রামাযানের শিক্ষা ও গুরুত্ব
মুখতারুল ইসলাম
আসাদ বিন আব্দুল আযীয 837 বার পঠিত
১৫. মানুষকে আল্লাহর রহমত হ’তে নিরাশকারী : মানুষ মাত্রই ভুলকারী। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,كُلُّ بَنِي آدَمَ خَطَّاءٌ، وَخَيْرُ الْخَطَّائِينَ التَّوَّابُونَ ‘প্রত্যেক আদম সন্তানই ভুলকারী। তবে উত্তম ভুলকারী তারাই, যারা বারবার তওবা করে’।[1]
সুতরাং একজন মানুষের ভুল বা পাপের কারণে তাকে আল্লাহর রহমত হ’তে নিরুৎসাহিত করা যাবে না। বরং তাকে দাওয়াতের মাধ্যমে সংশোধনের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। হয়ত মৃত্যুর পূর্বে তার একনিষ্ঠ তাওবার ফলে আল্লাহ তাকে পবিত্র করতে পারেন। সুতরাং কাউকেই জাহান্নামী আখ্যাদান বা তার ক্ষমা প্রাপ্তি কখনই হবে না এরূপ কথা বলা যাবে না। এমনটি বললে সেই দাঈ বা বক্তার আমলই বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে। কেননা হাদীছে এসেছে, জুনদুব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘এক ব্যক্তি বলল, আল্লাহর কসম! অমুক ব্যক্তিকে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। তখন আল্লাহ তা‘আলা বললেন,مَنْ ذَا الَّذِي يَتَأَلَّى عَلَيَّ أَنْ لَا أَغْفِرَ لِفُلَانٍ، فَإِنِّي قَدْ غَفَرْتُ لِفُلَانٍ، وَأَحْبَطْتُ عَمَلَكَ- ‘সে ব্যক্তি কে যে কসম খেয়ে বলে যে, আমি অমুককে ক্ষমা করব না? আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম এবং তোমার আমল বিনষ্ট করে দিলাম’।[2]
অপর হাদীছে আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, বনী ইস্রাঈলের মধ্যে দু’ ব্যক্তি ছিল। তাদের একজন পাপ কাজ করত এবং অন্যজন সর্বদা ইবাদতে লিপ্ত থাকত। যখনই ইবাদাতরত ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে দেখত তখনই তাকে খারাপ কাজ পরিহার করতে বলত। একদিন সে তাকে পাপ কাজে লিপ্ত দেখে বলল, তুমি এমন কাজ থেকে বিরত থাক। সে বলল, আমাকে আমার রবের উপর ছেড়ে দাও। তোমাকে কি আমার উপর পাহারাদার করে পাঠানো হয়েছে? সে বলল, আল্লাহর কসম! আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন না অথবা আল্লাহ তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না।
আমল বিনষ্টকারী পাপসমূহ |
অতঃপর দু’জনকেই মৃত্যু দিয়ে আল্লাহর নিকট উপস্থিত করা হ’লে তিনি ইবাদতগুজারী ব্যক্তিকে প্রশ্ন করলেন, তুমি কি আমার সম্পর্কে জানতে? অথবা তুমি কি আমার হাতে যা আছে তার উপর ক্ষমতাবান ছিলে? এবং পাপীকে বললেন, ادْخُلِ الْجَنَّةَ بِرَحْمَتِي ‘তুমি আমার রহমতে জান্নাতে প্রবেশ কর’। আর অপর ব্যক্তির ব্যাপারে তিনি বললেন,اذْهَبُوا بِهِ إِلَى النَّارِ- ‘তোমরা একে জাহান্নামে নিয়ে যাও’। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, ‘সেই মহান সত্ত্বার কসম! যার হাতে আমার জীবন! সে এমন উক্তি করেছে, যার ফলে দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ই বরবাদ হয়ে গেছে’।[3]
সুতরাং একজন ব্যক্তির বাহ্যিক আমল দেখে তার বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয়। কারণ মন্তব্যকারীর চেয়ে ঐ ব্যক্তি উত্তম হ’তে পারেন যা সে জানে না।
