সাংবাদিকতায় আহলেহাদীছ জামা‘আতের অবদান (শেষ কিস্তি)

ড. নূরুল ইসলাম 1149 বার পঠিত

৩৪. ছওতুল উম্মাহ (صوت اﻷمة) আরবী মাসিক; প্রকাশস্থল : জামে‘আ সালাফিইয়াহ, বেনারস, সম্পাদক ড. মুক্তাদা হাসান আযহারী, প্রকাশকাল : নভেম্বর ১৯৬৯ খৃঃ মোতাবেক শা‘বান ১৩৮৯ হিঃ।[1] এই পত্রিকাটি জ্ঞান ও সংস্কৃতির পতাকাবাহী, সাহিত্যিক ও গবেষণামূলক প্রবন্ধমালার ভান্ডার এবং স্বীয় অসংখ্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ভারতের আরবী পত্রিকাগুলির মধ্যে অনন্য। এটি প্রথমে ‘ছওতুল জামে‘আহ’ নামে বের হওয়া শুরু হয় এবং প্রত্যেক তিন মাস অন্তর প্রকাশিত হত। আগস্ট ১৯৭৬ থেকে ‘মাজাল্লাতুল জামে‘আ আস-সালাফিইয়াহ’ নামে চালু হয়। কিছু আইনী বাঁধার কারণে জুলাই ১৯৮৬ থেকে ‘নাশরাহ’ নামে প্রকাশিত হতে শুরু করে এবং মার্চ ১৯৮৮ থেকে ‘ছওতুল উম্মাহ’ নামে আহলেহাদীছ জামা‘আত ও মুসলিম উম্মাহর খিদমত আঞ্জাম দিচ্ছে। এই পত্রিকাটি জামে‘আ সালাফিইয়াহ (মারকাযী দারুল উলূম), বেনারসের মুখপত্র।

৩৫. ছওতুল হক (صوت الحق) উর্দূ পাক্ষিক; প্রকাশস্থল : মানছূরাহ, মালেগাঁ, সম্পাদক মাওলানা আব্দুন নূর রাগিব, প্রকাশকাল : ৫ই ফেব্রুয়ারী ১৯৮১ মোতাবেক ২৯শে রবীউল আউয়াল ১৪০১ হিঃ। এই পত্রিকাটি জামে‘আ মুহাম্মাদিয়াহ, মালেগাঁ-এর মুখপত্র। এতে ধর্মীয়, সংস্কারমূলক ও সামাজিক প্রবন্ধমালা প্রকাশিত হয় এবং শেষ পৃষ্ঠাগুলিতে সংগঠন সংবাদও থাকে। এর অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হ’ল মুসলমানদের সামনে কুরআন ও সুন্নাহর শিক্ষাসমূহ তুলে ধরা এবং তাদেরকে বিদ‘আত ও কুসংস্কার থেকে বাঁচিয়ে ছিরাতে মু্স্তাক্বীমের দিকে ফিরিয়ে আনা।

১৯৮৩ সালে মাওলানা আব্দুর রাকীব সালাফী এর সম্পাদক হন। অতঃপর মাওলানা রফীক আহমাদ সালাফী। তারপর ১৯৮৫ সালের ২৭শে নভেম্বর থেকে শায়খ আনীসুর রহমান আ‘যমী এর সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর এই পত্রিকাটি প্রায় এক বছর যাবৎ বন্ধ থাকে। ১২ই রবীউল আউয়াল ১৪০৮ হিঃ মোতাবেক ৫ই নভেম্বর ১৯৮৭ সালে দ্বিতীয়বার এর প্রকাশনা শুরু হয় এবং মাওলানা আব্দুর রহমান আ‘যমীকে সম্পাদনার দায়িত্ব দেয়া হয়। ২৫শে মার্চ ১৯৯০ থেকে মাওলানা নূরুল আইন সালাফী এর সম্পাদক হন। তারপর ১৯৯৩ সাল থেকে মাওলানা আবু রিযওয়ান মুহাম্মাদী এর সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

