নিজেকে জানুন!
তাওহীদের ডাক ডেস্ক
নয় বছরের জাপানী শিশু। সুনামিতে পিতা-মাতাসহ পরিবারের সবাইকে হারিয়ে আশ্রয় শিবিরে উঠেছে। শিবিরের সবাই ক্ষুধা আর শীতে কাঁপছে। স্বেচ্ছাসেবীরা রুটি বিলি করছেন। আশ্রিতরা লাইনে দাঁড়িয়ে। ছেলেটিও আছে। এক বিদেশী সাংবাদিক দেখলেন, যা রুটি আছে তাতে লাইনের সবার হবে না। ছেলেটির কপালেও জুটবে না। সাংবাদিক ছাহেব তার কোর্টের পকেটে রাখা নিজের ভাগের রুটি দুটো ছেলেটিকে দিলেন। ছেলেটি ধন্যবাদ দিয়ে রুটি গ্রহণ করল। তারপর যেখান থেকে রুটি বিলি হচ্ছিল সেখানেই ফেরত দিয়ে আবার লাইনে এসে দাঁড়াল।
সাংবাদিক সাহেব কৌতুহল ঢাকতে পারলেন না। ছেলেটিকে জিজ্ঞাস করলেন, এ কাজ কেন করলে খোকা? খোকা উত্তর দিল, বন্টন তো ওখান থেকে হচ্ছে। ওঁদের হাতে থাকলে বন্টনে সমতা আসবে। তাছাড়া লাইনে আমার চেয়েও বেশী ক্ষুধার্ত লোকও তো থাকতে পারে।
সহানুভুতিশীল হ’তে গিয়ে বন্টনে অসমতা এনেছেন, এই ভেবে সাংবাদিক সাহেবের পাপবোধ হ’ল। ছেলের কাছে কি বলে ক্ষমা চাইবেন ভাষা হারালেন তিনি।
*******
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে হেরে গিয়ে জাপানের সম্রাট হিরোহিতো আমেরিকার প্রতিনিধি ম্যাক আর্থারের কাছে গেলেন। প্রতীকী হিসাবে নিয়ে গেলেন এক ব্যাগ চাল। হাঁটু গেড়ে মাথা পেতে দিয়ে বললেন, আমার মাথা কেটে নিন, আর এই চালটুকু গ্রহণ করুন। আমার প্রজাদের রক্ষা করুন। ওরা ভাত পসন্দ করে। ওদের যেন ভাতের অভাব না হয়।
আরে ব্যাটা, তুই যুদ্ধে হেরেছিস, তোর আত্মীয়-স্বজন নিয়ে পালিয়ে যা। কোরিয়া বা তাইওয়ান যা। ওখানকার ‘মীর জাফর’দের সাথে হাত মেলা। সেখান থেকে হুংকার দে।
সম্রাট হিরোহিতোর এই আচরণ আমেরিকানদের পসন্দ হ’ল। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের কুখ্যাত মহানায়কদের মধ্যে কেবলমাত্র হিরোহিতোকেই বিনা আঘাতে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল।
*******
জাপানে পড়তে যাওয়া এক ছাত্রী ফোনে বলল,
-বড়ই লজ্জায় আছি। -কেন, কি হয়েছে ?
-ড্রইং ক্লাসে ড্রইং বক্স নিয়ে যাইনি। -তো ?
-জাপানী স্যার বড় একটা শিক্ষা দিয়েছেন।
-কি করেছেন? -আমার কাছে এসে ক্ষমা চেয়েছেন। বলেছেন আজ যে ড্রইং বক্স নিয়ে আসতে হবে, তা স্মরণে রাখার মত জোর দিয়ে তিনি আমাকে বুঝিয়ে বলতে পারেন নি। তাই তিনি দুঃখিত।
-আমি তো আর কোনদিন ড্রইং বক্স নিতে ভুলবো না। আজ যদি তিনি আমাকে ধমক দিতেন বা অন্য কোন শাস্তি দিতেন, আমি হয়ত কোন একটা মিথ্যা অজুহাত দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করতাম। [সূত্র : ইন্টারনেট]