বিদ‘আতের কুফল

শরীফুল ইসলাম মাদানী 339 বার পঠিত

উপস্থাপনা : বিদ‘আত হ’ল সুন্নাতের বিপরীত। যেহেতু রাসূল (ছাঃ)-এর কথা, কর্ম ও মৌন সম্মতিকে সুন্নাত বলা হয়, সেহেতু সুন্নাতের পূর্ব দৃষ্টান্ত রয়েছে। পক্ষান্তরে বিদ‘আত ইসলামী শরী‘আতের অন্তর্ভুক্ত বিষয় নয়। সুতরাং বিদ‘আতের কোন পূর্ব দৃষ্টান্ত নেই। ফলে দ্বীনের মধ্যে নতুন সৃষ্ট সব কিছুই বিদ‘আত। বিদ‘আতের নানাবিধ কুফলতা রয়েছে। নিম্নে সেগুলো আলোকপাত করা হ’ল।

(১) আল্লাহর উপর মিথ্যারোপ : বিদ‘আত করা আল্লাহর উপর মিথ্যারোপের নামান্তর। আল্লাহ বলেন,وَلاَ تَقُوْلُوْا لِمَا تَصِفُ أَلْسِنَتُكُمُ الْكَذِبَ هَذَا حَلاَلٌ وَهَذَا حَرَامٌ لِتَفْتَرُوْا عَلَى اللهِ الْكَذِبَ إِنَّ الَّذِيْنَ يَفْتَرُوْنَ عَلَى اللهِ الْكَذِبَ لاَ يُفْلِحُوْنَ- ‘আর তোমাদের জিহবা দ্বারা বানানো মিথ্যার উপর নির্ভর করে আল্লাহর উপর মিথ্যা রটানোর জন্য বল না যে, এটা হালাল এবং ওটা হারাম। নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর উপর মিথ্যারোপ করে, তারা সফলকাম হবে না’ (নাহল ১৬/১১৬)

অত্র আয়াতের ব্যাখ্যায় হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, যারা বিদ‘আত করে, যার কোন ভিত্তি ইসলামী শরী‘আতে নেই, তারা এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ তারা নিজেদের মন মত আল্লাহর হারামকৃত বস্ত্তকে হালাল সাব্যস্ত করে এবং আল্লাহর হালালকৃত বস্ত্তকে হারাম সাব্যস্ত করে’।[1]

(২) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর উপরন খেয়ানতের অপবাদ : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জীবদ্দশাতেই দ্বীন-ইসলাম পূর্ণতা লাভ করেছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,اَلْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِيْ وَرَضِيْتُ لَكُمُ الْإِسْلاَمَ دِيْنًا- ‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার নে‘মত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসাবে মনোনীত করলাম’ (মায়েদা ৫/৩)

ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন,مَن اِبْتَدَعَ فِيْ الإِسْلاَمِ بِدْعَةً يَرَاهَا حَسَنَةً فَقَدْ زَعَمَ أَنَّ مُحَمَّدًا خَانَ الرِّسَالَةَ، لِأَنَّ اللهَ تَعَالَى يَقُوْلُ (الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ) فَمَا لَمْ يَكُنْ يَوْمَئِذٍ دِيْنًا فَلَيْسَ الْيَوْمَ دِيْنًا- ‘যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে বিদ‘আত সৃষ্টি করল এবং তাকে উত্তম মনে করল, সে যেন ধারণা করল যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ) রিসালাতে খিয়ানত করেছেন। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে (ইসলাম) পূর্ণাঙ্গ করলাম’ (মায়েদাহ ৫/৩)। সুতরাং সে যুগে (রাসূল ছাঃ ও ছাহাবায়ে কেরামের যুগে) যা দ্বীন হিসাবে গণ্য ছিল না, বর্তমানেও তা দ্বীন হিসাবে পরিগণিত হবে না’।[2]