৩৬. যুহূরুল ইসলাম (الاسلام ظہور) উর্দূ সাপ্তাহিক; প্রকাশস্থল : শ্রীনগর, কাশ্মীর।

৩৭. আল-ফালাহ (الفلاح) উর্দূ মাসিক; প্রকাশস্থল : ভেকমপুর, গোন্ডা, সম্পাদক মাওলানা সিরাজুল হক সালাফী, প্রকাশকাল : জুলাই ও আগস্ট ১৯৯১ মোতাবেক মুহাররম ১৪১২ হিঃ। এই পত্রিকায় ধর্মীয়, সংস্কারমূলক ও সামাজিক প্রবন্ধমালা প্রকাশিত হয়। মাওলানা আবুল আছ ওয়াহীদী কয়েক মাস এর সম্পাদক ছিলেন। সম্প্রতি এই পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে গেছে।

৩৮. কাছদুস সাবীল (السبىل قصد) উর্দূ সাপ্তাহিক; প্রকাশস্থল : শ্রীনগর, কাশ্মীর, সম্পাদক মুহাম্মাদ কাসেম শাহ তীবী, প্রকাশকাল : মার্চ ১৯৮৫ খৃঃ। এই পত্রিকায় কুরআন ও সুন্নাহর প্রচার-প্রসারে এবং শিরক ও বিদ‘আতের খন্ডনে প্রবন্ধমালা প্রকাশিত হয়।

৩৯. কওমী তানযীম (تنظىم قومى)  উর্দূ দৈনিক; প্রকাশস্থল : পাটনা, সম্পাদক  এস এম আশরাফ ফরীদ, প্রকাশকাল : অজ্ঞাত। এটি একটি রাজনৈতিক পত্রিকা। এতে স্থানীয়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সমূহ প্রকাশিত হয়।

৪০. কিয়াদাত (قىادت) উর্দূ পাক্ষিক; প্রকাশস্থল : কারীমী বিল্ডিং, আলীগড়, সম্পাদক ফাওক কারীমী, প্রকাশকাল : ১৯৯৪ খৃঃ।

৪১. মাজাল্লা আহলেহাদীছ (اہلحدیث) উর্দূ পাক্ষিক; প্রকাশস্থল : শুকরাওয়াহ, মেওয়াত, সম্পাদক : হাকীম আজমল খাঁ, প্রকাশকাল : ১৯৭৮ খৃঃ। ইদারাতুল মুআল্লিফীন, দিল্লী থেকে মাওলানা ছানাউললাহ অমৃতসরী (রহঃ)-এর স্মরণে প্রকাশিত ‘আখবারে আহলেহাদীছ’ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এটি চালু করা হয়। যাতে মাওলানার স্মৃতি জাগরুক থাকে। এতে ধর্মীয় ও গবেষণামূলক প্রবন্ধমালা প্রকাশিত হয়। শেষ পৃষ্ঠাগুলিতে সাংগঠনিক ও দেশীয় সংবাদ সমূহ প্রকাশিত হয়।

৪২. মুহাদ্দিছ (محدث) উর্দূ মাসিক; প্রকাশস্থল : জামে‘আ সালাফিইয়াহ, বেনারস, সম্পাদক : মাওলানা আব্দুল ওয়াহ্হাব হিজাযী, প্রকাশকাল : ফেব্রুয়ারী ১৯৮২ মোতাবেক রবীউল আখের ১৪০২ হিঃ। এই পত্রিকাটি জামে‘আ সালাফিইয়াহ (মারকাযী দারুল উলূম), বেনারসের মুখপত্র। এটি কুরআন ও সুন্নাহর নিরপেক্ষ ব্যাখ্যা, দ্বীনের সঠিক দাওয়াত ও তাবলীগ, নতুন ও পুরাতন মাসআলাসমূহে ইসলামের বিশুদ্ধ ও সারগর্ভ শিক্ষা সমূহের প্রতি দিকনির্দেশনা প্রদান, আধুনিক যুগের রুচি ও চাহিদার আলোকে মুসলিম মিল্লাতের জন্য সঠিক ও উপকারী পদক্ষেপ গ্রহণ, ইসলামপ্রিয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে বোঝাপড়া ও সহযোগিতা, ধর্মের নামে সৃষ্ট অনাচারের সংস্কার করতে গিয়ে ভ্রান্ত মতবাদ সমূহের খন্ডন করে। সেপ্টেম্বর ১৯৮৬ থেকে আগস্ট ১৯৮৭ পর্যন্ত কিছু সমস্যার কারণে এটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এর প্রথম সম্পাদক ছিলেন মাওলানা ছফিউর রহমান মুবারকপুরী। জামে‘আ সালাফিইয়াহ থেকে যখন তিনি পদত্যাগ করে ১৯৮৮ সালের সেপ্টেম্বর  মাসে মদীনা মুনাওয়ারায় চলে যান, তখন অক্টোবর ১৯৮৮ থেকে অদ্যাবধি এর সম্পাদক হিসাবে আছেন মাওলানা আব্দুল ওয়াহ্হাব হেজাযী।

