আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে সালামের গুরুত্ব

মুহাম্মাদ আমীরুল ইসলাম 11585 বার পঠিত

পৃথিবীর সূচনাকাল থেকে প্রত্যেক জাতির মাঝে সালাম বা অভিবাদনের রীতি প্রচলিত ছিল এবং বর্তমানেও আছে। তবে ইসলামী সালামের রীতি আদি পিতা আদম (আঃ) থেকেই চলে আসছে। সালাম পরস্পরের মাঝে মনোমালিন্য দূর করে সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরী করে এবং শক্রতার পরিবর্তে বন্ধুত্ব সৃষ্টি করে। এর মাধ্যমে মানুষ একে অপরের নিকট ভালোবাসার সৌরভ খুঁজে পায়। অনুভব করে সুসম্পর্কের কোমল পরশ। যে বাতাসে শক্রতার গন্ধ নেই, আছে বন্ধুত্বের স্নিগ্ধতা। নিম্নে সালামের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হ’ল-

সালামের সংজ্ঞা :

সালাম আরবী শব্দ, এর আভিধানিক অর্থ শান্তি, নিরাপত্তা ইত্যাদি। পারিভাষিক অর্থে মুসলমানগণ রাসূল (ছাঃ)-এর শিখিয়ে দেওয়া নিয়মে পারস্পারিক সাক্ষাতে যে কুশলবাক্য বিনিময় করে থাকে তাকে সালাম বলে।

সালামের সূচনাকাল :

মানব জাতির আদি পিতা আদম (আঃ)-এর মাধ্যমেই সর্বপ্রথম সালামের প্রচলন হয়। যেমন আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,

خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ عَلَى صُورَتِهِ، طُولُهُ سِتُّونَ ذِرَاعًا، فَلَمَّا خَلَقَهُ قَالَ اذْهَبْ فَسَلِّمْ عَلَى أُولَئِكَ النَّفَرِ مِنَ الْمَلاَئِكَةِ جُلُوسٌ، فَاسْتَمِعْ مَا يُحَيُّونَكَ، فَإِنَّهَا تَحِيَّتُكَ وَتَحِيَّةُ ذُرِّيَّتِكَ‏.‏ فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ‏.‏ فَقَالُوا السَّلاَمُ عَلَيْكَ وَرَحْمَةُ اللَّهِ‏.‏ فَزَادُوهُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ-

‘আল্লাহ আদম (আঃ)-কে তাঁর আকৃতিতেই সৃষ্টি করলেন। তাঁর উচ্চতা ছিল ষাট হাত। আল্লাহ তা‘আলা আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করে বললেন, যাও এবং অবস্থানরত ফেরেশতার দলটিকে সালাম কর। আর তারা তোমার সালামের কি জওয়াব দেয় তাও শ্রবণ কর। এটাই হবে তোমার ও তোমার সন্তানদের সালাম। তখন তিনি তাদের নিকট গিয়ে বললেন, ‘আস-সালামু আলাইকুম’। তারা (ফেরেস্তারা) বললেন, ‘আস-সালামু আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহ’। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তারা বৃদ্ধি করল ওয়া রহমাতুল্লাহ’।[1]

উল্লেখিত হাদীছ থেকে নিশ্চিতভাবে বুঝা যায় যে, পারস্পারিক সম্ভাষণে সালামের প্রচলন নতুন কিছু নয়। এটি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এই পৃথিবীর সকল মানুষের আদি পিতা আদম (আঃ)-এর মাধ্যমে জান্নাত থেকেই শুরু হয়েছে।

ইসলামে সালামের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা :

ইসলামে সালামের গুরুত্ব অপরিসীম। সালাম নামক এই শান্তির বাণীটি সামাজিক জীবনে এক বিশাল স্থান দখল করে আছে। রাসূল (ছাঃ) বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে সালাম প্রদান কারীর মর্যাদা উল্লেখ করেছেন। যেমন হাদীছে এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو رضى الله عنهما أَنَّ رَجُلاً، سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَىُّ الإِسْلاَمِ خَيْرٌ قَالَ تُطْعِمُ الطَّعَامَ، وَتَقْرَأُ السَّلاَمَ عَلَى مَنْ عَرَفْتَ وَمَنْ لَمْ تَعْرِفْ-