অথচ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর উপর অর্পিত রিসালাতের দায়িত্ব যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করেছেন। তিনি বলেন,مَا تَرَكْتُ شَيْئًا مِمَّا أَمَرَكُمُ اللهُ بِهِ إِلاَّ وَقَدْ أَمَرْتُكُمْ بِهِ وَلاَ تَرَكْتُ شَيْئًا مِمَّا نَهَاكُمُ اللهُ عَنْهُ إِلاَّ وَقَدْ نَهَيْتُكُمْ عَنْهُ- ‘আমি এমন কোন জিনিসই ছাড়িনি যার হুকুম আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে দিয়েছেন; অবশ্যই আমি তার হুকুম তোমাদেরকে দিয়েছি। আর আমি এমন কোন জিনিসই ছাড়িনি যা আল্ল­াহ তা‘আলা নিষেধ করেছেন; অবশ্যই আমি তোমাদেরকে তা থেকে নিষেধ করেছি’।[3]

আবু যার (রাঃ) বলেন,مَا تَرَكَ النَّبي صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَائِراً يُقَلِّبُ جَنَاحَيْهِ فِي السَّمَاءِ إِلاَّ ذَكَرَ لَنَا مِنْهُ عِلْمًا- ‘আকাশে যে পাখি তার দু’ডানা ঝাপটায় তার জ্ঞান সম্পর্কেও নবী করীম (ছাঃ) আমাদের নিকট আলোচনা করেছেন’।[4]

অতএব যেহেতু রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর উপর নাযিলকৃত রিসালাত পরিপূর্ণভাবে উম্মতে মুহাম্মাদীর নিকট পৌঁছে দিয়েছেন, সেহেতু তাঁর সুন্নাত অনুযায়ী মানুষের সার্বিক জীবন পরিচালনা করতে হবে। তাঁর সুন্নাতকে উপেক্ষা করে দ্বীনের মধ্যে নতুন কোন কাজকে ইবাদত হিসাবে পালন করলে তাঁর উপর খিয়ানতের মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হবে।

(৩) ছাহাবায়ে কেরামের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা : ছাহাবায়ে কেরাম উম্মতের সবচেয়ে তাক্বওয়াশীল ও মর্যাদাবান ব্যক্তি। বিদ‘আতের মাধ্যমে তাঁদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা হয়। যেমন-

(ক) ছাহাবায়ে কেরামকে অলস ও ইবাদতের ক্ষেত্রে গাফেল মনে করা হয়। অর্থাৎ বিদ‘আতীরা যখন ইসলামী শরী‘আত বহির্ভূত কাজকে নেকীর উদ্দেশ্যে পালন করে থাকে, তখন বিশ্বাস করা হয় যে, ছাহাবায়ে কেরাম ঐ সমস্ত কাজগুলি ইবাদত হিসাবে পালন না করে তাঁদের অলসতা ও গাফিলতীর পরিচয় দিয়েছেন।

(খ) ছাহাবায়ে কেরামকে অপূর্ণাঙ্গ ইবাদতকারী হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। অর্থাৎ ছাহাবায়ে কেরাম যেহেতু যাবতীয় বিদ‘আতী কর্মকান্ড থেকে নিজেদেরকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত রেখেছিলেন, সেহেতু বিদ‘আতীদের নিকট ছাহাবায়ে কেরাম অপূর্ণাঙ্গ ইবাদতকারী হিসাবে বিবেচিত হয়।

(গ) অনুসরণীয় ইমাম ও বুযুর্গানে দ্বীনকে ছাহাবায়ে কেরামের উপর প্রাধান্য দেওয়া হয়। কারণ ছাহাবায়ে কেরামের কথা কিংবা আমল যাই থাক না কেন, বিদ‘আতীদের নিকট তাদের অনুসরণীয় ইমাম অথবা বুযুর্গানে দ্বীনের কথাই প্রণিধানযোগ্য হয়। অথচ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,عَلَيْكُمْ بِسُنَّتِيْ وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِيْنَ الْمَهْدِيِّيْنَ مِنْ بَعْدِيْ وَعَضُّوْا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ- ‘তোমাদের উপর আমার সুন্নাত এবং আমার পরে হেদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশিদীনের সুন্নাতের অনুসরণ করা ওয়াজিব। তোমরা তা মাড়ির দাঁত দিয়ে শক্তভাবে অাঁকড়ে ধরবে’।[5] সাঈদ ইবনু জুবাইর (রাঃ) বলেন,مَا لَمْ يَعْرِفْهُ الْبَدْرِيُّوْنَ فَلَيْسَ مِنَ الدِّيْنِ- ‘বদরী ছাহাবীগণ (দ্বীনের ব্যাপারে) যা জানত না তা দ্বীন নয়’।[6]

