জ্ঞান আবদ্ধ নয়, সবার জন্য উন্মুক্ত

মুহাম্মাদ আরীফুল ইসলাম 412 বার পঠিত

জ্ঞান কুক্ষিগত করে রাখার বস্ত্ত নয়। একজন ব্যক্তি বা একটি গোষ্ঠীর কাছে সীমাবদ্ধ জ্ঞান প্রসার লাভের সুযোগ পায় না। বরং যে কোন মুহূর্তে বিলুপ্তি বা বিকৃতির আশংকায় থাকে। এতে সমাজের সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে স্বার্থান্বেষী জ্ঞানপাপীরা তাদের উপর প্রভুত্ব করার প্রয়াস পায়। যুগে যুগে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করেই ধর্মীয় নেতাগণ সমাজের উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। সাধারণ মানুষের কাছে ধর্মীয় জ্ঞানচর্চাকে উপস্থাপন করেছেন সুউচ্চ পর্বতের ন্যায়। আর তারা আরোহণ করেছেন সেই পর্বতের চূড়ায়। জ্ঞানকে মুঠোবন্দী করে রাখার এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় জ্ঞানের কেন্দ্রীকরণ। অন্যদিকে ইসলাম জ্ঞানকে করেছে সর্বজনীন ও সহজলভ্য। যে কেউ চেষ্টা করলে তা অর্জন করতে পারে এবং ঠিক-বেঠিক যাচাই করতে পারে। একে বলা হয় জ্ঞানের বিকেন্দ্রীকরণ।

খৃষ্টধর্মে জ্ঞানের কেন্দ্রীকরণ ও তার পরিণতি : একটা সময় ছিল যখন বাইবেলের ভাষান্তর নিষিদ্ধ ছিল। ১৫২৬ সালে হিব্রু এবং গ্রীক ভাষা থেকে প্রথম ইংরেজিতে বাইবেল অনুবাদ করেন উইলিয়াম টিন্ডেল। এজন্য ১৫৩৬ সালে উইলিয়াম টিন্ডেলকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়! অপরাধ এরকম ধর্মীয় কিতাব তিনি সাধারণ মানুষের ভাষায় প্রকাশ করেছেন। সাধারণ মানুষ ধর্মীয় জ্ঞানচর্চা করলে পোপ-বিশপরা কেন আছেন? উইলিয়াম টিন্ডেলের এই হত্যাকান্ড বুঝতে হলে আরেকটু পেছনে যেতে হবে। টিন্ডেলকে হত্যা করার প্রায় তিনশো বছর আগে ১২৩৪ সালে Council of Tarragona -তে এক স্প্যানিশ বিশপ ঘোষণা করেন, ‘সাধারণ মানুষের কাছে বাইবেলের কোন কপি থাকতে পারবে না। যদি কারো কাছে থাকে, তাহ’লে আটদিনের মধ্যে সেগুলো পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এই নির্দেশ যদি কেউ অমান্য করে, তাহ’লে সে ধর্মচ্যুত বলে গণ্য হবে’।[1]

এই দু’টি ঘটনার মধ্যবর্তী সময়ে যদি দেখি, তাহ’লে দেখা যায় ১৪০৮ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়- ‘অনুমতি ছাড়া নতুন করে কেউ বাইবেল অনুবাদ করতে পারবে না’।[2] অথচ উইলিয়াম টিন্ডেল অনুমতি চাইলে তাকে অনুমতি দেওয়া হয়নি, তিনি ইংল্যান্ড থেকে জার্মানি যান বাইবেল অনুবাদ করার জন্য। লুকিয়ে লুকিয়ে সেই অনুবাদ প্রকাশ করেন। কিন্তু যখন ধরা পড়েন, তখন তাকে হত্যা করা হয়।

