নারীর তিনটি ভূমিকা (৩য় কিস্তি)
লিলবর আল-বারাদী
মুখতারুল ইসলাম 10206 বার পঠিত
ছূফ বা
পশম শব্দ থেকে ছূফী বা তাছাওউফ শব্দটি এসেছে যার উৎপত্তিগত মতপার্থক্য
রয়েছে। পাঠক, গবেষকের মাঝে মতপার্থক্য নয়। বরং খোদ ছূফীপন্থীদের নিকটই এর
ইখতিলাফ পরিলক্ষিত হয়। কেউ বলেন, ছূফী শব্দটি ছিফওয়াহ থেকে এসেছে যার অর্থ
খাঁটি বন্ধু। আবার কেউ মনে করেন, আরবের অতি প্রাচীন মক্কা নগরীর সন্নিকটের
প্রতিবেশী বংশ ছূফাহ ইবন বিশর ইবন ত্বানজাহর দিকে সম্বোধিত করে ছূফী বলা
হয়। ইবনু তায়মিয়াহ (রহ.) বলেন, আহলে ছুফফার দিকে সম্বোধিত করে ছূফী বলা হয়।
অথবা পশমের কাপড় পরিধানের ফলে তাদেরকে ছূফী বলা হয়। কেননা আল্লাহ ভীতি,
দুনিয়া ত্যাগ, ইবাদতে বাড়াবাড়ির পরিণতি থেকে সর্বপ্রথম ইরাকের বসরা নগরীতে
ছূফীদের আত্মপ্রকাশ ঘটে। উল্লেখ্য যে, পুরো শহরবাসীই এর অন্তর্ভুক্ত ছিল
না।
ড. যাকী মুবারক বলেন, তাছাওউফ ইহুদী, খিস্টান, ইসলাম ধর্মের ত্রিমুখী চিন্তাচেতনার ফসল। অথবা এই তিন ধর্মের রূহানী বা আত্মিক ভাবনা থেকে এর উদ্ভব।
মুহাম্মাদ শাফাক্বাহ বলেন, তাছাওউফ দুনিয়া ত্যাগের মানসিকতায় আত্মিক প্রশিক্ষণ, যা অদৃশ্য বিশ্বাসের উপর ভিত্তিশীল। যা শারঈ বিশুদ্ধ দলীল ও সুস্থ জ্ঞান-বিবেকের পরিপন্থী।
ড. গালিব আওয়াজী বলেন, তাছাওউফ এমন একটি দ্বীনী আন্দোলন যা ইসলামী নতুন নতুন রাজ্য জয় ও অর্থনৈতিক আশা-আকাঙ্খা ও বিলাসিতা বৃদ্ধির ফলে মানুষেরা ইসলাম বিরোধী দুনিয়াত্যাগের চিন্তাচেতনার দিকে ঝুঁকে পড়ে। এ কাজে তাদের বাড়াবাড়ি নতুন পথের জন্ম দেয় যা ছূফী নামে আত্মপ্রকাশ করে। আল্লাহকে পাওয়ার জন্য তারা আত্মিক প্রশিক্ষণ, কাশফ বা আধ্যাত্মিক অনুপ্রেরণা, মুশাহাদা বা আল্লাহর দর্শনের পথ বেছে নেয়, যা হিন্দু, গ্রীক, পারসিক দর্শনেরই প্রতিচ্ছবিমাত্র ।[1] আর ছূফী হলো পশমী কম্বল ইত্যাদি পরিহিত সাধু-সন্ন্যাসী-দরবেশদের জন্য প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিতরূপে ব্যবহৃত হয়। ৭১৯ খ্রিস্টাব্দে ছূফ বা সাদা পশমী খিরকা বা আলখেল্লা বিজাতীয় ও অপসন্দনীয় খৃস্টান পোশাকরূপে বিবেচিত হত।[2] ছূফী ভ্রান্ত মতাদর্শটি পরে ইসলামের নামে নতুন ফিরক্বায় রূপ নেয়। নিম্নে ছূফীদের প্রধান প্রধান ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ পর্যালোচনা করা হল-
ক. মহান আল্লাহ সম্পর্কে আক্বীদা :
মহান আল্লাহ সম্পর্কে বাতিলপন্থী ছূফীদের কিছু পরিভাষা রয়েছে যার উপরে তাদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত।[3] আল্লাহর বিধানের সাথে তাদের পরিভাষাগুলো সাংঘর্ষিক। এমনকি সেগুলো সরাসরি কুফরী। কেননা তারা আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে সেগুলোকে সৃষ্টিজীবের সাথে তুলনা করে যা সৃষ্টিকর্তার উলূহিয়াত ধ্বংসের নামান্তর। পরিভাষাগুলো হ’ল আল-হুলূল ওয়াল ইত্তিহাদ, ওয়াহদাতুল ওজূদ, ওয়াহদাতুশ শুহূদ ইত্যাদি। আলোচনাটি দু’টি পর্বে বিভক্ত যথা-
১. আল-হুলূল ওয়াল ইত্তিহাদ ও ওয়াহদাতুশ শুহূদ, ফানাফিল্লাহ বা সর্বেশ্বরবাদ :
আল-হুলূল ওয়াল ইত্তিহাদ, ওয়াহদাতুশ শুহূদ ফানাফিল্লাহ বা সর্বেশ্বরবাদ বলতে আল্লাহর মাঝে বিলীন হওয়াকে বুঝায়। বান্দার মানবীয় খোলস ছেড়ে ইলাহী খোলস বরণ করাকে ফানাফিল্লাহ বলে। এক কথায় বলতে গেলে দুনিয়ার মানুষ আসমানের আল্লাহতে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে আল-হুলূল ওয়াল ইত্তিহাদ, ওয়াহদাতুশ শুহূদ ফানাফিল্লাহ বা সর্বেশ্বরবাদ বলে। ফলে বান্দা ও আল্লাহ এক আত্মায় পরিণত হয় অর্থাৎ আল্লাহই বান্দা, আবার বান্দাই আল্লাহ। নাঊযুবিল্লাহ!
