একজন ক্ষুধার্ত দিনমজুরের দো‘আ
ডা. আব্দুর নূর তুষার, ঢাকা।
রেহনুমা বিনতে আনীস 1755 বার পঠিত
আমার ধারণা বর্তমান যুগের তুলনায় পূর্বেকার যুগে সামগ্রিকভাবে মানুষের volume of knowledge কম থাকলেও application of knowledge ছিল অনেক বেশি। হুম, বলা যায় তখন যাদের knowledge ছিল তাদের শহড়ষিবফমব এর ব্যাপ্তি ছিল অনেক বিস্তৃত। কারণ তাদের জন্য জ্ঞানার্জনের ব্যাপারটা selective ছিলনা, ছিল elective. তারা নিজ আগ্রহে জ্ঞানার্জন না করলে তাদের জবরদস্তি করার কেউ ছিলোনা। তাই তারা জ্ঞানার্জনের ব্যাপারে যেমন উৎসাহী ছিলেন তেমনি উদ্যমী ছিলেন, যদিও হয়ত তাদের সংখ্যা ছিল অনেক কম। তাদের জন্য কিছু জানা Google ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করার মত সহজ ব্যাপার ছিলোনা। প্রতিটি piece of information সংগ্রহের পেছনে ছিল তাদের অক্লান্ত চেষ্টা, সাধনা ও পরিশ্রম। তাই তাদের কাছে জ্ঞানের মূল্য ছিল অনেক বেশি। কষ্টার্জিত সেই জ্ঞানকে ব্যাবহারের, বিফলে যেতে না দেয়ার আকাংখা ছিল অদম্য। সমাজ তাদের এই সাধনার মূল্যায়ন করত। জ্ঞানী ব্যাক্তিদের সমাদর ছিল, সম্মান ছিল। তারা জ্ঞানী ব্যাক্তিদের কথা শুনতেন, সেই অনুযায়ী কাজ করতেন। জ্ঞানীরাও এর সুযোগ নিতেন না, বরং ফলভারে নুয়ে পড়া বৃক্ষের মত বিনয়ী হতেন।
এখন লেখাপড়ার প্রচলন বেড়েছে, তবে জ্ঞানার্জনের পরিধি কতটুকু বেড়েছে তা প্রশ্নসাপেক্ষ। কারণ এখনকার অধিকাংশ মানুষের কাছে জ্ঞান সেই নিমতেতো যা বন্দুকের নলের আগায় তাকে গিলতে বাধ্য করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে জ্ঞানের শুধু সেটুকুই গলাধঃকরণ করা হয় যেটুকু পরীক্ষায় পাস করার জন্য অপরিহার্য এবং সেটা গলা পর্যন্ত পৌঁছেই ঠেকে যায়, পরীক্ষার খাতায় উগড়ে দিয়েই খালাস, হজম হয়না তাই ব্যাক্তির মানবিক উন্নতি সাধনে কোন অবদান রাখতে পারেনা। একটি জীবিকা সংগ্রহ ব্যাতীত এই জ্ঞানের আর কোন function থাকেনা। ফলে এই জ্ঞান ব্যাক্তিকে করে তোলে প্রতিযোগী মনোভাবাপন্ন, স্বার্থপর এবং সুযোগসন্ধানী। যারা সত্যি সত্যি জানার উদ্দেশ্যে জ্ঞানের অনুসন্ধান করেন তাদের অনেকেরই অনুসন্ধিৎসার সাথে প্রচেষ্টার যোগ ঘটেনা। ফলে তারা Google ভাইয়ার দেয়া দুই লাইনের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হয়ে যান, অথচ ঐ বিষয়ে লেখা শত শত বইয়ের এক পাতাও পড়ে দেখতে নারায। এই ধরণের জ্ঞান অপরের কষ্টার্জিত জ্ঞানকে মূলায়ন করার ব্যাপারে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারেনা। ফলে এই ধরণের জ্ঞানীরা অনেকক্ষেত্রে উদ্ধত এবং তর্কপ্রবণ হয়ে থাকেন। তাদের ব্যবহার এবং কথাবার্তা হয়ে থাকে অহংকারী এবং অমার্জিত।
সেদিন কথাপ্রসঙ্গে আমার নানার জীবনের বিভিন্ন আঙ্গিক পর্যালোচনা করতে গিয়ে এই কথাগুলো মনে এলো। নানা ছিল সাধারণ গ্রামবাসী ব্যাবসায়ী। লেখাপড়া ছিল কুরআন এবং হাদিসের জ্ঞানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু নানার জীবনাচরণে ছিল এই জ্ঞানের সাথে পরিপূর্ণ সমন্বয় সাধনের প্রয়াস। নানা যে কেবল নিজে এই শিক্ষাকে ব্যাক্তিগত জীবনে প্রতিফলিত করার চেষ্টা করত তাই নয়, বরং সন্তানদেরও তা অনুসরণ করার তাগিদ দিত। একসময় যখন রেঙ্গুন জমজমাট ব্যাবসাকেন্দ্র তখন নানা রেঙ্গুনে ব্যাবসা করত। তারপর যখন