অনল প্রবাহ
সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী
এ ভীষণ তূর্যধ্বনি প্রাণে প্রাণে হউক ধ্বনিত
বিশ্ববাসী-মোস্লেম নিদ্রা ত্যাজি হোক জাগরিত।
শিরায় শিরায় আজি, বিদ্যুদগ্নি উঠুক জ্বলিয়া,
করুক উত্থান সবে, মহা দর্পে পৃথিবী জুড়িয়া।
(১)
হে মোস্লেম! কতকাল, মোহঘুমে রহিবে পড়িয়া,
বারেকের তরে কিহে উঠিবে না নয়ন মেলিয়া ?
তোমারে নিদ্রিত দেখি, মহানন্দে তস্করের দল,
লুটিয়া লইল তব উদ্যানের চারু ফুল ফল!
বিশাল সাম্রাজ্য তব পূর্ব হতে পশ্চিম অবধি,
যাভা ও সুমাত্রা হতে, বহে যথা কুইভার নদী !
অনন্ত বিভবময়, সযতনে পালিত ফলিত,
হের দস্যুদল অই, করিতেছে ছিন্ন কবলিত !
সুখ-স্বাস্থ্য বলবীর্য স্বাধীনতা করিছে সংহার,
দিকে দিকে উঠিতেছে, ঘোর মর্মন্তুদ হাহাকার !
ইসলাম জননী আজি সাজি, হায় ! দীনা কাঙ্গালিনী,
চাহিয়া তোদের পানে, অশ্রুধারে ভাষায় মেদিনী !
রে মূঢ় ! তথাপি রহিবি কি ঘুমে অচেতন,
সর্বস্ব হরিয়া, প্রাণে বধিবে কি শেষে দস্যুগণ ?
(২)
অই আটলান্টিক-তীরে স্পেনরাজ্য, রমণীয় দেশ,
যতন সদ্ভূত চারু, স্বরগের উদ্যান বিশেষ।
অতুল ঐশ্বর্যময় মোস্লেমের গৌরব-ভান্ডার।
শিক্ষার আলোক-দীপ্ত, সভ্যতার উজ্জ্বল আগার !
বিজ্ঞানের লীলাভূমি দর্শন ও সাহিত্যের খনি,
য়ুরোপের শিক্ষা-গুরু, ধরণীর সমু্জ্জ্বল মণি !
অগণন কীর্তি হায়, রাজ্য ব্যাপি, রয়েছে পড়িয়া,
বিচরে খ্রীষ্টীয় দস্যু আজি তথা দম্ভেতে পাতিয়া।
অষ্টশত বর্ষ যথা, ছিল হায় ! রাজত্ব তোমার,
তথা হ’তে আজি তুমি নির্বাসিত সাগরের পার !!
প্রতি অণু পরমাণু এখনও করিছে ক্রন্দন,
একটিও কিন্তু হায় ! নাহি তথা মোস্লেম-নন্দন !