পর্ণোগ্রাফীর আগ্রাসন ও তা থেকে মুক্তির উপায় (৪র্থ কিস্তি)

মফীযুল ইসলাম 1826 বার পঠিত

অনর্থক রাত্রি জাগরণ :

আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে আমাদের রাত্রি জাগরণ ও সালাফে-ছালেহীনের রাত্রি জাগরণের মধ্যে রয়েছে আকাশ পাতাল ব্যবধান। তারা রাত জেগে জেগে কুরআন পড়তেন, তাহাজ্জুদ পড়তেন। আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করতেন। জান্নাত লাভের আশায় এবং জাহান্নামের ভয়ে শঙ্কিত হয়ে অশ্রু ফেলতেন। তারা রাত্রিকে ভাগ করে নিতেন নিজের আত্মার জন্য এবং পরিবারের জন্য। তাদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে মহান আল্লাহ বলেন, تَتَجَافَى جُنُوبُهُمْ عَنِ الْمَضَاجِعِ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ خَوْفًا وَطَمَعًا وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُونَ ‘তারা তাদের (দেহের) পার্শ্বগুলো বিছানা থেকে আলাদা করে (জাহান্নামের) ভীতি ও (জান্নাতের) আশা নিয়ে তাদের প্রতিপালককে ডাকে আর আমি তাদেরকে যে রিযক দিয়েছি তা থেকে (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে’ (সাজদাহ ৩২/১৬)

যে সময় মহানবী (ছাঃ), ছাহাবীগণ, সালাফে-ছালেহীন আল্লাহর ইবাদতে মশুগুল থাকতেন, জাহান্নামের ভয়ে প্রকম্পিত হ’তেন, সে সময় আজ অসংখ্য মানুষ মোবাইল, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও টিভি নিয়ে নির্ভয়ে নোংরামি, অশ্লীলতা, যৌনতা নিয়ে ডুবে থাকছে। হে মানুষ! আল্লাহকে ভয় কর, স্মরণ কর মরণকে যে কোন সময় তা তোমাকে গ্রাস করতে পারে। সিনেমা, নাটক, নগ্নতা, অশ্লীলতা দেখতে দেখতে যদি তোমার মরণ হয় তাহ’লে কবরে, হাশরে তোমার অবস্থা কি হবে তা কখনো ভেবেছ? ঐ শোন আল্লাহর বাণী, وَمَنْ جَاءَ بِالسَّيِّئَةِ فَكُبَّتْ وُجُوهُهُمْ فِي النَّارِ هَلْ تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ- ‘যে কেউ মন্দকাজ নিয়ে উপস্থিত হবে তাকে অধোমুখে অগ্নিতে নিক্ষেপ করা হবে এবং তাদেরকে বলা হবে, তোমরা যা করতে কেবল তারই প্রতিফল তোমরা ভোগ করবে’ (নামল ২৭/৯০)।  

লজ্জাহীনতার প্রসার :

পর্ণোগ্রাফী মানুষকে লজ্জাহীন করে তোলে। আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেন,  إِذَا لَمْ تَسْتَح فَاصْنَعْ مَا شِئْتَ ‘তোমার লজ্জা না থাকলে যা মন চায় তা করতে পার’।[1] 

অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) বলেন, الْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الإِيمَانِ ‘লজ্জাশীলতা ঈমানের অঙ্গ বা শাখা’।[2]  তিনি আরো বলেন, প্রত্যেক ধর্মে সচ্চরিত্রতা আছে, ইসলামের সচ্চরিত্রতা হ’ল লজ্জাশীলতা।[3] অতএব হে নারী-পুরুষ! লজ্জাশীলতা অবলম্বন করে নিজের সম্ভ্রম রক্ষা করো ও নিজেকে সৌন্দর্য মন্ডিত করো। রাসূল (ছাঃ) অন্যত্র বলেন, مَا كَانَ الْفُحْشُ فِي شَيْءٍ قَطُّ إِلا شَانَهُ، وَلا كَانَ الْحَيَاءُ فِي شَيْءٍ قَطُّ إِلا زَانَهُ- ‘অশ্লীলতা (নির্লজ্জতা) যে বিষয়েই থাকে, সে বিষয়কে তা সৌন্দর্যহীন করে ফেলে। আর লজ্জাশীলতা যে বিষয়েই থাকে, সে বিষয়কে তা সৌন্দর্যময় করে তোলে’।[4]