১৬. ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুমিন ব্যক্তিকে হত্যাকারী : অন্যায়ভাবে মানুষকে হত্যা করা মহাপাপ। এমনকি একজন মানুষকে হত্যা করা সকল মানুষকে হত্যার সমতুল্য অপরাধ। কুরআনের ভাষায়,مَنْ قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا، ‘যে কেউ জীবনের বদলে জীবন অথবা জনপদে অনর্থ সৃষ্টি করা ব্যতীত কাউকে হত্যা করে, সে যেন সকল মানুষকে হত্যা করে’ (মায়েদাহ ৫/৩২)।
রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ قَتَلَ مُؤْمِناً فَاغْتَبَطَ بِقَتْلِهِ لَمْ يَقْبَلِ الله مِنْهُ صَرْفاً وَلاَ عَدْلاً- ‘যে ব্যক্তি কোন মুমিনকে হত্যা করে আনন্দিত হয়, আল্লাহ তা‘আলা তার ফরয ও নফল কোন ইবাদত কবুল করবেন না’।[4]
আল্লাহ তাকে মাফও করবেন না। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,كُلُّ ذَنْبٍ عَسَى اللهُ أَنْ يَغْفِرَهُ، إِلَّا مَنْ مَاتَ مُشْرِكًا، أَوْ مُؤْمِنٌ قَتَلَ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا- ‘যে ব্যক্তি মুশরিক হয়ে মারা যায় অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুমিনকে হত্যা করে, সে ব্যক্তির পাপ ছাড়া অন্যান্য পাপকে আল্লাহ মাফ করে দিতে পারেন’।[5]
আর ইচ্ছাকৃতভাবে মুমিন ব্যক্তিকে হত্যাকারীর পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا- ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুমিনকে হত্যা করে, তার শাস্তি হ’ল জাহান্নাম। সেখানেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাৎ করেছেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্ত্তত রেখেছেন’ (নিসা ৪/৯৩)।
১৭. গণক বা জ্যোতিষীকে বিশ্বাসকারী : কোন গণকের কাছে যাওয়া এবং তাদের কথা বিশ্বাস করা হ’ল কুফরী। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ أَتَى كَاهِناً أَوْ عَرَّافاً فَصَدَّقَهُ بِمَا يَقُولُ فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ- ‘যে ব্যক্তি গণকের কাছে গেল এবং সে যা বলে তা বিশ্বাস করল, ঐ ব্যক্তি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তার সাথে কুফরী করল’।[6]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, مَنْ أَتَى عَرَّافًا فَسَأَلَهُ عَنْ شَيْءٍ، لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً- ‘যে ব্যক্তি গণকের কাছে যায় এবং (তার কথা সত্য ভেবে) তাকে কোন কথা জিজ্ঞেস করে, তার চল্লিশ দিনের ছালাত কবুল হয় না’।[7] সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি এই কুফরী কর্মে লিপ্ত হন, তাহ’লে ৪০ দিন তার ছালাত কবুল হবে না। অর্থাৎ তার এই ৪০ দিনের আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে।
১৮. পরস্পরের দোষ বর্ণনা করা ও মন্দ নামে ডাকা : অন্যের দোষ খোঁজা মারাত্মক অপরাধ। যা রাসূল (ছাঃ) নিষেধ করেছেন,إِيَّاكُمْ وَالظَّنَّ فَإِنَّ الظَّنَّ أَكْذَبُ الْحَدِيثِ، وَلَا تَحَسَّسُوا... ‘তোমরা অনুমান করা থেকে সাবধান হও। কেননা অনুমান অবশ্যই সর্বাপেক্ষা বড় মিথ্যা। আর তোমরা অন্যের দোষ অন্বেষণ কর না...’।[8]
মহান আল্লাহ বলেন,وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَّإِثْمًا مُّبِينًا- ‘অপরাধ না করা সত্ত্বেও যারা মুমিন পুরুষ ও নারীদের কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে’ (আহযাব ৩৩/৫৮)।
