পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের করণীয় (পূর্ব প্রকাশিতের পর)

আব্দুর রহীম 10471 বার পঠিত

পিতার-মাতা সাথে সদাচরণের উপদেশ :

আল্লাহর উপদেশ : আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ وَهْناً عَلَى وَهْنٍ وَّفِصَالُهُ فِيْ عَامَيْنِ أَنِ اشْكُرْ لِيْ وَلِوَالِدَيْكَ إِلَيَّ الْمَصِيْرُ. ‘আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট স্বীকার করে গর্ভে ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানো হয় দু’বছরে। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে’ (লোক্বমান ৩১/ ১৪)

পিতার-মাতা আনুগত্যের ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ)-এর উপদেশ :

হাদীছে এসেছে, وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ رضي الله عنه قَالَ: أَوْصَانِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِتِسْعٍ: لَا تُشْرِكْ بِاللهِ شَيْئًا , وَإِنْ قُطِّعْتَ أَوْ حُرِّقْتَ، وَلَا تَتْرُكَنَّ الصّلَاةَ الْمَكْتُوبَةَ مُتَعَمِّدًا، فَمَنْ تَرَكَهَا مُتَعَمِّدًا بَرِئَتْ مِنْهُ الذِّمَّةُ , وَلَا تَشْرَبَنَّ الْخَمْرَ، فَإِنَّهَا مِفْتَاحُ كُلِّ شَرٍّ، وَأَطِعْ وَالِدَيْكَ، وَإِنْ أَمَرَاكَ أَنْ تَخْرُجَ مِنْ دُنْيَاكَ، فَاخْرُجْ لَهُمَا، وَلَا تُنَازِعَنَّ وُلاةَ الْأَمْرِ، وَإِنْ رَأَيْتَ أَنَّكَ أَنْتَ  وَلَا تَفْرُرْ مِنَ الزَّحْفِ، وَإِنْ هَلَكْتَ وَفَرَّ أَصْحَابُكَ، وَأَنْفِقْ مِنْ طَوْلِكَ عَلَى أَهْلِكَ، وَلَا تَرْفَعْ عَصَاكَ عَنْ أَهْلِكَ، وَأَخِفْهُمْ فِي اللهِ –  আবুদ্দারদা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ)-আমাকে নয়টি ব্যাপারে অছিয়ত করেছেন, (১) আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না, যদিও তোমাকে হত্যা করা হয় অথবা অগ্নিদগ্ধ করা হয়। (২) ইচ্ছাকৃতভাবে ফরয ছালাত ত্যাগ করো না, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ফরয ছালাত ত্যাগ করবে তার সম্পর্কে আমার কোন দায়িত্ব নাই। (৩) মদ্যপান করো না, কেননা তা সকল অনাচারের চাবি। (৪) তোমার পিতা-মাতার আনুগত্য করবে, তারা যদি তোমাকে দুনিয়া ছাড়তেও আদেশ করেন তবে তাই করবে। (৫) শাসকদের সাথে বিবাদে জড়াবে না, যদিও দেখো যে, তুমিই তুমি (হক্বের উপর প্রতিষ্ঠিত)। (৬) যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করো না, যদিও তুমি ধ্বংস হও এবং তোমার সঙ্গীরা পলায়ন করে। (৭) তোমার সামর্থ্য অনুসারে পরিবারের জন্য ব্যয় করো। (৮) তোমার পরিবারের উপর থেকে লাঠি তুলে রাখবে না (অর্থাৎ শাসনের মধ্যে রাখবে) এবং (৯) তাদের মধ্যে মহামহিম আল্লাহর ভয় জাগ্রত রাখবে’।[1] অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তিনি বলেন, وَأَطِعْ وَالِدَيْكَ وَإِنْ أَخْرَجَاكَ مِنْ مَالِكَ وَكُلِّ شَيْءٍ هُوَ لَكَ ‘ তোমার পিতার-মাতা আনুগত্য করবে যদি তারা তোমাকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করে এবং তোমাদের উপার্জিত সম্পদ থেকে বের করে দেয়’। [2]

আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর উপদেশ :