৪৩. মুসলিম (مسلم) উর্দূ সাপ্তাহিক; প্রকাশস্থল : শ্রীনগর, কাশ্মীর, সম্পাদক : ছূফী আহমাদ মুসলিম, প্রকাশকাল : ১৯৪২ খৃঃ। এই পত্রিকাটি সম্পর্কে সম্পাদক ছাহেব  নিজেই লিখেছেন, ‘পত্রিকার অন্যান্য গবেষণামূলক, সাহিত্যিক, ঐতিহাসিক ও সংস্কারমূলক শিরোনাম সমূহ ছাড়াও ‘তাহক্বীকে মাসায়েল’ এর গুরুত্বপূর্ণ শিরোনাম রয়েছে। মুসলিম-এর প্রকাশনার তৃতীয় বছর চলাকালে ‘তাহকীকে মাসায়েল’ শীর্ষক গুরুত্বপূর্ণ কলামটির মাধ্যমে এর  শোভা বর্ধন করা হয়। এই কলামের প্রথম লেখক ছিলেন মুসলিম-এর প্রথম সম্পাদক মাওলানা মুবারকী। অতঃপর তাঁর জীবদ্দশাতেই তাঁর ইচ্ছানুযায়ী মাওলানা আব্দুল গনী শোপিয়ানী এই দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। অতঃপর এ দায়িত্ব পালনের জন্য মাওলানা আব্দুর রহমান নূরীকে নির্বাচন করা হয় এবং তার সময়েই ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের ঘটনা ঘটে। যার প্রভাব জম্মু-কাশ্মীরের উপরও এসে পড়ে। সেকারণ দশ বছর যাবৎ মুসলিম-এর প্রকাশনা বন্ধ থাকে। ১৯৫৭ সালে মুসলিম-এর নবযাত্রা শুরু হলে ১৯৫৮ সালের আগস্ট মাসে এর সম্পাদক হিসাবে মাওলানা নূরুদ্দীনকে নির্বাচন করা হয়। ১৯৮৪ সালে তাঁর মৃত্যু হলে মুসলিম-এর সম্পাদনার দায়িত্ব আমার উপর ন্যস্ত করা হয়’।[2] 

৪৪. আল-মানার (المنار) মালয়ালম মাসিক; প্রকাশস্থল : মুজাহিদ সেন্টার, কেরালা, সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ মূসা, প্রকাশকাল : অজ্ঞাত। এই পত্রিকাটি নাদওয়াতুল মুজাহিদীন-এর মুখপত্র। এটি প্রত্যেক ইংরেজী মাসের ১ তারিখে বের হয়। এতে ইসলামী দাওয়াত ও তাবলীগ সম্পর্কে অনেক প্রবন্ধ থাকে। যার মাধ্যমে মুসলিম সমাজের সংস্কার সাধন উদ্দেশ্য হয়ে থাকে।

৪৫. নেদায়ে ইসলাম (نداےۤ  اسلام) গুজরাটী মাসিক। এই পত্রিকাটি গুজরাটের আহলেহাদীছ জামা‘আতের প্রতিনিধিত্ব করে এবং মুখপত্রের ভূমিকা পালন করে।

৪৬. নওয়ায়ে ইসলাম (نواےۤ  اسلام) উর্দূ মাসিক; প্রকাশস্থল : দিল্লী, সম্পাদক মাওলানা আযীয ওমর সালাফী, প্রকাশকাল : জুলাই ১৯৮৪ খৃঃ। এই পত্রিকাটি ‘মাজালিসুদ দাওয়াহ আস-সালাফিইয়াহ’-এর গবেষণা, প্রচার ও সংস্কারমূলক পত্রিকা। এতে ধর্মীয়, সামাজিক ও ঐতিহাসিক প্রবন্ধমালা প্রকাশিত হয়। এর শেষ পৃষ্ঠাগুলিতে সংগঠন সংবাদ, বিজ্ঞপ্তি এবং গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংবাদ সমূহও প্রকাশিত হয়।

