মানব সমাজে শিরক প্রসারের কারণ

ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর 9789 বার পঠিত

ইবাদতে-আমলে তথা শারঈ বিষয়ে স্রষ্টার সাথে অন্য কোন ব্যক্তি বা বস্ত্তর অংশদারিত্ব স্থাপন করাই হল শিরক। যা সর্বাবস্থায়ই পরিত্যাজ্য। এই বিশ্বচরাচরে পাপ নামক যা কিছু আছে তন্মধ্যে সবচেয়ে বড় হল মহান আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরীক করা। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, ‘যখন লোকমান তার পুত্রকে উপদেশচ্ছলে বলল, হে বৎস, আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না। নিশ্চয়ই শিরক মহা পাপ’ (লোকমান ১৩)। আর তা ক্ষমার অযোগ্য পাপ। এই পাপ কারো দ্বারা সংঘটিত হলে স্পেশালভাবে তাকে আল্লাহর নিকট অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাইতে হবে,অন্যথা তার ক্ষমা হবে না। এমন একটি ভয়াবহ পাপ শিরক মুসলিম সমাজের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে অক্টোপাসের মতো জেঁকে বসেছে। যা থেকে বেঁচে থাকা মানুষের জন্য বেশ কষ্টকর। মানব জীবনের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে এমন জঘন্যতম পাপ অহরহ ঘটে চলেছে। আসলে এর পিছনে মৌলিক কারণ কি? কেনই বা সমাজে শিরক সম্প্রসারণ লাভ করেছে। বর্তমান প্রবন্ধে মানব সমাজে শিরক প্রসারের কারণ সম্পর্কে নাতিদীর্ঘ আলোচনা উপস্থাপননের প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ।

১. তাওহীদভিত্তিক জ্ঞানের অভাব : মানব সমাজে শিরক প্রসারের অন্যতম কারণ হল তাওহীদ শিক্ষার অভাব। প্রত্যেক নবী ও রাসূল এই ভূপৃষ্ঠে এসেছিলেন মানুষকে তাওহীদ শিক্ষাদানের জন্য। সমাজের বুকে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার মৌলিক দায়িত্ব তারা অকাতরে পালন করতেন। তাদের জীবনের মূল লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ছিল আল্লাহর যমীনে তাওহীদ প্রতিষ্ঠা। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘বলুন, হে কিতাবীগণ! এস একটি কথার দিকে, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে সমান। আমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদত করব না; আর কোন কিছুতেই তাঁর সাথে শরীক করব না (আলে ইমরান ৬৪)। নবী বা রাসূলগণ তাওহীদের দিকে আহবান জানিয়েছেন এবং শিরক থেকে বেঁচে থাকার জন্য বারংবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন (নাহল ৩৬)। কালপরিক্রমায় মানুষের মধ্যে তাওহীদভিত্তিক জ্ঞানের অভাবে শিরক দ্রুততার সাথে সর্বস্তরে প্রসার লাভ করেছে। তাওহীদ ও শিরক সুমেরু ও কুমেরুতে অবস্থানকারী বিপরীতমুখী দু’টি জিনিস। এই দুয়ের সহাবস্থান কোন দিনই সম্ভব নয়, মানুষ যত তাওহীদ বিমুখ হবে শিরক ততই স্কন্ধে আসন গেঁড়ে বসবে। এটাই চিরন্তন সত্য। আর হয়েছেও তাই। শিরকের গ্যাড়াকল থেকে পরিত্রাণের জন্য আজও প্রয়োজন তাওহীদভিত্তিক জ্ঞানের প্রচার-প্রসার। মানুষের হৃদয়পটে তাওহীদের জ্ঞান মজবুত হলে কোন ভাবেই তার কাছে শিরকের মত পাপের কাজ স্থান পাবে না।

