• free web stats
  • At-Tahreek
    তারবিয়াত

    সন্তান প্রতিপালন

    ভূমিকা :

    সন্তান মানুষের জন্য মূল্যবান সম্পদ ও দুনিয়ার  সৌন্দর্য স্বরূপ। এই অমূল্য সম্পদকে যেভাবে প্রতিপালন করা হবে  সেভাবে গড়ে উঠবে। ছেলে-মেয়েকে ইসলামী আদর্শে গড়ে তুললে তারা দুনিয়াতে যেমন উপকারে আসবে তেমনি পিতামাতার জন্য তারা পরকালে মুক্তির কারণ হবে। জনৈক ব্যক্তিকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদায় আসীন করা হ’লে সে অবাক হয়ে বলবে, এমন মর্যাদা কোন আমলের বিনিময়ে পেলাম? আমি তো এতো সৎআমল করেনি। বলা হবে, তোমার জন্য তোমার সন্তানের প্রার্থনার কারণেই তোমাকে এ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।[1] মানুষ মৃত্যুবরণ করলে সৎ সন্তানের দো‘আ পিতা-মাতার উপকারে আসে।[2] নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করার পাশাপাশি সন্তানদেরকও বাঁচানেরা চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবার-পরিজনদেরকে জাহান্নামের আগুন হ’তে রক্ষা কর (তাহরীম ৬৬/৬)। সন্তানকে সুসন্তান হিসাবে গড়ে তোলার জন্য পিতা-মাতার কিছু দায়িত্ব ও কর্ত্বব্য রয়েছে। সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হ’ল-

    মাতা-পিতার দায়িত্ব :

    মা-বাবা হওয়া সহজ হ’লেও দায়িত্বশীল মাতা-পিতা হওয়া সহজ নয়। সন্তানকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে না পারলে সন্তানের কারণে উভয় জগতে ক্ষতিগ্রস্ত হ’তে হবে। এজন্য ইসলাম পিতা-মাতার প্রতি যথাযথভাবে সন্তান প্রতিপালন আবশ্যক করে দিয়েছে। পিতা-মাতা, অভিভাবক ও সমাজের দায়িত্বশীলদেরকে শিশু, কিশোর ও যুবকদের শিক্ষা-দীক্ষা বিষয়ে অবশ্যই আল্লাহর সম্মুখে জবাবদিহি করতে হবে। তারা যদি তাদের সুশিক্ষা দিয়ে থাকে, তাহলে দুনিয়া ও আখিরাতে তারা নিজেরাও সফল হবে এবং নতুন প্রজন্মও সফল হবে। আর যদি তাদেরকে সুশিক্ষা দিতে অবহেলা করে, তাহ’লে তার পরিণতি উভয়কে ভোগ করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘সাবধান! তোমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে (ক্বিয়ামতের দিন) জিজ্ঞাসিত হবে। দেশের শাসনকর্তা তার প্রজাদের সম্পর্কে, বাড়ীর মালিক তার পরিবার সম্পর্কে, স্ত্রী তার স্বামীর সংসার ও সন্তান সস্পর্কে এবং গোলাম (দাস) তার মালিকের ধন-সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। অতএব তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল ও প্রত্যেকেই স্ব স্ব দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে’।[3]

    তিনি আরো বলেন,  وَإِنَّ لِوَلَدِكَ عَلَيْكَ حَقًّ ‘তোমার উপর তোমার সন্তানেরও অধিকার রয়েছে’।[4] তিনি বলেন, وَلأَهْلِكَ عَلَيْكَ حَقًّا ، فَأَعْطِ كُلَّ ذِى حَقٍّ حَقَّهُ  ‘তোমার পরিবারেরও তোমার প্রতি অধিকার রয়েছে। অতএব প্রত্যেক হক্বদারকে তার হক্ব প্রদান কর’।[5] রাসূল (ছাঃ) বলেন,لاَ يَسْتَرْعِى اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى عَبْداً رَعِيَّةً قَلَّتْ أَوْ كَثُرَتْ إِلاَّ سَأَلَهُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى عَنْهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَقَامَ فِيهِمْ أَمْرَ اللَّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى أَمْ أَضَاعَهُ حَتَّى يَسْأَلَهُ عَنْ أَهْلِ بَيْتِهِ خَاصَّةً ‘আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে কম-বেশী কোন দায়িত্ব দেন তাকে সে বিষয়ে ক্বিয়ামতের দিন জিজ্ঞেস করবেন যে, সে তাদের মধ্যে আল্লাহর বিধান কায়েম করেছিল না বিনষ্ট করেছিল। অবশেষে তাকে তার পরিবার পরিজন সম্পর্কে বিশেষভাবে জিজ্ঞেস করবেন।[6] সুতরাং পিতা-মাতাকে সন্তান পালনের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। এক্ষণে পিতা-মাতার করণীয় সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হ’ল।