বিজাতির অনুসরণ :

বর্তমান বিশ্বে অধিকাংশ মুসলিম আজ কোনো না কোনভাবে কাফির-মুশরিক তথা ইহুদী, খ্রিষ্টান ও অগ্নিপূজকদের হুবহু অনুসারী। তাদের চাল-চলন, লেবাস-পোশাক ও আচার ব্যবহার সবই প্রায় কাফির-মুশরিকদের ন্যায়। তাদের হুবহু অনুসরণের অন্যতম কারণ হ’ল মিডিয়া। মিডিয়া বা টিভিতে, ইন্টারনেটে তাদেরকে যা করতে দেখছে মুসলিমরাও আজ তাই করছে। অমুসলিম নারীরা নগ্ন-অর্ধনগ্ন পোশাক পরছে। মুসলিম নারীরাও আজ অনুরূপ পোশাক পরছে। তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যেমন সুদভিত্তিক, মুসলমানদের ব্যবসা-বাণিজ্যও তেমনি সুদভিত্তিক। যেনা- ব্যভিচার যেমন তাদের কাছে পাপের জিনিস নয়, তেমনি মুসলমানদের নিকটও তা অনুরূপ হয়ে উঠছে। বিজাতির অনুকরণের ফলে রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শ ভুলে মুসলিম জাতি যেমন পৃথিবীতে লাঞ্ছিত, অপমানিত, অপদস্ত ও মূল্যহীন হয়েছে; তেমনি পরকালে ও তাদের মত কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হ’তে হবে। তার জ্বলন্ত প্রমাণ হলো রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ ‘যে ব্যক্তি যে জাতির অনুকরণ করবে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই অন্তর্ভুক্ত’।[5] অন্যত্র আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেন,لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا لاَ تَشَبَّهُوا بِالْيَهُودِ وَلاَ بِالنَّصَارَى ‘সেই ব্যক্তি আমার দলভুক্ত নয়, যে ব্যক্তি আমাদেরকে ছেড়ে অন্য কারো সাদৃশ্য অবলম্বন করে; তোমরা ইহুদী, খ্রিষ্টানদের অনুসরণ কর না’।[6] এক্ষেত্রে আল্লাহর রাসূল যা ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন, তা-ই ঘটছে। তিনি বলেন, لَتَتَّبِعُنَّ سُنَنَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ شِبْرًا بِشِبْرٍ وَذِرَاعًا بِذِرَاعٍ وَبَاعًا فَبَاعًا حَتَّى لَوْ دَخَلُوا جُحْرَ ضَبٍّ لَدَخَلْتُمُوهُ قَالُوا وَمَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَهْلُ الْكِتَابِ قَالَ فَمَن-ْ ‘অবশ্যই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসারী হবে। হাতে-হাতে, বিঘতে-বিঘতে তথা হুবহু-অবিকল। এমনকি তারা যদি কোন গুই সাপের গর্তে ঢুকে পড়ে তা হ’লে তোমরাও তাতে ঢুকে পড়বে। আমরা বললাম হে আল্লাহর রাসূল! তারা কি ইহুদী ও খ্রিষ্টান? তিনি বললেন, তারা নয় তো আর কারা’?[7] 

অবসর সময়ের অপব্যবহার :

আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেন,  نِعْمَتَانِ مَغْبُونٌ فِيهِمَا كَثِيرٌ مِنْ النَّاسِ الصِّحَّةُ وَالْفَرَاغُ- ‘দু’টি নে‘মত রয়েছে, যে দু‘টিতে বহু মানুষ ধোঁকায় পতিত হয়েছে ১. শারীরিক সুস্থতা এবং ২. অবসর’।[8] অবসর বা ফ্রি টাইমে যারা পর্ণোগ্রাফী দেখে, চা স্টল-বাযারে বসে গল্পগুজব করে কাটাচ্ছে নিঃসন্দেহে তারা ধোঁকায় পড়ে আছে। আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেন, اغْتَنِمْ خَمْسًا قَبْلَ خَمْسٍ : حَيَاتَكَ قَبْلَ مَوْتِكَ، وَفَرَاغَك قَبْلَ شَغْلِكَ، وَغِنَاك قَبْلَ فَقْرِكَ، وَشَبَابَك قَبْلَ هَرَمِكَ، وَصِحَّتَكَ قَبْلَ سَقَمِك- ‘তুমি পাঁচটি বস্ত্তর পূর্বে পাঁচটি জিনিসকে গনীমত মনে কর, ১. মৃত্যুর পূর্বে তোমার জীবনকে, ২. ব্যস্ততার পূর্বে অবসর সময়কে, ৩. দরিদ্রতার পূর্বে সচ্ছলতাকে, ৪. বার্ধক্য আসার পূর্বে যৌবনকে ৫. এবং পীড়িত হওয়ার পূর্বে সুস্থতাকে’ ।[9]

মহান আল্লাহ বলেন,

فَإِذَا فَرَغْتَ فَانْصَبْ  وَإِلَى رَبِّكَ فَارْغَبْ-

অতএব যখন অবসর পাও ইবাদতের কষ্টে রত হও এবং তোমার রবের দিকে রুজূ‘ হও’ (ইনশিরাহ ৯৪/৭-৮)। কাজেই মুসলিম কখন অবসর সময় বিলাসিতায় কাটাতে পারে না।

মহিলাদের কৃত্রিম রূপচর্চা :

টিভিতে, ইন্টারনেটে, প্রিণ্ট মিডিয়ায় বিভিন্ন মডেলের নারীদের রূপচর্চা দেখে তাদের মত সাজ-সজ্জা গ্রহণের প্রবণতা এদেশের সরল-অবলা নারীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে দানা বেঁধে উঠছে। বিজাতির অনুকরণে সাজ-সজ্জা মুসলিম নারীদের জন্য বৈধ নয়। তবে স্বাভাবিক সাজ-সজ্জা নারীদের জন্য জায়েয। আর তা হ’তে হবে এক মাত্র তার স্বামীর জন্য। যেমন- মা আয়েশা (রাঃ) বলেন,  دَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَرَأَى فِى يَدِى فَتَخَاتٍ مِنْ وَرِقٍ فَقَالَ  مَا هَذَا يَا عَائِشَةُ. فَقُلْتُ صَنَعْتُهُنَّ أَتَزَيَّنُ لَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ. ‘একদা রাসূল (ছাঃ) আমার নিকট উপস্থিত হয়ে আমার হাতে রূপার বড় বড় আংটি দেখতে পান এবং বলেন, হে আয়েশা এটা কী? আমি বললাম, আপনার জন্য সৌন্দর্য বর্ধনের নিমিত্তে তা তৈরি করেছি’।[10] আজকে যে সকল নারীরা তার স্বামীর জন্য না সেজে বিবাহের অনুষ্ঠানে, উদ্যান-পার্কে ঘুরতে, মার্কেটে যাওয়ার সময় নগ্ন-অর্ধনগ্ন হয়ে সজ্জিত হচ্ছে, তারা নিঃসন্দেহে জঘন্য পাপের জড়িয়ে পড়ছে। যে পাপ যেনা-ব্যভিচারের মত ভয়ঙ্কর। রূপচর্চার জন্য যত্র-তত্র শহরে-গ্রামে গড়ে উঠেছে বিউটি পার্লার। যেখানে চলছে অনৈতিক সাজ-সজ্জার রমরমা ব্যবসা। আমরা মুসলিম নারীদেরকে সর্তক করে বলতে চাই, সেখানে গিয়ে শরীরে উল্কি অঙ্কন করা, নকল চুল লাগানো ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য দাঁত ঘষে ফাঁকা বা সরু করা, ভ্রু-প্লাক করা অভিশপ্ত নারীদের কাজ। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,  لَعَنَ اللَّهُ الْوَاشِمَاتِ وَالْمُسْتَوْشِمَاتِ. قَالَ مُحَمَّدٌ وَالْوَاصِلاَتِ وَقَالَ عُثْمَانُ وَالْمُتَنَمِّصَاتِ ثُمَّ اتَّفَقَا وَالْمُتَفَلِّجَاتِ لِلْحُسْنِ الْمُغَيِّرَاتِ خَلْقَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ-  ‘আল্লাহর অভিশাপ হোক সেই সব নারীদের উপর যারা দেহাঙ্গে উলকি উৎকীর্ণ করে এবং যারা উৎকীর্ণ করায় মুহাম্মাদ (রাঃ) বলেন, (ওয়াছিলাত) আর উছমান (রাঃ) বলেন, (মুতানাম্মিছাত) অতঃপর তারা ঐক্যমত পোষণ করেন। এবং সেসব নারীদের উপর যারা ভ্রু চেঁছে সরু (প্লাক) করে। যারা সৌন্দর্যের মানসে দাঁত ফাঁকা করে। যারা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন আনে’।[11]

