দ্বি-বার্ষিক কর্মী সম্মেলন ১৯৯৬-এ প্রদত্ত আমীরে জামা‘আতের ভাষণ
তাওহীদের ডাক ডেস্ক
উপস্থাপনা : বর্বর ইস্রায়েল ফিলিস্তীনবাসীর উপর নির্বিচার হত্যাকান্ড চালাচ্ছে। চলছে অবিরাম গুলিবর্ষণ। পিশাচগুলো নিরাপত্তা তাঁবুতেও দুই হাযার পাউন্ডের বোমা ফেলেছে। জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের রাস্তায় পুড়ে যাওয়া ফিলিস্তীনী মানুষ, পোড়া তাঁবু, লাশের স্তূপ। ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে ধুলায় দিশাহারা জীবিতরা তাদের ছোট বাচ্চাদের প্রাণহীন লাশ নিয়ে স্তব্ধ হয়ে বসে আছে। তারা এমনই মৃত্যুপুরীতে পরিণত হলেও পুরো বিশ্ব নীরব দর্শকের ভূমিকায়। মনে হয়, নিরীহ ফিলিস্তীনীদের স্বাভাবিক জীবন-যাপনের কোন অধিকারই নেই। একই কাজ তারা নির্বিবাদে করে যাচ্ছে লেবানন কিংবা সিরিয়াতেও।
ইস্রায়েলের পরবর্তী টার্গেট : উত্তর গাযায় ইস্রায়েলের পরিকল্পনা সফল হলে দক্ষিণ লেবানন হবে পরবর্তী টার্গেট। এরপর রয়েছে গোলান মালভূমির দেশ সিরিয়া। ইস্রায়েলের তাদের সীমান্তবর্তী দেশগুলোর জমি দখলের মাধ্যমে আধিপত্য বিস্তারে ব্যস্ত। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় তারা জেরুজালেম থেকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক পর্যন্ত তাদের সীমানা বিস্তৃত করে ফেলবে।
বিশ্ব নেতাদের নিন্দা ও সংযমের আহবানে দায় শেষ : বিগত দশকের পর দশক ধরে আমরা দেখে আসছি যে, দখলদার ইস্রায়েলের হামলার পরপরই বিশ্ব নেতারা তীব্র নিন্দা জানায়। একই কাজ করে মুসলিম রাষ্ট্র কাতার, সউদী আরব, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, মিশর, পাকিস্তান, মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশের নেতারা। আর এখানেই তাদের দায় শেষ। অতঃপর আহবান করা হয় ওআইসি ও আরব লীগের সম্মেলন। কিন্তু তারা ইস্রায়েলের আগ্রাসন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি কড়া হুঁশিয়ার জানাতে ব্যর্থ। সত্যিকার অর্থে সকল মুসলিম দেশের সমন্বয়ে যদি সাহসিকতার সাথে প্রতিবাদী হ’ত, তাহ’লে ইস্রায়েলের অবৈধ অদিবাসীরা পালানোর জায়গা খুঁজে পাবেনা।
ফিলিস্তীনী স্বাধীনতা : ইতিমধ্যে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে প্রায় ১৪৪টি দেশই ফিলিস্তীনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে। এখনও অনেক দেশ স্বাধীনতা দিতে চাইলেও বিশ্ব মোড়ল যুক্তরাষ্ট্র ও এর ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশগুলো কারণে পারেনা। তারা সকলেই জানে, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য এই স্বাধীনতা খুবই প্রয়োজন। গাযা উপত্যকায়, সিরিয়া, ইয়েমেনে ইস্রায়েলী বাহিনীর লড়াই চলছে। আর এটাকে পশ্চিমারা ট্রামকার্ড হিসাবে দেখছে। এই কার্ড তারা নষ্ট হ’তে দিতে চায় না।
আইসিজেতে ফিলিস্তীন : ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে)-তে ফিলিস্তীন ভূখন্ডে ইস্রায়েলী দখলদারীর অবসান সম্ভব। ইতিহাস বলে, যেমন পরিস্থিতিই হোক ইহূদী বসতি স্থাপনকারীদের সরিয়ে নিতে বাধ্য। ফ্রান্স ১৯৬২ সালে আলজেরিয়া থেকে ১০ লাখের বেশী বসতি স্থাপনকারীকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। আলজেরিয়ায় বসতি স্থাপনকারীরা শুধু যে সংখ্যায় বেশী ছিল তা নয়, এখন অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরে ইহূদী বসতি স্থাপনকারীদের চেয়ে তারা বেশী প্রতিষ্ঠিত ছিল।
