অল্পে তুষ্টি
তাওহীদের ডাক ডেস্ক
তাওহীদের ডাক ডেস্ক 3663 বার পঠিত
আল-কুরআনুল কারীম :
1- وَسَارِعُوا إِلَى مَغْفِرَةٍ مِنْ رَبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِينَ-الَّذِينَ يُنْفِقُونَ فِي السَّرَّاءِ وَالضَّرَّاءِ وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ -
(১) ‘আর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে দ্রুত ধাবিত হও। যার প্রশস্ততা আসমান ও যমীন পরিব্যপ্ত। যা প্রস্ত্তত করা হয়েছে আল্লাহভীরুদের জন্য। যারা সচ্ছলতা ও অসচ্ছলতা সর্বাবস্থায় (আল্লাহর রাস্তায়) ব্যয় করে, যারা ক্রোধ দমন করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। বস্ত্ততঃ আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন’ (আলে-ইমরান ৩/১৩৩)।
2- فَاقْرَءُوا مَا تَيَسَّرَ مِنَ الْقُرْآنِ عَلِمَ أَنْ سَيَكُونُ مِنْكُمْ مَرْضَى وَآخَرُونَ يَضْرِبُونَ فِي الْأَرْضِ يَبْتَغُونَ مِنْ فَضْلِ اللَّهِ وَآخَرُونَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَاقْرَءُوا مَا تَيَسَّرَ مِنْهُ وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَأَقْرِضُوا اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا وَمَا تُقَدِّمُوا لِأَنْفُسِكُمْ مِنْ خَيْرٍ تَجِدُوهُ عِنْدَ اللَّهِ هُوَ خَيْرًا وَأَعْظَمَ أَجْرًا وَاسْتَغْفِرُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ-
(২) ‘অতএব তোমাদের পক্ষে যতটুকু সহজ হয় ততটুকু (রাত্রি জাগরণ কর) কুরআন তেলাওয়াত কর। তিনি জানেন তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়বে, কেউ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে দেশ-বিদেশ ভ্রমণে বের হবে, কেউ আল্লাহর পথে জিহাদে লিপ্ত হবে, অতএব যতটুকু সহজ হয়, ততটুকু রাত্রি জাগরণ কর। আর তোমরা ছালাত কায়েম কর ও যাকাত আদায় কর এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও। আর তোমরা নিজেদের জন্য আল্লাহর নিকট যতটুকু অগ্রিম পাঠাবে, তোমরা তা আল্লাহর নিকটে পাবে। সেটাই হ’ল উত্তম ও সবচেয়ে বড় পুরস্কার। তোমরা আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (মুযাম্মিল ৭৩/২০)।
3- لَيْسُوا سَوَاءً مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ أُمَّةٌ قَائِمَةٌ يَتْلُونَ آيَاتِ اللَّهِ آنَاءَ اللَّيْلِ وَهُمْ يَسْجُدُونَ-يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ وَأُولَئِكَ مِنَ الصَّالِحِينَ -
(৩) ‘তারা সকলে সমান নয়। তাদের মধ্যে একটি দল রয়েছে, যারা আল্লাহর আদেশের উপর দন্ডায়মান। যারা রাত্রিতে আল্লাহর আয়াত সমূহ তেলাওয়াত করে এবং সিজদা করে (অর্থাৎ ছালাতে রত থাকে) তারা আল্লাহ ও ক্বিয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে। তারা সৎকাজের আদেশ দেয় ও মন্দকাজে নিষেধ করে এবং কল্যাণকর্ম সমূহের প্রতি দ্রুত ধাবিত হয়। আর তারা হ’ল সৎকর্মশীলগণের অন্তর্ভুক্ত’ (আলে-ইমরান ৩/১১৩-১১৪)
4- إِنَّ الْأَبْرارَ لَفِي نَعِيمٍ -عَلَى الْأَرائِكِ يَنْظُرُونَ -تَعْرِفُ فِي وُجُوهِهِمْ نَضْرَةَ النَّعِيمِ- يُسْقَوْنَ مِنْ رَحِيقٍ مَخْتُومٍ- خِتامُهُ مِسْكٌ وَفِي ذلِكَ فَلْيَتَنافَسِ الْمُتَنافِسُونَ-
(৪) ‘নিশ্চয়ই নেককারগণ থাকবে জান্নাতে উচ্চাসনে বসে তারা অবলোকন করবে। তুমি তাদের চেহারাসমূহে স্বাচ্ছন্দ্যের প্রফুল্লতা দেখতে পাবে। তাদেরকে মোহরাংকিত বিশুদ্ধ পানীয় পান করানো হবে। তার মোহর হবে মিশকের। আর এরূপ বিষয়েই প্রতিযোগীদের প্রতিযোগিতা করা উচিত’ (মুত্বাফফেফীন ৮৩/২২-২৬)।
5- وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهاجِرِينَ وَالْأَنْصارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُمْ بِإِحْسانٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الْأَنْهارُ خالِدِينَ فِيها أَبَداً ذلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ-
(৫) ‘মুহাজির ও আনছারগণের মধ্যে যারা অগ্রবর্তী ও প্রথম দিককার এবং যারা তাদের অনুসরণ করেছে নিষ্ঠার সাথে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তষ্ট। তিনি তাদের জন্য প্রস্ত্তত রেখেছেন জান্নাত, যার তলদেশ দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহিত হয়। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আর এটাই হ’ল মহা সফলতা’ (তওবা ৯/১০০)।
হাদীছে নববী :
6- وعن عمر قال : أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا أَنْ نَتَصَدَّقَ فَوَافَقَ ذَلِكَ مَالاً عِنْدِى فَقُلْتُ الْيَوْمَ أَسْبِقُ أَبَا بَكْرٍ إِنْ سَبَقْتُهُ يَوْمًا فَجِئْتُ بِنِصْفِ مَالِى فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَبْقَيْتَ لأَهْلِكَ. قُلْتُ مِثْلَهُ.قَالَ وَأَتَى أَبُو بَكْرٍ رضى الله عنه بِكُلِّ مَا عِنْدَهُ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَبْقَيْتَ لأَهْلِكَ. قَالَ أَبْقَيْتُ لَهُمُ اللَّهَ وَرَسُولَهُ. قُلْتُ لاَ أُسَابِقُكَ إِلَى شَىْءٍ أَبَدًا-
(৬)
ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) আমাদেরকে ছাদাক্বাহ
করার নির্দেশ দেন। ঘটনাক্রমে সেদিন আমার কাছে মালও ছিল। আমি (মনে মনে)
বললাম, আজ আমি আবুবকর (রাঃ)-এর অগ্রগামী হব। যদিও আমি কোনো দিন দানে তার
অগ্রগামী হ’তে পারিনি। কাজেই আমি আমার অর্ধেক মাল নিয়ে উপস্থিত হ’লাম।
রাসূল (ছাঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, পরিবারের জন্য কি অবশিষ্ট রেখে এসেছ? আমি
বললাম, এর সমপরিমাণ। ওমর (রাঃ) বলেন, আর আবু বকর (রাঃ) তাঁর সমস্ত মাল
নিয়ে উপস্থিত হ’লেন। রাসূল (ছাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, পরিবারের জন্য কি
অবশিষ্ট রেখে এসেছ? তিনি বললেন, আল্লাহ আর তাঁর রাসূলকে রেখে এসেছি। তখন
ওমর (রাঃ) বললেন, আমি কখনো কোনো বিষয়েই আপনাকে অতিক্রম করতে পারব না’।[1]
7- عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِرَجُلٍ وَهُوَ يَعِظُهُ: اغْتَنِمْ خَمْسًا قَبْلَ خَمْسٍ: شَبَابَكَ قَبْلَ هِرَمِكَ، وَصِحَّتَكَ قَبْلَ سَقَمِكَ، وَغِنَاءَكَ قَبْلَ فَقْرِكَ، وَفَرَاغَكَ قَبْلَ شُغْلِكَ، وَحَيَاتَكَ قَبْلَ مَوْتِكَ-
(৭)
আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) এক ব্যক্তিকে উপদেশ
দিয়ে বলেন, পাঁচটি বস্ত্তকে পাঁচটির পূর্বে গনীমত জেনে মূল্যায়ন কর;
বার্ধক্যের পূর্বে তোমার যৌবনকে, অসুস্থতার পূর্বে তোমার সুস্থতাকে,
দারিদ্রের পূর্বে তোমার সচ্ছলতাকে, ব্যস্ততার পূর্বে তোমার অবসরকে এবং
মরণের পূর্বে তোমার জীবনকে’।[2]
8- عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ أَنْفَقَ زَوْجَيْنِ فِى سَبِيلِ اللَّهِ نُودِىَ فِى الْجَنَّةِ يَا عَبْدَ اللَّهِ هَذَا خَيْرٌ. فَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّلاَةِ دُعِىَ مِنْ بَابِ الصَّلاَةِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجِهَادِ دُعِىَ مِنْ بَابِ الْجِهَادِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّدَقَةِ دُعِىَ مِنْ بَابِ الصَّدَقَةِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصِّيَامِ دُعِىَ مِنْ بَابِ الرَّيَّانِ. قَالَ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا عَلَى أَحَدٍ يُدْعَى مِنْ تِلْكَ الأَبْوَابِ مِنْ ضَرُورَةٍ فَهَلْ يُدْعَى أَحَدٌ مِنْ تِلْكَ الأَبْوَابِ كُلِّهَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَعَمْ وَأَرْجُو أَنْ تَكُونَ مِنْهُمْ.