    (ক) সন্তানের জন্য প্রার্থনা করা

    সন্তান জন্ম গ্রহণ করার পূর্বে সুসন্তান লাভের জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করতে হবে। নবী-রাসূলগণ সুসন্তানের জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেছেন। ইবরাহীম (আঃ) বৃদ্ধ বয়সে সন্তান প্রার্থনা করে বলেছিলেন,  رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ ‘হে আমার রব! আমাকে সৎকর্মশীল সন্তান দান কর’ (ছাফ্ফাত ৩৭/১০০)। যাকারিয়া (আঃ) সুসন্তান প্রাপ্তির জন্য প্রার্থনা করে বলেছিলেন, رَبِّ هَبْ لِي مِنْ لَدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاءِ হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে তোমার পক্ষ হ’তে একটি পূত-চরিত্র সন্তান দান কর। নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা শ্রবণকারী’ (আলে ইমরান ৩/৩৮)। মুমিনদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হ’ল তারা সন্তানদের জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করবে। আল্লাহ তা‘আলা জন্য, رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদের স্ত্রীদের ও সন্তানদের মাধ্যমে চক্ষুশীতলকারী বংশধারা দান কর এবং আমাদেরকে আল্লাহভীরুদের জন্য আদর্শ বানাও’ (ফুরক্বান ২৫/৭৪)। সন্তানের জন্য খারাপ দো‘আ করা যাবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেন,لاَ تَدْعُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ وَلاَ تَدْعُوا عَلَى أَوْلاَدِكُمْ وَلاَ تَدْعُوا عَلَى أَمْوَالِكُمْ لاَ تُوَافِقُوا مِنَ اللَّهِ سَاعَةً يُسْأَلُ فِيهَا عَطَاءٌ فَيَسْتَجِيبُ لَكُمْ ‘তোমরা নিজেদের বিরুদ্ধে, নিজেদের সন্তান-সন্ততির বিরুদ্ধে, নিজেদের ধন-সম্পদের বিরুদ্ধে বদ দো‘আ কর না। কেননা, এমন হ’তে পারে যে, তোমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন একটি সময় পেয়ে বস, যখন আল্লাহর কাছে যা প্রার্থনা করবে, তোমাদের জন্য তা কবূল করে নেবেন’।[7]

    (খ) শিশুর তাহনীক্ব করা :

