আমলে ছালেহ (সৎ আমল)

তাওহীদের ডাক ডেস্ক 4804 বার পঠিত

আল-কুরআনুল কারীম

1- وَالَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أُولَئِكَ أَصْحابُ الْجَنَّةِ هُمْ فِيْهَا خَالِدُوْنَ-

১. ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তারা জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানে হবে স্থায়ী’ (বাকারাহ ৮২)

2- إِنَّ الَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ يَهْدِيْهِمْ رَبُّهُمْ بِإِيْمَانِهِمْ-

২. ‘নিশ্চয় যারা ঈমান আনে ও নেক আমল করে, তাদের রব ঈমানের কারণে তাদেরকে পথ দেখাবেন’ (ইউনুস ৯)

3- وَالْعَصْر-ِ إِنَّ الْإِنْسَانَ لَفِيْ خُسْرٍ- إِلَّا الَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَواصَوْا بِالصَّبْرِ-

৩. ‘মহাকালের শপথ! মানুষ অবশ্যই ক্ষতিতে আছে। তবে তারা ব্যতীত যারা ঈমান আনে, সৎকাজ করে, পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দেয়’ (আছর ১-৩)

4- مَنْ عَمِلَ صَالِحاً مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كانُوْا يَعْمَلُوْنَ -

৪. ‘যে মুমিন অবস্থায় নেক আমল করবে, পুরুষ হোক বা মহিলা,আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং তারা যা করত তার তুলনায় অবশ্যই আমি তাদেরকে উত্তম প্রতিদান দেব’ (নাহল ৯৭)

5- الَّذِيْ خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَياةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا-

৫. ‘যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম’ (মুলক ২)

6- قُلْ يا قَوْمِ اعْمَلُوْا عَلَى مَكانَتِكُمْ إِنِّيْ عَامِلٌ فَسَوْفَ تَعْلَمُوْنَ  مَنْ تَكُوْنُ لَهُ عَاقِبَةُ الدَّارِ إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الظَّالِمُوْنَ -

৬. ‘বল, হে আমার কওম, তোমরা তোমাদের অবস্থানে থেকে কাজ কর, নিশ্চয় আমিও কাজ করছি। অচিরেই তোমরা জানতে পারবে কার জন্য হবে আখিরাতের পরিণতি। নিশ্চয় যালিমরা সফল হয় না।’ (আন‘আম ১৩৫)

7- وَعَدَ اللَّهُ الَّذِيْنَ آمَنُوْا مِنْكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِي الْأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِيْنَهُمُ الَّذِيْ ارْتَضىَ لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُمْ مِنْ بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْناً-

৭. ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে আল্লাহ তাদেরকে এ মর্মে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তিনি নিশ্চিতভাবে তাদেরকে যমীনের প্রতিনিধিত্ব প্রদান করবেন, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব প্রদান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদের এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য শক্তিশালী ও সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের দ্বীনকে, যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তিনি তাদের ভয়-ভীতি শান্তি-নিরাপত্তায় পরিবর্তিত করে দেবেন’ (মুজাদালাহ ১১)

8- وَمَا يَسْتَوِي الْأَعْمَى وَالْبَصِيْرُ وَالَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَلَا الْمُسِيءُ قَلِيْلًا مَا تَتَذَكَّرُوْنَ-

৮.‘আর সমান হয় না অন্ধ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন এবং যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আর যারা অপরাধী। তোমরা খুব সামান্যই উপদেশ গ্রহণ করে থাক’ (মু’মিন ৫৮)

9- مَنْ عَمِلَ صَالِحًا فَلِنَفْسِهِ وَمَنْ أَسَاءَ فَعَلَيْهَا ثُمَّ إِلَى رَبِّكُمْ تُرْجَعُوْنَ-

৯. ‘যে সৎকর্ম করে সে তার নিজের জন্যই তা করে এবং যে মন্দকর্ম করে তা তার উপর বর্তাবে। তারপর তোমরা তোমাদের রবের প্রতি প্রত্যাবর্তিত হবে’ (জাসিয়া ১৫)

10- فَمَنْ يََّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْراً يَّرَهُ وَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَّرَهُ -

১০.‘অতঃপর কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে পাবে এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে’ (যিলযাল ৭-৮)

হাদীছে নববী

1- إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، عن عمر بن الخطّاب-

১. রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নিয়তের উপর সমস্ত আমল নির্ভর করে’ (মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/১)