২. একাধিক স্রষ্টায় বিশ্বাস করা : মূর্তিপূজারী ও ত্রিত্ববাদীরা তাদের অন্তনির্হিত বিশ্বাসের কারণেই একাধিক মা‘বূদের ইবাদত করতে বাধ্য হয়েছে। যেমন ব্রাক্ষ্মণ্যবাদী ধর্ম বিশ্বাসের তিনজন চিরন্তন ভগবানের বিশ্বাস মৌলিকভাবেই রয়েছে; যা তিনটি ভিন্ন ভিন্ন নামে প্রকাশমান। যেমন ব্রক্ষা, বিষ্ণু ও শিব। আর খৃষ্টবাদের এই ত্রিত্ববাদী বিশ্বাসই প্রকট। আর তারা হলেন, পিতা, পুত্র ও পবিত্র আত্মা। জরথ্রুস্ট ধর্মে দুজন মা‘বুদে বিশ্বাস রাখা হয়। ইয়াজদান ও আহরিমান। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন পত্রিকা, জানুয়ারী-মার্চ ২০০৫, পৃ. ২৩০)। মানব মনে এরূপ একাধিক স্রষ্টার ধারণাই শিরকের প্রসার ঘটতে সহায়তা করেছে। অথচ মহান আল্লাহ এসব বিশ্বাসের মূলে কুঠারাঘাত করে বলেন, ‘ইবরাহীম বলল, তোমরা তো আল্লাহর পরিবর্তে মূর্তিগুলোকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছ, পার্থিব জীবনে তোমাদের পারস্পরিক বন্ধুত্বের খাতিরে। পরে কিয়ামতের দিন তোমরা একে অপরকে অস্বীকার করবে এবং পরস্পরে অভিসম্পাত দিবে। তোমার আবাস হবে জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না; (আনকাবুত ২৫)

৩. পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ : পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ ও মুসলিম সমাজে শিরক বিস্তারের অন্যতম একটি কারণ। সাধারণত একজন মানুষ স্বীয় পূর্বপুরুষদেরকে সর্বক্ষেত্রে অনুসরণ করতে চেষ্টা করে। সাথে সাথে যেগুলোকে তারা সত্য বলে মনে-প্রাণে বিশ্বাসও করে। একটিবারের জন্যও ভেবে দেখে না যে তাদের পূর্ব পুরুষগণ যা করেছে তার সবগুলোই কি ঠিক? তারা অন্যের দারস্থ না হয়ে নিজ জ্ঞানেই মনে করে স্বীয় পূর্বপুরুষদের সবই ঠিক। ফলে অন্যরা প্রকৃত সত্যটি তাদের নিকট উপস্থাপন করলে সেটাকে তারা কোনভাবেই মেনে নিতে চায় না। তারা যাচাই-বাছায়ের প্রয়োজনও মনে করে না। বরং তারা সত্যটাকে প্রতিহত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। পূর্বপুরুষদের অনুসরণ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘এইভাবে তোমরা পূর্বে কোন জনপদে যখনই আমি কোন সর্তককারী প্রেরণ করেছি তখন তাদের সমৃদ্ধশালী ব্যক্তিরা বলত আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষদের পেয়েছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করছি। সেই সতর্ককারী বলত, তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষগণকে যে পথ পেয়েছ, আমি যদি তোমাদের জন্য তদপেক্ষা উৎকৃষ্ট পথ নির্দেশ আমি তবুও কি তোমরা তাদের পদাংক অনুসরণ করবে? তারা বলত, তোমরা যা সহ প্রেরিত হয়েছ আমরা প্রত্যাখ্যান করি’ (যুখরূফ ২৩-২৪)। এভাবে পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ করতে গিয়ে শিরকের মধ্যে নিপতিত হয়েছে। তাদের কোনভাবে বুঝাতে চেষ্টা করলে তারা কোন কিছু না ভেবে সরাসরি বাপ-দাদার দোহায় দিয়ে প্রকৃত সত্যকে প্রত্যাখ্যান করে। পূর্বপুরুষদের দোহাই দেয়া মূলত জাহেলী সমাজের মক্কার কাফের-মুশরিকদের গর্বিত কাজ। যা বর্তমানে মুসলিম সমাজে প্রবিষ্ট হয়েছে।

