আদর্শ দাম্পত্য জীবন : স্ত্রীর করণীয়
লিলবর আল-বারাদী
লিলবর আল-বারাদী 997 বার পঠিত
ভূমিকা : বিবাহ নারী-পুরুষ দু‘জন অচেনা মানুষের মধ্যে গড়ে তোলে আত্মিক সম্পর্ক। মধুর এক সম্পর্কে দু’টি দেহ মন মিলে-মিশে একই সত্ত্বা ও অনুভূতির অনবদ্য বন্ধনে বাঁধা পড়ে। পবিত্র এ বন্ধনে স্বামী-স্ত্রী অকৃত্রিম ভালবাসা, অগাধ বিশ্বাস, অপ্রতিম শ্রদ্ধাবোধ আর পাহাড়সম দায়িত্বের বোঝা নিয়ে জীবনের নতুন এক অধ্যায় শুরু করে। স্বামী চায় সারাদিন ঘামঝরা পরিশ্রম করে এসে স্ত্রীর মিষ্টভাষা আর ভালোবাসার পরশে সিক্ত হ’তে। আবার স্ত্রীও চায় পরিবারের দায়িত্বের বোঝা সামাল দিয়ে স্বামীর স্নেহের প্রশস্ত ছায়ায় সুখের নীড় খুঁজে পেতে। কিন্তু বর্তমান সময়ে কিছু কিছু স্বামী-স্ত্রীর কারণে এই সুদৃঢ় সম্পর্ক কাচের পাত্রের মত নিমিষেই ভেঙ্গে যাচ্ছে। দীর্ঘ দিনের গড়ে ওঠা হৃদয়ের বন্ধনে সামান্য কারণে বেজে উঠছে বিচ্ছেদের বিরহ সুর। বিরহ যাতনায় হু-হু করে বেড়ে চলেছে তালাক। যাকে হাদীছে সবচেয়ে ‘নিকৃষ্ট হালাল’ হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে। বর্তমানে বিবাহ বিচ্ছেদ সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এ ব্যাধি স্বামী-স্ত্রী উভয়ের কারণে দিনদিন মহামারীর ন্যায় সংক্রমিত হচ্ছে। বিবাহ বিচ্ছেদের সংক্রামণ রুখতে হ’লে স্বামী-স্ত্রীর উভয়কেই ইসলামী অনুশাসন মেনে চলতে হবে। এক্ষেত্রে স্ত্রীর কর্তব্য স্বামীর চেয়ে একটু বেশী। সেকারণে আলোচ্য প্রবন্ধে শুরুতেই বিবাহ বিচ্ছেদরোধে স্ত্রীদের করণীয় সম্পর্কে আলোচনার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ।
১. স্বামীর প্রতি অনুগত থাকা :
নিষিদ্ধ বিষয় ছাড়া স্বামীর প্রতি সদা অনুগত থাকা প্রত্যেক দ্বীনদার স্ত্রীর অন্যতম কর্তব্য। বিবাহের পর স্বামীই তার মূল অভিভাবক। সেকারণে স্বামীর ইচ্ছার বিরুদ্ধাচরণ করা জায়েয নয়। স্বামীর আনুগত্য করা, পরিবারের রক্ষনাবেক্ষণ করা, সন্তান-সন্ততির যথাযথ খেয়াল রাখার মাধ্যমেই একজন নারী জান্নাত পেতে পারে। আবার এর ব্যত্যয় ঘটলে জাহান্নামে যেতে পারে। স্বামীর আনুগত্য ও তার পরিবারের দায়িত্ব পালনের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে হাদীছে, আব্দুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একদা খুৎবায় বলেন, لاَ يَجُوزُ لاِمْرَأَةٍ فِى مَالِهَا إِلاَّ بِإِذْنِ زَوْجِهَا إِذَا هُوَ مَلَكَ عِصْمَتَهَا ‘কোন নারীর জন্য তার স্বামীর সম্মতি ব্যতীত নিজ সম্পদ হস্তান্তর করা জায়েয নয়। কেননা সে তার সম্মান-সম্ভ্রম রক্ষণ ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে দায়বদ্ধ’।[1] স্বামী যেমন তার আনুগত্যশীলা স্ত্রীর সম্ভ্রম রক্ষা করতে সর্বদা দায়বদ্ধ। তদ্রূপ স্ত্রীও স্বামীর হক্ব আদায় করতে বাধ্য। হাদীছে বলা হয়েছে, যে স্ত্রী তার স্বামীর হক্ব আদায় করতে অক্ষম সে তার প্রভুর হক্ব আদায় করতেও অক্ষম। মু‘আয (রাঃ) সিরিয়া থেকে ফিরে এসে নবী করীম (ছাঃ)-কে সিজদা করেন। তখন নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘হে মু‘আয! এ কী? তিনি বলেন, আমি সিরিয়ায় গিয়ে দেখতে পাই যে, সেখানকার লোকেরা তাদের ধর্মীয় নেতা ও শাসকদেরকে সিজদা করে। তাই আমি মনে মনে আশা পোষণ করলাম যে, আমি আপনার সামনে তাই করব। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, فَلاَ تَفْعَلُوا فَإِنِّى لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِغَيْرِ اللهِ لأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا وَالَّذِى نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لاَ تُؤَدِّى الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا حَتَّى تُؤَدِّىَ حَقَّ زَوْجِهَا وَلَوْ سَأَلَهَا نَفْسَهَا وَهِىَ عَلَى قَتَبٍ لَمْ تَمْنَعْهُ- ‘তোমরা তা কর না। কেননা আমি যদি কোন ব্যক্তিকে আল্লাহ ছাড়া অপর কাউকে সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তাহ’লে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সিজদা করতে। সেই সত্তার শপথ, যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! স্ত্রী তার স্বামীর হক্ব আদায় না করা পর্যন্ত তার প্রভুর হক্ব আদায় করতে সক্ষম হবে না’।[2]
অন্যত্র এসেছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لأَحَدٍ لأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا ‘আমি যদি কোন মানবকে সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তবে স্ত্রীকে তার স্বামীর জন্য সিজদা করার নির্দেশ দিতাম’।[3]
অন্য হাদীছে এসেছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘আমি আজকের মত ভয়াবহ দৃশ্য কখনো দেখিনি। আর আমি দেখলাম, জাহান্নামের অধিকাংশ বাসিন্দা নারী। তারা তাদের কুফরীর কারণে জাহান্নামী। কুফর হ’ল,يَكْفُرْنَ الْعَشِيرَ، وَيَكْفُرْنَ ‘তারা স্বামীর অবাধ্য থাকে এবং ইহসান অস্বীকার করে। তুমি যদি তাদের কারও প্রতি সারা জীবন সদাচরণ কর, অতঃপর সে তোমার হ’তে (যদি) সামান্য ত্রুটি পায়, তা’হলে বলে ফেলে, তোমার কাছ থেকে কখনো ভাল ব্যবহার পেলাম না’।[4]
২. নিজের ও স্বামীর পিতা-মাতাকে সন্তুষ্ট রাখা :
পিতা-মাতা সন্তানের একমাত্র জন্মদাতা। তাদের আত্মত্যাগের ঋণ পৃথিবীর কোন মূল্যবান সম্পদ দ্বারা কখনো পরিশোধ করা সম্ভব নয়। তাই পিতা-মাতার প্রতি আমাদের আজীবন চির কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। আমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,رِضَى الرَّبِّ فِى رِضَى الْوَالِدِ وَسَخَطُ الرَّبِّ فِى سَخَطِ الْوَالِدِ ‘পিতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পিতার অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি’।[5] অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, الْوَالِدُ أَوْسَطُ أَبوابِ الْجَنَّةِ، فَحَافِظْ إِنْ شِئْتَ أَوْ ضَيِّعْ ‘পিতা হ’লেন জান্নাতের মধ্যম দরজা। এক্ষণে তুমি চাইলে তা রেখে দিতে পার অথবা বিনষ্ট করতে পার’।[6]