আওযাঈ (রহঃ) বলেন,اَلْعِلْمُ مَا جَاءَ عَنْ أَصْحَابِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمَا لَمْ يَجِئْ عَنْ وَاحِدٍ مِنْهُمْ فَلَيْسَ بِعِلْمٍ- ‘(দ্বীনের ব্যাপারে) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছাহাবীদের থেকে যা এসেছে তাই প্রকৃত ইলম, আর তাদের কোন একজনের থেকেও যা আসেনি তা ইলম নয়’।[7]

শা‘বী (রহঃ) বলেন,مَا حَدَّثُوْكَ عَنْ أَصْحَابِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَخُذْ بِهِ، وَمَا قَالُوْا فِيْهِ بِرَأْيِهِمْ فَبُلْ عَلَيْهِ- ‘রাসূল (ছাঃ)-এর ছাহাবীদের থেকে তোমাকে যা তারা বলে তুমি তা গ্রহণ কর, আর যা তারা তাদের রায়ের ভিত্তিতে বলে তুমি তার উপর পেশাব কর’।[8]

ইবনু আব্দিল বার্র (রহঃ) বলেন, ‘গ্রহণযোগ্য সূত্রে রাসূল (ছাঃ) হ’তে যা এসেছে এবং রাসূল (ছাঃ)-এর ছাহাবী কর্তৃক যা ছহীহ প্রমাণিত হয়ে এসেছে তাই ইলম যা দ্বীন হিসাবে সাব্যস্ত। আর যা তাদের পরে আবিষ্কৃত হয়েছে যার কোন ভিত্তি তাদের (রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম) আনীত বিধানের মধ্যে নেই, তাই হচ্ছে বিদ‘আত ও ভ্রষ্টতা’।[9]

ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন,وَأَمَّا أَهْلُ السُّنَّةِ وَالْجَمَاعَةِ فَيَقُوْلُوْنَ فِيْ كُلِّ فِعْلٍ وَقَوْلٍ لَمْ يَثْبُتْ عَنِ الصَّحَابَةِ هُوَ بِدْعَةٌ؛ لِأَنَّهُ لَوْ كَانَ خَيْرًا لَسَبَقُوْنَا إِلَيْهِ، لِأَنَّهُمْ لَمْ يَتْرُكُوْا خَصْلَةً مِنْ خِصَالِ الْخَيْرِ إِلاَّ وَقَدْ بَادَرُوْا إِلَيْهَا- ‘আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত বলে, যে সকল কথা ও কর্ম ছাহাবায়ে কেরাম থেকে সাব্যস্ত নয়, তা বিদ‘আত। কেননা যদি তা (উক্ত কথা ও কর্ম) উত্তম হ’ত, তাহ’লে তাঁরা তা করতেন। কেননা তাঁরা যে কোন ধরণের ভালো কাজ না করে ছাড়বেন না’।[10]

(৪) ইসলামের উপর অপূর্ণাঙ্গতার অপবাদ আরোপ করা : আল্লাহ তা‘আলা অহি-র মাধ্যমে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর জীবদ্দশাতেই দ্বীন-ইসলামকে পূর্ণতা দান করেছেন। রাসূলুল্ল­াহ (ছাঃ)-এর মৃত্যুর তিন মাস পূর্বে ১০ম হিজরীর ৯ই যিলহজ্জে আরাফার ময়দানে ছাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে যখন তিনি বিদায় হজ্জ পালন করেছিলেন তখন আল্ল­াহ তা‘আলা এই আয়াতটি অবতীর্ণ করেন,اَلْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِيْ وَرَضِيْتُ لَكُمُ الْإِسْلاَمَ دِيْنًا- ‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার নে‘মত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসাবে মনোনীত করলাম’ (মায়েদা ৫/৩)

অত্র আয়াত প্রমাণ করে যে, রাসূলুলল্লাহ (ছাঃ)-এর জীবদ্দশাতেই অহি-র বিধানের মাধ্যমে দ্বীন-ইসলাম পূর্ণতা লাভ করেছে, যাতে মানুষের সার্বিক জীবনের সকল দিক ও বিভাগ পূর্ণাঙ্গরূপে বর্ণিত হয়েছে।

