কুরআন মাখলূক নয়; বরং আল্লাহর কালাম

আশরাফুল আলম 1305 বার পঠিত

[পাকিস্তানের প্রসিদ্ধ আহলেহাদীছ বিদ্বান ছিলেন মাওলানা যুবায়ের আলী যাঈ (রহঃ)। তিনি ইলমে হাদীছের তাহক্বীক্ব ও তাখরীজের কারণে পাকিস্তানের আলবানী খ্যাত ছিলেন। হাদীছ শাস্ত্রের তাহক্বীক্বের পাশাপাশি আরবী ও ঊর্দূ ভাষায় বিভিন্ন গবেষণাধর্মী বই রচনায় সিদ্ধহস্ত ছিলেন। তিনি ১০ই নভেম্বর ২০১৩ সালে ইন্তেকাল করেন। তাঁর রচনাবলী থেকে উর্দূ ভাষায় লিখিত বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ফাতওয়া ইলমিইয়াহ’র আক্বীদা বিষয়ক একটি প্রবন্ধ পাঠকদের উদ্দেশ্যে অনুবাদ করা হ’ল।]

রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পর নানাবিধ ফিৎনার উদ্ভব হয়। যা এখনও চলমান। হিজরী দ্বিতীয় শতাব্দীর শুরুতে উমাইয়া খিলাফতকালে ওয়াছিল বিন আত্বার হাত ধরে মু’তাযিলা নামক ফের্কার আবির্ভাব হয়। যাদের দ্বারা মুসলিম সমাজে অসংখ্য ভ্রান্ত আক্বীদার অনুপ্রবেশ ঘটেছে। তন্মধ্যে মারাত্মক একটি ভ্রান্ত আক্বীদা হ’ল কুরআন আল্লাহর কালাম নয় বরং তা আল্লাহর মাখলূক বা সৃষ্ট বস্ত্ত। এই ফিৎনা মোকাবিলার জন্য কারাগারে যেতে হয়েছিল ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) ও তাঁর সাথীদের। একের পর এক চাবুকের আঘাত করা হয়েছিল তাঁকে। যখনই তাঁর কাছে বলা হয়েছে, আপনি কি মানেন কুরআন আল্লাহর মাখলূক? তিনি বারবার বলেছেন, কুরআন আল্লাহর কালাম, তোমরা তোমাদের দাবীর পক্ষে একটি কুরআনের আয়াত অথবা একটি হাদীছ নিয়ে আস।

কুরআন আল্লাহর কালাম হওয়ার দলীলসমূহ :

কুরআন আল্লাহর কালাম, যা আল্লাহর সৃষ্ট নয়। এটিই হ’ল বিশুদ্ধ আক্বীদা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَإِنْ أَحَدٌ مِنَ الْمُشْرِكِينَ اسْتَجَارَكَ فَأَجِرْهُ حَتَّى يَسْمَعَ كَلَامَ اللهِ ثُمَّ أَبْلِغْهُ مَأْمَنَهُ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَا يَعْلَمُونَ- ‘আর যদি মুশরিকদের মধ্যে কোন ব্যক্তি তোমার কাছে আশ্রয় চায়, তাহ’লে আশ্রয় দাও। যাতে সে আল্লাহর কালাম শুনতে পায়। অতঃপর তাকে তার নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দাও। কারণ এরা অজ্ঞ সম্প্রদায়’ (তাওবাহ ৯/৬)। এই আয়াত থেকে স্পষ্ট জানা যায় যে, নবী করীম (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম মানুষদের সামনে যে কুরআন পড়তেন তা আল্লাহর কালাম। অন্যত্র আল্লাহ বলেন,وَإِنَّهُ لَتَنْزِيلُ رَبِّ الْعَالَمِينَ- ‘নিশ্চয়ই এ কুরআন বিশ্বপালকের পক্ষ হ’তে অবতীর্ণ’ (শো‘আরা ২৬/১৯২)

একদা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আরাফায় অবস্থানকালে লোকদের কাছে উপস্থিত হয়ে বলেন,أَلَا رَجُلٌ يَحْمِلُنِي إِلَى قَوْمِهِ، فَإِنَّ قُرَيْشًا قَدْ مَنَعُونِي أَنْ أُبَلِّغَ كَلَامَ رَبِّي- ‘তোমাদের মাঝে এমন কেউ আছে কি, যে আমাকে আমার কওম কুরায়েশদের কাছে নিয়ে যেতে পারে? কেননা, কুরায়েশরা আমার রবের