একজন বিবাহিতা নারী দুই দিক থেকে সৌভাগ্যবতী এবং জান্নাতের কাছাকাছি। প্রথমতঃ সে যদি নিজের পিতা-মাতার আনুগত্য করে তবে সে আমল তার জান্নাতে যাওয়ার পথ সুগম করবে। দ্বিতীয়তঃ স্বামীর পিতা-মাতাও তার নিজের পিতা-মাতার সমান। স্বামীর নির্দেশ মেনে যদি নিজের শ্বশুর-শাশুড়ীর আনুগত্য করে ও বৃদ্ধাবস্থায় সেবা করে তবুও সে জান্নাত লাভ করতে পারবে ইনশাআল্লাহ। বর্তমান সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম একটি কারণ হ’ল, অধিকাংশ নারী নিজের পিতা-মাতাকে যতটা ভালবাসে, তার কিয়দংশ ভালবাসা স্বামীর পিতা-মাতার প্রতি থাকে না। ফলে একান্নবর্তী পরিবার ভেঙ্গে যাচ্ছে এবং চুড়ান্ত পর্যায়ে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটছে।
৩. স্বামীর হক আদায় ও সম্মান অক্ষুণ্ণণ রাখা :
সর্বদা স্বামীর হক্ব আদায় ও সম্মান করা আদর্শ স্ত্রীর কর্তব্য। সম্মান ও শ্রদ্ধাহীন সম্পর্ক কচুর পাতায় স্থিত পানির মতই ঠুনকো। অন্য কোন নারীর কাছে স্বামীর খারাপ আচরণের কথা বলে স্বামীর দুর্নাম করা উচিত নয়। স্বামীর হক্ব সম্পর্কে আবূ সাঈদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, এক ব্যক্তি তার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট এসে বললেন,هَذِهِ ابْنَتِي أَبَتْ أَنْ تَزَوَّجَ، فَقَالَ: أَطِيعِي أَبَاكِ كُلُّ ذٰلِكَ تُرَدِّدُ عَلَيْهِ مَقَالَتَهَا، فَقَالَتْ: وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لَا أَتَزَوَّجُ حَتَّى تُخْبِرَنِي مَا حَقُّ الزَّوْجِ عَلَى زَوْجَتِهِ، فَقَالَ: حَقُّ الزَّوْجِ عَلَى زَوْجَتِهِ لَوْ كَانَتْ بِهِ قُرْحَةٌ، فَلَحَسَتْهَا مَا أَدَّتْ حَقَّهُ، فَقَالَتْ: وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لَا أَتَزَوَّجُ أَبَدًا، فَقَالَ: لَا تُنْكِحُوهُنَّ إِلَّا بِإِذْنِهِنّ
‘হে আল্লাহর রাসূল! আমার এই মেয়েটি বিয়ে করতে অস্বীকার করছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মেয়েটিকে বললেন, ‘তুমি তোমার আববার কথা মেনে নাও। মেয়েটি বলল, আপনি বলুন, স্ত্রীর উপর তার স্বামীর হক্ব কী? তিনি বললেন, স্বামীর এত বড় হক্ব আছে যে, যদি তার নাকের দুই ছিদ্র থেকে রক্ত-পুঁজ বের হয় এবং স্ত্রী তা নিজের জিভ দ্বারা চেঁটে (পরিষ্কার করে), তবুও সে তার যথার্থ হক্ব আদায় করতে পারবে না! যদি মানুষের জন্য মানুষকে সিজদা করা বৈধ হ’ত, তা’হলে আমি স্ত্রীকে আদেশ করতাম, সে যেন তার স্বামী কাছে এলে তাকে সিজদা করে...’।[7]
অন্যত্র এসেছে, হুসাইন বিন মিহসানের এক ফুফু নবী (ছাঃ)-এর নিকট কোন প্রয়োজনে এসেছিলেন। প্রয়োজন পূরণ হয়ে গেলে তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,أَذَاتُ زَوْجٍ أَنْتِ ‘তোমার কি স্বামী আছে? সে বলল, জী হ্যাঁ। তিনি বললেন, كَيْفَ أَنْتِ لَهُ তার কাছে তোমার অবস্থান কী? সে বলল, ‘যথাসাধ্য আমি তার সেবা করি’। রাসূল (ছাঃ) তাকে বলেন,فَانْظُرِى أَيْنَ أَنْتِ مِنْهُ فَإِنَّمَا هُوَ جَنَّتُكِ وَنَارُكِ. ‘লক্ষ্য রেখ, তোমার স্বামীই তোমার জান্নাত ও জাহান্নাম’।[8]