৪. বিধর্মীদের অনুসরণ : বিভিন্ন ধর্মের মানুষ পর্যায়ক্রমে ইসলামী ধর্মে দীক্ষিত হয়েছে। কিন্তু পূর্ব ধর্মের আদর্শের প্রভাব অনেক ক্ষেত্রে থেকেই গেছে। বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিমগণ এক সময় অধিকাংশরা হিন্দু ধর্মসহ বিভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী ছিল। কালের আবর্তে ইসলামের সুমহান আদর্শের ছায়াতলে তারা আশ্রয় গ্রহণ করেছে। কিন্তু যথপোযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের অভাবে পূর্ব ধর্মের আদর্শের অনুসরণ তারা শতভাগ ছাড়তে সক্ষম হয়নি। ফলে পূর্ব ধর্মের পালনীয় আদর্শের অংশবিশেষ ইসলাম ধর্মের আদর্শের সাথে তালগোল পাকিয়ে তারা পালন করতে থাকে। আবার অনেক সময় বিধর্মীদের  আদর্শের প্রচার-প্রসারের প্রভাবে ও তাদের জৌলুসে প্রভাবিত হয়ে স্বীয় আদর্শকে মাটিচাপা দিয়ে সানন্দে তাদের আদর্শকে গ্রহণ করেছে। আর এভাবে শিরক নিজ গতিতে সম্প্রসারিত হয়েছে। অনেক মানুষ বিধর্মীদের সভ্যতা-সংস্কৃতির অনুসরণ করতে গিয়ে শিরকের জালে আবদ্ধ হয়েছে। অথচ হাদীছে এসেছে,

عن ابن عمر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من تشبه بقوم فهو منهم- ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোন জাতির অনুসরণ (সাদৃশ্য) করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আহমাদ, আবুদাউদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭, হাদীছ ছহীহ)। বিধায় আমাদের সকলের উচিৎ বিধর্মীদের আদর্শের অনুকরণ করা থেকে সাবধান থাকা। নচেৎ পরকাল হারাতে হবে। বিধর্মীদের কৃষ্টি-কালচার মুসলিম সমাজে প্রবেশ করে শিরকের সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে। এক্ষেত্রে মিডিয়া সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করছে। আর মুসলিম সমাজ গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়ে শিরকের অথৈ সাগরে পথ হারা মাঝির ন্যায় নিজেকে হারিয়ে ফেলেছে। বিধায় বিধর্মীদের অন্ধ অনুকরণ থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে।

৫. ভালবাসায় বাড়াবাড়ি : মানুষ অনেক সময় ভালবাসার আতিশয্যে শিরকের মধ্যে নিপতিত হয়। প্রিয়জন বা সম্মানী ব্যক্তিদের ভালবাসা প্রদর্শন করতে গিয়ে এমন কিছু শব্দ-বাক্য তার শানে ব্যবহার করে যেগুলো শিরকের অন্তর্ভুক্ত। মুসলিম সমাজে শিরক প্রসারে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাথে সাথে সে ভালবাসার মানুষটির সাথে এমন কিছু আচরণ প্রদর্শন করে যেগুলো শিরকের শামিল। বিশেষ করে ওলী বা পীর নামে পরিচিত ব্যক্তিদের সাথে যা করা বলা যায় প্রায় তার সবগুলোই শিরক। ক্ষেত্রবিশেষে পীরকে সিজদা পর্যন্ত করা হয় স্রেফ ভালবাসা প্রদশনার্থে। আবার এই ভালবাসার নিদর্শন দেখাতে গিয়ে তাকে কদমবুসী, এমনকি তার শরীর ধোঁয়া গোসলের পানি ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করে থাকে। এমনকি তাকে কখনো কখনো আল্লাহর আসনে বসিয়ে ফেলে। নাঊযুবিল্লাহ! যেসব গুণাবলী মানুষের স্বভাব বিরুদ্ধ। যা কখনোও মানুষের স্বভাবে পাওয়া সম্ভব নয়। স্রেফ আল্লাহর গুণাবলী মধ্যে যা সীমাবদ্ধ, সে গুণাবলী দিয়ে ভক্তরা তাকে আহবান করে তার প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে থাকে। এগুলোর দ্বারা যে শিরক করে চলেছে, সে বিষয়ে সামান্যতম দৃকপাত করে না। তার প্রশংসা করতে গিয়ে সীমাতিক্রম করে ফেলে। অথচ খেয়াল করে না যে প্রশংসায় বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে।

ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, খৃষ্টানরা মরিয়মের পুত্র ঈসা (ছাঃ)-এর প্রশংসায় যেভাবে বাড়াবাড়ি করেছে, তোমরা আমার ব্যাপারে অনুরূপ বাড়াবাড়ি কর না। প্রকৃতপক্ষে আমি তো আল্লাহর একজন বান্দা। সুতরাং তোমরা আমাকে আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূলই বল (মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/৪৮৯৭)। অতিরঞ্জিতভাবে কারো প্রশংসা করা বা ভালবাসা প্রদর্শন জায়েয নয়। খৃষ্টানরা ঈসা (আঃ)-এর প্রতি অধিক ভক্তি প্রদর্শন করতে  গিয়ে তাঁকে মা‘বুদ এবং আল্লাহর পুত্র ইত্যাদি বলে আখ্যায়িত করেছে, যা স্পষ্ট শিরক। সুতরাং আমরাও যেন আবেগে আপ্লুত হয়ে নাছারাদের ন্যায় আমাদের প্রিয় নবীর প্রশংসায় সীমালংঘন না করি, যে বিষয়ে নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) স্বীয় উম্মতকে সাবধান করে দিয়েছেন অত্র হাদীছের মাধ্যমে। যেখানে নবীকুল শিরোমণি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অতি ভক্তি বা প্রশংসায় বাড়াবাড়ি করা গর্হিত কাজ, সেখানে বর্তমানে পরী বা অলি-আওলিয়ার ক্ষেত্রে ভালবাসায় বা প্রশংসায় বাড়াড়াড়ি করার ভয়াবহতা কত বেশি তা বোধ সম্পন্ন মানুষের নিকট পরিস্কারভাবে অনুমতি।

৬. অসীলা মানা : বর্তমান সময়ে মানব সমাজের অনেকে অসীলা এর ধোঁকায় পড়ে শিরকের গোলাকধাঁধায় বন্দি হয়েছে। এ পথের অনুসারীগণ মনে করে অসীলা হল সুপারিশকারী। অসীলা ব্যতীত জান্নাতে যাওয়া যাবে না। কারণ দুনিয়ার আদালতে বিচারপ্রাথী হলে জজের নিকট গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য উকিল ঠিক করা হয়। উকিল ছাড়া জজ পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব নয়। বিধায় আল্লাহর বিচার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য উকিল বা অসীলা ধরা যরূরী। কোন পীর বা অলি-আওলিয়াকে অসীলা হিসাবে মান্য না করলে কোন ব্যক্তি নাজাত পেতে পারে না। এজন্য তারা জীবিত পীর তো দূরের কথা মৃত পীরকেও বেশির ভাগ সময় অসীলা হিসাবে গ্রহণ করে। এর দ্বারা তারা আল্লাহর সত্তাকে জজের সাথে একাকার করে ফেলেছে। অথচ আল্লাহ তাআলা সর্বাবস্থায় সবকিছু দেখেন ও শুনেন। তার নিকট পৌঁছতে কোন মাধ্যমের প্রয়োজন হয় না। বান্দা যেখান থেকে যে অবস্থায় তাঁকে স্মরণ করবে তিনি তাতে সাড়া দিতে শতভাগ সক্ষম। এই অসীলার দোহায় পেড়ে হাযার হাযার মানুষ শিরকের মহাপাপে জড়িয়ে পড়েছে। মৃত ব্যক্তির কিছুই করার নেই। মৃত ব্যক্তির কারো কোন উপকার বা ক্ষতি করতে পারে না এবং তিনিও কারো কিছু শুনতে বা জানতে পারেন না (ফাতির ২২)। অথচ মানুষ মৃত পীর বা আলি-আওলিয়ার কাছে অহরহ নযর-নেয়ায মানছে। আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ)  বলেন, ‘অসীলা’ অর্থ নৈকট্য  (القربة)। ক্বাতাদাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন অন্বেষণ কর তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে এবং এমন আমলের মাধ্যমে যাতে তিনি সন্তুষ্ট হন (তাফসীর ইবনে কাছীর, ২/৫৫ পৃ.)। অসীলার লক্ষ্য হবে কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ ভিত্তিক ইবাদত করা। কিন্তু মানুষ অসীলাকে অপব্যাখ্যা করে শিরক-এর অতল গহবরে তলিয়ে গেছে।

