অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণে ইসলামী রাজস্বনীতি
আব্দুল্লাহ আল-মুছাদ্দিক
আব্দুল্লাহ আল-মুছাদ্দিক 805 বার পঠিত
ভূমিকা : অর্থনীতির বহুল প্রচলিত একটি তত্ত্ব হ’ল ‘ট্রিকল ডাউন থিউরি’ বা চুইয়ে পড়া তত্ত্ব। একটি পানি ভর্তি গ্লাসে নতুন করে পানি দিলে যেমন তা চুইয়ে পড়ে আশেপাশের জায়গা ভিজিয়ে দেয়। তদ্রূপ একটি রাষ্ট্র প্রথমে উন্নতির স্বর্ণ শিখরে পৌঁছে অতঃপর দরিদ্র জনগোষ্ঠী তার সুফল ভোগ করে। তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি অন্তঃসার শূন্য তত্ত্ব। করোনা পরবর্তী পুঁজিবাদী এ বিশ্বের শীর্ষ দশ ধনীর সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণ হারে। তাদের মোট সম্পত্তির পরিমাণ বিশ্বের প্রায় ৩১০ কোটি মানুষের সম্পদের সমান। সহজভাবে বলতে গেলে তাদের সম্পত্তি ডলারে রুপান্তর করে উলম্বভাবে রাখা হ’লে হয়ত পৃথিবী এবং চন্দ্রের মধ্যবর্তী দূরত্বের অর্ধেক অনায়াসে পার হওয়া সম্ভব! পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে সম্পদ ধনীদের মধ্যে পুঞ্জীভূত থাকার ফলে ধনী ব্যক্তি আরও ধনী হয় এবং দরিদ্র মানুষ দারিদ্রে্যর চরম সীমায় পৌঁছে যায়। এহেন পরিস্থিতি থেকে কেবলমাত্র ইসলামী রাজস্বনীতিই মানুষকে ইহকালীন শান্তি ও মর্যাদা এবং পরকালীন মুক্তি দিতে সক্ষম। আলোচ্য প্রবন্ধে ধনী-গরীব বৈষম্য নিরসনে ইসলামী রাজস্বনীতি কিভাবে ভূমিকা রাখতে পারে তা-ই তুলে ধরার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ।
অর্থনৈতিক অসমতা ও ধনী-গরীব বৈষম্যের দৃশ্যপট : আদম সন্তান মাত্রই আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। জন্মগতভাবে সবাই এক ও অভিন্ন। তবে গোত্র, বর্ণ, প্রভাব- প্রতিপত্তির ভিত্তিতে অবস্থানগত তারতম্য রয়েছে। এ তারতম্য আল্লাহর কাছে কখনোই শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি নয়। অর্থনৈতিক অসমতা মনুষ্য সৃষ্ট একটি বিভেদ। যাতে ভর করে ফুলে ফেঁপে উঠেছে মুষ্টিমেয় ধনিক শ্রেণীর সম্পদের পরিমাণ। মধ্যবিত্ত আর গরীবদের ভাগ্যে জুটেছে দারিদ্রে্যর কষাঘাত। সমাজে বিদ্যমান বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের মধ্যে জাতীয় আয় এবং আয়ের উৎস হিসাবে সম্পদ বণ্টনে বিরাজমান বৈষম্যকে মূলত অর্থনৈতিক বৈষম্য বলা হয়। এটি তখনই যুলুমে পরিণত হয় যখন উভয় শ্রেণীর আয়কে সমন্বয় করে মাথাপিছু আয় হিসাবে দেখানো হয়। ধরুন, আপনার আছে ২০ ডলার এবং আপনার বন্ধুর আছে ১ হাযার ডলার কিন্তু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে এখানে দু’জনের মাথাপিছু গড় আয় ৫১০ ডলার। অথচ এ আয়ের সিকি অংশও আপনার ভাগে জুটছে না। করোনা পরবর্তী বিশ্বে ১৬ কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে’।[1] বাংলাদেশে এ সংখ্যাটি প্রায় দেড় কোটি। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল নিম্ন আয় ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কাছে অনেকাংশেই বেদনা বললে হয়ত ভুল হবে না। আর তাই বাড়ছে বৈষম্য। গড়পড়তা সম্পদ বাড়লেও অতি ধনী আর অতি গরিবের ফারাক বেড়েই চলেছে’।[2]
আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে, ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে ধনপতিদের সম্পদের সঙ্গে বেড়েছে জ্বালানি ও খাদ্যের দাম। এ সময় বিশ্বের ৯৫টি খাদ্য ও জ্বালানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মুনাফা দ্বিগুণ হয়েছে। পুঁজিপতিরা যখন বেপরোয়া মুনাফাখোরের ভূমিকায় ঠিক তখন বিশ্বের ১৭০ কোটি শ্রমিক বসবাস করছে মূল্যস্ফীতিতে আক্রান্ত দেশগুলোতে। পাশাপাশি অনাহারে থাকছে বিশ্বের প্রতি ১০ জনে ১জন। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বর্তমানে সবচেয়ে বেশী ধনবৈষম্য ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী তৈরী হয়েছে। এ অবস্থার উত্তরণে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা অক্সফাম কাঠামোগতভাবে ধনীদের উপর ব্যাপকভাবে কর বাড়ানোর সুফারিশ করেছে। অক্সফাম প্রদত্ত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের সর্বোচ্চ ধনীদের একজন ইলন মাস্ক ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মাত্র ৩ শতাংশ হারে প্রকৃত কর দিয়েছে। পক্ষান্তরে দিনে দুই ডলার আয় করা উগান্ডার একজন নারী আটা বিক্রেতাকে কর দিতে হয়েছে ৪০ শতাংশ হারে।[3]
প্রায় সবদেশেই ধনী মানুষদের তুলনায় দরিদ্রদের বেশী হারে কর দিতে হয়। আইনের মারপ্যাচে পুঁজিপতিদের শুভঙ্করের ট্যাক্স ফাঁকির পথঘাট মুখস্থ থাকলেও দরিদ্র জনগোষ্ঠী কখনোই রাজস্বনীতির ব্যাকরণ রপ্ত করতে পারেনি। মূলত এ দৃশ্যপট ধনী-গরীব বৈষম্য সৃষ্টির প্রকৃত প্রেক্ষাপট চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
ইসলামী রাজস্বনীতির পরিচয় : রাষ্ট্রের অর্থব্যবস্থা পরিচালনার দু’টি মূলমন্ত্র হচ্ছে, রাজস্বনীতি এবং আর্থিকনীতি। সরকার যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে রাষ্ট্রের অর্থ সরবরাহকে নিয়ন্ত্রণ করে তখন তাকে আর্থিকনীতি বলা হয়। অর্থাৎ যে নীতির মাধ্যমে দেশের অর্থ-কর্তৃপক্ষ অর্থের যোগান নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে আর্থিকনীতি বা মুদ্রানীতি বলে। অপরদিকে, রাজস্বনীতি হ’ল রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যয় নির্বাহ ও দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান দেওয়ার জন্য সরকার জনগণের নিকট থেকে বিভিন্ন কর আরোপের মাধ্যমে যে অর্থ সংগ্রহ করে থাকে সেসব বিষয় সংক্রান্ত নীতিমালাকে রাজস্বনীতি বলে’।[4] অধ্যাপক ডাল্টনের মতে, ‘রাজস্ব সরকার পক্ষ হ’তে অপরিহার্যরূপে ধার্যকৃত একটি দাবী বিশেষ’।[5] অধ্যাপক চেস্টিবল বলেন, ‘রাজস্ব বলতে কোন ব্যক্তি বা দলের সেই অর্থ বুঝায় যা সরকারী কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে তার নিকট থেকে আদায় করা হয়’।