মুসলিম সমাজে প্রচলিত হিন্দুয়ানী প্রবাদ-প্রবচন (৭ম কিস্তি)

মুহাম্মাদ আব্দুর রঊফ 1134 বার পঠিত

পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । পর্ব ৬

(৭৩) খান্ডবদাহন : মহাভারত অনুসারে, সে যুগের হস্তিনাপুর রাজ্য কৌরব ও পান্ডবদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। এতে পান্ডবরা যমুনা তীরে অবস্থিত খান্ডববনের অংশীদার হয়। অতঃপর অর্জুন কৃষ্ণের সহযোগিতায় খান্ডব বনসহ বনের সমস্ত প্রাণীকে আগুনে পুড়িয়ে রাজ্য স্থাপন করে। এ কাহিনী অনুযায়ী অন্যায়ভাবে ধ্বংসাত্মক কোন কাজ করলে সেটাকে খান্ডবদাহনের সাথে তুলনা করা হয়। যেমন ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় কবি শামসুর রহমান পাকিস্তানী শত্রুদের দ্বারা বাংলাদেশকে জ্বালিয়ে ছারখার করার বিষয়টিকে খান্ডবদাহনের সাথে তুলনা করেছেন’।[1]

(৭৪) গন্ধমাদন বয়ে আনা : গন্ধমাদন একটি ঔষধি পর্বতের পৌরাণিক নাম। রামায়ণের বর্ণনা মতে, গন্ধমাদন পর্বত হিমালয় পর্বতের একটি অংশ। এটি ঋষভ পর্বত ও কৈলাস পর্বতের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। এ পর্বতের উদ্ভিদ থেকে নির্গত গন্ধ সারা অঞ্চলকে সুবাসিত করে রাখে বলে একে গন্ধমাদন পর্বত বলা হয়। এই পর্বতের শীর্ষদেশে চার প্রকার মহৌষধ উৎপন্ন হ’ত। সেগুলো হ’ল, ১. মৃতসঞ্জীবনী (যা মৃতপ্রায়কে পুনঃজীবন দান করে) ২. বিশল্যকরণী (যা শরীর থেকে ক্লেদ, কালিমা, বিষ দূর করে) ৩. সুবর্ণকরণী (যা দেহকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও লাবণ্যময় করে) ও ৪. সন্ধানকরণী (যা ভগ্ন অস্থিকে সংযুক্ত করে)। রাম-রাবণের যুদ্ধের সময় হনুমান দু’বার এই পর্বতে ঔষধ আনতে যায়। ঘটনাচক্রে দ্বিতীয়বার রাবণের শক্তিশেলের আঘাতে লক্ষ্মণ সংজ্ঞা হারালে তাঁর পুনরুজ্জীবনের জন্য হনুমান ঔষধ আনতে যায়। কিন্তু সেবার সঠিক ঔষধ চিনতে না পেরে সম্পূর্ণ পর্বতশৃঙ্গ তুলে নিয়ে আসে’।[2] ঘটনার এ অংশ থেকেই আলোচ্য প্রবাদের সূত্রপাত। কাউকে কোন জিনিস আনতে দিলে যদি একাধিক জিনিস টেনে আনে তখন সে ভাবার্থে গন্ধমাদন বয়ে আনা প্রবাদ দ্বারা প্রকাশ করা হয়। অনেক সময় অবাস্তব বিষয়ে অবতারণা বোঝাতেও প্রবাদটির প্রয়োগ দেখা যায়।

(৭৫) বিদুরের খুদ : বিদুর মহাভারতের কেন্দ্রীয় চরিত্র এবং হস্তিনাপুর রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি অত্যন্ত বুদ্ধিমান, জ্ঞানী এবং সূক্ষ্ম কূটনৈতিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। মহাভারতের মহাযুদ্ধের পূর্বে শ্রীকৃষ্ণ পান্ডবদের পক্ষে কৌরবদের সঙ্গে সন্ধি করতে আসে। সেসময় কৃষ্ণকে আপ্যায়নের জন্য কৌরবদের যুবরাজ দুর্যোধন বিলাসবহুল আয়োজন করে। কিন্তু স্বার্থসিদ্ধির সে আয়োজনে কোন ভক্তিভাব না থাকায় কৃষ্ণ প্রাসাদ ছেড়ে প্রধানমন্ত্রী বিদুরের ছোট্ট কুটীরে আসেন। উলেলখ্য যে, বিদুর প্রধানমন্ত্রী হ’লেও গরীবী হালাতে অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করতেন। সেদিন তাঁর বাড়ীতে কৃষ্ণকে আপ্যায়নের জন্য সামান্য চালের খুদের অতিরিক্ত কিছুই ছিল না। তিনি তা দিয়েই ভক্তিভরে কৃষ্ণকে আপ্যায়ন করেন। এই ঘটনা থেকেই লোকমুখে কালক্রমে বিদুরের খুদ প্রবাদটির প্রচলন ঘটে। যার ভাবার্থ হ’ল, শ্রদ্ধার সামান্য উপহার।