৭. পাপ মোচনের ভ্রান্ত ধারণা : পাপ মোচনের ভ্রান্ত বিশ্বাস থেকেও শিরক মুসলিম সমাজে বিস্তার লাভ করেছে। পীর বা আওলিয়ার নিকট মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হবে। সাথে সাথে পাপ মোচন হবে। সেখানে ছাদকা দিলে রুটি-রুযীতে বরকত হবে। সংসারে অভাব হবে না। পরীক্ষার ভাল ফলাফল লাভ করা যাবে। জীবন চলার পথে বালা-মুসিবত বিদূরিত হবে- এসব ভ্রান্ত বিশ্বাস মানুষকে শিরক করতে উৎসাহিত করেছে। আর এই নীতি-আদর্শগুলো সমাজের বুকে ছড়িয়ে দেয়াকে তারা পুণ্যের কাজ জ্ঞান করে মানুষেরা মনে করেছে পরী বাবাকে খুশি করতে পারলে পীর বাবা হাশর-পুলছিরাত-কিয়ামত দিবস সবকিছু পার করে দিবেন। এভাবে তারা এমন শিরকী আক্বীদাকে আঁকড়ে ধরেছেন।

৮. কবরকে ইবাদতের স্থান গণ্য করা : অনেক মানুষ কবরকে ইবাদতের স্থান হিসাবে নির্ধারণ করেছেন। ফলে কবরকে ঘিরে গড়ে উঠেছে মসজিদ, খানকাহ, মাযার ইত্যাদি। সমানতালে মসজিদ ও মাযারে চলছে সিজদা। যদিও বা মাযারের গায়ে লিখা আছে, এখানে কেউ সিজদা করবেন না। সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে যেমন লেখা থাকে, ‘সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ ধূমপানে মৃত্যু আনে’ এরূপ শ্লোগান যেমন ধূমপায়ীকে ধূমপানে অধিক আগ্রহী করে তোলে। ঠিক তেমনি মাযারে লেখা ঐ শ্লোগান মাযার ভক্তদের সিজাদর কথা স্মরণ করিয়ে দেয় এবং একাজে তাদেরকে উৎসাহ প্রদান করে। মানুষ দ্বিধাহীনভাবে কবরের নিকট পাড়ে গিয়ে কুরআন তেলাওয়াত করে, দো‘আ বখশানো, সিজদা দেয়, নযর-নেয়ায, কবরে চুম্বন ও তাতে শরীর জামা কাপড় স্পর্শ করছে। আবার এ কাজগুলোকে ছওয়াবের কাজ বলে জ্ঞান করছে। অথচ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘তোমাদেরকে পূর্বেকার লোকেরা তাদের নবী ও নেককার ব্যক্তিদের বকরগুলিকে মসজিদে পরিণত করেছিল। সাবধান! তোমরা যেন তা করো না। আমি তোমাদেরকে এ ব্যাপারে বিশেষভাবে নিষেধ করে যাচ্ছি’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৭১৩)। ইহুদী নাছারাদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পত। কেননা তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদে পরিণত করেছিল’ (মুসলিম হা/১১৮৫)। মহানবী (ছাঃ)-এর তরফ থেকে কবরকে মসজিদের মর্যাদা দেয়া নিষেধ থাকা সত্ত্বেও তারা এরূপ করায় শিরক সমাজের মাঝে ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে।

৯. কবরপূজকদের কল্পিত কাহিনী : কবরপূজারীরা কিছু কল্পিত কাহিনী রচনা করে মানুষের মাঝে প্রচার করার ফলে মানব মনে তা আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে। বানোয়াট, ভীত্তিহীন কিছু গাল-গল্পকে আশ্রয় করে মাযারের দিকে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সচেষ্ট হয়েছে। মাযারে বাবার কাছে গেলে মনোবাঞ্ছা পূরণ হবে। যা চাইব তাই পাবে। পীর বাবার সন্তুষ্টিতে তার দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ-অকল্যাণ নির্ভরশীল মর্মে মাযারপূজারীরা জনগণের নিকট অলিক গল্প প্রচার করে। যার ফলে মানুষ আস্তে মাযারমুখী হয়েছে। সব কিছু ঢেলে দিচ্ছে বাবার পদচরণে। তারা তাদের বাবার শানে এমন কিছু অলৌকিক ঘটনার বর্ণনা দিয়ে থাকে যা অনেক ক্ষেত্রে নবী- রাসূলগণেরও শানের খেলাফ, যেমন কোন কোন পীর বাবা কাবা শরীফ থেকে হাযার কিলোমিটার দূরে স্বীয় মাযারে অবস্থান করেও কাবা ঘরের পাশে বিচরণকারী কুকুর খেদানোর ঘটনাও ঘটিয়ে থাকেন। স্রেফ এ সব ভূয়ামী নিজের পান্ডিত্য যাহির করার জন্যেই করে থাকে। এসব অলিক গল্প আবার মানব মনে দারুণ প্রভাব বিস্তার করে। ফলশ্রুতিতে শিরক সমাজে তরতরবেগে প্রসারিত হয়ে থাকে।

