কবিতা
স্বীকৃতির প্রতিদান
-আবু আব্দুল্লাহ রাযী, রাজশাহী
আল্লাহ এক, স্বীকৃতিতে মুমিন বল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ,
তাওহীদের ঐ ঝান্ডাবাহী নবী মুহাম্মাদ ছাল্লিল্লাহ।
কালের গর্ভে বিলীন দ্বীনকে করতে উজ্জীবিত,
অহি-র বিধান প্রাপ্ত হ’ল আব্দুল্লাহর পুত্র।
জাহেলী যুগের বর্বরতা করতে নস্যাৎ,
দাওয়াত দিল আমেনার ধন মানল না জাতপাত।
যে ‘আল-আমীন’ ছিল সবার চোখের মণিতুল্য,
আল্লাহ এক আহবানে সবাই তারে দললো।
চোখের বালি হ’লেন নবী আরববাসীর কাছে,
গুটি কয়েক তরুণ এসে দাঁড়াল তাঁর পাশে।
আহার নেই নিদ্রা নেই মলিন তাদের-মুখ,
কালেমার কেতন উড্ডীন করবে ওটাই তাদের সুখ।
শাহাদাত ছিল কাম্য তাদের, তাই তারা সদা অকুতোভয়,
হাবশী বেলাল সফল হ’ল ঈমান আরও দীপ্তি পেল,
ইসলাম এবার বিজয়ী হ’ল সমগ্র ধরায়।
--০--
জীবনের মানে
-আব্দুর রউফ সালাফী
ছোট্ট বেলা খেলায় কেটেছে জননীর কোলে,
শৈশব কাটালাম দৌড়-ঝাঁপ আর হাঁসি-উল্লাসে,
যৌবনের বেগে ছুটেছি কালস্রোতে অবলীলায় ভেসে।
ভাবিনিতো হায়! এ জীবন হবে ক্ষয় এক নিমিষে,
হে যুবক! তুমি অগ্নিগোলক ধর খঞ্জন কশে,
ডেকেছে নযরুল শুনিনি! থেকেছি উম্মাদ বেশে।
জীবনের পড়ন্ত বিকেলে সম্মতি ফিরে পেয়ে করি হাহাকার,
কেমনে করিব ইবাদত! রুগ্ন আমি অসাড় নির্বিকার।
কেবল ভগ্ন হৃদয়ে হায়! জীবন প্রদীপ নিবুনিবু করে,
অবশেষে ভাই! হুঁশ ফিরে পায় বুঝলাম জীবনের মানে।
--০--
আহলেহাদীছ কি?
-মুহাম্মাদ নাজমুল হক্ব, নারায়ণগঞ্জ
আহলেহাদীছ হ’ল কুরআন ও ছহীহ হাদীছের অনুসারী।
আহলেহাদীছ হ’ল শিরক-বিদ‘আত মুক্ত
তাওহীদের ঝান্ডা উত্তোলনকারী।
আহলেহাদীছ হ’ল সারা দুনিয়ার ত্বাগূতের বিরুদ্ধে
এক আপোষহীন অহি-র আন্দোলনের নাম।
আহলেহাদীছ হ’ল ইজ্মা, ক্বিয়াস, ফিকহ্ ছেড়ে
কুরআন ও ছহীহ হাদীছকে অাঁকড়ে ধরার নাম।
আহলেহাদীছ হ’ল সবদিক ছেড়ে ফিরে অহি-র পথে থাকা।
আহলেহাদীছ হ’ল ব্যক্তিগত, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক
তথা জীবনের সকল ক্ষেত্রে অহি-র পথে চলা।
আহলেহাদীছ হ’ল একটি দাওয়াতের নাম।
আহলেহাদীছ হ’ল পৃথিবীতে ইনছাফ প্রতিষ্ঠা করার
এক আপোষহীন কাফেলার নাম।
আহলেহাদীছ হ’ল দলীয় গোঁড়ামির ঊর্ধ্বে উঠে
নিরপেক্ষভাবে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ মানা।
আহলেহাদীছ হ’ল সার্বিক জীবনে তাক্বওয়া অবলম্বন করা।
আহলেহাদীছ হ’ল সৃষ্টিকে স্রষ্টার বিধান অনুযায়ী
পরিচালিত করার দাওয়াতী কাফেলার নাম।
আহলেহাদীছ হ’ল চরমপন্থা পরিহার করে
সামাজিক ঐক্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।
আহলেহাদীছ কোন মতবাদ নয়,
ইহা একটি সঠিক পথের নাম।
আহলেহাদীছ হ’ল মানুষের সার্বিক জীবনকে
কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে পরিচালনা করার গভীর প্রেরণার নাম।
আহলেহাদীছ হ’ল জেল-যুলুম সহ্য করেও নির্ভেজাল তাওহীদের দাওয়াত।
সর্বমহলে পৌঁছে দেওয়ার কাফেলার নাম।
আহলেহাদীছ হ’ল শিরক ও বিদ‘আত মূলোৎপাটনকারী
এক আন্দোলনের নাম।
আহলেহাদীছ হ’ল নির্ভেজাল ইসলামী আন্দোলনের নাম।
আহলেহাদীছ হ’ল আল্লাহর সর্বশেষ অহি ভিত্তিক
সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের এক বৈপ্লবিক সংগ্রাম।
আহলেহাদীছ হ’ল কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর
সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারকে অক্ষুণ্ণ রাখার
চিরন্তন শহীদী কাফেলার নাম।
--০--
এগিয়ে চল সম্মুখপানে
-আসাদুল্লাহ আল-গালিব, কুষ্টিয়া
ইতিহাস যাদের গৌরবময়, চির দীপ্তিমান,
এমন শ্রেষ্ঠ জাতি নাম তার মুসলমান।
শুনিয়েছিল যারা দিকে দিকে সাম্যের জয়গান,
পদচুম্বন করেছিল যাদের নেতৃত্ব আর সম্মান।
খলীফা ওমর করেছেন শাসন অর্ধ-পৃথিবী,
কায়েম হয়েছিল সংঘাতমুক্ত শান্তিররাজ, নয় তো বিপ্লবী।
ধরণী কেন হয়েছে আজ রক্তে রঞ্জিত,
সবখানে আজি যায় দেখা মুসলিম লাঞ্চিত।
এভাবেই কি বইবে তুমি লাঞ্চনার ঐ বোঝা?
উড়িয়ে আবার দেখাও তুমি মহাসত্যের ধ্বজা।
অবনী পরে তোমার অবদান নয়তো সামান্য,
প্রয়োজন শুধু তোমার লাগি একটু চৈতন্য।
জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানাদিক করেছ উন্মোচন,
শিল্প-সাহিত্যেও রেখেছ তুমি বহুমুখী অবদান।
মানব-সভ্যতার ইতিহাস তো তোমার হাতেই গাঁথা,
ধরা-মাঝে জানে না কে এসব সত্য কথা।
চিকিৎসা শাস্ত্রে তুমিইতো আলী ইবনু সীনা,
‘কানুন ফিত তিবব’ তোমার সৃষ্টি নয়তো কারো অজানা।
এতকিছু করেও তুমি নির্যাতনের শিকার,
পূর্বসূরীদের আদর্শে জেগে ওঠ ফের হয়ে দুর্নিবার।
তুমিই পারো রুখে দিতে সকল আগ্রাসন,
শাহাদত তোমায় করবে আলিঙ্গন।
তোমার শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি রয়েছে সবখানে,
মুসলিম! তুমি এগিয়ে চল সম্মুখপানে।