পৃথিবী কাঁপানো ভয়াবহ ভূমিকম্প

আসাদুল্লাহ আল-গালিব 430 বার পঠিত

উপস্থাপনা :

বান্দা যখন অপরাধের পাল্লা ভারি হয়ে যায় তখন আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা তাদের সতর্ক করার জন্য বিভিন্ন ধরনের আযাব দিয়ে থাকেন। কেননা প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলো মানুষেরই কর্মফল। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন,ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ لِيُذِيقَهُمْ بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ- ‘স্থলে ও সমুদ্রে সর্বত্র বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের কৃতকর্মের ফল হিসাবে। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাদের কর্মের কিছু শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা (পাপ ছেড়ে আল্লাহর দিকে) ফিরে আসে’ (রূম ৩০/৪১)

আর হাদীছে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ভূমিধস, চেহারা বিকৃতি এবং পাথর বর্ষণস্বরূপ আযাব এ উম্মাতের মাঝে ঘনিয়ে আসবে। জনৈক মুসলিম ব্যক্তি প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল! কখন এসব আযাব সংঘটিত হবে? তিনি বললেন, যখন গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্র বিস্তৃতি লাভ করবে এবং মদ্যপানের সয়লাব শুরু হবে’ (তিরমিযী হা/২২১২)

সুতরাং এ ধরণের বিপর্যয় আমাদের মন্দ আমলের কাণেই। আলোচ্যে প্রবন্ধে ইতিহাসের পাতা থেকে পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া কিছু প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের কথা তুলে ধরা হ’ল।

  1. ৬ই ফেব্রুয়ারী ২০২৩ তুরস্ক-সিরিয়া : পৃথিবীর সর্বশেষ ভয়াবহ প্রাণঘাতি ভূমিকম্প হ’ল ২০২৩ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারী, সোমবার। ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে পর পর দু’টি ভূমিকম্প আঘাত হানে তুরস্ক-সিরিয়ায়। যার মাত্রা ছিল ৭.৮ এবং ৭.৬। উৎপত্তি তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ অঞ্চলে। এতে সরকারী হিসাবে প্রায় ৫০ সহস্রাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৮০ হাযারের বেশী। এই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কমপক্ষে ৪ কোটি মানুষ। এ পর্যন্ত ৩৮০-এর অধিক আফটার শক গণনা করা হয়েছে।
  2. ২২শে জুন ২০২২ আফগানিস্তান : গত বছরের ২২ জুনে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। যা পাকিস্তানেও অনুভূত হয়েছিল। ভূমিকম্পের উৎসস্থল আফগানিস্তানের খোস্ত শহর থেকে ৪৪ কিলোমিটার দূরে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬.১। এই ভূমিকম্পে অন্তত ১ হাযার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। আহত হয়েছিল দেড় হাযার। ভূমিকম্পে পাকতিকা প্রদেশে অনেক যেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ধসে পড়েছিল প্রায় সাড়ে চার হাযার বাড়ি।
  3. ১৪ই আগস্ট ২০২১ হাইতি : ২০২১ সালের ১৪ আগস্ট রোববার সকাল ৮টা ২৯ মিনিটে হাইতির দক্ষিণাঞ্চলে ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। হাইতির রাজধানী থেকে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার দূরে ভূমিকম্পের কেন্দ্র। এতে ২ হাযার ২০০ জনেরও বেশী মানুষ নিহত এবং প্রায় ১৩ হাযার ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