(৭৬) যোগ ব্যায়াম : যোগ ব্যায়াম কোন প্রবাদ-প্রবচনের অংশ নয় বরং মুসলিম সমাজে প্রচলিত একটি হিন্দুয়ানী দর্শন। এ দর্শন সর্ম্পকে আমাদের বিস্তারিত জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। যোগ শব্দটির একাধিক অর্থ রয়েছে। এটি সংস্কৃত ‘যুজ’ ধাতু থেকে উৎপন্ন, যার অর্থ নিয়ন্ত্রণ করা, যুক্ত করা বা ঐক্যবদ্ধ করা’।[3] যোগের আরেকটি জনপ্রিয় অর্থ সাধনা করা’।[4] হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মে যোগ এক প্রকার শরীরচর্চার অনুষঙ্গ। তবে এটাকে কেবল শরীরচর্চার অংশ জ্ঞান করা হয় না। বরং এটি কঠোর মানসিক শৃঙ্খলা ও সাধনার মাধ্যমে ব্রহ্ম তথা দেবতার সান্নিধ্য প্রাপ্তির প্রাচীন দার্শনিক নিয়ম। বিশ্বাস করা হয় যে, যোগের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছালে অলৌকিক শক্তির অধিকারী হওয়া যায়। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে পতঞ্জলি যোগসূত্র নামক বই রচনা করে এই দর্শন প্রবর্তন করেন। পতঞ্জলি যোগসূত্রে পাঁচটি পাদ রয়েছে, যার মাধ্যমে কিভাবে একজন মানুষ সিদ্ধি লাভ করবে তা বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে’।[5] যোগ ব্যায়াম এ দর্শনের একটি অংশ মাত্র। মূলত যোগ দুই ভাগে বিভক্ত। হঠযোগ এবং রাজযোগ। হঠযোগের উদ্দেশ্য হচ্ছে শরীরকে নিয়ন্ত্রিত করে ব্যায়ামের মাধ্যমে সুস্থ-সবল হওয়া। সাধারণ মানুষ যোগ বলতে হঠযোগের ব্যায়াম আসনগুলোকেই বুঝে থাকে। অপরদিকে রাজযোগের উদ্দেশ্য হচ্ছে জীবাত্মাকে পরমাত্মার সাথে যুক্ত করা। আর পরমাত্মার সাথে যুক্ত হওয়াই হচ্ছে জীবের মুক্তি বা মোক্ষলাভ। যোগ ব্যায়ামের নামে হিন্দু ধর্মীয় এ বিশ্বাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়ার সূক্ষ্ম পরিকল্পনা নিয়ে, ভারত জাতিসংঘের মাধ্যমে ২০১৪ সালের ১১ই ডিসেম্বরে ২১শে জুনকে আন্তর্জাতিক যোগ ব্যায়াম দিবস ঘোষণা করিয়ে নেয়। ২০১৫ সালের ২১শে জুন প্রথমবারের মত পালিত হয় এ দিবস। খোদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী প্রথম বছরই নয়াদিল্লির রাজপথে ৪০ হাযার মানুষের অংশগ্রহণে গণযোগাসনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে যোগ দিবসের কর্মসূচী পালনের জন্য ভারতের সকল স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্দেশ জারী করা হয়েছিল। বাংলাদেশেও ভারতীয় দূতাবাসের সহযোগিতায় ২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর যোগ দিবস পালন করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে যোগ দিবসে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ১০ হাযার মানুষ অংশ নেয় যোগ ব্যায়াম চর্চায়’।[6] যোগ ব্যায়াম শুরু করতে হয় ‘ওম’ ধ্বনি উচ্চারণ করে এবং শেষ করতে হয় ‘ওম শান্তি’ বলে। হিন্দু পুরাণে ‘ওম’ ধ্বনিকে জগতের আদি পবিত্র ধ্বনি এবং সব মন্ত্রের আদি মন্ত্র বলা হয়। এছাড়াও প্রভাতে প্রথম কিরণ পড়লেই সূর্যকে নমস্কার করে যোগ ব্যায়াম শুরু করা হয়। যা স্পষ্টরূপে সূর্য পূঁজার শামিল। শরীরচর্চার নামে চমকপ্রদ কথায় অতি সুকৌশলে বাংলার মুসলিমদের আক্বীদায় শিরকী ও কুফরীতন্ত্র ঢুকানো হচ্ছে। মানুষ নিজের অজান্তেই ঈমান হারানোর পথে ঝুঁকে পড়ছে। মাঝখান থেকে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি ও দর্শন মুসলিমদের ব্যবহারিক জীবনে প্রভাব বিস্তার করছে। আল্লাহ আমাদেরকে শরীরচর্চার নামে নব্য এ ধোঁকা থেকে হেফাযত করুন-আমীন!