ইহসান ইলাহী যহীর বলেন,
فمما يدل علي اعتقاد الصوفية بحلول ذات الله تعالي في العبد اصطلاحهم
"الفناء" و هو من أهم المصطلحات التي يقوم عليها مذهبهم و تتأسس عليها
ديانتهم. و الفناء عند المتصوفة: فناء ذات العبد في ذات الرب، فتزول الصفات
البشرية في هذا المقام، و تبقي الصفات الإلهية، و تفني جهة العبد البشرية
في الجهة الربانية فيكون العبد و الرب شيئا واحدا- ‘আল্লাহর সত্তাতে
বান্দার অস্তিত্ব একাকার হয়ে যাওয়ার ছূফী বিশ্বাসের পরিভাষাগত নাম হ’ল
‘আল-ফানা’। এই গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষার উপর ছূফী মতবাদ প্রতিষ্ঠিত। ছূফীদের
নিকট ফানা হ’ল রবের সত্তাতে বান্দার সত্তা বিলীন হয়ে যাওয়া। এমতাবস্থায়
বান্দার মধ্যে মানবীয় বৈশিষ্ট্যাবলী লোপ পায় এবং এলাহী বৈশিষ্ট্যসমূহ বাকী
থেকে যায়। ফলে বান্দার এলাহী বৈশিষ্ট্যের মাঝে তার মানবীয় বৈশিষ্ট্যের
বিলুপ্তি সাধিত হয় এবং বান্দা ও রব এক সত্তায় পরিণত হয়।[4]
তাদের ঈমান বিধ্বংসী আক্বীদাসমূহ নিম্নরূপ :
১.
দাউদ ক্বায়ছারী বলে, ফানার মমার্থ হল, বান্দা থেকে রবে পরিণত হওয়া। যেন
প্রত্যেক বান্দা সাক্ষাৎ রবে পরিণত হয়। ফানা সবার জন্য ওয়াজিব। ফলে
প্রকৃতপক্ষেই রবের গুণাবলীর উপর বান্দার নিয়োগ নির্ধারিত হয়ে যায়।[5]
২.
নাফাযী রুন্দী বলেন, সত্তাতে বিলীন হওয়া অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুতে
নয়। তিনি কবিতা গেয়ে বলেন, فيفني ثم يفني ثم يفني ... فكان فناؤه عين
البقاء অর্থাৎ সে বিলীন হয়, বিলীন হয়, আবার ফানা হয়। তার ফানা প্রকৃতই
(তাঁরই) অস্তিত্ব। [6]
৩.
ফরীদুদ্দীন আত্বার ফানার সংজ্ঞায় বলেন, বিন্দু বিন্দু পানি যেমন সমুদ্রের
পানির সাথে মিশে যায়, তেমনি বান্দা আল্লাহর সত্তায় মিশে যায়।[7]
৪.
আব্দুল করীম যায়লী বলেন, আল্লাহ যখন কোন বান্দার সত্য কিছু চান, তখন তিনি
তার মধ্যে নিজের নাম বা গুণের সমাবেশ ঘটান। ফলে বান্দা ফানাফিল্লাহ হয়ে
যায়। বান্দার মধ্যে আল্লাহ্ প্রবিষ্ট হয়। মানুষ আকৃতির মধ্যেই আল্লাহ তার
মাধ্যমে হক প্রতিষ্ঠা করেন।[8]
৫.
আবূ ইয়াযীদ বুস্তামী (যিনি বায়েজিদ বুস্তামী নামে এদেশে পরিচিত) বলেন,
سبحاني ما أعظم شأني، و جاءه رجل و هو في الصومعة و قال هل أبو يزيد في
البيت؟ فقال: هل في البيت إلا الله অর্থাৎ আমি মহা পবিত্র, আমার কতইনা বড়
মর্যাদা।[9] সে ইবাদতখানায় থাকাবস্থায় একজন ব্যক্তি আসল এবং তাকে বলল, আবু ইয়াযীদ কি বাড়িতে আছে? সে বলে, বাড়িতে আল্লাহ ব্যতীত কেউ নেই।[10]
৬.
