ফযীলতপূর্ণ আমলসমূহ (২য় কিস্তি)
মুহাম্মাদ আবুল কালাম
ভূমিকা : বিশ্বজগতের
সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মানবজাতিকে আশরাফুল মাখলূক্বাত
হিসাবে তার ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেন, وَمَا خَلَقْتُ
الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ ‘আমি জিন ও ইনসান সৃষ্টি করেছি
কেবল এজন্য যে, তারা আমার ইবাদত করবে’ (যারিয়াত ৫১/৫৬)।
নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। অধিক ফযীলতের আশায় অনেক মানুষ জাল, যঈফ ও ভুয়া আমল করে থাকে। শিরক ও বিদ‘আত পূর্ণ আমল অধিক নেকীর আশায় করা হ’লেও এ আমল তার ইহকালে কল্যাণ ও পরকালে মুক্তির মাধ্যম হিসাবে গৃহীত হয় হবে না। কেননা কুরআন ও ছহীহ হাদীছ পরীপন্থী কোন আমল আল্লাহ তা‘আলা গ্রহণ করবেন না। বরং তা পরিত্যাজ্য। মহান আল্লাহ বলেন,قُلْ هَلْ نُنَبِّئُكُمْ بِالْأَخْسَرِينَ أَعْمَالًا الَّذِينَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُونَ أَنَّهُمْ يُحْسِنُونَ صُنْعًا ‘বলে দাও, আমরা কি তোমাদেরকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের সম্পর্কে জানিয়ে দেব? তারা হ’ল সেই সব লোক যাদের সকল প্রচেষ্টা পার্থিব জীবনে বিফলে গেছে। অথচ তারা ভেবেছে যে, তারা সৎকর্ম করছে’ (কাহাফ ১৮/১০৩-১০৪)। সুতরাং কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে ফযীলতপূর্ণ আমলসমূহ অত্র প্রবন্ধে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরার প্রয়াশ পাব ইনশাআল্লাহ।
ওযূর ফযীলত :
ওযূ গুনাহ মাফের একটি মাধ্যম। হাদীছে এসেছে,عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ خَرَجَتْ خَطَايَاهُ مِنْ جَسَدِهِ حَتَّى تَخْرُجَ مِنْ تَحْتِ أَظْفَارِهِ হযরত ওছমান (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি গোসল করে এবং উত্তমরূপে ওযূ করে, তার শরীর হ’তে তার সকল গুনাহ বের হয়ে যায়, এমনকি তার নখের নীচ হ’তেও তা বের হয়ে যায়’।[1] অন্যত্র এসেছে,عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا تَوَضَّأَ الْعَبْدُ الْمُسْلِمُ أَوِ الْمُؤْمِنُ فَغَسَلَ وَجْهَهُ خَرَجَ مِنْ وَجْهِهِ كُلُّ خَطِيئَةٍ نَظَرَ إِلَيْهَا بِعَيْنَيْهِ مَعَ الْمَاءِ أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ فَإِذَا غَسَلَ يَدَيْهِ خَرَجَ مِنْ يَدَيْهِ كُلُّ خَطِيئَةٍ كَانَ بَطَشَتْهَا يَدَاهُ مَعَ الْمَاءِ أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ فَإِذَا غَسَلَ رِجْلَيْهِ خَرَجَتْ كُلُّ خَطِيئَةٍ مَشَتْهَا رِجْلاَهُ مَعَ الْمَاءِ أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ حَتَّى يَخْرُجَ نَقِيًّا مِنَ الذُّنُوبِ আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যখন কোন মুসলিম অথবা মুমিন বান্দা ওযূ করে এবং তার চেহারা ধৌত করে, তখন তার চেহারা হ’তে পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে তার চোখের দ্বারা কৃত সকল গুনাহ বের হয়ে যায়। যা সে চোখ দিয়ে দেখেছে। যখন সে তার দুই হাত ধৌত করে তখন তার দুই হাত দিয়ে করা সকল গুনাহ পানির সাথে বা পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যায়। যা তার দু’হাত দিয়ে ধরার কারণে সংঘটিত হয়েছে। অনুরূপভাবে সে যখন তার দুই পা ধৌত করে, তার পা দ্বারা কৃত গুনাহ সমূহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যায় যে পাপের জন্য তার দু’পা হেঁটেছে। ফলে সে (ওযূর জায়গা হ’তে উঠার সময়) সকল গুনাহ হ’তে পাক-পবিত্র হয়ে যায়’।[2] ক্বিয়ামতের মাঠে মহানবী (ছাঃ) উম্মতে মুহাম্মাদীর ওযূর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উজ্জ্বল্য দেখে তাদেরকে চিনতে পারবে এবং হাউযে কাউছারে পানি পান করানোর জন্য আগেই পৌঁছে যাবে। হাদীছে এসেছে,