৪৭. নূরে তাওহীদ (توحىد نور) উর্দূ মাসিক; প্রকাশস্থল : মারকাযুত তাওহীদ, কৃষ্ণনগর, নেপাল। সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মান্নান সালাফী, প্রকাশকাল : মে ১৯৮৮ খৃঃ। এই পত্রিকায় ধর্মীয়, সংস্কারমূলক এবং সামাজিক প্রবন্ধমালা প্রকাশিত হয়। এর শেষ পৃষ্ঠাগুলিতে মুসলিম বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ সমূহের সাথে সাথে সেগুলির যথোপযু্ক্ত  পর্যালোচনাও থাকে। এর প্রথম সম্পাদক ছিলেন মাওলানা আব্দুল্লাহ মাদানী। বর্তমানে তিনি এর প্রধান সম্পাদক। এর কভারপেজে লেখা আছে  يَهْدِي اللَّهُ لِنُورِهِ مَنْ يَشَاءُ ‘আল্লাহ যাকে ইচ্ছা স্বীয় জ্যোতির দিকে পরিচালিত করেন’ (নূর ২৪/৩৫)। মাওলানা আব্দুল মান্নান সালাফীর পদত্যাগের পর এপ্রিল ১৯৯৬ থেকে এর সম্পাদক ছিলেন মাওলানা আব্দুল্লাহ মাদানী। বর্তমানে এর সম্পাদক মাওলানা মুতীউল্লাহ মাদানী।

৪৮. আল-হুদা (الہدى) উর্দূ পাক্ষিক; প্রকাশস্থল : মাদরাসা আহমাদিয়া সালাফিইয়াহ, দারভাঙ্গা, বিহার। সম্পাদক ড. সাইয়িদ আব্দুল হাফীয সালাফী, প্রকাশকাল : ১৯৪০ খৃঃ। প্রথমে এই পত্রিকাটি মাদরাসা আহমাদিয়া সালাফিইয়াহ, দারভাঙ্গা, বিহার-এর পক্ষ থেকে সাপ্তাহিক হিসাবে বের হচ্ছিল। অতঃপর পাক্ষিক করা হয়। এতে মূল্যবান ধর্মীয়, গবেষণামূলক ও ঐতিহাসিক প্রবন্ধমালা প্রকাশিত হয়। বরাবর এই পত্রিকার সম্পাদক পরিবর্তন হতে থাকে। ১৯৫২ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত মাওলানা মুহাম্মাদ ইদরীস আযাদ রহমানী এর সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর মাওলানা মুহাম্মাদ আকিল রহমানী।

৪৯. আল-হেলাল (الہلال) উর্দূ মাসিক; প্রকাশস্থল : জামে‘আ সালাফিইয়াহ, জনকপুর, নেপাল, সম্পাদক আব্দুল মজীদ  পোখহারাবী, প্রকাশকাল : রামাযান ১৪১১ হিঃ। এই পত্রিকাটি মুসলিম কালচারাল সেন্টারের মুখপত্র। কুরআন ও সুন্নাহর পুনর্জীবন, শিরক ও বিদ‘আতের মূলোৎপাটন এবং নেপালের অপরিচিত পরিবেশে উর্দূর উন্নতি-অগ্রগতি এর উদ্দেশ্য। এতে ধর্মীয়, সংস্কারমূলক ও সামাজিক প্রবন্ধমালা প্রকাশিত হয়। এই পত্রিকাটি ধারাবাহিকভাবে আট মাস প্রকাশিত হওয়ার পর চার মাস বন্ধ থাকে। ১৪১২ হিজরীর রামাযান মাসে দ্বিতীয়বার প্রকাশিত হয়। এর কভারপেজে লেখা আছে- وَلَا تَهِنُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَنْتُمُ الْأَعْلَوْنَ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ- ‘আর তোমরা হীনবল হয়ো না, চিন্তান্বিত হয়ো না। তোমরাই বিজয়ী যদি তোমরা মুমিন হও’ (আলে ইমরান ৩/১৩৯)