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! ইসলামে কোন কাজটি সর্বাধিক উত্তম? তিনি বললেন, অন্নহীনকে খাদ্য দেয়া এবং পরিচিত-অপরিচিত সকলকে সালাম প্রদান করা’।[2]

উক্ত হাদীছ দ্বারা বুঝা যায় যে, ইসলাম ধর্মে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম যে ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে খাদ্য খাওয়ায় এবং চেনা-অচেনা সবাইকে সালাম দেয়া। অন্যত্র এসেছে,

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا وَلاَ تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا‏.‏ أَوَلاَ أَدُلُّكُمْ عَلَى شَىْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ أَفْشُوا السَّلاَمَ بَيْنَكُمْ-

আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না ঈমান আনায়ন করবে। আর তোমরা ঈমানদার হিসাবে গণ্য হবে না, যতক্ষণ না তোমরা পরস্পরকে ভালবাসবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন উপায় নির্দেশ করব না যা অবলম্বন করলে তোমাদের পারস্পারিক ভালবাসা বৃদ্ধি পাবে। তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালামের প্রচলন করবে’।[3]

উপরোক্ত হাদীছ থেকে প্রমাণিত হয় যে, মানুষের জন্য সরাসরি জান্নাতে প্রবেশ করতে হ’লে পূর্ণ ঈমানদার হ’তে হবে। আর পূর্ণ ঈমানদার হওয়ার জন্য প্রয়োজন মুসলমানদের একে অপরকে ভালবাসা এবং পরস্পরের মাঝে ভালবাসার মাধ্যম হচ্ছে সালাম। পারস্পারিক সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে একে অপরের সাথে ভালবাসা সৃষ্টি হয়। আর এ ভালবাসার মাধ্যমে মু‘মিন জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।

সালাম অপর মুসলিম ভাইয়ের হক :

এক মুসলমানের উপর অপর মুসলমানের কতিপয় হক্ব রয়েছে। যেমন আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,حَقُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ سِتٌّ قِيلَ: مَا هُنَّ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: إِذَا لَقِيتَهُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ، وَإِذَا دَعَاكَ فَأَجِبْهُ، وَإِذَا اسْتَنْصَحَكَ فَانْصَحْ لَهُ، وَإِذَا عَطَسَ فَحَمِدَ اللَّهَ فَشَمِّتْهُ، وَإِذَا مَرِضَ فَعُدْهُ، وَإِذَا مَاتَ فَاتَّبِعْهُ এক মুসলমানের উপর অন্য মুসলমানের ছয়টি হক্ব তথা কর্তব্য রয়েছে। জিজ্ঞেস করা হ’ল, হে আল্লাহর রসূল (ছাঃ)! সেগুলো কি কি? তিনি বললেন, (১) যখন তুমি তার সাথে সাক্ষাৎ করবে তখন তাকে সালাম দিবে। (২) সে যখন তোমাকে দাওয়াত দিবে তখন তুমি তার দাওয়াত কবুল করবে। (৩) সে যখন তোমার কাছে পরামর্শ চাইবে তুমি তাকে পরামর্শ দিবে। (৪) সে হাঁচি দিয়ে যখন আল-হামদুলিল্লাহ বলবে তুমি তার হাঁচির জবাব দিবে। (৫) সে যখন অসুস্থ হবে তাকে দেখতে যাবে। (৬) সে যখন মারা যাবে তখন তুমি তার সঙ্গী হবে (জানাযা পড়বে ও দাফন করবে)।[4] সুতরাং বুঝা গেল যে, সালাম অপর মুসলমান ভাইয়ের হক্ব।

উত্তম পন্থায় সালাম প্রদান করা :

