পর্বত রাজধানী গিলগিত-বালতিস্তানে

ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব 10667 বার পঠিত

পাকিস্তানের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিমোহিত হওয়ার প্রাথমিক পর্যায় চলছিল তখন। কেটু পর্বতশৃঙ্গের অবস্থান খুঁজতে গিয়ে জানা হল নর্দান এরিয়া বা উত্তরাঞ্চল সম্পর্কে। রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে শুরু হয়ে গিলগিত-বালতিস্তান জুড়ে চীন সীমান্ত পর্যন্ত সুবিশাল পর্বতাঞ্চল এই নর্দান এরিয়া। আকাশছোঁয়া বরফমোড়া শত-সহস্র পর্বতশৃঙ্গ, পাইন বৃক্ষ কিংবা সবুজ ঘাসের কার্পেটে ঢাকা উপত্যাকা, পাহাড়ের তরঙ্গায়িত ঢালে চরে বেড়ানো শত-সহস্র দুম্বা, ভেড়া, বাইসন কিংবা ঘোড়ার পাল, মাথার উপর কালচে ঝুলন্ত পাহাড়, সশব্দে বয়ে যাওয়া সর্পিল, খরস্রোতা ও দৈত্যাকৃতির পাথরময় নদী, রুদ্ধশ্বাস পাহাড়ী বাঁকে কিংবা উপত্যাকার সমতলে তীরের মত এগিয়ে চলা কালো পীচ ঢালা মসৃণ রাস্তা এই হল এতদাঞ্চলের অতি স্বাভাবিক দৃশ্য। পৃথিবী বিখ্যাত চারটি পর্বতশ্রেণী হিমালয়, কারাকোরাম, হিন্দুকুশ এবং পামীর এখানে এসে একত্রিত হয়েছে। রয়েছে পৃথিবীবিখ্যাত কয়েকটি হিমবাহ, পৃথিবীর ২য় উচ্চতম সমভূমি দোসাই, পাহাড় গহবরে চোখ ধাঁধানো শতাধিক লেক। 

২০১৪ সালের সামারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক লং ট্যুরে একটি দল যাচ্ছে গিলগিতে। রেজিট্রেশন করতে দু’বার ভাবা লাগল না। কিন্তু বিপত্তি বাঁধালো ওয়াযিরিস্তানে চলমান সেনা অপারেশন ‘যারবে আযব’। সরকারী নিষেধাজ্ঞায় সেবার সবগুলো ট্যুর স্থগিত করা হল। পরের বছর গ্রীষ্মের ছুটিতে দেশে থাকায় আবারও সুযোগ হাতছাড়া হল। অবশেষে কাংখিত সুযোগটি মিলল ২০১৬ সালের সামারে। গিলগিতকে আখ্যা দেয়া হয় ‘বিউটি অব পাকিস্তান’ বা ‘পাকিস্তানের সৌন্দর্য’। সুতরাং এক মাত্রাছাড়া অবিশ্বাস্য সৌন্দর্যের মোহজালে আবিষ্ট হতে যাচ্ছি ক’দিনের জন্য, তা ধরেই নিয়েছিলাম। মাস্টার্সের থিসিসের কাজ বেশ গুছিয়ে এসেছে আল্লাহর রহমতে, এমন সময়ই সুযোগটা এল। যাত্রা শুরু হল ১৪ আগস্ট দিবাগত রাতে। ৯০ জন ছাত্র এবং ৮ জন শিক্ষকসহ প্রায় ১১০ জনের বড় বহর। ছাত্রদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ২টি বাস এবং শিক্ষক ও বাবুর্চীদের জন্য ১টি মিনিবাস। রাত ৯টার দিকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে এলাম। বিদেশী ছাত্র বলতে কেবল আমি। ফলে বাসের প্রথম আসনটি আমাকে দেয়া হল। এমন সফরে সবচেয়ে কাংখিত সীটটিই যে পেয়ে গেছি, তা বুঝতে পেরে প্রথমেই খুশীতে মনটা ভরে গেল। সারাপথ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ডুবে থাকার এমন সুযোগ পাওয়া নিতান্তই ভাগ্যের ব্যাপার। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলাম।

কাগান-নারান :

                                                               