    ‘তাহনীক’ অর্থ খেজুর বা মিষ্টি জাতীয় কিছু চিবিয়ে বাচ্চার মুখে দেওয়া। আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)- এর কাছে শিশুদেরকে আনা হ’ত। তিনি তাদের জন্যে বরকত ও কল্যাণের দো‘আ করতেন এবং 'তাহনীক্ব (খেজুর চিবিয়ে মুখে ঢুকিয়ে দিতেন) করতেন।[8] হিজরতের পর মদীনায় জন্মগ্রহণকারী প্রথম মুহাজির সন্তান আব্দুল্লাহ বিন  যুবায়েরকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খেজুর চিবিয়ে তার মুখে দিয়ে ‘তাহনীক’ করেছিলেন। আসমা বিনতু আবীবকর (রাঃ) বলেন,فَخَرَجْتُ وَأَنَا مُتِمٌّ، فَأَتَيْتُ الْمَدِينَةَ، فَنَزَلْتُ بِقُبَاءٍ، فَوَلَدْتُهُ بِقُبَاءٍ، ثُمَّ أَتَيْتُ بِهِ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم  فَوَضَعْتُهُ فِى حَجْرِهِ، ثُمَّ دَعَا بِتَمْرَةٍ، فَمَضَغَهَا، ثُمَّ تَفَلَ فِى فِيهِ، فَكَانَ أَوَّلَ شَىْءٍ دَخَلَ جَوْفَهُ رِيقُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، ثُمَّ حَنَّكَهُ بِتَمْرَةٍ ثُمَّ دَعَا لَهُ وَبَرَّكَ عَلَيْهِ، وَكَانَ أَوَّلَ مَوْلُودٍ وُلِدَ فِى الإِسْلاَمِ  ‘আমি এমন সময় হিজরত করি যখন আমি আসন্ন প্রসবা। আমি মদীনায় এসে কুবাতে অবতরণ করি। এ কুবায়ই আমি পুত্র সন্তানটি প্রসব করি। এরপর আমি তাকে নিয়ে নবী করীম (ছাঃ)-এর কাছে এসে তাঁর কোলে দিলাম। তিনি একটি খেজুর আনালেন এবং তা চিবিয়ে তার মুখে দিলেন। কাজেই সর্বপ্রথম যে বস্ত্তটি আব্দুল্লাহর পেটে গেল তা হ’ল নবী করীম (ছাঃ)-এর মুখের লালা। রাসূল (ছাঃ) সামান্য চিবান খেজুর নবজাতকের মুখের ভিতরের তালুর অংশে লাগিয়ে দিলেন। এরপর তার জন্য  দো‘আ করলেন এবং বরকত চাইলেন। তিনি হ’লেন প্রথম নবজাতক যিনি হিজরতের পর মুসলিম পরিবারে জন্মলাভ করেন’।[9] আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) বলেন, وُلِدَ لِى غُلاَمٌ، فَأَتَيْتُ بِهِ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم فَسَمَّاهُ إِبْرَاهِيمَ، فَحَنَّكَهُ بِتَمْرَةٍ، وَدَعَا لَهُ بِالْبَرَكَةِ، وَدَفَعَهُ إِلَىَّ  ‘আমার একটি পুত্র সন্তান জন্মালে আমি তাকে নিয়ে নবী করীম (ছাঃ)-এর কাছে গেলাম। তিনি তার নাম রাখলেন ইব্রাহীম। তারপর খেজুর চিবিয়ে তার মুখে দিলেন এবং তার জন্য বরকতের দো‘আ করলেন অতঃপর আমার কাছে ফিরিয়ে দিলেন।[10] আবু ত্বালহা (রাঃ) তার সদ্যজাত পুত্রকে এনে রাসূল (ছাঃ)-এর কোলে দিলে তিনি খেজুর তলব করেন। অতঃপর তিনি তা চিবিয়ে বাচ্চার মুখে দেন ও নাম রাখেন ‘আব্দুল্লাহ’।[11]

    কোন কোন বিদ্বান এটিকে রাসূল (ছাঃ)-এর জন্য খাছ বলে অভিহিত করেছেন। কিন্তু তাদের এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ ছাহাবায়ে কেরাম ও তাবেঈগণের আমল দ্বারা তাহনীক করানোর বিষয়টি প্রমাণিত।[12] ইমাম নববী বলেন, শিশুর জন্মের পর খেজুর দ্বারা তাহনীক করানোর বিষয়ে ওলামায়ে কেরামের ঐক্যমত রয়েছে।[13]

    উল্লেখ্য, নবজাতকের মুখে চর্বিত বস্ত্ত প্রবেশ করানোতে শিশু জিহবা দ্বারা নড়াচড়ার কারণে তার দাঁতের মাড়ি মজবুত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। এতে সে মাতৃস্তন্যে মুখ লাগানোর প্রতি উৎসাহিত হবে এবং আগ্রহের সাথে পূর্ণশক্তি দিয়ে দুধ পান করতে অভ্যস্ত হবে। এছাড়াও খেজুরে প্রচুর পুষ্টিগুণ থাকার কারণে শিশু সার্বিকভাবে উপকৃত হবে। তার মিষ্টভাষী হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। তবে শিশুকে শালদুধ অবশ্যই পান করাবে। এর বহুবিদ উপকারিতা রয়েছে।

    (গ) আক্বীক্বাহ দেওয়া :

