তেন। সামনে অগ্রসর হয়ে দু’রাকআত পড়তেন। অতঃপর (সম্মুখে আরেকটু) অগ্রসর হয়ে চার রাক‘আত পড়তেন। আর যখন মদীনায় থাকতেন তখন জুম‘আ পড়তেন। অতঃপর নিজের বাড়ীতে প্রত্যাবর্তন করে দু’রাকআত পড়তেন। মসজিদে পড়তেন না। তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বললেন, রাসূল (ছাঃ) এমনটাই করতেন’। [6]

    তাহক্বীক্ব : এটি ছহীহ হাদীছ। এই হাদীছ দ্বারা জুম‘আর পূর্বে সুন্নাত হিসাবে চার রাক‘আত নির্ধারিত করে আদায় করা ছাবেত হয় না।

    দলীল-৫ : أخبرنا يزيد بن هارون عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ عَنْ صَافِيَةَ سَمِعَهَا وَهِيَ تَقُولُ: رَأَيْتُ صَفِيَّةَ بِنْتَ حُيَيٍّ صَلَّتْ أَرْبَعًا قَبْلَ خُرُوجِ الإِمَامِ وَصَلَّتِ الْجُمُعَةَ مَعَ الإِمَامِ رَكْعَتَيْنِ আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছেন ইয়াযীদ বিন হারূণ হাম্মাদ বিন সালামাহ হ’তে, তিনি ছাফিয়া হ’তে, তিনি শ্রবণ করেছেন যে, ছাফিয়া বলেন, আমি ছাফিইয়া বিনতে হুয়াইকে দেখেছি ইমাম বের হওয়ার পূর্বে চার রাক‘আত পড়তে। তিনি ইমামের সাথে জুম‘আর দু’রাক‘আত পড়তেন। (ইবনু সা‘দ, আত-ত্বাবাক্বাতুল কুবরা, রাবী নং ৪৭০১)।

    তাহক্বীক্ব : (১) এই হাদীছ দ্বারা নারীদের জুম‘আর ছালাত জামা‘আতের সাথে আদায় করা ছাবেত হয়। সুতরাং এই হাদীছটি হানাফীদের জন্য দলীল হ’তে পারে না। উপরন্তু হাম্মাদ বিন সালামাহ মুদাল্লিস এবং মুখতালিত রাবী।

    আল্লামা ইরশাদুল হক আছারী বলেছেন, ‘হাম্মাদ বিন সালামাহও (রহঃ) বাজে হিফযের অধিকারী ছিলেন। আর শেষ জীবনে তারও মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। যেমনটি ‘তাক্বরীবুত তাহযীব’ গ্রন্থে হাফেয ইবনু হাজার (রহঃ) স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেছেন’।

    (৩) মাক্বতূ বর্ণনাসমূহ :

    দলীল-১ : ইবনু আব্দুল বার্র (রহঃ) বলেছেন, حَدَّثَنَا مِنْجَابُ بْنُ الْحَارِثِ قَالَ أَخْبَرَنَا خَالِدُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ سَعِيدِ بْنِ الْعَاصِي عَنْ أَبِيهِ قَالَ كُنْتُ أَرَى أَصْحَابَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِذَا زَالَتِ الشَّمْسُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ قَامُوا فَصَلُّوا أَرْبَعًا আমাদেরকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন মিনজাব ইবনুল হারিছ। তিনি বলেছেন, আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছেন খালেদ বিন সাঈদ বিন আমর বিন সাঈদ ইবনুল আছ তার পিতা হ’তে। তিনি বলেছেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-এর ছাহাবীগণকে দেখতাম, জুম‘আর দিন সূর্য ঢলে যাওয়ার পর তারা দাঁড়িয়ে যেতেন এবং চার রাক‘আত পড়তেন (আত-তামহীদ ৪/২৬)।

    পর্যালোচনা : (১) তাবেঈর উক্তি কোন দলীল নয়। আর হানাফী ভাইগণ ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) ব্যতীত অন্য কোন তাবেঈর তাক্বলীদ করেন না। সুতরাং তাবেঈর বক্তব্য তাদের জন্য দলীল হ’তে পারে না। নিজেদের মর্যী মোতাবেক দলীল প্রতিষ্ঠা করাই তাদের লক্ষ্য। প্রয়োজনে স্বীয় ইমামকে ত্যাগ করতেও তারা দ্বিধা করেন না। (২) খালেদ বিন সাঈদ একজন দুর্বল রাবী। তার বর্ণিত হাদীছ ছহীহ হয় না (বুখারী, আত-তারীখুল কাবীল ক্রমিক ৪৬৬)।

