জর্ডান
তাওহীদের ডাক ডেস্ক
ভূমিকা : মুসলিম
ঐতিহ্যের লীলাভূমি নামে খ্যাত এশিয়া মহাদেশে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম একটি
দেশ জর্দান। মুসলিম দেশ পরিচিতির এ পর্বে নিম্নে জর্দান নিয়ে আলোচনা করা
হ’ল।
নাম : আরবী (ألاردن) ‘আল-উর্দুন’ বা হাশেমীয় জর্দান রাজ্য। ‘আল-মামলাকাতুল উর্দুনিয়াল হাশিমিয়া’ (المملكة الاردنية الهاشمية)-এর সম্পূর্ণ নাম। এটি মধ্যপ্রাচ্যের একটি রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র। জর্দানের রাজবংশ নিজেদেরকে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর পিতামহ হাশেমের বংশধর মনে করে। রাষ্ট্রীয় নাম- ‘হাশেমী রাজতন্ত্র জর্দান’। ইংরেজীতে যার নাম The Hashemite kingdom of Jordan।
রাজধানী ও অবস্থান : জর্দানের রাজধানীর নাম ‘আম্মান’। এটি জর্দানের বৃহত্তম শহর। লোকসংখ্যা ১.০৮৮ মিলিয়ন। জর্দানের অবস্থান হ’ল পূর্বে ইরাক,পশ্চিমে ইসরাঈল ও পশ্চিম তীর এবং ডেড সী, উত্তরে সিরিয়া এবং দক্ষিণে সঊদী আরব ও আকাবা গলফ বা আকাবা উপসাগর ।
উল্লেখ্য, ইংরেজী Gulf-এর অর্থ উপসাগর। আকাবা গলফ অর্থ আকাবা উপসাগর। যা লোহিত সাগরের একটি উপসাগর। লোহিত সাগর ভারত মহাসাগরের একটি অংশ, যা আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশকে পৃথক করেছে। সাগরটির দক্ষিণে অবস্থিত বাব এল মান্দের প্রণালী ও এডেন উপসাগরের মাধ্যমে ভারত মহাসাগরের সাথে যুক্ত সাগরটির উত্তরাংশে সাথে সিনাই উপদ্বীপ, আকাবা উপসাগর এবং সুয়েজ উপসাগর অবস্থিত।
আয়তন ও জনসংখ্যা : মোট আয়তন ৩৪,৪৯৫ বর্গমাইল বা ৮৯,৩৪২ বর্গ কিঃ মিঃ। ২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী জনসংখ্যা ৭,৭৪,৫০০ জন। যাদের অধিকাংশই ফিলিস্তীনী মুসলিম, আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আ আক্বীদার অনুসারী। জন্মহার ২৬.৫২। গড় আয়ু ৮০ বছর। জর্দানের মুদ্রার নাম দিনার। প্রধান ভাষা আরবী। তবে ইংরেজী ভাষাও প্রচলিত আছে।
জর্দান অধিবাসীদের ধর্মীয় বিশ্বাস :
জর্দানকে বলা হয় আধুনিক আরব রাষ্ট্র। মোট জনসংখ্যার শতকরা ৯২% মুসলিম (সুন্নী), ৬% খ্রীষ্টান, ২% দারাজিয়া, কিছু বাহাঈ গোত্র ও অন্যান্য।
উল্লেখ্য যে, ‘দারাজিয়া’-দের ধর্ম বিধানে ইবরাহীমী ধর্মের পাশাপাশি নিউপ্লাতিনিক এবং পিথাগোরীয় মতবাদের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। দারাজিয়াদের সামাজিক রীতিনীতি মুসলিম ও খ্রীষ্টানদের থেকে ভিন্ন। নিম্নে দারাজিয়াদের পরিচয় ও আক্বীদা বিধৃত হ’ল-
‘দারাজিয়া’-এর পরিচয় :
দারাজিয়া একটি একেশ্বরবাদী ধর্ম এবং সামাজিক সম্প্রদায়। এই ধর্মকে পৃথক ধর্ম হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। কারণ এটি মূলত শী‘আ সম্প্রদায়ের একটি শাখা। দারাজিয়াগণ নিজেদেরকে ‘আহলে তাওহীদ’ বা একেশ্বরবাদী মানুষ হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকে। এদের আবাসস্থল মূলত জর্দান, সিরিয়া, লেবানন ও ইসরাঈল।
দারাজিয়া আক্বীদার উৎস :