  1. ১২ই নভেম্বর ২০১৭ ইরান-ইরাক : ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর রবিবার ইরানের পূর্বাঞ্চলীয় কেরমানশাহ অঞ্চলে ৭.৩ মাত্রার এবং ইরাকে ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ইরানের অন্তত ১৪টি প্রদেশ। ইরানের ভূমিকম্প অধিদপ্তর ১১৮টি ‘আফটার শক’ গণনা করেছিল। ইরান সীমান্তের খুব কাছে আধা-স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলে সুলায়মানিয়াহ প্রদেশের পেনজিনে ছিল এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। ভূমিকম্পটি ২৫ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে। এটি বাগদাদে ২০ সেকেন্ড স্থায়ী ছিল। এ ভূমিকম্পে ৪০০ জনেরও বেশী প্রতিবেশী দেশ ইরাকে অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
  2. ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০১৭ মেক্সিকো : ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০১৭ মেক্সিকোতে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছিল। ভূমিকম্পে যখন মেক্সিকো কেঁপে উঠে তখন মেক্সিকো সিটির মানুষ ভূমিকম্পের মহড়ায় অংশ নিচ্ছিল। এই ভূমিকম্পে ধসে পড়েছিল রাজধানী মেক্সিকো সিটির অসংখ্য ভবন। এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মেক্সিকো সিটি থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে পুয়েবলা রাজ্যের আতেনসিঙ্গো এলাকায়। কেন্দ্র ছিল ভূ-পৃষ্ঠের ৫১ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মোরেলোস ও পুয়েবলা রাজ্যে।
  1. ২৪শে অগাস্ট ২০১৬ ইতালি : ২৪শে অগাস্ট ২০১৬ বুধবার ইতালিতে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছিল অন্তত ৩৬৮ জন। ভোররাত ৩টা ৩৬ মিনিটে উমব্রিয়া অঞ্চলের পেরুজিয়া প্রদেশে ওই ভূমিকম্পে মূলত প্রাচীন শহর অ্যামাট্রিস প্রায় বিধ্বস্ত হয়ে যায়। ধ্বংস হয়ে যায় শত বছরের ঐতিহাসিক ভবন। এই এলাকা থেকে ১৭০ কিলোমিটার দূরের রাজধানী রোম নগরেও কম্পন অনুভূত হয়েছিল।
  2. ১৬ই এপ্রিল ২০১৬ ইকুয়েডর : ১৬ই এপ্রিল ২০১৬ লাতিন আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কয়েকটি রাজ্যে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো থেকে এ কম্পনের দূরত্ব ছিল ১৪৬ কিলোমিটার। ভূমিকম্পে সাড়ে ৬০০-এর বেশী নিহত ও ১৬ হাযারের বেশী আহত হয়েছিল। ধ্বংস হয়েছিল সাত হাযারের বেশী ভবন।
  3. ২৬শে অক্টোবর ২০১৫ পাকিস্তান-আফগানিস্তান : আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হেনেছিল ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের জুরম যেলা। এলাকাটি হিন্দুকুশ পাহাড়ি অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত এবং রাজধানী কাবুল থেকে ২৫০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। এই ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল পাকিস্তানে। দেশটির করাচি, লাহোর, ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিন্ডি, কোয়েটা, কোহাত ও মালাকান্দসহ উত্তরাঞ্চলের অনেক ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। অনেক এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। এতে পাকিস্তানে প্রাণ হারিয়েছিল অন্তত ৪০০ মানুষ। পাকিস্তান ছাড়াও ভারতের উত্তরাঞ্চল ও তাজিকিস্তানেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল।
  1. ২৫শে এপ্রিল ২০১৫ নেপাল : ২৫শে এপ্রিল ২০১৫ নেপালে বেলা ১২টার দিকে ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। কাঠমুন্ডু থেকে ৮১ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এবং পোখরা থেকে ৮০ কিলোমিটার পূর্বের লামজুং এলাকা ভূমিকম্পের উতপত্তিস্থল। সমুদ্র পৃষ্ঠের ২ কিলোমিটার গভীরে রিখটার স্কেলে প্রথম দিকে এর মাত্রা ছিল ৭.৫। এই ভূমিকম্পে আট হাযারেরও বেশী মানুষ নিহত ও প্রায় ২২ হাযার মানুষ আহত হয়েছিল। হাযার হাযার মানুষ হয়েছিল গৃহহীন। নেপালের কয়েকটি পাহাড়ী এলাকায় প্রায় ৯৮ শতাংশ ঘরবাড়ীই ধ্বংস হয়েছিল।