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَتَى الْمَقْبُرَةَ فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ وَدِدْتُ أَنَّا قَدْ رَأَيْنَا إِخْوَانَنَا قَالُوا أَوَلَسْنَا إِخْوَانَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ أَنْتُمْ أَصْحَابِى وَإِخْوَانُنَا الَّذِينَ لَمْ يَأْتُوا بَعْدُ. فَقَالُوا كَيْفَ تَعْرِفُ مَنْ لَمْ يَأْتِ بَعْدُ مِنْ أُمَّتِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَالَ أَرَأَيْتَ لَوْ أَنَّ رَجُلاً لَهُ خَيْلٌ غُرٌّ مُحَجَّلَةٌ بَيْنَ ظَهْرَىْ خَيْلٍ دُهْمٍ بُهْمٍ أَلاَ يَعْرِفُ خَيْلَهُ قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ. قَالَ فَإِنَّهُمْ يَأْتُونَ غُرًّا مُحَجَّلِينَ مِنَ الْوُضُوءِ وَأَنَا فَرَطُهُمْ عَلَى الْحَوْضِ أَلاَ لَيُذَادَنَّ رِجَالٌ عَنْ حَوْضِى كَمَا يُذَادُ الْبَعِيرُ الضَّالُّ أُنَادِيهِمْ أَلاَ هَلُمَّ. فَيُقَالُ إِنَّهُمْ قَدْ بَدَّلُوا بَعْدَكَ. فَأَقُولُ سُحْقًا سُحْقًا আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কবরস্থানে এসে কবরবাসীদের সালাম দিলেন এবং বললেন, السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ (ঈমানদার কবরবাসীরা তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। অচিরেই আল্লাহর মর্যী আমরা তোমাদের সাথে মিলিত হব)। অতঃপর তিনি বললেন, নিশ্চয়ই আমাদের আকাংখা এই যে, আমরা আমাদের ভাইদের দেখতে পাবো। ছাহাবী বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমরা কি আপনার ভাই নয়? তিনি বললেন, তোমরা আমার বন্ধু। আমার ভাই তারা যারা এখনো দুনিয়ায় আসেনি (পরে আসবে)। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! যারা এখনো আসেনি ক্বিয়ামতের দিন আপনি তাদের কিভাবে চিনবেন? উত্তরে রাসূল (ছাঃ) বললেন, যদি কোন ব্যক্তির একদল কালো রঙের ঘোড়ার মধ্যে সাদা ধবধবে কপাল ও হাত-পা সম্পন্ন ঘোড়া থাকে, সে কি তার ঘোড়াগুলি চিনতে পারবেনা? তারা বললেন হ্যাঁ, নিশ্চয়ই চিনতে পারবে হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! রাসূল (ছাঃ) তখন বললেন, আমার উম্মাত ওযূর কারণে (ক্বিয়ামতের দিন) সাদা ধবধবে কপাল ও সাদা হাত-পা নিয়ে উপস্থিত হবে এবং আমি হাউযে কাউছারের নিকট তাদের অগ্রগামী হিসাবে উপস্থিত থাকব’।[3] কষ্ট সত্বেও যে ব্যক্তি পূর্ণভাবে ওযূ করে আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে দিবেন এবং পদ মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন। এ মর্মে হাদীছে এসেছে,عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَلاَ أَدُلُّكُمْ عَلَى مَا يَمْحُو اللَّهُ بِهِ الْخَطَايَا وَيَرْفَعُ بِهِ الدَّرَجَاتِ قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ إِسْبَاغُ الْوُضُوءِ عَلَى الْمَكَارِهِ وَكَثْرَةُ الْخُطَا إِلَى الْمَسَاجِدِ وَانْتِظَارُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন একটা বিষয়ের কথা বলে দেব না; যা করলে আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের গুনাহ মাফ করবেন এবং (জান্নাতে) পদ মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন? ছাহাবীগণ আবেদন করলেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তখন তিনি (ছাঃ) বললেন, কষ্টে পূর্ণভাবে ওযূ করা, মসজিদের দিকে অধিক পদক্ষেপ রাখা এবং এক ওয়াক্ত ছালাত আদায়ের প্রতিক্ষায় থাকা। আর এটাই হ’ল ‘রিবাত্ব’ (প্রস্ত্ততি গ্রহণ)’।[4]
২. ওযূর দো‘আর ফযীলত :
যে ব্যক্তি পূর্ণভাবে ওযূ করবে এবং শেষে ওযূর দো‘আ পাঠ করবে তার জন্য জান্নাতের সব কয়টি দরজা খুলে দেওয়া হবে। সে যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছামত প্রবেশ করতে পারবে। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওযূ করার পর বলবে,أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِى مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِى مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ ‘(আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন প্রকৃত ইলাহ নেই। তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল। হে আল্লাহ আমাকে তাওবাকারীদের অন্তর্ভুক্ত কর এবং আমাকে পবিত্রতা অর্জনকারী অন্তর্ভুক্ত কর)। তাঁর জন্য জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেওয়া হবে। যেটা দিয়ে ইচ্ছা সে প্রবেশ করবে’।[5] উল্লেখ্য যে, এই দো‘আ পাঠের সময় আসমানের দিকে তাকানোর হাদীছটি ‘মুনকার’ বা যঈফ’।[6]