স্বাধীন ফিলিস্তীন রাষ্ট্রই যখন টেকসই সমাধান : পূর্ণ সার্বভৌমত্বের সঙ্গে পুরো পশ্চিম তীর এবং গাযা নিয়ে গঠিত একটি ফিলিস্তীনী রাষ্ট্র। এমন একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখে প্রত্যেক ফিলিস্তীন বাসী। যার মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলে আট দশক ধরে চলা মানবসৃষ্ট সংকটের অবসান ঘটতে পারে। মুসলিম বিশ্ব থেকে উদ্ভূত বেশীর ভাগ অস্থিরতার এখন একটিই মূল কারণ, ফিলিস্তীনীদের তাদের মাতৃভূমি থেকে জোরপূর্বক দখল ও উচ্ছেদ।
১৯৪৮ সাল থেকে এ অঞ্চলে তিনটি যুদ্ধ হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, আরব দেশগুলো বা পশ্চিমা শক্তিগুলোর মধ্যে এ সংকটের স্থায়ী সমাধান খোঁজার খুব একটা আগ্রহ নেই। যুক্তরাষ্ট্র দালাল হিসেবে কাজ করার চেষ্টা করে, কিন্তু তার উদ্দেশ্যগুলো সন্দেহজনক হয়ে ওঠে যখন তার কংগ্রেস থেকে ইস্রায়েলের প্রতিরক্ষার জন্য নির্লজ্জ সমর্থন পাশাপাশি উচ্চারিত হ’তে থাকে। এ দ্বিমুখী আচরণ এ প্রচেষ্টাকে মিথ্যা প্রমাণ করে।
ইস্রায়েলের জন্য বাস্তবতা হচ্ছে ফিলিস্তীনী জনগণ, যারা ওই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। সেখানে ৭০ লাখ ফিলিস্তীনী (পশ্চিম তীরে ৩০ লাখ, গাযায় ২০ লাখ এবং খোদ ইস্রায়েলে ২০ লাখ), সেখানে ইস্রায়েলে ৭০ লাখ ইহূদী ধর্মাবলম্বীরা রয়েছে। ফিলিস্তীনীদের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশী (বার্ষিক প্রায় ২ শতাংশ বনাম ইহূদী জনসংখ্যা বৃদ্ধি ১.৫ শতাংশ) এই বৃদ্ধির হার বজায় থাকলে দুই দশকের মধ্যে ফিলিস্তীনীরা সংখ্যায় ইস্রায়েলিদের ছাড়িয়ে যাবে।
এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে ইস্রায়েল কোথায় বিতাড়িত করবে? জর্ডান বা মিসর নয়। উপসাগরীয় আরব বা সউদী আরব কখনোই এই বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের সীমান্ত খুলে দেবে না। ফিলিস্তীনীদের এ ভূখন্ডের মধ্যে স্থান দিতে হবে এবং নাগরিক হিসেবে পূর্ণ সম্মান ও অধিকার দিতে হবে। এ অধিকারগুলো তাদের সার্বভৌম রাষ্ট্র হয়ে ওঠার পর হবে নাকি পূর্ণ নাগরিক হিসেবে ইস্রায়েলের অভ্যন্তরে থেকে হবে, তা ইস্রায়েলি নেতাদের সিদ্ধান্ত। ক্ষয়ক্ষতির যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে এখন থেকে তাদের এ বিবেচনা করতে হবে।
শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা : যুক্তরাষ্ট্র ইস্রায়েলের প্রধান সমর্থক ও অর্থদাতা, যা দেশে ও বিদেশে ইস্রায়েলের প্রতিরক্ষা জোরদার করে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র সৎ দালালের ভূমিকায় থাকার চেষ্টা করেছে, কিন্তু ফিলিস্তীন রাষ্ট্রের ওপর লৌহকঠিন নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে ইস্রায়েলকে বাধা দেয়নি। পশ্চিম তীর ও গাযার ওপর পূর্ণ সার্বভৌমত্ব থাকবে এমন ফিলিস্তীনকে ইস্রায়েল কখনোই মেনে নেবে না, আর তার সমর্থন যুক্তরাষ্ট্র দিতে বাধ্য থাকবে যত দিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ইস্রায়েলের পেছনে আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রজন্মের একটি বড় অংশে মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিয়ে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাভাবনা রয়েছে এবং কয়েক দশক ধরে ইস্রায়েল তার ফিলিস্তীনী জনগণের সঙ্গে ভয়াবহ আচরণ তারা দেখে আসছে। গাযা এবং পশ্চিম তীরের মানবেতর পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও বেশীসংখ্যক লোক জানে এবং প্রতিদিন সেখানকার নৃশংসতা দেখছে, তারা আরও বেশী করে শান্তির আহবান জানাচ্ছে, যা এ অঞ্চলের মানুষের জন্য ন্যায়সংগত। অপরপক্ষে আরব দেশগুলো ইস্রায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহ দেখালেও নিজ নিজ দেশের জনগণ তাদের শাসকদের চেয়ে ফিলিস্তীনীদের পক্ষেই বেশী সম্পৃক্ত।
যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ব্যবসা ও পুঁজিপতিদের খেল : জেমস সাইফারের ‘পলিটিক্যাল ইকোনমি অব সিস্টেমেটিক ইউএস মিলিটারিজম’ পড়ার আগে আরও কিছু জ্ঞান থাকলে ফিলিস্তীনী সমস্যা বুঝতে সুবিধা হবে। এই জ্ঞান মার্ক্সীয় দর্শনে পাওয়া যাবে। ‘পুঁজি পুঁজির মালিককে আরও পুঁজি আহরণে তাড়িত করে’ কার্ল মার্ক্সের এই তত্ত্বের মধ্যেই নিহিত আছে মার্কিনীদের ক্রমবর্ধমান অস্ত্র ব্যবসার রহস্য। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তি মালিকানায় পুঁজির অভাবনীয় বিকাশ ঘটেছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ২০টি বহুজাতিক কোম্পানীর ১৬টির মালিক মার্কিনীরা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কিছুকাল আগে থেকেই অস্ত্র তৈরী ও অস্ত্রের ব্যবসায় যুক্তরাষ্ট্র সাফল্যের স্বাক্ষর রাখে। অস্ত্র ব্যবসায় পুঁজির বিনিয়োগ অনেক বেশী লাভজনক বলেই পুঁজিপতিরা এই খাতেই বিনিয়োগ করছেন। অস্ত্র ব্যবসার এই সাফল্য মার্কিন আধিপত্যের ভিত্তি মযবুত করেছে।
২০২২ সালের ৬ জুনের হিসাব অনুযায়ী ৮০টি দেশে যুক্তরাষ্ট্রের ৭৫০টি সামরিক ঘাঁটি এবং ১৫৯টি দেশে মোট ১ লাখ ৭৩ হাযার সেনা মোতায়েন আছে। এতে যে বিপুল পরিমাণ মানববিধ্বংসী অস্ত্রের ব্যবহার হয়, তার জোগানদাতা ব্যক্তি খাতে মারণাস্ত্র প্রস্ত্ততকারী শিল্পমালিকরা। এই মারণাস্ত্র প্রস্ত্ততকারী শিল্পমালিকরাই পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির প্রণেতা। পুঁজিপতিরাই সরকারপ্রধান বা সরকারকে প্ররোচিত করেন যুদ্ধ বাধাতে ও জিইয়ে রাখতে, আগ্রাসন চালাতে ও আগ্রাসন চালাতে সহায়তা করতে। কারণ তাঁরাই নিজের ও অন্য দেশের সরকারের কাছে এবং সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে। সেই যুদ্ধ বা আগ্রাসন চালাতে গিয়ে যদি গর্ভবতী নারীকে, এমনকি শিশুকেও হত্যা করতে হয়, তাঁরা পিছপা হয় না। কারণ মুনাফার লোভে তারা উন্মত্ত।
ভুলতে বসেছে ফিলিস্তীন ইস্যু : ফিলিস্তীনীদের যন্ত্রণা, মৃত্যু এবং ধ্বংস বেশীর ভাগ সংবাদ মাধ্যমেই গুরুত্ব পায়না, কিংবা গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। দুই রাষ্ট্রব্যবস্থায় সমাধানের সব পথ বন্ধ করে দিয়ে ইস্রায়েল অ্যাপারথেইড রাষ্ট্র হিসেবে জেঁকে বসেছে। এভাবেই চলতে থাকবে, যুদ্ধও চলবে বিরতিহীনভাবে। ইস্রায়েল গত দুই দশকে যা করেছে, তা ফিলিস্তীন নিয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের পথকে রুদ্ধ করে দিয়েছে। অ্যাপারথেইড নীতিতে শুধু ফিলিস্তীনের আঞ্চলিক অখন্ডতা নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা হয়নি, সামরিক শক্তিনির্ভর ঔপনিবেশিক শক্তি ফিলিস্তীনের প্রতিটি ইঞ্চি দখল করার চেষ্টা করেছে।