  2. ৩রা অগাস্ট ২০১৪ চীন : চীনের ইউনান প্রদেশে স্থানীয় সময় ৪টা ৩০ মিনিটে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছিল ৬০০-এর মতো মানুষ। ধ্বংস হয়েছিল হাযার হাযার ঘরবাড়ী। ভূমিকম্পের ফলে ভূমিধ্বসের ঘটনাও ঘটেছিল। প্রায় ২৪০০ মানুষ আহত হয়েছিল। ইউনান প্রদেশের ১১ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে উনপিংয়ে ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার অভ্যন্তরে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল।
  3. ১৫ই অক্টোবর ২০১৩ ফিলিপিন্স : ফিলিপিন্সে বোহোল ও কেবু নামক এলাকায় ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পে ২০০ এর বেশী মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল।
  4. ২৫শে সেপ্টেম্বর ২০১৩ পাকিস্তান : ২৫শে সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে মঙ্গলবার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বালুচিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকায় আঘাত হেনেছিল পরপর দু’টি শক্তিশালী ভূমিকম্প। একটির মাত্রা ছিল ৭.৭, অপরটির ৬.৮। মূলত ভূমিকম্প হয়েছিল প্রদেশটির আওরান যেলায়। তবে রাজধানী ইসলামাবাদ ছাড়াও রাওয়ালপিন্ডি, করাচি, লাহোর, লারকানার মতো বড় বড় শহরগুলোয়ও ভূকম্পন অনুভূত হয়েছিল। এছাড়া পাকিস্তানের বাইরে ভারতের নয়াদিল্লি এবং ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে ওমানের রাজধানী মাসকাটেও ভূকম্পন অনুভূত হয়েছিল। এ ভূমিকম্পে বেলুচিস্তানের অসংখ্য গ্রাম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। এতে কমপক্ষে ৮২৫ জন নিহত এবং আহত হয়েছিল এক হাযারের বেশী মানুষ।
  5. ২০শে এপ্রিল ২০১৩ চীন : চীনের সিচুয়ান প্রদেশে ৬.৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ১৬০ জন নিহত হয়েছিল এবং আহত হয়েছিল ৫৭০০-এর বেশী মানুষ।
  6. ১১ই অগাস্ট ২০১২ ইরান : ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ দু’টি ভূমিকম্পে অন্তত ২৫০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল, আহত হয়েছিল দুই হাযারেরও বেশী মানুষ।
  7. ২৩শে অক্টোবর ২০১১ তুরস্ক : তুরস্কে ৭.২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে প্রাণ হারায় দুই শতাধিক মানুষ। আহত হয়েছিল অন্তত এক হাযার। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এরকিস শহর। সেখানে বহু ভবন ধসে পড়ে। আহত বেশীরভাগই ওই শহরের বাসিন্দা।
  8. ১১ই মার্চ ২০১১ জাপান : জাপানের হোনশুর পূর্ব উপকূলের কাছে ৮.৯ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে ২৯ হাযারেরও বেশী মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। ওই ভূমিকম্পের ফলে ভয়াবহ সুনামিও আঘাত হেনেছিল দেশটির উপকূলে। ভূমিকম্পটি জাপানে রেকর্ড করা সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প। হোনশু দ্বীপে আফটার শক অব্যাহত ছিল বেশ কয়েকদিন। আফটার শকগুলোর মধ্যে রয়েছে ৫০টিরও বেশী মাত্রার ৬ বা তার বেশী এবং তিনটি ছিল ৭ মাত্রার উপরে।
  9. ২২শে ফেব্রুয়ারি ২০১১ নিউজিল্যান্ড : নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে ১৬০-এর বেশী মানুষ নিহত হয়েছিল। দশ হাযারেরও বেশী বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছিল।
  10. ১৪ই এপ্রিল ২০১০ চীন : চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় কিনঘাই প্রদেশে ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহত হয়েছিল অন্তত ৪০০ মানুষ।
  11. ২৭শে ফেব্রুয়ারী ২০১০ চিলি : ২৭শে ফেব্রুয়ারী ২০১০ চিলির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর কনসেপকিওনে ৮.৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছিল ৭০০-এর বেশী মানুষ।