উইলিয়াম টিন্ডেল মৃত্যুর আগে এক পাদ্রীকে বলেছিলেন, If God spare my life many years, I will cause a boy that drives the plough shall know more of scriptures than you do‘ইশ্বর যদি আমাকে দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখেন, তাহ’লে আমি বাইবেলকে এতোটাই সহজসাধ্য করবো যে, একটা রাখাল বালকও তোমাদের চেয়ে বেশী ধর্মজ্ঞান রাখবে’।[3]

জ্ঞান আবদ্ধ নয়, সবার জন্য উন্মুক্ত

-মুহাম্মাদ আরীফুল ইসলাম

দীর্ঘদিন চার্চের যাজকরা জ্ঞানকে নিজেদের কাছে কুক্ষিগত করে রেখেছিল। তারা ছাড়া আর কাউকে ধর্মীয় কিতাবাদি পড়তে দিতো না। ইশ্বরের সাথে সম্পর্ক রাখতে তারা নিজেদেরকে মাধ্যম হিসেবে উপস্থাপন করতো। তারা প্রচার করতো- সাধারণ মানুষ সরাসরি গডের কাছে কিছু চাইতে পারবে না, অবশ্যই চার্চের বিশপের মাধ্যমে চাইতে হবে। এমনকি চার্চ কর্তৃপক্ষ পাপমোচনের ছাড়পত্র বিক্রি শুরু করল, যা Indulgence নামে পরিচিত। তারা মানুষকে বুঝাত, ‘গডের কাছে সরাসরি ক্ষমা চাওয়া যায় না। গডের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হলে ক্ষমার ছাড়পত্র কিনতে হবে’।[4]তখন স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে চার্চ ছিল একটি মধ্যস্বত্বভোগী প্রতিষ্ঠান, যেমন বর্তমানে মুসলমানদের মধ্যে বর্তমানে প্রচলিত পীর-মাযার ব্যবসা। চার্চ ইতিহাসের এই অধ্যায়গুলো পড়তে গেলে মনে পড়ে আল্লামা ইকবালের একটা কবিতার অনুবাদ-

কিষাণ মজুর পায় না যে মাঠে শ্রমের ফল

সে মাঠের সব শস্যে আগুন লাগিয়ে দাও।

স্রষ্টা ও তার সৃষ্টির মাঝে কেন আড়াল?

মধ্যবর্তী মোল্লাকে আজ হাঁকিয়ে দাও।

মধবর্তী মোল্লাকে হাঁকিয়ে দেবার বেলায় সবচেয়ে সফল ভূমিকা পালন করেছিলেন মার্টিন লুথার। University of Wittenberg–এ তিনি টাঙ্গিয়ে দেন তার বিখ্যাত ‘Ninety-five Theses’। এই থিসিসের মাধ্যমে তিনি চার্চ কর্তৃপক্ষের ঠিকাদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেন এবং এর অসারতা প্রমাণকরেন। প্রায় তের-চৌদ্দশ’ বছরের চার্চের আধিপত্যের বাইরে গিয়ে মার্টিন লুথার যে ধারা সৃষ্টি করেন তা প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলন নামে পরিচিত।

প্রোটেস্ট্যান্ট মুভমেন্ট কতোটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা একটু লক্ষ্য করলেই বুঝা যাবে।অতীতের জর্জ ওয়াশিংটন থেকে বর্তমানের জো বাইডেন পর্যন্ত জিমি কার্টার, বিল ক্লিনটন, থিওডোর রুজভেল্ট, উড্রো উইলসন, রোনাল্ড রিগ্যান, জর্জ ডব্লিউ বুশ, বারাক ওবামাসহ আমেরিকার বেশীরভাগ প্রেসিডেন্ট ছিলেন প্রোটেস্ট্যান্ট। বলা হয়ে থাকে, অ্যামেরিকার একমাত্র ক্যাথোলিক প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন. এফ. কেনেডি।

