জার্মান তরুণী মার্টিনা ওবারহোলজনার ইসলাম গ্রহণ
তাওহীদের ডাক ডেস্ক
[বক্সিংয়ে কালজয়ী এক কিংবদন্তির নাম মাইকেল জেরাল্ড টাইসন (৫৮)। ‘দ্য ব্যাডেস্ট ম্যান অন দ্য প্লানেট’ নামে খ্যাতি পাওয়া টাইসন ভীষণ রকম লড়াকু। মাত্র ২০ বছর ৪ মাস ২২ দিন বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে জিতেছেন হেভিওয়েট বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব। ২০০৫ সালে অবসর নেওয়ার আগে তিনি ৫০টি বাউট জয়ের বিপরীতে ৬টি হেরেছিলেন। এর মধ্যে ৪৪টিই ছিল নকআউটে জয়। বক্সিং জগতের ‘আয়রন মাইক’ মুহাম্মদ আলীর বক্সিং উন্মাদনাকে গ্রহণ করেছিলেন। ‘দ্য ইস্টান অ্যাসাসিন’ খ্যাত আমেরিকান বক্সার ল্যারি হোমসের কাছে মোহাম্মদ আলীর পরাজয়ের প্রতিশোধ তিনি নিয়েছিলেন। ১৯৮৮ সালে তিনি ল্যারি হোমসকে পরাজিত করেন। আর এভাবেই টাইসন-আলীর সম্পর্ক গভীর হয় এবং বক্সিং জগত ছাড়িয়ে ব্যক্তিগত সম্পর্কে গড়ায়।]
মাইকেল জেরাল্ড টাইসনের জন্ম নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে ১৯৬৬ সালের ৩০শে জুন। বক্সিং রিং দাপিয়ে বেড়ানো মাইক টাইসনের ছোটবেলা মোটেও সুখকর ছিল না। মাইকের জন্মের আগে তার বাবা পরিবার ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। একসময় তার মা কাজ হারানোয় চরম দারিদ্রের মধ্যে পড়েন তারা। ফলে অপরাধ জগতে ভিড়তে দেরি হয় না তার। চুরির দায়ে ধরা পড়ে পুলিশের কাছে মার খান। মা জানতে পেরে আরও মেরেছিলেন তাকে। অল্প বয়সে বিভিন্ন স্ট্রিট গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত হন। মা যখন মারা যান, তখন তার বয়স ১৬ বছর।
১৯৭৮ সালে নিউইয়র্কের কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছিল তাকে। একবার দুর্দান্ত বক্সার মুহাম্মাদ আলী এই প্রতিষ্ঠানে এসেছিলেন, তার সাথে মাইকের কথা বলার সুযোগ হয়েছিল। আলি তার উপর এমন প্রভাব ফেলেছিলেন যে টাইসন কিশোরও বক্সার হ’তে চেয়েছিলেন। টাইসন ঠিক করে ফেলেন নিজের জীবন বদলে নেবেন মুহাম্মাদ আলীর মতো করে। এক সময় মুহাম্মাদ আলীও স্বীকার করেছিলেন যে, তাকে হারানোর সব ক্ষমতাই টাইসনের আছে।
অল্প বয়সে তিনি ১০০ কিলোগ্রাম বারবেল বার তুলতে সক্ষম হন। এই প্রতিষ্ঠানে মাইক শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক ববি স্টুয়ার্টের সাথে ঘনিষ্ঠ পরিচিত হন, যিনি একজন প্রাক্তন বক্সার ছিলেন। তিনি শিক্ষক ববি স্টুয়ার্টকে কীভাবে বক্সিং করতে হবে তা শিখিয়ে দিতে বলেছিলেন। তবে শিক্ষক তার অনুরোধটি মানতে সম্মত হন একটি শর্তে, যদি সে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা বন্ধ করে এবং ভালভাবে পড়াশোনা শুরু করে। এমন শর্তের পরে তার আচরণ এবং অধ্যয়নের উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি হয়েছিল।
টাইসন শীঘ্রই বক্সিংয়ের এমন উচ্চ স্তরে পৌঁছে গেল যে, শিক্ষক ববি স্টুয়ার্ট তাকে কস ডিআমাটো নামে কোচের কাছে পাঠিয়েছিল। একটি মজার তথ্য হ’ল টাইসনের মা মারা গেলে কাস ডিআমাটো তার উপর অভিভাবকত্ব গ্রহণ করে তাকে তার বাড়িতে থাকার জন্য নিয়ে যায়। মাইক টাইসনের ক্রীড়াজীবন ১৫ বছর বয়সে শুরু হয়েছিল। ১৯৮২ সালে বক্সার জুনিয়র অলিম্পিক গেমসে অংশ নিয়েছিল। কৌতূহলজনকভাবে টাইসন তার প্রথম প্রতিপক্ষকে ছুঁড়ে ফেলেন মাত্র ৮ সেকেন্ডের মধ্যে। ১৯৮৫ সালের ৬ মার্চ ১৯ বছর বয়সে পেশাদার বক্সিংয়ে তার প্রথম লড়াই হয়েছিল। ১৯৮৫ সালের শেষে মাইক টাইসনের প্রশিক্ষক কাস ডিআমাটো নিউমোনিয়ায় মারা যায়। পরামর্শদাতার এই মৃত্যু তার জীবনে এক কঠিন আঘাত হেনে ছিল।
তিনি প্রায় সব প্রতিপক্ষকে ছুঁড়ে ফেলে আত্মবিশ্বাসের সাথে জয়লাভ করতে থাকেন। ১৯৯০ সালে ৩৭তম ম্যাচে বুস্টার ডগলাসের কাছে তিনি প্রথম হারের মুখ দেখেন। ১৯৯৭ শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে হলিফিল্ডের কানে কামড় দেয়ায় মাইক টাইসনের লাইসেন্স বাতিল হয়। তিনি ৩০ লাখ ডলার জরিমানা দেন। অতঃপর দু’বছর পর লাইসেন্স ফিরে পান। ২০০৫ সালে জীবনের শেষ দু’টি ম্যাচে হেরে তিনি বিদায় নেন।