বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ

তাওহীদের ডাক ডেস্ক 8875 বার পঠিত

গঠনতান্ত্রিক নিয়ম অনুযায়ী গত ১৮ই ফেব্রুয়ারী ২০১১ ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় কমিটি ২০১১-২০১৩ সেশনের জন্য পুনর্গঠিত হল। ফালিল্লাহিল হাম্দ। ১৯৭৮ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারী এক শুভক্ষণে যে কাফেলাটি হাঁটি হাঁটি পা পা করে অগ্রযাত্রা শুরু করেছিল, দেখতে দেখতে আজ তা ৩৩ বছরে পদার্পণ করল। ইসলামের নামে কিংবা ইসলামের বিরুদ্ধে নামে-বেনামে যখন নানা ভ্রান্ত দল ও মতের প্রবল স্রোত উত্থিত হচ্ছিল এবং তা মানুষের সহজ-সরল ও স্বাভাবিক বিবেক-বুদ্ধির উন্মুক্ত গতিপথকে রুদ্ধ করে অসত্যের আবর্জনায় ঢেকে দিচ্ছিল, এমনই ক্রান্তিলগ্নে চলমান স্রোতের বিপরীতে দৃঢ় বাহুবল নিয়ে, সত্য ও ন্যায়ের শ্বেত-শুভ্র নিশানকে বাংলার যমীনে প্রতিষ্ঠার গুরুভার নিয়ে ময়দানে নেমেছিল এই যুব সংগঠন। শিরক ও বিদ‘আতপুষ্ট বাংলার আকাশে তিমিরগাঢ় রাত্রির কুহেলিকা ভেদ করে সেদিন যেন ঊষার শুচিশুদ্ধ আলোকবার্তা নিয়ে আবির্ভাব হয়েছিল এ সংগঠনের। আলহামদুলিল্লাহ দীর্ঘ এই ৩৩ বছরে বহু ঝড়-ঝাপ্টা বয়ে গেলেও, বাতিলের পেতে রাখা নানা প্রলোভনের ফাঁদে বিপদগ্রস্ত হলেও ‘যুবসংঘ’ স্বীয় লক্ষ্য ও চলার পথ থেকে একচুল বিচ্যুত হয়নি। বরং বাংলার বুকে এ সংগঠন এমন এক আদর্শকে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে, যার দুঃসাহসী মূলমন্ত্র- ‘আসুন! পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জীবন গড়ি’, ‘সকল বিধান বাতিল কর, অহি-র বিধান কায়েম কর’। ‘আহলেহাদীছ’ যে ফের্কাবন্দীর আহবায়ক কোন নাম নয়, কোন মাযহাব, মতবাদকেন্দ্রিক গোষ্ঠীর নাম নয়; বরং এ যে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এবং ছাহাবায়ে কেরামের রেখে যাওয়া পবিত্র আমানতকে মানবসমাজে উজ্জীবিত রাখার চিরন্তন আন্দোলন- তা এ সংগঠন প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। যার ফলে বাংলার বহু মানুষ আজ জেনেছে পিতৃপুরুষের আচরিত বিধি-বিধান হলেই তা ইসলাম নয়, পরম শ্রদ্ধেয় মহামানব রচিত গ্রন্থে থাকলেই তা ইসলাম নয়; বরং ইসলাম হল তা-ই, যা তাওহীদ ও রিসালতের অবিনশ্বর দুই খুঁটি, অভ্রান্ত সত্যের চূড়ান্ত দুই উৎস পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের পাতায় দেড় হাযার বছর ধরে উৎকীর্ণ হয়ে রয়েছে।         

এক্ষণে নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে আমরা পূর্বসূরী ভাইদের আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছি, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের বিনিময়ে বাংলার আকাশে-বাতাসে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের বার্তা আজ সাবলীলভাবে প্রবাহিত হচ্ছে। যাদের অকৃত্রিম খুলূছিয়াতের কারণে এ দেশের মানুষ আজ অহি-র বিধানের দিকে, মহাসত্যের দিকে এত নিকটবর্তী হতে পারছে। আল্লাহ তাঁদের সকলকে উত্তম প্রতিদানে ভূষিত করুন- আমীন!

এ আন্দোলনের যে সকল কর্মী ভাই আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হক্ব-এর দাওয়াতকে বুলন্দ করার দৃপ্ত শপথ নিয়ে এবং আল্লাহর প্রতি স্থির বিশ্বাস রেখে এ আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন, বাতিলের চোখ রাঙানীকে যারা ঈমানী তেজে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছেন, আল্লাহর রাস্তায় যারা সার্বক্ষণিক মুজাহিদের মত নিজেদেরকে প্রস্ত্তত রেখেছেন- তাদের প্রতিও আমাদের আন্তরিক ভালবাসা ও শুভকামনা রইল। প্রাণপ্রিয় এসব কর্মী ভাইদের প্রতি আমাদের একান্ত আহবান- আসুন! পথহারা মানুষকে ‘ছিরাতুল      মুস্তাকীমে’র পথে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা নিজেদেরকে আত্মোৎসর্গ করি। যার যতটুকু সামর্থ্য রয়েছে তার সবটুকু কাজে লাগিয়ে সমাজবিপ্লবের মঞ্চে সাহসী যোদ্ধার মত ঝাঁপিয়ে পড়ি। ইনশাআল্লাহ আমাদের সামষ্টিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ দেশের বুকে একদিন সামগ্রিক পরিবর্তন আসবেই। যে পরিবর্তনে সূচিত হবে তাওহীদভিত্তিক এক পবিত্র সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা; সূচিত হবে রিসালাতভিত্তিক এক সুশৃংখল জীবনব্যবস্থা; তৈরী হবে আখিরাতভিত্তিক এক সুস্থ-সুন্দর মানবসমাজ। আল্লাহ রববুল আলামীন আমাদেরকে সে তাওফীক দান করুন- আমীন!



বিষয়সমূহ: সম্পাদকীয়
আরও