  12. ১২ই জানুয়ারী ২০১০ হাইতি : ১২ই জানুয়ারী ২০১০ হাইতির রাজধানী পোর্ট-অব-প্রিন্সে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৩ লাখ ১৬ হাযার মানুষ নিহত হয়েছিল। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী শহরটি ও আশেপাশের এলাকার ৮০ হাযার ভবন ধ্বংস হয়েছিল।
  13. ১২ই মে ২০০৮ চীন : চীনের সিচুয়ান প্রদেশে আঘাত হেনেছিল ৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প। এতে প্রায় ৮৮ হাযার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। গৃহহীন হয়ে পড়েছিল আরও প্রায় এক কোটি মানুষ। ভূমিকম্পের আঘাতে কয়েক লাখ ভবন ধসে পড়েছিল। তখনকার হিসাবে, সেই ভূমিকম্পে ৮ হাযার ৬০০ কোটি ডলারের সম্পদ নষ্ট হয়েছিল। ভূমিকম্পের সময় স্কুলে অবস্থানরত ১০ হাযার শিশুর মৃত্যু হয়েছিল।
  14. ৮ই অক্টোবর ২০০৫ কাশ্মীর : ৮ই অক্টোবর ২০০৫ ভারত ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর উপত্যকায় শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠেছিল। পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে এবং পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের মুজাফফরাবাদ শহরে সংঘটিত একটি ভূমিকম্প। ২০০৫ সালের ৮ই অক্টোবর পাকিস্তানের স্থানীয় সময় ৮টা ৫২ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডে রিখটার স্কেলে ছিল ৭.৬ মাত্রায়। এই ভূমিকম্পে উপত্যকার ৭৫ হাযারের বেশী মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল। গৃহহীন হয়েছিল ১০ লাখের বেশী মানুষ। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় উদ্ধার অভিযান চালানো খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল।
  15. ২৬শে ডিসেম্বর ২০০৪ ইন্দোনেশিয়া : ২০০৪ সালে ২৬ ডিসেম্বর ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট ৯.১ মাত্রার একটি ভূমিকম্প ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা প্রদেশে আঘাত হেনেছিল। পার্শ্ববর্তী মালদ্বীপ এবং থাইল্যান্ডেও ভূমিকম্পের ধাক্কা লেগেছিল। ভূমিকম্পের ২০ মিনিট পর, ভারত মহাসাগর থেকে ১০০ ফুট উচ্চতার প্রলয়ঙ্করী সুনামি উপকূল অঞ্চলগুলোয় আছড়ে পড়েছিল। নিমিষেই পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল সুমাত্রা অঞ্চল। এর প্রভাব পড়েছিল ভারত, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ডেও। এতে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ রাতারাতি মারা গিয়েছিল। অন্তত সাত বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। ভূমিকম্পটি আট মিনিট থেকে দশ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী ছিল বলে জানিয়েছিল বিশ্লেষকরা। এই ভূমিকম্পের আট ঘণ্টা পর, এর কেন্দ্রস্থল থেকে ৫ হাযার মাইল দূরে দক্ষিণ আফ্রিকার উপকূলেও সুনামিটি আঘাত হেনেছিল।
  16. ২৬শে ডিসেম্বর ২০০৩ ইরান : ২০০৩ সালের ২৬শে ডিসেম্বর ইরানের দক্ষিণ-পূর্ব কেরমান প্রদেশে ৬.৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল এবং বাম শহরকে সমতল করে দিয়েছিল। এতে প্রায় ৩১ হাযার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
  17. ২৫শে মার্চ ২০০২ আফগানিস্তান : ২৫শে মার্চ ২০০২ দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় বাঘলান প্রদেশে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে ১ হাযারের বেশী মানুষ নিহত হন।
  18. ১৯শে সেপ্টেম্বর ১৯৮৫ মেক্সিকো : ১৯শে সেপ্টেম্বর ১৯৮৫ সালে রিখটার স্কেলে ৮.১ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। ভূমিকম্পে নিহত হয়েছিল ১০ হাযারের বেশী মানুষ । এছাড়া ৩০ হাযার বিল্ডিং ধসে পড়েছিল এবং আরো ৬৮ হাযার বিল্ডিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