একদা এক মহিলা শায়খ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ)-কে জিজ্ঞাসা করেন, শায়খ! আমি বিয়ের আগে বেশী বেশী ছালাত, ছিয়াম আদায় করতাম, কুরআন তিলাওয়াত করে শান্তি অনুভব করতাম, নেক আমলে শান্তি পেতাম কিন্তু এখন আমি সেসব বিষয়ে ঈমানের স্বাদ খুঁজে পাই না। শায়খ আলবানী (রহঃ) ঐ মহিলাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘হে আমার মুসলিম বোন! তুমি তোমার স্বামীর হক্ব আদায় করা এবং অনুগত হয়ে তার কথা শোনার ব্যাপারে কতটুকু মনোযোগী’? মহিলা একটু বিরক্তবোধ করে বলে, শায়খ আমি আপনাকে ছালাত, ছিয়াম, কুরআন তেলাওয়াত আর আল্লাহর আনুগত্যের কথা জিজ্ঞাসা করছি আর আপনি আমাকে আমার স্বামীর ব্যাপারে বলছেন? শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, আমার বোন! অধিকাংশ মেয়ে এই কারণে ঈমানের স্বাদ, আল্লাহর আনুগত্যে, ইবাদতে তৃপ্তি পায় না। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,وَلَا تَجِد امْرَأَة حلاوة الْإِيمَان حَتَّى تُؤدِّي حق زَوجهَا ‘কোন মহিলা ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমানের স্বাদ বা তৃপ্তি পাবে না, যখন পর্যন্ত নিজের স্বামীর হক্ব আদায় করবে না’।[9] অন্যত্র, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, لو تعلم المرأة حق الزوج لم تقعد ما حضر غداؤه وعشاؤه حتى يفرغ منه ‘যদি নারীরা পুরুষের অধিকার সম্পর্কে জানত, দুপুর কিংবা রাতের খাবারের সময় হ’লে তাদের খানা না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্রাম নিত না’।[10]
স্ত্রীদের স্বামীর সম্মানের কথা প্রতি পদে পদে চিন্তা করা উচিৎ। কেননা স্বামীর সম্মানে নারীরা সম্মানিতবোধ করে। আসমা বিনতু আবু বকর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘যুবায়ের (রাঃ) আমাকে বিবাহ করলেন, সে সময় একটি ঘোড়া ব্যতীত কোন যোগ্য সম্পদ, গোলাম বা অন্য কোন কিছু দুনিয়াতে তার ছিল না। তিনি বলেন, আমি তার ঘোড়াটাকে ঘাস খাওয়াতাম, তার পারিবারিক কাজকর্মেও সঙ্গ দিতাম। আমি তার যত্ন নিতাম, তার পানিবাহী উটের জন্য খর্জুর (খেজুর) বীচি কুড়াতাম, তাকে ঘাস খাওয়াতাম, পানি নিয়ে আসতাম, তার ডোল ইত্যাদি মেরামত করতাম এবং (রুটির জন্য) আটা মাখতাম। তবে আমি ভাল রুটি বানাতে পারতাম না। তাই আমার কতিপয় আনছারী সাথীরা আমাকে রুটি পাকিয়ে দিত। তারা ছিল স্বার্থহীন রমণী। আমি যুবায়েরের জমি থেকে (যা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে জায়গীর রূপে দিয়েছিলেন) খেজুর বীচি (কুড়িয়ে) আমার মাথায় করে বয়ে আনতাম। সে (জমি) ছিল এক ক্রোশের দুই-তৃতীয়াংশ (প্রায় দু’মাইল) দূরে অবস্থিত।
তিনি বলেন, আমি একদিন আসছিলাম আর বীচির বোঝা আমার মাথায় ছিল। পথিমধ্যে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর দেখা পেলাম। সে সময় তার সাথে ছাহাবীগণের একটি ক্ষুদ্র দল ছিল। তিনি আমাকে ডাকলেন এবং তাঁর বাহনটি বসাবার আওয়াজ করলেন। যেন তিনি আমাকে বাহনের পেছনে উঠিয়ে নিতে পারেন। যুবায়ের (রাঃ)-এর আত্মমর্যাদার কথা ভেবে আমি লজ্জাবোধ করলাম। যুবায়ের (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! তাঁর সাথে তোমার আরোহণের চাইতে তোমার মাথায় করে বীচি বয়ে আনা অনেক কঠিন ও কষ্টকর ছিল। অতঃপর আমার পিতা আবু বকর (রাঃ) আমার নিকট একটি খাদেম প্রেরণ করলেন। ঘোড়াটি দেখা-শুনার কাজে সে আমার পক্ষে যথেষ্ট হয়ে গেল। তিনি যেন আমাকে এ দায়িত্ব হ’তে মুক্ত করেছিলেন’।[11]