হিন্দুধর্মে জ্ঞানের কেন্দ্রীকরণ:ধর্মতত্ত্ব ইতিহাসের হালআমলের জনপ্রিয় ইতিহাসবিদ কারেন আর্মস্ট্রং রচিত ‘Buddha’ বইয়ে গৌতম বুদ্ধের জীবনী আলোচনা করতে গিয়ে তিনি তৎকালীন হিন্দু সমাজের জ্ঞানচর্চা আলোচনা করেন।তিনি লিখেন, ‘উপমহাদেশে সেসময় লেখার প্রচলন না থাকায় বেদ লেখা হয়নি। ফলে ব্রাহ্মণদের দায়িত্ব ছিলএইসব চিরন্তন সত্য মুখস্থ করে প্রজন্ম পরস্পরায় সংরক্ষণ করা। যেহেতু এই পবিত্র জ্ঞান মানুষের জগৎকে ব্রহ্মার সংস্পর্শে পৌঁছে দিত, সেহেতু শত শত বছরের পরিক্রমায় আদি আর্য গোত্রসমূহের ভাষা সংস্কৃতি স্থানীয় কথ্য ভাষার কাছে হার মানে। ফলে তা ব্রাহ্মণ ছাড়া অন্য সবার কাছে দুর্বোধ্য হয়ে ওঠে। প্রকৃতপক্ষে এটাই অনিবার্যভাবে ব্রাহ্মণদের ক্ষমতা ও মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছিল। সমগ্র জাতির অস্তিত্ব বজায় রাখে যে বেদ, সেখানে উল্লিখিত উৎসের উপাচার কেবল তাঁরাই জানতেন’।[5]

উত্তরাধিকার সূত্রে পিতা হ’তে পুত্র এই দায়িত্ব লাভ করত। রাজতন্ত্রে রাজার ছেলে রাজা হওয়ার মতো পুরোহিতের ছেলেই কেবল পুরোহিত হ’ত। যে বেদ হওয়ার কথা ছিল সকল হিন্দুর সাথী ও পথনির্দেশক, সেই বেদপুঞ্জীভূতহয়ে যায় নির্দিষ্ট একটা শ্রেণীর কাছে। তারা ব্যতীত কেউ বেদ (শ্রুতি) পড়া তো দূরে থাক, স্পর্শ করাকে পাপ হিসাবে বিবেচনা করা হ’ত। রাষ্ট্রক্ষমতায় যেমন স্বৈরাচারী ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটে, ধর্মীয় জ্ঞানের ক্ষেত্রেও তেমনি পুরোহিতরা‘Sole Authority’ (একক কর্তৃপক্ষ) হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।

ইসলামে জ্ঞানের বিকেন্দ্রীকরণ : অন্যান্য ধর্মের চেয়ে ইসলামের সৌন্দর্য জায়গা হ’লইসলাম সবাইকে জ্ঞানার্জনে উৎসাহিত করে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয’।[6]ইসলাম জ্ঞান সমুদ্রের প্রতিটি ফোঁটা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,‌بَلِّغُوا ‌عَنِّي ‌وَلَوْ ‌آيَةً وَحَدِّثُوْا عَنْ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ وَلَا حَرَجَ وَمَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ ‘তোমরা আমার পক্ষ থেকে একটা আয়াত হলেও পৌঁছে দাও। আর তোমরা বনূ ইস্রাঈলের থেকে বর্ণনা করলেও কোন দোষ নেই। যে কেউ আমার উপর মিথ্যারোপ করল, সে তার ঠিকানা জাহান্নামে করে নিল’।[7] হাদীছে লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই, ইসলাম জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি মিথ্যারোপ ও অপপ্রচারের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ার উল্লেখ করেছে। ফলে নিখুঁত সঠিক জ্ঞানবিস্তার লাভ করেছে। এছাড়া বিদায় হজ্জ্বের ভাষণে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, لِيُبَلِّغِالشَّاهِدُمِنْكُمُالْغَائِبَ‘তোমাদের মধ্যে উপস্থিতগণ অনুপস্থিতদের (আজকের বক্তব্য) নিকট পৌঁছে দিবে’।[8]