১০. মিথ্যা হাদীছের প্রপাগান্ডা : কবরপূজারীরা মানুষকে তাদের প্রতি আকৃষ্ট করা ও নিজেদের কুকর্মের সমর্থনে অগণিত হাদীছ বানিয়ে সমাজে চালু করেছে। আবার তারা এসবই হাদীছকেই নিজের পক্ষে দলীল হিসাবে জনসমক্ষে পেশ করে থাকে। তাদের এসব বানোয়াট হাদীছ শিরকের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে। যেমন তাদের একটি বানানো হাদীছ হ’লإذ تحيرتم فى الامور فاستعينوا باهل القبور- ‘যখন তোমরা কোন ব্যাপারে পেরেশান বা কিংকর্তব্যমিমূঢ় হয়ে পড়, তখন করববাসীদের নিকট সাহায্য প্রার্থনা কর’ (শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলভী, আল-বালাগুল মুবীন, অনু: মাওলানা কারামাত আলী নিযামী (ঢাকা : শিরীন পাবলিকেশন্স, ১৩৮৬ হিঃ), পৃ. ৮৯)। এসব হাদীছ বানিয়ে তারা মানুষকে কবরপূজারী বানাতে সক্ষম হয়েছে। সাথে সাথে তারা এই নোংরা কর্মকে দলীল দ্বারা সাব্যস্ত করার জন্য মহানবী (ছাঃ)-এর কবর যিয়ারত করবে সে যেন ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে জীবদ্দশায় আমার সাথে সাক্ষাত করেছে’ মর্মে হাদীছ জাল করেছে (নাছিরুদ্দীন আলবানী, অনুবাদ : আবু শিফা মুহাম্মাদ আকমাল হুসাইন, যঈফ ও জাল হাদীছ সিরিজ (ঢাকা : ইসলামী শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, ২০০৪ ইং), পৃ. ৯৫)। এরূপ জাল হাদীছ প্রচলিত থাকার কারণে শিরক প্রসারিত হয়েছে বেশী।

১১. বিনা পরিশ্রমে অধিক ছওয়াব লাভ : কোন প্রকার পরিশ্রম ছাড়াই অধিক ছওয়াব লাভের প্রত্যাশা বা অল্প কিছুর বিনিময়ে অনেক কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা মানুষকে শিরক করতে উৎসাহিত করে। পীর বাবার মাযারে কিছু ছাদকা করলে বাবা জান্নাতে যাওয়ার সকল পথ সহজতর করতে সাহায্য করবেন। সন্তানহীন নারী পীর বাবার মাযারে মানত বা কিছু দান করলে সন্তান ফিরে পাবে। কিছু হারিয়ে গেলে মাযারে শরণাপন্ন হলে তা খুঁজে পাওয়া যাবে। মাযারে বসে অল্প সময় যিকির করলে গোনাহ মাফ হবে বা অনেক নেকি পাওয়া যাবে। ব্যবসায় উন্নতি হবে। যাত্রাপথে  পীরের কবরে কিছু দান করলে রাস্তায় যাবতীয় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। পৃথিবীতে ফরয ইবাদতগুলো সঠিকভাবে আদায় না করেও যদি কোন পীর মানা যায় তাহ’লে পরকালে পীরের অছীলায় নাজাত পাওয়া যাবে। পীরের শেখানো মন্ত্র মুখে আওড়ালে ছালাত না পড়েও ছালাত আদায়ের চেয়ে বেশি ছওয়াব পাওয়া যাবে। ওরসে যোগ দিলে ওমরার ছওয়াব পাওয়া যাবে বা পূর্বের পাপগুলো ক্ষমা করা হবে। কোন পীরের মুরীদ না হলে জান্নাত যাওয়া সম্ভব হবে না। জীবনে অনেক পাপ করে থাকার পরেও কোন শক্ত পীরের মুরীদ হতে পারলে পীর ছাহেব তাকে সাথে নিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। এসব ভ্রান্ত ধারণার জন্য মানুষ শিরকের পথে পা বাড়ায়। যা শিরক সম্প্রসারিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

