পূবের সুইজারল্যান্ড সোয়াতে

ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব 860 বার পঠিত

১.

পাকিস্তানে নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের জন্য যে সকল স্থান বিশ্বজোড়া খ্যাতি পেয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল সোয়াত। ১৯৬১ সালে রাণী এলিজাবেথ সোয়াত সফরকালে এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে ‘সুইজারল্যান্ড অফ ইস্ট’ নামে আখ্যা দিয়েছিলেন। কেবল সৌন্দর্যই নয়, প্রাচীন ইতিহাস-ঐতিহ্যের দিক থেকে এবং সাম্প্রতিককালে ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তালিবানদের অধিকারভুক্ত থাকায় সোয়াত ভ্যালি নজর কেড়েছিল সারা বিশ্বের। লেক-পাহাড়-নদী বেষ্টিত এই সবুজ-শ্যামল ভ্যালি ইসলামাবাদ থেকে ২৩০ কি.মি. দূরত্বে অবস্থিত।

১৪ই ডিসেম্বর ২০১৪ শনিবার। সাপ্তাহিক ছুটির দিন। ফজরের পর হোস্টেল ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে ভোরের স্নিগ্ধ হাওয়ায় কিছুক্ষণ হাটাহাটি করে ফিরছি। হোস্টেল পার্কিং-এর সামনে বেশ কয়েকটি গাড়ি দঁাড়িয়ে। ছাত্ররা প্রস্ত্তত হয়ে ঘুরাফিরা করছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কোন না কোন ডিপার্টমেন্টের আয়োজনে শর্ট ট্যুর থাকে। সেরকমই কোন আয়োজন হয়ত। তবুও এমনিতেই এক ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করলাম, কোথায় সফর আজ? সে জানাল, তাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে ২দিনের সফরে যাচ্ছে সোয়াতে। সোয়াত? বেশ কয়েকবার আনমনে শব্দটা উচ্চারণ করলাম। হঠাৎ মনে হ’ল,   এদের   সাথে   যাওয়া   যায়  কিনা।  আয়োজকদের একজনকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলল, ভাই যেতে পারেন, সীট খালি আছে। কিন্তু আমরা তো এখনই রওয়ানা দিচ্ছি। আমি বললাম, পাঁচ মিনিট অপেক্ষা কর, আমি আসছি। সে রাজি হ’ল। দ্রুত রুমে ঢুকে চটপট শীতবস্ত্রগুলো ব্যাগে ঢুকিয়ে বের হয়ে গেলাম। রুমমেট মুহাম্মাদ আলম বালুচ অবাক হয়ে বলল, হঠাৎ এভাবে কোথায় যাচ্ছেন ভাই? বললাম, সোয়াতে। সে বিস্ময়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকল। এমনভাবে দ্রুত ‘যেমনি ভাবা তেমনি কাজ’ জাতীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে দীর্ঘ সফরে বের হওয়ার অভ্যাস অবশ্য আমার নতুন নয়। ফলে দূরের সফরে যা যা নিতে হয়, তা মোটামুটি মাথায় সেট হয়েই থাকে বাই ডিফল্ট। এরপরও বাস বেশ কিছুদূর চলে আসার পর দেখা গেল ক্যামেরার মেমোরী চীপটা রেখে এসেছি। পরে হাসান আব্দাল এসে নাস্তার বিরতির সময় বেশ ঝামেলার পর এক দোকান থেকে কিনে নিলাম।