আবূ রাবী ফাহল থেকে ফায়তুরী বর্ণনা করে, সে বলত, আমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই,
আমি ছাড়া কোন মাবূদ নেই, আফ্রিকার আলেমরা আমার কথা শুনেছে এবং অস্বীকার
করেছে। তারা কাফের ফতোয়া দিয়েছে এবং তারা পালিয়েছে।[11]
৭. মুনছূর হাল্লাজকে[12] প্রশ্ন করা হয়েছিল,
من أنت؟ فقال: أنا الحق، ومن أشعاره المشهورة قوله: رأيت ربي بعين قلبي..فقلت من أنت؟ قال: أنت- نحن روحان حللنا بدنا.. روحه روحي روحي روحه..-
অর্থাৎ তুমি কে? সে বলল, আমিই হক (আল্লাহ)।[13] তার বিখ্যাত কবিতায় সে বলে, আমি আমার প্রভুকে অন্তরের চোখে দেখেছি। আমি বললাম, তুমি কে? সে বলল, তুমিই তো।[14] আমরা দু’টি রূহ। এখন একটি দেহে একাকার হয়ে গেছি। তাঁর রূহ আমার রূহ, আমার রূহ তাঁর রূহ।[15]
পর্যালোচনা :
ইহসান
ইলাহী যহীর বলেন, ছূফীরা এ ধরণের পরিভাষা ও কথার আড়ালে এমন কিছু বলতে চায়
যার সাথে ইসলামের সামান্যতম সম্পর্ক নেই। তারা হুলূল-ইত্তিহাদ,
ওছূল-ইত্তেছালে বিশ্বাস করে। তাদের এ ধরণের চিন্তাচেতনা ও বিশ্বাস দেখে
বিস্ময়াভিভূত হতে হয়।[16]
তিনি
আরো বলেন, ছূফীদের এ ধরণের কুফুরী কালাম কোন নবী-রাসূল, ছাহাবীগণ স্বপ্নেও
শুনেননি। আল্লাহ তাদের হেফাযত করেছেন। বস্ত্ততঃ ছূফীরা নবী-রাসূলদের
হেদায়াত থেকে বহু দূরে।[17]
তিনি আরো বলেন, ‘এ ধরণের কথাবার্তা সত্যপথ থেকে বিভ্রান্তির পথে ঠেলে দেয় এবং দ্বীন থেকে বের দেয়। এগুলো মূলত প্রাচ্য ও অন্যান্য দেশীয় দর্শনশাস্ত্র চর্চার কুফল। যদি তাই না হ’ত, তবে কেন এমন কথা মানুষের মাঝে সবচেয়ে পরহেযগার ও তাক্বওয়াশীল ছাহাবীগণের মুখ দিয়ে বের হল না? আল্লাহ তাঁর বন্ধুকে এ সমস্ত কুফুরী বা ফাহেশা কথাবার্তা থেকে বাঁচিয়েছেন। মূলত খোদ শয়তান ছূফীদের ভাষায় কথা বলে এবং তাদের মেধায়-মননে আসন গেঁড়ে বসেছে। আল্লাহ সমস্ত মুসলমানদেরকে তাদের এ ধরণের ক্রিয়াকলাপ থেকে রক্ষা করুন! [18]
২. ওয়াহদাতুল ওজূদ বা অদ্বৈতবাদী দর্শন :
সবকিছুর মাঝে আল্লাহর অস্তিত্বের উপস্থিতিকে ওয়াহদাতুল ওজূদ বা অদ্বৈতবাদ বলে। সৃষ্টিজগতের সবকিছুর মাঝে আল্লাহর অস্তিত্ব বিদ্যমান। এমকি কুকুর বা শুকরের মাঝেও, নাঊযুবিল্লাহ।
ইহসান ইলাহী যহীর বলেন, فيعتقد كثير من
الصوفية بأن ليس هناك فرق بين الله و خلقه إلا أن الله تعالي كل، و الخلق
جزؤه، و أن الله متجل في كل شيئ من الكون حتي الكلاب و الخنازير- ‘অধিকাংশ
ছূফীপন্থীরা বিশ্বাস করে, মহান আল্লাহ ও সৃষ্টিজীবের মাঝে মূলতঃ কোন তফাৎ
নেই। আল্লাহ পূর্ণাঙ্গ সত্তা ও সমস্ত সৃষ্টি তাঁরই অংশ। সৃষ্টিজীবের
সবকিছুতে আল্লাহর তাজাল্লী বা দীপ্তি রয়েছে। এমনকি কুকুর ও শুকরের মধ্যে
রয়েছে’।[19]
তাদের ঈমান বিধ্বংসী আক্বীদাসমূহ নিম্নরূপ :
১. ইবনু আরাবী বলেন, সব নাম, কাজ, গুণ, সত্তার মাঝে আল্লাহ রয়েছে। দুই চক্ষু এক চোখে বিলীন হয়ে তাতে তাঁরই প্রকাশ।[20]
২. ইবনু ওফা থেকে ইবনু আজীবাহ বর্ণনা করেন, পৃথিবীতে সে ছাড়া আর কেউ নেই। অর্থাৎ সর্বভূতে রয়েছেন আল্লাহ।[21]
৩. নাসাফী বলেন, আল্লাহর অস্তিত্বই প্রকৃত অস্তিত্ব। জগৎসংসার পুরোটাই তাঁরই ভাবনা ও খেয়ালীপনা।[22]
৪. আবু হামযাহ ছূফী থেকে তূসী বর্ণনা করেন, যখন তিনি বাতাসের প্রবল শব্দ, পানির কুলকুল শব্দ, পাখির কিচিরমিচির শুনতেন, তখন তিনি চিৎকার দিয়ে বলতেন, লাববাইক অর্থাৎ আমি উপস্থিত।[23]
৫. আবুল হুসাইন নূরী যখন কুকুরের ঘেউ ঘেউ শুনতেন, তখন বলতেন, লাববাইক ওয়া সা‘দাইক অর্থাৎ আমি উপস্থিত, সমস্ত কল্যাণ তোমার হাতেই।[24]
পর্যালোচনা :
ইহসান
ইলাহী যহীর বলেন, ছূফীরা বানর, শুকর, গাধা, ইহুদী, খ্রিস্টান, কুকুর, গাছ,
পাথর, পাখি, সবকিছুর মাঝেই আল্লাহকে খুঁজেন। এমনকি সব ধরণের নোংরা চতুষ্পদ
জন্তুর মাঝেও, নাঊযুবিল্লাহ।[25]
এ প্রসঙ্গে ইবনু তায়মিয়াহ (রহ.) বলেন, ইত্তেহাদ সম্পর্কিত তাদের বক্তব্যগুলো খ্রিস্টানদের চেয়েও বড় কুফুরী।[26]
ইহসান