কালামকে মানুষের কাছে পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টি করছে’।[1]

কুরআন আল্লাহর কালাম হওয়ার বিষয়ে অভিমত সমূহ :

(১) আবু বকর ছিদ্দীক (রাঃ) কুরআনকে আল্লাহর কালাম বলতেন’।[2] যখন সূরা রূমের প্রথম আয়াত নাজিল হ’ল তখন মক্কার মুশরিকরা আবু বকর ছিদ্দীক (রাঃ)-কে বলল, এটি তোমার কথা নাকি তোমার সাথীর কথা? তখন তিনি বললেন, না এটি আমার কথা, আর না আমার সাথীর কথা। বরং এটি আল্লাহর কালাম’।[3]

(২) ইমাম সুফিয়ান ইবনু উয়াইনা (১০৭-১৯৮ হি.) বলেছেন, ‘আমি ৭০ বৎসর পূর্বে আমার উস্তাযদের মধ্যে অন্যতম উস্তায তাবেঈ আমর ইবনু দীনার (৪৬-১২৬ হি.)-কে বলতে শুনেছি, কুরআন আল্লাহর কালাম তা মাখলুক নয়’।[4]

(৩) জা‘ফর ছাদিক (৮৩-১৪৮ হি.) কুরআন সৃষ্ট হওয়ার বিরোধিতা করে বলেছেন, ‘এটি আল্লাহর কালাম’।[5]

(৪) ইমাম মালেক ইবনু আনাস (৯৩-১৭৯ হি.) কুরআনকে আল্লাহর কালাম বলতেন। আর যে ব্যক্তি কুরআনকে সৃষ্ট বলত, তার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ করতেন। তিনি বলতেন, মেরে মেরে তাকে সাজা দিতে হবে এবং মৃত্যু পর্যন্ত তাকে বন্দী রাখতে হবে’।[6]

(৫) ইমাম শাফেঈ (১৫০-২০৪ হি.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কুরআনকে সৃষ্ট বলবে সে কাফের’।[7]

(৬) অনুরূপভাবে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (১৬৪-২৪১ হি.) ঐ ব্যক্তিকে কাফের বলতেন, যে কুরআনকে সৃষ্ট বলত’।[8] তিনি বলতেন, ‘কুরআন হ’ল আল্লাহর ইলমের অংশ, আর আল্লাহর ইলম সৃষ্ট নয়। একইভাবে কুরআন আল্লাহর কালাম তা সৃষ্ট নয়’।[9] তিনি আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি কুরআনকে শব্দগতভাবে সৃষ্ট বলে, তাহ’লে বুঝতে হবে সে জাহমী আক্বীদায় বিশ্বাসী’।[10] এমন কথা যারা বলে তিনি তার পিছনে ছালাত আদায়, তার সাথে বসা এবং তাকে সালাম দিতে নিষেধ করতেন’।[11]

(৭) ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনু ইদ্রিস ইবনু ইয়াজিদ আল কুফী (মৃ. ১৯২ হি.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কুরআনকে সৃষ্ট বলে তাকে যিনদীক (নাস্তিক, অবিশ্বাসী) বলতেন’।[12]

(৮) ইমাম ওয়াহ্হাব বিন জারীর ইবনু হাযেম (১৩০-২০৬ হি.) বলেছেন, ‘কুরআন সৃষ্ট নয়’।[13]

(৯) ইমাম আবুল ওয়ালিদ ত্বয়ালিসী (১৩৩-২২৭ হি.) বলেন, ‘কুরআন আল্লাহর কালাম, কুরআন সৃষ্ট নয়। তিনি আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি মন থেকে কুরআন সৃষ্ট হওয়ার আক্বীদা রাখে, সে ইসলাম থেকে খারিজ অর্থাৎ সে কাফের’।[14]

(১০) প্রসিদ্ধ ক্বারী ইমাম আবু বকর ইবনু আইয়াশ আল-কুফী (৯৫-১৯৩ হি.) বলেন, যে ব্যক্তি তোমার সামনে কুরআনকে সৃষ্ট বলে, সে আমাদের নিকটে কাফের, নাস্তিক ও আল্লাহর দুশমন। তার কাছে বসবে না, তার সাথে কথা বলবে না’।[15]

