আযান
তাওহীদের ডাক ডেস্ক
এখানে শোনো না গোধূলি শান্ত শীষ
পেয়েছো শ্রান্ত দিনশেষে শুধু কালো রাত্রির বিষ
হালকা পালক ওড়েনা তুফানে ঝড়ে,
ক্রমাগত শুধু নুয়ে পড়ে ভেঙ্গে পড়ে,
হায় নীড়হারা ক্ষুধা মন্বন্তরে
সকল দুয়ার রুদ্ধ কোথায় ঠাঁই তার, ঠাঁই তার
এ অচেনা বন্দরে?
ফেরে না তো পাখী তার পরিচিত ঘরে
আখরোট বনে
বাদাম, খুবানি বনে।
সে কি ভুলে গেছে ঝড়ের আঘাতে তার পরিচিত ঘর!
তুফানে সে পাখী মেনেছে কী পরাজয়?
বুক-চেরা স্বর ভাসছে বাতাসে তূতীর আর্তস্বর,
আজ কি জীবনে ঘনায়েছে পরাজয়?
হে বিহঙ্গ! তুমি তো জীবনে কখনো পাওনি ডর,
কখনো তো তুমি মানো নাই পরাজয়!
সাত আকাশের সফেদ মুক্তি! কালো রাত্রির ফণা
গ্রাস ক’রল কি তুমি ছিলে যবে সুপ্ত অন্যমনা?
তবু জানি তুমি এ অপমৃত্যু ছাড়ায়ে উঠতে পারো!
তবে কেন আছো প’ড়ে?
হে বিহঙ্গ এই জিঞ্জিরে প্রবল আঘাত হানো,
সাত আকাশের বিয়াবানে ফের উদার মুক্তি আনো;
এখানে থেক না প’ড়ে।
কথা ছিল তুমি, হে পাখী! কখনো মানবে না পরাজয়,
তোমার গানের মুক্ত নিশান উড়েছে আকাশময়,
দূর আকাশের তারারা দেখছে তোমার এ পরাজয়;
তোমার পতন দেখে আজ পাখী সবে মানে বিস্ময়!
হে বিহঙ্গ! এ শুধু শ্রান্তি বুঝতে পারোনা তুমি,
ক্ষণ-বিস্মৃতি জাগায় সামনে বালিয়াড়ি মরুভূমি
দেখছো কেবল তৃষ্ণায় ভরা কালো রাত্রির বিষ-
সূর্যোদয়ের পথে দেখ নাই মিঠে পানি; ওয়েসিস।
ডুবে গেছে চাঁদ? অাঁধারে যায় না দেখা?
হে পাখী! এখনো নেভেনি তোমার তারার শুভ্র রেখা,
তোমার শিরীণ ভোলেনি তো তার গান,
তোমার জোছনা হয়নি তো আজো ম্লান
আখরোট বনে
বাদাম, খুবানি বনে।
আজকে আবার সেখানে ফিরতে হবে।
পার হয়ে এই যক্ষ্মাবসাদ শ্রান্ত ব্যাধিতে ঘেরা,
পার হয়ে এই বজ্র নিপাত আকাশের বুক-চেরা
দিতে হবে ফের অাঁধারের বুকে চাষ,
ভরাতে আনারকলিতে বন্ধ্যা মরুভূর অবকাশ,
আনতে নতুন বীজ যেতে হবে ফারাণের অভিযানে,
ভরাতে মাটির রুক্ষতা সেই প্রবল জোয়ার টানে।
যদিও সূর্য বন্দী এখন অাঁধারের ঝরোকা’তে
পূব দিগন্তে জেগেছে আলোর গান :
সাত আকাশের যৌবন অম্লান।
তবে সুর তোলো নীল জোয়ারের আলোকিত ঝর্ণাতে।
হে পাখী তোমার এ জড়তা ঘুচে যাক,
তোমার শীর্ণ ক্লিন্নতা মুছে যাক
কালো রাত্রির সাথে-ক্ষীয়মাণ ঝরোকাতে।
আবার আতশী গান,
আবার জাগুক দিগন্ত সন্ধান,
আরক্ত আভা তোমার তূতীর কন্ঠ রবে না ঢাকা,
আবার মেলবে রক্তিম আঙ্রাখা
নীল আকাশের তারার বনের স্বপ্নমুখর মনে
আখরোট বনে
বাদাম, খুবানি বনে।