ছালাতে রাসূল (ছাঃ)-এর রাফ‘উল ইয়াদায়েন

আশরাফুল ইসলাম 736 বার পঠিত

উপস্থাপনা : ছালাতে তাকবীরে তাহরীমার সময়ে রাফ‘উল ইয়াদায়েন তথা দুই হাত কঁাধ অথবা কান পর্যন্ত উত্তোলন করা সম্পর্কে মুসলিমদের মধ্যে কোন মতপার্থক্য নেই। তবে রুকূতে যাওয়া, রুকূ হ’তে উঠা ও তৃতীয় রাক‘আতে উঠে দঁাড়ানোর সময় রাফ‘উল ইয়াদায়েনের বিষয়ে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে যারা বলেন রুকূতে যাওয়ার সময় ও রুকূ হ’তে উঠার সময় রাফ‘উল ইয়াদায়েন করা লাগবেনা তাদের বক্তব্য হ’ল রাসূল (ছাঃ) প্রথম দিকে ছালাতে রুকূতে যাওয়ার সময় ও রুকূ হ’তে উঠার সময়ে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করলেও পরে তিনি তা ছেড়ে দিয়েছেন। তাই তা এখন মানসূখ; যা আমলযোগ্য না’।[1] অথচ মতভেদের সময়ে মূলনীতি হ’ল আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ছাঃ) তথা কুরআন ও হাদীছের দিকে ফিরে আসা (নিসা ৪/৫৯)। অথচ রাসূল (ছাঃ) মৃত্যুপূর্ব পর্যন্ত রাফ‘উল ইয়াদায়েন করেছেন। শুধু তাই নয় বরং কোন একজন ছাহাবী রাফ‘উল ইয়াদায়েন ছেড়ে দিয়েছেন এমন কোন বিশুদ্ধ প্রমাণ নেই।

ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেছেন,وَلَمْ يَثْبُتْ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ عَنْ أَحَدٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ لَمْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ ‘রাসূল (ছাঃ)-এর কোন একজন ছাহাবী রাফ‘উল ইয়াদায়েন করেননি মর্মে কোন কিছু আহলে ইলমের নিকটে প্রমাণিত না’।[2] বরং তিনি মৃত্যু পূর্ব পর্যন্ত রাফ‘উল ইয়াদায়েন করেছেন। এ সম্পর্কে দলীলসমূহ নিম্নে আলোচনা করা হ’ল-

দলীল-১ : ছাহাবী মালেক বিন হুওয়াইরিছ (রাঃ) সহ একদল যুবক রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে দ্বীন শিক্ষার জন্য ২০ দিন ২০ রাত ছিলেন। যখন তঁারা ফিরে আসার অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেন, তখন রাসূল (ছাঃ) তঁাদেরকে বললেন,صَلُّوْا كَمَا رَأَيْتُمُوْنِيْ أُصَلِّيْ ‘আমাকে যেভাবে ছালাত আদায় করতে দেখলে সেভাবে তোমরা ছালাত আদায় করবে’।[3] এটি ছিল নবম হিজরীর রজব মাসে তাবুক যুদ্ধের কিছু দিন আগের ঘটনা’।[4] আমরা জানি, রাসূল (ছাঃ) ১১ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেছেন। অর্থাৎ রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর মাত্র দু’বছর আগে মালেক বিন হুওয়াইরিছ (রাঃ) তাঁর নিকটে দ্বীন শিখেন।