ইলাহী যহীর আরো বলেন, ছূফীরা মেয়ে ও ছোট বাচ্চাদের শ্রুতিমধুর শব্দের জন্য
পাগল। তারা বলে এগুলো হল আল্লাহর প্রকাশ। তাদের ভালবাসার অর্থ হল আল্লাহকে
ভালবাসা। ফলে তাদের ভালবাসার আদর্শ হল প্রেমজুটি লায়লী ও মজনু। তাদের
বইগুলোতে ভালবাসার গযল, পুরনো দিনের প্রেম কাহিনীতে ভরা। তারা আল্লাহর
ভালবাসার মডেল হিসাবেও লায়লী ও মজনুকে বেছে নিয়েছে।[27] এ বিষয়ে তাদের ভালবাসার নোংরা কাহিনীগুলো খুবই লজ্জাজনক।[28] ইবনু আরাবী বলেন, যারা এ জন্য মেয়েদের ভালবাসে, প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহকেই ভালবাসে।[29]
তাদের
সমস্ত কর্মকান্ডগুলো আল্লাহর অবাধ্যতা এবং রাসূল (ছা.)-এর নির্দেশনাবলীর
বিরোধিতার শামিল। কেননা মেয়েদের ক্ষেত্রে চক্ষু অবনত রাখার জন্য আল্লাহ
নির্দেশ দিয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ
أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ
اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ অর্থাৎ তুমি মুমিন পুরুষদের বলে দাও,
তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। এটা
তাদের জন্য পবিত্রতর। নিশ্চয়ই তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবহিত।[30]
তারা তাদের কুপ্রবৃত্তি চরিতার্থ করতে রাসূল (ছা.) নামে মিথ্যারোপ করে বলে, النظر إلى الوجه الحسن عبادة অর্থাৎ সুন্দর চেহারার দিকে দৃষ্টিপাত করা ইবাদত।
ইহসান ইলাহী যহীর বলেন, এই ছূফী সম্প্রদায়ের দিকে দেখুন! তারা
কিভাবে সুন্দরী মেয়েদের তাকানোর নাম করে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছা.)-এর
অবাধ্যতার পথে মানুষদের আহবান ও উৎসাহিত করছে। শুধু তাই নয়, আল্লাহর মহববত
পাওয়ার জন্য মেয়েদের সৌন্দর্যের দিকে দৃষ্টিপাতকে প্রমাণ হিসাবে উপস্থাপন
করেছে।[31]
খ. বেলায়েত ও খতমে নবুঅত :
ছূফীদের
বিশ্বাস মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে দিয়েই নবুঅতের দরজা বন্ধ হয়ে যায়নি। আল্লাহর
রিসালাত চিরকালের জন্য বন্ধ নয়। নবীর পর নবী আবার নবী এভাবে আসতেই থাকবে।
জিবরাঈল (আ.) নবীদের নিকট অহি নিয়ে আসতেই থাকবে। নবীদের সাথে মহান আল্লাহ
পর্দা ছাড়াই কথা সরাসরি বলেন।[32]
তাদের ঈমান বিধ্বংসী আক্বীদাসমূহ নিম্নরূপ:
১.
আব্দুল কাদের হুবলা মা‘রূফ ইবন ক্বাযীবুল বান বলেন, যে সমস্ত গুণাবলী
দ্বারা নবীরা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত হয়েছে, সে সমস্ত গুণাবলী দ্বারা আউলিয়াগণও
বৈশিষ্ট্যমন্ডিত হয়েছে।[33]
২. নাজমুদ্দীন কুবরা বলেন, ছূফীদের উপর ফেরেশতারা অবতীর্ণ হয়।[34]
৩. শা‘রানী শায়খ তাজুদ্দীন ইবন শা‘বানকে মানুষরা কোন প্রয়োজনে সওয়াল করলে বলত, ধৈর্য ধারণ কর, জিবরাঈল আসছে।[35]
৪. দাববাগ বলেন, ওলীর উপর আদেশ-নিষেধ নিয়ে ফেরেশতা অবতীর্ণ হন।[36]
৫. শাযলী বলেন, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, যদি কেউ বলে, আল্লাহ আমার সাথে কথা বলেছে যেমনভাবে মুসা (আ.)-এর সাথে কথা বলেছিল।[37]
৬. ইবন আরাবী বলেন, আমার অন্তর আমার প্রভু সম্পর্কে বর্ণনা করছে তার বইয়ে ও রাসায়েলে। সে বলে, আল্লাহর নির্দেশনা ও আদেশ ছাড়া নিজস্ব গবেষণা ও চিন্তাভাবনা দিয়ে আমি কোন বই রচনা করিনি।[38]
পর্যালোচনা :
ইহসান ইলাহী যহীর বলেন, এখানে আমরা শী‘আদের থেকে ধার করা ছূফীদের কুরুচীপূর্ণ আক্বীদা বর্ণনা করতে চাই। তারা বলে, আল্লাহর রিসালাত কখনো ছিন্ন হবে না। নবুঅত অব্যাহত ধারায় চলতে থাকবে। নবীর পরম্পরা জারী থাকবে। তারা এভাবে মিথ্যুক দাজ্জালের জন্য দরজা খুলে বসেছে। তারা চায় মুসলমানদের রাসূল (ছাঃ) আনীত স্বচ্ছ মূল ইসলাম থেকে দূরে ঠেলে দিয়ে ধর্মদ্রোহী ও কাফেরদের দলে শামিল করতে। তারা পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর অবমাননা করে চলেছে।[39] কেননা আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন,
১.