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন, يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِنْ قَوْمٍ عَسَى أَنْ يَكُونُوا خَيْرًا مِنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِنْ نِسَاءٍ عَسَى أَنْ يَكُنَّ خَيْرًا مِنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنْفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ وَمَنْ لَمْ يَتُبْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ- ‘হে বিশ্বাসীগণ! কোন সম্প্রদায় যেন কোন সম্প্রদায়কে উপহাস না করে। হ’তে পারে তারা তাদের চাইতে উত্তম। আর নারীরা যেন নারীদের উপহাস না করে। হ’তে পারে তারা তাদের চাইতে উত্তম। তোমরা পরস্পরের দোষ বর্ণনা কর না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। বস্ত্ততঃ ঈমান আনার পর তাকে মন্দ নামে ডাকা হ’ল ফাসেক্বী কাজ। যারা এ থেকে তওবা করে না, তারা সীমালংঘনকারী’ (হুজুরাত ৪৯/১১)।
১৯. দান করে খোঁটাদানকারী : কোন কিছু দান করার পর তার খোঁটা দিলে সেই দান বিনষ্ট হয়ে যায়। মহান আল্লাহ বলেন,يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُبْطِلُوا صَدَقَاتِكُمْ بِالْمَنِّ وَالْأَذَى كَالَّذِي يُنْفِقُ مَالَهُ رِئَاءَ النَّاسِ وَلَا يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ صَفْوَانٍ عَلَيْهِ تُرَابٌ فَأَصَابَهُ وَابِلٌ فَتَرَكَهُ صَلْدًا لَا يَقْدِرُونَ عَلَى شَيْءٍ مِمَّا كَسَبُوا وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ- ‘হে বিশ্বাসীগণ! খোঁটা দিয়ে ও কষ্ট দিয়ে তোমরা তোমাদের দানগুলোকে বিনষ্ট কর না। সেই ব্যক্তির মত, যে তার ধন-সম্পদ ব্যয় করে লোক দেখানোর জন্য এবং সে আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস করে না। ঐ ব্যক্তির দৃষ্টান্ত একটি মসৃণ প্রস্তরখন্ডের মত, যার উপরে কিছু মাটি জমে ছিল। অতঃপর সেখানে প্রবল বৃষ্টিপাত হ’ল ও তাকে পরিষ্কার করে রেখে গেল। এভাবে তারা যা কিছু উপার্জন করে, সেখান থেকে কোনই সুফল তারা পায় না। বস্ত্ততঃ আল্লাহ অবিশ্বাসী সম্প্রদায়কে সুপথ প্রদর্শন করেন না’ (বাক্বারাহ ২/২৬৪)।
খোঁটাদানকারীর নির্মম পরিণতি সম্পর্কে হাদীছে এসেছে, আবু যার (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন,ثَلَاثَةٌ لَا يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ- ‘তিন ব্যক্তির সাথে ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য থাকবে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) উক্ত বাক্যগুলো তিনবার বললেন। আবু যার বললেন, তারা ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হোক! তারা কারা? হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন,الْمُسْبِلُ، وَالْمَنَّانٌ، وَالْمُنَفِّقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ অর্থাৎ (১) যে ব্যক্তি টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে রাখে (২) দান করে যে লোকের কাছে দানের কথা বলে বেড়ায় এবং (৩) মিথ্যা কসম খেয়ে যে পণ্য বিক্রি করে’।[9]