দারাজিয়া নামটি এসেছে মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল নাশতাকিন আদ-দারাজির নাম থেকে। যিনি এই মতাদর্শের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রচারক। ‘দারাজি’ শব্দটি ফারসী। ‘আদ-দারাজি’ ছিলেন একজন সাধু ও প্রচারক। দারাজিয়াগণ আদ-দারাজিকে ধর্মগুরু মানে এবং নিজেদেরকে দ্রুজ বলে পরিচয় দেয়। আদ-দারাজি নিজেকে ‘বিশ্বাসের তরবারী’ বলে ঘোষণা করেন।
দারাজিয়াদের আক্বীদা :
দ্রুজ অনুসারীরা বিশ্বাস করেন যে, সৃষ্টিকর্তা মানুষের মাঝে বিরাজ করেন। বিশেষ করে আলী (আঃ) এবং তাঁর বংশধরদের মাঝে। ফাতেমীয় খলীফা আল-হাকীম বিন আমর এই মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন এবং আল্লাহর মাঝেও সৃষ্টিকর্তা আছেন বলে প্রচার করেন। দারাজিয়াগণ আল-হাকিম বিন আমরকে ‘ঈশ্বর প্রেরিত দূত’ বলে মনে করে।
দারাজিয়াদের অবস্থান :
‘ইনস্টিটিউট অব দ্রুজ’ -এর গবেষণা থেকে জানা যায় যে, ৫০% দারাজিয়া সিরিয়া, ৪০% লেবাননে, ৬-৭% ইসরাঈলে এবং ১-২% জর্দানে বসবাস করে। মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা, যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় দারাজিয়া অনুসারীগণ বসবাস করেন। পৃথিবীতে দারাজিয়া অনুসারীর সংখ্যা দশ লাখেরও বেশী। দ্রুজগণ আরবীতে কথা বলে এবং প্রাচ্য ভূ-মধ্যসাগরীয় অঞ্চলের সামাজিক রীতিনীতি অনুসরণ করে। দারাজিয়াগণ মূলত জর্দানের পূর্বাঞ্চলীয় শহর ‘আজবাক’ ও ‘জারকাতে’ বসবাস করে থাকে।
বাহাঈ ধর্ম :
‘বাহাঈ’ ধর্ম হচ্ছে ‘বাহাউল্লাহ’ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একেশ্বরবাদী একটি ধর্ম। উল্লেখ্য বাহাউাল্লাহ (নভেম্বর ১২, ১৮১৭- মে ১৮৯২) বাহাঈ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। জন্মসূত্রে তার নাম ছিল মির্যা হুসাইন আলী।
বাহাঈ আক্বীদার উৎস :
‘বাহাঈ’ শব্দটি একটি বিশেষণ হিসাবে বাহাঈ বিশ্বাস বা ধর্মকে নির্দেশ করতে তথা ‘বাহাউল্লাহ্’-এর অনুসারীদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এটি উদ্ভূত হয় আরবী ‘বাহা’ থেকে, যার অর্থ মহিমা করা উজ্জ্বলদীপ্তি। ধর্মটিকে নির্দেশ করতে পূর্বে ‘বাহাঈজম’ বা ‘বাহাঈবাদ’ পরিভাষাটি ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে ধর্মটির সঠিক নাম ‘বাহাঈ ধর্ম’।
বাহাঈদের আক্বীদা :
‘বাহাঈ ধর্মের’ প্রতিষ্ঠাতা বাহাউল্লাহর মতে- পয়গম্বরদের ধারার তিনি সমাপ্তি তথা পূর্ণতা এনেছেন। এমনকি তিনি নিজেকে ঈশ্বরের চূড়ান্ত বিকশিত রূপ বলেও দাবী করেছেন (নাঊযুবিল্লাহ)।
উনবিংশ শতাব্দীতে পারস্যে (বর্তমানে ইরান) এই ধর্মের উৎপত্তি। মূলত আত্মিক ঐক্য হচ্ছে এই ধর্মের মূল ভিত্তি। বিশ্বে বর্তমানে ২০০-এর বেশী দেশ ও অঞ্চলে এই ধর্মের আনুমানিক ৬০ লক্ষ অনুসারী রয়েছে।
বাহাউল্লাহ অনেকগুলো ধর্মীয় পুস্তক রচনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ‘কিতাব-ই-আক্বদাস’ এবং ‘কিতাব-ই-ইক্বান’। তিনি প্যালেস্টাইনের বাহজি অঞ্চলে মৃত্যুবরণ করেন এবং সেখানেই তার সমাধি অবস্থিত। এ অঞ্চলটি বর্তমানে ইসরাঈলের অন্তর্গত।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস :
দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার একটি ছোট্ট আরব দেশ জর্দান। লূত (আঃ)-এর আবাসভূমি হিসাবে পরিচিত জর্দান সবসময় মধ্যপ্রাচ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এবং ভূ-রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ হ’তে এখনো কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
প্রাচীনকালে এ এলাকায় সাদূম, আমূরা, দূমা, ছা‘রাহ ও ছা‘ওয়াহ নামে পাঁচটি বড় বড় শহর ছিল। এ পাঁচটি শহরের মধ্যে ‘সাদূম’ ছিল সবচেয়ে বড় এবং সাদূমকেই রাজধানী মনে করা হ’ত। লূত (আঃ) এখানেই অবস্থান করতেন। তখন এ স্থানটি ছিল স্বাভাবিক এবং মানুষ বসবাসের জন্য খুবই উপযোগী। তৎকালীন লূত (আঃ)-এর সম্প্রদায় শিরক ও কুফরী ছাড়াও সমকামিতার মত নিকৃষ্ট ও জঘন্যতর পাপকাজে লিপ্ত হয়েছিল, যা ইতিপূর্বে কোন জাতির মধ্যে পরিদৃষ্ট হয়নি। জন্তু-জানোয়ারের চাইতেও নীচ, লজ্জাহীন ও হঠকারী এই সম্প্রদায়ের মানুষদের হেদায়াতের জন্য আল্লাহ লূত (আঃ)-কে প্রেরণ করলেন। কিন্তু তিনি বিফল মনোরথ হয়ে অবশেষে আল্লাহর সাহায্য কামনা করলেন। ফলে যথারীতি গযব নেমে এল।
আল্লাহর হুকুমে কয়েকজন ফেরেশতা মানুষের রূপ ধারণ করে লূত (আঃ)-এর বাড়ীতে আসলেন। অতঃপর আল্লাহর হুকুমে পরদিন অতি প্রত্যুষে গযব কার্যকর করা হয়। লূত (আঃ) ও তাঁর সাথীগণ যখন নিরাপদ দূরত্বে পৌঁছেন তখন জিবরীল (আঃ) আল্লাহর নির্দেশ পাওয়া মাত্র ছুবহে ছাদিক-এর সময় একটি প্রচন্ড নিনাদের মাধ্যমে তাদের শহরগুলোকে উপরে উঠিয়ে উপুড় করে ফেলে দিলেন এবং সাথে সাথে প্রবল বেগে ঘূর্ণিবায়ুর সাথে প্রস্তর বর্ষণ শুরু হয়। এটা ছিল তাদের কুকর্মের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ শাস্তি। কেননা তারা যেমন আল্লাহর আইন ও প্রাকৃতিক বিধানকে উল্টিয়েছিল অর্থাৎ মানুষের স্বভাব বিরুদ্ধভাবে সমকামিতায় লিপ্ত হয়েছিল ঠিক তেমনি তাদেরকেও মাটি উল্টিয়ে উপুড় করে শাস্তি দেওয়া হ’ল।
‘কওমে লূত’-এর ধ্বংসস্থলটি বর্তমানে ‘বাহরে মাইয়েত’ বা ‘বাহরে লূত’ অর্থাৎ ‘মৃত সাগর’ বা লূত সাগর নামে খ্যাত। যা ফিলিস্তীন ও জর্দান নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে বিশাল অঞ্চল জুড়ে নদীর রূপ ধারণ করে আছে। আজকের এইডস আক্রান্ত বিশ্বের জন্য এটি একটি জীবন্ত নিদর্শন। অতঃপর বহুকাল যাবত ধ্বংসস্থলটির আশেপাশে কোন মনুষ্য বসতী গড়ে উঠেনি।
পরবর্তীতে ধীরে ধীরে বিভিন্ন এলাকা হ’তে মানুষ ধ্বংসস্থলের আশেপাশে বসবাস করতে থাকে, যা বর্তমানে জর্দান এবং ধ্বংসস্থলটি ‘ডেডসী’ বা ‘মৃত সাগর’ নামে পরিচিত। ডেডসীর আয়তন দৈর্ঘ্য ৭৭ কিঃ মিঃ (প্রায় ৫০ মাইল), প্রস্থ ২২ কিঃ মিঃ (প্রায় ৯ মাইল) এবং গভীরতায় ২০০ মিটার। বর্তমান ভূ-বিজ্ঞানীদের মতে, এর উপকূলীয় স্থলভাগ পৃথিবীর সবচেয়ে নিম্নতম স্থলভূমি, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪২০ মিটার (১৩৭৫ ফুট) নীচে। এর পাশ দিয়ে চলে গেছে বিশ্বের সবচেয়ে নীচু হাইওয়ে ‘হাইওয়ে ৯০’। এই হাইওয়েটি ইসরাঈল এবং পশ্চিম তীরের মধ্যে দিয়ে চলে গেছে। এর পানিতে তৈল জাতীয় পদার্থ বেশী এবং সমুদ্রের পানির চাইতে প্রায় ৯ গুণ (৮.৬) বেশী লবণাক্ত। পানির ঘনত্বের কারণে মানুষ অনায়াসে এতে ভেসে থাকতে পারে। এতে কোন মাছ, ব্যাঙ এমনকি কোন জলজ প্রাণীও বেঁচে থাকতে পারে না। এ কারণেই একে ‘মৃত সাগর’ বা ‘মরু সাগর’ বলা হয়েছে। এখানকার মাটিতে প্রচুর পরিমাণে গন্ধক পাওয়া। Natron ও পেট্রোল তো আছেই। এই গন্ধকও আকাশ হ’তে উল্কা পতনের অকাট্য প্রমাণ বহন করে।