[6] রাজস্বের এই সংজ্ঞায় নির্ভুলভাবে কোন নৈতিক দায়িত্ব বা সীমারেখা খুঁজে পাওয়া যায় না। অন্যদিকে ইসলামী রাষ্ট্র কেবল সরকারী ব্যয় বহনের জন্যই রাজস্ব আদায় করে না। বরং দেশের গরীব-দুঃখী, অভাবী মানুষের জন্য স্থায়ী কল্যাণ ও নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে রাজস্ব আদায় করে। ইসলামী রাজস্ব ব্যবস্থায় ব্রিটিশদের সূর্যাস্ত আইনের মত অন্যায় ও শোষণকে যেমন প্রশ্রয় দেওয়া হয় না, তেমনি এটি যথেচ্ছাভাবে ব্যবহার করার অধিকারও কাউকে দেয়া হয়নি। এখানে রাষ্ট্রের প্রয়োজনে জনগণ এবং জনগণের প্রয়োজনে রাষ্ট্র। ইসলামী রাজস্বনীতি বলতে যাকাতসহ সকল প্রকার কর সংগ্রহের নীতিমালাকে বুঝানো হয়। সুতরাং ইসলামী রাষ্ট্রের নির্ধারিত করকে ইসলামী রাজস্বনীতি বলে।
ইসলামী রাজস্বনীতির উদ্দেশ্যাবলী : ১. জনগণের মৌলিক প্রয়োজন সমূহের (অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য) নিশ্চয়তা প্রদান করা। ২. পুঞ্জীভূত সম্পদ হ্রাস করে অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। ৩. অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা। ৪. বেকারত্ব হ্রাস করা। ৫. সম্পদ ও আয়ের সুষম বণ্টন সুনিশ্চিত করা’।[7]
ইসলামী রাজস্ব ব্যবস্থার উৎসসমূহ : ইসলামী রাজস্বের উৎসসমূহ মূলত পবিত্র কুরআন, হাদীছ এবং খোলাফায়ে রাশেদার অনুসৃত নীতিসমূহের আলোকে নির্ধারিত হয়েছে। এ আয়ের উৎসসমূহের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে ইসলামী রাজস্ব ব্যবস্থাকে চার ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যথা- ক. ভূমি রাজস্ব, খ. খুমুস, গ. যাকাত, ছাদাক্বা ও নাগরিকদের নিকট হ’তে লব্ধ টাকা এবং ঘ. মালিকানা বা উত্তরাধিকারীহীন ধন-সম্পত্তি। পরিমাণ নির্দিষ্টতার উপর ভিত্তি করে উল্লিখিত আয়ের উৎসসমূহকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা- ক. কিছু উৎসসমূহ যেমন- যাকাত, ওশর, খারাজের পরিমাণ শতাংশিক হারে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। খ. আবার কিছু ক্ষেত্রে করের পরিমাণ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত ইসলামী খলীফার উপর ন্যস্ত হয়েছে। যা তিনি কুরআন ও হাদীছের ভাবধারা অনুযায়ী জনকল্যাণের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে নির্ধারণ করে থাকেন’।[8]
ক. ভূমি-রাজস্ব : রাষ্ট্রের সকল ভূমি ব্যবহার করার নিমিত্তে জনগণের নিকট থেকে যে কর গ্রহণ করা হয় তাকে ভূমি রাজস্ব বলে। জনগনের ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে এটিকে দু’ভাবে নামকরণ করা হয়েছে। যথা : ওশর ও খারাজ।
ওশর : ওশর শব্দটি আরবী আশারাতুন শব্দ হ’তে এসেছে। এর শাব্দিক অর্থ এক দশমাংশ। যে জমির মালিক মুসলমান অথবা যে জমি মুসলমানই সর্বপ্রথম চাষযোগ্য করে তুলেছে সেটি ওশরী জমি হিসাবে অভিহিত। আল্লাহ বলেন,يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَنْفِقُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّا أَخْرَجْنَا لَكُمْ مِنَ الْأَرْضِ وَلَا تَيَمَّمُوا الْخَبِيثَ مِنْهُ تُنْفِقُونَ وَلَسْتُمْ بِآخِذِيهِ إِلَّا أَنْ تُغْمِضُوا فِيهِ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ حَمِيدٌ- ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং যা আমরা তোমাদের জন্য জমিতে উৎপন্ন করি, সেখান থেকে উৎকৃষ্ট বস্ত্ত ব্যয় কর। আর সেখান থেকে নিকৃষ্ট বস্ত্ত ব্যয় করার সংকল্প কর না, যা তোমরা নিজেরা গ্রহণ কর না চোখ বন্ধ করা ব্যতীত। জেনে রেখ আল্লাহ অভাবমুক্ত ও চির প্রশংসিত’ (বাক্বারাহ ২/২৬৭)।