৫০. আস-সিরাজ (السراج) উর্দূ মাসিক; প্রকাশস্থল : জামে‘আ সিরাজুল উলূম আস-সালাফিইয়াহ, ঝান্ডানগর, নেপাল। সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রকাশকাল : মুহাররম ১৪১৫ হিঃ মোতাবেক জুন ১৯৯৪ খৃঃ। এই পত্রিকাটি জামে‘আ সিরাজুল উলূম আস-সালাফিইয়াহ, ঝান্ডানগর, নেপাল-এর মুখপত্র। এতে ধর্মীয়, সংস্কারমূলক, সামাজিক এবং ঐতিহাসিক প্রবন্ধমালা প্রকাশিত হয়। এর প্রকাশকাল সম্পর্কে এর প্রধান সম্পাদক মাওলানা শামীম আহমাদ নাদভী লিখেছেন যে, ‘এই প্রথম সংখ্যা বের করার সাথে সাথেই আমরা এই মুহাররম মাস থেকে নুতন হিজরী সনে পদার্পণ করছি। আমরা নব উদ্দীপনা ও আশা-আকাঙ্খার সাথে নতুন বছরকে স্বাগত জানাচ্ছি’।[3] এই পত্রিকার সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মুবীন নাদভীর পদত্যাগের পর জুন ১৯৯৬ থেকে অদ্যাবধি মাওলানা আব্দুল মান্নান সালাফী এর সম্পাদক হিসাবে আছেন।

৫১. মাজাল্লায়ে তূবা (طوبى) উর্দূ মাসিক; প্রকাশস্থল : জামে‘আ ইবনু তায়মিয়াহ, পূর্ব চামপারান, বিহার। প্রকাশকাল : জানুয়ারী ২০০১, সম্পাদক মুহাম্মাদ আরশাদ মাদানী। এই পত্রিকাটি জামে‘আ ইবনু তায়মিয়াহ-এর মুখপত্র। এতে ধর্মীয়, সংস্কারমূলক এবং ঐতিহাসিক প্রবন্ধমালা প্রকাশিত হয়। পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় ‘জামে‘আহ কে শব ওয়া রোয’ শিরোনামে জামে‘আর সংবাদ প্রকাশিত হয়।

৫২. আল-ইহসান (الاحسان) উর্দূ মাসিক; প্রকাশস্থল : জামে‘আ নগর; ওখলা, নয়াদিল্লী , প্রকাশকাল : মে ২০০১। সম্পাদক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ সালাফী, প্রধান সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মুঈদ মাদানী। এই পত্রিকার অধিকাংশ প্রবন্ধ প্রধান সম্পাদকের লিখিত, যেগুলি বিভিন্নজনের নামে প্রকাশ করা হয়। এই পত্রিকার বিষয়বস্ত্ত সম্পর্কে প্রধান সম্পাদক লিখেছেন যে, ‘আমাদের সামনে একটি লক্ষ্য রয়েছে। যা নিম্নরূপ- চিঠিপত্র, দৃষ্টিপাত, কুরআন বিষয়ক আলোচনা, সুস্পষ্ট দলীল, আক্বীদা, শিক্ষা, মূলনীতি, নৈতিকতা, ইবাদত, ফিক্বহ, আধ্যাত্মিকতা, ভ্রমণস্মৃতি, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জীবনী, সাহিত্য, মহিলাদের পাতা, প্রবন্ধ, প্রশ্নোত্তর, বিশ্ব সংবাদ, দেশীয় সংবাদ, সমালোচনা, প্রকাশনা’। অতঃপর সামনে লিখেছেন, ‘ভবিষ্যতে চেষ্টা থাকবে যে, এ সকল কলামে যেন প্রবন্ধমালা প্রকাশিত হয় এবং এমনভাবে বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করা হবে যে, বিশেষভাবে জ্ঞানী-গুণী এবং সাধারণভাবে আম জনতা এথেকে কিছু অর্জন করতে পারে’।