(৭৭) সিদ্ধি লাভ : সিদ্ধি শব্দটি সংস্কৃত ভাষা হ’তে আগত। যার শাব্দিক অর্থ অর্জন করা, সাফল্য লাভ করা, সন্তুষ্টি, উৎকর্ষ ইত্যাদি। আক্ষরিক অর্থ প্রয়োজনের অনুকূল হওয়ায় শব্দটি বাংলা সাহিত্যে অবলীলায় ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না এর ভাবার্থ ইসলামী আক্বীদা- বিশ্বাসের বিপরীত। সংস্কৃত ভাষার অংশ হওয়ায় শব্দটির সাথে হিন্দুয়ানী বিশ্বাস নিহিত রয়েছে। হিন্দু শাস্ত্র যোগতত্ত্ব উপনিষদে আট ধরনের সিদ্ধির কথা বলা হয়েছে। সেগুলো হ’ল, আলোক জ্ঞান, আলোক দৃষ্টি, দূরবর্তী স্থানে দ্রুত গমন, অতি প্রাকৃত কণ্ঠশক্তি, যেকোন আকার ধারণ, ইচ্ছানুযায়ী দৃষ্টির অন্তরালে যাওয়া। ব্যাসের যোগশাস্ত্রের টীকায় উল্লেখ করা হয়েছে, সিদ্ধি হচ্ছে পরমাণুর চেয়ে ক্ষুদ্র হওয়া অতিশয় সূক্ষ্ম, অতিশয় বৃহৎ, চন্দ্রকে স্পর্শ করার অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা, অদম্য ইচ্ছা, যাবতীয় বস্ত্তর উপর নিয়ন্ত্রণ, সকল আকারের প্রতি আধিপত্য লাভ, যোগীর ইচ্ছানুযায়ী যেকোন বস্ত্ত যেকোন স্থানে স্থাপন’।[7] যোগ শাস্ত্রের কঠোর তপস্যা দ্বারা এ সমস্ত অকল্পনীয় ক্ষমতা লাভ করা যায় বলে হিন্দুরা বিশ্বাস করে। সেজন্য তাদের যোগী-ঋষিরা সিদ্ধি লাভ করলে নিজের ইচ্ছানুযায়ী পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে যেতে পারেন, যেকোন রূপ ধারণ করতে পারেন এবং অনেক দৈবিক ক্ষমতার অধিকারী হন। দুর্ভাগ্যবশত ইসলাম ধর্মে পীরতন্ত্রের বাকা বিল্লাহ ও ফানা ফিল্লাহর মত ছূফী তরীকায় যোগ দর্শনের সিদ্ধি লাভের এ মতবাদের অনুপ্রবেশ ঘটে। যোগ দর্শনে সিদ্ধি লাভ করলে যেমন ব্যক্তি স্রষ্টার সাথে একাকার হয়ে অনেক অলৌকিক ক্ষমতার মালিক হন। ঠিক তদ্রূপ ছূফী তরীকার সর্বোচ্চ স্তর ফানা ফিল্লাহ হয়ে গেলে ব্যক্তি আর স্রষ্টার মাঝে কোন তফাৎ থাকে না। সে স্রষ্টায় বিলীন হয়ে যায়। সে অনেক কারামতের মালিক হয়। নাঊযুবিল্লাহ! সেজন্য পীরপন্থীদের অনেকেই কারামতের নাম করে বক্তব্য দেন যে, অমুক আকাবীর মৃত্যুর পরেও আফ্রিকার জঙ্গলে কুতুবদের সাথে মিটিং করেন, কেউ দুনিয়ায় ভক্তদেরকে জান্নাত লিখে দেন, কেউ আবার ভক্তের ডাকে কঠিন বিপদে সাহায্য করতে চলে যান! কার্যত যোগশাস্ত্রের বিশ্বাসকে নব্যসাজে রূপায়ণ করে পীরপন্থীদের এ সকল শিরকী আক্বীদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