৪. স্বামীর প্রতি সদ্ব্যবহার করা :
স্বামী যেমন তার স্ত্রীর সাথে সদ্ব্যবহার করবে তদ্রূপ স্ত্রীও স্বামীর সাথে উত্তম আচরণ করবে। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’ল, কোন রমণী সর্বোত্তম? উত্তরে তিনি বলেন, الَّتِي تَسُرُّهُ إِذَا نَظَرَ وَتُطِيعُهُ إِذَا أَمَرَ وَلَا تُخَالِفُهُ فِي نَفْسِهَا وَلَا مَالِهَا بِمَا يَكْرَهُ. ‘যে স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি তাকালে তাকে সন্তুষ্ট করে দেয়, স্বামী কোন নির্দেশ করলে তা যথাযথভাবে পালন করে এবং নিজের প্রয়োজনে ও ধন-সম্পদের ব্যাপারে স্বামীর ইচ্ছার বিরুদ্ধাচরণ করে না’।[12] শারঈ ওযর ব্যতীত স্বামীর শারিরীক হক্ব আদায়ে স্ত্রী সর্বদা সাড়া দিতে প্রস্ত্তত থাকবে। এক্ষেত্রে স্বামীকে অসন্তুষ্ট করা গুনাহের কাজ। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ ، فَبَاتَ غَضْبَانَ عَلَيْهَا ، لَعَنَتْهَا الْمَلاَئِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ. ‘কোন পুরুষ যখন তার স্ত্রীকে নিজের বিছানায় ডাকে, আর স্ত্রী তার ডাকে সাড়া না দেয়, এভাবেই স্বামী রাত যাপন করে, সে স্ত্রীর ওপর ফেরেশতারা সকাল পর্যন্ত অভিশম্পাত করে’।[13]
প্রত্যেক স্ত্রী স্বামীর সাথে এমন ব্যবহার করবে যাতে কখনো তাকে বকাঝকা করার প্রয়োজন না হয়। একটি হৃদয়গ্রাহী ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি। সেটি হ’ল-
শা‘বী বর্ণনা করেন, একদিন আমাকে শুরাইহ্ বলেন, ‘শা‘বী, তুমি তামীম বংশের মেয়েদের বিয়ে কর। তামীম বংশের মেয়েরা খুব বুদ্ধিমতী। আমি বললাম, আপনি কীভাবে জানেন তারা বুদ্ধিমতী? তিনি বললেন, আমি কোন এক জানাযা থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। পথের পাশেই ছিল তাদের কারোর বাড়ি। লক্ষ্য করলাম, জনৈকা বৃদ্ধা মহিলা একটি ঘরের দরজায় বসে আছে। তার পাশেই রয়েছে সুন্দরী এক যুবতী। মনে হ’ল, এমন রূপসী মেয়ে আমি আর কখনো দেখি নি। আমাকে দেখে মেয়েটি কেটে পড়ল। আমি পানি চাইলাম, অথচ আমার তৃষ্ণা ছিল না। সে বলল, তুমি কেমন পানি পছন্দ কর? আমি বললাম, যা উপস্থিত আছে। মহিলা মেয়েকে ডেকে বলল, দুধ নিয়ে আস, মনে হচ্ছে সে আগন্তুক। আমি বললাম, এ মেয়ে কে? সে বলল, জারিরের মেয়ে যয়নব। বললাম, বিবাহিতা না অবিবাহিতা? সে বলল, অবিবাহিতা।