৩. আযান দাতার ফযীলত :
ছালাতের জন্য আযান দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। রাসূল (ছাঃ) মুওয়ায্যিনের সম্মান ও মর্যাদার ঘোষণা দিয়েছেন, عَنْ مُعَاوِيَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ الْمُؤَذِّنُونَ أَطْوَلُ النَّاسِ أَعْنَاقًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ হযরত মু‘আবিয়াহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, মুওয়ায্যিনগণ ক্বিয়ামতের দিন সবচেয়ে উঁচু গর্দান সম্পন্ন লোক হবে’।[7] মুওয়ায্যিনের আযান যারা শুনতে পাবে তারা সবাই ক্বিয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। এমনকি জ্বিন, পশু-পাখীও সাক্ষ্য দেবে। এ মর্মে আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, (ছাঃ) বলেছেন, لاَ يَسْمَعُ مَدَى صَوْتِ الْمُؤَذِّنِ جِنٌّ وَلاَ إِنْسٌ وَلاَ شَىْءٌ إِلاَّ شَهِدَ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‘মুওয়ায্যিনের আযানের ধ্বনি জিন ও ইনসান সহ যত প্রাণী শুনবে, ক্বিয়ামতের দিন সকলে তার জন্য সাক্ষ্য প্রদান করবে’।[8] আযানের ধ্বনি যতদূর যায় ততদূর শয়তান থাকতে পারে না। বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পালিয়ে যায়। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,إِذَا نُودِىَ لِلصَّلاَةِ أَدْبَرَ الشَّيْطَانُ وَلَهُ ضُرَاطٌ حَتَّى لاَ يَسْمَعَ التَّأْذِينَ فَإِذَا قَضَى النِّدَاءَ أَقْبَلَ حَتَّى إِذَا ثُوِّبَ بِالصَّلاَةِ أَدْبَرَ حَتَّى إِذَا قَضَى التَّثْوِيبَ أَقْبَلَ حَتَّى يَخْطُرَ بَيْنَ الْمَرْءِ وَنَفْسِهِ يَقُولُ اذْكُرْ كَذَا اذْكُرْ كَذَا لِمَا لَمْ يَكُنْ يَذْكُرُ حَتَّى يَظَلَّ الرَّجُلُ لاَ يَدْرِى كَمْ صَلَّى ‘ছালাতের জন্য আযান দিতে থাকলে শয়তান পিঠ ফিরিয়ে বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পলায়ন করে। যাতে আযানের শব্দ তার কানে না পৌঁছে। আযান শেষ হয়ে গেলে সে ফিরে আসে। আবার যখন এক্বামত শুরু হয় পিঠ ফিরিয়ে পালাতে থাকে। এক্বামত শেষ হয়ে গেলে আবার ফিরে আসে। ছালাতে মানুষের মনে সন্দেহ তৈরী করতে থাকে। সে বলে এটা, স্মরণ কর, ওটা স্মরণ কর। যেসব বিষয় তার মনে ছিল না সব তখন তার মনে পড়ে যায়। পরিশেষে মানুষ অবচেতন হয় আর বলতে পারে না কত রাকা‘আত ছালাত আদায় করা হয়েছে’।[9] পর্বত চূড়ায় যে ব্যক্তি একাকী হ’লেও আযান দিয়ে ছালাত আদায় করে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিয়ে জন্নাতে প্রবেশ করাবেন। হাদীছে এসেছে, عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعْجَبُ رَبُّكَ مِنْ رَاعِي غَنَمٍ فِي رَأْسِ شَظِيَّةٍ لِلْجَبَلِ يُؤَذِّنُ بِالصَّلَاةِ وَيُصَلِّي فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ انْظُرُوا إِلَى عَبْدِي هَذَا يُؤَذِّنُ وَيُقِيمُ الصَّلَاةَ يَخَافُ مِنِّي قَدْ غَفَرْتُ لِعَبْدِي وَأَدْخَلْتُهُ الْجَنَّةَ উক্ববাহ ইবনু আমের (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, তোমার রব সেই মেষ পালক রাখালের উপর খুশী হন, যে একা প্রর্বত চূড়ায় দাঁড়িয়ে ছালাতের জন্য আযান দেয় ও ছালাত আদায় করে। আল্লাহ বলেন, (হে আমার ফেরেশতাগণ তোমরা আমার বান্দার প্রতি দেখ। সে আমার ভয়ে (এই প্রর্বত চূড়ায়) আযান দেয় ও ছালাত অদায় করে। অতএব আমি আমার বান্দার যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দিলাম এবং তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করাব’।[10] যে ব্যক্তি বার বছর আযান দিবে তাঁর জন্য জান্নাত ওয়াজিব হবে। আযান ও এক্বামতের জন্য যথাক্রমে ষাট ও ত্রিশ নেকী দেওয়া হবে। এ মর্মে হাদীছে এসেছে, عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ أَذَّنَ ثِنْتَيْ عَشْرَةَ سَنَةً وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ وَكُتِبَ لَهُ بِتَأْذِينِهِ فِي كُلِّ يَوْمٍ سِتُّونَ حَسَنَةً وَلِكُلِّ إِقَامَةٍ ثَلَاثُونَ حَسَنَةً ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বার বছর আযান দিবে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। তাঁর আযানের কারনে ত্রিশ নেকী লেখা হবে’।[11]