ইমাম শাতেবী (রহঃ) বলেন, اَلمُبْتَدِعُ إِنَّمَا مَحْصُوْلُ قَوْلِهِ بِلِسَانِ حَالِهِ أَوْ مَقَالِهِ : إِنَّ الشَّرِيْعَةَ لَمْ تَتِمَّ، وَأَنَّهُ بَقِيَ مِنْهَا أَشْيَاءٌ يَجِبُ أَوْ يُسْتَحَبُّ اِسْتِدْرَاكَهَا، لِأَنَّهُ لَوْ كَانَ مُعْتَقِدًا كَمَالُهَا وَتَمَامُهَا مِنْ كُلِّ وَجْهٍ لَمْ يَبْتَدِعْ وَلاَ اسْتِدْرَكَ عَلَيْهَا- ‘বিদ‘আতীদের কথা ও বক্তব্যে প্রমাণিত হয় যে, নিশ্চয়ই (ইসলামী) শরী‘আত অপূর্ণাঙ্গ এবং এর মধ্যে এমন কিছু জিনিস অপূর্ণ রয়ে গেছে যা পালন করা ওয়াজিব অথবা মুস্তাহাব। কেননা তারা (বিদ‘আতীরা) যদি ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ বলে বিশ্বাস করত, তাহ’লে তারা বিদ‘আত করত না’।[11] অতএব ভাল কাজের দোহাই দিয়ে পূর্ণাঙ্গ এই দ্বীনের মধ্যে মানুষের মস্তিষ্ক প্রসূত কোন বিধান জারী করলে দ্বীন-ইসলামের উপরে অপূর্ণাঙ্গতার মিথ্যা অপবাদ আরোপ করা হয়।

(৫) ইসলামী শরী‘আতকে ধ্বংসকরণ : বিদ‘আত ইসলামী শরী‘আতের মধ্যে কোন কিছু সংযোজন, বিয়োজন ও পরিবর্তনের মাধ্যমে তা ধ্বংসের কাজে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন,اَلْبِدْعَةُ أَحَبُّ إِلَى الشَّيْطَانِ لِمُنَاقَضَتِهَا الْدِّيْنِ وَدَفْعِهَا لِمَا بَعَثَ اللهُ بِهِ رَسُوْلَهُ وَصَاحِبُهَا لاَ يَتُوْبُ مِنْهَا وَلاَ يَرْجِعُ عَنْهَا بَلْ يَدْعُوْ الْخَلْقَ إِلَيْهَا وَلِتَضَمُّنِهَا الْقَوْلُ عَلَى اللهِ بِلاَ عِلْمٍ- ‘শয়তানের নিকট সবচেয়ে প্রিয় বস্ত্ত হ’ল বিদ‘আত। কেননা তা দ্বীনকে ধ্বংস করে এবং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর উপর আল্লাহর প্রেরিত বিধানকে নিষেধ করে। বিদ‘আতকারী কখনও তা থেকে তওবা করে না এবং তা থেকে ফিরে আসে না। বরং আল্লাহ সম্পর্কে ইলম বিহীন কথার মাধ্যমে মানুষকে বিদ‘আতের দিকে আহবান করে ও তার অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করে’।[12]

(৬) বিদ‘আত অন্তরকে কলুষিত করে : মানুষ যখন কুরআন ও সুন্নাহর আনুগত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বিদ‘আতের আনুগত্যে নিজেকে উৎসর্গ করে এবং সুন্নাতের অনুসরণকে যথেষ্ট বলে বিশ্বাস করে না, ঠিক তখনই মানুষের অন্তর ইসলাম ধ্বংসকারী কর্মকান্ড দ্বারা কলুষিত হয়।

শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই (ইসলামী) শরী‘আতের বিধানসমূহ অন্তরের খাদ্য। কিন্তু যখন বিদ‘আত অন্তরের খাদ্য হয় তখন সেখানে সুন্নাতের জন্য অবশিষ্ট কিছুই থাকে না। বরং তা নিকৃষ্ট খাদ্য ভক্ষণের স্থলাভিষিক্ত হয়’।[13]