    সুতরাং এই যঈফ বর্ণনাটি দিয়ে দলীল দেওয়া যাবে না।

    দলীল-২ : حَدَّثَنَا حَفْصٌ، عَنِ الْأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: كَانُوا يُصَلُّونَ قَبْلَهَا أَرْبَعًا আমাদেরকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন হাফছ ‘আমাশ’ হ’তে, তিনি ইবরাহীম নাখাঈ হ’তে। তিনি বলেছেন, তারা জুম‘আর পূর্বে চার রাক‘আত পড়তেন’। [7]

    পর্যালোচনা : যঈফ। এখানে আমাশ নামী মুদাল্লিস রাবী আছেন। যিনি আস্থাভাজন হ’লেও মুদাল্লিস ছিলেন। এ সম্পর্কে মুহাদ্দিছদের সাক্ষ্য তুলে ধরা হ’ল-

    (১) হাফেয ইবনু আব্দুল বার্র (রহঃ) লিখেছেন,  وَقَالُوا لَا يُقْبَلُ تَدْلِيسُ الْأَعْمَشِ এবং তারা বলেছেন, আমাশের তাদলীস গ্রহণ করা যাবে না (আত-তামহীদ ১/৩০)।

    (২) ইমাম দারাকুৎনী (রহঃ) লিখেছেন, وَلَعَلَّ الْأَعْمَشَ دَلَّسَهُ عَنْ حَبِيبٍ এবং সম্ভবত আমাশ হাবীব হ’তে তাদলীস করেছেন (আল-ইলালুল ওয়ারিদাহ, মাসআলা-১৮৮৮)।

    (৩) ইমাম আবু হাতেম (রহঃ) বলেছেন, الأعمشُ ربَّما دَلَّس আমাশ কদাচিৎ তাদলীস করতেন (ইবনে আবী হাতেম, ইলালুল হাদীছ হা/৯)।

    (৪) ইমাম আবু আব্দুর রহমান আহমাদ বিন শু‘আইব বিন আলী (রহঃ) তাকে ‘যিকরুল মুদাল্লিসীন’ গ্রন্থের পরিশিষ্টে মুদাল্লিস হিসাবে উল্লেখ করেছেন (মুলহাক্ব পৃ. ১২৫)।

    (৫) হাফেয যাহাবী (রহঃ) লিখেছেন, سليمان بن مهران الكاهلى الكوفي الأعمش، أبو محمد أحد الائمة الثقات، عداده في صغار التابعين، ما نقموا عليه إلا التدليس আমাশ অন্যতম ছিক্বাহ ইমাম। তাকে ছোট তাবেঈনদের মধ্যে গণ্য করা হয়। তারা (মুহাদ্দিছগণ) স্রেফ তাদলীসের কারণে তাকে সমালোচনা করেছেন (মীযানুল ই‘তিদাল, জীবনী নং ৩৫১৭)। অতঃপর তিনি লিখেছেন, قلت: وهو يدلس، وربما دلس عن ضعيف আমি বলেছি, তিনি তাদলীস করতেন এবং কখনো কখনো যঈফ রাবী হ’তে তাদলীস করতেন (ঐ)।

    (৬) হাফেয আলাঈ (রহঃ) বলেছেন, وهذا الأعمش من التابعين وتراه دلس عن الحسن بن عمارة وهو يعرف ضعفه এবং এই আমাশ তাবেঈনদের অন্তর্ভুক্ত। এবং তুমি তাকে হাসান বিন উমারাহ হ’তে তাদলীস করতে দেখবে। অথচ তিনি যঈফ হওয়ার দরূণ প্রসিদ্ধ (জামেঊত তাহছীল ১/১০১)।

    (৭) ইবনুল ইরাক্বী (রহঃ) তাকে ‘আল-মুদাল্লিসীন’ গ্রন্থে উল্লেখ করে বলেছেন, سليمان الأعمش مشهور بالتدليس أيضاً সুলায়মান আমাশও তাদলীসের কারণে প্রসিদ্ধ (আল-মুদাল্লিসীন, জীবনী নং ২৫, হারফুস সীন)।