২০. লোক দেখানো আমল : একজন ব্যক্তি তার সৎআমলের বদৌলতে জান্নাতের পথকে সুগম করতে পারে। কিন্তু যদি এই সৎআমল লোক দেখানো উদ্দেশ্যে হয়, তাহ’লে তার আমলগুলো বিনষ্ট হয়ে যাবে। সাথে সাথে এই আমলই তার জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হবে। মহান আল্লাহ বলেন,مَنْ كَانَ يُرِيدُ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيْهِمْ أَعْمَالَهُمْ فِيهَا وَهُمْ فِيهَا لَا يُبْخَسُونَ- أُولَئِكَ الَّذِينَ لَيْسَ لَهُمْ فِي الْآخِرَةِ إِلَّا النَّارُ وَحَبِطَ مَا صَنَعُوا فِيهَا وَبَاطِلٌ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ- ‘যে ব্যক্তি পার্থিব জীবন ও তার জাঁকজমক কামনা করে, আমরা তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের ফল দুনিয়াতেই পূর্ণভাবে দিয়ে দিব। সেখানে তাদেরকে কোনই কমতি করা হবে না’ (১৫)। এরা হ’ল সেইসব লোক যাদের জন্য পরকালে জাহান্নাম ছাড়া কিছুই নেই। দুনিয়াতে তারা যা কিছু (সৎকর্ম) করেছিল আখেরাতে তা সবটাই বরবাদ হবে এবং যা কিছু উপার্জন করেছিল (বাতিল আক্বীদা ও লোক দেখানো সৎকর্মের কারণে) সবটুকুই বিনষ্ট হবে’ (হূদ ১১/১৫-১৬)।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে একথা বলতে শুনেছি যে, ক্বিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যার বিচার করা হবে, সে হচ্ছে এমন একজন যে দুনিয়াতে শহীদ হয়েছিল। আল্লাহ তা‘আলা তার আমল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সে বলবে, আমি তোমার পথেই যুদ্ধ করেছি এমনকি শেষ পর্যন্ত শহীদ হয়েছি। তখন আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছ। তুমি বরং এ জন্যেই যুদ্ধ করেছিলে যাতে লোকেরা তোমাকে ‘বীর’ বলে আখ্যায়িত করে। আর তোমাকে তা বলা হয়েছে। অতঃপর তাকে উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। ক্বিয়ামতের সর্বপ্রথম বিচার করা হবে সেই ব্যক্তির যে জ্ঞানার্জন করেছিল ও মানুষকে তা শিক্ষাদান করেছিল এবং কুরআন পাঠ করেছিল। তাকে নিয়ে আসা হবে। অতঃপর আল্লাহ তাকে প্রদত্ত নে‘মত সমূহের পরিচয় করাবেন। সে তা চিনতে পারবে। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, কি আমল করেছ এই নে‘মত দ্বারা। সে বলবে, আমি জ্ঞানার্জন করেছি এবং মানুষকে তা শিখিয়েছি। আর আপনার সন্তুষ্টির জন্য কুরআন পাঠ করেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ, বরং তুমি জ্ঞানার্জন করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, তোমাকে বলা হবে আলেম বা জ্ঞানী। কুরআন পাঠ করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, (তোমাকে) বলা হবে ক্বারী। আর তা তো বলা হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হবে, তখন তাকে মুখের ভরে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
এবং ক্বিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বিচার করা হবে সেই ব্যক্তির, যাকে আল্লাহ প্রাচুর্যতা দিয়েছিলেন। তাকে নিয়ে আসা হবে। অতঃপর আল্লাহ তাকে প্রদত্ত নে‘মতরাজীর পরিচয় করাবেন। সে তা চিনতে পারবে। তখন তিনি প্রশ্ন করবেন, কি কাজ করেছ এই নে‘মত সমূহ দ্বারা? সে জবাব দিবে, যে পথে অর্থ ব্যয় করলে আপনি খুশি হবেন এ ধরনের সকল পথে আপনার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ব্যয় করেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি এরূপ করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, যাতে তোমাকে বলা হয় ‘দানবীর’। আর তোমাকে তা বলা হয়েছে। অতঃপর তাকে উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে’।[10]