রাসূল (ছাঃ)-এর নির্দেশনা হচ্ছে,فِيمَا سَقَتِ السَّمَاءُ وَالْعُيُونُ أَوْ كَانَ عَثَرِيًّا الْعُشْرُ وَمَا سُقِىَ بِالنَّضْحِ نِصْفُ الْعُشْرِ- ‘বৃষ্টি ও প্রবাহিত পানি দ্বারা সিক্ত ভূমিতে উৎপাদিত ফসল বা সেচ ব্যতীত উর্বরতার ফলে উৎপন্ন ফসলের উপর (এক দশমাংশ) ওশর ওয়াজিব হয়। আর সেচ দ্বারা উৎপাদিত ফসলের উপর অর্ধ (বিশ ভাগের এক ভাগ) ওশর’।[9]
খারাজ : সাধারণত ভূমির উপর ধার্যকৃত করকে খারাজ বলে। ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমদের মালিকানা বা ভোগকৃত জমি হ’তে যে রাজস্ব আদায় করা হয় তাই খারাজ। আনুপাতিক অথবা নির্দিষ্ট হারে খারাজের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। ইসলামী রাষ্ট্রকে জমির জরিপ ও গুণাগুণ নির্ণয় করে সতর্কতার সহিত খারাজের হার বা পরিমাণ নির্ধারণ করতে হয়। ওমর (রাঃ) সর্বপ্রথম ইরাক, সিরিয়া ও মিশরের বিস্তৃত উর্বর ভূমির উপর জরিপ করেছিলেন। এ কাজের জন্য তিনি ওছমান বিন হানিফ (রাঃ)-কে প্রেরণ করেছিলেন। কেননা তিনি ভূমি রাজস্ব বিষয়ক খারাজ ধার্যকরণ সম্পর্কে পারদর্শী ছিলেন। খারাজ ইসলামী রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সম্পদ। এটি নির্ধারণের ক্ষেত্রে জমির গুণাগুণ, উর্বরতা, সেচ ইত্যাদির প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। অন্যথায় ভূমির মালিকের প্রতি অবিচার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে’।[10]
খ. খুমুস : গণীমতের মাল, খনিজ ও সামুদ্রিক সম্পদ প্রভৃতির প্রত্যেকটি হ’তে এক পঞ্চমাংশ ইসলামী রাষ্ট্রের বাইতুল মাল ফান্ডে জমা করার বিধান হচ্ছে খুমুস। সাধারণত কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করে প্রাপ্ত সকল প্রকার ধন-সম্পদ হচ্ছে গণীমত। এই গণীমতের এক পঞ্চমাংশ হচ্ছে খুমুস যা ইসলামী রাষ্ট্রের বাইতুল মাল ফান্ডে জমা হয়। যেমন আল্লাহ বলেন,وَاعْلَمُوا أَنَّمَا غَنِمْتُمْ مِنْ شَيْءٍ فَأَنَّ لِلَّهِ خُمُسَهُ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَابْنِ السَّبِيلِ إِنْ كُنْتُمْ آمَنْتُمْ بِاللهِ وَمَا أَنْزَلْنَا عَلَى عَبْدِنَا يَوْمَ الْفُرْقَانِ يَوْمَ الْتَقَى الْجَمْعَانِ وَاللهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ- ‘আর তোমরা জেনে নাও যে, যুদ্ধে তোমরা যে সকল বস্ত্ত গণীমত রূপে লাভ করেছ, তার এক পঞ্চমাংশ হ’ল আল্লাহ, তাঁর রাসূল, তাঁর নিকটাত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন ও মুসাফিরদের জন্য। যদি তোমরা ঈমান এনে থাক আল্লাহর উপরে এবং যা কিছু (বণ্টন নীতি) আমরা নাযিল করেছি আমাদের বান্দার (মুহাম্মাদের) উপরে সত্য-মিথ্যার ফায়ছালার দিন এবং দু’দলের জমা হওয়ার দিন (অর্থাৎ বদরের যুদ্ধের দিন)। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান’(আনফাল ৮/৪১)।