১২. রাজনৈতিক ফায়দা লাভ : রাজনৈতিক ফায়দা লাভের উদ্দেশ্যেও সমাজে শিরক প্রসার লাভ করেছে। যেমন, কোন বড় মাপের রাজনৈতিক নেতার মৃত্যুর পর তার মৃত্যুবার্ষিকীতে দলবল নিয়ে পুষ্পস্তবক প্রদান করা এবং সাথে সাথে তা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার করার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মধ্যে অনুরূপ শিরক করার প্রবণতাকে জাগিয়ে তোলে। নেতাদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে নীরবতা পালনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন, তার স্মৃতিচারণের নিমিত্তে রাস্তার মোড়ে তার প্রতিকৃতি স্থাপন, তাদের কবরকে কেন্দ্র করে স্মৃতিস্তম্ভ বা সৌধ নির্মাণ। আগরবাতি, মোমবাতি জ্বালানো, নেতার প্রতিকৃতিতে ফুলের মালা পরিয়ে শ্রদ্ধার নিদর্শন প্রদান, তাদের ছবি তৈরী করে অফিস-আদালত, ঘর-বাড়ী, দোকান-পাটে টাংগানো, তাদের ছবিকে সম্মান প্রদান ইত্যাদি কর্ম সম্পাদন করে রাজনৈতিক নেতারা খুব সহজেই প্রভাব বিস্তার করে। রাজনৈতিক নেতা নিজেদের খ্যাতির মানসে এগুলো আবার মিডিয়ায় প্রচার করে। ফলে মানুষ সেগুলো দেখে তাদের মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে অনুসরণ করার চেষ্টা করে। এভাবে শিরক রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমেও সমাজে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে।

১৩. অর্থনৈতিক ফায়দা হাছিল : শিরকের আখড়া মাযারগুলোতে বর্তমানে জমজমাট ব্যবসা শুরু হয়েছে। কোন প্রকার পুঁজি বিনিয়োগ ছাড়াই প্রতিদিন আয় হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। গরু-খাসিসহ খাদ্য সামগ্রীর কথা তো বলার অপেক্ষাই রাখে না। বড় বড় ব্যবসায়ী ও কোটিপতিরা পরকালের অসীলা মেনে পীরের কছে প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ টাকা, গরু, খাসি, মুরগি আরো কত কি দান করছে। আবার গরিব, দুঃখীরা এ থেকে পিছপা নয়। তারা তাদের কষ্টার্জিত টাকা-পয়সা নিজে ভক্ষণ না করে ছওয়াবের আশায় ঢেলে আসছে বাবার মাযারে। ধনাঢ্য ব্যক্তিরা বিভিন্ন ব্যস্ততা ও অলসতার কারণে তেমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করতে পারে না। তাই তারা মাযারে মাযারে ছুটাছুটি করে বেড়ায়। আবার কেউ কেউ কবরের আযাব লঘু হওয়ার গহীন প্রত্যাশায় মাযার চত্বরে তার দাফনের তিন হাত জায়গা বরাদ্দ দেয়। কেউবা আবার ভাল চাকরীর আশায়, কেউ ফলাফল, কেউ রোগ মুক্তি, কেউ জিনের আছর থেকে বাঁচার নিমিত্তে মোটা অংকের দান মাযারে করে। আর মাযারের খাদেম ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিনা পুঁজির ব্যবসায় লভ্যাংশ গুণতে থাকে মনের সুখে। বিনা পরিশ্রমে দুমুঠে। যেন সেটা একটা ল্যাংড়া, খোড়া-পাগলাশ্রাম। আর এই বিনা পুঁজি ব্যবসাকে গতিশীল করার জন্য তারা বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমকে কাজেও লাগায়। এভাবে শিরক সমাজের সর্বস্তরে ছেড়ে যায়।