৪. আযানের জবাব দাতার ফযীলত :
জান্নাতে যাবার একটি মাধ্যম আযানের জবাব দেওয়া। অথচ অনেকেই এ ব্যাপারে উদাসীন। যে ব্যক্তি অন্তর থেকে আযানের জবাব দিবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। হযরত ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, মুওয়ায্যিন যখন ‘আল্লা-হু আকবার’ বলে তখন তোমাদের কেউ যদি (উত্তরে) অন্তর থেকে বলে ‘আল্লা-হু আকবার’ ‘আল্লা-হু আকবার’ এর পরে মুওয়ায্যিন যখন বলেন, ‘আশহাদু আল লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ সেও বলে আশহাদু আল লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’। অতঃপর মুওয়যা্যিন যখন বলে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ। সেও বলে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ। তারপর মুওয়ায্যিন যখন বলে, ‘হাইয়া আলাছ ছালা-হ’ সে তখন বলে, ‘লা- হাওলা অলা কুওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ’। এর পর মুওয়ায্যিন যখন বলে ‘হাইয়া আলাল ফালা-হ’। তখন সে বলে, ‘লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা’। অতঃপর মুওয়যা্যিন যখন বলে, ‘আল্লা-হু আকবার’ আল্লা-হু আকবার’ তখন সে বলে, আল্লা-হু আকবার। এরপর মুওয়ায্যিন যখন বলে, ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ সেও বলে, ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ সেও বলে, ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’। সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে’।[12] সুতরাং মুওয়াযযিন আযানের যে বাক্য পাঠ করবে জবাবেও তাই বলতে হবে। শুধুমাত্র ‘হাইয়া আলাছ ছালা-হ’ ‘হাইয়া আলাল ফালা-হ’। ব্যতীত সেখানে হা-হাওলা অলা কুওয়াতা ইল্লাহ বিল্লা-হ বলবে। উল্লেখ্য যে, ১. ফজরের আযানে ‘আছ ছালা-তু খায়রুম মিনান নাঊম- এর জওয়াবে ‘ছাদাক্বাতা ওয়া বারারতা’ বলার কোন ভিত্তি নেই। ২. অমনিভাবে এক্বামত-এর সময় ক্বাদ ক্বা-মাতিছ ছালা-হ-এর জওয়াবে ‘আক্বা-মাহাল্লা-হু, ওয়া আদা -মাহা’ বলা সম্পর্কে আবুদাঊদে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ। ৩. ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ’ এর জওয়াবে ছাল্লা-হু আলাইহে ওয়া সাল্লাম’ বলার ও কোন দলীল নেই’।[13]
৫. আযানের দো‘আর ফযীলত :
আযানের জওয়াবে দান শেষে প্রথমে দরূদ পড়বে কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,إِذَا سَمِعْتُمُ الْمُؤَذِّنَ فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ ثُمَّ صَلُّوا عَلَىَّ ‘তোমরা মুওয়ায্যিনের আযান শুনলে উত্তরে সে শব্দগুলোই বলবে। অতঃপর আযান শেষে আমার উপর দরূদ পাঠ করবে’।[14] অতঃপর আযানের দো‘আ পড়বে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আযান শুনে এই দো‘আ পাঠ পাঠ করবে, তাঁর জন্য ক্বিয়ামতের দিন আমার শাফা‘আত ওয়াজিব হবে। হযরত জাবির (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি আযান শুনে এ দো‘আ পাঠ করবে,اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِى وَعَدْتَهُ حَلَّتْ لَهُ شَفَاعَتِى يَوْمَ الْقِيَامَةِ (তাওহীদের) এই পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত ছালাতের তুমি প্রভু। মুহাম্মাদ রাসূল (ছাঃ) কে তুমি দান অসীলা (নামক জান্নাতের সবোর্চচ সম্মানিত স্থান) ও মর্যাদা এবং পেঁŠছে দাও তাঁকে (শাফা‘আতের) প্রশংসিত স্থান ‘মাক্বামে মাহমুদে’ যার ওয়াদা তুমি তাঁকে করেছ। তাঁর জন্য ক্বিয়ামতের দিন আমার শাফা‘আতের ওয়াজিব হবে’।[15] আযানের অন্য দো‘আও রয়েছে। যে দো‘আ পাঠ করলে বান্দার সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। এ মর্মে হাদীছে এসেছে, عَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِى وَقَّاصٍ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ مَنْ قَالَ حِينَ يَسْمَعُ الْمُؤَذِّنَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا غُفِرَ لَهُ ذَنْبُهُ হযরত সাদ ইবনু আবী ওয়াক্বাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মুওয়ায্যিনের আযান শুনে এই দো‘আ পড়বে,أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি একক ও শরীক বিহীন। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাঁর বান্দা ও রাসূল। আমি আল্লাহকে রব হিসেবে পেয়ে, মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে রাসূল হিসেবে পেয়ে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট। তাঁর সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে’।[16]