গ. যাকাত : যাকাত কোন ট্যাক্স নয় বরং অর্থনৈতিক ইবাদত। এটি সম্পদের পবিত্রকারী এবং ইসলামী অর্থ ব্যবস্থার হৃদপিন্ড। পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের অর্থ ব্যবস্থার ভিত্তি যেমন সুদ, কমিউনিস্ট বলয়ের অর্থনৈতিক বুনিয়াদী যেমন সম্পত্তির জাতীয়করণ। তদ্রূপ ইসলামী অর্থ ব্যবস্থায় মূল চালিকা শক্তি হ’ল যাকাত। সমাজে আয় ও সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে বিরাজমান বৈষম্য নিরসনে এর ভূমিকা মূখ্য। নাস্তিক্যবাদীরা যাকাতকে মধ্যযুগীয় খয়রাতি ব্যবস্থা হিসাবে ট্যাগ দিলেও এটি কারও অনুকম্পা নয় বরং এটি দরিদ্র, অভাবগ্রস্থ এবং বিশেষ শ্রেণীর জন্য আল্লাহ প্রদত্ত সুরক্ষা বলয়। পবিত্র কুরআনে প্রায় ৩০টি আয়াতে যাকাত শব্দের উল্লেখ রয়েছে। তার মধ্যে ২৭টি আয়াতে ছালাতের সাথে যাকাত বর্ণিত হয়েছে। ইসলামী শরী‘আত কর্তৃক নির্ধারিত নিছাব পরিমাণ মালের নির্দিষ্ট অংশ নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করার নাম যাকাত।[11] আনুষ্ঠানিক হিসাবে বাংলাদেশে কোটিপতির সংখ্যা কয়েক মিলিয়ন এবং সংখ্যাটি ক্রমবর্ধমান। তাদের কাছ থেকে যাকাত আদায় করা হ’লে এটি হ’তে পারে দারিদ্র দূরীকরণের অনন্য মাইলফলক। তাছাড়া বর্তমানে প্রায় প্রতিটি মুসলিম দেশের জাতীয় সম্পদ দ্রুত বর্ধনশীল। যার ফলে ক্রমান্বয়ে ব্যবসার মূলধন উদ্বৃত্ত হওয়া এবং যাকাতের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। যাকাত প্রাপ্তির মাধ্যমে সমাজের একটি অংশ বাজার ব্যবস্থায় প্রবেশ করে। পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে তারা আবার ধনপতিদের ফার্মে লেনদেন করে। এতে বিনিয়োগ, মুনাফা এবং সম্পদ বৃদ্ধি পায়। মূলত যাকাতের মাধ্যমে এই চক্রাকার প্রবাহের গতিশীলতা তরান্বিত হয়। মহান আল্লাহ বলেন, يَمْحَقُ اللهُ الرِّبَا وَيُرْبِي الصَّدَقَاتِ وَاللهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ أَثِيمٍ- ‘আল্লাহ সূদকে নিঃশেষ করেন ও ছাদাক্বায় প্রবৃদ্ধি দান করেন। বস্ত্ততঃ আল্লাহ কোন অবিশ্বাসী পাপীকে পসন্দ করেন না’(বাক্বারাহ ২/২৭৬)।
মহান আল্লাহ অন্যত্র বলেন,إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِنَ اللهِ وَاللهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ- ‘ছাদাক্বাসমূহ কেবল (আট শ্রেণীর) লোকের জন্য। ফকীর, অভাবগ্রস্ত, যাকাত আদায়কারী কর্মচারী, ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট ব্যক্তি, দাসমুক্তি, ঋণগ্রস্ত, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের জন্য (যাদের পাথেয় হারিয়ে যায় বা শেষ হয়ে যায়)। এটি আল্লাহর পক্ষ হ’তে নির্ধারিত। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়’ (তওবা ৯/৬০)। উপরোক্ত খাতসমূহের মাঝে প্রায় ৫টি খাত সরাসরি দারিদ্র বিমোচন করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী জনগোষ্ঠী গঠনের অনন্য মাধ্যম। সুতরাং কেবল যাকাত ভিত্তিক অর্থনীতিই শ্রেণী বৈষম্য দূরীকরণে ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
