অনল প্রবাহ
সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী
চারিদিকে কারা ফেলে বিষাক্ত শ্বাস
কারা ব’য়ে আনে করোটিতে মৃতাসব,
শবের মিছিলে ভিড় ক’রে আসে শব;
মুখে বয়ে আনে চরম সর্বনাশ।
সে পাশবতার আজ উদ্যত ফণা
বিষাক্ত করে সুদূর সম্ভাবনা,
ভেঙে পড়ে তার পুচ্ছ আঘাতে স্বপ্নের চারাগাছ,
লাত মানাতের সঙ্গে নাচে পিশাচ
আধো জীবন্ত তনু;
রং চটা তার আকাশে কখন নিভেছে বর্ণ ধনু।
সে সিদরাতুল-মুন্তাহার
পথ ভোলা বুলবুলি,
প্রতি মুহূর্তে আবিল করে সে
এই ধরণীর ধূলি,
ম্লান জুলমাতে আজ সে বিবর গড়ি’
দীপ্ত দিনেরে করেছে কখন বিস্বাদ শর্বরী।
তার কন্ঠের বীভৎস চীৎকারে-
কেঁপে ওঠে বারে বারে
ঊষর মাটির বক্ষে অনুর্বর
দুঃস্বপ্নের ঘর।
শঙ্কিত তার দিনের আকাশ,
বিভীষিকা ভরা ঘুম,
ছিন্ন ডেরার দুয়ারে আঘাত
হানে মরু সাইমুম,
তার কলিজায় রক্তে রঙিন গ’ড়ে ওঠে ইমারত,
তার কঙ্কাল বিছায়ে জালিম মাপে মিনারের পথ;
পথে পথে আজ শোন তার হাহাকার
হে নিশান বরদার!
এখানে তোমার নিশান ওড়াও, নিশান ওড়াও বীর,
এখানে শুধুই আবছায়া রাত্রির
তিমির নিবিড়তর,
এখানে তোমার সূর্য প্রকাশ করো
জনারণ্যের শাখায় শাখায় জাগে প্রাণ-ব্যাকুলতা
আনো আনো তার বিপুল তৃষার দুকূলে উচ্ছলতা
সমুদ্র স্রোতোধার;
হে নিশান বরদার \
(‘সাতসাগরের মাঝি’ কাব্যগ্রন্থের নিশান বরদার কবিতার অংশবিশেষ)