  19. ২৮শে জুলাই ১৯৭৬ চীন : ১৯৭৬ সালের ২৮শে জুলাই। গভীর রাত। সময় তখন ৩:৪২ মিনিট। হঠাৎ ৭.৮ মাত্রা থেকে ৮.২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল চীনের তাংসান এবং হেবেই অঞ্চলে। সে সময় তাংসানের জনসংখ্যা ছিল ১০ লাখেরও বেশী। যাদের বেশীরভাগই ঘুমিয়ে ছিলেন। মাত্র দশ সেকেন্ডের ভূমিকম্পে পুরো একটি অঞ্চল ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। প্রলয়ঙ্করী ওই ভূমিকম্পে তাংসানের ৯০ শতাংশ অকাঠামো ধ্বংস হয়েছিল। কম্পন বন্ধ হওয়ার পর অঞ্চলটিতে আগুন ধরেছিল। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে তখন শহরজুড়ে পানি ও বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক হিসাবে এই ভূমিকম্পে আড়াই লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল।
  20. ৪ই জানুয়ারী ১৯৭০ চীন : ১৯৭০ সালের ৪ই জানুয়ারী চীনের ইউনান প্রদেশের টংহাই কাউন্টিতে ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছিল। ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ১৫ হাযারের বেশী মানুষ মৃত্যুবরণ করেছিল।
  21. ২২শে মে ১৯৬০ চিলি : ১৯৬০ সালের ২২শে মে চিলির ভালদিভিয়া অঞ্চলে প্রায় ৯.৫ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। ভূমিকম্পটির শক্তিমত্তা ছিল প্রায় ১৭৮ গিগাট্রন, এমনটিই জানিয়েছিলেন গবেষকরা। চিলির উপকূল থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) দূরে, ভালদিভিয়া শহরের সমান্তরালে আঘাত হেনেছিল। এটি প্রায় ১০ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল এবং ২৫ মিটার (৮২ ফুট) পর্যন্ত ঢেউসহ একটি বিশাল সুনামি শুরু করেছিল। প্রধান সুনামি চিলির উপকূলকে মারাত্মকভাবে আঘাত করে প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে হাওয়াইয়ের হিলোকে বিধ্বস্ত করেছিল। প্রাথমিক ধাক্কাতে সেসময় প্রায় ৬ হাযার মানুষ মারা গিয়েছিল। আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল এক বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ। পরে আঘাতপ্রাপ্ত অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। আহত হয়েছিল প্রায় ৩ হাযার মানুষ। ২০ লাখ মানুষ বাস্ত্তহারা হয়েছিল।
  22. ৪ঠা নভেম্বর ১৯৫২ রাশিয়া : ১৯৫২ সালের ৪ঠা নভেম্বর বিশ্বের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছিল। ঘটনাটি ঘটেছিল রাশিয়ার কামকাটকা উপদ্বীপে। এটি ৫০ ফুট পর্যন্ত ঢেউসহ একটি দুর্দান্ত ধ্বংসাত্মক প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি তৈরি করেছিল। যা কামকাটকা উপদ্বীপ এবং কুরিল দ্বীপপুঞ্জের ব্যাপক ক্ষতি করেছিল। আনুমানিক ১০ হাযার মানুষ মারা গিয়েছিল। এটি হাওয়াইয়ান দ্বীপপুঞ্জেও খুব ক্ষতি করেছিল। ঢেউগুলো পেরু, চিলি এবং নিউজিল্যান্ড পর্যন্ত বিস্তৃতি করেছিল। আলাস্কা, অ্যালেউটিয়ান দ্বীপপুঞ্জ এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় ৪.৬ ফুট পর্যন্ত সুনামি ঢেউ দেখা গিয়েছিল।
  23. ১৫ আগস্ট ১৯৫০ আসাম-তিববত : এটি দক্ষিণের কঙ্গরী গারপো এবং হিমালয়-এর ঠিক পূর্ব দিকে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত একটি অংশ এবং ভারতের অন্তর্গত আসাম রাজ্যে ছিল। ম্যাকম্যাহন লাইন-এর দক্ষিণে এবং বর্তমানে অরুণাচল প্রদেশ নামে পরিচিত এই অঞ্চলটি, এখন চীন ও ভারতের মধ্যে বিতর্কিত অংশ। ভারতীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৯ মিনিটে আসাম (ভারত) এবং তিববত (চীন) উভয়স্থানেই ৮.৬ মাত্রার এই ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পে প্রায় ৪,৮০০ মানুষ নিহত হয়েছিল।