(৮)
আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে কেউ আল্লাহর পথে
জোড়া জোড়া ব্যয় করবে তাকে জান্নাতের দরজাসমূহ হ’তে ডাকা হবে, হে আল্লাহর
বান্দা! এটাই উত্তম। অতএব যে ছালাত আদায়কারী, তাকে ছালাতের দরজা হ’তে ডাকা
হবে। যে মুজাহিদ, তাকে জিহাদের দরজা হ’তে ডাকা হবে। যে ছিয়াম পালনকারী,
তাকে রাইয়্যান দরজা হ’তে ডাকা হবে। যে ছাদাক্বাহ দানকারী, তাকে ছাদাক্বাহর
দরজা হ’তে ডাকা হবে। এরপর আবু বকর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার
জন্য আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক, সকল দরজা হ’তে কাউকে ডাকার কোন প্রয়োজন
নেই, তবে কি কাউকে সব দরজা হ’তে ডাকা হবে? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, হ্যাঁ,
আমি আশা করি তুমি তাদের মধ্যে হবে’।[3]
9- عَنْ أَبِى ذَرٍّ أَنَّ نَاسًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالُوا لِلنَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ ذَهَبَ أَهْلُ الدُّثُورِ بِالأُجُورِ يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّى وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ وَيَتَصَدَّقُونَ بِفُضُولِ أَمْوَالِهِمْ. قَالَ أَوَلَيْسَ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لَكُمْ مَا تَصَّدَّقُونَ إِنَّ بِكُلِّ تَسْبِيحَةٍ صَدَقَةً وَكُلِّ تَكْبِيرَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلِّ تَحْمِيدَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلِّ تَهْلِيلَةٍ صَدَقَةٌ وَأَمْرٌ بِالْمَعْرُوفِ صَدَقَةٌ وَنَهْىٌ عَنْ مُنْكَرٍ صَدَقَةٌ وَفِى بُضْعِ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيَأْتِى أَحَدُنَا شَهْوَتَهُ وَيَكُونُ لَهُ فِيهَا أَجْرٌ قَالَ أَرَأَيْتُمْ لَوْ وَضَعَهَا فِى حَرَامٍ أَكَانَ عَلَيْهِ فِيهَا وِزْرٌ فَكَذَلِكَ إِذَا وَضَعَهَا فِى الْحَلاَلِ كَانَ لَهُ أَجْرٌ.
(৯)
আবু যার (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ)-এর কিছু সংখ্যক ছাহাবী তাঁর কাছে
এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! ধন-সম্পদের মালিকরা তো সব ছওয়াব নিয়ে নিচ্ছে।
কেননা আমরা যেভাবে ছালাত আদায় করি তারাও সেভাবে ছালাত আদায় করে। আমরা
যেভাবে ছিয়াম পালন করি তারাও সেভাবে ছিয়াম পালন করে। কিন্তু তারা তাদের
অতিরিক্ত সম্পদ দান করে ছওয়াব লাভ করছে অথচ আমাদের পক্ষে তা সম্ভব হচ্ছেনা।
রাসূল (ছাঃ) বললেন, আল্লাহ তা‘আলা কি তোমাদেরকে এমন কিছু দান করেননি যা
ছাদাক্বাহ করে তোমরা ছওয়াব পেতে পার? আর তা হলো প্রত্যেক তাসবীহ
(সুবহা-নাল্লাহ) একটি ছাদাক্বাহ, প্রত্যেক তাকবীর (আল্লাহু আকবার) একটি
ছাদাক্বাহ, প্রত্যেক তাহমীদ (আল-হামদু লিল্লাহ) বলা একটি ছাদাক্বাহ,
প্রত্যেক লা ইলাহা ইল্লাহ বলা একটি ছাদাক্বাহ, প্রত্যেক ভাল কাজের আদেশ
দেয়া এবং মন্দ কাজ করতে দেখলে নিষেধ করা ও বাধা দেয়া একটি ছাদাক্বাহ।
ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাদের কেউ তার কাম প্রবৃত্তিকে
চরিতার্থ করবে বৈধ পথে আর এতেও কি তার ছওয়াব হবে? তিনি বললেন, তোমরা বল
দেখি, যদি তোমাদের কেউ হারাম পথে নিজের চাহিদা মেটাতে বা যেনা করত তাহলে কি
তার গুনাহ হ’ত না? অনুরূপভাবে যখন সে হালাল বা বৈধ পথে কামাচার করবে তাতে
তার ছওয়াব হবে’।[4]
10- عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَادِرُوا بِالأَعْمَالِ فِتَنًا كَقِطَعِ اللَّيْلِ الْمُظْلِمِ يُصْبِحُ الرَّجُلُ مُؤْمِنًا وَيُمْسِى كَافِرًا أَوْ يُمْسِى مُؤْمِنًا وَيُصْبِحُ كَافِرًا يَبِيعُ دِينَهُ بِعَرَضٍ مِنَ الدُّنْيَا-
(১০)
আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, অাঁধার রাতের মতো ফিৎনা
আসার পূর্বেই তোমরা সৎ আমলের দিকে ধাবিত হও। সে সময় সকালে একজন মুমিন হ’লে
বিকেলে কাফির হয়ে যাবে। বিকেলে মুমিন হ’লে সকালে কাফির হয়ে যাবে। দুনিয়ার
সামগ্রীর বিনিময়ে সে তার দ্বীন বিক্রি করে বসবে’।[5]
মনীষীদের বক্তব্য :
১.