সুতরাং দুনিয়াতে অনেক ফযীলতপূর্ণ আমল করেও লোক দেখানোর উদ্দেশ্য থাকায় পরকালে তা বিনষ্ট হয়ে যাবে।
২১. আত্মঅহমিকা : আত্ম আহংকার একটি মারাত্মক রোগ। যা একজন ব্যক্তির সৎ আমলগুলোকে বিনষ্ট করে দেয়। আনাস বিন মালেক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,ثَلَاثٌ مُهْلِكَاتٌ شُحٌّ مُطَاعٌ،وَهَوًى مُتَّبَعٌ، وَإِعْجَابُ الْمَرْءِ بِنَفْسِهِ ‘তিনটি জিনিস ধ্বংস সাধনকারী। (১) প্রবৃত্তি পূজারী হওয়া (২) লোভের দাস হওয়া এবং (৩) আত্ম অহংকারী হওয়া। আর এটিই হ’ল সবচেয়ে মারাত্মক’।[11]
আত্ম অহংকার এমন জঘন্য পাপ যার শাস্তি আল্লাহ দুনিয়াতে দিয়ে থাকেন। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,بَيْنَمَا رَجُلٌ يَتَبَخْتَرُ، يَمْشِي فِي بُرْدَيْهِ قَدْ أَعْجَبَتْهُ نَفْسُهُ، فَخَسَفَ اللهُ بِهِ الْأَرْضَ، فَهُوَ يَتَجَلْجَلُ فِيهَا إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ‘এক ব্যক্তি তার দু’টি চাদর পরে গর্বভরে পায়চারী করছিল। নিজে নিজেই আত্মম্ভরী হচ্ছিল। এমন সময় হঠাৎ আল্লাহ তাকে মাটিতে ধসিয়ে দিলেন। ক্বিয়ামত পর্যন্ত সে ভূগর্ভে তলিয়ে যেতে থাকবে’।[12]
২২. গোপনে পাপকারী : ছাওবান (রাঃ) হ’তে বর্ণিত নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘আমি আমার উম্মতের কতক দল সম্পর্কে অবশ্যই জানি যারা ক্বিয়ামতের দিন ‘তিহামা’র শুভ্র পর্বতমালার সমতুল্য নেক আমলসহ উপস্থিত হবে। আল্লাহ সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করবেন। ছাওবান (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তাদের পরিচয় পরিষ্কারভাবে আমাদের নিকট বর্ণনা করুন, যাতে অজ্ঞাতসারে আমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত না হই। তিনি বলেন,أَمَا إِنَّهُمْ إِخْوَانُكُمْ، وَمِنْ جِلْدَتِكُمْ، وَيَأْخُذُونَ مِنَ اللَّيْلِ كَمَا تَأْخُذُونَ، وَلَكِنَّهُمْ أَقْوَامٌ إِذَا خَلَوْا بِمَحَارِمِ اللهِ انْتَهَكُوهَا- ‘তারা তোমাদেরই ভ্রাতৃগোষ্ঠী এবং তোমাদের সম্প্রদায়ভুক্ত। তারা রাতের বেলা তোমাদের মতই ইবাদত করবে। কিন্তু তারা এমন লোক যে, একান্ত গোপনে আল্লাহর হারামকৃত বিষয়ে লিপ্ত হবে’।[13]
ক্বিয়ামতের মাঠে গোপন পাপের তুলনায় সৎআমলগুলো বিক্ষিপ্ত ধূলিকণার ন্যয় নগণ্য হবে। ফলে সেই দিন সৎ আমল থাকা সত্ত্বেও তা কোন কাজে আসবে না।
২৩. যুলুম : যুলুম এমন পাপ, যা নির্যাতিত ব্যক্তি ক্ষমা না করলে আল্লাহ তা ক্ষমা করেন না। ফলে ক্বিয়ামতের মাঠে তার আমল তো বিনষ্ট হবেই, বরং যুলুমের পরিমাণ যদি নেকীর চেয়ে কম হয় তাহ’লে মাযলূমের পাপ তার ঘাড়ে চাপানো হবে। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী (ছাঃ) বলেছেন, مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَحَدٍ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَىْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ، قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ ، إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ، وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ- ‘যে ব্যক্তি তার কোন ভাইয়ের প্রতি যুলুম করে তার সম্মান বা অন্য কোন বিষয়ে, সে যেন আজই তার নিকট থেকে তা মাফ করিয়ে নেয়, সেদিন আসার পূর্বে, যেদিন তার নিকটে দিরহাম ও দীনার কিছুই থাকবে না। সেদিন যদি তার কোন নেক আমল থাকে, তবে তার যুলুম পরিমাণ নেকী সেখান থেকে নিয়ে নেওয়া হবে। আর যদি তার কাছে নেকী না থাকে, তবে মযলূম ব্যক্তির পাপসমূহ তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে’।[14]