    ‘নবজাত শিশুর মাথার চুল অথবা সপ্তম দিনে নবজাতকের চুল ফেলার সময় যবহকৃত ছাগল বা দুম্বাকে আক্বীক্বাহ বলা হয়’ (আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব)। বুরায়দা (রাঃ) বলেন, জাহেলী যুগে আমাদের কারও সন্তান ভূমিষ্ট হ’লে তার পক্ষ হ’তে একটা বকরী যবেহ করা হ’ত এবং তার রক্ত শিশুর মাথায় মাখিয়ে দেওয়া হ’ত। অতঃপর ‘ইসলাম’ আসার পর আমরা শিশু জন্মের সপ্তম দিনে বকরী যবেহ করি এবং শিশুর মাথা মুন্ডন করে সেখানে ‘যাফরান’ মাখিয়ে দেই’।[14] রাযীন-এর বর্ণনায় এসেছে যে, ঐদিন আমরা শিশুর নাম রাখি’।[15]  আক্বীক্বাহ করা সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَعَ الْغُلاَمِ عَقِيْقَةٌ فَأَهْرِيْقُوْا عنه دَمًا وأَمِيْطُوا عَنْهُ الْأَذَى ‘সন্তানের সাথে আক্বীক্বাহ জড়িত। অতএব তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর এবং তার থেকে কষ্ট দূর করে দাও’।[16] অর্থাৎ তার জন্য একটি আক্বীক্বার পশু যবেহ কর এবং তার মাথার চুল ফেলে দাও। তিনি বলেন, كُلُّ غُلاَمٍ رَهِيْنَةٌ اومُرْتَهَنٌ بعقيقَتِهِ تُذْبَحُ عنه يومَ السَابِع ويُسَمَّى وَ يُحْلَقُ رَأْسُهُ  ‘প্রত্যেক শিশু তার আক্বীক্বার সাথে বন্ধক থাকে। অতএব জন্মের সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে পশু যবেহ করতে হয়, নাম রাখতে হয় ও তার মাথা মুন্ডন করতে হয়’।[17] উল্লেখ্য যে, সাত দিনের পূর্বে শিশু মারা গেলে তার জন্য আক্বীক্বার কর্তব্য শেষ হয়ে যায়।[18]

    (ঘ) সুন্দর নাম রাখা :

    সন্তানের সুন্দর ও ভাল অর্থবোধক নাম রাখতে হবে। কারণ তার এ নামই জীবন চলার পথে প্রভাব ফেলতে পারে। জন্মের পরেই সন্তানের নাম রাখা যাবে এবং সপ্তম দিনে আক্বীকার সময়েও নাম রাখা যায়। রাসূল (ছাঃ) সুন্দর নাম রাখার গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে বলেন, إِذَا أَبْرَدْتُمْ بَرِيدًا فَأَبْرِدُوهُ حَسَنَ الْوَجْهِ، حَسَنَ الاِسْمِ ‘তোমরা যখন আমার কাছে কোন দূত পাঠাবে তখন সুন্দর চেহারা ও সুন্দর নাম বিশিষ্ট ব্যক্তিকে পাঠাবে’।[19] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মন্দ নাম পরিবর্তন করে দিতেন।[20] এমনকি কোন গ্রাম বা মহল্লার অপসন্দনীয় নামও তিনি পরিবর্তন করে দিতেন।[21] তাঁর কাছে আগন্তুক কোন ব্যক্তির নাম অপসন্দনীয় মনে হ’লে তিনি তা পাল্টে দিয়ে ভাল নাম রেখে দিতেন।[22]

    ভাল নাম সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ),إِنَّ أَحَبَّ أَسْمَائِكُمْ إِلَى اللهِ عَبْدُ اللهِ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ ‘আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় নাম হ’ল ‘আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রহমান’।[23] ‘আল্লাহর দাস’ বা ‘করুণাময়ের দাস’ একথাটা যেন সন্তানের মনে সারা জীবন সর্বাবস্থায় জাগরুক থাকে। সেজন্যই ‘আব্দুল্লাহ’ ও ‘আব্দুর রহমান’ নাম দু’টিকে সর্বোত্তম বলা হয়েছে। অতএব আল্লাহ বা তাঁর গুণবাচক নামের সাথে ‘আব্দ’ সংযোগে নাম রাখাই উত্তম।

    অমুসলিমদের সাথে সামঞ্জস্যশীল ও শিরক-বিদ‘আতযুক্ত নাম বা ডাকনাম রাখা যাবে না। তাছাড়া অনারবদের জন্য আরবী ভাষায় নাম রাখা আবশ্যক। কেননা অনারব দেশে এটাই মুসলিম ও অমুসলিমের নামের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করে। আজকাল এ পার্থক্য ঘুচিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। তাই নাম রাখার আগে অবশ্যই সচেতন ও যোগ্য আলেমের কাছে পরামর্শ নিতে হবে।