(১১) কাযী মুয়ায ইবনু মুয়ায (১১৯-১৯৬ হি.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বলবে, কুরআন সৃষ্ট, সে মহান আল্লাহকে অস্বীকার করল’।[16]

(১২) ইমাম শাফেঈ (রহঃ)-এর প্রসিদ্ধ ছাত্র আবু ইয়াকুব ইউসুফ ইবনু ইয়াহইয়া বুয়াইতিয়ী (মৃ. ২৩১হি.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বলবে কুরআন সৃষ্ট, সে কাফের’।[17]

(১৩) ইমাম আহমাদ বিন আব্দুল্লাহ বিন ইউনুস (১৩২-২২৭ হি.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বলে কুরআন সৃষ্ট, তার পিছনে ছালাত পড়া যাবে না। কেননা সে কাফের’।[18]

(১৪) আবুল আলিয়াকে ইব্রাহীম নখঈ (৪৭-৯৬) বলেছিলেন, أَظُنُّ صَاحِبَكُمْ قَدْ سَمِعَ أَنَّهُ مَنْ كَفَرَ بِحَرْفٍ مِنْهُ فَقَدْ كَفَرَ بِهِ كُلِّهِ- ‘আমি মনে করি তোমার সাথী শুনেছে, যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ অস্বীকার করবে, তাহ’লে সে পুরো কুরআনকেই অস্বীকার করল’।[19]

(১৫) হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ কিতাব শারহু আক্বীদাতু তাহাবীতে আছে, কুরআন আল্লাহর কালাম, সৃষ্ট নয়। কুরআন শুনে যদি কেউ মনে করে এটা মানুষের বর্ণিত কালাম, তাহ’লে সে কুফরী করল। আল্লাহ এমন ব্যক্তির জন্য জাহান্নামের শাস্তির ওয়াদা করেছেন’।[20]

(১৬) ইমাম আবুল কাসেম ইসমাঈল ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে ফাযল আত-তায়মিয়ী আল-আসফাহানী (রহঃ) আছহাবুল হাদীছ ও আহলুস সুন্নাহ থেকে বর্ণনা করেছেন, ‘বর্তমানে যে কুরআন লিখিত আছে এবং যা মানুষের বুকে সংরক্ষিত আছে, প্রকৃতপক্ষে এটাই হ’ল আল্লাহর কালাম, যা জিবরীল (আঃ)-এর মাধ্যমে মুহাম্মাদ (ছাঃ) পর্যন্ত এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) থেকে ছাহাবা পর্যন্ত পৌঁছেছে’।[21]

(১৭) আবু মুহাম্মাদ আল-জুয়ায়নী বলেন, ‘বাস্তবতা হ’ল, নিঃসনেদহে আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা অক্ষর ও আওয়ায সহই কথা বলেছেন, যেমনটি তাঁর মর্যাদার সাথে যায়। কেননা তিনি কাদীর। আর কাদীর কোন অঙ্গ, কণ্ঠ ও কণ্ঠনালীর মুখাপেক্ষী নয়। আর এই বিশ^াসের মাধ্যমেই বক্ষ প্রশান্ত হয় এবং সমস্ত অস্থিরতা থেকে মানুষ শান্তি পায়’।[22]

কিছু মানুষ আল্লাহর কালামকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। কালামে নাফসী ও কালামে লাফযী। নিঃসন্দেহে এমন ভাগ করাটা বিদ‘আত। এভাবে যারা ভাগ করে তারা শব্দগতভাবে কুরআনকে ‘সৃষ্ট’ বলে চিৎকার করে। এমন লোকদেরকে ইমাম আহমাদ (রহঃ) জাহমিয়াদের চেয়েও নিকৃষ্ট বলেছেন।[23]

উল্লেখ্য যে, ইমাম বুখারী (রহঃ)-এর নামে যে কথা প্রসিদ্ধ আছে ‘লাফযী বিল কুরআন’ তা বিশুদ্ধ সনদে তাঁর থেকে প্রমাণিত নয়। বরং ইমাম বুখারী (রহঃ) দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন, والقران كلام الله غير مخلوق ‘আর কুরআন আল্লাহর কালাম, সৃষ্টবস্ত্ত নয়’।[24]