বর্তমান জর্দান :
মরুময় দেশ জর্দান ওছমানীয় সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। জর্দান এতদঞ্চলে সঊদী আরব সহ অনেক নতুন রাষ্ট্রের মধ্যে অন্যতম। এসব রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছিল ১৯১৬ সালের ওছমানীয় বা অটোমান টার্কদের (তুর্কি) বিরুদ্ধে আরব বিদ্রোহের ফসল হিসাবে। ঐ সময় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মিত্রবাহিনীর অন্যতম ব্রিটিশ, সামরিক বাহিনীর সদস্য টমাস ‘এডওয়ার্ড লওরেন্স’ বা আরব ইতিহাসখ্যাত ‘লওরেন্স অব এ্যারাবিয়া’র মরু গেরিলা যুদ্ধের তত্ত্ব যেমন আরব বিদ্রোহ সফল করেছিল, তেমনি অটোমান সাম্রাজ্যের ইতি টেনেছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ১০০ বছর আগে এতদঞ্চলের নকশার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছিল, যার অন্যতম ফসল জর্দান।
১৯২২ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ ম্যান্ডেটে পরিচালিত স্বাধীন হাশেমী রাষ্ট্র হিসাবে আত্মপ্রকাশের পরও এই রাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক বেশী। জর্দানের সঙ্গে সিরিয়া, ইরাক, সঊদী আরব ও ইসরাঈল এবং বর্তমানে প্যালেস্টাইন অথরিটি দ্বারা সীমিতভাবে শাসিত পশ্চিম তীরের সঙ্গে অভিন্ন সীমানা রয়েছে। এছাড়া মিশরের সঙ্গে আকাবা গলফের মাধ্যমে সরাসরি যোগাযোগও রয়েছে।
১৯৪৬ সালের ২২ শে মার্চ লন্ডনে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী বৃটেন একটি সার্বভৌম স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে ট্রান্স জর্দানকে স্বীকৃতি দেয়। ঐ বছর ২৫ শে মে আমীর আব্দুল্লাহ উপাধি ধারণ করেন এবং তাকে হাশেমী রাজতন্ত্র জর্দানের রাজা হিসাবে ঘোষণা করা হয়। উল্লেখ্য যে, মক্কায় জন্মগ্রহণকারী আব্দুল্লাহ বিন আল হুসাইন ১৯০৯ সালে থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত মক্কার প্রতিনিধি হিসাবে ওছমানীয় সাংসদের দায়িত্ব পালন করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি ব্রিটিশের সাথে মিত্রতা স্থাপনে বিৃটিশ সামরিক কর্মকর্তা টি.ই লরেন্সের সাথে কাজ করেন। ওছমানীয়দের বিরুদ্ধে সংঘটিত আরব বিদ্রোহের তিনি অন্যতম স্থপতি ও পরিকল্পক।
১৯২১ থেকে তার মৃত্যু ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত তিনি জর্দানের স্বাধীন রাজা হিসাবে অধিষ্ঠিত ছিলেন। অতঃপর তার ছেলে দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ তার স্থলাভিষিক্ত হন।
১৯৪৮ সালে ফিলিস্তীনের অংশ বিশেষে ইসরাঈল স্বাধীনতা ঘোষণা করলে জর্দান আরও চারটি আরব রাষ্ট্রের সাথে ইসরাঈলীদের আক্রমণ করে। যুদ্ধশেষে ইসরাঈলীরা পশ্চিম জেরুজালেম এবং জর্দানরা পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম দখলে আনে। ১৯৬৭ সালের জুন মাসে সংঘটিত ৬ (ছয়) দিনের আরব-ইসরাঈল যুদ্ধে ইসরাঈল পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীর দখল করে নেয়। পরবর্তীতে জর্দান পশ্চিম তীরকে জর্দানের অংশ হিসাবে দাবী করতে থাকলেও স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তীনীদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৮৮ সালে জর্দানের রাজা পশ্চিম তীরের উপর থেকে দাবি প্রত্যাহার করে নেয়।