    (ঙ) সুশিক্ষাদান :

    শিক্ষা অর্জন করা সকলের জন্য ফরয। সন্তানকে সুশিক্ষায় গড়ে তুলতে পারলেই সে সন্তান উভয় জগতে মাতা-পিতার কল্যাণে আসবে। আল্লাহ তা‘আলা প্রথম যে অহী নাযিল করেছেন তাতে শিক্ষা অর্জন করতে বলা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ - خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ- اقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ - الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ  ‘পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্তপিন্ড হ’তে। পড়, আর তোমার পালনকর্তা বড়ই দয়ালু। যিনি কলমের মাধ্যমে শিক্ষা দান করেছেন’ (আলাক্ব ৯৬/১-৪)। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ ‘ইলম শিক্ষা করা প্রত্যেক মুমিনের (পুরুষ ও নারী উভয়ের) জন্য ফরয’।[24] তিনি বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে কুরআন শিক্ষা করে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়’।[25]

    শিক্ষা ও জ্ঞানার্জনের মূল উদ্দেশ্য হবে স্রষ্টাকে জানা এবং তাঁর প্রেরিত বিধানসমূহ অবগত হওয়া। প্রকৃত শিক্ষা হ’ল সেটাই যা খালেক্ব-এর জ্ঞান দান করার সাথে সাথে ‘আলাক্ব-এর চাহিদা পূরণ করে। অর্থাৎ নৈতিক ও বৈষয়িক জ্ঞানের সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থাই হ’ল পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা ব্যবস্থা। মানবীয় জ্ঞানের সম্মুখে যদি অহি-র জ্ঞানের অভ্রান্ত সত্যের আলো না থাকে, তাহ’লে যেকোন সময় মানুষ পথভ্রষ্ট হবে এবং বস্ত্তগত উন্নতি তার জন্য ধ্বংসের কারণ হবে। উচ্চ শিক্ষা অর্জন করা প্রয়োজন। তবে উচ্চ শিক্ষার নামে সহশিক্ষা পরিহার করা উচিত। একান্ত প্রয়োজনে সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্তানকে পড়াতে হ’লে তাদের পর্দার ব্যাপারে গভীর দৃষ্টি দিতে হবে। অন্যথা সন্তান নৈতিকতা হারিয়ে অপূরণীয় ক্ষতিতে নিমজ্জ্বিত হবে। সন্তান বাইরে পড়া-শুনা করতে গেলে তার দৈনন্দিন জীবনের কর্মসূচির খবর রাখতে হবে। সে নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকার সুবাধে কোন সন্ত্রাসবাদের সথে জড়িয়ে পড়ছে কী-না সে বিষয়ে পিতা-মাতাকে খোঁজ রাখতে হবে। নতুবা সে নিজে ধ্বংস হবে, পরিবারকে ধ্বংস করবে এবং গোটা জাতিকে এক ভয়ানক পরিস্থিতিতে নিক্ষেক করবে।

    (চ) শিষ্টাচার শিক্ষা দেওয়া :