ইমাম নুয়াঈম ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) বলেছেন, সৃষ্ট কোন বস্ত্তর নিকট পানাহ চাওয়া যায় না। একইভাবে বান্দার কথা, জিন ইনসান ও ফেরেশতাদের নিকটও পানাহ চাওয়া যায় না। অর্থাৎ সৃষ্ট কোন কিছুর কাছে আশ্রয় চাওয়া উচিৎ নয়। বর্ণনাকারী ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, এই কথার মধ্যে দলীল রয়েছে যে, আল্লাহর কালাম সৃষ্ট নয়। আর তিনি ছাড়া বাকি সব জিনিস সৃষ্ট’।[25]

পরিশেষে, এ ধরনের অসংখ্য বর্ণনার মাধ্যমে আহলে সুন্নাহর ঐক্যমতে এই আক্বীদা প্রমাণিত যে, মুসলিমদের কাছে যে কুরআন আছে তা আল্লাহর কালাম, সৃষ্ট নয়। আর যে বলে সৃষ্ট, সে কাফের। এটি ঐ কুরআন যা লাওহে মাহফুযে লেখা আছে এবং জিব্রীল (আঃ)-এর মাধ্যমে সর্বশেষ নবী রহমাতুল্লিল ‘আলামীন মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর উপরে নাযিল করেছেন। আর মুহাম্মাদ (ছাঃ)-ছাহাবীদের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন। ছাহাবাগণ তাবেঈনদের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন। সম্মানিত তাবেঈনগণ তাবে-তাবেঈনদের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন। এটি ঐ কুরআন, যা মাছহাফ আকারে লিখিত আছে, যা মুসলিম উম্মাহ সর্বদা তিলাওয়াত করে।

আশরাফুল আলম

[অনুবাদক : মাস্টার্স, দাওয়াহ এ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।]


[1]. আবুদাউদ হা/৪৭৩৪; তিরমিযী হা/২৯২৫; ইবনু মাজাহ হা/২০১।

[2]. বায়হাক্বী, কিতাবুল আসমা ওয়াছ ছিফাত, পৃ. ২৩৯-২৪০ ।

[3]. বায়হাক্বী, কিতাবুল ই‘তিক্বাদ (তাহক্বীক্ব : আহমাদ ইবনু ইব্রাহীম) পৃ. ১০৮, সনদ ছহীহ।

[4]. বুখারী, খালকু আফ‘আলিল ইবাদ, পৃ. ৭; সনদ ছহীহ।

[5]. মাসায়েলে আবুদাউদ, পৃ. ২৬৫; বায়হাক্বী কিতাবুল ই‘তিক্বাদ, পৃ. ১০৭।

[6]. আবু বকর, আশ-শারী‘আহ, পৃ. ৭৯; হা/১২২, সনদ হাসান।

[7]. হিলইয়াতুল আওলিয়া পৃ. ৯/১১৩; সনদ হাসান।

[8]. মাসায়েলে আবুদাউদ পৃ. ২৬২।

[9]. ছালেহ আহমাদ বিন হাম্বল, আল-মিহনা, পৃ. ৬৯; আল-আক্বীদাতুস সালাফিয়াহ, পৃ. ১০৬।

[10]. ইসহাক্ব বিন ইব্রাহীম বিন হানী আন-নায়সাপুরী, মাসায়েলে আহমাদ বিন হাম্বল, ২/১৫২ পৃ.

[11]. প্রাগুক্ত।

[12]. ইমাম বুখারী, খলকু আফ‘আলিল ইবাদ, পৃ. ৮।

[13]. মাসায়েলে আবুদাউদ, পৃ. ২৬৬; সনদ ছহীহ।

[14]. প্রাগুক্ত।

[15]. মাসায়েলে আবুদাউদ, পৃ. ২৬৭।

[16]. মাসায়েলে আবুদাউদ, পৃ. ২৬৭-২৬৮

[17]. মাসায়েলে আবুদাউদ, পৃ. ২৬৮।

[18]. প্রাগুক্ত।

[19]. মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা হা/৩০১০৯।

[20]. শারহু আক্বীদাতুত তাহাবী, পৃ. ১৭৯

[21]. আলহুজ্জাহ ফি বায়ানিল মুহাজ্জাহ ১/৩৬৮ পৃ.।

[22]. মাসআলাতুল হুরূফ ওয়াছ ছাউত, পৃ. ১১।

[23]. মাসায়েলে আবুদাউদ, পৃ. ২৭১।

[24]. খলকু আফ‘আলিল ইবাদ, পৃ. ২৩।

[25]. খলকু আফ‘আলিল ইবাদ পৃ. ৮৯।



বিষয়সমূহ: কুরআন
আরও