সংবিধান ও সরকারব্যবস্থা :
জর্দানে রাজতান্ত্রিক সরকার বিদ্যমান। দুইকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের সদস্য সংখ্যা ৮০। সদস্যরা জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। সিনেটের সদস্য সংখ্যা ৩০। সদস্যরা বাদশাহ কর্তৃক মনোনীত হন।
মন্ত্রীপরিষদ তার কাজের জন্য পার্লামেন্টের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। রাজা বা রাণীর বিরুদ্ধে সমালোচনা নিষিদ্ধ। রাজা -রাণী কিংবা রাজ পরিবারের কোন সদস্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা সমালোচনার জন্য তিন বছরের কারাদন্ডের বিধান রয়েছে।
সংবিধান :
১৯৫২ সালে প্রণীত জর্দানের সংবিধানে বাদশাহর প্রচুর ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। বাদশাহ দেশের প্রধান নির্বাহী এবং দেশের সামরিক বাহিনীর প্রধান। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী পরিষদের মাধ্যমে বাদশাহ তার মতামত প্রয়োগ করে থাকেন। তিনিই বিচারকদের নিয়োগ, চুক্তি অনুমোদন, যুদ্ধ ঘোষণা, সামরিক বাহিনীর নিয়োগ দেন। মন্ত্রী পরিষদের সিদ্ধান্ত, আদালতের রায় ও জাতীয় মুদ্রা তার নামেই ইস্যু করা হয়। দেশের মন্ত্রী পরিষদের নেতৃত্ব দেন একজন প্রধানমন্ত্রী, যাকে নিয়োগ দেন বাদশাহ।
সংবিধান অনুযায়ী দেশেটিতে তিন ধরণের আদালত রয়েছে। বেসামরিক, ধর্মীয় এবং বিশেষ আদালত। বেসামরিক আদালত বেসামরিক অপরাধ এবং সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিচার করে থাকে। ধর্মীয় আদালত সাধারণত বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার, সন্তানের ভরণ-পোষণ ইত্যাদি বিষয়ে বিচারকাজ সম্পন্ন করে থাকে। মুসলিম ও খ্রীষ্টান উভয় সম্প্রদায়ের জন্যই এ ধর্মীয় আদালত রয়েছে। আর বিশেষ আদালত দেশটির বিশেষ ঘটনার ক্ষেত্রে বিচার সম্পাদন করে থাকে। দেশের বিচার বিভাগ অন্য বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ পৃথক ও স্বাধীন।
প্রশাসনিক বিভাগ :
প্রশাসনিক কাজের সুবিধার জন্য জর্দানকে ১২টি প্রদেশে ভাগ করা হয়েছে। প্রত্যেক প্রদেশের প্রধান হ’লেন এক একজন গভর্নর, যাকে নিযুক্তি করে থাকেন দেশের বাদশাহ। গভর্ণর তার প্রদেশের সব সরকারী বিভাগ এবং উন্নয়ন প্রকল্পের একমাত্র কর্তৃপক্ষ হিসাবে গণ্য হন।
পার্লামেন্ট :
জর্দানের পার্লামেন্ট ‘মজলিসে উম্মাহ’ নামে পরিচিত। এটি দুই কক্ষ বিশিষ্ট। এর একটি হচ্ছ ‘দ্য চেম্বার অব ডেপুটি বা ‘মজলিসে নওয়াব’, আরেকটি হচ্ছে ‘সিনেট’ বা ‘মজলিসে আয়ান’।