দুনিয়ার ভোগ-বিলাস ও মুসলমানদের বিপর্যয় :

আল্লাহ বলেন, ‘যারা (মৃত্যুর পর আমার সাথে সাক্ষাতের প্রত্যাশা করে না, যারা এ পার্থিব জীবন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে এবং এখানকার সবকিছু নিয়েই তৃপ্তিবোধ করে, (সর্বোপরি) যারা আমার নিদর্শনাবলী থেকে অমনোযোগী থাকে, তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম, এ হচ্ছে তাদের সেই কর্মফল, যা তারা দুনিয়ার জীবনে অর্জন করেছিল’ (ইউনুস ১০/৭-৮)

বহু পর্ণোভোক্তা আছেন, যারা পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্নীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং সর্বসাধারণ থেকে আড়ালে গিয়ে নোংরামি, অশ্লীলতায় লিপ্ত হন। কারণ তারা নোংরামি, অশ্লীলতা দর্শনের কথা জানতে পারলে লজ্জা, লাঞ্ছনা, অপমান সুনিশ্চিত। মহান আল্লাহ বলেন, يَسْتَخْفُونَ مِنَ النَّاسِ وَلَا يَسْتَخْفُونَ مِنَ اللَّهِ وَهُوَ مَعَهُمْ  ‘তারা মানুষকে লজ্জা করে (মানুষের দৃষ্টি থেকে গোপনীয়তা অবলম্বন করে)। কিন্তু আল্লাহকে লজ্জা করে না (তার দৃষ্টি থেকে গোপনীয়তা অবলম্বন করতে পারে না) অথচ তিনি তাদের সঙ্গে থাকেন‘ (নিসা ৪/১০৮)

অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন,  وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهِ نَفْسُهُ وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ ‘আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি, আর তার প্রবৃত্তি তাকে নিত্য নতুন কি কুমন্ত্রণা দেয় তাও আমি জানি। আমি তার গলার শিরা থেকেও নিকটবর্তী (ক্বাফ ৫০/১৫)। অতএব মানুষ দুনিয়ার সকল কিছু লুকিয়ে যাই করুক না কেন আল্লাহ সব কিছুরই খবর রাখেন। তিনি আরো বলেন, يَعْلَمُ خَائِنَةَ الْأَعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُورُ ‘তিনি চক্ষুর অপব্যবহার বা গোপনচাহনি এবং অন্তরের গোপন বস্তু সম্পর্কেও অবগত’ (মুমিন ৪০/১৯)। আল্লাহ  যেহেতু সবকিছু দেখেন কাজেই তাঁকে অধিক ভয় করা এবং লজ্জা করা উচিত।

আজ পর্ণোগ্রাফী ও দুনিয়ার ভোগ-বিলাস অধিকাংশ মানুষকে তার কৃতকর্ম সম্পর্কে বেপরোয়া করে তুলছে। মহান আল্লাহ বলেন, أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ- حَتَّى زُرْتُمُ الْمَقَابِرَ- ’অধিক (পার্থিব) সুখ সম্ভোগ লাভের পারস্পরিক প্রতিযোগিতা তোমাদেরকে ততধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে ভুলিয়ে রেখেছে। এমন কি (এমত অবস্থাতেই) তোমরা কবরে এসে পড়বে’ (তাকাছুর ১০২/১-২)