মানসেহরা আসার পর শর্টকার্ট রাস্তা খুঁজতে গিয়ে ড্রাইভার রাস্তা হারিয়ে ফেলল। পরে আবারও মূল রোডে এসে বালাকোট যখন পৌঁছলাম, তখন ফজরের সময় হয়ে গেছে। বালাকোট আমার অতি প্রিয় স্থান। বেশ কয়েকবার ঘুরে গেছি বলে এখানকার পথঘাট সব চেনা। বন্ধুত্ব রয়েছে অনেকের সাথে। ড্রাইভারকে বলে এফআইএফ-এর ফিল্ড হাসপাতালের সাথে লাগোয়া আহলেহাদীছ মসজিদ ‘মসজিদুত তাক্বওয়া’য় যাত্রাবিরতির জন্য গাড়ি দাঁড় করালাম। ফজর ছালাত শেষে ফিল্ড হাসপাতালে ঢুকলাম। কিন্তু পরিচিত ভাইদের কাউকে পাওয়া গেল না। সব বন্ধ এখন। পূর্বাকাশ ফরসা হয়ে এলে আমাদের যাত্রা আবার শুরু হল। বালাকোট ব্রীজ অতিক্রম করে পাহাড়ের ওপর গাড়ী উঠতে শুরু করে। উপর থেকে কুনহার নদীর দুপার্শ্ব জুড়ে বালাকোট শহর পুরোটা নজরে আসে। পশ্চিম দিকটায় বালাকোট যুদ্ধের ময়দান আর শাহ ইসমাঈল শহীদের কবরগাহটি দেখে বরাবরের মত মনটা উদাস হয়ে যায়। দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে। আমি মসৃণ রাস্তায় ঘন ঘন আগুয়ান পাহাড়ী বাঁকগুলোর দিকে একনয়নে তাকিয়ে থাকি। মনে পড়ে প্রথম যখন এ অঞ্চলে এসেছিলাম, সবুজ অরণ্যের বিছানায় ঢেউ খেলানো আকাশছোঁয়া পাহাড়গুলো কি অপূর্ব শিহরণ জাগাত! আজ অভ্যস্ত চোখে কেবল প্রভুর প্রশংসায় বিগলিত চিত্তে সেসব দৃশ্য উপভোগ করতে থাকি। কাগান উপত্যাকা পার হয়ে পর্যটন শহর নারানে পৌঁছাই সকাল ৯-টার দিকে। এখানেই কুনহার নদীর তীরে দাঁড়িয়ে সকালের নাস্তা সেরে নিলাম। বাবুর্চীরা দ্রুত হাতে গরম গরম পরাটার ব্যবস্থা করলেন। নারান চির শীতল ভূমি। বড় অদ্ভুত সুন্দর উপত্যাকা। ইসলামাবাদে যখন ৪৭/৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা তখনও এখানে এলে বরফের দেখা পাওয়া যায়। অথচ দূরত্ব মাত্র ২৫০ কি.মি.। ২০১৪ সালের জুলাইয়ে এখানে প্রথমবার এসে সে দৃশ্য দেখা কত যে বিস্ময়ের ছিল! সুবহানাল্লাহ। সয়ফুল মুলক ঝিলে গিয়ে তো প্রায় শূন্য ডিগ্রি তাপমাত্রায় দাঁতে দাঁত লেগে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল।

লালাযার ঝিল :               

পরবর্তী গন্তব্য বাবুসার টপ। সে পথেই অসাধারণ সুন্দর এক উপত্যাকা পেরিয়ে চোখে পড়ে লালাযার লেক। চলতি পথে এমন লেকের সংখ্যা অনেক। তবে খ্যাতির দিক থেকে এগিয়ে থাকা অন্যতম লেক এটি। ৩২০০ মিটার (১০,৪৯৯ ফুট) উচ্চতায় চারিদিকে সুউচ্চ পাহাড় আর ঠিক তার কোলে নীল অক্ষিগোলকের মত ঝিল। তীব্র বাতাসে স্থির দাঁড়িয়ে থাকাই কঠিন। লেকের পানিতে হাত ছুঁইয়ে হীম শীতল পরশ নিয়ে গাড়িতে ফিরলাম।

বাবুসার টপ :


কাগান উপত্যাকার সাথে গিলগিত-বালতিস্তানের সাথে সংযোগকারী সড়ক বাবুসার টপ। ৪১৭৩ মিটার (১৩৬৯১ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত এই অঞ্চলের সর্বোচ্চ চুড়ায় পৌঁছতেই তীব্র শীতল হাওয়ার ঝাপটা লাগল। শীতের পোষাক পরে গাড়ী থেকে নামলাম সবাই। রাস্তার কিনারে দাঁড়িয়ে বহু নীচে মাইলের পর মাইল বিছিয়ে থাকা পাহাড়ী উপত্যাকাগুলো পটে অাঁকা ছবির মত মনে হয়। তীব্র বাতাসকে প্রতিরোধ করে বহুক্ষণ ধরে সে দৃশ্য দেখি। চরকির মত ঘুরে ঘুরে নেমে যাওয়া পীচ ঢালা রাস্তায় খাইবার গিরিপথের অবিকল প্রতিরূপ। দূরে যতদূর চোখ যায় কেবল স্বপ্নজাল মাখা বিস্তীর্ণ উপত্যাকা। মানুষের আবাসস্থল তেমন দৃশ্যমান হয় না। বছরের প্রায় নয় মাসই যে থাকে বরফঢাকা। এ যেন অন্য এক পৃথিবী। আমি সত্যি সত্যিই হারিয়ে যাই আমার আমিতে। নিজেকে বড় ভাগ্যবান মনে হয়। পৃথিবীর পথে পথে কোন পিছুটান ছাড়া ছুটে বেড়ানোর সুপ্ত তাড়না নিয়ে সেই সদ্য কৈশোরে কত ছবি আঁকতাম মানসপটে। আজ মনে হয় সেই স্বপ্ন যেন বাস্তবতা খুঁজে পেল।