হাদীছে এসেছে, عَنْ عُرْوَةَ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَبْصَرَ رَجُلَيْنِ، فَقَالَ لِأَحَدِهِمَا: مَا هَذَا مِنْكَ، قَالَ: أَبِي، قَالَ: لَا تُسَمِّهِ بِاسْمِهِ، وَلَا تَمْشِ أَمَامَهُ، وَلَا تَجْلِسْ قَبْلَهُ - উরওয়াহ হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আবু হুরায়রা (রাঃ) দুই ব্যক্তিকে দেখে তাদের একজনকে জিজ্ঞেস করেন, ইনি তোমার কে হন? সে বলল, তিনি আমার পিতা। তিনি বলেন, তাকে নাম ধরে ডেকো না, তার আগে আগে চলো না এবং তার আগে বসো না বা তার সামনে বসো না’।[3]

পিতার-মাতা সাথে সদ্ব্যবহার করার কতিপয় উদাহরণ ও উপায় :

ঈসা (আঃ)-এর উদাহরণ :

ঈসা (আঃ) মায়ের সেবা করতেন। তিনি শিশুকালেই সবার সামনে বলেছিলেন, আল্লাহ আমাকে মায়ের সাথে সদাচরণ করার উপদেশ দিয়েছেন। তিনি এর পরেই বলছেন, আল্লাহ আমাকে অহংকারী ও হতভাগ্য করেননি। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, যার মধ্যে অহংকার রয়েছে, সে পিতার-মাতা সেবা করতে পারবেনা। এজন্য আল্লাহ তা‘আলা পিতা-মাতার খেদমতকারী হিসাবে ঈসা (আঃ)-এর নাম উল্লেখ করার পর তার অহংকারী না হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَأَوْصَانِي بِالصَّلاةِ وَالزَّكَاةِ مَا دُمْتُ حَيّاً, وَبَرّاً بِوَالِدَتِي وَلَمْ يَجْعَلْنِي جَبَّاراً شَقِيّاً- ‘আর তিনি আমাকে বরকতমন্ডিত করেছেন, যেখানেই আমি থাকি না কেন এবং তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন ছালাতের ও যাকাতের যতদিন আমি বেঁচে থাকি। (এবং নির্দেশ দিয়েছেন) আমার মায়ের প্রতি অনুগত থাকতে। আর তিনি আমাকে উদ্ধত ও হতভাগ্য করেননি’ (মারিয়াম ১৯/৩২, আমার মায়ের প্রতি অনুগত থাকতে কথার মধ্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে যে, ঈসা বিনা বাপে সৃষ্ট হয়েছিলেনকুরআনে সর্বত্র ঈসা ইবনে মারিয়াম বলা হয়েছে তার মার দিকে সম্বন্ধ করেযা অন্য কোন নবীর শানে বলা হয়নি।)।

ইয়াহ্ইয়া (আঃ)-এর উদাহরণ :

ইয়াহ্ইয়া (আঃ) পিতার-মাতা সাথে সুন্দর আচরণ করতেন। প্রত্যেক নবী-রাসূলই মাতা-পিতার সাথে সদাচরণ করেছেন। তাদের মধ্যে যারা এই সৎ কাজের জন্য বিখ্যাত আল্লাহ কেবল তাদেরই নাম উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহ্য়াহ (আঃ)-এর প্রশংসা করে বলেন,وَبَرًّا بِوَالِدَيْهِ وَلَمْ يَكُنْ جَبَّارًا عَصِيًّا- ‘আর তিনি (ইয়াহ্ইয়া) ছিলেন তার পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণকারী এবং তিনি উদ্ধত ও অবাধ্য ছিলেন না’ (মারিয়াম ১৯/১৪)। অর্থাৎ তিনি মাতা-পিতার অবাধ্যতা করতেন না এবং কাউকে হত্যার মাধ্যমে তাঁর রবেরও অবাধ্যতা করেননি (তাফসীরে দুর্রুল মানশুর ৫/৪৮৭)। ইয়াহ্ইয়া (আঃ) পবিত্রতা, তাক্বওয়ার নীতি অবলম্বন ও মাতা-পিতার সাথে সদাচরণের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তিন সময়ে তার প্রতি শান্তি বর্ষণ করেন। তার জন্মের সময়, মৃত্যের সময় ও পুনরূত্থানের সময় (তাফসীরে ইবনু কাছীর ৫/২১৭, সূরা মারিয়ামের ১৪-১৫ আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য)

ইবরাহীম (আঃ)-এর উদাহরণ :