এখন আমরা দেখি, মালেক বিন হুওয়াইরিছ (রাঃ) কীভাবে ছালাত আদায় করতেন, কেননা তঁাকে রাসূল (ছাঃ) যেভাবে ছালাত আদায় করতেন সেভাবে ছালাত আদায়ের আদেশ করা হয়েছিল। আবু ক্বিলাবাহ (রহঃ) তিনি মালেক ইবনু হুওয়াইরিছ (রাঃ)-এর ছালাত আদায় সম্পর্কে বলেন,إِذَا صَلَّى كَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ رَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ رَفَعَ يَدَيْهِ، وَحَدَّثَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ- صلى الله عليه وسلم- صَنَعَ هَكَذَا ‘তিনি যখন ছালাত আদায় করতেন তখন তাকবীর দিতেন এবং তাঁর দু’হাত উঠাতেন। আর যখন রুকূ করার ইচ্ছা করতেন তখনও তাঁর উভয় হাত উত্তোলন করতেন। আবার যখন রুকূ হ’তে মাথা উঠাতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন এবং তিনি বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) এরূপ করেছেন’।[5]

হাদীছটিতে জ্বলজ্বল করছে ছাহাবী মালেক বিন হুওয়াইরিছ (রাঃ) রুকূতে যাওয়ার সময় রুকূ হ’তে উঠার সময়ে হাত উঠাতেন। তাহ’লে রাসূল (ছাঃ) যদি রাফ‘উল ইয়াদায়েন করা ছেড়ে দিতেন তাহ’লে মালেক বিন হুওয়াইরিছ (রাঃ)-কে রাফ‘উল ইয়াদায়েন সহ ছালাত শিক্ষা দিতেন না। এ থেকে স্পষ্ট যে রাসূল (ছাঃ) রাফ‘উল ইয়াদায়েন করা কখনও ছাড়েন নি।

দলীল-২ : ছাহাবী ওয়ায়েল বিন হুজর (রাঃ) বলেন,اَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَفَعَ يَدَيْهِ حِينَ دَخَلَ فِي الصَّلاَةِ كَبَّرَ- وَصَفَ هَمَّامٌ حِيَالَ أُذُنَيْهِ- ثُمَّ الْتَحَفَ بِثَوْبِهِ ثُمَّ وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ أَخْرَجَ يَدَيْهِ مِنَ الثَّوْبِ ثُمَّ رَفَعَهُمَا ثُمَّ كَبَّرَ فَرَكَعَ فَلَمَّا قَالَ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ ‘তিনি নবী করীম (ছাঃ)-কে দেখলেন, তিনি ছালাত শুরু করার সময় দুই হাত তুললেন এবং তাকবীর বললেন। হাম্মাম দু’হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে তার স্বরূপ বর্ণনা করলেন। অতঃপর চাদরে ঢেকে নিলেন এবং ডান হাত বাম হাতের উপর রাখলেন। তিনি যখন রুকূতে যাওয়ার ইচ্ছা করলেন, উভয় হাত কাপড়ের ভিতর থেকে বের করলেন, অতঃপর উভয় হাত উত্তোলন করলেন। অতঃপর তাকবীর দিয়ে রুকূতে গেলেন। তিনি যখন ‘সামি‘আল্লা-হু লিমান হামিদাহ’ বললেন, তখনো দু’হাত উঠালেন’।[6]

ওয়ায়েল বিন হুজর (রাঃ) ইয়েমেনের বাদশাহ ছিলেন। তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন নবম হিজরীতে’।[7] অর্থাৎ রাসূল (ছাঃ) এর মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে। তিনি রাসূল (ছাঃ)-কে দেখেছেন রুকূতে যাওয়ার আগে ও রুকূ হ’তে উঠার পরে হাত উঠিয়ে ছালাত আদায় করতে। এরপর তিনি পরের বছর অর্থাৎ দশম হিজরীতে ঠান্ডার সময় আবার আসলেন’।[8] তিনি তখন অনুরূপ ছালাত আদায় করতে দেখেছেন। তাহ’লে রাসূল (ছাঃ) রাফ‘উল ইয়াদায়েন ছেড়ে দিলেন কবে?