চিলাস :


বেলা ১টার দিকে বাবুসার পাস থেকে চিলাসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। বাস যত নীচে নামতে থাকে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে থাকে। দূরের আকাশে ঘন কালো মেঘের মত কি যেন নযরে আসে। চারিদিকের পাহাড়গুলো এখন বেশ অন্যরকম। শক্ত পাথুরে অথবা গভীর খাঁজকাটা লালমাটির। প্রায় খাঁড়া উঠে গেছে আকাশের দিকে। আমেরিকার কলোরাডো প্রদেশের বিখ্যাত গ্রান্ড ক্যানিয়নের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় নিমিষেই। ঘন্টাখানেক বাদে চিলাসের কাছাকাছি আসতে অনুমান করে ফেললাম নাঙা পর্বতশৃঙ্গের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি আমরা। দূর দিগন্তের ঘন কালো মেঘ আসলে হিমালয় পর্বতশ্রেণী। চিলাসে সেনাবাহিনীর চেকিং পয়েন্ট। বিদেশীদের এদিকে আসতে গেলে ছাড়পত্র প্রয়োজন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ট্যুর হওয়ায় সহজেই চেকিং এড়ানো গেল। এবার সিন্ধু নদের তীর ঘেঁষে যাত্রা। সিন্ধু নদ এখানে পাহাড়ী নদীর মত তীব্র খরস্রোতা। রাস্তাও ভঙগুর। প্রায় ২ ঘন্টা চলার পর বিকাল ৪টায় রাইকোট ব্রীজে এসে পৌঁছলাম।

রাইকোট থেকে টাট্টু :

শিক্ষকদের বাসটি বেশ আগেই পৌঁছে গেছে। তাঁরা জীপ ঠিক করে ফেলেছেন ইতিমধ্যে। আমাদের একটা গ্রুপ দুপুরের খাবার খেতে গেল। অপর গ্রুপটিকে স্যাররা নাঙাপর্বতের পথে ফেয়ারী মিডোস ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে জীপে উঠিয়ে দিলেন। এই গ্রুপের সাথে আমি রওয়ানা হলাম। পাথুরে পাহাড়ের গা বেয়ে অতি সংকীর্ণ পথে জীপ রওয়ানা হল ফেয়ারী মিডোসের পথে। যত উপরে উঠতে লাগল পথ তত সংকীর্ণ হয়ে এল। ইট-পাথরের রাস্তা ভয়ংকর রকম এবড়ো থেবড়ো। প্রতি মুহূর্তে জীপ লাফিয়ে লাফিয়ে এগিয়ে চলছে। একপার্শ্বে পাহাড়, অপরপার্শে প্রায় ২ হাজার মিটার পাতাল ছোঁয়া গভীর খাঁদ। গাছপালাহীন নিরেট পাথরস্ত্তপ। অথচ ড্রাইভার অত্যন্ত রাফ গতিতে গাড়ি চালাচ্ছে। বালতি ভাষায় গানও বাজিয়ে চলেছে তীব্র আওয়াজে। অবস্থা এমন হল যে, প্রতিটি ধাক্কায় মনে হতে লাগল গাড়ি এবার নিশ্চিত খাদে পড়তে যাচ্ছে। সামনের সীটে বসা আমি প্রমাদ গুণলাম। শীরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল। ড্রাইভার এবং সহযাত্রীদের দিকে তাঁকিয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করলাম। আমরা কি সত্যিই বাস্তবে না স্বপ্নঘোরে? মৃত্যুর ছায়া হঠাৎ খুব সামনে স্পষ্টভাবে যেন দেখতে পেলাম। একেবারে শতভাগ নিঃসন্দেহ হয়ে আমি মৃত্যুর প্রস্ত্ততি নিয়ে মনে মনে তওবা পড়ে ফেললাম। জীবনে কখনো এমন শাবসরুদ্ধকর ভয়ংকর পরিস্থিতিতে পড়িনি। প্রায় ২ ঘন্টা চলার পর রীতিমত যেন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে আমরা পৌঁছলাম টাট্টু নামক স্থানে। হাফ ছেড়ে যেন নতুন জীবন ফিরে পাবার স্বস্তি পেলাম।