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا كَافَّةً لِلنَّاسِ بَشِيرًا وَنَذِيرًا
وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ অর্থাৎ আর আমরা তোমাকে সমগ্র
মানবজাতির জন্য (জান্নাতের) সুসংবাদদাতা ও (জাহান্নামের) ভয় প্রদর্শনকারী
হিসাবে প্রেরণ করেছি। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।[40]
২. مَا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِنْ رِجَالِكُمْ وَلَكِنْ رَسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ অর্থাৎ মুহাম্মাদ (ছাঃ) তোমাদের পুরুষদের কারো পিতা নহেন, বরং তিনি আল্লাহর রাসূল ও শেষ নবী।[41]
৩.
الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي
وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا অর্থাৎ আজ আমি তোমাদের ধর্মকে
পরিপূর্ণ করে দিয়েছি এবং তোমাদের উপর আমার নে‘মতকে পূর্ণ করে দিয়েছি। আর
তোমাদের জন্য ইসলামকে ধর্ম হিসাবে মনোনীত করেছি।[42]
৪.
قُلْ يَاأَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ جَمِيعًا
অর্থাৎ তুমি বল, হে মানবজাতি! আমি তোমাদের সকলের প্রতি আল্লাহর প্রেরিত
রাসূল।[43]
ইহসান
ইলাহী যহীর আরো বলেন, তারা এসমস্ত কথার মাধ্যমে আল্লাহ ও তদীয় রাসূল
(ছা.)-এর কথার বিরোধিতা করে এবং মুমিনদের পথ ব্যতীত অন্যদের পথ অনুসরণ করে।[44]
গ. ইবাদত-বন্দেগী :
ছূফীগণ আল্লাহর আনুগত্যে নেকী, অবাধ্যতায় শাস্তির সুবোধ বচনকে হাসির খোরাকে পরিণত করেছে। তারা নিজেরাই ইবাদতের বিধান রচনা করে আল্লাহর নামে চালিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ চালু করেছে, যা অত্যন্ত গর্হিত অপরাধ। নিম্নে দু’টি পর্বে ছূফীদের ইবাদত সংক্রান্ত আক্বীদা তুলে ধরা হল। যথা-
১. আনুগত্যে নেকী ও অবাধ্যতায় শাস্তি :
ছূফীরা নেকীর আশা ও শাস্তির ভয় নিয়ে কোন ইবাদত করে না। বরং তারা তাদের লালিত বিশ্বাসানুযায়ী আল্লাহর প্রেমে গদগদ। তারা জান্নাত-জাহান্নামকে সমান গণ্য করে না। বরং যারা জান্নাতের আশা ও জাহান্নামের ভয় নিয়ে ইবাদত করে তাদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে।
তাদের ঈমান বিধ্বংসী আক্বীদাসমূহ নিম্নরূপ :
১.
আবুল হাসান ইবন মুওয়াফফাক্ব বলে, হে আল্লাহ! তুমি জেনে রাখ, আমি যদি
জাহান্নামের ভয়ে তোমার ইবাদত করে থাকি, তবে তুমি আমাকে শাস্তি দাও এবং
শাস্তি দ্বিগুণ করে দাও। তুমি জেনে রাখ, আর আমি যদি তোমাকে ভালবেসে ও
জান্নাতের আশাধারী হয়ে ইবাদত করি তবে তুমি আমার উপর জাহান্নাম চিরতরে হারাম
করে দাও।[45]
২.
রাবেয়া বছরী কবিতার সুরে বলে, ويعبدون الله خوفا من لظي.فلظي قد عبدوا لا
ربنا.ولدار الخلد صلوا لا له.شبه قوم يعبدون الوثنا অর্থাৎ তারা লাযার
(নামক জাহান্নামের) ভয়ে আল্লাহর ইবাদত করে। আসলে তারা লাযারই ইবাদত করে,
আমাদের প্রভুর নয়। দারুল খুলদ (নামক জাহান্নাম)-এর ভয়ে তারা ছালাত আদায়
করে, তার (আল্লাহর) জন্য নয়। যেমনভাবে মুর্তিপুজকরা (বিপদের ভয়ে) ইবাদত
করে।[46]
৩. সুলায়মান দারানী বলে, আলালহর অনেক বান্দা রয়েছে, যারা জাহান্নামের ভয় ও জান্নাতের আশায় ইবাদতে মশগুল থাকে না।[47]
৪.
আবু ইয়াযীদ বুস্তামী বলে, আমি ক্বিয়ামতের সংঘটনের ইচ্ছা পোষণ করলাম। ফলে
আমি জাহান্নামের দরজায় আমার শামিয়ানা স্থাপন করলাম। একজন ব্যক্তি প্রশ্ন
করল, আবু ইয়াযীদ এ অবস্থা কেন? সে বলল, আমি জানি, জাহান্নাম আমায় দেখে নিভে
যাবে।[48]
৫. শিবলী বলে, আল্লাহর কিছু বান্দা রয়েছে, যারা জাহান্নামে থুথু নিক্ষেপ করলেই তা নিভে যাবে।[49]
৬.