আল্লাহ কারো সালামের জবাব উত্তম পন্থায় জানানোর নিদের্শ দিয়েছেন। মহান আল্লাহ বলেন, وَإِذَا حُيِّيتُمْ بِتَحِيَّةٍ فَحَيُّوا بِأَحْسَنَ مِنْهَا أَوْ رُدُّوهَا إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ حَسِيبًا ‘আর যখন তোমরা সম্ভাষণপ্রাপ্ত হও, তখন তার চেয়ে উত্তম সম্ভাষণ প্রদান কর অথবা ওটাই প্রত্যুত্তর কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল বিষয়ে হিসাব গ্রহণকারী’ (নিসা ৪/৮৬)

সালাম অহংকার বিদূরিত করে :

অহংকার পতনের মূল। গর্ব-অহংকার মানব জীবনকে মারাত্মক ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। অপরপক্ষে বিনয়, নম্রতা ও ভদ্রতা মানুষকে উন্নতির চরম শিখরে আরোহণে সাহায্য করে। অহংকারীকে আল্লাহ পসন্দ করেন না। যেমন তিনি বলেন, وَلَا تُصَعِّرْ خَدَّكَ لِلنَّاسِ وَلَا تَمْشِ فِي الْأَرْضِ مَرَحًا إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُورٍ- وَاقْصِدْ فِي مَشْيِكَ وَاغْضُضْ مِنْ صَوْتِكَ إِنَّ أَنْكَرَ الْأَصْوَاتِ لَصَوْتُ الْحَمِيرِ- ‘আর অহংকারবশে তুমি মানুষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না এবং যমীনে উদ্ধতভাবে চলাফেরা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন দাম্ভিক ও অহংকারীকে ভালবাসেন না। তুমি পদচারণায় মধ্যপন্থা অবলম্বন কর এবং তোমার কণ্ঠস্বর নীচু কর। নিশ্চয়ই সবচেয়ে বিকট স্বর হ’ল গাধার কণ্ঠস্বর’ (লোক্বমান ৩১/১৮-১৯)। আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِى قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ كِبْرٍ. قَالَ رَجُلٌ إِنَّ الرَّجُلَ يُحِبُّ أَنْ يَكُونَ ثَوْبُهُ حَسَنًا وَنَعْلُهُ حَسَنَةً. قَالَ إِنَّ اللَّهَ جَمِيلٌ يُحِبُّ الْجَمَالَ الْكِبْرُ بَطَرُ الْحَقِّ وَغَمْطُ النَّاسِ. যার অন্তরে অনু পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, মানুষ চায় যে, তার পোশাক সুন্দর হোক, তার জুতা সুন্দর হোক, এও কি অহংকার? রাসূল বললেন, আল্লাহ সুন্দর, তিনি সুন্দরকে ভালবাসেন। অহমিকা হচ্ছে দম্ভভরে সত্য ও ন্যায় অস্বীকার করা এবং মানুষকে ঘৃণা করা’।[5]

সুতরাং এ অহংকার নামক মারাত্মক ব্যাধি থেকে বাঁচতে চাইলে এবং আল্লাহর ভালোবাসা পেয়ে জান্নাত লাভের প্রত্যাশা করলে সালামের ব্যাপক প্রচলন ঘটাতে হবে।

প্রথম সালামকারী সর্বোত্তম ব্যক্তি :