জিযিয়া : জিযিয়া (جزية) শব্দটি جزاء শব্দ হ’তে উৎপন্ন। এর অর্থ হচ্ছে মাথা পিছু ধার্য কর, অর্থকর। এটি ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিম নাগরিকদের উপর ধার্যকৃত কর। ইসলামী রাষ্ট্রে যুদ্ধ করতে সক্ষম অমুসলিমদের নিকট থেকে দেশ রক্ষার দায়িত্ব থেকে মুক্তি দেবার বিনিময়ে প্রতি বছর যে অর্থ আদায় করা হয়, তাকে জিযিয়া বলা হয়। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,قَاتِلُوا الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللهِ وَلَا بِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَلَا يُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ اللهُ وَرَسُولُهُ وَلَا يَدِينُونَ دِينَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ حَتَّى يُعْطُوا الْجِزْيَةَ عَنْ يَدٍ وَهُمْ صَاغِرُونَ- ‘তোমরা যুদ্ধ কর আহলে কিতাবদের মধ্যকার ঐসব লোকের বিরুদ্ধে, যারা আল্লাহ ও বিচার দিবসের উপর বিশ্বাস রাখে না এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা হারাম করেছেন তা হারাম করে না ও সত্য দ্বীন (ইসলাম) কবুল করে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা বিনীত হয়ে করজোড়ে জিযিয়া প্রদান করে’ (তওবা ৯/২৯)।
হাদীছে বর্ণিত হয়েছে,عَنْ مُعَاذٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا وَجَّهَهُ إِلَى الْيَمَنِ أَمَرَهُ أَنْ يَأْخُذَ مِنْ كُلِّ حَالِمٍ يَعْنِي مُحْتَلِمًا-دِينَارًا، أَوْ عَدْلَهُ مِنَ المعَافِرِيِّ ثِيَابٌ تَكُونُ بِالْيَمَن- মু‘আয (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) তাকে ইয়েমেনে প্রেরণের সময় নির্দেশ দেন, ‘প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি থেকে এক দীনার করে জিযিয়া নিবে কিংবা সমমূল্যের ইয়েমেনে উৎপাদিত মু‘আফেরী কাপড় গ্রহণ করবে’।[12]
ভারতবর্ষ সর্বশেষ ইসলামী শাসন ব্যবস্থা দেখেছিল মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব-এর সময়ে। তাঁর সময়ে মুসলিমদের উপরে যাকাত এবং অমুসলিমদের উপর জিযিয়া আরোপ আদায় করা হ’ত। আওরঙ্গজেব ইসলামী বিধান অনুসরণ করে আগের শাসকদের আরোপিত ৮০টি যুলুমসূচক কর উঠিয়ে দিয়েছিলেন। এসব কর উঠিয়ে দেওয়ায় সে সময় রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্রায় ৫০ লক্ষ স্টার্লিং (ব্রিটিশ মুদ্রা) অর্থমূল্যের কর থেকে রাজকোষ বঞ্চিত হয়’।[13] তবে তিনি রাজকোষ নয় বরং আল্লাহর বিধান পালনে জোর দিয়েছিলেন। আর আল্লাহও তাতে বরকত দান করেছিলেন। ফলশ্রুতিতে ১৭০০ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট আওরঙ্গজেব-এর সময়ে চীনকে পিছনে ফেলে ভারতবর্ষ পৃথিবীর বৃহত্তম অর্থনৈতিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়। যার মূল্যমান ছিল প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলার। সেসময় উপমহাদেশের জিডিপি ছিল সমগ্র বিশ্বের জিডিপির ৪ ভাগের ১ ভাগ’।[14]