সোয়াতে প্রথম সফরটি ছিল এমনই অপরিকল্পিত। তবে সেই সফরে সোয়াতের সৌন্দর্য সম্পর্কে যে ধারণা ছিল তাতে যথেষ্ট ভাটা পড়েছিল। তার কারণ সময়টা ছিল শীতের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে। পাহাড়গুলো সবুজের সমারোহের বদলে কালচে মেটে রং ধারণ করেছে। আধো কুয়াশায় ঝাপসা হয়ে আছে প্রকৃতি। সূর্যের কিরণ নির্মোহ, প্রাণহীন। যেন শীতনিদ্রা যাবার পূর্বে অলসতা আর মলিনতার চাদরে আবৃত সমগ্র প্রকৃতি। প্রথম রাতে ছিলাম সোয়াতের সবচেয়ে বড় শহর মিঙ্গোরায় কেপিকে হাইকোর্টের পার্শ্বস্থ হোটেল হিলসিটিতে। মালালা ইউসুফজাইয়ের শহর। এই শহরেই ছিল তালিবানদের ঘাটি। প্রাণবন্ত রাতের মিঙ্গোরায় ট্রাউট ফিসের আড্ডাখানায় ঢু না মারলেই নয়। শহরের প্রাণকেন্দ্রে ঢুকে এক হোটেলে বসে রুটি দিয়ে কয়েকটি ট্রাউট মাছ সাবাড় করলাম। পাহাড়ী জনবসতিতে এলে মনে হয় তারকার মেলায় এসে পড়েছি। চারিদিকে জোনাকবাতির মত ঝিলমিলে আলোয় ভরা শহর বড় ভাল লাগে। পরে শহুরে কোলাহল ছেড়ে সুশান্ত পাথুরে সোয়াত নদীর তীরে এসে বসলাম। নিস্তব্ধ রাতের মগ্নতায় নির্বাক একান্ত সময় কাটল অনেকক্ষণ।

পরদিন সকালে মিঙ্গোরা থেকে প্রায় ৫০ কি. মি. দূরত্বের এক পাহাড়ী রিসোর্ট মালাম জাববায় এসে পৌঁছি। মালাম জাববা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯২০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত একটি হিল স্টেশন। পাকিস্তানের অন্যতম জনপ্রিয় স্কি রিসোর্ট। এখানে পাহাড়ের ঢালে ৮০০ মিটার উচ্চতার একটি চমৎকার স্কি উপযোগী সেলাপী ল্যান্ড রয়েছে। রয়েছে চেয়ার লিফ্ট, স্কেটিং বোর্ডসহ অন্যান্য সুবিধা। ফলে শীত মওসূমে সারা পাকিস্তান থেকে স্কি প্রেমীরা এখানে আসেন। সেই খাড়া সেলাপ বেয়ে আমরা উপরে উঠে এলাম। সোয়াতের বিস্তীর্ণ পাহাড়ী উপত্যকা আর সবুজ বনানী এখান থেকে নজরে আসে। দূরের উঁচু পাহাড়গুলোতে বরফের টুপী দেখা যায়। তবে মালাম জাববায় এখনও বরফ পড়া শুরু হয়নি। ঘাসের গোড়ায় গোড়ায় অবশ্য সামান্য বরফ জমে উঠতে দেখা গেল। পাহাড়ের নীচে বিরাট রিসোর্টটি গড়ে উঠেছিল। তবে তালেবানরা ২০০৯ সালে সেটি ধ্বংস করে ফেলে। বর্তমানে সেটির পুনর্নির্মাণকাজ চলছে। দুপুরের খাওয়া সেরে আমরা সোয়াত থেকে ফিরতি পথে রওয়ানা হলাম। রাত এগারোটার দিকে ফিরে এলাম ইসলামাবাদ। এটাই ছিল প্রথম সোয়াত সফরের সংক্ষিপ্ত বৃত্তান্ত।

২.

