তিন বন্ধুর গল্প
মুহাম্মাদ লাবীবুর রহমান
তাওহীদের ডাক ডেস্ক 68 বার পঠিত
যুক্তরাষ্ট্রের হত্যা অপরাধ বিশেষজ্ঞ সমিতি-এর সভাপতি তার এক ভাষণে ঘটনাটি বর্ণনা করেন। এটি ইতিহাসের সবচেয়ে অদ্ভুত আত্মহত্যার ঘটনা হিসাবে পরিচিত, যা অনেকেই হয়তো বিশ্বাস করবেন না। কারণ এতে কতগুলো আকস্মিক ঘটনা এমনভাবে মিলে গেছে, যা টেলিভিশনের পর্দায় প্রদর্শিত নাটক, সিনেমার চেয়েও কল্পিত মনে হ’তে পারে। এরূপ রহস্যজনক হত্যার ঘটনা ইতিহাসে আগে কখনো ঘটেনি এবং ভবিষ্যতেও ঘটার সম্ভাবনা অতি সামান্য।
১৯৯৪ সালে রোনাল্ড ওপাস নামে এক ব্যক্তি তার বাসার দশতলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আত্মহত্যার কারণ হিসাবে তিনি একটি চিঠি রেখে যান, যেখানে জীবনের প্রতি তার হতাশার কথা লিখেছিলেন। ঐ ব্যক্তি জানতেন না যে, ভবনটি নির্মাণের সময় অষ্টম তলায় একটি নিরাপত্তা জাল স্থাপন করা হয়েছিল, যা তার আত্মহত্যার চেষ্টা ব্যর্থ করতে পারে। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হ’ল এ জাল থাকা সত্ত্বেও লোকটি মারা যান। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে দেখা যায় যে, তিনি মাথায় গুলি লেগে মারা গেছেন, যা ভবনের নবম তলার একটি জানালা থেকে ছেঁাড়া হয়েছিল।
পুলিশ নবম তলার ফ্ল্যাটটি তদন্ত করে জানতে পারে যে, সেখানে বসবাসকারী তারই বৃদ্ধ পিতা-মাতা ঐ সময় নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করছিলেন। তখন বৃদ্ধ লোকটি তার স্ত্রীর দিকে বন্দুক তাক করে ভয় দেখিয়ে তাকে শান্ত থাকতে বলেন। তবু মহিলাটি চুপ না করায় ক্রোধে উন্মাদ হয়ে তিনি বন্দুকের ট্রিগারে চাপ দেন। কিন্তু গুলিই তার স্ত্রীকে না লেগে জানালা দিয়ে বের হয়ে যায় এবং বিস্ময়করভাবে তা ছেলে রোনাল্ডের মাথায় লাগে। ফলে সে মৃত্যুবরণ করে।
আইন অনুযায়ী, যদি কেউ একজনকে হত্যা করতে গিয়ে ভুলবশত অন্যজনকে হত্যা করে, তাহ’লে এটি অপরাধ হিসাবে গণ্য হয়। তাই এ ঘটনায় বৃদ্ধই দোষী সাব্যস্ত হয়। কারণ গুলি না লাগলে অষ্টম তলায় থাকা নিরাপত্তা জালটি রোনাল্ডের প্রাণ বঁাচাতে পারত। কিন্তু বৃদ্ধ ও তার স্ত্রী জানান, তারা প্রায়ই ঝগড়া করেন এবং বৃদ্ধ সবসময় বন্দুক দিয়ে ভয় দেখান। কিন্তু বন্দুকে কখনো গুলি থাকে না।
পরে তদন্তে দেখা যায়, তাদের ছেলে বাবা-মাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল এবং এই উদ্দেশ্যে কয়েক সপ্তাহ আগে বন্দুকটিতে গুলি ভরেছিল, যাতে ঝগড়ার সময় একজন মারা যান ও অন্যজন হত্যার দায়ে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত হন। কিন্তু কিছুদিন পর সে নিজেই ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে। আর বিস্ময়করভাবে সেই গুলি তার প্রাণ কেড়ে নেয়। এভাবেই ছেলেটি নিজেই নিজের চক্রান্তের শিকার হয়। এজন্যই বলা হয়, অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়লে, সে গর্তে নিজেকেই পড়তে হয়।