দলীল-৩ : রাসূল (ছাঃ) রাফ‘উল ইয়াদায়েন করেছেন তা যেমন ছাহাবী দেখেছেন, তেমনি রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পরেও ছাহাবী করেছেন তা তাবেঈ দেখেছেন এবং তাবেঈ করেছেন তা তাবে তাবেঈ দেখেছেন। আর এভাবে অদ্যবধি চলমান রয়েছে। যেমন-

‘আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-কে দেখেছি, তিনি যখন ছালাতের জন্য দঁাড়াতেন তখন উভয় হাত কঁাধ বরাবর উঠাতেন এবং যখন তিনি রুকূর জন্য তাকবীর বলতেন তখনও এরূপ করতেন। আবার যখন রুকূ হ’তে মাথা উঠাতেন তখনও এমন করতেন এবং سَمِعَ للهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলার সময়ও এমন করতেন। তবে সিজদার সময় এরূপ করতেন না’।[9]

হাদীছটি খেয়াল করুন, ওমর (রাঃ)-এর ছেলে আব্দুল্লাহ রাসূল (ছাঃ)-কে রুকূতে যাওয়ার সময় ও রুকূ হ’তে উঠার সময় রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতে দেখেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পূর্বে শেষ সপ্তাহে তাঁর পিছনে এশার ছালাত আদায় করেছেন’।[10] এখন আমরা দেখবো আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পরে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করেছেন কি না।عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ كَانَ إِذَا دَخَلَ فِى الصَّلاَةِ كَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا رَكَعَ رَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ . رَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا قَامَ مِنَ الرَّكْعَتَيْنِ رَفَعَ يَدَيْهِ. وَرَفَعَ ذَلِكَ ابْنُ عُمَرَ إِلَى نَبِىِّ اللهِ- صلى الله عليه وسلم- নাফে‘ (রহঃ) হ’তে বর্ণিত যে, ইবনু ওমর (রাঃ) যখন ছালাত শুরু করতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং দু’হাত উঠাতেন আর যখন রুকূ করতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন। অতঃপর যখন ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন এবং দু’রাক‘আত আদায়ের পর যখন দঁাড়াতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন। হাদীছটি ইবনু ওমর (রাঃ) আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) হ’তে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণনা করেছেন।[11] রাসূল (ছাঃ) যদি মৃত্যুর দু’একদিন আগেও রাফ‘উল ইয়াদায়েন করা ছেড়ে দিতেন তাহ’লে অবশ্যই আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন না। আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) রাফ‘উল ইয়াদায়েন বর্জন করেছিলেন মর্মে কোন ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়নি। আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) রাফ‘উল ইয়াদায়েন করেছেন যা ছহীহ বুখারীতে মুত্তাছিল সনদে বর্ণিত হয়েছে।

ছহীহ বুখারীর গ্রহণযোগ্যতা ও মর্যাদা সম্পর্কে প্রখ্যাত উছূলবিদ ইমাম ইবনু ছলাহ (রহঃ) বলেন, ‘অনুরূপ প্রত্যেক যে হাদীছকে ইমাম বুখারী (রহঃ) তাঁর গ্রন্থে ছহীহ বলেছেন, তা অকাট্য ছহীহ, কেননা উম্মত এই গ্রন্থকে কবুল করে নিয়েছে’।[12] ইমাম ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, ‘ছহীহ বুখারী ও ছহীহ বুখারীর সকল হাদীছ গ্রহণ ও ছহীহ হওয়ার ব্যাপারে সকল আলেম একমত হয়েছেন’ অনুরূপভাবে সকল মুসলিম একমত হয়েছে’।[13] ইমাম বদরুদ্দীন আইনী হানাফী (রহঃ) বলেন, ‘পূর্ব এবং পশ্চিমের আলেমগণ একমত হয়েছেন যে, আল্লাহর কিতাবের পরে ছহীহ বুখারী ও ছহীহ মুসলিমের থেকে অধিকতর বিশুদ্ধ কোন কিতাব নেই’।[14]