    (৮) হাফেয বুরহানুদ্দীন আল-হালবী (রহঃ) লিখেছেন, سليمان بن مهران الأعمش مشهور به সুলায়মান বিন মিহরান আল-আমাশ তাদলীসের কারণে প্রসিদ্ধ (আত-তাবঈন লি-আসমাইল মুদাল্লিসীন, জীবনী নং ৩০)।

    (৯) ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) লিখেছেন, سليمان بن مهران الاعمش محدث الكوفة وقارؤها وكان يدلس وصفه بذلك الكرابيسي والنسائي والدارقطني وغيرهم সুলায়মান বিন মিহরান কূফার মুহাদ্দিছ এবং সেখানকার ক্বারী এবং তিনি তাদলীস করতেন। কারাবীসী, নাসাঈ এবং দারাকুৎনী ইত্যাদি বিদ্বানগণ তাকে মুদাল্লিসরূপে তুলে ধরেছেন (ত্বাবাক্বাতুল মুদাল্লিসীন, জীবনী নং ৫৫)।

    (১০) হাফেয যুবায়ের আলী যাঈ (রহঃ) তাঁকে ‘প্রসিদ্ধ মুদাল্লিস’ বলেছেন (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : তাহক্বীক্বী মাক্বালাত ১/২৬৭-২৭২)।

    (১১) হাফেয জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী (রহঃ) বলেছেন, সুলায়মান আমাশ তাদলীসের কারণে প্রসিদ্ধ। (আসমাউল মুদাল্লিসীন, জীবনী নং ২১)।

    (১২) ‘বায়ানুল ওয়াহমি ওয়াল ঈহাম’ গ্রন্থে আছে, فَإِنَّهُ مُدَلّس নিশ্চয়ই তিনি মুদাল্লিস (হা/৪৪১)।

    সারাংশ হ’ল, আমাশ ছিক্বাহ-মুদাল্লিস রাবী। আর মুদাল্লিস রাবীর ‘আন‘আনাহ সাধারণত যঈফ হয়। যদি তিনি সামার স্পষ্টতা উল্লেখ করেন তাহ’লে হুকুম বদলে যায়।

    তদুপরি এটি তাবেঈর উক্তি মাত্র। তাবেঈনদের ভিন্ন ভিন্ন আমল পাওয়া যায়। ‘মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ’ গ্রন্থে ইমাম ইবনে আবী শায়বাহ (রহঃ) জুম‘আর পূর্বের ছালাত শিরোনামে একাধিক সংখ্যার হাদীছ এনেছেন। যেমন- (১) চার রাক‘আত (হা/৫৩৬০)। (২) পরের হাদীছটিতে দীর্ঘ ছালাতের কথা আছে (হা/৫৩৬১)। তবে এখানে কোন রাক‘আত সংখ্যা নেই। (৩) তারপরের হাদীছটিতে দশ রাক‘আত পড়ার আদেশ এসেছে (হা/৫৩৬২)। (৪) তার পরের হাদীছটিতে চার রাক‘আত, পরের দু’টি হাদীছে যথাক্রমে বাড়ীতে দু’রাকআত পড়ার কথা রয়েছে ইত্যাদি। মোট কথা দুই, চার বা ছয় যত খুশী পড়া যাবে। কোন সংখ্যার মধ্যে একে নির্দিষ্ট করার কোন ছহীহ দলীল নেই। আর থাকলেও সেগুলি দ্বারা হানাফী ভাইদের দলীল গ্রহণ করা সিদ্ধ নয়। কারণ এগুলিতে এমন কোন বর্ণনা নেই যা দ্বারা এটি প্রমাণিত হয় যে, প্রথমে মাতৃভাষায় খুৎবা দিতে হবে, এরপর খত্বীবের দেওয়া সময় অনুসারে মাঝখানে চার রাক‘আত পড়তে হবে অতঃপর আরবীতে খুৎবা প্রদান করতে হবে। মূলত এটি একটি ভিত্তিহীন বিদ‘আতী প্রথা যার অস্তিত্ব কোথাও ছিল না। ওমর (রাঃ)-এর যুগে তিনি অর্ধ পৃথিবী শাসন করেছিলেন। প্রতিটি স্থানেই তিনি আরবীতে খুৎবা দিতে আদেশ জারী করেছিলেন বা আরবীতে খুৎবা প্রদান করা হ’ত মর্মে কোন দলীল নেই।