একদল মুসলমানের মধ্য থেকে একজন সালাম করা বা সালাম দেওয়াই যথেষ্ঠ। পৃথক পৃথক ভাবে সালাম করার দরকার নেই। কেননা সালামের প্রচলিত বাক্যটি সর্বদাই বহুবচন ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যার অর্থ আপনাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। একজনের জন্যও বহুবচন ব্যবহার করাই নীতিসিদ্ধ। কারণ প্রত্যেক ব্যক্তির সাথে সর্বদা ফেরেশতা থাকেন। এ প্রসঙ্গে হাদীছে বর্ণিত হয়েছে, আলী (রাঃ) বলেন,يُجْزِئُ عَنِ الْجَمَاعَةِ إِذَا مَرُّوا أَنْ يُسَلِّمَ أَحَدُهُمْ، وَيُجْزِئُ عَنِ الْجُلُوسِ أَنْ يَرُدَّ أَحَدُهُمْ. যখন একদল লোক পথ অতিক্রম করে, তখন তাদের মধ্য থেকে কোন একজন সালাম করলেই তা সেই দলের পক্ষ থেকে যথেষ্ঠ হয়ে যাবে। অনুরূপভাবে উপবিষ্ট দলের পক্ষ থেকে যেকোন এক ব্যক্তি তার উত্তর দিলেই তা সেই দলের পক্ষ থেকে যথেষ্ঠ হবে’।[6]

উক্ত হাদীছ থেকে বুঝা যায় যে, যে আগে সালাম করবে সে-ই সর্বোত্তম ব্যক্তি বলে গণ্য হবে। যেমন হাদীছে এসেছে, عَنْ أَبِي أُمَامَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ أَوْلَى النَّاسِ بِاللَّهِ مَنْ بَدَأَ بِالسَّلَامِ. আবু উমামা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তিই আল্লাহর নিকটে অধিক উত্তম যে আগে সালাম করে’।[7]

সালাম মুসলিম ভ্রাতৃত্বের সেতুবন্ধন :

সালাম প্রদানের মাধ্যমে পারস্পারিক ভ্রাতৃত্ব বৃদ্ধি পায়। কারণ সালামের অর্থই হ’ল দ্বীনী ভাইয়ের প্রতি শান্তি, রহমত ও বরকত প্রর্থনা করা। সালামের মাধ্যমে পারস্পারিক ভ্রাতৃত্ব বৃদ্ধি পায়। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

لا تدخلون الجنة حتى تؤمنوا ولا تؤمنوا حتى تحابوا-

‘তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ না তোমরা ঈমান গ্রহণ করবে। আর তোমরা ঈমানদার গণ্য হবে না, যতক্ষণ না তোমরা পরস্পরকে ভালোবাসবে’।[8]

সালাম সার্বজনীন :

সালামের মাধ্যমে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করা যায়। এর মাধ্যমে পরিচিত-অপরিচিত সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে ও ভ্রাতৃত্বের সৃষ্টি হয়। অধিকাংশ মানুষ শুধু পরিচিত ব্যক্তিকে সালাম দেয়। অথচ হাদীছে এটিকে কিয়ামতের লক্ষণ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন,

إِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ إِذَا كَانَتِ التَّحِيَّةُ عَلَى الْمَعْرِفَةِ-

‘শুধুমাত্র পরিচিত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া কিয়ামতের লক্ষণ’।[9]

সালাম কৃপণতা দূরকারী :

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, لَا يَجْتَمِعُ الشُّحُّ وَالْإِيمَان ‘কৃপণতা ও ঈমান কোন বান্দার অন্তরে একত্রিত হতে পারে না’।[10]

মানব সভ্যতার শুরু থেকেই দানশীল ব্যক্তিকে মানুষ ভালবাসে ও সম্মান করে। আর কৃপণ মানুষকে সমাজের লোকেরা ঘৃণা করে, অশ্রদ্ধা করে।

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, সবচেয়ে অক্ষম, দুর্বল লোক হচ্ছে সে ব্যক্তি, যে দো‘আ প্রার্থনায় অক্ষম। আর সবচেয়ে কৃপণ সে ব্যক্তি, যে সালামে কৃপণ’। [11]

আব্দুল্লাহ ইবনু মুগাফ্ফাল (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, সবচেয়ে বড় চোর যে ছালাত চুরী করে। কোন ছাহাবী বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! কিভাবে মানুষ ছালাত চুরী করে? তিনি বললেন, যে ছালাতের রুকু‘-সিজদা পূর্ণ করেনা। আর সবচেয়ে কৃপণ হচ্ছে সে ব্যক্তি যে সালামে কৃপণতা করে’।[12]