    পিতা-মাতার অন্যতম দায়িত্ব হ’ল সন্তানকে আদব শিক্ষা দেওয়া। পায়খানা পেশাব করার পদ্ধতি, বাড়ীতে প্রবেশ ও বের হওয়ার দো‘আ, সকলের সাথে সদাচারণ, সালাম বিনিময়, শিক্ষক ও গুরুজনদের সম্মানসহ সকল বিষয়ে সন্তানকে শিক্ষা দিবে পিতা-মাতা। প্রয়োজনে শাসন করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, وَلاَ تَرْفَعْ عَنْهُمْ عَصَاكَ أَدَباً ‘তুমি তোমার পরিবারের উপর হ’তে শিষ্টাচারের লাঠি উঠিয়ে নিও না’।[26] তিনি আরো বলেন, عَلِّقُوا السَّوْطَ حَيْثُ يَرَاهُ أَهْلُ الْبَيْتِ فَإِنَّهُ لَهُمْ أَدَبٌ  ‘তোমরা লাঠি ঐ জায়গায় লকটিয়ে রাখ যেখানে গৃহবাসীর দৃষ্টি পড়ে। কারণ এটা তাদের জন্য আদব তথা শিষ্টাচারের মাধ্যম’।[27] শাসন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই মধ্যম পন্থা অবলম্বন করতে হবে। শারীরিক শাসনের ক্ষেত্রে দশ বেত্রাঘাতের বেশী করা যাবে না। তবে তিন বেত্রাঘাতে সীমাবদ্ধ থাকা ভাল। এমন আঘাত করা যাবে না যাতে সন্তানের দেহ ক্ষত হয়ে যায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, لاَ يُجْلَدُ فَوْقَ عَشْرِ جَلَدَاتٍ إِلاَّ فِى حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللهِ ‘আল্লাহর দন্ডবিধি ব্যতীত কোন ক্ষেত্রে দশ বেত্রাঘাতের বেশী শাস্তি নেই।[28] ইবনু ওমর (রাঃ) কুরআন পাঠের উচ্চারণে ভুল করার কারণে স্বীয় সন্তানকে প্রহার করছিলেন।[29] তবে এই শাসন কেবল তাদের সংশোধনের উদ্দেশ্যে হতে হবে। ইবনু ওমর (রাঃ) জনৈক লোককে উপদেশ স্বরূপ বলেন, তোমার সন্তানকে শিষ্টারচার শিক্ষা দাও। কারণ তুমি তোমার সন্তানের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে যে, তুমি তাকে কি আদব শিখিয়েছ, তুমি তাকে কি শিক্ষাদান করেছ? আর সে তোমার সাথে স্বদাচারণ ও তোমার আনুগত্যের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে।[30] সূরা তাহরীমের ৬ আয়াতের ব্যাখ্যায় আলী (রাঃ) সহ প্রমূখ বলেন, أَوْصُوا أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ بِتَقْوَى اللَّهِ وَأَدِّبُوهُمْ ‘ তোমরা নিজেদের ও পরিবার-পরিজনদের আল্লাহ ভীতির ব্যাপারে উপদেশ দাও এবং তাদেরকে শিষ্টাচার শিক্ষা দাও।[31]

    (ছ) সন্তানকে ইবাদত পালনের প্রশিক্ষণ দেওয়া :

    সন্তানকে ছোট থেকেই যাবতীয় ইবাদত পালনের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তাকে আক্বাঈদ, তাওহীদ, রিসালাত ও শিরক-বিদ‘আত সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে হবে। বিশেষতঃ ছালাত ও ছাওমের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلاَةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا ‘আর তুমি তোমার পরিবারকে ছালাতের আদেশ দাও এবং তুমি এর উপর অবিচল থাক’ (ত্বাহা ২০/১৩২)। তিনি আরো বলেন, وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ ‘আর তুমি তোমার নিকটাত্মীয়দের সতর্ক কর’ (শু‘আরা ২৬/২১৪)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, আমর ইবনু শু‘আইব (রাঃ) তার পিতা অতঃপর দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন, ‘তোমাদের সন্তান যখন সাত বৎসরে পদার্পণ করে তখন তাকে ছালাতের প্রশিক্ষণ দাও। আর দশ বছর হ’লে তাকে ছালাতের জন্য শাসন কর এবং তাদের পরস্পরের বিছানা আলাদা করে দাও’।[32] ছাহাবায়ে কেরাম ছোট বাচ্চাদের ছালাত ও ছিয়ামের প্রশিক্ষণ দিতেন। তারা ছোট শিশুদের সাথে করে ছালাতের উদ্দেশ্যে মসজিদে যেতেন। রুবা‘ই বিনতে মু‘আবিবয (রাঃ) বলেন, فَكُنَّا نَصُومُهُ بَعْدُ، وَنُصَوِّمُ صِبْيَانَنَا، وَنَجْعَلُ لَهُمُ اللُّعْبَةَ مِنَ الْعِهْنِ، فَإِذَا بَكَى أَحَدُهُمْ عَلَى الطَّعَامِ أَعْطَيْنَاهُ ذَاكَ، حَتَّى يَكُونَ عِنْدَ الإِفْطَار-ِ  ‘পরবর্তীতে আমরা ঐ দিন (আশূরার) ছাওম পালন করতাম এবং আমাদের শিশুদের ছাওম পালন করাতাম। আমরা তাদের জন্য পশমের খেলনা তৈরী করে দিতাম। তাদের কেউ খাবারের জন্য কাঁদলে তাকে ঐ খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখতাম। আর এভাবেই ইফতারের সময় হয়ে যেত।[33] ইমাম নববী ও ইবনু হাজার প্রমূখ বলেন, এ হাদীছে শিশুদের জন্য ছিয়াম রাখা শরী‘আত সম্মত হওয়ার, তাদেরকে ইবাদতে অভ্যাস্ত করার জন্য হওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রমাণ মেলে। তবে এটি তাদের জন্য আবশ্যক নয়।[34]