সোয়াতে দ্বিতীয়বার যাওয়ার সুযোগ হয় পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার মাসখানিক পূর্বে। পেশোয়ার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালী ছাত্র নাঈমের বন্ধু ও ক্লাসমেট লতীফ শাহ দীর্ঘদিন ধরে দাওয়াত দিয়ে আসছে ওদের গ্রামের বাড়ি সোয়াতের কালামে যাওয়ার জন্য। লতীফ শাহের সাথে পরিচয় হয় পেশোয়ারে। পাকিস্তানের আলোচিত ফাটা (Federally Administered Tribal Areas) অঞ্চলের খাইবার এজেন্সির শাকায গ্রামে তার বাড়ী। পাকিস্তানের পাঠান অধ্যুষিত ৭টি এমন অঞ্চল রয়েছে, যেগুলিতে বৃটিশ আমল থেকেই সরকারী নিয়ন্ত্রণ শিথিল এবং শত-সহস্র বছর ধরে এগুলো গোত্রশাসিত। আফগান সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলগুলোকেই সংক্ষেপে ‘ফাটা’ বলে। এমনই একটি অঞ্চল খাইবার এজেন্সি। বিখ্যাত খাইবার গিরিপথ এই অঞ্চল দিয়ে চলে গেছে। প্রথম দেখা হওয়ার পর থেকে লতীফ শাহ কেন যেন আমাকে খুবই শ্রদ্ধার নজরে দেখত এবং তার বাড়িতে যাওয়ার জন্য রীতিমত পীড়াপিড়ি করত। অবশেষে ১৩ই সেপ্টেম্বর ২০১৬ সেই সুযোগটি এল। কোরবানীর ঈদ উপলক্ষ্যে পেশোয়ারে নাঈমদের কাছে এসেছি জেনে সে নিজের প্রাইভেট কার নিয়ে নাঈমের হোস্টেলে উপস্থিত। সহযাত্রী হ’ল নাঈমসহ আরও দুই বাঙালী ছাত্র শাহাদাত হোসাইন (মাদারীপুর), মাসুম (টাঙ্গাইল)। ঘন্টাখানেকের মধ্যে লতীফ শাহের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে যাই। দুর্গের মত মাটির উঁচু প্রাচীর ঘেরা এক তলা সুপরিসর বাড়ি। একান্নবর্তী বিরাট পরিবারের ছেলে-বুড়োরা এসে অভ্যর্থনা জানালো। তারপর তাদের মেহমানখানায় নিয়ে বসালো। কার্পেটে মোড়ানো পাঠানী মেহমানখানার চারিদিকে বসার জন্য তোষক আর কুশন। এখানে বসে সারাদিন শুয়ে-বসে আড্ডায় কাটানো খুবই সম্ভব। বলাবাহুল্য, বাড়ীর লোকজন উপস্থিত থাকলে কাহওয়া আর ড্রাই ফুডের সাথে পাঠানী মেহমানখানা জমজমাট থাকে সবসময়।

আমরা প্রায় সারাদিন সেখানে অবস্থান করলাম এবং পাঠানী মেহমানদারীর বৈচিত্রপূর্ণ ঐতিহ্য উপভোগ করলাম। লতীফের পরিবার এবার দুম্বা কুরবানী করেছিল। যোহরের পর প্রায় পূর্ণ একটি দুম্বার কয়েক প্রকার ডিশ আমাদের সামনে হাজির করা হ’ল। জিজ্ঞাসা করে জানা গেল এগুলোর নাম পাট্টেদানা, বারবিকিউ, দামপোক আর দুম্বা কড়াই। পরিশেষে লাচ্ছি আর কাহওয়া। পাঠান পরিবারের প্রায় ১৫ জনের সাথে আমরা চার বাঙালী যুক্ত হয়ে রীতিমত ভোজসভার আয়োজন হয়ে গেল। তারা যে আন্তরিকতার সাথে আপ্যায়ন করালেন, তা সত্যিই সারাজীবন মনে রাখার মত।