যারা অশ্লীলচিত্রের প্রভাবে স্ব-স্ব কৃতকর্ম সম্পর্কে উদাসীন থাকে তারাই বড়ই যালেম। মহান আল্লাহ আরো বলেন,  وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ ذُكِّرَ بِآَيَاتِ رَبِّهِ فَأَعْرَضَ عَنْهَا وَنَسِيَ مَا قَدَّمَتْ يَدَاه-ُ ‘কোন ব্যক্তিকে তার প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী শুনিয়ে দেয়ার পর যদি তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং তার কৃতকর্মসমূহ ভুলে যায় তবে তার চেয়ে অধিক যালেম আর কে হতে পারে? (কাহাফ ১৮/৫৭)। মহান আল্লাহ অন্যত্র বলেন,  إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الظَّالِمِينَ ’নিশ্চয়ই আল্লাহ যুলুমকারীদেকে ভালোবাসেন না’ ( শূরা ৪২/৪০)। পর্ণোগ্রাফীর ড্রাগে আসক্ত হয়ে অধিকাংশ মুসলমান আজ আল্লাহর স্মরণ থেকে অর্থাৎ  ইবাদত থেকে দূরে থাকছে। অথচ মহান আল্লাহ ক্বিয়ামতের এক বিভীষিকাময় অবস্থা তুলে ধরে বলেন, ‘আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তার জীবিকা হবে সংকীর্ণময় আর তাকে ক্বিয়ামতের দিন উত্থিত করব অন্ধ অবস্থায়। সে বলবে, হে আমার প্রতিপালক! কেন আমাকে অন্ধ করে উঠালে? আমি তো চক্ষুষ্মান ছিলাম। আল্লাহ বলবেন, এভাবেই তো আমার নিদর্শনসমূহ যখন তোমার কাছে এসেছিল তখন তুমি তা ভুলে গিয়েছিলে। আজকের দিনে সেভাবেই তোমাকেও ভুলে যাওয়া হচ্ছে। আমি এভাবেই সীমালঙ্ঘনকারীদের প্রতিফল দিয়ে থাকি’ (ত্ব-হা ২০/১২৪-১২৭)। কাজেই আজ যারা আনন্দ-বিনোদনের নামে আল্লাহকে ভুলে নোংরামি ও অশ্লীলতায় নিমগ্ন আছে, সেই দিন তাদের অবস্থা কত না ভয়াবহ হবে। এরই কারণে মুসলিম জাতির উপর নেমে আসবে শত্রু কর্তৃক নির্যাতন-নিপীড়ন। আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেন,  مَا نَقَضَ قَوْمٌ الْعَهْدَ إِلا سُلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوُّهُمْ - ‘যে জাতি (আল্লাহর) প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে সে জাতির উপরেই তাদের শত্রুকে ক্ষমতাসীন করা হবে’।[12] মুসলমানদের জান ও মালের শত্রু ইহুদী, খ্রিষ্টান ও অমুসলিমরা আজ মুসলমানদের সাহসিকতা, মেধা, বিবেক নাশ করছে। এগুলো মুসলমান জাতিকে ধবংস করার জন্য তাদের মরণাস্ত্রের চেয়ে বেশী কাজ করছে। কাজেই হে মুসলিম জাতি! নোংরামি, অশ্লীলতা থেকে সাবধান হও। তা না হ’লে তারা আমাদের কে রুটির টুকরার মত ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাবে।

রাসূল (ছাঃ) বলেন,  يُوشِكُ الأُمَمُ أَنْ تَدَاعَى عَلَيْكُمْ كَمَا تَدَاعَى الأَكَلَةُ إِلَى قَصْعَتِهَا-   ‘অদূর ভবিষ্যতে সকল বিজাতীয়রা তোমাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবে, যেমন খাবার গ্রহণকারীরা খাবার পাত্রের উপর একত্রিত হয়’।[13]

বর্ষবরণে নির্লজ্জ ও অশ্লীলতার চর্চা :