(৭) বিদ‘আতীর আমল আল্লাহর নিকট কবুল হয় না : মহান আল্লাহ রববুল আলামীনের দরবারে ইবাদত কবুলের অন্যতম একটি শর্ত হ’ল, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাত অনুযায়ী ইবাদত করা। যখন ইবাদত সুন্নাত পরিপন্থী হয় তখন তা বিদ‘আতী আমলে পরিণত হয়, যা আল্লাহ তা‘আলার নিকটে কবুল হয় না। যদিও মানুষ সেই আমলকে অত্যন্ত ভালো মনে করেই পালন করে থাকে। আল্লাহ বলেন,قُلْ هَلْ نُنَبِّئُكُمْ بِالْأَخْسَرِيْنَ أَعْمَالًا، الَّذِيْنَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِيْ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُوْنَ أَنَّهُمْ يُحْسِنُوْنَ صُنْعًا- ‘বল, আমি কি তোমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের সম্পর্কে সংবাদ দিব? ওরাই তারা, পার্থিব জীবনে যাদের প্রচেষ্টা পন্ড হয়, যদিও তারা মনে করে যে, তারা সৎকর্মই করছে’ (কাহফ ১৮/১০৩-১০৪)

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ أَحْدَثَ فِيْ أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيْهِ فَهُوَ رَدٌّ- ‘যে ব্যক্তি আমাদের এই শরী‘আতের মধ্যে নতুন এমন কিছু সৃষ্টি করল, যা তার (শরী‘আতের) অন্তর্ভুক্ত নয় তা প্রত্যাখ্যাত’।[14] অন্যত্র রাসূলুল্ল­াহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهْوَ رَدٌّ- ‘যে ব্যক্তি এমন আমল করল, যাতে আমার নির্দেশনা নেই তা প্রত্যাখ্যাত’।[15]

(৮) তওবা কবুল না হওয়া : আল্লাহ রববুল আলামীনের দরবারে তওবা কবুলের শর্ত হ’ল, (১) সংশ্লিষ্ট পাপ কাজ বর্জন করা। (২) কৃত পাপ কাজের জন্য অনুতপ্ত হওয়া। (৩) পরবর্তীতে কখনও এই পাপে লিপ্ত না হওয়ার প্রতিজ্ঞা করা। অতএব যেহেতু বিদ‘আতীরা বিদ‘আতকে ভালো আমল হিসাবে পালন করে থাকে, সেহেতু তারা উক্ত গর্হিত পাপ থেকে বিরত থাকে না। সুফিয়ান ছাওরী (রহঃ) বলেন,اَلْبِدْعَةُ أَحَبُّ إِلَى إِبْلِيْسِ مِنَ الْمَعْصِيَةِ لِأَنَّ الْبِدْعَةَ لاَ يُتَابُ مِنْهَا وَالْمَعْصِيَةَ يُتَابُ مِنْهَا ‘ইবলীসের নিকট পাপের চেয়ে বিদ‘আত অধিক প্রিয়। কেননা পাপ থেকে মানুষ তওবা করে কিন্তু বিদ‘আত থেকে তওবা করে না (কেননা সে বিদ‘আতকে ভালো কাজ বলে বিশ্বাস করে)’।[16]

আর বিদ‘আতকে বর্জন না করা পর্যন্ত তার তওবা কবুল হবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,إِنَّ اللهَ حَجَبَ التَّوْبَةَ عَنْ كُلِّ صَاحِبِ بِدْعَةٍ حَتَّى يَدَعَ بِدْعَتَهُ- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রত্যেক বিদ‘আতীর তওবা কবুল করেন না যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার বিদ‘আত থেকে বিরত না হয়’।[17]