আবু মুসা বলে, জাহান্নাম আবার কি? আগামী কালকেই তা আমি স্থাপন করব। আমি
জাহান্নামকে বলব, জাহান্নামবাসীকে মুক্ত করে দাও নতুবা আমি অবশ্যই
জাহান্নামকেই গিলে ফেলব। জান্নাত আবার কি? জান্নাত তো ছোট বাচ্চাদের খেলনা।[50]
পর্যালোচনা :
ইহসান
ইলাহী যহীর বলেন, তারা সঠিক রাস্তা থেকে দূরে সরে গেছে। আল্লাহ, তাঁর
রাসূল ও মুমিনদের সোজা পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। যেমন কুরআন মাজীদে
পরিস্কারভাবে বলা হয়েছে- ‘আর এটিই আমার সরল পথ। অতএব তোমরা এ পথেরই অনুসরণ
কর। অন্যান্য পথের অনুসরণ করো না। তাহলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুৎ
করে দেবে। এসব বিষয় তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যাতে তোমরা (ভ্রান্ত
পথ সমূহ থেকে) বেঁচে থাকতে পার।[51] তারা প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে পতিত হয়েছে।[52]
তিনি আরো বলেন, কুরআন-সুন্নাহর মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, আল্লাহ সৃষ্টিজীবকে তাঁর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। রাসূল প্রেরণ করেছেন মানুষদের কাছে তাওহীদের দাওয়াত ও দু’টি বস্ত্তর ব্যাখ্যাদানের জন্য। আর আল্লাহ তাঁর বিধানে আনুগত্যকারীদের জন্য জান্নাত ও অস্বীকারকারীদের জন্য জাহান্নাম বানিয়েছেন।[53] এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন,
১. وَسَارِعُوا إِلَى مَغْفِرَةٍ مِنْ رَبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِينَ অর্থাৎ আর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে দ্রুত ধাবিত হও। যার প্রশস্ততা আসমান ও যমীন পরিব্যপ্ত। যা প্রস্ত্তত করা হয়েছে আল্লাহভীরুদের জন্য।[54]
২.
وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنَّ لَهُ نَارَ جَهَنَّمَ
خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের
অবাধ্যতা করে, তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন। সেখানে সে চিরকাল থাকবে।[55]
৩.وَأُزْلِفَتِ
الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِينَ-وَبُرِّزَتِ الْجَحِيمُ لِلْغَاوِينَ (সেদিন)
জান্নাতকে আল্লাহভীরুদের নিকটবর্তী করা হবে এবং জাহান্নামকে পথভ্রষ্টদের
জন্য খুলে দেওয়া হবে।[56]
৪.
فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَوَهَبْنَا لَهُ يَحْيَى وَأَصْلَحْنَا لَهُ
زَوْجَهُ إِنَّهُمْ كَانُوا يُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ وَيَدْعُونَنَا
رَغَبًا وَرَهَبًا وَكَانُوا لَنَا خَاشِعِينَ অর্থাৎ অতঃপর আমরা তার
আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাকে দান করলাম (পুত্র সন্তান) ইয়াহইয়াকে। আর
গর্ভধারণের জন্য তার স্ত্রীকে সক্ষমতা দান করলাম। তারা (পিতা-পুত্র) সর্বদা
সৎকর্মে প্রতিযোগিতা করত। তারা আশা ও ভীতির সাথে আমাদের ডাকত। আর তারা ছিল
আমাদের প্রতি বিনয়াবনত।[57]
আল্লাহর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি রাসূল (ছা.) প্রতিনিয়ত জাহান্নাম থেকে পানাহ চাইতেন এবং জান্নাতের আশাধারী ছিলেন।
৫.
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত নবী করীম (ছা.) তাকে এই দো‘আ
শিখিয়েছেন-اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ مِنَ الْخَيْرِ كُلِّهِ عَاجِلِهِ
وَآجِلِهِ مَا عَلِمْتُ مِنْهُ وَمَا لَمْ أَعْلَمْ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ
الشَّرِّ كُلِّهِ عَاجِلِهِ وَآجِلِهِ مَا عَلِمْتُ مِنْهُ وَمَا لَمْ
أَعْلَمْ اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ مَا سَأَلَكَ عَبْدُكَ
وَنَبِيُّكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا عَاذَ بِهِ عَبْدُكَ
وَنَبِيُّكَ اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ الْجَنَّةَ وَمَا قَرَّبَ
إِلَيْهَا مِنْ قَوْلٍ أَوْ عَمَلٍ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ النَّارِ وَمَا
قَرَّبَ إِلَيْهَا مِنْ قَوْلٍ أَوْ عَمَلٍ وَأَسْأَلُكَ أَنْ تَجْعَلَ
كُلَّ قَضَاءٍ قَضَيْتَهُ لِى خَيْرًا- ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে যাবতীয়
কল্যাণ ভিক্ষা করছি, যা তাড়াতাড়ি আসে, যা দেরীতে আসে, যা জানা আছে, যা জানা
নাই। আর আমি যাবতীয় মন্দ হ’তে তোমার নিকট আশ্রয় ভিক্ষা করছি, যা তাড়াতাড়ি
আগমনকারী, আর যা আমি জানি আর যা আমি অবগত নই। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট ঐ
মঙ্গল চাচ্ছি, যা চেয়েছেন তোমার নেক বান্দা ও তোমার নবী, আর তোমার কাছে ঐ
মন্দ বস্ত্ত থেকে পানাহ চাচ্ছি, যা হতে তোমার বান্দা ও নবী (ছাঃ) পানাহ
চেয়েছেন। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে জান্নাত চাচ্ছি এবং ঐসব কথা ও কাজ
চাচ্ছি যেগুলো আমাকে জান্নাতের নিকটবর্তী করে দেবে। আর আমি জাহান্নাম হতে
তোমার নিকট পানাহ চাচ্ছি এবং ঐসব কথা ও কাজ হতেও পানাহ চাচ্ছি, যেগুলো
আমাকে জাহান্নামের নিকটবর্তী করে দেবে। আর আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি
যে, তুমি আমার জন্য যেসব ফায়ছালা করে রেখেছ, তা আমার জন্য কল্যাণকর করে
দাও’।[58]
(ক্রমশঃ)
লেখক : কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’]
[1]. দ্র : শায়খুল ইসলাম ইবন তায়মিয়াহ, ছূফীওয়াহ ওয়াল ফুক্বারা, পৃ. ১০; ড. যাকী মুবারক, আত-তাছাউফুল ইসলামী ফিল আদাব ওয়াল আখলাক, ১ম খন্ড, ১৬০ পৃ.; মুহাম্মাদ শাফাক্বাহ, আত-তাছাউফ বায়নাল হাক্ব ওয়াল খালক, পৃ. ৭; ড. গালিব আওয়াজী, ফিরাকুল মু‘আছারাহ তানতাসিবু ইলাল ইসলাম, পৃ. ৫৭৮; ইহসান ইলাহী যহীর, আত-তাছাওউফ আল-মানশা ওয়াল মাছাদির , পৃ. ৩৫।
[2]. ইসলামী বিশ্বকোষ, দ্বাদশ খন্ড, পৃ. ৩৯৫; দ্র. ইহসান ইলাহী যহীর, দিরাসাত ফিত তাছাওউফ, পৃ. ২৮৯।
[3]. ইহসান ইলাহী যহীর, দিরাসাত ফিত তাছাওউফ, পৃ. ২৮৯।
[4]. তদেব।
[5]. তদেব, পৃ. ২৯০; গৃহীত : দাউদ ক্বায়ছারী, মুকাদ্দামাতু ফিল ফুছূছ ও হাকীম তিরমিযী, খাতমুল আওলিয়া, পৃ. ৪৯১।
[6]. তদেব, পৃ. ২৯০; গৃহীত : নাফাযী রুন্দী, গায়ছুল মাওয়াহিব উলইয়াহ ফি শারহিল হাকাম আতায়িয়্যাহ, ১/৯৯ পৃ.।
[7]. তদেব; গৃহীত : ফরুদুদ্দীন আত্বার, মানতিকুত ত্বাইর, (বৈরূত : দারুল আন্দালুস), প্রবন্ধ নং ৪৪, ৪০৪।
[8]. তদেব, পৃ. ২৯২; গৃহীত : আব্দুল করীম জায়লী, আল-ইনসানে কামেল, ১৪০২ হিঃ, ১/৪৯ পৃ.।
[9]. তদেব; পৃ. ২৯২; গৃহীত : আবু তালিব মাক্কী, কূতুল কুলূব, ২/৭৫ পৃ.; কুশাইরী, রিসালাতু তারতীবুস সুলূক,৭৩ পৃ.; নাজমুদ্দীন কুবরা, ফাওয়াতিহুল জামাল, ৩৬ পৃ.; শা‘রানী, দুরারুল গাওয়াছ, ৫৮ পৃ.; ইবনু আজীবাহ, ঈক্বাযুল হুমাম, ২০৪ পৃ.; জুমহুরাতুল আউলিয়া, ১/২৩৪ পৃ.।
[10]. তদেব, পৃ. ২৯৩; গৃহীত : হুজুরাইরী, কাশফুল মাহজূব, ৪৯৯ পৃ.।
[11]. তদেব, পৃ. ২৯৪; গৃহীত : আব্দুস সালাম ফায়তূরী, অছিয়তুল কুবরা, ৮১ পৃ.।