নারীরা দিন দিন বর্ষবরণে প্রগল্ভ হয়ে উঠছে। ফলে বর্ষবরণে অশ্লীলতার চিত্র প্রকট আকার ধারণ করছে। বর্তমানে ইংরেজি ও বাংলা নববর্ষের চিত্র অত্যন্ত ভয়াবহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে প্রায় সর্বস্তরের মানুষ এ দিনগুলো পালনে উন্মত্ত হয়ে পড়ছে। শালীন  মেয়েরাও অর্ধনগ্ন, অশালীন, অমার্জিত, পোশাক পরে এ দিনগুলোতে ঘর থেকে বের হচ্ছে। অথচ আল্লাহ বলেন, وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى ‘তোমরা নিজেদের ঘরে অবস্থান কর, জাহেলী যুগের মত চোখ ঝলসানো প্রদর্শনী করে বেড়িও না’ (আহযাব ৩৩/৩৩)। আল্লাহর এ নির্দেশ থাকার পরও আল্লাহর এক শ্রেণীর বান্দিরা তথাকথিত পহেলা বৈশাখের ফিনফিনে হলুদ ও সাদা শাড়ি পরে পেট, পিঠ, গলা, বুক বের করে, উটের কুঁজের মতো মাথায় খোপা বেধে, বিউটি পার্লারে গিয়ে রং-বেরংয়ে সেজে ও সেন্ট মেখে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে, স্পট, উদ্যান-পার্কে বেলেল্লাভাবে ঘুরে অশ্লীলতা বিলি করে বেড়াচ্ছে। আর হাযারও পুরুষকে তারা আকৃষ্ট করছে। ফলে তারা যৌন হয়রানী, লাঞ্ছিত, অপমানিত ও সম্ভ্রমহানীর শিকার হচ্ছে। মুক্তমনা বৈশাখী প্রেমীরা লাগামহীনভাবে চলাফেরার কারণে পৃথিবীতে যেমন লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছে পরকালেও তারা কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে। আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ঐ শ্রেণীর নারীদেরকে ব্যভিচারিণী ও জাহান্নামী বলেছেন।  যেমন হাদীছে এসেছে- أَيُّمَا امْرَأَةٍ اسْتَعْطَرَتْ، فَمَرَّتْ بِقَوْمٍ لِيَجِدُوا رِيحَهَا فَهِيَ زَانِيَة-ٌ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘কোন রমণী যদি সুগন্ধি ব্যবহার করে কোন মজলিসের পাশ দিয়ে যায় এই জন্য যেন তারা তার সুবাস পায়, তাহ’লে সে হলো ব্যভিচারিণী’।[14]

তিনি আরো বলেন, صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَمْ أَرَهُمَا قَوْمٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَأَذْنَابِ الْبَقَرِ يَضْرِبُونَ بِهَا النَّاسَ وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيلاَتٌ مَائِلاَتٌ رُءُوسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ الْمَائِلَةِ لاَ يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ وَلاَ يَجِدْنَ رِيحَهَا وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ كَذَا وَكَذَا- ‘দু’শ্রেণীর মানুষ জাহান্নামী। যাদেরকে আমি দেখিনি। তাদের মধ্যে এক শ্রেণীর হচ্ছে এমন লোক যাদের হাতে থাকবে গরুর লেজের মত লম্বা চাবুক। যা দিয়ে তারা  মানুষকে অযথা প্রহার করবে। আর দ্বিতীয় শ্রেণী হচ্ছে এমন মহিলা যারা হবে কাপড় পরিহিতা, অথচ উলঙ্গ। অন্যকে (পুরুষকে) আকর্ষণকারিণী এবং নিজেও হবে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট। তাদের মাথা হবে খুরাসানী উটের ঝুলে পড়া কুঁজের ন্যায়। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এমনকি তার সুগন্ধিও পাবে না। অথচ তার সুগন্ধ এত এত দূর থেকেও পাওয়া যায়’।[15] 

শয়তানী ছলনা বড়ই মারাত্মক :