(৭৮) রক্তবীজের ঝাড় : রক্তবীজ হিন্দু পুরাণে বর্ণিত অসুর শুম্ভাসুর ও নিশুম্ভাসুরের সেনানায়ক ছিল। এই দানব শিবের কাছ থেকে বরপ্রাপ্ত ছিল। তার রক্ত মাটিতে পড়লেই তার অনুরূপ নতুন এক রক্তবীজ সৃষ্টি হ’ত। পুরাণ কাহিনী অনুসারে, যখন শুম্ভাসুর ও নিশুম্ভাসুর দেবতাদের স্বর্গচ্যুত করে তখন তারা আদি দেবী মহামায়ার সাহায্যে ‘কৌষিকী’ নামক এক দেবীর উদ্ভব ঘটান। দেবী ‘কৌষিকী’ দেবতাদের সাহায্যার্থে অসুর দমনের জন্য রণক্ষেত্রে গমন করেন। রক্তবীজ ও দেবী কৌষিকীর মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হয়। দেবীর প্রহারে রক্তবীজের মস্তক ছেদ হয়। কিন্তু তার রক্তধারা ভূমিতল স্পর্শ করার সাথে সাথেই সহস্র রক্তবীজাসুরের সৃষ্টি হয়। বারংবার আঘাতে যতই রক্তপাত হ’তে থাকে রক্তবীজ অসুরের সংখ্যা ততই অযুত লক্ষাধিক বেড়ে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য দেবী কৌষিকী দেবী কালিকাকে আহবান করেন। কালিকাকে আদেশ করে বলেন, আমি রক্তবীজকে প্রহার করা মাত্রই তুমি জিহবা প্রসারিত করে রক্তবীজের রক্ত পান করবে। ফলে রক্ত মাটিতে পড়বে না এবং নতুন কোন দানবও সৃষ্টি হবে না। এভাবে পর্যায়ক্রমে সকল রক্তবীজকে হত্যা করা হয়।[8]

পৌরাণিক এই ঘটনা থেকে কালক্রমে ‘রক্তবীজের ঝাড়’ বাক্যটি প্রবাদের তালিকায় স্থান পায়। যেহেতু রক্তবীজকে কিছুতেই ধ্বংস করা যাচ্ছিল না, সেহেতু এই প্রবাদের অর্থ করা হয়েছে যে বংশ বা দলের লোকদের কোনভাবেই বিনষ্ট করা যায় না।

(৭৯) ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে : লোকমুখে বহুল প্রচলিত এই প্রবাদটির অর্থ- অভ্যাস কখনো পরিবর্তন হয় না। অনেকের মতে, দেবতাদের ঋষি নারদের সাথে এই প্রবাদ সম্পর্কযুক্ত। নারদ ব্রহ্মার মানসপুত্র ছিলেন। তার জন্ম বৃত্তান্ত সম্বন্ধে পুরাণে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যায়। ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ মতে, সৃষ্টির প্রারম্ভে ব্রহ্মা সৃষ্টিজগৎ পরিচালনার জন্য মানবজাতির আদিপিতা হিসাবে সাতজন ঋষি সৃষ্টি করেন। দেবর্ষি নারদ এই সপ্ত ঋষির অন্যতম একজন। ব্রহ্মা তাকে সৃষ্টি পরিচালনার ভার গ্রহণ করতে বলেন। কিন্তু ঈশ্বরের আরাধনায় বিঘ্ন সৃষ্টির আশঙ্কায় তিনি তাতে রাজি না হওয়ায়, ব্রহ্মার অভিশাপে নারদকে একবার গন্ধর্ব[9] ও একবার মানব সমাজে জন্মগ্রহণ করতে হয়েছিল।[10] নারদ বিষ্ণুর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। তিনি একাগ্রচিত্তে বিষ্ণুর আরাধনা করতে ভালবাসতেন। এছাড়াও নিজের ইচ্ছায় স্বর্গ ও মর্তে যত্রতত্র গমন করতে পারতেন এবং সকল জায়গায় তার অবাধ বিচরণ ছিল। প্রয়োজনবোধে তিনি সৃষ্টি ও স্রষ্টার সকল ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করতেন।[11]

দেবতা, মানুষ কিংবা অসুর সমাজের বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদান করাই তার কাজ ছিল। তিনি কোন কথা গোপন রাখতে পারতেন না। দেবতা, দানব ও মানবের মনে সন্দেহ উৎপন্ন করার কাজে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। একজনের কথা অন্যজনের কাছে ফাঁস করে সন্দেহ সৃষ্টির কারণে অনেক সময় দেবতা ও অসুরদের মধ্যে কলহ বেধে যেত। অসুরেরা স্বর্গ দখল করলে তিনি অসুরদের কাছে গিয়ে এমন ভান করতেন যেন মনে হ’ত তিনি তাদেরই অনুসারী। তাদের দুর্বল দিকগুলো দেবতাদের বলতেন। আবার দেবতাদের দুর্বলতার খবর অসুরদের বলে দিতেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি কোন পক্ষের হয়ে কাজ করতেন সেটা অস্পষ্টই থাকত। বলা হয়ে থাকে, ঢেঁকি নারদের বাহন ছিল। তিনি ঢেঁকিযোগেই সমস্ত জায়গায় বিবাদ সৃষ্টি করতেন। সেজন্য কেউ কেউ তাকে ‘কলহসংগঠক’ হিসাবেও আখ্যা দিয়েছেন। মূলত এখান থেকেই ‘নারদের ঢেঁকি ও ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে’ শিরোনামে দু’টি প্রবাদের উৎপত্তি ঘটেছে। নারদকে কলহসংগঠক হিসাবে আখ্যায়িত করার কারণে নারদের ঢেঁকি অর্থ বিবাদের বিষয় বোঝাই। অপরদিকে ঢেঁকি দিয়ে যেহেতু ধান ভানা ছাড়া অন্য কোন কাজ হয় না এবং নারদের ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও বিবাদ সৃষ্টি করার ভূমিকাই পালন করে। সেকারণে ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে প্রবাদ দ্বারা অভ্যাস কখনো পরিবর্তন হয় না বোঝানো হয়। পৌরাণিক গ্রন্থে নারদের জীবনীর বিস্তর বিবরণ পাওয়া গেলেও ঢেঁকি তার বাহন এ সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায় না। হ’তে পারে লোকমুখে প্রচলন থাকার কারণে ঋষি নারদের সাথে প্রবাদটি সম্পৃক্ত করা হয়েছে।