জাবের (রাঃ) বলেন, একদা এক ব্যক্তি নবী করীম (ছাঃ)-এর খেদমতে হাযির হয়ে বললেন, আমার বাগানে অমুক ব্যক্তির একটি খেজুর গাছ আছে। ঐ গাছটি আমাকে কষ্ট দেয়। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সেই লোকটিকে ডেকে এনে বললেন, তোমার খেজুর গাছটি আমার নিকট বিক্রি কর। সে বলল, না। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, যদি তুমি তা বিক্রি না কর তাহলে আমাকে দান কর। সে বলল, না। এবার রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, জান্নাতের একটি খেজুর গাছের বিনিময়ে তা বিক্রি কর। সে বলল, না। অতঃপর নবী করীম (ছাঃ) বললেন, ما رأيت الذي هو أبخل منك إلا الذي يبخل بالسلام ‘আমি তোমার চেয়ে অধিক কৃপণ আর কাউকে দেখিনি। তবে হ্যাঁ তোমার চেয়েও সেই ব্যক্তি বড় কৃপণ, যে সালাম দিতে কৃপণতা করে। [13]

সালাম নিরাপদে জান্নাত লাভের উপায় :

বারা ইবনে আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলছেন, তোমরা সালাম ছড়িয়ে দাও। তাহলে নিরাপদে থাকবে’। [14]

আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, হে মানুষ তোমরা সালাম ছড়িয়ে দাও, খাদ্য প্রদান কর, রাতে ছালাত আদায় কর মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করবে’। [15]

অতঃপর রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা রহমানের ইবাদত কর, সালামের বিস্তার কর, অসহায় মানুষকে খাদ্য প্রদান কর তোমরা জান্নাতে প্রবেশ কর’। [16]

সালামের পূর্বে কথা না বলা :

অনেক আলেম-ওলামা, বক্তা ও মাস্টার, ডাক্তার এবং বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদেরকে ইসলামী জালসা ও অন্যান্য বৈঠক গুলিতে সালামের পূর্বে কথা বলতে লক্ষ্য করা যায় যা ছহীহ হাদীছ পরিপন্থী। যেমন হাদীছে এসেছে, السلام قبل السؤال؛ فمن بدأكم بالسؤال قبل السلام فلا تجيبوه ‘জিজ্ঞাসা বা কথোপকথনের পূর্বে সালাম হবে। অতএব যে ব্যক্তি সালামের পূর্বেই জিজ্ঞাসা বা কথোপকথন শুরু করবে  তোমরা তার কথার উত্তর দিওনা’।[17]

সালাম সামাজিক জীবনে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা :

মা-বাবা, ভাই-বোনসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে গড়ে উঠে পরিবার। আর বহু পরিবার, হাট-বাজার, মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজ, রাস্তা-ঘাট ইত্যাদি নিয়ে গড়ে উঠে সমাজ। মানুষ সামাজিক জীব। মানুষ একে-অপরের সহযোগিতা ছাড়া চলতে পারেনা। ধনীর যেমন প্রয়োজন হয় গরীবের, গরীবেরও তেমন প্রয়োজন হয় ধনীর। প্রয়োজনের তাকীদে একে অপরের বাড়ী-ঘরে যেতে হয়। এ প্রয়োজনীয়তাকে সামনে রেখে অন্যের বাড়ীতে প্রবেশ করার বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছে ইসলাম। তা হ’ল সালাম প্রদানের মাধ্যমে অনুমতি নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করা। অন্যথা বিনা বাক্য ব্যয়ে ফিরে আসবে। এতে করে সকলের সম্মান রক্ষা পাবে, মান-ইজ্জতের হেফাযত হবে এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّى تَسْتَأْنِسُوا وَتُسَلِّمُوا عَلَى أَهْلِهَا ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ -

‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্যদের গৃহে প্রবেশ করো না। যতক্ষণ না তোমরা তাদের অনুমতি নাও এবং গৃহবাসীদের প্রতি সালাম কর। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম। সম্ভবতঃ তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে (তা মেনে চলার মাধ্যমে)’ (নূর ২৪/২৭)