৬. তাহিয়াতুল ওযূর ফযীলত :
ওযু করার পর দু’রাকা‘আত ছালাত আদায় করা হ’ল। তাহিয়াতুল ওযূ। তাহিয়াতুল ওযূর দু’রাকা‘আত ছালাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হযরত বেলাল (রাঃ) এটি নিয়মিত আদায় করার কারণে জান্নাতে রাসূল (ছাঃ)-এর আগে আগে হেঁটে ছিলেন। এমর্মে হাদীছে এসেছে, عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رضى الله عنه أَنَّ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِبِلاَلٍ عِنْدَ صَلاَةِ الْفَجْرِ يَا بِلاَلُ حَدِّثْنِى بِأَرْجَى عَمَلٍ عَمِلْتَهُ فِى الإِسْلاَمِ ، فَإِنِّى سَمِعْتُ دَفَّ نَعْلَيْكَ بَيْنَ يَدَىَّ فِى الْجَنَّةِ قَالَ مَا عَمِلْتُ عَمَلاً أَرْجَى عِنْدِى أَنِّى لَمْ أَتَطَهَّرْ طُهُورًا فِى سَاعَةِ لَيْلٍ أَوْ نَهَارٍ إِلاَّ صَلَّيْتُ بِذَلِكَ الطُّهُورِ مَا كُتِبَ لِى أَنْ أُصَلِّىَ হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ফজরের ছালাতের সময় বিলাল (রাঃ)-কে বললেন, হে বিলাল! ইসলাম কবুল করার পর তুমি এমকি আমল করেছ যার থেকে অনেক ছওয়াব হাছিলের আশা করতে পার। কেননা, আমি আমার সম্মুখে জান্নানে তোমার জুতার শব্দ শুতে পেয়েছি। (এ কথা শুনে) বিলাল (রাঃ) বলেলন, আমি তো অনেক আশা করার ম’ত কোন আমল করিনি। তবে রাত্রে বা দিনে যখনই ওযূ করেছি আমার সাধ্যমত সে ওযূ দিয়ে আমি (তাহিয়াতুল ওযূর) ছালাত আদায় করেছি’।[17] অন্য বর্ণনায় এ ছালাতের ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَتَوَضَّأُ فَيُحْسِنُ وُضُوءَهُ ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّى رَكْعَتَيْنِ مُقْبِلٌ عَلَيْهِمَا بِقَلْبِهِ وَوَجْهِهِ إِلاَّ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ উক্ববাহ ইবনু আমের (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে কোন মুসলিম যখনই সুন্দরভাবে ওযূ করে দাঁড়িয়ে একাগ্রতার সাথে দু’রাকা‘আত ছালাত আদায় করে, তাঁর জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়’।[18]
৭. তাহিয়াতুল মাসজিদ :
মসজিদে প্রবেশ করে বসার পূর্বে দু’রাকা‘আত ছালাত আদায় করা সুন্নাত। যাকে তাহিয়াতুল মাসজিদ বলে, হাদীছে এসেছে,عَنْ أَبِى قَتَادَةَ السَّلَمِىِّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ قَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلاَ يَجْلِسْ حَتَّى يُصَلِّىَ رَكْعَتَيْنِ হযরত আবু ক্বাতাদা ইবনু সালামী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে তখন সে যেন না বসে, যতক্ষণ দু’রাকা‘আত ছালাত না পড়বে’।[19] হাদীছে এসেছে, عَنْ أَبِى قَتَادَةَ السَّلَمِىِّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يَجْلِسَ আবু ক্বাতাদা সালামী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে তখন সে যেন বসার পূর্বে দু’রাকা‘আত ছালাত আদায় করে’।[20] তাহিয়াতুল মসজিদ অর্থাৎ মসজিদে বসার পূর্বে দু’রাকা‘আত ছালাত আদায় করা। এ ছালাতের গুরুত্ব সম্পর্কে আবু ক্বাতাদাহ (রাঃ) বলেন,دَخَلْتُ الْمَسْجِدَ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَالِسٌ بَيْنَ ظَهْرَانَىِ النَّاسِ قَالَ فَجَلَسْتُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا مَنَعَكَ أَنْ تَرْكَعَ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ تَجْلِسَ قَالَ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ رَأَيْتُكَ جَالِسًا وَالنَّاسُ جُلُوسٌ قَالَ فَإِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلاَ يَجْلِسْ حَتَّى يَرْكَعَ رَكْعَتَيْنِ ‘আমি একদা মসজিদে প্রবেশ করলাম। তখন রাসূল (ছাঃ) লোকদের মাঝে বসে ছিলেন। আমিও গিয়ে বসলাম। রাসূল (ছাঃ) আমাকে বললেন, বসার আগে দু’রাকা‘আত ছালাত আদায় করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? আমি বললাম, আপনাকে এবং জনগণকে বসে থাকতে দেখলাম তাই। তখন তিনি বলেলন, তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করবে যেন দুই রাকা‘আত ছালাত আদায় না করা পর্যন্ত না বসে’।