(৮০) ধুন্ধুমার কান্ড : বাংলায় ধুন্ধুমার কান্ড প্রবাদটির অর্থ মহা কোলাহল, গোলমাল, বিষম কান্ড, তুমুল হট্টগোল, ইত্যাদি। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, মরুপ্রদেশে উজ্জ্বালক নামে বালুকাপূর্ণ সমুদ্রতীরে উতঙ্ক নামক এক ঋষি বসবাস করতেন। সেখানে রাক্ষস মধুকৈটভের পুত্র ধুন্ধু বালুর নিচে মাটি অভ্যন্তরে বসবাস করত। ধুন্ধু ব্রহ্মার আরাধনা করে মানুষ ছাড়া অন্য কোন জীব তাকে হত্যা করতে পারবে না এমন বর লাভ করে। বর পেয়ে সে পৃথিবী ও অন্তরীক্ষের সমস্ত স্থানে প্রচন্ড অত্যাচার করতে থাকে। উতঙ্ক ঋষির আশ্রমের কাছে বালুর নিচে ঘুমন্ত এই দানব যখন বছরান্তে একবার নিঃশ্বাস ফেলে তখন সপ্তাহকালব্যাপী ভূমিকম্প হয়, সূর্যের কক্ষপথ পর্যন্ত ধূলা উড়ে, স্ফুলিংঙ্গ, অগ্নিশিখা এবং ধোঁয়া নির্গত হয়। ঋষি উতঙ্কের তপস্যাতেও সে বিঘ্ন ঘটায়। ফলে ঋষি তৎকালীন অযোধ্যার রাজা কুবলাশ্বকে ধুন্ধুকে হত্যার জন্য অনুরোধ করেন। উতঙ্ক তার একুশ হাযার পুত্র ও সৈন্য নিয়ে ধুন্ধুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যায়। এক সপ্তাহ বালুকাময় সমুদ্র তীর খনন করার পর ধুন্ধুকে নিদ্রাবস্থায় পাওয়া যায়। ধুন্ধু জাগ্রত হয়ে স্বীয় মুখের অগ্নি স্ফুলিংঙ্গের সাহায্যে রাজার সকল পুত্রকে ভস্ম করে দেয়। পরবর্তীতে কুবলাশ্ব যাদু বিদ্যার (যোগমায়া) মাধ্যমে ধুন্ধুর মুখের আগুন নিভিয়ে ব্রহ্মার অস্ত্রের সাহায্যে তাকে হত্যা করে। সেই থেকে রাজা কুবলাশ্বকে ‘ধুন্ধুমার’ বলা হয়।[12] এ দানবের অত্যাচারকান্ড এবং তাকে হত্যা করার জন্য যে মহা কর্মকান্ডের আয়োজন করা হয়, তা-ই মূলত ‘ধুন্ধুমার কান্ড’ প্রবাদরূপে বাক্যভঙ্গিতে উঠে এসেছে।