[12]. হুসাইন ইবন মানছূর হাল্লাজ, উপনাম আবূ মুগীছ ফারেসীল বাগদাদী বায়যাভী। ছূফী হাল্লাজ দুনিয়া বিমুখতার নামে স্বধর্মত্যাগী নাস্তিক হিসাবেও আখ্যায়িত হয়। কেননা সে হুলূল তথা সর্বেশ্বরবাদ বিশ্বাসের কারণে নিজেকে আল্লাহ দাবী করে বসে (নাঊযুবিল্লাহ)। আববাসীয় খলীফা মুক্বতাদিরের যুগে তাকে জেলে বন্দী করা হয় এবং তাকে হত্যা করা হয়। কিন্তু তার ভক্তদের দাবী তিনি মরেননি। বরং শক্রদের কেউ তার সাদৃশ্য গ্রহণ করে এবং নিহত হয়। তার লিখনীগুলোর নাম ও বিষয়বস্ত্ত অপরিচিত এবং ভিন্নধর্মী। তার উল্লেখযোগ্য বইগুলো হল- ত্বাসীনুল আযল ওয়া জাওহারুল আকবার ওয়া শাজারুন নূরিয়া, ওয়ায যিল্লুল মামদূহ ওয়াল মায়িল মাসকূব ওয়াল হায়াতিল ফানিয়া, ওয়াল কুরআনুল কুরআন ওয়াল ফুরকান, ওয়া মাদহুন নবী ওয়াল মাছালুল আ‘লা ইত্যাদি। সে বাগদাদে ৩০৯ হিজরী সনে নিহত হয়।
[13]. তদেব, পৃ. ২৯৫; গৃহীত : ইমাম গাযালী, মুকাশাফাতুল কুলূব, ২৬ পৃ.; সাহরুদদী, ‘আওয়ারিফুল মা‘রিফ, কায়রো, পৃ. ৭৯।
[14]. তদেব; পৃ. ২৯৫; গৃহীত : মানছূর হাল্লাজ, দিওয়ানে হাল্লাজ, পৃ. ৩৭।
[15]. তদেব, পৃ. ২৯৬; গৃহীত : ইবনু আজীবাহ, ঈক্বাযুল হিমাম, পৃ. ৫৮-৫৯।
[16]. তদেব, পৃ. ২৮৯।
[17]. তদেব, পৃ. ২৯৪।
[18]. তদেব, পৃ. ২৯৪।
[19]. তদেব, পৃ. ২৯৪।
[20]. তদেব, পৃ. ২৯৭; গৃহীত : ইবনু আরাবী, ওয়াল ফুতূহাতু মাক্কীয়াহ, ২/৪৪-৪৫ পৃ.।
[21]. তদেব, পৃ. ২৯৮; গৃহীত : ইবনু আজীবাহ, ঈক্বাযুল হুমাম, পৃ. ২৭২।
[22]. তদেব, পৃ. ২৯৯; গৃহীত : নাসাফী, যুবদাতুল হাক্বায়েক্ব, পৃ. ৮২।
[23]. তদেব, পৃ. ৩০০; গৃহীত : তূসী, কিতাবুল লাম‘, পৃ. ৪৯৫।
[24]. তদেব, গৃহীত : ইবন আজীবাহ হুসনা, ঈক্বাযুল হুমাম, পৃ. ৫৫।
[25]. তদেব, পৃ. ৩০০-৩০১।
[26]. তদেব।
[27]. তদেব।
[28]. তদেব, পৃ. ৩০৮।
[29]. তদেব, পৃ. ৩০২; গৃহীত : ইবনু আরাবী, ফুছূছুল হুকম, পৃ. ২১৮।
[30]. আল-কুরআন, সূরা নূর, ২৪/৩০।
[31]. তদেব।
[32]. তদেব, পৃ. ১৫৯, ১৯৭।
[33]. ইহসান ইলাহী যহীর, আত-তাছাওউফ আল-মানশা ওয়াল মাছাদির, পৃ. ১৬২।
[34]. তদেব, পৃ. ১৬৪; গৃহীত : নাজমুদ্দীন কুবরা, ফাওয়াইহুল জামাল ওয়া ফাওয়াতিহুল জালাল, পৃ. ১০।
[35]. তদেব, গৃহীত : শা‘রানী, ওয়াল আখলাকুল মাতবূলিয়াহ, ১/৪৫৪ পৃ.।
[36]. তদেব, পৃ. ১৬৫; গৃহীত : দুববাগ, ইবরীয, পৃ. ১৫১।
[37]. তদেব, পৃ. ১৭৫; গৃহীত : তাবাক্বাতুশ শা‘রানী, ২/৬৯ পৃ.।
[38]. তদেব; গৃহীত : শা‘রানী, তানবীহুল মুগতারীন, পৃ. ১৩৬।
[39]. তদেব, পৃ. ১৯৭; গৃহীত : নূবিখতী, ফারাকুশ শী‘আ, পৃ. ৭০।
[40]. সূরা সাবা আয়াত-৩৪/২৭।
[41]. সূরা আহযাব আয়াত-৩৩/৪০।
[42]. সূরা মায়েদা আয়াত- ৫/০৩।
[43]. সূরা আ‘রাফ, আয়াত-৭/১৫৮।
[44]. আত-তাছাওউফ আল-মানশা ওয়াল মাছাদির, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৯৮।
[45]. দিরাসাত ফিত তাছাওউফ, প্রাগুক্ত, পৃ. ৭৭।
[46]. তদেব, পৃ. ৭০।
[47]. তদেব, পৃ. ৭৯; গৃহীত : দামইয়াতী, কাফাইয়াতুল আতকা ওয়া মিনহাজুল আছফা, পৃ. ১০৭।
[48]. তদেব, পৃ. ৭৩; গৃহীত : সালহাজী, ওয়ান নূও মিন কালিমাত আবু তায়ফূর, পৃ. ১৪৭।
[49]. তদেব, পৃ. ৭৪; গৃহীত : তূসী, কিতাবুল লাম‘, পৃ. ৪৯১।
[50]. তদেব, পৃ. ৭৮; গৃহীত : আব্দুর রহমান বাদাবী, শাতহাতুছ ছূফীয়াহ।
[51]. আল-কুরআন, সূরা আন‘আম, ৭/১৫৩।
[52]. দিরাসাত ফিত তাছাওউফ, প্রাগুক্ত, পৃ. ৬৭।
[53]. তদেব।
[54]. সূরা আলে ইমরান, আয়াত-৩/১৩৩।
[55]. জিন, আয়াত-৭২/২৩।
[56]. শো‘আরা, আয়াত-২৬/৯০-৯১।
[57]. আম্বিয়া, আয়াত-২১/৯০।
[58]. ইবনু মাজাহ হা/৩৮৪৬; আহমাদ হা/২৪৪৯৮, ২৪৬১৩; ছহীহাহ হা/১৫৪২।