আহমাদ বিন হাম্বাল (রহঃ) বলেন, ‘মুসারা‘আতু ফীল খইর বা ভাল কাজের
প্রতিযোগিতা হলো ঐ সমস্ত কল্যাণকর ও প্রতিযোগিতামূলক কাজ যা দ্রুত সম্পন্ন
করতে হয়’।[6]
২. ইবনুল কাইয়্যিম জাওযী (রহঃ) মুসারা‘আত সম্পর্কে বলেন, ‘কত বনু আদম-ই যে অফুরন্ত ছওয়াব অর্জন না করে মূল্যবান সময় নষ্ট করছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। এই সময়
সমষ্টি
হ’ল একটি শস্যক্ষেতের মত। সে যেন মানুষকে ডেকে ডেকে বলছে আমাতে শস্য বপন
কর আর হাযার হাযার ফসল ঘরে তুলো। তবে কি কোন জ্ঞানীর (জ্ঞান/আমল) বীজ বপন
না করে অবহেলা করার অবকাশ রয়েছে কি?’।[7]
৩.
ছালেহ ইবনু আব্দুল ইবনু হামীদ বলেন, ‘দেরী না করে দ্রুত আল্লাহর
আনুগত্যমূলক কাজ করা এবং তা আমলের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়া’।[8]
৪. হযরত আলী (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর নির্ধারিত ফরযসমূহ আদায় করা’।[9]
সারবস্ত্ত :
১. ভাল কাজের প্রতিযোগিতা হ’ল সৎআমল, যাতে রয়েছে প্রভুর সন্তুষ্টি ও শয়তানের অসন্তুষ্টি।
২. ভাল কাজের প্রতিযোগিতা একজন মানুষকে অফুরন্ত নে‘মতে ভরপুর ‘জান্নাতুন নাঈম’ নামের এক মহাসফলতার দ্বারপ্রান্তে পোঁছে দেয়।
৩. ভাল কাজের প্রতিযোগিতা ব্যক্তিকে তার উভয় জাহানের কামিয়াবীর ব্যবস্থা কওে দেয়।
৪. ভাল কাজের প্রতিযোগী ব্যক্তির অভীষ্ট লক্ষ্যে পোঁছতে কোন বেগ পেতে হয় না, আবার তাকে নিরাশও হ’তে হয় না।
৫. ভাল কাজে প্রতিযোগী ব্যক্তিবর্গ কর্মগুণে বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবেন।
[1]. আবুদাউদ হা/১৬৭৮ ‘যাকাত’ অধ্যায়, ‘সমস্ত সম্পদ দানের অনুমতি সম্পর্কে’ অনুচ্ছেদ-৪১ ১ম খন্ড ৫২৬ পৃঃ; মিশকাত হা/৬০২১।
[2]. হাকেম হা/৭৮৪৬, শু‘আবুল ঈমান হা/১০২৪৮, ছহীহুল জা‘মে হা/১০৭৭।
[3]. বুখারী হা/১৮৯৭; মুসলিম হা/ ১০২৭; মিশকাত হা/১৮৯০।
[4].আহমাদ হা/২১৫১১; মুসলিম হা/১০০৬।
[5]. মুসলিম হা/১৮৬, ২১৩; মিশকাত হা/৫৩৮৩।
[6]. ইবনু মুফলেহ, ‘আল-আদাবুল শারঈয়্যাহ’ ২য় খন্ড ২৩৯ পৃঃ।
[7]. ছাইদুল খাত্বির, ৬০৩ পৃঃ।
[8]. ড. ছালেহ ইবনু আব্দুল হামীদ, মাউসূ‘আতু নাযরাতুন নাঈম ফি মাকারিমে আখলাকির রাসূল ছাল্লাহু ‘আলাইহিস সাল্লাম, ৮/৩৩৮৮ পৃঃ।
[9] .তাফসীরে কুরতুবী, ৪/১১৩ পৃঃ।