    জুম‘আর ছালাতের পূর্বে সাধ্যানুযায়ী ছালাত পড়ার দলীলসমূহ :

    উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা প্রতীয়মান হয়েছে যে, জুম‘আর পূর্বে নির্ধারিতভাবে চার রাক‘আত সুন্নাত আদায় করার কোন ছহীহ দলীল নেই। এর বিপরীতে কতিপয় ছহীহ হাদীছ নিমণরূপ-

    দলীল-১ : ইমাম মুসলিম (রহঃ) হাদীছ বর্ণনা করেছেন- عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: مَنِ اغْتَسَلَ؟ ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ، فَصَلَّى مَا قُدِّرَ لَهُ، ثُمَّ أَنْصَتَ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْ خُطْبَتِهِ، ثُمَّ يُصَلِّي مَعَهُ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الْأُخْرَى، وَفَضْلُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ

    আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুম‘আর দিনে গোসল করে জুম‘আর ছালাতে আসবে এবং তার সাধ্যানুযায়ী ছালাত আদায় করবে, তারপর ইমাম খুৎবা শেষ করা পর্যন্ত চুপ থাকবে; অতঃপর তার সাথে জুম‘আর ছালাত পড়বে; এই জুম‘আ এবং তার পরবর্তী জুম‘আর মাঝের পাপসমূহ ক্ষমা করা হবে ও অতিরিক্ত আরো তিন দিনের পাপ ক্ষমা করা হবে’।[8]

    (১) ইমাম নববী (রহঃ) হাদীছটির ব্যাখ্যায় বলেছেন, وَفِيهِ أَنَّ التَّنَفُّلَ قَبْلَ خُرُوجِ الْإِمَامِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ مُسْتَحَبٌّ وَهُوَ مَذْهَبُنَا وَمَذْهَبُ الْجُمْهُورِ وَفِيهِ أَنَّ النَّوَافِلَ الْمُطْلَقَةَ لَا حَدَّ لَهَا لِقَوْلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَصَلَّى مَا قُدِّرَ لَهُ ‘এতে (দলীল) রয়েছে যে, নিশ্চয়ই জুম‘আর দিনে ইমামের বের হওয়ার পূর্বে নফল ছালাত পড়া মুসতাহাব। এটি আমাদের মাযহাব এবং জমহূরের মাযহাব। এতে (দলীল) আছে যে, সাধারণ নফলের কোন (নির্দিষ্ট রাক‘আত সংখ্যার) সীমারেখা নেই। কেননা নবী করীম বলেছেন, এরপর সে সাধ্যমত ছালাত আদায় করবে’।[9]

    (২) ইমাম ছন‘আনী (রহঃ) বলেছেন, وَأَنَّهُ لَا بُدَّ مِنْ النَّافِلَةِ حَسْبَمَا يُمْكِنُهُ فَإِنَّهُ لَمْ يُقَدِّرْهَا بِحَدٍّ ‘সাধ্যমত নফল আদায়কারী নফল ছালাত পড়তে পারবে। কেননা মুহাম্মাদ (ছাঃ) এটি নির্দিষ্ট সামীর সাথে নির্ধারিত করেন নি’।[10]

    (৩) ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেছেন, فَصَلَّى مَا قُدِّرَ لَهُ فِيهِ أَنَّ الصَّلَاة قَبْلَ الْجُمُعَة لَا حَدّ لَهَا ‘এতে দলীল রয়েছে যে, জুম‘আর পূর্বে ছালাতের কোন নির্ধারিত সীমারেখা নেই’।[11] 

    দলীল-২ :

    عَنْ سَلْمَانَ الفَارِسِيِّ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لاَ يَغْتَسِلُ رَجُلٌ يَوْمَ الجُمُعَةِ، وَيَتَطَهَّرُ مَا اسْتَطَاعَ مِنْ طُهْرٍ، وَيَدَّهِنُ مِنْ دُهْنِهِ، أَوْ يَمَسُّ مِنْ طِيبِ بَيْتِهِ، ثُمَّ يَخْرُجُ فَلاَ يُفَرِّقُ بَيْنَ اثْنَيْنِ، ثُمَّ يُصَلِّي مَا كُتِبَ لَهُ، ثُمَّ يُنْصِتُ إِذَا تَكَلَّمَ الإِمَامُ، إِلَّا غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الجُمُعَةِ الأُخْرَى