দুপুরে হালকা বিশ্রাম নিয়ে আছরের পর আমরা বিদায় নিলাম। ফেরার পথে লতীফ শাহ শাকায গ্রামেরই এক অত্যাধুনিক মাদরাসা পরিদর্শনে নিয়ে গেল। জামে‘আ ইসলামিয়া ফারূকিয়া নামক এই মাদরাসাটি নির্মাণ করেছেন স্থানীয় এক সম্পদশালী ব্যক্তি। দেশী-বিদেশী মূল্যবান পাথরখচিত মাদরাসাটি এতই দৃষ্টিনন্দন যে চোখ ফেরানো দায়। ভেতরে আসবাব-পত্র, লাইব্রেরী, কম্পিউটার ল্যাব সবকিছুই অত্যাধুনিক। সেই সাথে এখানে রয়েছে একটি প্রাচীন মুদ্রা, তৈজসপত্র, অস্ত্রপাতি আর যুদ্ধসামগ্রীর এক সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা। মাদরাসাটি পরিদর্শন শেষে কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে এক বিলাসবহুল মেহমানখানায় বসালেন। নাশতা-পানি শেষে পরিদর্শন বহি নিয়ে আসা হ’ল। তাতে এই মাদরাসার প্রতি আমার মুগ্ধতার কথা আরবীতে লিখে দিলাম। প্রত্যন্ত পাঠানিস্তানের এক দুর্গম গ্রামের মাদরাসাটিতে এক বাঙালীর উপস্থিতির স্বাক্ষর স্থায়ী হয়ে থাকল। আজ থেকে কয়েকশ’ বছর পর যদি কোন বাঙালীর পা পড়ে আবারও এই গ্রামে, তবে বিস্ময়-বিমুগ্ধ চোখে হয়ত সে স্বদেশীর এই স্বাক্ষর দেখবে ভেবে যুগপৎ পুলক ও স্মৃতিকাতরতা অনুভব করলাম।

মাদরাসা থেকে বিদায় নিয়ে ঐতিহ্যবাহী খাইবার গেটে এসে আমরা আবার দঁাড়ালাম। হয়ত আমার জন্য শেষবারের মত এখানে আসা। সামনে জামরূদ ফোর্ট। দূরে হিন্দুকুশ পাহাড়ের সারি। উপরে সাইনপোস্টে লেখা তোরখাম ৩৬ কি.মি., জালালাবাদ ১১৩ কি.মি., কাবুল ২২৪ কি.মি.। আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলি। হৃদয়ের গহীন থেকে বিদায়ের এক টুকরো বিষণ্ণ অভিব্যক্তি যেন খাইবারের আকাশে-বাতাসে মিশে যায়। শেষ বিকেলে আবার হোস্টেলে ফিরে আসি।

৩.

লতীফ শাহের সাথে ঐ সাক্ষাতের পরও বেশ কয়েকবার ফোনে যোগাযোগ হয়েছে। সে বলেছিল তারা গ্রীষ্মকালীন আবাসস্থল হিসাবে সোয়াতের কালাম শহরে একটি বাড়ি কিনেছে। আর আমরা যেন সেখানে বেড়াতে যাই।

এদিকে পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার সময় চলে এসেছে আমার। কয়েকদিনের জন্য ক্লাস ছুটি। চিন্তা করলাম সোয়াতে আরেকবার ঘুরে আসা যায়। নাঈমদের যাওয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষার কারণে ওরা সঙ্গ দিতে পারল না। শেষমেষ রাওয়ালপিন্ডির আব্দুর রহমান বাঙালী ভাইকে রাযী করালাম। ৩০শে জুন ২০১৭ সকালে আমাদের যাত্রা শুরু হ’ল সোয়াতের উদ্দেশ্যে।