[21] এমনকি জুম‘আর দিনে খুৎবা অবস্থায় যদি কেউ মসজিদে প্রবেশ করতো তাকেও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) দু’রাকা‘আত ছালাত আদায় করে বসার নির্দেশ দিতেন। যেমন হাদীছে এসেছে, عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ قَالَ دَخَلَ رَجُلٌ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَالنَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم يَخْطُبُ فَقَالَ أَصَلَّيْتَ قَالَ لاَ قَالَ فَصَلِّ رَكْعَتَيْنِ জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করীম (ছাঃ) জুম‘আর দিনে খুৎবা দিচ্ছিলেন এমতাবস্থায় জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে বললেন, তুমি কি ছালাত আদায় করেছ? সে বলল না। তখন তিনি বললেন, তুমি দাঁড়াও দু’রাকা‘আত ছালাত আদায় কর’।[22]
৮. সুন্নাত ও নফল ছালাতের ফযীলত :
পাঁচ ওয়াক্ত ফরয ছালাতের আগে পিছের সুন্নাত ছালাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যা নিয়মিত আদায়কারী জন্নাতে প্রবেশ করবে। عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَلَّى اثْنَتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً بَنَى اللَّهُ لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ أَرْبَعًا قَبْلَ الظُّهْرِ وَاثْنَتَيْنِ بَعْدَهَا وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْعَصْرِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْفَجْرِ উম্মু হাবীবাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দিব-রাত্রে বারো রাকা‘আত (সুন্নাত) ছালাত আদায় করে, তাঁর জন্য জান্নাতে একটি গৃহ নির্মাণ করা হবে। যোহরের পূর্বে চার, পরে দুই, মাগরিবের পরে দুই, এশার পরে দুই ও ফযরের পূর্বে দুই’।[23] ক্বিয়ামতের দিন ফরয ছালাতের ঘাটতি হ’লে সুন্নাত ও নফল ছালাতের মাধ্যমে তা পূরণ করা হবে। যেমন হাদীছে এসেছে, عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ يَقُولُ إِنَّ أَوَّلَ مَا يُحَاسَبُ بِهِ الْعَبْدُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عَمَلِهِ صَلاَتُهُ فَإِنْ صَلُحَتْ فَقَدْ أَفْلَحَ وَأَنْجَحَ وَإِنْ فَسَدَتْ فَقَدْ خَابَ وَخَسِرَ فَإِنِ انْتَقَصَ مِنْ فَرِيضَتِهِ شَىْءٌ قَالَ الرَّبُّ عَزَّ وَجَلَّ انْظُرُوا هَلْ لِعَبْدِى مِنْ تَطَوُّعٍ فَيُكَمَّلَ بِهَا مَا انْتَقَصَ مِنَ الْفَرِيضَةِ ثُمَّ يَكُونُ سَائِرُ عَمَلِهِ عَلَى ذَلِكَ আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন, ক্বিয়ামতের দিন সর্ব প্রথম বান্দার হিসাব নেওয়া হবে ছালাতের। ছালাত যথাযথভাবে আদায় হয়ে থাকলে সে সফল হবে ও মুক্তি পাবে। ছালাত যথাযথ আদায় না হয়ে থাকলে ক্ষতিগ্রস্থ ও ধ্বংস হবে। ক্বিয়ামতের দিন (মীযানের পাল্লায়) ফরয ইবাদতের কোন কমতি হ’লে প্রতিপালক আল্লাহ বলবেন, দেখ আমার বান্দার কোন সুন্নাত ও নফল ইবাদত আছে কি-না। তখন নফল দিয়ে তাঁর ঘাটতি পূরণ করা হবে। অতঃপর তার অন্যান্য সকল আমল সম্পর্কেও অনুরূপ করা হবে (যেমন ছালাত, ছিয়াম হজ্জ, যাকাত ইত্যাদিতে)’।[24]
(ক) ফজরের সুন্নাতে ছালাত :
ফজরের দু’রাকা‘আত সুন্নাত ছালাত খুব ফযীলতপূর্ণ। ফরযের পূর্বে এ ছালাত আদায় করতে হয়। সময় না পেলে ফরযের পরেও তা আদায় করা যাবে। এ ছালাতের ফযীলত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,رَكْعَتَا الْفَجْرِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا হযরত আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ফজরের দু’রাকা‘আত সুন্নাত ছালাত দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যকার সব কিছু থেকে উত্তম’।[25]
অন্যত্র এসেছে, عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها قَالَتْ لَمْ يَكُنِ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى شَىْءٍ مِنَ النَّوَافِلِ أَشَدَّ مِنْهُ تَعَاهُدًا عَلَى رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, ‘নবী কারীম (ছাঃ) কোন নফল ছালাতকে ফজরের দু’রাকা‘আত সুন্নাতের চেয়ে অধিক গুরুত্ব প্রদান করতেন না’।[26]