‘দ্য চেম্বার অব ডেপুটি’-এর সদস্য সংখা ৮০ জন। ১২টি প্রদেশ থেকে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত এই ৮০ জনের মধ্যে ৭১ জন হবেন মুসলিম এবং ৯ জন হবেন খ্রীষ্টান সম্প্রদায় থেকে। ‘সিনেটে’র ৫৫ সিনেটরের সবাই বাদশাহ কর্তৃক মনোনীত। উভয় সদস্যরাই চার বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন। ‘দ্য চেম্বার অব ডেপুটি’-এর সদস্যরা কোন ভাবেই বাদশাহর আত্মীয় হ’তে পারবেন না এবং সরকারের কোন আর্থিক ব্যবস্থাপনা থেকে উপকার ভোগী হ’তে পারবেন না। দেশের পার্লামেন্ট শূণ্য হয়ে গেলে তখন বাদশাহই দেশ পরিচালনা করে থাকেন।
রাজনৈতিক দল : স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত জর্দানে রাজনৈতিক দল এবং বিরোধী দলীয় সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ ছিল । ১৯৮৯ সালে রাজনৈতিক দল এবং বিরোধী কার্যক্রম বৈধ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান জর্দানে ৩০টির মত দল বিদ্যমান। দেশটিতে চার ধরনের প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক দল রয়েছে। যেমন-ইসলামিক, বামপন্থী, আরব জাতীয়তাবাদ ও উদারনৈতিক। এছাড়া স্বতন্ত্রধারার কিছু রাজনৈতিক দল থাকলেও অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে অস্পষ্ট অবস্থান ও পরিষ্কার প্লাটফর্মের অভাবে তারা দেশের রাজনীতিতে তেমন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারেনা।
জর্দানের বাদশাহ ও রাজনৈতিক জীবন :
বৃটেনের সহায়তায় ১৯২১ সালে জর্দানে রাজতন্ত্র স্থাপিত হ’লে ট্রান্স জর্দানের আমীর হন প্রথম আব্দুল্লাহ বিন আল-হুসাইন। ১৯৪৬ সালের ২৫ মে ট্রান্সজর্দান স্বাধীন হয়ে নতুন জর্দান রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত মক্কায় জন্মগ্রহণকারী আব্দুল্লাহ আমীর ছিলেন। এরপর তিনি জর্দানের প্রথম বাদশাহ হন। ১৯৫১ সালে বাদশাহ আব্দুল্লাহ আততায়ীর হাতে নিহত হওয়ার পর তার ছেলে বাদশাহ তালাল জর্দানের শাসনভার হাতে নেন।
উল্লেখ্য যে, বাদশাহ আব্দুল্লাহ ১৯৫১ সালের ২০ জুলাই জেরুজালেমের আল-আক্বছা মসজিদ পরিদর্শনের সময় হুসাইনি গোত্রের এক ফিলিস্তীনীর আততায়ীর গুলিতে নিহত হন।
১৯৫২ সালে বাদশাহ তালালের মানসিক অসুস্থতার জন্য তাকে সিংহাসন থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। সে সময় তার সন্তান ‘হুসাইন’-এর বয়স কম থাকায় একটি কমিটির মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হয়। যখন হুসাইন ১৮ বছর বয়সে পৌঁছেন, তখন তিনি ক্ষমতায় আরোহণ করে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকেন। বাদশাহ হুসাইন জর্দানে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে আসেন। তিনি ১৯৯১ সালে ‘মার্শাল ল’র সমাপ্তি ঘটান এবং ১৯৯২ সাল রাজনৈতিক দলের অনুমোদন দেন। ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারীতে তার মৃত্যুর পর বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ ক্ষমতায় আসেন। বর্তমানে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছেন বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ।
শিক্ষা ব্যবস্থা :