৫৩. মাজাল্লা আল-ফুরকান (الفرقان) উর্দূ ত্রৈমাসিক; প্রকাশস্থল : জামে‘আ খায়রুল উলূম, ডুমুরিয়াগঞ্জ, সিদ্ধার্থনগর, প্রকাশকাল : জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী ১৯৯৭। সম্পাদক মাওলানা আব্দুল হাফীয নাদভী, প্রধান সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মা‘বূদ সালাফী। এই পত্রিকাটি শুরু থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত দ্বি-মাসিক ছিল। জানুয়ারী ১৯৯৯ থেকে ত্রৈমাসিক হয়ে গেছে। এটি জামে‘আ খায়রুল উলূম, ডুমুরিয়াগঞ্জ-এর মুখপত্র। এতে ধর্মীয় এবং গবেষণামূলক প্রবন্ধমালা প্রকাশিত হয়। এর কভারপেজে লেখা আছে هُدًى لِلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ  ‘যা মানুষের জন্য সুপথ প্রদর্শক ও সুপথের স্পষ্ট ব্যাখ্যা এবং সত্য ও মিথ্যার পার্থক্যকারী’ (বাক্বারাহ ২/১৮৫)। এর প্রথম সম্পাদক ছিলেন মাওলানা আব্দুল মুবীন নাদভী। তাঁর পদত্যাগের পর জানুয়ারী-সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ পর্যন্ত এর সম্পাদক ছিলেন মাওলানা আব্দুর রহমান লায়ছী। অতঃপর অক্টোবর ১৯৯৯ থেকে সেপ্টেম্বর ২০০৭ পর্যন্ত মাওলানা নিয়ায আহমাদ তৈয়বপুরী, অক্টোবর ২০০৭ থেকে জুন ২০০৮ পর্যন্ত মাওলানা যাকী নূর আযীমাবাদী অতঃপর জুলাই ২০০৮ থেকে ডিসেম্বর ২০০৮ পর্যন্ত মাওলানা শাববীর আহমাদ সালাফী এর সম্পাদক ছিলেন। তারপর থেকে অদ্যাবধি মাওলানা আব্দুল হাফীয নাদভী এর সম্পাদক হিসাবে আছেন।

৫৪. নিদাউছ ছাফা (الصفا نداء)  উর্দূ মাসিক; প্রকাশস্থল : ডুমুরিয়াগঞ্জ, সিদ্ধার্থনগর, প্রকাশকাল : ডিসেম্বর ১৯৯৯। সম্পাদক মাওলানা রফীক আহমাদ রাঈস সালাফী, প্রধান সম্পাদক মাওলানা আব্দুল ওয়াহিদ মাদানী। এই পত্রিকাটি জানুয়ারী ২০০৪ থেকে দ্বি-মাসিক হয়ে গেছে। এর প্রথম সম্পাদক ছিলেন আবুল আছ ওয়াহীদী। প্রথমে এই পত্রিকার নাম ছিল আছ-ছাফা। ২০০৫ সালে এর নাম পরিবর্তন করে ‘নিদাউছ ছাফা’ রাখা হয়েছে। বর্তমানে এর সম্পাদক মাওলানা আব্দুল ওয়াহিদ মাদানী। এতে ধর্মীয়, সংস্কারমূলক ও তাবলীগী প্রবন্ধমালা প্রকাশিত হয়।

৫৫. মাজাল্লা ইহতিসাব (احتساب) ত্রৈমাসিক উর্দূ, প্রকাশস্থল : জামে‘আ ইসলামিয়া দরিয়াবাদ, সুন্নাত কবীর নগর, প্রকাশকাল : এপ্রিল-জুন ২০০৬। সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ জা‘ফর আনওয়ারুল হক, প্রধান সম্পাদক মাওলানা আতীকুর রহমান নাদভী। এই পত্রিকাটি জামে‘আ ইসলামিয়া, দরিয়াবাদ-এর মুখপত্র। এতে ধর্মীয়, সংস্কারমূলক এবং গবেষণামূলক প্রবন্ধমালা প্রকাশিত হয়। এই পত্রিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য এই যে, জামা‘আতী পত্র-পত্রিকায় যদি কোন মাসআলা বর্ণনার প্রয়োজনের আলোকে সাব্যস্ত করা হয়। তবে সেটি পর্যালোচনা করে। অতঃপর ছহীহ হাদীছ সমূহের আলোকে সেই মাসআলাটি সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে।

[লেখক : সাবেক শায়খুল জামেআহ, জামেআ সালাফিইয়াহ, বেনারস, ভারতঅনুবাদক : গবেষণা সহকারী, হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এবং ভাইস পিন্সিপাল, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী]


[1]. বর্তমানে এর সম্পাদক জামেআর শিক্ষক আসআদ আযমী বিন মুহাম্মাদ আনছারী।-অনুবাদক

[2]. মুসলিম, বর্ষ ৪৬, সংখ্যা ১৯, ২২শে জুন ১৯৮৯।

[3]. আস-সিরাজ, জুন ১৯৯৪, পৃঃ ৫।



বিষয়সমূহ: সংগঠন
আরও