(৯) হাউযে কাউছার ও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর শাফা‘আত থেকে বঞ্চিত : ক্বিয়ামতের সেই বিভীষিকাময় কঠিনতম দিনে যখন হাউযে কাউছারের পানি ব্যতীত কোন পানি থাকবে না, সেদিন প্রত্যেক বিদ‘আতীকে সেই হাউযে কাউছারের নিকট থেকে বিতাড়িত করা হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আমি তোমাদের পূর্বে হাউযের (হাউযে কাউছার) নিকটে পৌঁছে যাবে। যে আমার নিকট দিয়ে অতিক্রম করবে, সে হাউযের পানি পান করবে। আর যে একবার পান করবে সে আর কখনও পিপাসিত হবে না। নিঃসন্দেহে কিছু সম্প্রদায় আমার সামনে (হাউযে) উপস্থিত হবে। আমি তাদেরকে চিনতে পারব, আর তারাও আমাকে চিনতে পারবে। এরপর আমার ও তাদের মাঝে আড়াল করে দেওয়া হবে। আমি তখন বলব, এরাতো আমারই উম্মত। তখন বলা হবে, তুমি জান না তোমার (মৃত্যুর) পরে এরা কি সব নতুন নতুন কথা ও কাজ সৃষ্টি করেছিল। তখন আমি বলব, দূর হোক দূর হোক (আল্লাহর রহমত থেকে), যারা আমার পরে দ্বীনের ভিতর পরিবর্তন এনেছে’।[18]

(১০) বিদ‘আতের দিকে আহবানকারী অন্যের পাপের অংশীদার হবে : যারা মানুষকে বিদ‘আতের দিকে আহবান করে ক্বিয়ামত পর্যন্ত তারা অন্যের পাপের অংশীদার হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,لِيَحْمِلُوْا أَوْزَارَهُمْ كَامِلَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَمِنْ أَوْزَارِ الَّذِيْنَ يُضِلُّوْنَهُمْ بِغَيْرِ عِلْمٍ أَلاَ سَاءَ مَا يَزِرُوْنَ- ‘ক্বিয়ামত দিবসে তারা তাদের পাপভার পূর্ণমাত্রায় বহন করবে এবং তাদেরও পাপভার বহন করবে যাদেরকে তারা অজ্ঞতাহেতু বিভ্রান্ত করেছে। দেখ, তারা যা বহন করবে তা কত নিকৃষ্ট’ (নাহল ১৬/২৫)

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কাউকে সৎপথের দিকে আহবান করে, তার জন্যও সেই পরিমাণ ছওয়াব রয়েছে যা তাদের অনুসারীদের জন্য রয়েছে, অথচ এটা তাদের ছওয়াবের কোন অংশকেই কমাবে না। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি কাউকে গোমরাহীর দিকে আহবান করে, তার জন্য সেই পরিমাণ গুনাহ রয়েছে, যা তাদের অনুসারীদের জন্য রয়েছে, অথচ এটা তাদের গোনাহর কোন অংশকেই কমাবে না’।[19]

অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলামে কোন উত্তম রীতির প্রচলন করবে তার জন্য তার কাজের ছওয়াব রয়েছে এবং তার পরে যারা এ কাজ করবে তাদের ছওয়াবও রয়েছে। অথচ এতে তাদের ছওয়াবের কিছু কম করা হবে না। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি ইসলামে কোন মন্দ রীতির প্রচলন করবে, তার জন্যও তার কাজের গোনাহ এবং তার পরে যারা এ কাজ করবে তাদের গোনাহ রয়েছে। অথচ এটা দ্বারা তাদের গোনাহর কিছুই কম করা হবে না’।[20]

(১১) বিদ‘আতী অভিশপ্ত : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,فَمَنْ أَحْدَثَ فِيْهَا حَدَثًا أَوْ آوَى فِيْهَا مُحْدِثًا، فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ، لاَ يُقْبَلُ مِنْهُ صَرْفٌ وَلاَ عَدْلٌ- ‘যে ব্যক্তি এর মধ্যে (ইসলামে) বিদ‘আত সৃষ্টি করে কিংবা বিদ‘আতীকে আশ্রয় দেয়, তার উপর আল্লাহ, ফেরেশ্তা ও সকল মানুষের অভিসম্পাত। আল্লাহ তার কোন নফল ও ফরয ইবাদত কবুল করেন না’।[21]

(১২) ইহুদী-খৃষ্টানদের স্বভাব ফুটে উঠা : ইহুদী-খৃষ্টানরা যেমন তাদের খেয়াল খুশিমত দুনিয়াতে বিচরণের জন্য তাওরাত ও ইঞ্জীলকে বিকৃত করেছে। যার মধ্যে আল্লাহর প্রকৃত কালাম খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বিদ‘আতের অনুসারীরাও তেমনই নিজেদের ব্যক্তিগত সুবিধা নিশ্চিত করতে এবং ধর্মীয় ক্ষেত্রে তাক্বলীদের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে ভালো কাজের দোহাই দিয়ে বিদ‘আতের প্রচলন করে থাকে। আর এ সকল বিদ‘আতের আবরণে প্রকৃত সুন্নাত ঢাকা পড়ে। তাই বিদ‘আতকে শক্ত হস্তে দমন না করলে প্রকৃত ইসলাম বিদায় নিবে।