(৮১) ত্রিশঙ্কু অবস্থা : ত্রিশঙ্কু অবস্থা প্রবচনটির অর্থ কোন কিছুর মাঝামাঝি আটকে থাকা অর্থাৎ উভয়সংকট। প্রবচনটি রামায়ণের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলা সাহিত্যে প্রবেশ করেছে। প্রাচীন ভারতের শ্রেষ্ঠ বংশ হিসাবে বিবেচিত সূর্যবংশের এক রাজার নাম ছিল ত্রিশঙ্কু। রাজা জীবিতাবস্থায় স্বর্গে যেতে চেয়েছিলেন। তিনি স্বীয় বংশীয় গুরু ঋষি বশিষ্ঠের কাছে তার মনের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। কিন্তু ঋষি বশিষ্ঠ অপারগতা প্রকাশ করলেন। এরপর রাজা ত্রিশঙ্কু বশিষ্ঠের শত পুত্রের কাছে যজ্ঞের মাধ্যমে তাকে স্বর্গে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেন। তারাও ত্রিশঙ্কুর নিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। অতঃপর তিনি সিদ্ধান্তে অটল থেকে অপর এক বিখ্যাত ঋষি বিশ্বামিত্রের কাছে নিজের ইচ্ছার কথা জানান। বিশ্বামিত্র রাজাকে স্বর্গে পৌঁছানোর আশ্বাস দিলেন এবং যজ্ঞ শুরু করলেন। বহুকাল অতিক্রান্ত হয়ে গেল কিন্তু যজ্ঞের কোন ফল পাওয়া গেল না। অবশেষে বিশ্বামিত্র নিজের সাধনার শক্তি প্রয়োগ করে রাজাকে স্বর্গে পাঠালেন। কিন্তু স্বর্গের দেবতারা তাকে গ্রহণ করল না। কারণ জীবিত মানুষ স্বর্গে থাকতে পারে না। দেবতারা তাকে পৃথিবীর পথে পাঠিয়ে দিলেন। এদিকে পৃথিবী থেকে বিশ্বামিত্র ত্রিশঙ্কুকে পুনরায় স্বর্গ পানে ঠেলে দেন। উভয়পক্ষের ঠেলাঠেলিতে ত্রিশঙ্কু আকাশের মাঝখানে ঝুলতে থাকে। বিশ্বামিত্রের তেজও কম নয়। তিনি দেবতাদের নতুন নক্ষত্রজগৎ, নতুন দেবতা ও তাদের রাজা ইন্দ্র সৃষ্টির হুমকি দেন। ভয়ে এতে দেবতারা বিশ্বামিত্রের কথা মেনে নেন। অতঃপর বিশ্বামিত্র আকাশপথে নতুন নক্ষত্রমন্ডল সৃষ্টি করলেন। ত্রিশঙ্কু সেখানে জ্যোতির্ময় নক্ষত্ররূপে বসবাস করতে থাকল।[13] এ ঘটনাকে মূল উপজীব্য করে কোন ব্যক্তি দু’পক্ষের বাদানুবাদের মাঝখানে সমস্যায় পড়লে, সে অবস্থা ভাবার্থে বোঝানোর জন্য ‘ত্রিশঙ্কু অবস্থা’ প্রবচন প্রয়োগ করা হয়।

(৮২) হরিহর আত্মা : হরি এবং হর শব্দের মিশ্রণে হরিহর শব্দ গঠন হয়েছে। হিন্দু শাস্ত্রমতে ধ্বংসকর্তা দেবতা শিবকে হর এবং পালনকর্তা দেবতা বিষ্ণুকে হরি বলা হয়। হরিহর এই দেবতাদ্বয়ের মূর্তির মিশ্ররূপ।[14] অর্থাৎ এই মূর্তির অর্ধেক অংশ দেখতে শিবের মত এবং বাকি অর্ধেক বিষ্ণুর মত। হরি এবং হর উভয় দেবতাকে সর্বোচ্চ ঈশ্বর মানা হয়। তবে হিন্দুদের কোন কোন সম্প্রদায় শিবকে সর্ব শক্তির উৎস মনে করে। আবার কেউ কেউ বিষ্ণুকে সর্বময় শক্তির আধার হিসাবে পূজা করে। পুরাণে যেমন এই দুই দেবতার শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে ভক্তদের মধ্যে মতবিরোধের বর্ণনা পাওয়া যায়, তেমন দুই দেবতার মধ্যেও শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে লড়াই করতে দেখা যায়। শিবের বৈশিষ্ট্য ধ্বংস করা আর বিষ্ণুর বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করা। দু’জন দুই মেরুর হ’লেও দু’জনের মিলিত শক্তি ছাড়া জগতে কিছুই হয়না বলে ধারণা করা হয়। এ কারণে এই দুই দেবতার মধ্যে বিরোধ থাকলেও তারা আবার পরস্পরের আরাধ্য ও ভক্ত। তাদের মিলিত শক্তিরূপই হ’ল হরিহর মূর্তি। এক্ষণে বাংলা ভাষায় ‘হরিহর আত্মা’ প্রবচন দ্বারা অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব বোঝানো হয়। মূলত শিব-বিষ্ণুর অভিন্ন সত্ত্বার মিলিত মূর্তির বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের ধারণা থেকে এই প্রবাদের জন্ম। অর্থাৎ দুই অভিন্ন হৃদয়ের মানুষ বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হ’লে তাদের হরিহর আত্মা প্রবচনের মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত করা হয়। এই প্রবচনের সমার্থক শব্দ মানিকজোড়। সুতরাং এমন আক্বীদা বিধ্বংসী প্রবচন বর্জন পূর্বক আমাদের মানিকজোড়ের ব্যবহার করা উচিত।