(খ) যোহরের সুন্নাত ছালাত :
যোহরের ফরযের পূর্বে দু’রাকা‘আত বা চার রাকা‘আত সুন্নাত ছালাত আদায় করা যায়। ফরযের পরে দু’রাকা‘আত বা চার রাকা‘আত ছালাত আদায় করা যায়।
যোহরের সুন্নাত ছালাতের ফযীলত সম্পর্কে হাদীছে এসেছে, عن أم حَبِيبَةَ قالت سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ مَنْ حَافَظَ عَلَى أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ قَبْلَ الظُّهْرِ وَأَرْبَعٍ بَعْدَهَا حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ উম্মু হাবীবাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন যে ব্যক্তি নিয়মিতভাবে যোহরের পূর্বে চার রাকা‘আত এবং পরে চার রাকা‘আত ছালাত আদায় করবে, তাঁর জন্য জাহান্নাম হারাম করা হবে’।[27] অন্য হাদীছে এসেছে, عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ السَّائِبِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّي أَرْبَعًا بَعْدَ أَنْ تَزُولَ الشَّمْسُ قَبْلَ الظُّهْرِ وَقَالَ إِنَّهَا سَاعَةٌ تُفْتَحُ فِيهَا أَبْوَابُ السَّمَاءِ فَأُحِبُّ أَنْ يَصْعَدَ لِي فِيهَا عَمَلٌ صَالِحٌ আব্দুল্লাহ ইবনু সায়িব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সূর্য হেলে যাওয়ার পর যোহরের ছালাতের পূর্বে চার রাকা‘আত ছালাত আদায় করতেন। তিনি বলতেন, এটা এমন এক সময় যখন নেক আমল উপরের দিকে যাওয়ার জন্য) আকাশের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। তাই এ মুহূর্তে আমার নেক আমলগুলো উপরের দিকে চলে যাক এটা আমি চাই’।[28]
(গ) আছরের সুন্নাত ছালাত :
আছরের পূর্বে চার রাকা‘আত সুন্নাত ছালাত আদায় করা যায়। এমর্মে হাদীছে এসেছে, عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ رَحِمَ اللَّهُ امْرَءاً صَلَّى قَبْلَ الْعَصْرِ أَرْبَعاً ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা রহমত করে ঐ ব্যক্তির উপর, যে ব্যক্তি আছরের (ফরয ছালাতের) পূর্বে চার রাকা‘আত ছালাত আদায় করে’।[29] অন্যত্র হযরত আলী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আছরের ছালাতের পূর্বে চার রাকা‘আত ছালাত আদায় করতেন’।[30]
(ঘ) মাগরিবের সুন্নাত ছালাত :
মাগরিবের ফরয ছালাতের পরে দু’রাকা‘আত সুন্নাত ছালাত আদায় করতে হয়’।[31] তবে মাগরিবের আযানের পরে দু’রাকা‘আত ছালাত আদায় করা মুস্তাহাব। এ মর্মে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,صَلُّوا قَبْلَ صَلاَةِ الْمَغْرِبِ قَالَ فِى الثَّالِثَةِ لِمَنْ شَاءَ ‘তোমরা মাগরিবের (ফরয ছালাতের) পূর্বে দু’রাকা‘আত ছালাত আদায় কর। তৃতীয় বার তিনি বলেছেন, যে ইচ্ছা করে’।[32] অন্য বর্ণনায় এসেছে,عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ كُنَّا بِالْمَدِينَةِ فَإِذَا أَذَّنَ الْمُؤَذِّنُ لِصَلاَةِ الْمَغْرِبِ ابْتَدَرُوا السَّوَارِىَ فَيَرْكَعُونَ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ حَتَّى إِنَّ الرَّجُلَ الْغَرِيبَ لَيَدْخُلُ الْمَسْجِدَ فَيَحْسِبُ أَنَّ الصَّلاَةَ قَدْ صُلِّيَتْ مِنْ كَثْرَةِ مَنْ يُصَلِّيهِمَا আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আমার মদীনায় ছিলাম। (এ সময় অবস্থা এমন ছিল যে) মুওয়াযযিন মাগরিবের আযান দিলে কোন কোন ছাহাবা ও তাবেঈ) মসজিদের খুঁটির দিকে দৌড়াতেন আর দুই রাকা‘আত ছালাত আরম্ভ করতেন। এমনকি কোন মুসাফির লোক মসজিদে এসে অনেক লোককে একা একা ছালাত আদায় করতে দেখে মনে করতেন (ফরয) ছালাত সমাপ্ত হয়ে গেছে। আর লোকের এখন সুন্নাত পড়ছে’।[33]
অন্যত্র হাদীছে এসেছে, عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ كَانَ الْمُؤَذِّنُ إِذَا أَذَّنَ قَامَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم يَبْتَدِرُونَ السَّوَارِىَ حَتَّى يَخْرُجَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم وَهُمْ كَذَلِكَ يُصَلُّونَ الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْمَغْرِبِ وَلَمْ يَكُنْ بَيْنَ الأَذَانِ وَالإِقَامَةِ شَىْءٌ হযরত আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুওয়ায্যিন যখন আযান দিত, তখন নাবী (ছাঃ)-এর ছাহাবীগণের মধ্যে কয়েকজন নবী করীম (ছাঃ)-এর বের হওয়া পর্যন্ত (মসজিদের) খুঁটির নিকট গিয়ে দাঁড়াতেন এবং এ অস্থায় মাগরিবের পূর্বে দু’ রাকা‘আত ছালাত আদায় করতেন। অথচ মাগরিবের আযান ও এক্বামতের মধ্যে কিছু (সময়) থাকত না’।[34]