(১৩) জাহেলী স্বভাবের পুনরাবৃত্তি : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন মক্কার কাফেরদের দেবদেবীর উপাসনা ছেড়ে এক আল্লাহর দাসত্বের দিকে আহবান করতেন, তখন তারা তাদের বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে বলত, আমরা তারই অনুসরণ করব, যার উপর আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে পেয়েছি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَإِذَا قِيْلَ لَهُمُ اتَّبِعُوْا مَا أَنْزَلَ اللهُ قَالُوْا بَلْ نَتَّبِعُ مَا أَلْفَيْنَا عَلَيْهِ آبَاءَنَا- ‘আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তোমরা তারই অনুসরণ কর’ (বাক্বারাহ ২/১৭১)

অনুরূপভাবে বিদ‘আতের অনুসারীদেরকে তাদের লালনকৃত বিদ‘আতকে বর্জন করে সুন্নাতের অনুসরণের দিকে আহবান করলে তারা বলে, আমাদের বাপ-দাদারা কি কিছুই বুঝত না? পূর্বেকার আলেমেরা কি কুরআন-হাদীছ বুঝতেন না? আজ আবার নতুন নতুন হাদীছ কোথা থেকে বের হচ্ছে? এই বলে তারা তাদের বাপ-দাদাদের অনুসরণীয় আমলের উপর অটল থাকে এবং কুরআন ও ছহীহ হাদীছকে প্রত্যাখ্যান করে।

(১৪) সুন্নাতের অপমৃত্যু : মুসলিম সমাজে যখন কোন বিদ‘আত চালু হয় তখন সেখান থেকে সে পরিমাণ সুন্নাত বিলুপ্ত হয়। আর প্রচলিত বিদ‘আতই মানুষের নিকট সুন্নাত হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। যেমন- ফরয ছালাতের পরে সম্মিলিতভাবে হাত তুলে মুনাজাত বর্তমান সমাজে বহুল প্রচলিত একটি বিদ‘আত। যার মাধ্যমে কুরআন ও ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত ফরয ছালাতের পরে পঠনীয় সুন্নাতী দো‘আসমূহের বিলুপ্তি ঘটেছে। ফরয ছালাতের পরে রাসূল (ছাঃ) যে দো‘আগুলো পাঠ করেছেন এবং ছাহাবায়ে কেরামকে শিক্ষা দিয়েছেন তা পাঠ করতে হ’লে ন্যূনতম ১০ মিনিট সময়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু সম্মিলিতভাবে হাত তুলে মুনাজাতের মত বিদ‘আতের মাধ্যমে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই মুনাজাতের পরিসমাপ্তি ঘটে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই তোমরা আমার (মৃত্যুর) পরে তোমাদের শরী‘আতকে এমন অবস্থায় পাবে- যখন মানুষ সুন্নাতকে বিলুপ্ত করবে, বিদ‘আত সৃষ্টি করবে এবং ছালাতের সময় ছালাত আদায় না করে দেরী করে আদায় করবে। তখন ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমি যদি তাদেরকে পাই তাহ’লে আমি কী করব? তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, আল্লাহর অবাধ্যদের কোন আনুগত্য নেই। এ কথা তিনি তিনবার বললেন’।[22]

অন্য হাদীছে এসেছে,مَا ابْتَدَعَ قَوْمٌ بِدْعَةً فِيْ دِيْنِهِمْ إِلاَّ نَزَعَ اللهُ مِنْ سُنَّتِهِمْ مِثْلَهَا، ثُمَّ لاَ يُعِيْدُهَا إِلَيْهِمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ- ‘যখন কোন জাতি তাদের দ্বীনের মধ্যে বিদ‘আত সৃষ্টি করে তখন আল্লাহ তাদের মধ্যে থেকে সে পরিমাণ সুন্নাত বিদূরিত করেন। অতঃপর তা ক্বিয়ামত পর্যন্ত তাদের নিকট ফিরিয়ে দেন না’।[23]

উপসংহার : বিদ‘আতী আমল সুশোভিত মনে হলেও এটি একটি মারাত্মক অপরাধ। এর পরিণতিও অত্যাধিক ভয়াবহ। আল্লাহ্ আমাদেরকে যাবতীয় বিদ‘আত থেকে মুক্ত থাকার তাওফীক দান করুন। আমীন!