ফিলিস্তীনীরা কখনোই মুছে যাবেন না : ফিলিস্তীনীরা কখনোই মুছে যাবেন না। এই অঞ্চলের অধিকাংশ ও সারা বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ এই বিষয় উপলব্ধি করেছেন এবং তারা ফিলিস্তীনীদের সংগ্রামের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন। বিশ্বের এসব প্রভাবশালী দেশ যাই ভাবুক না কেন, ফিলিস্তীনী জনগণ তাদের মুছে দেওয়ার ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করে যাবেন। বিশ্বব্যাপী মানুষ ফিলিস্তীনের সংগ্রামের মধ্যে নিজেদের সংগ্রামকে দেখবেন। বিশ্ববাসী ফিলিস্তীনকে দেখবেন একটি রাজনৈতিক গল্প, রাজনৈতিক দর্শন, চলমান রাজনৈতিক অবস্থার বহিঃপ্রকাশ এবং ক্ষমতার ব্যবস্থা হিসেবে, যা কখনো বিশ্ববাসীর হৃদয় ও মন থেকে মুছে দেওয়া যাবে না। এটিই হবে সময়ের পরীক্ষা। স্বাধীনতা ও বিকল্প ব্যবস্থা সৃষ্টির জন্য যারা অনড় থাকছেন, তারা একদিন প্রভাবশালী যেসব দেশ বর্তমানে বিশ্বকে শাসন করছে ও ফিলিস্তীনকে বিশ্বের মানচিত্র থেকে মুছে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে, তাদের পরাভূত করবে।
ফিলিস্তীনীদের সংকট ও অস্তিত্বের লড়াই : ফিলিস্তীনে রয়েছে কর্তৃপক্ষের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব, ফাতাহ-হামাস সহ অন্যান্য সংগঠনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। হামাসের ফিলিস্তীনীদের জন্য রাজনৈতিক দল হয়ে ওঠার সীমাবদ্ধতা এবং বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া, মধ্যপ্রাচ্যে দশকের পর দশক ধরে চলা যুদ্ধবিগ্রহ, যুক্তরাষ্ট্রের ইস্রায়েলের যেকোনো কাজে অকুণ্ঠ সমর্থন এবং ইউরোপের ভূরাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়া ইত্যাদি হাযারটা কারণ এই সংকট সমাধানের পথে অচলাবস্থা তৈরী করেছে। ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা এবং সংকট যেখানে প্রতিদিন চেহারা বদলায়। এমন পরিস্থিতিতেও তারা তাদের অস্তিত্বের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
এখন যে অন্ধকার ও বিষণ্ণ সম্ভাবনা বিরাজ করছে, তাতে কি ফিলিস্তীন রাষ্ট্রের জন্য কোনো আশা আছে? সংশয়ের কারণ নেই, পরিবর্তনের হাওয়া আসতে বাধ্য। নতুন প্রজন্ম এ মানসিকতা পরিবর্তন করবে। এভাবে চিরকাল চলবে না। অস্তিত্বের লড়াইয়ে যখন সকল আরব ও মুসলিম রাষ্ট্র একীভূত হবে, তখন মুসলমানদের পবিত্রভূমি জেরুজালেমের বিজয় আসবে। আফগানিস্তানে যেমন আমেরিকার বিরুদ্ধে তালেবানদের অভাবিত রক্তপাতহীন বিজয় এসেছে, কিংবা যেভাবে মাত্র ১২ দিনের ঝড়ো প্রতিরোধে দামেশকে বাশারের বিরুদ্ধে বিজয় এল সুন্নীদের, তেমনি একসময় মুক্তিকামী ফিলিস্তীনী জনতার বিজয় হবেই ইনশাআল্লাহ!
উপসংহার : ২০০১ সালে তালেবানের পতন ঘটাতে আমেরিকানদের কয়েক সপ্তাহ লেগেছিল। আর আমেরিকানদের তাড়াতে তালেবানের লেগেছিল ২০ বছর। ২০০৩ সালের এপ্রিলে বাগদাদে সাদ্দাম হোসেনের মূর্তি নামাতে আমেরিকানদের লেগেছিল তিন সপ্তাহ। ইরাকে আমেরিকানদের যুদ্ধ পরাজয়ের মধ্য দিয়ে শেষ হতে লেগেছিল আরও আট বছর সময়। বর্তমানে মুসলিম সরকার প্রধানদের উচিত কুটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা। এতে কাজ না হ’লে ইস্রায়েলকে সবদিক দিয়ে বয়কট করতে হবে। আর এই যুদ্ধ বন্ধে সকল সাধারণ মুসলিমদের আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ জানাতে হবে। মনে রাখতে হবে এটা আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। আল্লাহ ফিলিস্তীনী ভাইদের স্বাধীনতা দিন।-আমীন!
ওমর ফারুক
[শিক্ষার্থী, সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইন্স্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]