জর্দানের শিক্ষা ব্যবস্থা আরব বিশ্বের মধ্যে প্রথম স্থানের দাবিদার এবং উন্নয়নশীল বিশ্বের মধ্যে শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যতম এক শিক্ষা ব্যবস্থা। জর্দানের বার্ষিক বাজেটের ২০.৫ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ। যেখানে তুরস্ক ও সিরিয়ায় শিক্ষা খাতে বরাদ্দ মাত্র ২.৫ শতাংশ করে। জর্দানের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দিকে বেশী নযর দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে দেশটির শিক্ষার হার ৯১.১ শতাংশ।
জর্দানের শিক্ষা ব্যবস্থায় ৫টি স্তর। ২ বছরের মাধ্যমিক শিক্ষা। এরপর দশ বছরের মৌলিক শিক্ষা। রয়েছে ২ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট অথবা ডিপ্লোমা। Tawjihi (সাধারণ মধ্যশিক্ষা সার্টিফিকেট)। এরপর রয়েছে ব্যাচেলর ডিগ্রী প্রোগ্রাম। একটি ব্যাচেলর ডিগ্রী অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৪ (চার) বছরের হয়। তবে দন্তচিকিৎসা, ফার্মেসি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ৫ বছর, মেডিসিন ৬ (ছয়) বছর হয়। এরপর ২ বছরের মাস্টার্স ডিগ্রী কোর্স। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ফরাসি ও জার্মান সিস্টেম অনুসরণ করে DEA মাস্টার্স ডিগ্রী দিয়ে থাকে। স্বাক্ষরতার হার ৯২.৬% (২০১০ সালের জরিপ অনুযায়ী)।
সামরিক বাহিনী :
জর্দানের রয়েছে এক বিশাল সামরিক বাহিনী। ১৯২০ সালের ২২ অক্টোবরে প্রতিষ্ঠিত সামরিক বাহিনীর বর্তমান সদস্য সংখ্যা ১,১০,৭০০, যার মধ্যে স্থলবাহিনী ৬০,০০০। তাদের রয়েছে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাঈল যুদ্ধে জর্দান আর্মি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
জীবনযাত্রার মান :
২০০৮ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী জর্দানে মানুষের জীবনযাত্রার মান আরব বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ মানের। শহর ও গ্রাম পর্যায়ে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুবিধা, উচ্চশিক্ষার সুবিধা, কম অপরাধ সংঘটন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা ইত্যাদি নিয়ে জীবনযাত্রার মানে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম সেরা দেশ হিসাবে জর্দান নিজের অবস্থান বজায় রেখেছে।
২০১০ সালের ‘ইন্টারন্যাশন্যাল লিভিং ম্যাগাজিন’-এর দেয়া তথ্যানুযায়ী জীবনযাত্রার ব্যয়, সংস্কৃতি, অবসর, অর্থনৈতিক অবস্থা, পরিবেশ সচেতনতা, স্বাধীনতা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা, আবহাওয়া, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ইত্যাদি দিক দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের অন্যতম শীর্ষস্থানে রয়েছে জর্দান।
অর্থনীতি :
যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও আরব দেশগুলোর সাথে দ্বি-পক্ষীয় সম্পর্কের মাধ্যমে জর্দান অর্থনৈতিক দিক দিয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ফসফেট ও পটাশ রপ্তানি, রেমিট্যান্স, বৈদেশিক সাহায্য ইত্যাদি দেশটির উল্লেখযোগ্য আয়ের খাত হিসাবে গণ্য। এছাড়া আইটি ও প্রযুক্তি খাতও ধীরে ধীরে দেশটিকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া মানব উন্নয়ন সূচকে জর্দানের অবস্থান বিশ্বের মধ্যে ৯৫ তম।