পিতা মুশরিক হওয়া সত্ত্বেও ঘৃণা বা অবজ্ঞা না করে বরং অতি ভদ্র ভাষায় বাবার সাথে কথা বলায় আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-এর প্রশংসা করেছেন এবং কুরআনে পিতার সাথে সদ্ব্যবহারের উদাহরণ উপস্থাপন করেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ يَاأَبَتِ لِمَ تَعْبُدُ مَا لَا يَسْمَعُ وَلَا يُبْصِرُ وَلَا يُغْنِي عَنْكَ شَيْئًا - يَاأَبَتِ إِنِّي قَدْ جَاءَنِي مِنَ الْعِلْمِ مَا لَمْ يَأْتِكَ فَاتَّبِعْنِي أَهْدِكَ صِرَاطًا سَوِيًّا - يَاأَبَتِ لَا تَعْبُدِ الشَّيْطَانَ إِنَّ الشَّيْطَانَ كَانَ لِلرَّحْمَنِ عَصِيًّا-يَاأَبَتِ إِنِّي أَخَافُ أَنْ يَمَسَّكَ عَذَابٌ مِنَ الرَّحْمَنِ فَتَكُونَ لِلشَّيْطَانِ وَلِيًّا- ‘যখন তিনি তার পিতাকে বললেন, হে পিতা! কেন তুমি ঐ বস্ত্তর পূজা কর যে শোনে না, দেখে না বা তোমার কোন কাজে আসে না? হে আমার পিতা! আমার নিকটে এমন জ্ঞান এসেছে, যা তোমার কাছে আসেনি। অতএব তুমি আমার অনুসরণ কর। আমি তোমাকে সরল পথ দেখাব।হে আমার পিতা! আমার ভয় হয় যে, (এই অবস্থায় দি তুমি মৃত্যু বরণ কর) দয়াময়ের পক্ষ হতে শাস্তি তোমাকে স্পর্শ করবে। আর তখন তুমি শয়তানের সাথী হয়ে পড়বে। হে আমার পিতা! শয়তানের পূজা করো না। নিশ্চয়ই শয়তান হ’ল দয়াময়ের অবাধ্য’ (মারিয়াম ১৯/৪২-৪৫)

ছাহাবী হারেছা বিন নুমানের উদাহরণ:

তিনি মায়ের সেবায় নিয়োজিত থাকায় রাসূল (ছাঃ) তাকে জান্নাতে কুরআন তিলাওয়াত করতে শুনেছেন। তিনি তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। যেমন হাদীছে এসেছে, عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ  قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم:  نِمْتُ فَرَأَيْتُنِى فِى الْجَنَّةِ فَسَمِعْتُ صَوْتَ قَارِئٍ يَقْرَأُ، فَقُلْتُ : مَنْ هَذَا؟ قَالُوا : هَذَا حَارِثَةُ بْنُ النُّعْمَانِ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم: كَذَاكَ الْبِرُّ كَذَاكَ الْبِرُّ، وَكَانَ أَبَرَّ النَّاسِ بِأُمِّهِ- আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেন, আমি ঘুমালাম। তারপর স্বপ্নে আমাকে জান্নাতে দেখলাম। এরপর একজন ক্বারীর তিলাওয়াত শুনতে পেলাম। আমি বললাম, এটা কে? তারা বললেন, ইনি হারেছাহ বিন নু‘মান। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, এটিই সদাচরণের পুরস্কার, এটিই সদাচরণের পুরস্কার। আর তিনি মাতার সাথে সবার থেকে বেশী সদাচরণকারী ছিলেন’। [4]

আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর উদাহরণ :

ছাহাবী আবু হুরায়রা (রাঃ) ছিলেন মায়ের সেবাপরায়ণ। তিনি প্রায়ই মায়ের কাছে গিয়ে দেখা করতেন এবং তার জন্য দো‘আ করতেন। যেমন হাদীছে এসেছে-  وَعَنْ أَبِي مُرَّةَ مَوْلَى أُمِّ هَانِئِ ابْنَةِ أَبِي طَالِبٍ قَالَ: كُنْتُ أَرْكَبُ مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ  رضي الله عنه  إِلَى أَرْضِهِ بِالْعَقِيقِ  فَإِذَا دَخَلَ أَرْضَهُ صَاحَ بِأَعْلَى صَوْتِهِ: عَلَيْكِ السَّلاَمُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ يَا أُمَّتَاهُ، تَقُولُ: وَعَلَيْكَ السَّلاَمُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ، يَقُولُ: رَحِمَكِ اللهُ , رَبَّيْتِنِي صَغِيرًا، فَتَقُولُ: يَا بُنَيَّ، وَأَنْتَ فَجَزَاكَ اللهُ خَيْرًا وَرَضِيَ عَنْكَ كَمَا بَرَرْتَنِي كَبِيرًا- আবু তালিব কন্যা উম্মে হানী (রাঃ)-র মুক্তদাস আবু মুররা (রহঃ) বর্ণনা করেন যে, তিনি আকীক নামক স্থানে অবস্থিত আবু হুরায়রা (রাঃ)-র সাথে তার খামার বাড়ীতে একই বাহনে আরোহণ করে গমন করেন। তিনি তার বাড়িতে পৌঁছে উচ্চস্বরে বলেন, ওহে জননী! তোমার প্রতি শান্তি, আল্লাহর রহমত ও তার বরকত নাযিল হৌক। তার মা বলেন, তোমার প্রতি শান্তি, আল্লাহর রহমত ও তার বরকত নাযিল হৌক। আবার আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, ছোটকালে তুমি আমাকে যেভাবে রহমতের কোলে লালন-পালন করেছিলে আল্লাহ তোমাকে সেভাবে লালন-পালন করুক। তার মা বলেন, হে বৎস! আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন যে তুমি আমার সাথে যেভাবে বৃদ্ধাকালে সদাচরণ করছ’।[5] অন্য বর্ণনায় রয়েছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) প্রতিদিন তার মাতার কাছে প্রবেশের সময় উক্ত দো‘আ পাঠ করতেন এবং তার মাও জওয়াবে দো‘আ করে দিতেন’। [6]