(৮৩) বিধিবাম : বিধি ও বাম শব্দদ্বয় ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে। বিধি শব্দের একটি অর্থ হ’ল বিধানদাতা, সৃষ্টিকর্তা এবং বাম শব্দের অর্থ বাঁদিক, দক্ষিণের বিপরীত দিক, শিবের দিক, প্রতিকুল ইত্যাদি।[15] অপরদিকে বিধিবাম শব্দের আক্ষরিক অর্থ স্বয়ং বিধাতা বা সৃষ্টিকর্তার বিপরীতমুখী অবস্থান। কোন ব্যক্তির ইচ্ছার বিরুদ্ধে অকস্মাৎ কোন কাজ সংগঠিত হ’লে সেটাকে বিধিবাম বলা হয়। এই প্রবচনটির পেছনের গল্পের কোন নির্ভরযোগ্য সূত্র পাওয়া যায় না। প্রচলিত পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, এটি প্রজাপতি দক্ষের যজ্ঞ অনুষ্ঠানের সাথে সম্পর্কযুক্ত বলে ধারণা করা হয়। পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার পুত্র দক্ষের কন্যা সীতাকে বিবাহ করেছিলেন দেবতা শিব। দক্ষ শিবকে দেবতা হিসাবে মান্য করত না। একদিন দক্ষ বিরাট এক যজ্ঞের আয়োজন করে। তাতে সকল দেবতাকে নিমন্ত্রণ করা হ’লেও অপমান করার জন্য দক্ষ শিবকে আমন্ত্রণ করেনি। সে যজ্ঞানুষ্ঠানে শিব ব্যতীত সকল দেবতা উপস্থিত ছিল। যজ্ঞের দিন সীতা দক্ষের বাড়িতে আসতে চাইলে শিব নিষেধ করে। তথাপি সে শিবের নিষেধ অমান্য করে যজ্ঞানুষ্ঠানে আসে। তখন দক্ষ সীতার উপস্থিতিতে শিবকে কটুবাক্যে অপমান করে। স্বামীর অপমান সহ্য করতে না পেরে সীতা যজ্ঞের আগুনে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনা শিব প্রত্যক্ষ করে যজ্ঞ পন্ড করার জন্য বীর ভদ্র ও ভদ্র কালীকে দক্ষের বাড়িতে পাঠায়। তারা সমস্ত দেবতা ও দক্ষের সেনার সাথে যুদ্ধ করে বিজয়ী হয় ও যজ্ঞ পন্ড করে দেয়।[16] পুরাকালে বামপথকে শিবপন্থীদের পথ তথা কল্যাণের পথ বলা হত। বলা হয়ে থাকে, দক্ষ যজ্ঞের পরে ভারতবাসী সকলেই বাম পথ পরিত্যাগ করে দক্ষিণ পথ তথা ডান পথে চলতে থাকে। কেননা দক্ষের যজ্ঞের খারাপ উদ্দেশ্য ও যজ্ঞ পরবর্তী ঘটনা সম্পর্কে সকল দেবতা পূর্ব থেকেই অবহিত ছিল। তবুও তারা এতে অংশগ্রহণ করে এবং দক্ষের অন্যায় আচরণকে নীরবে সমর্থন যোগায়। কল্যাণের পথে থেকেও স্বয়ং দেবতারাই অন্যায় করেছে। যে কারণে তাদের কল্যাণের পথ অর্থাৎ বাম পথকে মানুষ বর্জন করে। সেই থেকে ‘বিধিবাম’ শব্দ দ্বারা প্রতিকুল দিক বোঝানো হয় এবং বামপন্থী হয়ে যায় বিরোধীপক্ষ।