২-إِذَا أَحْسَنَ أَحَدُكُمْ إِسْلاَمَهُ ، فَكُلُّ حَسَنَةٍ يَعْمَلُهَا تُكْتَبُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ ، وَكُلُّ سَيِّئَةٍ يَعْمَلُهَا تُكْتَبُ بِمِثْلِهَا حَتَّى يَلْقَى اللهَ عَزَّوَجَلَّ، عن ابي هريرة-

২. রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ উত্তমরূপে মুসলিম হয় তখন প্রতিটি সৎকাজ যা সে করে থাকে, তার দশগুণ হতে সাত শত গুণ পর্যন্ত তার জন্য লেখা হয়ে থাকে। আর অসৎকাজ যা সে করে থাকে, তার অনুরূপই (অর্থাৎ এক গুণ) লেখা হয় যে পর্যন্ত না সে আল্লাহর দরবারে পৌঁছে যায়’ (মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/৪৪)

-  إِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِعَبْدٍ خَيْرًا اِسْتَعْمَلَهُ ، قِيلَ : كَيْف يَسْتَعْمِلُهُ ؟ قَالَ : يُوَفِّقُهُ لِعَمَلٍ صَالِح قَبْلَ الْمَوْتِ، عن أنس-

৩. রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘আল্লাহ যখন কোন বান্দার কল্যাণ কামনা করেন তখন তাকে ভালো কাজে নিয়োজিত করেন। জিজ্ঞাসা করা হল, হে রাসূল (ছাঃ)! কিভাবে তার দ্বারা ভাল কাজ করান? তিনি বললেন, মৃত্যুর পূর্বে তাকে ভাল কাজ করার তাওফীক দান করেন’ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫২৮৮, সনদ ছহীহ)

৪- وَأَنَّ أَحَبَّ الْأعْمَالِ إِلَى اللَّهِ أَدْوَمُهَا ، وَإِنْ قَلَّ ، عن عائشة-

৪. রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় আমল তা-ই যা নিয়মিত করা হয়, যদিও তা পরিমাণে কম হয়’ (মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/১২৪১)

৫-جَاءَ أَعْرَابِيٌّ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ : أَيُّ النَّاِس خَيْرٌ ؟ فَقَالَ : طُوْبَى لِمَنْ طَالَ عُمْرُهُ وَحَسُنَ عَمَلُهُ  قَالَ : يَا رَسُوْلَ اللهِ أَيُّ الْأَعْمَالِ أَفْضَلُ؟ قَالَ : أَنْ تُفَاِرقَ الدُّنْيَا وَلِسَانُكَ رَطْبٌ مِنْ ذِكْرِ اللهِ ،  عن عبد الله بن يسر-

৫. একদা এক বেদুঈন রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করল- সর্বপেক্ষা উত্তম ব্যক্তি কে? রাসূল (ছাঃ) বলেন, তার জন্যই উত্তম পরিণাম যার হায়াত দীর্ঘ হয়েছে এবং আমল নেক হয়েছে। অতঃপর সে বলল, কোন আমল সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ? রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি দুনিয়া ত্যাগ করবে এমতাবস্থায় যে, তোমার জিহবা আল্লাহর যিকিরে সিক্ত থাকবে’ (আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২২৭০, সনদ ছহীহ)

৬-  إِنَّ اللَّهَ لَا يَنْظُرُ إِلَى صُوَرِكُمْ ، وَأَمْوَالِكُمْ ، وَلَكِنْ يَّنْظُرُ إِلَى قُلُوْبِكُمْ ، وَأَعْمَالِكُمْ ، عن ابي هريرة-

৬. রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের বাহ্যিক আকৃতি ও সম্পদের প্রতি দেখেন না; বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও আমলের দিকে তাকান’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৩১৪)

৭- بَادِرُوْا بِالْأعْمَالِ فِتَناً كَقِطَعِ اللَّيْلِ المُظْلِمِ ، يُصْبِحُ الرَّجُلُ مُؤْمِناً وَيُمْسِيْ كَافِراً ، وَيُمْسِيْ مُؤْمِناً ويُصبِحُ كَافِراً ، يَبِيْعُ دِيْنَهُ بِعَرَضٍ مِنَ الدُّنْيَا، عن أبي هريرة-

৭. রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা নেক আমলের দিকে দ্রুত অগ্রসর হও ঘুটঘুটে অন্ধকার রাত্রির অংশ সদৃশ ফিতনায় পতিত হওয়ার পূর্বেই। যখন কোন ব্যক্তি ভোরে উঠবে ঈমানদার হয়ে এবং সন্ধ্যা করবে কুফরী অবস্থায় এবং সন্ধ্যা করবে মু’মিন অবস্থায় আর ভোরে উঠবে কাফের হয়ে। সে পার্থিব সামান্য সম্পদের বিনিময়ে নিজের দ্বীন ও ঈমানকে বিক্রি করে দিবে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৩৮৩)