হযরত ওয়ায়েস কারনী (রহঃ)-এর উদাহরণ :

তিনি মায়ের সেবায় নিয়োজিত থাকার কারণে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেননি। এজন্য রাসূল (ছাঃ) তার প্রশংসা করেছেন এবং তার সাথে সাক্ষাৎ হলে তার নিকট দু‘আ চাইতে বলেছেন। হাদীছে এসেছে,

উসায়ের ইবনু জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ওমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এর অভ্যাস ছিল, যখন ইয়ামনের কোন সাহায্যকারী দল তার কাছে আসত তখন তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করতেন, তোমাদের মধ্যে কি ওয়ায়েস ইবনু আমির আছে? অবশেষে তিনি ওয়ায়েসকে পান। তখন তিনি বললেন, তুমি কি ওয়ায়েস ইবনু আমির? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, মুরাদ গোত্রের কারান বংশের? তিনি বললেন, হ্যাঁ। জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি শ্বেত রোগ ছিল এবং তা নিরাময় হয়েছে, কেবলমাত্র এক দিরহাম স্থান ব্যতীত? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মা কি আছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন ওমর (রাঃ) বললেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘তোমাদের কাছে মুরাদ গোত্রের কারান বংশের ওয়ায়েস ইবনু আমির ইয়ামানের সাহায্যকারী দলের সঙ্গে আসবে। তাঁর ছিল শ্বেত রোগ। পরে তা নিরাময় হয়ে গিয়েছে। কেবলমাত্র এক দিরহাম ব্যতিরেকে। তার মা রয়েছেন। সে তাঁর প্রতি অতি সেবাপরায়ন। এমন ব্যক্তি আল্লাহর উপর কসম করে নিলে আল্লাহ তা পূর্ণ করে দেন। কাজেই যদি তুমি তোমার জন্য তার কাছে মাগফিরাতের দু‘আ কামনার সুযোগ পাও তাহ’লে তা করবে’। সুতরাং আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের দু‘আ করুন। তখন ওয়ায়েস (রহঃ) তার মাগফিরাতের জন্য দু‘আ করলেন। এরপর উমার (রাঃ) তাকে বললেন, তুমি কোথায় যেতে চাও? তিনি বললেন, কুফা এলাকায়। উমার (রাঃ) বললেন, আমি কি তোমার জন্য কুফার গভর্ণরের কাছে চিঠি লিখে দেব? তিনি বললেন, আমি অখ্যাত গরীব লোকদের মধ্যে থাকাই পসন্দ করি। বর্ণনাকারী বলেন, পরবর্তী বছরে তাদের অভিজাত লোকদের মধ্যে এক ব্যক্তি হজ্জ করতে এলো এবং ওমর (রাঃ) এর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হ’ল। তখন তিনি তাকে ওয়ায়েস কারনী (রহঃ) এর অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। সে বলল, আমি তাঁকে জীর্ণ ঘরে সম্পদহীন অবস্থায় রেখে এসেছি। তিনি বললেন, আমি রাসুল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন, তোমাদের কাছে কারান বংশের মুরাদ গোত্রের ওয়ায়েস ইবনু আমির (রহঃ) ইয়ামানের সাহায্যকারীর সেনাদলের সঙ্গে আসবে। তার শ্বেত রোগ ছিল। সে তা থেকে আরোগ্য লাভ করে, এক দিরহাম পরিমাণ স্থান ব্যতীত। তাঁর মা রয়েছেন, সে তার অতি সেবাপরায়ণ। যদি সে আললাহর নামে কসম খায় তবে আল্লাহ তা‘আলা তা পূর্ণ করে দেন। তোমরা নিজের জন্য তাঁর কাছে মাগফিরাতের দু‘আ চাওয়ার সুযোগ পেলে তা করবে। পরে অভিজাত সে ব্যক্তি ওয়ায়েস (রহঃ) এর কাছে এল এবং বলল, আমার জন্য মাগফিরাত এর দু‘আ করুন। তিনি বললেন, আপনি তো নেক সফর (হজ্জের সফর) থেকে সদ্য আগত। সুতরাং আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের দু‘আ করুন। সে ব্যক্তি বলল আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের এর দু‘আ করুন। ওয়ায়েস (রহঃ) বললেন, আপনি সদ্য নেক সফর থেকে এসেছেন আপনি আমার জন্য মাগফিরাতের এর দু‘আ করুন। এরপর তিনি বললেন। আপনি কি উমর (রাঃ) এর সাক্ষাৎ লাভ করেছেন? সে বলল, হ্যাঁ। তখন তিনি তার জন্য মাগফিরাতের দু’আ করলেন। তখন লোকেরা তার (মর্যাদা) সম্পর্কে অবহিত হল। তারপর তিনি যেদিকে মুখ সেদিকে চললেন (অর্থাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন)। ওয়ায়েস (রহঃ) বলেন, আমি তাকে একখানি ডোরাদার চাদর দিয়েছিলাম। এরপর যখন কোন ব্যক্তি তাকে দেখত তখন বলত, ওয়ায়েসের এই চাদরখানি কোথায় গেল?[7]

মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহঃ)-এর উদারহণ:

ইবনু আওন বলেন, كَانَ مُحَمَّدُ بْنُ سِيرِينَ إِذَا كَانَ عِنْدَ أَمِّهِ، خَفَضَ مِنْ صَوْتِهِ، وَتَكَلَّمَ رُوَيْدًا মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন যখন মায়ের নিকট থাকতেন তখন কণ্ঠস্বর নীচু করতেন এবং ধীরে ধীরে কথা বলতেন’।[8] অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হিশাম বিন হাস্সান বলেন, مَا رَأَيْتُ مُحَمَّدَ بْنَ سِيرِينَ يُكَلِّمُ أُمَّهُ قَطُّ إِلَّا وَهُوَ يَتَضَرَّعُ-

আমি কখনো মুহাম্মাদ ইবনু সীরীনকে তার মায়ের সাথে বিনয় ব্যতীত কথা বলতে দেখেনি’। [9]

উছমান বিন আফফান (রাঃ)-এর উদাহরণ :

হাদীছে এসেছে, عن عائشة رضي الله عنها تقول:  رَجُلانِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَا أَبَرَّ مَنْ كَانَ فِي هَذِهِ الأُمَّةِ بِأُمِّهِمَا ، فَيُقَالُ لَهَا : مَنْ هُمَا ؟ فَتَقُولُ : " عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ، وَحَارِثَةُ بْنُ النُّعْمَانِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ، فَأَمَّا عُثْمَانُ فَإِنَّهُ قَالَ : مَا قَدَرْتُ أَنْ أَتَأَمَّلَ أُمِّي مُنْذُ أَسْلَمْتُ، وَأَمَّا حَارِثَةُ فَإِنَّهُ كَانَ يُفَلِّي رَأْسَ أُمِّهِ وَيُطْعِمُهَا بِيَدِهِ ، وَلَمْ يَسْتَفْهِمْهَا كَلامًا قَطُّ تَأْمُرُ بِهِ حَتَّى يَسْأَلَ مَنْ عِنْدِهَا بَعْدَ أَنْ تَخْرُجَ : مَا قَالَتْ أُمِّي؟- আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর দু’জন ছাহাবী ছিলেন যারা এই উম্মতের মধ্যে সর্বাধিক মাতার প্রতি সদাচারী ছিলেন। তাকে বলা হ’ল, তারা কারা? তিনি বললেন, ওয়মান বিন আফ্ফান ও হারেছাহ বিন নু‘মান। ওছমান যিনি বলেছেন, আমি ইসলাম গ্রহণের পর আমার মাকে চিন্তিত করিনি। আর হারেছা, তিনি মায়ের চুল আঁচড়িয়ে দিতেন, নিজ হাতে তাকে খাওয়াতেন এবং তাকে আদেশকৃত কোন কথা বুঝতে না পারলে জিজ্ঞেস করতেন না। বরং তার মা তার নিকট থেকে বের হলে মায়ের সাথে থাকা লোকদেরকে জিজ্ঞেস করে জেনে নিতেন। [10]