তখন ইসলামী শাসনের সুফল ও সমৃদ্ধির হাওয়া বাংলাতেও লেগেছিল। শায়েস্তা খান ছিলেন বাংলার সুবেদার। আওরঙ্গজেব নিযুক্ত সুবেদার শায়েস্তা খানের আমলে বাংলায় ১ টাকায় ৮ মণ চাল পাওয়া যেত। দুঃখের বিষয় হ’ল ইতিহাস আওরঙ্গজেব, শায়েস্তা খানের আমলের সমৃদ্ধির কথা ঠিকই মনে রেখেছে, কিন্তু তাদের অনুসৃত ইসলামী রাজস্ব ব্যবস্থাকে মনে রাখেনি।
একচেটিয়া ব্যবসার রাজস্ব : ইসলামী অর্থনীতিতে কারও অসুবিধা না হওয়ার শর্তে একচেটিয়াভাবে ব্যবসা এবং শিল্পকর্ম পরিচালনার অধিকার প্রদান করা হয়েছে। মুহাম্মাদ (ছাঃ) তায়েফ অঞ্চলের কোন কোন লোককে মধু উৎপাদনে একচেটিয়া অধিকার দিয়েছিলেন। এসব উপত্যকায় অন্য কারও ব্যবসা পরিচালনার অধিকার ছিল না। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীগণ এক দশমাংশ রাজস্ব বাবদ বাইতুল মালে জমা করত’।[15] তবে প্রশ্ন থেকে যায় এরূপ একচেটিয়া ব্যবসার ক্ষেত্রে ধনীদের হাতে সমুদয় সম্পদ কুক্ষিগত হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা? বাহ্যত দৃষ্টিতে এখানে পুঁজিবাদ সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে এমন আশংকা অনেক সময় বাস্তব নাও হ’তে পারে। কেননা ইসলামী বিধানমতে একচেটিয়া ব্যবসার ক্ষেত্রে উৎপন্ন দ্রব্যের এক-দশমাংশ রাজস্ব বাবদ বাইতুল মালে জমা করতে হবে। এতদসত্ত্বেও কারও কারও নিকট অধিক সম্পদ জমা হ’লে তার জন্য যাকাত আদায় করা অপরিহার্য হিসাবে গণ্য হবে। সুতরাং একচেটিয়া ব্যবসার এই নিয়ন্ত্রিত ধারায় পুঁজিবাদের মেরুদন্ড চূর্ণ হয়ে যায়।
ঘ. মালিকানা বিহীন সম্পদ : সম্পদের প্রকৃত মালিক আল্লাহ। পৃথিবীতে আল্লাহর তাওহীদ এবং রিসালাত বাস্তবায়নের খলীফা হিসাবে জনগণ তা সাময়িকভাবে ব্যবহারের জন্য অনুমতিপ্রাপ্ত। ইসলামী বিধি অনুযায়ী যে সম্পদের ব্যক্তি মালিকানা বা উত্তরাধিকারী নেই সে সম্পদের মালিক রাষ্ট্র। রাষ্ট্র সেই সম্পদ জনগণের কল্যাণে ব্যয় করবে।
উপসংহার : মেশিনের একটি দাঁত যেমন নির্দিষ্ট সময় পরে বৃত্তাকার ঘুরতে ঘুরতে একই স্থান অতিক্রম করে। মানুষও তেমনি ঘূর্ণায়মান যান্ত্রিক জীবন অতিবাহিত করছে। মানুষ ঘুমের ঘোরে কোন না কোনভাবে কাফেরদের উন্নয়নের রসদ যোগান দিচ্ছে। কখনো তাদের তৈরীকৃত পুঁজিবাদের কর্মী আবার কখনো তাদের গণতন্ত্রের গোলাম। শোষণের এসব পদ্ধতি নিয়ে প্রতিবাদ করার কিংবা প্রশ্ন তোলার অধিকার মানুষের নেই। সেজন্য সৃষ্ট শ্রেণী বৈষম্যের নিচের তলার স্থান সর্বদা নিম্নমান মানুষের আর তারা থাকবে পৃথিবীর অর্থনৈতিক পিরামিড বিন্যাসের সর্বোচ্চ চূড়ায়। তারা একদিকে শ্রমিকদের নিম্ন মজুরী বেঁধে দিয়ে অভাবকে স্থায়ী করে দিবে। অন্যদিকে দুঃখ ভুলিয়ে রাখতে মদ পান, খেলাধুলা, নাচ, গান উস্কে দিবে। দুঃখী বলে তারা মদ পান করে। আর মদপানে তারা সব হারিয়ে সেই দুঃখীই থেকে যায়। এই পুঁজিবাদী দর্শনের মূল ত্রুটি হচ্ছে, এতে অর্থনৈতিক বিধানগুলো প্রাকৃতিক নিয়মের মত মনে করা হয়। চাঁদ যেমন তার আপন গতিতে শীতল আলো প্রদান করে, কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারেনা। তেমনি অর্থনীতির আইনগুলোতে কারও হস্তক্ষেপ চলে না। এই অস্বাভাবিক চিন্তার কারণে দরিদ্র্যতা কখনো দূর হয় না। দরিদ্র মানুষের ওষুধ নেই, খাবার নেই অথচ সেটা চাহিদায় পরিণত হচ্ছে না।