  24. ৬ই অক্টোবর ১৯৪৮ তুর্কমেনিস্তান : ১৯৪৮ সালের ৬ই অক্টোবর সকাল গড়িয়ে দুপুর তখন ১টা ১২ মিনিট। হঠাৎ ভয়ঙ্কর এক ভূমিকম্পের তীব্রতার সাক্ষী হয়েছিল তুর্কমেনিস্তান। উৎপত্তিস্থল রাজধানী শহর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরের ছোট্ট একটি গ্রাম। সে সময় ওই ভূমিকম্পের তীব্রতা ৭.৩ মাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। তাতে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল দেশটির রাজধানী আশখাবাদ। এতে অঞ্চলটির বিভিন্ন গ্রাম মোটামুটি ধ্বংস হয়েছিল। বিশেষ করে বেশীরভাগ ইট-পাথরের ভবন ধসে পড়েছিল। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হওয়ায় এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানির প্রকৃত সংখ্যাটা জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হয়েছিল, আশখাবাদের ওই ভূমিকম্পে ১ লাখ ১০ হাযার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল।
  25. ১লা সেপ্টেম্বর ১৯২৩ জাপান : জাপান তাদের স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প দেখেছিল ১৯২৩ সালে। ওই বছরের পহেলা সেপ্টেম্বর সকাল ১১:৫৮ মিনিট। জাপানের রাজধানীসহ বেশ কয়েকটি শহরে ভূমিকম্পের প্রথম আঘাতটি এসেছিল। উৎপত্তিস্থল ছিল রাজধানী টোকিও থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের সাগামি উপসাগর অঞ্চল। এর তীব্রতা ছিল ৭.৯ এবং স্থায়িত্বকাল ছিল চার থেকে দশ মিনিট। এই ভূমিকম্পের আঘাতে রাজধানী টোকিওসহ বেশ কয়েকটি শহর ব্যাপকভাবে কেঁপে উঠেছিল। ধ্বংস হয়েছিল অসংখ্য দালান। এরপরই সাগামি উপসাগরে ৪০ ফুট উঁচু সুনামি উপকূলে আঘাত হেনেছিল। ভূ-কম্পনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ড টোকিও শহরের কেন্দ্রস্থল রিকুগুন হোনজো হিফুকুশোকে গ্রাস করে ফেলেছিল। সেখানে আশ্রয় নেওয়া হাযার হাযার মানুষ অগ্নিকান্ডে প্রাণ হারিয়েছিল। সে সময় সৃষ্ট সুনামির বাতাসে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন ভবনে অগ্নিকান্ডে অগ্নিদগ্ধ হয়েছিল ৩ লাখ ৮১ হাযার মানুষ। ৬ লাখ ৯৪ হাযার বাড়ি ধ্বংস হয়েছিল। আনুমানিক ১ লাখ ৪২ হাযার ৮০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। এতে ইয়োকাহামার ৯০ শতাংশ ভবন এবং টোকিও পাঁচ ভাগের দুই ভাগ এলাকা ধ্বংস হয়েছিল।
  26. ১৬ই ডিসেম্বর ১৯২০ চীন : ১৯২০ সালের ১৬ই ডিসেম্বর। চীনের গানসু প্রদেশকে ধ্বংস করে দিয়েছিল ৮.৫ মাত্রার প্রলয়ঙ্করী এক ভূমিকম্প। তৎকালে চীন স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিধসের মুখোমুখি হয়েছিল। যার ফলে প্রাণহানির সংখ্যাও বাড়ছিল হু হু করে। সন্ধ্যা ৭:০৬ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। পরবর্তীতে আরও তিনবার মৃদুকম্পনে (আফটার শক) কেঁপে ওঠেছিল চীনের গানসু প্রদেশ। তৎকালীন গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ভেঙে পড়েছিল। সেবার ৬৭৫ বার রেকর্ড পরিমাণ ভূমিধ্বসের ঘটনা ঘটেছিল। আনুমানিক ১ লাখের বেশী মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল কেবল ভূমিধ্বসের কারণে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল, ওই অঞ্চলে তখন ২ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। তবে তৎকালীন চীনা সরকার জানিয়েছিল, সংখ্যাটি ২ লাখ ৭৩ হাযারেরও বেশী।
  27. ১৩ই আগস্ট ১৮৬৮ চিলি : আরিকা, পেরু (বর্তমান চিলি) ১৮৬৮ সালের ১৩ই আগস্ট প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট ৯ মাত্রার ভূ-কম্পন হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত অনুভূত হয়েছিল। এতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল দক্ষিণ আমেরিকার আরেকুইপা শহর। সেখানে অন্তত ২৫ হাযার মানুষ নিহত হয়েছিল।