উল্লেখিত আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, বিনা অনুমতিতে ও বিনা সালামে অপরের বাড়ীতে প্রবেশ করা অনুচিত। কেননা এতে ইজ্জত বিনষ্ট হয় এবং সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হয়।

সালামের সাথে মুছাফাহা করা :

সালামের সাথে সম্পর্কযুক্ত বিষয় হ’ল মুছাফাহা। যার অর্থ পরস্পর হাত মিলানো বা করমর্দন করা। কদমবুচি বা পদচুম্বন ইসলামী শরী’আতে বৈধ না হলেও মুছাফাহা এবং মু‘আনাকা তথা কোলাকুলি বৈধ। যেমন হাদীছে এসেছে,

عَنْ قَتَادَةَ قَالَ قُلْتُ لأَنَسٍ أَكَانَتِ الْمُصَافَحَةُ فِى أَصْحَابِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ نَعَمْ -

কাতাদা (রাঃ) বলেন, আমি আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছাহাবীগণের মধ্যে মুছাফাহার প্রচলন ছিল কি? তিনি বললেন হ্যাঁ, ছিল।[18]

মুসলমানদের পরস্পরের সাথে সাক্ষাৎ হলে ছালাম বিনিময়ের পর হৃদয়ের গভীরে আন্তরিক যে প্রগাঢ় আবেগ নিহিত থাকে, সেই প্রেরণা থেকেই তারা আপোসে করমর্দন করে থাকে। এর মাধ্যমে যেমন বন্ধুত্ব সুসংহত হয়, তেমনি উভয়ের গুনাহ মাফ হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

مَا مِنْ مُسْلِمَيْنِ يَلْتَقِيَانِ فَيَتَصَافَحَانِ إِلاَّ غُفِرَ لَهُمَا قَبْلَ أَنْ يَفْتَرِقَا.

‘যখন দু’জন মুসলমানের পরস্পর সাক্ষাৎ হয় এবং তারা মুছাফাহা করে, তখন তাদের উভয়ের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয় তাদের পৃথক হওয়ার পূর্বেই’।[19]

তাই পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃত গুনাহ হ’তে পরিত্রাণ লাভের সহজ ও সুন্দর মাধ্যম হিসেবে মু‘মিন জীবনে বেশী বেশী ছালাম মুছাফাহার প্রচলন করা উচিত।

সালাম আদান-প্রদানের নিয়ম-পদ্ধতি :

সালাম আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে ইসলামী শরী‘আত সুনির্দিষ্ট একটা নীতিমালা নির্ধারণ করে দিয়েছে। যেমন আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,  يُسَلِّمُ الصَّغِيرُ عَلَى الْكَبِيرِ، وَالْمَارُّ عَلَى الْقَاعِدِ، وَالْقَلِيلُ عَلَى الْكَثِيرِ. ‘কম বয়সী বয়োজ্যেষ্ঠকে, পথ অতিক্রমকারী উপবিষ্টকে এবং কম সংখ্যক অধিক সংখ্যককে সালাম দিবে’।[20]

তিনি আরও বলেন,  يُسَلِّمُ الرَّاكِبُ عَلَى الْمَاشِي، وَالْمَاشِي عَلَى الْقَاعِدِ، وَالْقَلِيلُ عَلَى الْكَثِيرِ. ‘আরোহী ব্যক্তি পদব্রজে চলাচলকারীকে এবং পদব্রজে চলা ব্যক্তি উপবিষ্ট ব্যক্তিকে আর কম সংখ্যক অধিক সংখ্যক লোককে সালাম দিবে’।[21]

কম বয়সী ব্যক্তি বয়োজ্যেষ্ঠকে সালাম করবে এটাই আদব। এ নীতিমালার বাস্তব অনুসারী ছিলেন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিজেই। কিন্তু শিক্ষা দেওয়ার জন্য তিনি ছোটদের সালাম দিয়েছেন। যেমন আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,  إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ عَلَى غِلْمَانٍ، فَسَلَّمَ عَلَيْهِمْ ‘একদা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বালকদের নিকট দিয়ে যাওয়ার সময় তাদেরকে সালাম দিলেন’।[22] 