২৪. হিংসা-বিদ্বেষ : হিংসা-বিদ্বেষ এমন ধরনের পাপ, যা দ্বীনকে মিটিয়ে দেয়। হযরত যুবায়ের ইবনুল ‘আওয়াম (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,دَبَّ إِلَيْكُمْ دَاءُ الأُمَمِ قَبْلَكُمُ الْحَسَدُ وَالْبَغْضَاءُ هِىَ الْحَالِقَةُ لاَ أَقُوْلُ تَحْلِقُ الشَّعْرَ وَلَكِنْ تَحْلِقُ الدِّيْنَ- ‘তোমাদের মধ্যে পিপীলিকার ন্যায় প্রবেশ করবে বিগত উম্মতগণের রোগ। আর তা হ’ল হিংসা ও বিদ্বেষ। যা হ’ল মোচনকারী। আমি বলিনা যে তা চুল ছাফ করবে, বরং তা দ্বীনকে মিটিয়ে করে ফেলবে’।[15]
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,لاَ يَجْتَمِعُ فِي جَوْفِ عَبْدٍ مُؤْمِنٍ غُبَارٌ فِي سَبِيلِ اللهِ وَفَيْحُ جَهَنَّمَ، وَلَا يَجْتَمِعُ فِي جَوْفِ عَبْدٍ الْإِيمَانُ وَالْحَسَدُ ‘কোন মুমিন বান্দার পেটে আল্লাহর রাস্তার ধুলি এবং জাহান্নামের অগ্নিশিখা একত্রে জমা হ’তে পারে না এবং কোন বান্দার অন্তরে ঈমান ও হিংসা একত্রিত হ’তে পারে না।[16] অর্থাৎ কোন অন্তরে হয় ঈমান থাকবে, নয় হিংসা থাকবে। ঈমানদারের অন্তরে হিংসা থাকবে না, হিংসুকের অন্তরে ঈমান থাকবে না। ফলে কোন অন্তরে হিংসা অনুপ্রবেশের অর্থ সৎআমলগুলো বিনষ্ট হয়ে যাওয়া।
২৫. গীবত ও চোগলখুরী : গীবত বা পরনিন্দা একটি গুরুতর গুনাহ। হাদীছে এসেছে, হুযায়ফা (রাঃ)-এর নিকট খবর পৌঁছাল যে,أَنَّ رَجُلاً يَنِمُّ الْحَدِيثَ فَقَالَ حُذَيْفَةُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ نَمَّامٌ ‘এক ব্যক্তি চোগলখোরী করে বেড়ায়। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না’।[17]
গীবতের আরও করুণ পরিণতি সম্পর্কে হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন আল্লাহ তা‘আলা আমাকে উপরে নিয়ে গেলেন, আমি সেখানে এমন লোকদের কাছ দিয়ে অতিক্রম করলাম, যাদের নখ তামার তৈরি। সেসব নখ দ্বারা তারা তাদের মুখমন্ডল ও বক্ষ খোঁচাচ্ছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে জিবরীল! এরা কারা? জিবরীল (আঃ) বললেন, এরা সেসব লোক, যারা মানুষের মাংস খায় (অর্থাৎ নিন্দা করে) এবং মানুষের পিছনে লেগে থাকে’।[18]
২৬. বিদ‘আত : বিদ‘আতের সংজ্ঞা দিয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, مَنْ أَحْدَثَ فِيْ أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيْهِ فَهُوَ رَدٌّ ‘যে ব্যক্তি আমাদের এই শরী‘আতের মধ্যে নতুন এমন কিছু সৃষ্টি করল, যা তার (শরী‘আতের) অন্তর্ভুক্ত নয় তা প্রত্যাখ্যাত’।[19] অন্যত্র তিনি বলেছেন, مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهْوَ رَدٌّ- ‘যে ব্যক্তি এমন আমল করল, যাতে আমার নির্দেশনা নেই তা প্রত্যাখ্যাত’।[20]