শয়তান বলেছিল, ‘যাদের কারণে তুমি আমাকে ভ্রষ্ট করলে, আমিও তাদের  জন্য তোমার সরল পথে (গোমরাহ করার জন্য) নিশ্চয় ওঁৎ পেতে থাকব, অতঃপর আমি তাদের সম্মুখ, পশ্চাৎ, ডান ও বাম দিক হতে তাদের নিকট আসব এবং তুমি তাদের অধিকাংশকেই কৃতজ্ঞ পাবে না’ (আ‘রাফ ৭/১৬-১৭)। শয়তানের এই পরিকল্পনা আজ খুবই শক্তিশালীভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সে আদমের সন্তানদেরকে নোংরামি, অশ্লীলতার চার দেওয়ালে আবদ্ধ করে ফেলেছে। যার ফলে বনী আদম ডানে বামে, পশ্চাতে-সামনে যে দিকেই নযর করুক না কেন, শয়তানের জালে ফেঁসে যাচ্ছে। আল্লাহ জাহান্নামী মানুষের কথা তুলে ধরে বলেন,بَلْ هُمْ أَضَلُّ أُولَئِكَ هُمُ الْغَافِلُونَ ‘বরং তারা গোমরাহ পথভ্রষ্ট, তারাই হলো উদাসীন’ (অ‘ারাফ ৭/১৭৯)। প্রত্যেক গোমরাহী, পথভ্রষ্টতা হলো শয়তানের পথ, জাহান্নামের পথ। তাই মহান আল্লাহ বলেন,  وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ-‘তোমরা শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না, নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু (বাক্বারাহ ২/১৬৮,২০৮, আন’আম ৬/১৪২)। মহান আল্লাহ শয়তানের পথ অর্থাৎ গোমরাহী-ভ্রষ্টপথে চলতে নিষেধ করেছেন এবং তার সরল পথে চলতে বলেছেন। তিনি বলেন, وَأَنَّ هَذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ وَلَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيلِهِ ذَلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ-  ‘নিশ্চয়ই এটিই আমরা সরল পথ। সুতরাং এরই অনুসরণ কর ও ভিন্ন পথের অনুসরণ করো না। করলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দান করেছেন যেন তোমরা সাবধান হও’ (আন’আম ৬/১৫৩)। এত স্পষ্ট বর্ণনা থাকার পরও যদি মানুষ শয়তানের অনুসারী হয় তাহলে মানুষ কি আপন কল্যাণ বুঝবে না?

মহান আল্লাহ বলেন, أَلَمْ أَعْهَدْ إِلَيْكُمْ يَا بَنِي آَدَمَ أَنْ لَا تَعْبُدُوا الشَّيْطَانَ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ وَأَنِ اعْبُدُونِي هَذَا صِرَاطٌ مُسْتَقِيمٌ وَلَقَدْ أَضَلَّ مِنْكُمْ جِبِلًّا كَثِيرًا أَفَلَمْ تَكُونُوا تَعْقِلُونَ- ‘হে বনী আদম! আমি কী তোমাদেরকে বলে রাখিনি যে, শয়তানের ইবাদত কর না। সে তোমাদের প্রকাশ্য শক্র এবং আমারই ইবাদত কর। এটাই সরল পথ। শয়তান তোমাদের অনেক দলকে পথভ্রষ্ট করেছে। তবুও কি তোমরা বুঝবে না?’ (ইয়াসিন ৩৬/৬০-৬২)

মহান আল্লাহ বলেন, إِنَّ كَيْدَكُنَّ عَظِيمٌ ‘নিশ্চয়ই (নারীদের) ছলনা বড়ই মারাত্মক’ (ইউসুফ ১২/২৮)। দিন দিন জীবিত নারীর ছলনার চেয়ে টিভি, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, র্স্মাটফোন ও ইন্টারনেটের নগ্ন-অর্ধনগ্ন নারী ছলনা বড়ই মারাত্মক হয়ে উঠছে, যা শয়তানের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।