ইবনুল হানাফিয়ার উদাহরণ :

সুফিয়ান ছাওরী বলেন, كَانَ ابْنُ الْحَنِيفَةَ يَغْسِلُ رَأْسَ أُمِّهِ بِالْخِطْمِيِّ، وَيَمْشُطُهَا، وَيُقَبِّلُهَا ইবনুল হানাফিয়া খিতমী ঘাস দ্বারা মায়ের মাথা ধুয়ে দিতেন, চিরণী করে দিতেন এবং তাকে চুমু দিতেন। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, মাথায় খিযাব লাগিয়ে দিতেন’।[11]

যাবইয়ান বিন আলীর উদাহরণ :

যাবইয়ান ইবনু আলী আছ-ছাওরী হতে বর্ণিত, عَنْ ظَبْيَانَ بْنِ عَلِيٍّ الثَّوْرِيِّ وَكَانَ مِنْ أَبَرِّ النَّاسِ بِأُمِّهِ ، وَكَانَ يُسَافِرُ بِهَا إِلَى مَكَّةَ، فَإِذَا كَانَ يَوْمٌ حَارٌّ حَفَرَ بِئْرًا، ثُمَّ جَاءَ بِنِطَعٍ فَصَبَّ فِيهِ الْمَاءَ، ثُمَّ يَقُولُ لَهَا ادْخُلِي تَبَرَّدِي فِي هَذَا الماء- তিনি মায়ের প্রতি সর্বাধিক সদাচারী ছিলেন। একবার তিনি মাকে নিয়ে মক্কায় গমন করেন। একদা প্রচন্ড গরম পড়লে তিনি গর্ত খনন করে এক বালতি পানি নিয়ে আসলেন। অতঃপর তাতে পানি ঢাললেন এবং তার মাকে বললেন, এখানে প্রবেশ করে নিজেকে ঠান্ডা করুন’। [12]

আলী বিন হুসাইনের উদাহরণ :

তিনি ছিলেন ইসলামের চতুর্থ খলীফা আলী বিন আবী তালেবের নাতি। তিনি অধিক ইবাদতগুজার ছিলেন বলে তাকে যায়নুল আবেদীন বা ইবাদতকারীদের শোভা বলা হয়ে থাকে। তিনি ভ্রান্ত শী‘আদের রাফেযী নাম দেন।

ইমাম যুহরী বলেন, كَانَ عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ لَا يَأْكُلُ مَعَ أُمِّهِ، وَكَانَ أَبَرَّ النَّاسِ بِهَا، فَقِيلَ لَهُ فِي ذَلِكَ، فَقَالَ: أَخَافُ أَنْ آكُلَ مَعَهَا فَتَسْبِقُ عَيْنُهَا إِلَى شَيْءٍ مِنَ الطَّعَامِ، وَأَنَا لَا أَعْلَمُ بِهِ فَآكُلَهُ، فَأَكُونُ قَدْ عَقَقْتُهَا - যায়নুল আবেদীন হুসাইন বিন আলী তাঁর মায়ের সাথে খেতেন না। অথচ তিনি লোকদের মধ্যে মাতা-পিতার প্রতি সর্বাধিক সদাচারী ছিলেন। তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমি তার সাথে খাব আর তার দৃষ্টি খাদ্যের কোন কিছুর দিকে যাবে । আর আমি না জেনেই তা খেয়ে নিব। ফলে আমি তার অবাধ্য হয়ে যাব’।[13]

উছামা বিন যায়েদের উদাহরণ :

তাঁর মায়ের নাম উম্মে আয়মান। তিনি বারাকাহ নামে পরিচিতি ছিলেন। রাসূল (ছাঃ) উছামাকে খুবই ভালবাসতেন। রাসূল (ছাঃ) যখন মৃত্যুবরণ করেন তখন তার বয়স হয়েছিল বিশ বছর।

মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন বলেন, মদীনায় খেজুর বৃক্ষের মূল্য হাজার দিরহামে পৌঁছে যায়। উছামা বিন যায়েদ একটি খেজুর গাছ কর্তনের ইচ্ছা করলেন এবং তার ডগায় মাথি থাকার কারণে গাছটি কেটে ফেললেন। তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমার মা তা খাওয়ার কামনা করেছিলেন। আর পৃথিবীতে এমন কিছু নেই যা আমার মা কামনা করার পর আমার সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তা করব না’।[14] 

হায়াত বিন শুরাইহ-এর উদাহরণ :

হায়াত বিন শুরাইহ একজন বিশস্ত বর্ণনাকারী ছিলেন। তিনি তার কর্মের জন্য বিশেষ করে মাতৃসেবার জন্য বিখ্যাত। তিনি মিসরের অধিবাসী ছিলেন। ২২৪ হিজরীতে তাঁর মৃত্যু হয়’।[15] হায়াত বিন শুরাইহ একদিন মজলিসে তার ছাত্রদের পাঠদান করছিলেন। আর তার নিকট বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জ্ঞান অর্জনের জন্য লোকেরা ভিড় করত। তার মা এসে বললেন, قُمْ يا حيوة فاعلف الدجاج ، فيقوم ويترك التعليم-  হে হায়াত! দাঁড়াও এবং মুরগীকে খাবার দাও। তিনি পাঠদান ছেড়ে মায়ের আদেশ পালন করলেন’। [16]

ত্বালক বিন হাবীবের উদাহরণ :

তিন বছরার অধিবাসী ছিলেন। বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী তাবেঈ ও মাতা-পিতার সাথে সদাচরণে প্রসিদ্ধ ছিলেন। তিনি পরহেযগার ছিলেন। তার কণ্ঠস্বর ছিল সুমধুর’। [17]

তিনি ইবাদতগুজার ও আলেমদের অন্যতম ছিলেন। তিনি তার মায়ের মাথায় চুমু দিতেন। তিনি এমন বাড়ির ছাদের উপর দিয়ে হাঁটতেন না যার নীচে তার মা অবস্থান করতেন। এটি তার মায়ের সম্মানের জন্য করতেন। [18]

ইয়াস বিন মুআবিয়ার উদারহণ :

ইয়াস বিন মু‘আবিয়া বছরার কাযী ছিলেন। তিন একাধারে মুহাদ্দিছ, ফক্বীহ ও উপমাবিদ ছিলেন। এই তাবেঈ মায়ের  খেদমত করার ক্ষেত্রে প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলেন। ১২২ হিজরীতে তিনি মারা যান’। [19]

হুমাইদ বলেন, ইয়াস বিন মু‘আবিয়ার মা মারা গেলে কান্নায় জড়িয়ে পড়েন। তাকে জিজ্ঞেস করা হ’ল কিসে আপনাকে কাঁদাচ্ছে? তিনি বললেন, ‘আমার জন্য জান্নাতের দুটি দরজা উন্মুক্ত ছিল যার একটি বন্ধ হয়ে গেল’। [20]

ইমাম আবু হানীফার উদাহরণ :

আবু হানীফা (রহঃ) তার মাতার সাথে সদাচরণ করতেন। তিনি তার যাবতীয় অধিকারের প্রতি খেয়াল রাখতেন। তার নিকট উজ্জ্বল চেহারায় প্রবেশ করতেন। তার কথার বিরোধিতা করতেন না। আব্দুল জাববার হাজরামী বলেন, যুরআ‘ নামে একজন বক্তা আমাদের মসজিদে থাকতেন। আবু হানীফার মা একটি ফৎওয়া জানতে চাইলেন। আবু হানীফা (রহঃ) ফৎওয়া দিলে তিনি গ্রহণ না করে বললেন, যুর‘আ যে ফৎওয়া দিবেন তাই আমি গ্রহণ করব। আবু হানীফা তাকে নিয়ে যুর‘আর নিকট নিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন, আমার মা এই এই বিষয়ে আপনার নিকট ফৎওয়া জানতে চান। তিনি বললেন, আপনিতো আমার থেকে বড় ফক্বীহ। আপনি ফৎওয়া দিন। তিনি বললেন, আমি এই ফৎওয়া দিয়েছি। তখন যুর‘আ বললেন, আবু হানীফা যে ফৎওয়া দিয়েছেন সেটিই সঠিক। আবু হানীফার মা খুশি হয়ে ফিরে গেলেন’ [21]

আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর নির্দেশ এবং রাসূল (ছাঃ) ও সালাফে সালেহীনের নির্দেশিত পথে পিতামাতার খেদমতে সনিষ্ঠ থাকার তাওফীক দান করুন। আমীন!