অন্যদিকে, ধনী ব্যক্তির আইফোন, লাক্সারিয়াস গাড়ি প্রয়োজন। সেটা কেনার সামর্থ্য তার আছে। সুতরাং তা চাহিদার অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ পুঁজিবাদী সমাজের সম্পদ প্রয়োজনের দিকে প্রবাহিত না হয়ে অপ্রয়োজনে প্রবাহিত হয়। পক্ষান্তরে ইসলামে এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রয়েছে। ইসলামে সম্পদ আল্লাহ তা‘আলার আমানত। প্রয়োজন সাপেক্ষে এখানে সরকারী হস্তক্ষেপের বিধান রয়েছে। অর্থাৎ কেউ অর্থের অভাবে বাজার ব্যবস্থার বাইরে অবস্থান করলে সরকারী ব্যয় প্রবাহ তথা ইসলামী রাজস্ব ব্যবস্থা যথাযথ বণ্টনের মাধ্যমে সে একসময় স্বাবলম্বী হয়ে উঠে এবং বাজার ব্যবস্থায় প্রবেশ করে। গরীব চিরকাল গরীব থেকে যায়না। বরং সেও একসময় মেধা অনুযায়ী বিত্তশালী হয়ে উঠে। ফলশ্রুতিতে দেখা যাবে, এক সময় যাকাত গ্রহীতা খুঁজে পাওয়া যাবে না। উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, সমাজে ধনী-গরীব বৈষম্য দূরীকরণে ইসলামী রাজস্বনীতি মূল ভূমিকা পালন করে। যার দ্বারা শুধু ইসলামী বিশ্ব নয় বরং সমগ্র বিশ্ব শ্রেণী বৈষম্যহীন সাম্য সুখের জীবন যাপন করতে পারবে ইনশাআল্লাহ। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই আমাদের কাজ করে যেতে হবে। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন। আমীন!
আব্দুল্লাহ আল-মুছাদ্দেক
[1]. করোনায় বেড়েছে ধনী-গরিবের বৈষম্য, দৈনিক ইত্তেফাক, ২৫শে জানুয়ারী ২০২২।
[2]. মামুন রশীদ, বাংলাদেশে আয় বৈষম্য যেভাবে কমানো সম্ভব, দৈনিক প্রথম আলো, ৩ জানুয়ারী ২০২২।
[3].করোনা ধনীকে করেছে আরও ধনী, গরিবকে করেছে নিঃস্ব, সময় নিউজ, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, https://bit.ly/41VD3RJ।
[4].ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, ইসলামী অর্থনীতির রুপরেখা : তত্ত্ব ও প্রয়োগ, চয়নিকা প্রকাশনী, ৫ম প্রকাশ, পৃ. ১৯৬।
[5].মাওলানা আব্দুর রহীম, ইসলামের অর্থনীতি, খায়রুন প্রকাশনী (১০ম প্রকাশ, সেপ্টেম্বর : ২০১২), পৃ. ২০৯।
[6]. অধ্যাপক ডাল্টন, পাবলিক ফিন্যান্স ৭, ৩য় খন্ড, ১ম অধ্যায়, পৃ. ২৬১।
[7].ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, ইসলামী অর্থনীতির রুপরেখা : তত্ত্ব ও প্রয়োগ, চয়নিকা প্রকাশনী, ৫ম প্রকাশ, পৃ. ১৯৭।
[8].মাওলানা আব্দুর রহীম, ইসলামের অর্থনীতি, পৃ. ২১২।
[9].বুখারী হা/১৪৮৩; মিশকাত হা/১৭৯৭।
[10].মাওলানা আব্দুর রহীম, ইসলামের অর্থনীতি, পৃ. ২১৬।
[11].শরীফুল ইসলাম বিন যয়নুল আবেদীন, দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম : যাকাত অধ্যায়, পৃ. ৯।
[12].আবুদাউদ হা/৩০৩৮; মিশকাত হা/৪০৩৬।
[13]. Sadiq Ali, A Vindication of Aurangzeb, 1st part, Page 129।
[14]. ডা. শামসুল আরেফীন, ডাবল স্টান্ডার্ড ২.০, সমর্পণ প্রকাশন (১ম প্রকাশ : ফেবুয়ারী ২০২০), পৃ. ২৪৭।
[15].আবুদাউদ হা/১৬০০-১৬০১।