৮- إِنَّ الْعَبْدَ لَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ النَّارِ ، وَإِنَّهُ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ ، وَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ الْجَنَّةِ ، وَإِنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ ، وَإِنَّمَا الْأعْمَالُ بِالْخَوَاتِيْمِ، عن سهل بن سعد-

৮. রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘কোন বান্দা জাহান্নামীদের মত কাজ করতে থাকে, অথচ সে জান্নাতের অধিবাসী, এভাবে কোন বান্দা জান্নাতীদের মত কাজ করতে থাকে অথচ সে জাহান্নামের অধিবাসী। বস্ত্ততঃ মানুষের আমল তার ‘খাতেমা’ বা সর্বশেষ অবস্থানের উপর নির্ভর করে’ (মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/৮৩)

9- مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إلا سَيُكَلِّمُهُ رَبُّهُ لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ تَرْجُمَانٌ ، فَيَنْظُرُ أَيْمَنَ مِنْهُ فَلا يَرَى إلَّا مَا قَدَّمَ ، وَيَنْظُرُ أَشْأَمَ مِنْهُ فَلا يَرَى إلَّا مَا قَدَّمَ ، وَيَنظُرُ بَيْنَ يَدَيهِ فَلا يَرَى إلَّا النَّارَ تِلقَاءَ وَجْهِهِ ، فَاتَّقُوا النَّارَ وَلَو بِشِقِّ تَمْرَةٍ ، فَمَنْ لَمْ يَجِدْ فَبِكَلِمَةٍ طَيِّبَةٍ،  عن عديّ بن حاتم-

৯. রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার সাথে তোমাদের রব কথা বলবেন না। তার ও তার রবের মাঝে কোন দোভাষী থাকবে না। সে তার ডানে তাকাবে, তখন পূর্বে প্রেরিত আমল ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবে না। আবার বামে তাকাবে তখনও পূর্বে প্রেরিত আমল ছাড়া আর কিছুই দেখতো পাবে না। আর সম্মুখে তাকালে জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবে না। সুতরাং খেজুরের বিনিময়ে হলেও জাহান্নাম থেকে বাচার চেষ্টা কর। অন্য বর্ণনায় এসেছে, একটি উত্তম কথা দিয়ে হলেও বাঁচার চেষ্টা কর’ (মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/৫৫৫০)

10- سَدِّدُوْا وَقَارِبُوْا فَإِنَّ صَاحِبَ الْجَنَّة يُخْتَمُ لَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَإِنْ عَمِلَ أَيَّ عَمَلٍ وَإِنَّ صَاحِبَ النَّارِ يُخْتَمُ لَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ وَإِنْ عَمِلَ أَيَّ عَمِلٍ، عن عبد الله بن عمرو بن العاص -

১০. রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা সত্য পথে অটল থাক এবং আল্লাহর নৈকট্যলাভের চেষ্টা কর। কেননা জান্নাতী ব্যক্তির অন্তিম কাজ জান্নাতীদের কাজই হবে, (পূর্বে) সে যে আমলই করে থাকুক না কেন। এভাবে জাহান্নামী ব্যক্তির অন্তিম আমল জাহান্নামীদের মতই হবে, (পূর্বে) সে যে আমলই করে থাকুক না কেন’ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৯৬, সনদ ছহীহ)

 