    (জ) সন্তানের প্রতি খরচ করা :

    সন্তান স্বাবলম্বী না হওয়া পর্যন্ত তাদের যাবতীয় খরচ পিতা-মাতাকে বহন করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আর জন্মদাতা পিতার দায়িত্ব হ’ল ন্যায়সঙ্গতভাবে প্রসূতি মায়েদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করা। রাসূল (ছাঃ) বলেন, وَلأَهْلِكَ عَلَيْكَ حَقًّا ، فَأَعْطِ كُلَّ ذِى حَقٍّ حَقَّهُ  ‘তোমার পরিবারেরও তোমার প্রতি অধিকার রয়েছে। অতএব প্রত্যেক হক্বদারকে তার হক্ব প্রদান কর’।[35] রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, وَأَنْفِقْ عَلَى عِيَالِكَ مِنْ طَوْلِكَ ‘আর তুমি সাধ্যমত তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ কর’।[36] তিনি আরো বলেন, وَابْدَأْ بِمَنْ تَعُولُ ‘প্রথমে তাদেরকে দিবে যাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব’।[37] আবু সুফিয়ান (রাঃ) তার সন্তানদের প্রতি খরচ করতে কার্পণ্য করলে তার স্ত্রী হিন্দা বিনতে উতবা রাসূল (ছাঃ)- কে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আবু সুফিয়ান একজন কৃপণ লোক। আমাকে এত পরিমাণ খরচ দেন না, যা আমার ও আমার সন্তানদের জন্য যথেষ্ট হ’তে পারে যতক্ষণ না আমি তার অজান্তে মাল থেকে কিছ নিই। তখন তিনি বললেন, তোমার ও তোমার সন্তানের জন্য ন্যায়সঙ্গতভাবে যা যথেষ্ট হয় তা তুমি নিতে পার’।[38] তাছাড়া সন্তানের প্রতি খরচ করলে সেটি ছাদাক্বাহ হিসাবে গণ্য হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِذَا أَنْفَقَ الرَّجُلُ عَلَى أَهْلِهِ يَحْتَسِبُهَا فَهُوَ لَهُ صَدَقَةٌ ‘মানুষ স্বীয় পরিবার-পরিজনের জন্য পুণ্যের আশায় যখন ব্যয় করে তখন সেটা তার জন্য ছাদাক্বাহ হয়ে যায়’।[39] তবে সন্তানকে অর্থ দেওয়ার পর পিতা-মাতাকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে যে, সন্তান সে অর্থ কোন পথে ব্যয় করছে। দেখা যায়, সন্তানের কাছে অধিক অর্থ থাকার কারণে অপচয় করার পাশাপাশি বিপথগামী হয়ে পড়ছে। এমনটি তাদের অবহেলা ঘটলে পিতা-মাতায় দায়ী হবে।

    যখন পিতা তার সন্তানকে শিক্ষা-দীক্ষা দান ও তার প্রতি যা কিছু ব্যয় করা দরকার তা করার মাধ্যমে তার উপর ন্যস্ত কর্তব্য পালন করবে, তখন তার সন্তানও পিতা-মাতার প্রতি সদয় আচরণ করবে এবং তার যাবতীয় অধিকারকে সংরক্ষণ করবে। আর পিতা যদি এ ব্যাপারে ত্রুটি করেন তাহ’লে সন্তানের অবাধ্যতা সম্ভাবনা হওয়ার রয়েছে।