[লেখক : কেন্দ্রীয় সভাপতি, বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ]

[1]. তাফসীর ইবনু কাছীর ২/৫৯১ পৃঃ।

[2]. আশরাফ ইবরাহীম কাতকাত, আল-বুরহানুল মুবীন ফিত তাছাদ্দী লিল বিদ্ই ওয়াল আবাতীল ১/৪২ পৃঃ।

[3]. সিলসিলা ছহীহা হা/ ১৮০৩; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী হা/১৩৮২৫, ইমাম শাফেঈ, কিতাবুর রিসালাহ, ১৫ পৃঃ।

[4]. মুসনাদে আহমাদ হা/২১৬৮৯, ২১৭৭০, ২১৭৭১, ২১৩৯৯, ৫ম খন্ড, পৃঃ ১৬৩; ছহীহাহ হা/১৮০৩।

[5]. তিরমিযী হা/২৬৭৬; ইবনু মাজাহ হা/৪২; মিশকাত হা/১৬৫, বঙ্গানুবাদ (এমদাদিয়া) ১/১২২ পৃঃ; আলবানী, সনদ ছহীহ।

[6]. ইবনু আব্দুল বার্র, জামেউ বায়ানি ইলমি ওয়া ফাযলিহি, ১৮১০ পৃঃ।

[7]. তদেব।

[8]. মুল্লা আলী ক্বারী, শাম্মুল আওয়ারেয ফী যাম্মির রাওয়াফেয ১/১৪৫।

[9]. জামেউ বায়ানি ইলমি ওয়া ফাযলিহি, ১৮১০ পৃঃ।

[10]. তাফসীর ইবনু কাছীর ৪/১৫৭ পৃঃ; সূরা আহকাফ ১১ নং আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।

[11]. আবু ইসহাক আশ-শাত্বেবী, আল-ই‘তিছাম ১/৪৯ পৃঃ।

[12]. ইবনুল কাইয়িম, মাদারিকুছ ছালেহীন ১/২২৩ পৃঃ।

[13]. শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়া, ইকতিযাউছ ছিরাতিল মুসতাকীম লি মুখালাফাতি আছহাবীল জাহীম ১/২১৭-২১৮ পৃঃ।

[14]. বুখারী হা/২৬৯৭; মুসলিম হা/১৭১৮; মিশকাত হা/১৪০।

[15]. বুখারী ৯৬/২০ নং অধ্যায়, বঙ্গানুবাদ (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) ৬/৪৬৭ পৃঃ; মুসলিম হা/১৭১৮।

[16]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৯০০৯; ইবনুল কাইয়িম, মাদারিজুস সালেহীন ১/৩২২ পৃঃ।

[17]. তবারানী, ছহীহ তারগীব হা/৫৪; সিলসিলা ছহীহা হা/১৬২০।

[18]. বুখারী হা/৬৫৮৩-৮৪; মুসলিম হা/২২৯০; মিশকাত হা/৫৫৭১।

[19]. মুসলিম হা/২৬৭৪; মিশকাত হা/১৫৮।

[20]. মুসলিম হা/১০১৭; মিশকাত হা/২১০।

[21]. বুখারী হা/৩১৭২; মুসলিম হা/১৩১৭; মিশকাত হা/২৭২৮।

[22]. মুসনাদে আহমাদ হা/৩৭৯০; সিলসিলা ছহীহা হা/২৮৬৪।

[23]. সুনানুদ দারেমী হা/৯৮; মিশকাত হা/১৮৮; আলবানী, সনদ ছহীহ, আত-তাওয়াস্সুল আনওয়াউহু ওয়া আহকামুহু ১/৪৬ পৃঃ।



বিষয়সমূহ: বিদআত
আরও