জর্দানের মোট আবাদী জমির পরিমাণ ৫%। বর্তমানে সেচ পদ্ধতির মাধ্যমে কিছু ফল-মূল ও সবজি উৎপাদিত হয়। প্রধান ফসল লেবু এবং লেবু জাতীয় অন্যান্য ফল। যেমন- টমেটো, শশা, গম, মসুর ডাল, জলপাই অন্যতম। পর্যটন দেশটির অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখে। ১৯৮২ সালে জর্দানে প্রথম তেল আবিষ্কৃত হয়। ফলে বিভিন্ন শহরে ছোট পরিসরে বিভিন্ন তেল এবং পেট্রোলিয়াম ইন্ডাস্ট্রিজ গড়ে উঠেছে।
প্রধান আমদানী ও রপ্তানী দ্রব্য :
আমদানী দ্রব্যসমূহ হ’ল- অশোধিত তেল, টেক্সটাইল কাপড়, যন্ত্রপাতি, পরিবহন সরঞ্জাম এবং শিল্পজাত পণ্য। রপ্তানী দ্রব্য হ’ল- পোশাক, ফার্মাসিটিক্যালস, পটাশ, ফসফেট এবং কৃষিপণ্য।
যোগাযোগ ব্যবস্থা :
দেশটির সড়ক পথের দৈর্ঘ ৫ হাযার কিঃ মিঃ। রেলপথের দৈর্ঘ্য ৮১৮ কিঃ মিঃ। জর্দানের ৭টি বিমানবন্দর রয়েছে, তন্মধ্যে ৩টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সবচেয়ে বড় ‘রাণী আলিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’, আম্মান। এছাড়া একটি নৌবন্দরও রয়েছে।
আবহাওয়া :
জর্দানে প্রধানতঃ ভূ-মধ্যসাগরীয় আবহাওয়া বিদ্যমান। গ্রীষ্মকালে আবহাওয়া গরম ও শুষ্ক এবং শীতকালে আবহাওয়া ঠান্ডা ও আর্দ। দেশটির পাহাড়ী এলাকায় গ্রীষ্মকালেও ঠান্ডা বিরাজ করে। সমতল এলাকায় গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড গরম এবং শীতকালে শীতের প্রচন্ড তীব্রতা অনুভূত হয়। জানুয়ারী মাসে রাজধানী আম্মানের তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রী ফারেনহাইট এবং জুলাই মাসে ৭৭ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠানামা করে। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ৩০.৪৮ সেঃমিঃ।
শিল্প : জর্দানে শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সিমেন্ট, ইস্পাত, সার, জ্বালানী, ফসফেট, সিগারেট, বস্ত্র, পাদুকা, ব্যাটারি, প্লাস্টিক সামগ্রী, চামড়া দ্রব্য, ঔষধ, কসমেটিক প্রভৃতি প্রধান।
খনিজ সম্পদ : জর্দানের খনিজ সম্পদের মধ্যে ফসফেট, পটাশ সহ বিভিন্ন প্রকার আকরিক ও রাসায়নিক দ্রব্য।
পর্যটন : ডেডসী ও রোমান সভ্যতার অনেক নিদর্শন এখনো টিকে থাকায় সারা বছর ইউরোপ-আমেরিকা হ’তে প্রচুর পর্যটক জর্দানে ভ্রমণ করে। পর্যটন দেশটির অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে।
বনজ সম্পদ : জর্দানের পূর্বদিকে মৌসুমী বৃষ্টিপাতের ফলে গড়ে উঠেছে শুষ্ক বন মালভূমি। তবে দেশের পশ্চিম দিকে রয়েছে ভূ-মধ্যসাগরীয় বনভূমি। ২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী জর্দানের বনাঞ্চলের পরিমাণ ৮১ হাযার হেক্টর।
উপসংহার : দেশটি ফিলিস্তীনের পার্শ্ববর্তী দেশ হওয়ায় নবীদের গমনা-গমনের দেশ হিসাবেও পরিচিত। এখানে ইলিয়াস (আঃ), লূত (আঃ), ইবরাহীম (আঃ) বেশকিছু ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত স্থান রয়েছে।
তথ্যসূত্র :1.http://www.intoplease.com
৪. বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ কর্তৃক প্রকাশিত ২০১৫ সালের ক্যালেন্ডার।
[লেখক : সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ, রংপুর সাংগঠনিক যেলা]