জ্ঞানার্জনের গুরুত্বের একটা বাস্তব উদাহরণ দেখতে পাই বদর যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে। বদর যুদ্ধের কয়েকজন যুদ্ধবন্দীর মুক্তিপণ দেওয়ার মতো অর্থ ছিল না। কিন্তু তাদের কাছে শিক্ষা ছিল। অন্যদিকে মদীনার বাচ্চারা পড়ালেখা জানত না। ঐসব যুদ্ধবন্দীদেরকে এই শর্তে মুক্তি দেওয়া হয় যে তারা প্রত্যেকে দশজন শিশুকে পড়ালেখা শেখাবে। শিশুরা পড়ালেখা শিখলে সেটাই হবে তাদের মুক্তিপণ।[9]

সামগ্রিকভাবে বলা যায়, ইসলাম জ্ঞানকে বিকেন্দ্রীকরণ করেছে, সমাজের সবার মধ্যে জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে বলেছে, শিক্ষা দিতে বলেছে। তবে সমাজের সবাই সমান জ্ঞান অর্জন করতে পারবে না এটাই স্বাভাবিক। কেউ কেবল প্রয়োজনীয় বিধানগুলো জেনে আমল করবেন। আর কেউ অধিক জ্ঞান অর্জন করে কুরআন-হাদীছ বিশ্লেষণ করবেন। তারা গভীর জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে সত্য-মিথ্যা যাচাই করবেন ও সমসাময়িক পরিস্থিতিতে জাতির পথনিদের্শ করবেন। অন্যরা তাদের প্রয়োজনীয় বিধান জানার জন্য তাদের কাছে যাবেন এবং আলেমরা তাদের শিক্ষা দিবেন। আল্লাহ বলেন,وَمَاكَانَالْمُؤْمِنُوْنَلِيَنْفِرُوْاكَافَّةًفَلَوْلَانَفَرَمِنْكُلِّفِرْقَةٍمِنْهُمْطَائِفَةٌلِيَتَفَقَّهُوْافِيْالدِّيْنِوَلِيُنْذِرُوْاقَوْمَهُمْإِذَارَجَعُوْاإِلَيْهِمْلَعَلَّهُمْيَحْذَرُوْنَ- ‘আর মুমিনদের এটা সঙ্গত নয় যে, সবাই একত্রে (জিহাদে) বের হবে। অতএব তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হয় না, যাতে তারা দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করে এবং ফিরে এসে নিজ কওমকে (আল্লাহর নাফরমানী হ’তে) ভয় প্রদর্শন করে, যাতে তারা সাবধান হয়’(সূরা তাওবাহ ৯/১২২)

যারা নিজেদের জীবনকে জ্ঞানার্জনের পেছনে ব্যয় করেছেন, রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছ অনুযায়ী তাঁরা পূর্ণিমার চাঁদের মতো। রাতের আকাশের ঝিলিমিলি তারার মতো তাঁরা ইসলামের ইতিহাসে ইজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে আছেন। তাদের প্রত্যেকেই আমাদের কাছে পরম সম্মানিত। তবে ইসলামের ইতিহাস জানা কেউ কখনো তাদের উপর আধিপত্যবাদের অপবাদ দিতে পারবে না। প্রটেস্ট্যান্ট মুভমেন্টের মত কোন পরিবার বা গোষ্ঠীকে ইসলামী জ্ঞানের একক ঠিকাদার বলে অভিহিত করার সুযোগ নেই। কারণ তাঁদের জ্ঞানচর্চার উদ্দেশ্য আধিপত্য-কায়েম ছিল না, তাঁদের জ্ঞানচর্চার উদ্দেশ্য ছিল সমাজ সংস্কারের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। ফতোয়া দিতে গিয়ে তাঁরা লোকে কিসে তুষ্ট হবে, খুশি হবে এই চিন্তা করেননি। যার ফলে, তাঁদের মেথোডোলজি, তাঁদের ফতওয়া, সময়কে অতিক্রম করে আজও প্রাসঙ্গিক।