আমি বাড়িতে পৌঁছে সামান্য বিশ্রাম নিতে ঘরে গেলাম। কিন্তু কোন মতে চোখে ঘুম ধরল না। যোহর ছালাত পড়লাম। অতঃপর আমার গণ্যমান্য কয়েকজন বন্ধুকে সাথে করে মেয়ের চাচার বাড়িতে গেলাম। সে আমাদের সাদরে গ্রহণ করল। অতঃপর বলল, আবু উমাইয়া কী উদ্দেশ্যে আসা? আমি বললাম, আপনার ভাতিজি যয়নবের উদ্দেশ্যে। সে বলল, তোমার ব্যাপারে তার কোন আগ্রহ নেই! তবুও সে আমার সাথে তাকে বিয়ে দিল। মেয়েটি আমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে খুবই লজ্জাবোধ করল। আমি বললাম, আমি তামীম বংশের নারীদের কী সর্বনাশ করেছি? তারা কেন আমার ওপর অসন্তুষ্ট? পরক্ষণই তাদের কঠোর স্বভাবের কথা আমার মনে পড়ল। ভাবলাম, তালাক দিয়ে দেব। পুনরায় ভাবলাম, না, আমিই তাকে আপন করে নিব। যদি আমার মনঃপুত হয় ভাল, অন্যথায় তালাকই দিয়ে দেব।
হে শা‘বী, সে রাতের মুহূর্তগুলো এত আনন্দের ছিল, যা বর্ণনাতীত। খুবই চমৎকার ছিল সে সময়টা, যখন তামীম বংশের মেয়েরা তাকে নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। আমার মনে পড়ল, রাসূলের সুন্নাতের কথা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘স্ত্রী প্রথম ঘরে প্রবেশ করলে স্বামীর কর্তব্য হ’ল দু’রাকাত ছালাত পড়া। স্ত্রীর মধ্যে সুপ্ত মঙ্গল কামনা করা এবং তার মধ্যে লুকায়িত অমঙ্গল থেকে পানাহ চাওয়া’। আমি ছালাত শেষে পিছনে তাকিয়ে দেখলাম, সে আমার সাথে ছালাত পড়ছে। যখন ছালাত শেষ করলাম, মেয়েরা আমার কাছে উপস্থিত হ’ল। আমার কাপড় পালটে সুগন্ধি মাখা কম্বল আমার উপর টেনে দিল। যখন সবাই চলে গেল, আমি তার নিকটবর্তী হ’লাম ও তার শরীরের এক পাশে হাত বাড়ালাম। সে বলল, আবু উমাইয়া, রাখ। অতঃপর বলল, ‘আমি একজন অভিজ্ঞতা শূন্য অপরিচিত নারী। তোমার পছন্দ-অপছন্দ আর স্বভাবরীতির ব্যাপারে কিছুই জানি না আমি। আরও বলল, তুমি আমার মালিক হয়েছ, এখন আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক আমার সাথে ব্যবহার কর। হয়ত ভালভাবে রাখ, নয়ত সুন্দরভাবে আমাকে বিদায় দাও। এটাই আমার কথা। আল্লাহর নিকট তোমার ও আমার জন্য মাগফিরাত কামনা করছি’।
শুরাইহ্ বলল, শা‘বী, সে মুহূর্তে আমি মেয়েটির কারণে বক্তব্য দিতে বাধ্য হয়েছি। অতঃপর আমি হামদ ও ছানা পাঠ করে বললাম, ‘আমরা দু’জনে পরস্পরের পরিপূরক। আমার মধ্যে ভাল দেখলে প্রচার করবে, আর মন্দ কিছু দৃষ্টিগোচর হ’লে গোপন রাখবে’। সে আরও কিছু কথা বলেছে, যা আমি ভুলে গেছি। সে বলেছে, আমার আত্মীয় স্বজনের আসা-যাওয়া তুমি কোন দৃষ্টিতে দেখ? আমি বললাম, ঘনঘন আসা-যাওয়ার মাধ্যমে বিরক্ত করা পছন্দ করি না। সে বলল, তুমি পাড়া-প্রতিবেশীর মধ্যে যার ব্যাপারে অনুমতি দিবে তাকে আমি ঘরে প্রবেশ করার অনুমতি দেব। যার ব্যাপারে নিষেধ করবে তাকে আমি অনুমতি দেব না। আমি বললাম, এরা ভাল, ওরা ভাল না। শুরাইহ বলল, শা‘বী, আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দদায়ক অধ্যায় হচ্ছে, সে রাতের মুহূর্তগুলো। পূর্ণ একটি বছর গত হ’ল, আমি তার মধ্যে আপত্তিকর কিছু দেখি নি।
এক দিনের ঘটনা, ‘দারুল ক্বাযা’ বা বিচারালয় থেকে বাড়ি ফিরে দেখি, ঘরের ভেতর একজন মহিলা তাকে উপদেশ দিচ্ছে; আদেশ দিচ্ছে আর নিষেধ করছে। আমি বললাম সে কে? বলল, তোমার শ্বশুর বাড়ির অমুক বৃদ্ধা। আমার অন্তরের সন্দেহ দূর হ’ল। আমি বসার পর, মহিলা আমার সামনে এসে হাযির হ’ল। আমি বললাম, আপনি কে? বলল, আমি অমুক; তোমার শ্বশুরবাড়ির লোক। বললাম, আল্লাহ আপনাকে কবুল করুন। সে বলল, তোমার স্ত্রীকে কেমন