সোয়াতে গতবার যখন যাই কোথাও কোন বঁাধার মুখে পড়তে হয়নি। কেননা সেটা বিশ্ববিদ্যালয় ট্যুর ছিল। ব্যবস্থাপকরাই সবকিছু ম্যানেজ করে নিয়েছিল। কিন্তু এবার পাবলিক গাড়িতে যাওয়ার কারণে প্রথমেই বঁাধার সম্মুখীন হলাম মালাকান্ড পেঁŠছানোর পর। সেখানে পাকিস্তানীদের বাধ্যতামূলকভাবে ন্যাশনাল আইডি কার্ড (এনআইসি) দেখাতে হয়। আর বিদেশীদের পাসপোর্ট ছাড়াও বিশেষ অনুমতিপত্র দেখাতে হয়। সোয়াতে তালিবানদের আক্রমণের পর থেকে এই ব্যবস্থা। এটা গতবারই শুনেছিলাম। তবে এখানে এতটা কঠোরভাবে সেটা বাস্তবায়ন করা হয় সেটা জানা ছিল না। সারি বেঁধে বাস এবং অন্যান্য গাড়ি দঁাড়িয়ে আছে। একে একে সবার আইডি চেক করে রেজিস্ট্রিভুক্ত করা হচ্ছে। আমাদের বাস থামার পর একজন আর্মী সকল যাত্রীর কাছ থেকে এনআইডি নিয়ে গেল। এমনকি ড্রাইভারেরও। আমি বাসের একেবারে সামনের সীটে ছিলাম। প্রমাদ গুণছি। ঠিক কাশ্মীর সফরের মতই অবস্থা। আব্দুর রহমান ভাই আমার বাম পাশের সীটে বসেছেন। আমি সবার শেষে তার এনআইডি নিয়ে আর্মীর হাতে দিলাম। আর্মী ভাই কিছু না বলে নিচে নেমে গেল। অতঃপর রেজিস্ট্রি শেষে আধাঘন্টা পর ফেরৎ দিয়ে গেল। আমি আল্লাহর নগদ সাহায্য দেখে শুকরিয়া আদায় করলাম।

কিন্তু ড্রাইভার জানালো সোয়াত পৌঁছানোর পূর্বে আরেকটা চেক পয়েন্ট আছে। অতএব আবারও শংকায় পড়ে গেলাম। পথে নদী ও পাহাড়ের যে বাহারী সৌন্দর্য চোখের সামনে ধরা দিতে লাগল, তার কিছুই যেন দৃষ্টি কাড়ছে না। পরবর্তী চেকপয়েন্ট থেকে ফেরৎ আসতে হয় কিনা এটাই এখন একমাত্র চিন্তা। ওদিকে লতীফ শাহ বার বার ফোন করছে ঠিকঠাক আসতে পারছি কি না। আমি লজ্জায় বলতেও পারছি না চেক পয়েন্টের কথা। সে হয়ত জানে না এ পথে এখনও বিদেশীদের জন্য নিষেধাজ্ঞা আছে। জানলে নিশ্চয়ই আসতে বলত না।

অবশেষে সোয়াতে ঢোকার পূর্বে যে চেকপয়েন্ট তার সামনে এসে গাড়ি দঁাড়ালো। আয়োজন দেখে আমি নিশ্চিত এবার ইসলামাবাদ ফিরে যাওয়ার পরোয়ানা আসছে। যথারীতি আর্মী এসে এনআইডি কার্ড নিতে লাগল। আমি গতবারের মতই কেবল আব্দুর রহমান ভাইয়ের কার্ডটি দিলাম আর প্রমাদ গুণতে লাগলাম যে আমারটা চায় কিনা। বিস্ময়করভাবে আর্মী পূর্বের মত এবারও কিছু না বলে আমাদের দু’জন থেকে একটি কার্ড নিয়ে চলে গেল। রেজিস্ট্রেশনের পর আবার কার্ডটি ফেরৎ দিয়ে গেল। গাড়ি সোয়াতের পথে চলতে শুরু করেছে। আমি আব্দুর রহমান ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে তৃপ্তির হাসি হাসলাম। বুঝতে পারলাম আল্লাহর সাহায্য পদে পদে আমাদের সাথে আছে আলহামদুলিল্লাহ।                                     (ক্রমশঃ)



বিষয়সমূহ: ভ্রমণস্মৃতি
আরও