(৮৪) ময়ূর ছাড়া কার্তিক : কার্তিক পৌরাণিক দেবতাদের মধ্যে অন্যতম। মহাভারত, স্কন্ধ পুরাণ ও ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে কার্তিকের ভিন্ন ভিন্ন জন্মকথা বর্ণিত হয়েছে। তবে তিনি শিব ও পার্বতীর পুত্র হিসাবে বেশী পরিচিত। কার্তিক দেবতাদের সৈন্যদের প্রতাপী সেনাপতি ছিলেন। পুরাণ জুড়ে তার শৌর্য-বীর্যের নানান কাহিনী রয়েছে। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় খুব আড়ম্বের সাথে কার্তিক পূজা করা হয়। কার্তিকের বাহন ছিল ময়ূর। পাখিদের মধ্যে ময়ূরের সৌন্দর্য তুলনাহীন। অনেক বাড়িতে শুধুমাত্র ময়ূরের পালক সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য শো-পিচ হিসাবে রাখা হয়। খোদ সেই ময়ূরই যদি কারও বাহন হয় তাহ’লে তার সৌন্দর্য নিশ্চয় ময়ূরের উপস্থিতির কারণে আরও বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু ‘ময়ূর ছাড়া কার্তিক’ প্রবাদ দ্বারা ময়ূরের উপস্থিতি ব্যতীত শুধু কার্তিকের অপার সৌন্দর্যের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। অর্থাৎ কার্তিক এতটাই সুন্দর যে, তার সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ময়ূরের প্রয়োজন হয় না। অথচ বিভিন্ন পুরাণে কার্তিককে যোদ্ধা হিসাবে উপস্থাপন করা হ’লেও তার সৌন্দর্যের কথা আসে নি। হিন্দু লোকসমাজে প্রচলিত আছে কার্তিক খুবই সুদর্শন পুরুষ ছিলেন। সেকারণে ময়ূরের উপমা প্রয়োগ করে ‘ময়ূর ছাড়া কার্তিক’ বলতে রূপবান পুরুষকে বোঝানো হয়। (ক্রমশঃ)

[লেখক : কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক, বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ]


[1]. তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা,

তোমাকে পাওয়ার জন্যে

আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়?

আর কতবার দেখতে হবে খান্ডবদাহন?

[2]. রাজশেখর বসু, রামায়ণ, ১৩তম মুদ্রণ : বাংলা ১৪১৮ সন, যুদ্ধকান্ড, পৃ. ৩৫৪-৫৫, ৩৭১।

[3].https://bn.wikipedia.org/s/27oo

[4]. আধুনিক বাংলা অভিধান, বাংলা একাডেমী, পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত সংস্করণ : এপ্রিল ২০১৬, পৃ. ১১৫৩।

[5]. মুহাম্মাদ হাবিবুর রহমান, যার যা ধর্ম : বাংলা ভাষায় প্রথম ধর্ম অভিধান, প্রথমা প্রকাশন (পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত প্রথম প্রথমা সংস্করণ : ফেব্রুয়ারি ২০১৪), পৃ. ২৯৫।

[6]. নয়া দিগন্ত, ২৫শে জুন ২০১৮, যোগ কি শুধু ব্যায়ামেই সীমাবদ্ধ থাকবে, পৃ. ১১।

[7]. মুহাম্মাদ হাবিবুর রহমান, যার যা ধর্ম : বাংলা ভাষায় প্রথম ধর্ম অভিধান, পৃ. ৩৩৪।

[8]. মার্কন্ডেয় পুরাণ, বঙ্গানুবাদ সম্পাদনা : আচার্য পঞ্চানন তর্করত্ন, (নবভারত পাবলিশার্স, ৭২ মহাত্মা গান্ধী রোড, কলকাতা-৯, প্রথম সংস্করণ, আষাঢ় ১৩৬৬ সন), ৮৮তম অধ্যায়, পৃ. ৩৫২-৫৪।

[9]. গন্ধর্ব হ’ল দেবতাদের সভার অভিনয় শিল্পী। তারা নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশন করে থাকেন বলে পুরাণে বর্ণিত হয়েছে।

[10]. বিস্তারিত : ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ, অনুবাদ : শ্রী সুবোধচন্দ্র মজুমদার, (দেব সাহিত্য কুটীর, ২২৫ বি, ঝামাপুকুর লেন, কলকাতা, পুনর্মুদ্রণ ১৩৬০ বঙ্গাব্দ), ব্রহ্মখন্ড, ১৮-২১তম অধ্যায়, পৃ. ৪৬-৫০।

[11]. সুবল চন্দ্র মিত্র, সরল বাঙ্গলা অভিধান, অষ্টম সংস্করণ : জুলাই ১৯৮৪, পৃ.৭৬০।

[12]. মহাভারত, অনুবাদ : রাজশেখর বসু; ১৩তম মুদ্রণ : বাংলা ১৪১৮, বনপর্ব, পৃ. ২২৫-২৬।

[13]. রামায়ণ, অনুবাদ : রাজশেখর বসু; ১৩তম মুদ্রণ : বাংলা ১৪১৮, বালকান্ড, পৃ. ৪৬-৪৯।

[14]. সুবল চন্দ্র মিত্র, সরল বাঙ্গলা অভিধান, পৃ. ১৩৪৮।

[15]. আধুনিক বাংলা অভিধান, বাংলা একাডেমি, পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত সংস্করণ : এপ্রিল ২০১৬, পৃ. ৯৪৮ ও ৯৭২।

[16]. মহাভারত, অনুবাদ : রাজশেখর বসু; ১৩তম মুদ্রণ : বাংলা ১৪১৮, পৃ. ৫৮৫-৮৬।



বিষয়সমূহ: সমাজ-সংস্কার
আরও