মিশর : উমার বিন খাত্তাবের নিকট প্রেরিত আমর বিন আছের চিঠির বর্ণনায়
ড. শিহাবুদ্দীন আহমাদ
ড. শিহাবুদ্দীন আহমাদ 9559 বার পঠিত
জেনে
রাখুন হে আমীরুল মুমিনীন! নিশ্চয়ই মিশর সবুজ গাছপালায় ঘেরা ধূসর অঞ্চল। এর
দৈর্ঘ্য এক মাসের পথ এবং প্রস্থ দশ দিনের পথ। ধূসর পাহাড় ও বালিকণা একে
বেষ্টন করে রেখেছে। এর মধ্য দিয়ে নীল নদের প্রভাতী ও সান্ধ্য হাওয়া
প্রবাহিত হয়। সূর্য ও চন্দ্রের পরিক্রমার ন্যায় এতে জোয়ার ও ভাটা আসে। এমন
একটা সময় রয়েছে যখন নীল নদের ফেণা ও মক্ষী বেশি হয়। ভূপৃষ্ঠের
ঝর্ণাধারাগুলো একে প্রসারিত করে। এমনকি যখন তার ধূলিকণা দূষিত হয় এবং এর
দুকূলে ঢেউগুলি বড় আকার ধারণ করে, তখন ছোট্র ছোট্র নৌকা ও বোট ছাড়া এক
গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে যাওয়া যায় না। এগুলি তখন কল্পনার জগতে নাড়া দেয়। এর
জলরাশি পরিপূর্ণরূপে বৃদ্ধি পেয়ে আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে। তখন
ভগ্নহৃদয়ে এর অধিবাসীগণ জমি চাষাবাদ করে এবং শস্যবীজ বপন করে মহান আল্লাহর
নিকট বাড়তি ফসল কামনা করে। তারা অন্যের উপকারার্থে পরিশ্রম করে এবং অন্যরা
বিনা প্রচেষ্টায় তাদের নিকট থেকে ফায়েদা লাভ করে। অতঃপর যখন ক্ষেতের শস্য
বড় ও উজ্জ্বল হয় তখন তাকে শিশিরকণা সিক্ত করে এবং ভিজা মাটি তাকে রসদ
যোগায়।
মিশর যেন ধবধবে মুক্তা, কালো আম্বর, সবুজ পান্না ও নকশাখচিত রেশমী বস্ত্র। মহান আল্লাহ তাঁর ইচ্ছানুযায়ী এ দেশকে বরকতের বারিধারায় সিক্ত করুন, এর উন্নতি-সমৃদ্ধি ঘটান এবং এর বাসিন্দাদের সুখে-শান্তিতে রাখুন!
এই দেশের নেতার ব্যাপারে কোন হীন-নিকৃষ্ট লোকের কথা গৃহীত হয় না, যথাসময় ছাড়া এর শস্যের কর আদায় করা হয় না এবং আয়ের এক তৃতীয়াংশ বাঁধ নির্মাণ ও খাল খননে ব্যয় করা হয়। এমত পরিস্থিতিতে যখন শ্রমিকদের অবস্থা স্থিতিশীল হয় তখন সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তা‘আলা শুরু ও শেষে তাওফীক দান করুন!
(ইবনু তাগরী বারদী, আল-নুজূমুয যাহিরাহ ফী মুলূকি মিসর ওয়াল কাহিরাহ ১/১২)।