পেয়েছ? বললাম, খুব সুন্দর। বলল, আবু উমাইয়া, নারীরা দু’সময় অহংকারের শিকার হয়। পুত্র সন্তান প্রসব করলে আর স্বামীর কাছে খুব প্রিয় হ’লে। কোন ব্যাপারে তোমার সন্দেহ হ’লে লাঠি দিয়ে সোজা করে দেবে। মনে রাখবে, পুরুষের ঘরে আহ্লাদি নারীর ন্যায় খারাপ আর কোন বস্ত্ত নেই। বললাম, তুমি তাকে সুন্দর আদব শিক্ষা দিয়েছ, ভাল জিনিসের অভ্যাস গড়ে দিয়েছ তার মধ্যে। সে বলল, শ্বশুর বাড়ির লোকজনের আসা-যাওয়া তোমার কেমন লাগে? বললাম, যখন ইচ্ছা তারা আসতে পারে। শুরাইহ বলল, অতঃপর সে মহিলা প্রতি বছর একবার করে আসত আর আমাকে উপদেশ দিয়ে যেত।
সে মেয়েটি বিশ বছর আমার সাথে সংসার করেছে, একবার ব্যতীত কখনো তিরস্কার করার প্রয়োজন হয়নি। তবে ভুল সেবার আমারই ছিল। ঘটনাটি এমন, ফজরের দু’রাক‘আত সুন্নাত পড়ে আমি ঘরে বসে আছি, মুয়ায্যিন ইক্বামত দিতে শুরু করল। আমি তখন গ্রামের মসজিদের ইমাম। দেখলাম, একটা বিচ্ছু হাঁটা-চলা করছে। আমি একটা পাত্র উঠিয়ে তার ওপর রেখে দিলাম। বললাম, যয়নব, আমার আসা পর্যন্ত তুমি নড়াচড়া করবে না। শা‘বী, তুমি যদি সে মুহূর্তটা দেখতে! ছালাত শেষে ঘরে ফিরে দেখি, বিচ্ছু সেখান থেকে বের হয়ে তাকে দংশন করেছে। আমি তৎক্ষণাৎ লবণ ও সাক্ত তলব করে, তার আঙ্গুলের উপর মালিশ করলাম। সূরা ফাতিহা, নাস ও ফালাক্ব পাঠ করে তার উপর দম করলাম’।[14]
৫. স্বামীর জ্ঞানের মর্যাদা দেয়া :
বিয়ের পর শুরুতেই একজন স্ত্রীর উচিৎ তার স্বামীর জ্ঞান ও যোগ্যতার স্তর সম্পর্কে ধারণা গ্রহণ করা। কেননা যে ব্যক্তির সাথে আজীবন ঘর-সংসার করা লাগবে তার জ্ঞান ও প্রজ্ঞা সম্পর্কে সম্যক ধারণা না রাখলে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকবে না। তাছাড়া প্রত্যেক মানুষ তার জ্ঞান ও প্রজ্ঞার আলোকে মানুষের সাথে কথা বলে এবং সেই অনুসারে আচরণও করে থাকে।
৬. দোষ-ত্রুটি অনুসন্ধান না করা :
স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের প্রতি অপ্রয়োজনীয় সন্দেহ করা থেকে বিরত থাকবে। বিয়ের আগে অভিভাবকের মাধ্যমে ছেলের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য যাচাই করতে হবে। তবুও বিয়ের পর বিচ্যুতি দেখা দিলে বা সন্দেহ হ’লে গোয়েন্দাগিরি না করে ধৈর্য্যধারণ করে সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে এবং দো‘আ করতে হবে। আবু বারাযাহ আল-আসলামী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, يَا مَعْشَرَ مَنْ آمَنَ بِلِسَانِهِ وَلَمْ يَدْخُلِ الإِيمَانُ قَلْبَهُ لاَ تَغْتَابُوا الْمُسْلِمِينَ وَلاَ تَتَّبِعُوا عَوْرَاتِهِمْ فَإِنَّهُ يَتَّبِعِ اللهُ عَوْرَتَهُ وَمَنْ يَتَّبِعِ اللهُ عَوْرَتَهُ يَفْضَحْهُ فِى بَيْتِهِ- ‘ওহে যারা মৌখিক স্বীকৃতির মাধ্যমে ঈমান এনেছ, অথচ এখনো অন্তঃকরণে ঈমান পৌঁছেনি! তোমরা মুসলিমদের নিন্দা কর না, তাদের ছিদ্রান্বেষণ কর না। কেননা যে ব্যক্তি অপরের দোষ খোঁজে আল্লাহ তার দোষ অনুসন্ধান করেন। আর আল্লাহ যার দোষ তালাশ করেন, তাকে তার নিজস্ব বাসগৃহেই অপদস্ত করেন’।[15]