এবার আমরা দেখব, তাবেঈর রাফ‘উল ইয়াদায়েন। ‘তাবে তাবেঈ সুলায়মান আশ- শায়বানী (রহঃ) বলেন, আমি সালেম ইবনু আব্দুল্লাহ (ইবনু ওমর)-কে দেখেছি, তিনি যখন ছালাত শুরুতে এবং রুকূতে যাওয়ার সময় ও রুকূ হ’তে মাথা উঠিয়ে দু’হাত উত্তোলন করেছেন। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, ‘আমি আমার পিতা আব্দুল্লাহ (রাঃ)-কে এভাবে ছালাত আদায় করতে দেখেছি। তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেছিলেন, আমি (ইবনু ওমর) রাসূল (ছাঃ)-কে এভাবে ছালাত আদায় করতে দেখেছি’।[15]

সালেম হ’লেন আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ)-এর ছেলে। এর চেয়ে স্পষ্ট প্রমাণ আর কী হ’তে পারে? রাসূল (ছাঃ)-কে দেখেছেন ছাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর, আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ)-কে দেখেছেন তাঁর পুত্র সালেম। আর সালেমকে দেখেছেন তাবে তাবেঈ সুলায়মান আশ-শায়বানী (রহঃ)। তা’হলে রাফ‘উল ইয়াদায়েন মানসূখ হ’ল কীভাবে?

জ্ঞাতব্য : আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) পরবর্তীতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন বর্জন করেছিলেন মর্মে কোন বিশুদ্ধ প্রমাণ নেই। বরং কেউ রুকূর আগে-পরে রাফ‘উল ইয়াদায়েন না করলে তিনি তাকে নুড়ি-পাথর মারতেন।[16] যা ইমাম নববী ও ইবনুল মুলাক্কিন (রহঃ) সহ আরো অনেকে ছহীহ বলেছেন।[17]

[ক্রমশঃ]

 তাজদীদে মিল্লাত

[দক্ষিণ শালিকা, মেহেরপুর]


[1]. হাশিয়াতু ইবনু আবেদীন ১/৩২৪; আল-মুগণী ১/৪৯৭।

[2]. ইমাম বুখারী (রহঃ), জুযঊ‘ রাফ‘উল ইয়াদায়েন ভূমিকা দ্রষ্টব্য।

[3]. বুখারী হা/৬৩১।

[4]. ইবনু হাজার আসক্বালানী ফাৎহুল বারী হা/৭২৪৬, ১৩/২৩৬ পৃ.।

[5]. বুখারী হা/৭৩৭।

[6]. মুসলিম হা/৪০১।

[7]. ঊমদাতুল কারী ৫/২৭৪ পৃ.।

[8]. ছহীহ ইবনু হিববান হা/১৮৬০।

[9]. বুখারী হা/৭৩৫, ৭৩৬, ৭৩৭ ‘তাকবীরে তাহরীমা, রুকূতে যাওয়া এবং রুকূ হ’তে উঠার সময় রাফ‘উল ইয়াদায়েন করা’ অনুচ্ছেদ-৮৪।

[10]. বুখারী হা/১১৬, ৬৮২।

[11]. বুখারী হা/৭৩৯ ‘দুই রাক‘আত আদায় করে দাঁড়াবার সময় দু’হাত উঠানো’ অনুচ্ছেদ-৮৬।

[12]. ওছমান ইবনু আব্দুর রহমান, ছিয়ানাতু ছহীহ মুসলিম ৮৫ পৃ.।

[13]. আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১১/৩০ পৃ.।

[14]. বদরুদ্দীন আল-আইনী (রহঃ), উমদাতুল ক্বারী ১/৫ পৃ.।

[15]. আবুল আববাস মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক আস-সাররাজ, হাদীছু সাররাজ হা/১১৫; সনদ ছহীহ।

[16]. ইমাম বুখারী, জুযউ রাফ‘উল ইয়াদায়েন হা/১৫।

[17]. আল-মাজমু‘ ফাতাওয়া ৩/৪০৫ পৃ.; আল-বাদরুল মুনীর ৩/৪৭৮ পৃ.।



বিষয়সমূহ: ছালাত
আরও