স্বর্ণযুগের আলেমগণ জ্ঞান-গরিমায় যেমন শ্রেষ্ঠ ছিলেন, আদব-আখলাকের বেলায়ও ছিলেন শ্রেষ্ঠ। তাঁরা কখনো একে অন্যের অন্ধ অনুকরণ করতেন না। একজন আরেকজনের সাথে কত-শতমতভেদ করেছেন, তবুও তাঁরা একজন আরেকজনকে সম্মান করতেন। আদাবুল ইখতিলাফ(Ethics of disagreements) মেনেই তাঁরা আলোচনা-সমালোচনা করেছেন।

আমাদের সালাফগণের একটি বড় বৈশিষ্ট্য ছিল তাদের বিনয়। তারা কখনো নিজের জ্ঞান যাহির করে সম্মান লাভের চেষ্টা করতেন না। বরং কোন বিষয়ে স্পষ্ট জ্ঞান না থাকলে জানি না বলাই ছিল তাদের স্বভাব। হায়ছাম ইবনু জামীল (রহঃ) বলেন, ‘একদা আমি ইমাম মালিকের সাথে ছিলাম। এসময় তাঁকে চল্লিশটি প্রশ্ন করা হয়। আমি শুনেছি তিনি এর মধ্যে বত্রিশটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, আমি জানি না(তারতীবুল মাদারিক ওয়া তাক্বরীবুল মাসালিক)

একথা সত্য যে, যুগে যুগে কিছু লেবাসধারী স্বার্থান্বেষী আলেম মানুষের সরলতাকে পুঁজি করে ফায়দা লুটার চেষ্টা করেছে। তারা আল্লাহ ও বান্দার মাঝে সাত সমুদ্র দুরত্ব স্থাপন করেছে। আর নিজেরা খৃষ্টান পোপদের মত নিষ্পাপ মাঝি সেজে অনুসারীদের সমুদ্র পার করার ঠিকাদারি নিয়েছে। কিন্তু এটাকে কখনোই ইসলামের প্রকৃত বিধান বা আলেমদের সামগ্রিক রূপ বলা যাবে না।

উপসংহার : জ্ঞান আল্লাহর দেওয়া নে‘মত। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তা দান করতে পারেন। এজন্য সকলের জন্য জ্ঞানচর্চার দুয়ার খোলা রাখতে হবে। আবার সকলে সমান জ্ঞান লাভ করবে না এটাও চিরন্তন। এজন্য সকলকে তার জ্ঞান অনুযায়ী সম্মান দিতে হবে এবং অজানাকে জানার সুযোগ করে দিতে হবে। অন্যথায় পুরোহিত-পূজারীর মত আলেমদের সাথে আম মানুষদের দুরত্ব তৈরী হবে। শুরু হবে আশরাফ-আতরাফের দ্বন্দ্ব। যা কখনোই কাম্য নয়।

[লেখক : প্রিন্সিপাল, বেংহাড়ী মৌলভীপাড়া দারুস সালাম ক্বওমী মাদ্রাসা, পঞ্চগড়]


[1].D. Lortsch, Historie de la Bible en France, 1910, page 14.

[2]. Smyth, John Paterson. How We Got Our Bible: An Answer to Questions Suggested by the Late , page 56–72

[3].John Foxe, Actes and Monuments of these Letter and Perillous Dayes (London: John Day, 1563), page 570.

[4].Peters, Edward (2008). A Modern Guide to Indulgences: Rediscovering This Often Misinterpreted Teaching, page 13.

[5].কারেন আর্মস্ট্রং, বুদ্ধ, রোদেলা প্রকাশনী, ৩৮পৃষ্ঠা।

[6].ইবনু মাজাহ হা/২২৪।

[7].বুখারী হা/৩৪৬১।

[8].বুখারী হা/১৯৫।

[9].ছফিউর রহমান মোবারকপূরী, আর রাহীকুল মাখতূম, আল-কুরআন একাডেমী লন্ডন, ২৩৬ পৃষ্ঠা।



আরও