  28. ১লা নভেম্বর ১৭৫৫ পর্তুগালে : পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে আঘাত হানা শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে শহরের প্রায় অর্ধেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। ভূকম্পনের ফলে সৃষ্ট সুনামি এবং অগ্নিকান্ড পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ করে তোলেছিল। উত্তর আমেরিকা, ফ্রান্স ও উত্তর ইতালিতে অনুভূত হয়েছিল এই ভূমিকম্প।
  29. ২৩শে জানুয়ারী ১৫৫৬ চীনে : চীনের শানসি প্রদেশের এই ভূমিকম্পটিকে বলা হয়েছিল ইতিহাসের অন্যতম ভয়ংকর ভূমিকম্প। ১৫৫৬ সালের ২৩শে জানুয়ারী চীনের শানসি প্রদেশকে কেন্দ্র করে ভূমিকম্পটি মোট ৯৭টি দেশে একযোগে আঘাত হেনেছিল। বেশ কয়েকটি দেশের সমতল ভূমি প্রায় ২০ মিটার দেবে গিয়েছিল। ৮ দশমিক শূন্য মাত্রার এই ভূমিকম্পটির শক্তিমত্তা এক গিগাট্রন হওয়া সত্ত্বেও এতে প্রায় সাড়ে আট লক্ষাধিক মানুষ মারা গিয়েছিল। যদিও কম্পন মাত্র কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়েছিল, তবে শক্তিশালী ভূমিকম্পটি পাহাড় সমতল করে দিয়েছিল। নিভে যাওয়া আগ্নেয়গিরি আবারও প্রজ্বলিত হয়ে ওঠেছিল। ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি হয়েছিল। এমনকি নদী তার গতিপথও পরিবর্তন করে ফেলেছিল। এর প্রভাবে পৃথিবীতে ৬৬ ফুট গভীর পর্যন্ত ফাটল দেখা গিয়েছিল। ভূমিধ্বস অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে পরিণত হয়েছিল এবং প্রতিটি কাঠামো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তী ছয় মাসব্যাপী মৃদুকম্পন (আফটার শক) দেখা গিয়েছিল চীনের বেশ কয়েকটি শহরজুড়ে।
  30. ১১ই অক্টোবর ১১৩৮ সিরিয়া : ১১৩৮ সালের ১১ই অক্টোবর। উত্তর সিরিয়ার প্রাচীনতম আলেপ্পো শহরে আঘাত হেনেছিল ভূমিকম্পটি। সময়টা তখন মাত্র ভোর। ঠিক তখনই ৮.৫ মাত্রার ভূমিকম্পটি নাড়িয়ে দিয়েছিল আলেপ্পোকে। গোটা একটি শহর মিশে গিয়েছিল মাটির সঙ্গে। আলেপ্পোর দুর্গের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল এবং স্থানীয় অসংখ্য বাড়িঘর ধসে পড়েছিল। ভূমিকম্পের ইতিহাসে এই ভূমিকম্পকে বলা হয়েছিল চতুর্থ ভয়ঙ্কর দুর্যোগ। ইতিহাসবিদদের মতে, ওই ভূমিকম্পে আড়াই লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল।
  31. ২২শে ডিসেম্বর ৮৫৬ ইরান : সময়টা ৮৫৬ সালের ২২শে ডিসেম্বর। তৎকালীন ইরানীরা ৭.৯ মাত্রার ভূ-কম্পনের সাক্ষী হয়েছিল। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শহর দামহানে এই ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছিল। উৎপত্তিস্থল ছিল পারস্য অঞ্চলের কুমিস প্রদেশ। এ কারণেই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ভূমিকম্পটি স্থানীয়দের কাছে কুমিস ভূমিকম্প নামেও পরিচিত। ৩৫০ কিলোমিটার বা ২২০ মাইল এলাকাজুড়ে তান্ডব চালিয়েছিল। ধ্বংস করেছিল অসংখ্য জনপদ। সেদিন ২ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল।

উপসংহার : আল্লাহ তা‘আলার এধরণের মর্মান্তিক শাস্তি দেখে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। সাথে সাথে আমাদের পাপকর্ম ছেড়ে সৎআমল করতে হবে। নচেৎ যে কোন সময় আমাদের উপরেও নেমে আসতে পারে ভূমিকম্পসহ যে কোন ধরণের ভয়াবহ গযব। অতএব সময় থাকতেই সাবধান হতে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করুন, আমাদের গুনাহরাজি ক্ষমা করুন এবং যাবতীয় বালা-মুছীবত থেকে পানাহ দিন। আমীন!

[লেখক : কেন্দ্রীয় ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ]



বিষয়সমূহ: বিজ্ঞান
আরও