উপসংহার : পরিশেষে বলতে হয় নারীরা অতি অল্প আমলে জান্নাতে যাবার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে। যে নারী স্বামীর একান্ত অনুগতা ও পতিব্রতা তার বড় মর্যাদা রয়েছে ইসলামে। প্রিয় নবী (ছাঃ) বলেন, إِذَا صَلَّتِ الْمَرْأَةُ خَمْسَهَا، وَصَامَتْ شَهْرَهَا، وَحَصَّنَتْ فَرْجَهَا، وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا، دَخَلَتْ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ. ‘রমণী তার পাঁচ ওয়াক্তের ছালাত পড়লে, রামাযানের ছিয়াম পালন করলে, ইজ্জতের হিফাযত করলে ও স্বামীর তাবেদারী করলে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছামত প্রবেশ করতে পারবে’।[16]
একজন বিবাহিতা নারীর জীবনে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর আনুগত্যের পরেই স্বামীর আনুগত্য অপরিহার্য। আবার স্বামীর আনুগত্য ব্যতীত পিতা-মাতার প্রতি আনুগত্য নেই। তবে স্বামী অন্যায় আচরণ করলে স্ত্রী স্বামীকে নিজে বা অন্য কারও মাধ্যমে তাকে বুঝানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু কোনক্রমেই তার অবাধ্য হওয়া যাবে না। একজন নারী তার ভালবাসা দিয়ে একজন পুরুষকে আয়ত্তে রাখতে পারেন। বৈবাহিক জীবনে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের আত্মত্যাগ অনস্বীকার্য। বিবাহিত জীবনকে মধুর ভালবাসাময় করতে স্ত্রীদের যেমন করণীয় রয়েছে তেমনি স্বামীরও রয়েছে। তবে মনে রাখা প্রয়োজন, বৈবাহিক সম্পর্কে দূরত্ব ও বিচ্ছেদ সাধন করা শয়তানের সবচেয়ে বড় সফলতা। এজন্য শয়তানকে সর্বাবস্থায় প্রকাশ্য শত্রু মনে করা উচিৎ। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুন।-আমীন!
(ক্রমশঃ)
লিলবর আল-বারাদী
লেখক : যশপুর, তানোর, রাজশাহী।
[1]. ইবনু মাজাহ হা/২৩৮৮; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৭৭৫, ৮২৫; আত-তালীকুর রাগীব ২/৪৫; সনদ ছহীহ।
[2]. ইবনু মাজাহ হা/১৮৫৩; ছহীহুল জামি‘ হা/৫২৯৫; ছহীহ আত-তারহীব হা/১৯৩৮; সনদ ছহীহ।
[3]. তিরমিযী, মিশকাত হা/৩২৫৫।
[4]. বুখারী হা/১০৫২; মুসলিম হা/৯০১, ৯০৭; মিশকাত হা/১৪৮২।
[5]. তিরমিযী হা/১৮৯৯; মিশকাত হা/৪৯২৭; ছহীহাহ হা/৫১৬।
[6]. শারহুস সুন্নাহ হা/৩৪২১; আহমাদ হা/২৭৫৫১; তিরমিযী হা/১৯০০; ইবনু মাজাহ হা/২০৮৯; মিশকাত হা/৪৯২৮; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৯১৪।
[7]. মুস্তাদারিক হাকিম হা/২৭৬৭; ছহীহুল জামি‘ হা/৩১৪৮।
[8]. আহমাদ হা/১৯০২৫; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৬১২।
[9]. ছহীহ আত-তারগীব হা/১৯৩৯; হাসান ছহীহ।
[10]. তাবরানী, ছহীহুল জামে‘ হা/৫২৫৯।
[11]. মুসলিম হা/২১৮২।
[12]. নাসাঈ হা/৩২৩১; মিশকাত হা/৩২৭২; আহমাদ হা/৭৪২১; ছহীহুল জামি‘ হা/৩২৯৮; হাসান হাদীছ।
[13]. বুখারী হা/৩২৩৭; ছহীহুল জামি‘ হা/৫৩২।
[14]. ইবনে আবদে রবিবহ আন্দালুসী রচিত ‘তাবায়েউন্নি’সা নামক গ্রন্থ থেকে সংকলিত।
[15]. আবুদাউদ হা/৪৮৮০; আহমাদ হা/১৯৮১৬; ছহীহুত তারগীব হা/২৩৪০; হাসান ছহীহ।
[16]. দারেমী হা/৮৮০; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৬১; মিশকাত হা/৩২৫৪।