রেঙ্গুনে মুসলিম নিধন অভিযান শুরু হয় তখন নানা আবার চট্টগ্রামে ফিরে আসে। ফিরে এসে দেখে বড় ভাই নানার কষ্টার্জিত পয়সায় নিজ নামে জমিজমা কিনে বসে আছেন। কিন্তু নানাকে দেখিনি এই বিষয়ে কিছু বলতে, অন্যরা কিছু বললেও নানা তাদের চুপ করিয়ে দিত। এই ঘটনা আমাকে সুরা ফুরকানে উলেস্নখিত ‘ইবাদুর রাহমানের’ কথা মনে করিয়ে দেয়। জমজমাট ব্যাবসা করার সময় কিংবা সর্বস্ব হারিয়ে ফিরে আসার পর, উভয় অবস্থাতেই নানার জীবনাচার ছিল অতি সাধারন। নানা বলত (চট্টগ্রামের ভাষায়)-
‘বাকা ঝরে ভিজে,
রইদত ফুয়ায়,
শীতে ফুলে।’
‘বাকা’ শব্দটার অর্থ অনেকটা stylish বা show off এর মত। এরা ফ্যাশনের জ্বালায় ছাতা ব্যবহার করতে পারেনা, তাই বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পোড়ে। আবার শীতের দিনে গরম কাপড় পরতে পারেনা, ফলে শীতে কষ্ট পায়। নানা সবসময় স্মার্ট এবং পরিচ্ছন্নভাবে চললেও এসব আদিখ্যেতা এড়িয়ে চলত।
মার কাছে শুনেছি, নানা ছেলেমেয়েদের এত ভালবাসত যে সারাদিন পরিশ্রমের পরও তাদের বুকে পিঠে নিয়ে ঘুমাত। ঘুমের মধ্যেও নড়াচড়া করত না যেন বাচ্চাদের ঘুম ভেঙ্গে না যায়। তাই প্রতিদিন ভোরে উঠে আবিষ্কার করত ঘাড়েপিঠে প্রচন্ড ব্যাথা। কিন্তু পরদিন আবার সেই একই কাহিনী। এর থেকে মনে হয়, হয়ত নানা চেষ্টা করত ইয়াকুব (আঃ)-এর মত বাবা হবার। কিন্তু তাই বলে সন্তান বাৎসল্যে নানা সন্তানদের দোষত্রুটির ব্যাপারে অন্ধ ছিল এমনটা নানার সন্তানরাও বলতে পারবেনা। একদিনের কথা খুব মনে পড়ে। নানা প্রতিবেলায় মসজিদে গিয়ে ছালাত পড়ত। যাবার সময় ছেলেদের ডাকত, মেয়েদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে যেত। একদিন বাইরে তুফান হচ্ছে। কেউ নানার সাথে যেতে রাজী হ’লনা। হাদীছে সঙ্গত কারণে ছালাত বাসায় পড়া যাবে বলায় নানা জবরদস্তি করলনা, কিন্তু সবাইকে ছালাত পড়ার তাগিদ দিয়ে মসজিদে রওয়ানা দিল। দেখি মা, মামারা বসে বসে ঝালমুড়ি চিবাচ্ছে আর অন্যদের বাড়ীর চাল উড়ে যাওয়া দেখে হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে। নানা ফিরে এসে বাইরে থেকেই ওদের দেখতে পেয়ে ইয়াববড় এক লাঠি নিলো। মা, মামারা দৌড়ে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর মধ্যেই আমরা যে ঘরে বসা ছিলাম শুধু সেই অংশের চাল উড়ে গেল। হা হুতাশ করার পরিবর্তে নানা খুশি হয়ে বলল, ‘আমার আগেই আল্লাহ তোদের শাস্তি দিয়ে ফেললেন। এবার যা, সব ছালাত পড় গিয়ে।’
ইব্রাহীম (আঃ)-এর আদর্শ মোতাবেক বাসায় ভাল কিছু রান্না হলেই নানা রাস্তায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত, উদ্দেশ্য পথচারীদের মাঝে কয়েকজনকে ধরে এনে ভাল খাবার দিয়ে আতিথেয়তা করা। বাযার থেকে একটা বড় শসা কিনে আনলেও প্রতিবেশীদের বাসায় এক ফালি পাঠাবার জন্য অস্থির হয়ে যেত। মানুষের মনে কষ্ট না দেয়ার ব্যাপারে এতটা সচেতন থাকত যে অনেকসময় অনেক comical situation এর উদ্ভব হত। আমার নানা ছিলেন চোখধাঁধানো সুন্দর যার ছিঁটেফোঁটা নানার ছেলেমেয়েরা পেয়েছে। তাতেই মা’র বিয়ের প্রস্তাবের লাইন সামলাতে নানাকে অনেক ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হ’ত। যেমন একবার এক মাস্তান ছেলেকে মানা করে দেয়ার পর সে রেগেমেগে রাতের অন্ধকারে ঘরের চৌহদ্দির বেড়া