    সালমান ফারিসী (রাঃ) বলেছেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ... অতঃপর  সে ছালাত পড়বে ততটুকু যতটুকু তার জন্য লেখা হয়েছে। এরপর ইমামের খুৎবাদানকালে চুপ থাকবে, তাহ’লে তাকে পরবর্তী জুম‘আর মধ্যবর্তী সময়ের পাপগুলি ক্ষমা করা হবে’। [12]

    জুম‘আর পরের সুন্নাতসমূহ :

    দলীল-১ :

    وحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ، عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمُ الْجُمُعَةَ فَلْيُصَلِّ بَعْدَهَا أَرْبَعًا

    ইয়াহইয়া বিন ইয়াহইয়া আমাদেরকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, আমাদেরকে খালেদ বিন আব্দুল্লাহ সংবাদ দিয়েছে সুহাইল হ’তে, তিনি তার পিতা হ’তে, তিনি আবু হুরায়রা হ’তে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ জুম‘আর ছালাত পড়বে তখন সে পরে চার রাক‘আত পড়ে নিবে’।[13]

    দলীল-২ :

    وحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ: قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ وَصَفَ تَطَوُّعَ صَلَاةِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: فَكَانَ لَا يُصَلِّي بَعْدَ الْجُمُعَةِ حَتَّى يَنْصَرِفَ، فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ فِي بَيْتِه

    (ছাঃ) বাড়ী ফেরা পর্যন্ত কোন ছালাত পড়তেন না জুম‘আর ফরয ছালাতের পরে। এরপর তিনি বাড়ীতে দু’রাক‘আত পড়তেন’।[14]

    এ সম্পর্কে মুফতী মুবাশ্বির আহমাদ রববানী বলেছেন, ‘জুম‘আর পর চার রাক‘আত পড়তে হবে। এটিই উত্তম। তবে কেউ যদি দু’রাক‘আত পড়তে চায় তবে তা জায়েয’ (আহকাম ওয়া মাসায়েল পৃ. ২৪৫)।

    উপসংহার : উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা প্রতীয়মান হ’ল যে, জুম‘আর ছালাতের পূর্বে নির্দিষ্টভাবে চার রাক‘আত ছালাতকে সুন্নাত মেনে আদায় করার পক্ষে কোন ছহীহ দলীল নেই। তবে খতীবের খুৎবা প্রদানের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত ইচ্ছামত নফল ছালাত আদায় করা যাবে। আল্লাহ আমাদের হক্ব জানার ও মানার তাওফীক দান করুন-আমীন!

    [1]. মুছান্নাফ আব্দুর রায্যাক্ব হা/৫৫২৫।

    [2]. উমদাতুল ক্বারী হা/২১৪-এর আলোচনা দ্রঃ

    [3]. শরহে ছহীহ মুসলিম ২/১৮২

    [4]. মুছান্নাফ আবদুর রায্যাক্ব হা/৫৫২৪।

    [5]. ত্বাবারানী, আল-মু‘জামুল কাবীর হা/৯৫৫৫।

    [6]. আবুদাঊদ হা/১১৩০।

    [7]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/৫৩৬৩।

    [8]. ছহীহ মুসলিম হা/৮৫৭, ফুয়াদ আব্দুল বাক্বীর হাদীছ নং ২৬; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ হা/১০৫৯; মিশকাত হা/১৩৮২; বুলূগুল মারাম হা/৪৬২।

    [9]. নববী, শারহু ছহীহ মুসলিম হা/৮৫৭-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ

    [10]. সুবুলুস সালাম শরহে বুলূগুল মারাম হা/৪২৯

    [11]. নায়লুল আওত্বার হা/১২২২ এর ব্যাখ্যা দ্রঃ

    [12].বুখারী হা/৮৮৩; মিশকাত হ/১৩৮১; ছহীহুত তারগীব ওয়াত-তারহীব হা/৬৮৯; রিয়াযুছ ছালেহীন হা/১১৫৪।

    [13]. মুসলিম হা/৮৮১; ফুয়াদ আব্দুল বাক্বীর হাদীছ নং ৬৭

    [14]. ছহীহ মুসলিম হা/৮৮২; ফুয়াদ আব্দুল বাক্বীর হাদীছ নং ৭১; মিশকাতুল মাছাবীহ হা/১১৬১

     


    HTML Comment Box is loading comments...