তিনি শুধু বালকদেরকেই নয়, মহিলাদেরকেও সালাম দিয়েছেন। জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, أَنَّ النَّبِيَّ  صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ عَلَى نِسْوَةٍ فَسَلَّمَ عَلَيْهِنَّ. ‘একদা নবী করীম (ছাঃ) কতিপয় মহিলার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তাদেরকে সালাম করলেন।[23]

বর্তমান সমাজে অচেনা পুরুষে-পুরুষে অল্পাধিক সালামের প্রচলন থাকলেও অচেনা পুরুষ মহিলার মধ্যে পারস্পারিক সালামের প্রচলন নেই বললেই চলে। অথচ হাদীছ থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে অচেনা পুরুষ-মহিলার মধ্যে ক্ষতির আশংকা না থাকলে পারস্পারিক সালাম বিনিময়ে কোন দোষ নেই; বরং সুন্নাত।

তবে কোন ভিন্ন ধর্মাবলম্বীকে কোনভাবেই সালাম দেওয়া যাবে না। কিন্তু যদি কোন স্থানে মুসলমান ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী এক সাথে থাকে তাহলে তাদের উদ্দেশ্যে সালাম দেওয়া যাবে। যেমন হাদীছে এসেছে,

وَعَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ بِمَجْلِسٍ فِيهِ أَخْلَاطٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ وَالْمُشْرِكِينَ عَبَدَةِ الْأَوْثَانِ، وَالْيَهُودِ، فَسَلَّمَ عَلَيْهِمْ -

উসামা ইবনে যায়েদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এক মজলিসের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন, সেখানে মুসলমান, মুশরিক তথা পৌত্তলিক ও ইহুদী সম্প্রদায়ের লোক ছিল। তিনি তাদেরকে সালাম দিলেন’।[24]

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, إِذَا سَلَّمَ عَلَيْكُمْ أَهْلُ الْكِتَابِ فَقُولُوا وَعَلَيْكُمْ. ‘যখন আহলে কিতাব তোমাদেরকে সালাম দিবে, তখন তোমরা জবাবে শুধু وعليكم বলবে’।[25]

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, إِذَا لَقِىَ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ فَلْيُسَلِّمْ عَلَيْهِ فَإِنْ حَالَتْ بَيْنَهُمَا شَجَرَةٌ أَوْ جِدَارٌ أَوْ حَجَرٌ ثُمَّ لَقِيَهُ فَلْيُسَلِّمْ عَلَيْهِ أَيْضًا.  ‘যখন তোমাদের কারো মুসলিম ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ হবে, তখন সে যেন তাকে সালাম দেয়। অতঃপর যদি তাদের উভয়ের মধ্যখানে কোন বৃক্ষ অথবা প্রাচীর কিংবা পাথরের আড়াল পড়ে যায় পরে পুনরায় যখন সাক্ষাৎ হয় তখনও যেন সালাম দেয়।[26]

এছাড়া রাস্তায় যানবাহনে চলমান কোন ব্যক্তিকে আগে সালাম দেওয়াই শ্রেয়। কেননা আরোহী ব্যক্তি সালাম শুনে উত্তর দেওয়ার আশায় মনোযোগ বিঘ্নিত হ’তে পারে। যার ফলে দুর্ঘটনার কবলে পড়ার আশংকা থাকে। সে কারণেই রাস্তার ধারে বসে থাকা ব্যক্তিকে রাস্তার হক আদায়ের কথা বলতে গিয়ে নবী করীম (ছাঃ) সালাম দেওয়ার কথা না বলে বরং সালামের উত্তর দেওয়ার কথাই বলেছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, عَنْ أَبِى سَعِيدٍ الْخُدْرِىِّ رضى الله عنه أَنَّ

النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِيَّاكُمْ وَالْجُلُوسَ بِالطُّرُقَاتِ. فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا لَنَا مِنْ مَجَالِسِنَا بُدٌّ نَتَحَدَّثُ فِيهَا. فَقَالَ إِذَا أَبَيْتُمْ إِلاَّ الْمَجْلِسَ فَأَعْطُوا الطَّرِيقَ حَقَّهُ. قَالُوا وَمَا حَقُّ الطَّرِيقِ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ غَضُّ الْبَصَرِ، وَكَفُّ الأَذَى، وَرَدُّ السَّلاَمِ، وَالأَمْرُ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْىُ عَنِ الْمُنْكَرِ.

‘তোমরা রাস্তায় বসে থাকা থেকে বিরত থাক। তারা বললেন, হে আললাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাদের তো রাস্তার উপর বসা ছাড়া অন্য গতি নেই। কারণ সেখানে বসে আমরা প্রয়োজনীয় কথাবার্তা সমাধা করি। তিনি বললেন, যদি তোমরা সেখানে বসতে একান্ত বাধ্য হও, তবে রাস্তার হক আদায় করবে। তারা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! রাস্তার হক  কী? তিনি বললেন, দৃষ্টি অবনত করা, কাউকে কষ্ট না দেওয়া, সালামের জবাব দেওয়া, ভালো কাজের আদেশ করা এবং খারাপ কাজ থেকে নিষেধ করা।[27] 

উপসংহার : পরিশেষে সকলের নিকট নিবেদন এই যে, আসুন! নিজেকে অহংকার মুক্ত করতে, আল্লাহ তা‘আলার নিকটবর্তী হতে, মানুষের মাঝে জনপ্রিয়তা পেতে, ইসলামের উত্তম কাজটি করতে, নিজেকে একজন আদর্শবান, সুন্দর ও অনুপম মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে সালামকে নিজের নিত্য অভ্যাসে পরিণত করি। আদর্শ সমাজ বিনির্মানে ছোট-বড়, ধনী-দরিদ্র, বিজ্ঞ-মূর্খ, বণিক-মজুর, সকল শ্রেণীর মানুষকে সালামের সাথে আলিঙ্গন করুন। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দিন। আমীন!

[প্রাক্তন সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ নওগাঁ যেলা, মহাদেবপুর, নওগাঁ]


1 . বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৬২৮।

2. বুখারী হা/১২, ২৮।

৩. মুসলিম, মিশকাত হা/৪৬৩১।

৪. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৫২৫।

৫. মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৮।

৬. আবু দাউদ হা/৫২১০; মিশকাত হা/৪৬৪৮।

৭. আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৪৬৪৬।

৮. মুসলিম, মিশকাত হা/৪৬৩১।

৯. সিলসিলা ছহীহাহ হা/৬৪৮।

১০. তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/১৮৭৪।

১১. আদর্শ পুরুষ পৃ. ৫২, আত-তারগীব হা/৩৮৭৬।

১২. আত-তারগীব হা/৩৮৭৭।

১৩. আহমাদ, বায়হাকী, ছহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব হা/২৭১৬।

১৪. আত-তারগীব হা/৩৮৫৮।

১৫. আত-তারগীব হা/৩৮৫৯।

১৬. আত-তারগীব হা/৩৮৬০।

১৭. সিলসিলা ছহীহা হা/৮১৬।

১৮. বুখারী, মিশকাত ‘‘মুছাফাহা’’ অধ্যায় হা/৪৬৭৭।

১৯. আহমাদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত, হা/৪৬৭৯।

২০. বুখারী, মিশকাত হা/৪৬৩৩।

২১. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৬৩২।

২২. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৬৩৪।

২৩. আহমাদ, মিশকাত হা/৪৬৪৭।

২৪. মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/৪৬৩৯।

২৫. মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/৪৬৩৭।

২৬. আবুদাউদ, মিশকাত হা/৪৬৫০।

২৮. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৬৪০।



আরও