উপড়ে, আগুনে জ্বালিয়ে, পুকুরে ফেলে চলে যায়! আরেকবার এক গ্রাম্য চাষী বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে হাজির। অহংকার প্রকাশ পাবার ভয়ে নানা তাঁকে সরাসরি কিছু বলতে নারায। তখন নানা তাঁকে বুঝাল, ‘কি বলব ভাই, শরমের কথা, আমার এই মেয়েটাকে নিয়ে কেউ আমাকে উদ্ধার করলে আমি কৃতার্থ হয়ে যাই। আমার মেয়েটা এত খায়, এত খায়, এত খায়, হাঁসের মত সারাক্ষণ খেতেই থাকে। তুমি ওকে নিয়ে আমাকে উদ্ধার কর ভাই।’ মূর্খ চাষি ভাবল, ‘এই মেয়ে নিয়ে গেলে তো আমার গোলা উজাড় হয়ে যাবে!’ সে মানে মানে সরে পড়ল। আজকাল অবশ্য ধনী লোকেরাও ছেলে বিয়ে করলে খাওয়াবে কি সে চিন্তায় ছেলের বিয়ে দিতে পারেন না, চাষীর কি দোষ!
আমার নানা আমাকে ভীষণ আদর করত। ভরদুপুরে তেঁতুল খাব বলে বাড়ি মাথায় তুললেও বকা দিতনা। নানার একটা গরুর একটা সুন্দর লাল বাছুর হয়েছিল, সেটা নানা আমাকে দিয়েছিল খেলার সাথী হিসেবে। পরে বাছুরটা মাঠে ঘাস খাবার সময় বজ্রাঘাতে মারা যায়। আমি খুব কান্নাকাটি করেছিলাম। তখন বাছুরটাকে ঘরের সামনে কবর দেয়া হয়। আমার এখনো মনে আছে ওর কবরটা কোথায়। নানা রিটায়ার করার পর বাবা নানাকে ঘরের সামনেই একটা মুদি দোকান করে দিয়েছিল যেন লোকজন আসে, নানার সময় কাটে। দোকানের মুড়ি, মোয়া, মিসরি অধিকাংশ আমার পেটেই যেত। আমার একটা ছোট্ট কৌটা ছিল, নিয়ে গেলেই নানা ভরে দিত। কিন্তু একবার মামাদের মাথায় বাঁদরামি চাপল। নানা যতবার আমার কৌটা ভরে দেয়, ওরা কৌটা খালি করে সব খেয়ে নেয়, তারপর আবার আমাকে পাঠায়। এভাবে কয়েকবার যাতায়াত করার পর নানা বুঝতে পারল কি হচ্ছে। তখন নানা বলল, ‘ফজলুল করীম (ছোটমামা) সব খেয়ে ফেলছে, না? এবার আর দেবনা।’ বকা দেয়া হয়েছে ছোটমামাকে কিন্তু আমার হঠাৎ খুব কান্না পেয়ে গেল। এত বড় অপমান! আমাকে মুড়ি দেবেনা? আমি গিয়ে ছোটমামাকে খুব ঝাড়লাম, ‘ওডা ব্যাডা ফজলুল করীম, তোর বায় আঁরে মুড়ি ন দেয়, আঁর বা আইলে হইয়ুম দে মুড়ির দোয়ান দিত’ (এই ছেলে ফজলুল করীম, তোর বাবা আমাকে মুড়ি দেয়নি, আমার বাবা এলে বলব মুড়ির দোকান দিতে)! এখনও সবাই আমাকে এই কথা মনে করিয়ে দিয়ে ক্ষ্যাপায়। পরে অবশ্য মামাকে তাড়া করার পর নানা আবার আমার কৌটা পূর্ণ করে দিয়েছিল। নানা যখন মারা যায় তখন আমার বয়স মাত্র ছয় বছর। কিন্তু নানার ব্যাক্তিত্ব এত প্রখর ছিল যে নানাকে মনে রাখা খুব একটা কঠিন ছিল না যেখানে অনেক ব্যাক্তি হয়ত অনেক সাম্প্রতিক হয়েও স্মৃতি থেকে হারিয়ে গিয়েছেন।
এবার আসি এক Google শায়খের সাথে কথোপকথনে। আধুনিক কালের বড় বড় স্কলাররা সবসময় এদের ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বনের কথা মনে করিয়ে দেন। Google শায়খদের বৈশিষ্ট্য হোল এরা কিছু হলেই Google-এ সার্চ দিয়ে সমাধান দিয়ে দেয়। এমন এক Google শায়খ একবার খুব বাড়াবাড়ি করলে তাকে বললাম, Google -এ যে তথ্যাদি পাওয়া যায় তা তো আর ইসলামের আলোকে যাচাই বাছাই করে নেয়া হয়না, তুমি যে তথ্য পাচ্ছ তা সঠিক কিনা তা বুঝার জন্যও তো তোমার কিছু বেসিক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। তাহলে তুমি তোমার যে বেসিক জ্ঞান তার ভিত্তিতে এই তথ্য কতখানি সঠিক তা যাচাই করে নিতে পারবে।’
সে বলল, ‘বেসিক জ্ঞান বলতে তুমি কি বুঝাচ্ছ?’