[লেখক : গবেষণা সহকারী, হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ]


[1]. আদাবুল মুফরাদ হা/১৮; মু‘জামুল কাবীর হা/১৫৬; আওসাত্ব হা/৭৯৫৬, সনদ ছহীহ।

[2]. মু‘জামুল আওসাত্ব হা/৭৯৫৬; মু‘জামুল কাবীর হা/১৫৬; ছহীহ আত-তারগীব হা/৫৬৯।

[3]. আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৪৪; শারহুস সুন্নাহ হা/৩৪৩৮; শু‘আবুল ঈমান হা/৭৫১১, সনদ ছহীহ।

[4]. আহমাদ হা/২৫২২৩ ; ইবনু হিববান হা/৭০১৫; ছহীহাহ হা/৯১৩; মিশকাত হা/৪৯২৬।

[5]. আল-আদাবুল মুফরাদ হা/১৪; মাকারিমুল আখলাক হা/২২৮, সনদ হাসান।

[6]. আল-জামে‘ ফিল হাদীছ হা/১৫২।

[7]. মুসলিম হা/২৫৪২; হাকেম হা/৫৭১৯।

[8]. ইবনু আবিদ-দুনিয়া, মাকারিমুল আখলাক ১/৭৭, হা/২২৯; ড. সাইয়েদ বিন হুসাইন আল-আফানী, ছালাহুল উম্মাহ ফী উলুবিবল হিম্মাহ ৫/৬৫২।

[9]. হিলইয়াতুল আওলিয়া ২/২৭৩; ড. সাইয়েদ বিন হুসাইন আল-আফানী, ছালাহুল উম্মাহ ফী উলুবিবল হিম্মাহ ৫/৬৫২।

[10]. মাকারিমুল আখলাক ১/৭৫, হা/২২৩; ইবনুল জাওযী, আল-বিররু ওয়াছ ছিলাহ হা/৮৬, ১/৮৫।

[11]. মাকারিম আখলাক, ইবনুল জাওযী, আল-বিররু ওয়াছ ছিলাহ হা/৮৯, ১/৮৫; ইবনু সা‘দ, আত-তাবাকাতুল কুবরা ৫/২৪৬।

[12]. ইবনুল জাওযী, আল-বিররু ওয়াছ ছিলাহ হা/৯৬, ১/৮৮।

[13]. ইবনুল জাওযী, আল-বিররু ওয়াছ ছিলাহ হা/৯০, ১/৮৬; ছালাহুল উম্মাহ ফী উলুবিবল হিম্মাহ ৫/৬৫৩।

[14]. ইবনু আবীদ্দুনিয়া, মাকারিমুল আখলাক্ব হা/২২৫, ১/৭৬; ইবনুল জাওযী, আল-মুনতাযিম ফী তারীখিল মুলূকে ওয়াল উমামে হা/১২৫, ৫/৩০৭; আল-বিররু ওয়াছ ছিলাহ হা/৮৭; কান্ধালুভী, হায়াতুছ ছাহাবা ৩/২২৪-২২৫; ইবনু সা‘দ, আত-ত্বাবাকাতুল কুবরা ৪/৫২; ইবনু আসাকের, তারীখে দিমাশক ৮/৮২।

[15]. সিয়ারু আ‘লামিন-নুবালা ৯/৬৩।

[16]. ত্বারতুসী, বিররুল ওয়ালিদায়ন ৭৯ পৃষ্ঠা; ছালাহুল উম্মাহ ৫/৬৫৩।

[17]. সিয়ারু আ‘লামিন-নুবালা ৪/৬০১।

[18]. ত্বারতুসী, বিররুল ওয়ালিদায়ন ৭৯ ; ছালাহুল উম্মাহ ৫/৬৫৩; মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম, উকূকুল ওয়ালিদায়ন ১/৬২; ত্বাবাকাতুল কুবরা ৭/২২৮।

[19]. আল-বিদায়াহ ৩/৩৩৪; আছ-ছিক্বাত লিইবনু হিববান ৪/৩৫।

[20]. আল-বিররু হা/৬০; আল-বিদায়াহ ৯/৩৩৮; ইবনু আসাকের ১০/৩৩; তাহযীবুল কামাল ৩/৪৩৬।

[21]. তারীখে বাগদাদ ১৩/৩৬৬; আত-তাকীউল গাযী, আত-ত্বাবাকাতুস সুন্নিয়া ১/৩৬।

 

 



বিষয়সমূহ: শিষ্টাচার
আরও