    [1]. আহমাদ হা/১০৬১৮; ইবনু মাজাহ হা/৩৬৬০; ছহীহাহ হা/১৫৯৮।

    [2]. মুসলিম হা/১৬৩১; মিশকাত হা/২০৩।

    [3]. বুখারী হা/২৭৫১; মুসলিম হা/১৮২৯; মিশকাত হা/৩৬৮৫।

    [4]. মুসলিম হা/১১৫৯।

    [5]. বুখারী হা/১৯৬৮; মিশকাত হা/২০৬১।

    [6]. আহমাদ হা/৪৬৩৭, সনদ ছহীহ।

    [7]. মুসলিম হা/৩০০৯; মিশকাত হা/২২২৯।

    [8]. মুসলিম হা/২৮৪; মিশকাত হা/৪১৫০।

    [9]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪১৫১।

    [10]. বুখারী হা/৫৪৬৭; আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৮৪০; আহমাদ হা/২৪৬৬৩।

    [11]. বুখারী হা/৫৪৭০, মুসলিম হা/২১৪৪।

    [12]. আহমাদ হা/১২০৪৭, আবু ইয়া‘লা ৩৮৮২, সনদ ছহীহ ; আল-বিদায়াহ ৯/২৭৪; ইবনুল কাইয়িম, তোহফাতুল মাওলূদ ৩৩ পৃষ্ঠা।

    [13]. মুসলিম, শরহ নববী ১৪/১২২-২৩।

    [14]. আবুদাঊদ হা/২৮৪৩; আছার ছহীহাহ হা/৪৬৩।

    [15]. মিশকাত হা/৪১৫৮ ‘যবহ ও শিকার’ অধ্যায়, ‘আক্বীক্বা’ অনুচ্ছেদ।

    [16]. বুখারী হা/৫৪৭১; মিশকাত হা/৪১৪৯ ‘আক্বীক্বা’ অনুচ্ছেদ।

    [17]. আবুদাঊদ, নাসাঈ, ইরওয়া হা/১১৬৫; ছহীহুল জামে‘ হা/৪১৮৪।

    [18]. নায়লুল আওত্বার ৬/২৬১ পৃঃ।

    [19]. ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩৩৬৭৯; ছহীহাহ হা/১১৮৬।

    [20]. তিরমিযী হা/২৮৩৯; মিশকাত হা/৪৭৭৪; ছহীহাহ হা/২০৭।

    [21]. ত্বাবারাণী, ছহীহাহ হা/২০৮।

    [22]. মুসনাদুশ শামেঈন হা/১৬২৭; ছহীহাহ হা/২০৯।

    [23]. মুসলিম হা/২১৩২; মিশকাত হা/৪৭৫২‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়।

    [24]. ইবনু মাজাহ হা/২২৪; ছহীহুল জামে‘ হা/৩৯১৩; মিশকাত হা/২১৮।

    [25]. বুখারী, মিশকাত হা/২১০৯।

    [26]. আহমাদ হা/২২১২৮; ছহীহ আত-তারগীব হা/৫৭০; মিশকাত হা/৬১।

    [27]. মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/১৩২১৭; ছহীহাহ হা/১৪৪৭।

    [28]. বুখারী হা/৬৮৪৯; মিশকাত হা/৩৬৩০।

    [29]. আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৮৮০, সনদ ছহীহ।

    [30]. বায়হাকী, সুনানুল কুবরা হা/৪৮৭৭; শু‘আবুল ঈমান হা/৮৬৬২।

    [31]. বুখারী ১৬/২৮১; শু‘আবুল ঈমান হা/৮৬৪৮।

    [32]. বায়হাকী, সুনানুল কুবরা হা/৩০৫৩; আবুদাঊদ হা/৪৯৫; ছহীহুল জামে‘ হা/৪০২৬; মিশকাত হা/৫৭২।

    [33]. বুখারী হা/১৯৬০; মুসলিম হা/১১৩৬।

    [34]. শারহুন নববী আলা মুসলিম ৮/১৪; ফাতহুল বারী ৪/২০১।

    [35]. বুখারী হা/১৯৬৮; মিশকাত হা/২০৬১।

    [36]. আহমাদ হা/২২২১২৮; মিশকাত হা/৬১; ছহীহ আত-তারগীব হা/৫৭০।

    [37]. বুখারী হা/১৪২৬; মুসলিম হা/১০৩৪’ মিশকাত হা/১৯২৯।

    [38]. বুখারী হা/৫৩৬৪; মুসলিম হা/১৭১৪; মিশকাত হা/৩৩৪২।

    [39]. বুখারী হা/৫৫; মুসলিম হা/১০০২।

     


    Comments

    Not using Html Comment Box  yet?
    Delowar Hossen · Mar 20, 2023

    Ma-Sha-allah

    rss