‘তুমি কুরআন কয়বার পড়েছ, অর্থ বুঝে পড়েছ কিনা, তাফসীর পড়েছ কিনা, কয়খানা তাফসীর পড়েছ ...’
আমি শেষ করার আগেই সে বলে উঠল, ‘দাঁড়াও, দাঁড়াও। আমি কুরআন একবারও শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়িনি।’
‘পড়নি, তাহলে এখন পড়া শুরু কর। তুমি যে কয়টা সুরা মুখস্ত জানো অন্তত সেগুলোর অর্থ দিয়ে অর্থ পড়া শুরু কর, ওগুলোর তাফসীর আগে জানার চেষ্টা কর ...’
আবারও সে আমাকে বাঁধা দিল, ‘আমি তো আরবি পড়তে জানিনা! সূরা জানি মোট চারটা কিন্তু অর্থ জানিনা। আর তাফসীর কি জিনিস?’
ধৈর্য্য ধরে বুঝালাম তাফসীর কি, এর প্রয়োজনীয়তা কি। নিজেকে বুঝালাম, আরও বহুদূর পথ বাকী, এখনই ধৈর্য্য হারালে চলবেনা।
তারপর বললাম, ‘কুরআনের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাসূল (সাঃ) এর জীবনী এবং হাদীছ গ্রন্থগুলো পড়া ...’
আবার বাঁধা, ‘জীবনী কেন?’
‘আমরা যদি রাসূল (সাঃ)-এর অনুসারী হই, তাহলে জানতে হবেনা তাঁর প্রতিদিনকার যাপিত জীবন কেমন ছিল, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তিনি কিভাবে আচরণ করতেন? নইলে আমরা তাঁকে অনুসরণ করব কিভাবে?ল’
‘এতকিছু পড়ার সময় কই?’
‘কেন অফিস থেকে বাড়ী ফিরে তুমি কি কর?’
‘সিরিয়াল দেখি।’
‘এখন গল্পের মত মজা করে বর্ণনা করা রাসূল (সাঃ) এর জীবনী সিরিয়াল আকারে YouTube এ পাওয়া যায়। দেখতে না চাইলে শুধু শুনলেই হবে। এক পয়সাও খরচ নেই।’
‘কি বল? মানুষের জীবনে বিনোদনেরও তো প্রয়োজন আছে!’
‘কিন্তু তুমি তাঁর জীবনী না জানলে হাদীছগুলোর প্রেক্ষাপট বুঝবে কিভাবে? হাদীছ না বুঝলে ফিকহ বুঝবে কিভাবে?’
‘ফিকহ কি জিনিস?’
‘এই যে তুমি সবাইকে উপদেশ দাও এমন করা উচিত, তেমন করা যাবেনা, এগুলোই ফিকহের বিষয়বস্তু। কুরআন এবং হাদীছের আলোকে একজন মুসলিমের জীবনে করণীয় কাজগুলোর বৈধতা-অবৈধতা নির্ণয় করার জন্য ফিকহ সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের কোন বিকল্প নেই।’
‘সে তো আমি Google থেকেই জানতে পারছি! তবে কেন শুধু শুধু কষ্ট করে সময় ব্যয় করে এতকিছু পড়তে যাব?’
একেই মনে হয় হয় বলে, ‘সারা রাত রামায়ণ পড়ে সকালে উঠে বলে, ‘সীতা কার বাপ?’
সে বিরক্তি সহকারে আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে আরেকজনকে উপদেশ দিতে শুরু করল যে ওর চেয়েও কম জানে। এই হ’ল আমাদের যুগে সাধারণ মানুষের জ্ঞানের চর্চা এবং প্রয়োগের নমুনা।
তাই মনে হয় তুলনামূলকভাবে আগের যুগের মানুষগুলোই খাঁটিভাবে জ্ঞানের আস্বাদন করতে পেরেছিলেন যেখানে আমাদের আছে শুধুই আস্ফালন।