বিদ্বানদের কথা

  • আলী (রাঃ) বলেন, দুনিয়া পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে চলে যাচ্ছে, আর আখেরাতের জীবন সামনে এগিয়ে আসছে। উভয়ের রয়েছে নিজ নিজ সন্তানাদি। তোমরা আখেরাতের সন্তান হও, দুনিয়ার নয়। কেননা আজ আমলের সময়, এখানে কোন হিসাব নেই। আর আগামী কাল হিসাব-নিকাশ হবে, সেখানে কোন আমল নেই (বুখারী, মিশকাত হা/৫২১৫)
  • হাসান (রাঃ) বলেন, ঈমান কোন প্রদর্শনযোগ্য অলংকার নয়, নয় কোন আকাংখার বস্ত্ত। ঈমান হল তা-ই যা অন্তর পোষণ করে এবং আমল যা সত্যায়ন করে। যে ব্যক্তি সুন্দর কথা বলে কিন্তু অসৎ আমল করে আল্লাহ তাকে তার কথার দিকে ফিরিয়ে দেবেন। আর যে ব্যক্তি সুন্দর কথা বলে এবং আমলও সৎ করে আল্লাহ তাকে তার আমলের দ্বারা মর্যাদাবান করবেন। আল্লাহ এটাই কুরআনে বলেছেন ‘তাঁরই দিকে আরোহণ করে সৎবাক্য এবং সৎকর্ম তাকে সমুন্নত করে’। (ফাতির ১০) (খত্বীব বাগদাদী, ইকতিযাউল ইলমি ওয়াল আমাল, পৃঃ ৪৩)
  • ইবনু শিহাব যুহরী বলেন, মানুষ ঐ ব্যক্তিকে পছন্দ করে না যে জ্ঞান অর্জন করেছে অথচ সে অনুযায়ী আমল করে না এবং যে ব্যক্তি আমল করে অথচ জ্ঞান রাখে না (ঐ, পৃঃ ২৫)
  • হাফসাহ বিন সীরীন বলতেন, হে যুবকরা! তোমরা আমল কর। যৌবন বয়সই আমলের প্রকৃত সময় (ঐ, পৃঃ ১০৯)
  • মালিক বিন দীনার বলেন, যে জ্ঞান অর্জন করা হয় আমল করার জন্য, তা জ্ঞানীকে অবনত করে। আর যে জ্ঞানার্জনে আমলের লক্ষ্য থাকে না, তা কেবল অহংকারই বৃদ্ধি করে (ঐ, পৃঃ ৩৩)
  • ফুযায়েল বলেন, কুরআন নাযিল করা হয়েছে আমল করার জন্য কিন্তু মানুষ কেবল তা পাঠ করাকেই আমল মনে করে নিয়েছে। বলা হল, এখানে আমল অর্থ কি? তিনি বললেন, সেখানে যা হালাল করা হয়েছে তা হালাল করা, যা হারাম করা হয়েছে তা হারাম করা, যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা পালন করা, যা নিষেধ করা হয়েছে তা থেকে বিরত থাকা এবং আশ্চর্যজনক ঘটনাসমূহে বিশ্বাস স্থাপন করা (ঐ, পৃঃ ৭৬)
  • ফুযায়েল বিন আয়ায বলেন, একজন আলেম ব্যক্তি জাহেলই থেকে যায় যদি না সে ইলম অনুযায়ী আমল করে, যখন সে আমল করা শুরু করে তখনই তাকে আলেম বলা যায় (ঐ, পৃঃ ৩৭)
  • আবু আব্দুল্লাহ আর-রাওযাবারী বলেন, ইলম আমলের উপর নির্ভরশীল, আমল নির্ভরশীল ইখলাছের উপর। আর ইখলাছের মাধ্যমেই মানুষ আল্লাহ সম্পর্কে সঠিক উপলব্ধি লাভ করে (ঐ, পৃঃ ৩২)
  • মা‘রূফ কারখী বলেন, যখন আল্লাহ কারো কল্যাণ চান তখন তার আমলের দরজা খুলে দেন এবং বিতর্কের পথ বন্ধ করে দেন। আর যখন আল্লাহ কারো খারাপ চান তখন তার জন্য বিতর্ক করার রাস্তা খুলে দেন এবং আমলের দরজা বন্ধ করে দেন (ঐ, পৃঃ ৭৯)

সারবস্ত্ত

  1. ঈমানের বাহ্যিক প্রকাশ হল আমলে ছালেহ ।
  2. আমলে ছালেহ আল্লাহর ভালবাসা ও সন্তুষ্টি লাভের উপায়।
  3. আল্লাহ মানুষের পরীক্ষা নেন আমলের শ্রেষ্ঠত্ব যাচাইয়ের জন্য।
  4. উত্তম আমলের মাধ্যমেই মানুষ জান্নাতে চিরস্থায়ী বসবাসের সৌভাগ্য লাভ করবে।
  5. সর্বশেষ আমলের উপর ভিত্তি করেই মানুষের জান্নাত ও জাহান্নাম নির্ধারিত হবে।
  6. কিয়ামতের কঠিন দিনে দুনিয়াতে কৃত আমলে ছালেহই হবে মানুষের একমাত্র সম্পদ।
  7. আমল হল জ্ঞানী ব্যক্তির জ্ঞানের মানদন্ড।
  8. নিয়মিত যেকোন আমলই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল, যদিও তা পরিমাণে স্বল্প হয়।
  1. আমলে ছালেহের মাধ্যমে ব্যক্তি ও সমাজের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত হয়।
  2. আমলে ছালেহের মাধ্যমে ঈমানদারগণকে আল্লাহ দুনিয়াবী ক্ষমতা ও কর্তৃত্বে অধিষ্ঠিত করবেন।


আরও