চলার পথেই পাহাড়ের কোন এক বাঁক নেয়ার সময় দেখে ফেলেছিলাম ঘন মেঘের আড়ালে চওড়া বুকে বিপুল রহস্যাধার নিয়ে দন্ডায়মান বিশ্বের নবম সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ নাঙা পর্বত। ওহ! প্রথম দেখার সে অনুভূতি ব্যক্ত করার মত নয়। ভীতি আর সম্ভ্রমের সুগভীর মিশেলে কি এক ঘোরে যেন আত্মহারা হয়ে উঠল হৃদয়। আল্লাহু আকবার।                   

টাট্টু-ফেয়ারী মিডোস হাইকিং :

টাট্টু এসে খানিকক্ষণ বিশ্রাম এবং সহযাত্রীদের অপেক্ষা। সারাদিনের ক্লান্তির সাথে ক্ষুধা মিলিয়ে খুব কাহিল সবাই। তবুও অপেক্ষার প্রহর থামে না। রাত হয়ে এল। টাট্টুতে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা নেই। তার অর্থ রাতের আঁধারেই পাহাড়ী পথে আরও ৩ ঘন্টা হাইকিং করার পর নির্ধারিত স্থান ফেয়ারী মিডোস যেতে হবে। সহযাত্রীরা সবাই এসে একত্রিত হতে কয়েক ঘন্টা লেগে গেল। অবশেষে রাত ৮টার দিকে হাইকিং শুরু হল পাহাড়-জঙ্গলের মধ্য দিয়ে। মাল-সামান চড়িয়ে দেয়া হল গাধার পীঠে। নিশুতি রাত। জঙ্গল চিরে নীচের খাদে বয়ে চলা নাঙাপর্বতের হিমবাহ গলা সশব্দ স্রোতধারার ওপর পড়ছে চাঁদের ক্ষীণ আলো। জমাট অন্ধকারে কারও হাতে বা মাথায় টর্চ। পরিশ্রান্ত, ক্ষুধার্ত সবাই। কিছুক্ষণ চলা, কিছুক্ষণ বসা। নৈঃশব্দে কান পেতে থাকা। পিছিয়ে পড়া মুসাফিরদের প্রতি হাঁক-ডাক। পাথরের গায়ে হোঁচট খেয়ে কারও বেমক্কা পতন। গভীর খাঁদের মুখে দাঁড়িয়ে একে অপরকে এগিয়ে দেয়া। পাহাড়ী ঝর্ণায় আজলা ভরে পানি পান করা। এতকিছুর মাঝেও পথ যে আর ফুরোয় না। মধ্যরাত পেরিয়ে যখন ফেয়ারী মিডোস পৌঁছলাম, তখন কনকনে ঠান্ডার মধ্যে মড়ার উপর খাড়ার ঘায়ের মত বৃষ্টিপাত শুরু হল। খোলা আকাশের নীচে তাবুতে থাকার ব্যবস্থা। সেগুলোও আর্দ্র হয়ে উঠেছে। হুড়োহুড়ি করে একটি তাবুর দখল নিলাম আমরা তিনজন। সঙ্গী দু’জন ছোটভাই লাহোরের আতীফ হানিফ এবং কোহাটের রেযা। পুরো সফরে শিক্ষকরা আমার খোঁজ রেখেছিলেন। তবে দেখভাল করেছিল মূলতঃ এ দুজনই। আল্লাহর তাদের মঙ্গল করুন।

অগ্রবর্তীরা এসে রাতের খাবার সাবাড় করে ফেলেছে। আমরা ক’জন কম্বলের নীচে ঝিম মরে পড়ে রইলাম পুনরায় চড়ানো রান্না শেষ হওয়ার অপেক্ষায়। এক চিলতে ঘুমও হয়ে গেল বোধহয়। অবশেষে ডাক এল। ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে ঢুলু ঢুলু চোখে রন্ধনশালায় ঢুকলাম। সাদাভাতের সাথে ডাল-চানা খেয়ে কি যে তৃপ্তি লাগল! আগাখানী পাঁচকের আন্তরিক ব্যবহার আর চমৎকার রান্নার প্রশংসা না করে পারা গেল না।

তাবুতে ফিরে ক্লান্ত শরীরে মাটির বিছানায় শুয়ে বৃষ্টির টাপুর টুপুর শব্দ শুনতে শুনতে এক সময় ঘুমিয়ে গেলাম।      (ক্রমশ)

 


 

 




বিষয়সমূহ: ভ্রমণস্মৃতি
আরও