হাদীছে এসেছে,قَالَ أَتَيْتُ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ الْجُهَنِىَّ فَقُلْتُ أَلاَ أُعْجِبُكَ مِنْ أَبِى تَمِيمٍ يَرْكَعُ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلاَةِ الْمَغْرِبِ. فَقَالَ عُقْبَةُ إِنَّا كُنَّا نَفْعَلُهُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُلْتُ فَمَا يَمْنَعُكَ الآنَ قَالَ الشُّغْلُ মারসাদ ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি উক্ববাহ আল-জুহানী (রাঃ)-এর নিকট গিয়ে বললাম, আবু তামীম (রাঃ) সর্ম্পকে এ কথা বলে কি আমি আপনাকে বিস্মিত করে দিব না যে, তিনি মাগরিবের (ফরজ) ছালাতের পূর্বে দু’রাকা‘আত (নফল) ছালাত আদায় করেন। উক্ববাহ (রাঃ) বললেন, (এতে বিস্ময়ের কি আছে?) আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর সময় তো আমরা তা আদায় করতাম। আমি প্রশ্ন করলাম, তাহ’লে এখন কিসে আপনাকে বাধা দিচ্ছে? তিনি বললেন কাজ কর্মের ব্যস্ততা’।[35]
ঙ. এশার সুন্নাত ছালাত :
এশার ফরজ ছালাতের পরে দু’রাকা‘আত সুন্নাত ছালাত আদায় করতে হয়। এ মর্মে রাসূল (ছাঃ) বলেন,مَنْ صَلَّى فِي يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ اثْنَتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً بُنِيَ لَهُ بَيْتٌ فِي الْجَنَّةِ أَرْبَعًا قَبْلَ الظُّهْرِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعَشَاءِ وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلَاةِ الْفَجْرِ ‘যে ব্যক্তি দিনে রাতে বার রাকা‘আত সুন্নাত ছালাত আদায় করবে, তার জন্য আল্লাহ জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন। যোহরের পূর্বে চার রাকা‘আত, পরে দু’রাক‘আত, মাগরিবের পরে দু’রাক‘আত, এশার পরে দু’রাক‘আত, ফজরের পরে দু’রাক‘আত’।[36]
(ক্রমশ)
[লেখক : কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ ]
[1]. মুসলিম হা/২৪৫; আহমাদ হা/৪৭৬; মিশকাত হা/২৮৪।
[2]. মুসলিম হা/২৪৪; তিরমিযী হা/৪৭৬; মিশকাত হা/২৮৫।
[3]. মুসলিম হা/২৪৯; ইবনু মাজাহ হা/৪৩০৬; নাসাঈ হা/১৫০; মিশকাত হা/২৯৮।
[4]. মুসলিম হা/২৫১; নাসাঈ হা/১৪৩; মিশকাত হা/২৮।
[5]. মুসলিম হা/২৩৪; তিরমিযী হা/৫৫; মিশকাত হা/২৮৯।
[6]. মুসলিম হা/২৩৪; তিরমিযী হা/৫৫; মিশকাত হা/২৮৯।
[7]. ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃ. ৬০।
[8]. বুখারী হা/৭৫৪৮; মিশকাত হা/৬৫৬।
[9]. বুখারী হা/৬০৮, ১২২২; মিশকাত হা/৬৫৫, ১২৩১।
[10]. আবুদাঊদ, নাসায়ী, মিশকাত হা/৬৬৫।
[11]. ইবনু মাজাহ হা/৭২৮; মিশকাত হা/৬৭৮।
[12]. মুসলিম, মিশকাত হা/৬৫৮।
[13]. ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃ. ৭-৬৭৭।
[14]. মুসলিম, মিশকাত হা/৬৫৭।
[15]. বুখারী হা/৬১৪; আবুদাঊদ হা/৫২৯; মিশকাত হা/৬৫৯।
[16]. মুসলিম, মিশকাত হা/৬৬১।
[17]. বুখারী হা/১১৪৯; মিশকাত হা/১৩২২।
[18]. মুসলিম, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৮৮।
[19]. বুখারী হা/১১৬৩।
[20]. বুখারী হা/৪৪৪; মিশকাত হা/৭০৪।
[21]. মুসলিম হা/১৬৮৮।
[22]. বুখারী হা/৯৩০,৯৩১।
[23]. তিরমিযী হা/৪১৫; মুসলিম হা/৭২৮; মিশকাত হা/১১৫৯।
[24]. আবুদাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/১৩৩০।
[25]. মুসলিম হা/৭২৫, মিশকাত হা/১১৬৪।
[26]. বুখারী হা/১১৬৯; মিশকাত হা/১১৬৩।
[27]. আবুদাঊদ হা/১২৬৯; নাসাঈ হা/১৮১৬; তিরমিযী হা/৪২৮; মিশকাত হা/১১৬৭।
[28]. ছহীহ আত-তারগীব হা/৫৮৭; মিশকাত হা/১১৬৯।
[29]. আহমাদ হা/৬১২৩; ইবনু হিববান হা/২৪৫৩; মিশকাত হা/১১৭০।
[30]. তিরমিযী, মিশকাত হা/১১৭১।
[31]. বুখারী হা/১১৭২, ১১৮০, মিশকাত হা/১১৬০।
[32]. বুখারী হা/১১৮৩; আবুদাউদ হা/১২৮১; মিশকাত হা/১১৬৫।
[33]. মুসলিম, মিশকাত হা/১১৮০।
[34]. বুখারী হা/৬২৫।
[35]. বুখারী হা/১১৮৪; মিশকাত হা/১১৮১।
[36]. নাসাঈ হা/১৪৭৪; মিশকাত হা/১১৫৯।