যে কেউ আল্লাহর বিধানের অবাধ্যচারী হলে শয়তান তার উপর আধিপত্য বিস্তার করে। নবী করীম (ছাঃ) বলেন, إِنَّ اللَّهَ مَعَ الْقَاضِي مَا لَمْ يَجُرْ فَإِذَا جَارَ تَخَلَّى عَنْهُ وَلَزِمَهُ الشَّيْطَانُ- ‘নিশ্চয় আল্লাহ বিচারকের সাথে থাকেন, যতক্ষণ সে অন্যায় বিচার করে না। অতঃপর সে যখন অন্যায় বিচার করে তখন তিনি তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন এবং শয়তানকে তার সাথী বানিয়ে দেন’।[16] অত্র হাদীছ থেকে প্রমাণিত হয় আল্লাহর অবাধ্যচারীদের সঙ্গী হয় শয়তান এবং তাদের মাধ্যমেই শয়তান আধিপত্য বিস্তার করে। শয়তান আদম সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকে মানুষদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্য অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। মহান আল্লাহ বলেন, لَعَنَهُ اللَّهُ وَقَالَ لَأَتَّخِذَنَّ مِنْ عِبَادِكَ نَصِيبًا مَفْرُوضًا وَلَأُضِلَّنَّهُمْ وَلَأُمَنِّيَنَّهُمْ ‘যার প্রতি আললাহ অভিসম্পাত করেছেন সে শয়তান বলল, আমি অবশ্যই তোমার বান্দাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক গ্রহণ করব। তাদের পথভ্রষ্ট করব, আশ্বাস দেব’ (নিসা ৪/১১৮-১১৯)

বনী আদমের চিরশত্রু শয়তান। সে চায়না যে বনী আদম জান্নাতে যাক। তাই সে সেদিন বলেছিল, قَالَ أَرَأَيْتَكَ هَذَا الَّذِي كَرَّمْتَ عَلَيَّ لَئِنْ أَخَّرْتَنِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ لَأَحْتَنِكَنَّ ذُرِّيَّتَهُ إِلَّا قَلِيلًا- ‘আপনি কী ব্যাপারটা খেয়াল করেছেন যে, আপনি এ ব্যক্তিকে (আদমকে) আমার উপর সম্মান দিচ্ছেন। আপনি যদি আমাকে কিয়ামত পর্যন্ত সময় দেন, তাহলে আমি অল্প কিছু বাদে তার বংশধরদেরকে অবশ্যই অবশ্যই আমার কর্তৃত্বাধীন এনে ফেলব’ (বাণী ইসরাঈল ১৭/৬২)। মহান আল্লাহ বলেন,إِنَّ الشَّيْطَانَ لَكُمْ عَدُوٌّ فَاتَّخِذُوهُ عَدُوًّا إِنَّمَا يَدْعُو حِزْبَهُ لِيَكُونُوا مِنْ أَصْحَابِ السَّعِيرِ ‘শয়তান তোমাদের শত্রু, কাজেই তাকে শত্রু হিসাবে গ্রহণ কর। সে কেবল তার দলবলকে ডাকে, যাতে তারা জ্বলন্ত অগ্নির সঙ্গী হয়’ (ফাতির ৩৫/৬)

 (ক্রমশ)

[লেখক : ৪র্থ বর্ষ, দাওয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া]

[1]. আবুদাউদ হা/ ৪৭৯৯;  সিলসিলা ছহীহাহ হা/৬৮৪ ।

[2] . বুখারী হা/৯; মুসলিম হা/১৬১; মিশকাত হা/৫।

[3] . ইবনু মাজাহ হা/৪১৮১ ।

[4].  তিরমিযী হা/ ১৯৭৪;  ইবনু মাজাহ হা/ ৪১৮৫।

[5] . আবুদাউদ হা/ ৪০৩১; মিশকাত হা/৪৩৪৭।

[6] . তিরমিযী হা/২৬৯৫;  সিলসিলা ছহীহাহ হা/২১৯৪।

[7]. বুখারী হা/৩৪৫৬; মুসলিম হা/ ৬৯৫২।

[8].  বুখারী হা/ ৬৪১২;  মিশকাত হা/ ৫১৫৫।

[9]. হাকিম হা/৭৮৪৬; মিশকাত হা/৫১৭৪। 

[10]. আবুদাউদ হা/ ১৫৬৫।

[11]. বুখারী হা/৪৮৮৬; তিরমিযী/২৭৮২।

[12]. ছহীহুল জামে‘ হা/৩২৪০;  মু‘জামুল  কাবীর হা/১০৯৯২।

[13]. আবুদাউদ হা/৪২৯৯; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৯৫৮।

[14] . নাসাঈ হা/৫১২৬; মুসনাদে আহমাদ হা/১৯৭২৬।

[15] . মুসলিম হা/২১২৮।

[16] . ছহীহুল জামে‘ হা/১২৫৩।




আরও