১৪. রোগ মুক্তির আশা : রোগ মুক্তির আশায় মানুষ অনায়াসেই শিরকের সাথে জড়িয়ে পড়ে। দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যে কোন প্রকারের চিকিৎসা নিতে সে একটুও দ্বিধাবোধ করে না। ফলে ছুটে যায় বাবার মাযারে তেলপড়া, পানি পড়াসহ বিভিন্ন ঔষধ নিতে। বাবার দেয়া বাহারি তাবিজ গলায় হাতে-পায়ে পেটে বেঁধে ঘুরে বেড়ায়। যার প্রভাব অন্যদের মাঝে ক্রিয়া করে। কেউ আবার রোগ মুক্তির আশায় অষ্টধাতুর আংটি, তামার  বালা-চুড়ি পরে ঘুরে বেড়ায়। এভাবে শিরক তার রাজত্ব কায়েম করতে থাকে।

১৫. গণসচেতনতার অভাব : গণসচেতনার অভাব শিরক প্রসারের অন্যতম একটা কারণ। কারণ যারা শিরক করে বা শিরকী প্রতিষ্ঠান মাযার-খানকাহর সাথে জড়িত, তাদের কাছে এসব শিরকী কর্মকান্ড সম্পাদনের উপযুক্ত প্রমাণ চাওয়া হলে এভাবে শিরক প্রসার লাভ করতে পারত না। যারা তাবিজ-কবজ তৈরী ও বিক্রি করছে তাদের নিকট এর বৈধতার দলীল চাইলে এমনিতেই এসব পথ সংকুচিত হয়ে পড়ত। শিরকের বিরুদ্ধে গণসচেনতা সৃষ্টিতে জুম‘আ মসজিদের ইমামগণ সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। তারা জুমআ‘র খুৎবায় মানুষকে শিরক-এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করতে পারলে জনগণই শিরকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। ফলশ্রুতিতে শিরক সম্প্রসারণের সকল পথ পর্যায়ক্রমে সংকুচিত হয়ে পড়বে।

শেষ কথা : মানুষ যে যা বলে তাই মানতে গিয়ে অনেক সময় শিরকের চোরাবালিতে ব্যক্তি নিজেকে হারিয়ে ফেলে। তখন মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ ছাড়া সে সঠিক পথের দিশা ফিরে পায় না। শিরক সমাজে প্রসারের জন্য যত পথ খোলা আছে তা বন্ধ করার জন্য তত পথ নেই। প্রায় মানুষ জেনে বা না জেনে শিরক করে চলেছে। জ্ঞানগত, উপসনাগত, ইবাদতগত ও অভ্যাসগত শিরকের মহাসাগরে মানুষ হাবুডুবু খাচ্ছে। বলা মুশকিল শিরকের মহাসাগর পাড়ি দিয়ে তাওহীদের ভেলায় চড়ে কখন তারা কুলে ভিড়বে। না সাগরবক্ষে সলিল সমাধি লাভ করবে। যার শেষ ঠিকানা জাহান্নাম।

মহানবী (ছাঃ) শিরক থেকে সাবধানতা অবলম্বনের কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমি তোমাদের জন্য যে ব্যাপারে সর্বাপেক্ষা বেশি ভয় করছি তা হল ছোট শিরক-রিয়া বা লোক দেখানো কাজ-কর্ম (আহমাদ, মিশকাত হা/৫২৩৪)। অন্যত্র বলেন, ‘আমি তোমাদের জন্য দাজ্জালের  চেয়ে বেশি আশংকা করি শিরকে খফী, আর তা হল কোন ব্যক্তি ইবাদতে আমার সাথে অন্যকে শরীক করে, আমি তাকে তার শিরকসহ বর্জন করি। অপর বর্ণনায় আছে তার আমার কোন সম্পর্ক নেই’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৩১৫)। শিরকের ভয়াবহতা খুবই কঠিন। যার শেষ পরিণতি জাহান্নামের জ্বলন্ত অগ্নিশিখা। আমাদের অবশ্যই তাওহীদভিত্তিক জ্ঞানলাভ করে শিরককে বর্জন করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সহায় হৌন! আমীন!!



বিষয়সমূহ: শিরক
আরও