বিদ‘আতীদের ব্যর্থ আমল সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,إِنِّيْ فَرَطُكُمْ عَلَى الْحَوْضِ، مَنْ مَرَّ عَلَىَّ شَرِبَ، وَمَنْ شَرِبَ لَمْ يَظْمَأْ أَبَدًا، لَيَرِدَنَّ عَلَىَّ أَقْوَامٌ أَعْرِفُهُمْ وَيَعْرِفُوْنِيْ، ثُمَّ يُحَالُ بَيْنِيْ وَبَيْنَهُمْ فَأَقُوْلُ إِنَّهُمْ مِنِّيْ فَيُقَالُ إِنَّكَ لاَ تَدْرِيْ مَا أَحْدَثُوْا بَعْدَكَ فَأَقُوْلُ سُحْقًا سُحْقًا لِمَنْ غَيَّرَ بَعْدِيْ- ‘আমি তোমাদের পূর্বে হাউযে কাউছারের নিকটে পৌঁছে যাব। যে আমার নিকট দিয়ে অতিক্রম করবে, সে হাউযের পানি পান করবে। আর যে একবার পান করবে সে আর কখনও পিপাসিত হবে না। নিঃসন্দেহে কিছু সম্প্রদায় আমার সামনে উপস্থিত হবে। আমি তাদেরকে চিনতে পারব, আর তারাও আমাকে চিনতে পারবে। এরপর আমার ও তাদের মাঝে আড়াল করে দেওয়া হবে। আমি তখন বলব, এরা তো আমারই উম্মত। তখন বলা হবে, তুমি জান না তোমার (মৃত্যুর) পরে এরা নতুন নতুন কথা ও কাজ সৃষ্টি করেছিল। তখন আমি বলব, سُحْقًا سُحْقًا لِمَنْ غَيَّرَ بَعْدِى ‘দূর হও, দূর হও! যে ব্যক্তি আমার পরে আমার দ্বীনকে পরিবর্তন করেছ’।[21]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,فَمَنْ أَحْدَثَ فِيْهَا حَدَثًا أَوْ آوَى فِيْهَا مُحْدِثًا، فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ، لاَ يُقْبَلُ مِنْهُ صَرْفٌ وَلاَ عَدْلٌ- ‘যে ব্যক্তি এর মধ্যে (ইসলামে) বিদ‘আত সৃষ্টি করে কিংবা বিদ‘আতীকে আশ্রয় দেয়, তার উপর আল্লাহ, ফেরেশতা ও সকল মানুষের অভিসম্পাত। আল্লাহ তার কোন নফল ও ফরয ইবাদত কবুল করেন না’।[22]
অর্থাৎ বিদ‘আতী আমলের কারণে আল্লাহর নিকট নফল ও ফরয ইবাদত কবুল হয় না। ফলে নফল ও ফরয ইবাদত করেও তা বিনষ্ট হয়ে যায়। সুতরাং বিদ‘আত থেকে বেঁচে থাকা যরূরী।
(ক্রমশ)
-আসাদ বিন আব্দুল আযীয
[লেখক : কেন্দ্রীয় ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ]
[1]. ইবনু মাজাহ হা/৪২৫১; মিশকাত হা/২৩৪১, সনদ হাসান।
[2]. মুসলিম হা/২৬২১; মিশকাত হা/২৩৩৪ ‘ক্ষমা ও তাওবা’ অধ্যায়।
[3]. আবুদাউদ হা/৪৯০১; আহমাদ হা/৮২৭৫; ছহীহ ইবনু হিববান হা/৫৭১।
[4]. আবুদাউদ হা/৪১৭০; ছহীহুত তারগীব হা/২৪৫০।
[5]. আবুদাউদ হা/৪২৭০; ছহীহাহ হা/৫১১; মিশকাত হা/৩৪৬৮।
[6]. আহমাদ হা/৯৫৩২; ছহীহুত তারগীব হা/৩০৪৪; মিশকাত হা/৪৫৯৯।
[7]. মুসলিম হা/২২৩০; মিশকাত হা/৪৫৯৫ ‘জ্যোতিষীর গণনা’ অনুচ্ছেদ।
[8]. বুখারী হা/৬০৬৪, ৬০৬৬; মুসলিম হা/২৫৬৩; মিশকাত হা/৫০২৮।
[9]. মুসলিম হা/১০৬; মিশকাত হা/২৭৯৫।
[10]. মুসলিম হা/১৯০৫; মিশকাত হা/২০৫ ‘জ্ঞানার্জন’ অধ্যায়।
[11]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৭৪৫, মিশকাত হা/৫১২২; ছহীহ তারগীব হা/৫০, ছহীহাহ হা/১৮০২।
[12]. মুসলিম হা/২০৮৮; দারেমী হা/৪৩৭; মিশকাত হা/৪৭১১।
[13]. ইবনু মাজাহ হা/৪২৪৫; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৫০৫।
[14]. বুখারী হা/২৪৪৯; তিরিমিযী হা/২৪১৯; ছহীহুত তারগীব হা/২২২২।
[15]. তিরমিযী হা/২৫১০; ছহীহুত তারগীব হা/২৬৯৫; মিশকাত হা/৫০৩৯।
[16]. বুখারী হা/২৪৪৯; তিরিমিযী হা/২৪১৯; ছহীহুত তারগীব হা/২২২২।
[17]. মুসলিম হা/১০৫; আহমাদ হা/২৩৩৭৩; ছহীহুত তারগীব হা/২৮২১।
[18]. আবুদাঊদ হা/৪৮৭৮; মিশকাত হা/৫০৪৬।
[19]. বুখারী হা/২৬৯৭; মুসলিম হা/১৭১৮; মিশকাত হা/১৪০।
[20]. বুখারী তরজমাতুল বাব-২০; মুসলিম হা/১৭১৮।
[21]. বুখারী হা/৬৫৮৩-৮৪; মুসলিম হা/২২৯০; মিশকাত হা/৫৫৭১।
[22]. বুখারী হা/৩১৭২; মুসলিম হা/১৩১৭; মিশকাত হা/২৭২৮।