বিশুদ্ধ আক্বীদাই মূল
জামীলুর রহমান
রোগব্যাধি আল্লাহর পক্ষ থেকে মুমিন বান্দার জন্য পরীক্ষা স্বরূপ। এটা পূর্ব নির্ধারিত। কেননা আলাহ সুবহানাহু তা‘আলা আমাদের ভাগ্যে যা লিখে রেখেছেন, তা ব্যতীত কিছুই আমাদের নিকট পৌঁছবে না। সুতরাং এর দ্বারা বান্দার আত্মশুদ্ধির এক মহা সুযোগ তৈরী হয়। মহান আল্লাহ বলেন, مَا أَصَابَ مِنْ مُصِيبَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ وَمَنْ يُؤْمِنْ بِاللهِ يَهْدِ قَلْبَهُ وَاللهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ ‘বান্দা কোন বিপদে পতিত হয় না আল্লাহর অনুমতি ছাড়া বস্ত্ততঃ যে ব্যক্তি আলাহকে বিশ্বাস করে, তিনি তার হৃদয়কে সুপথে পরিচালিত করেন। আর আলাহ সকল বিষয়ে সুবিজ্ঞ’ (তাগাবুন ৬৪/১১)।
আর বিপদাপদ দ্বারা মুমিন ব্যক্তির পাপ দূর হয়ে থাকে। এ বিষয়ে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, مَا يُصِيبُ الْمُسْلِمَ مِنْ نَصَبٍ وَلاَ وَصَبٍ وَلاَ هَمٍّ وَلاَ حُزْنٍ وَلاَ أَذًى وَلاَ غَمٍّ حَتَّى الشَّوْكَةِ يُشَاكُهَا، إِلاَّ كَفَّرَ اللَّهُ بِهَا مِنْ خَطَايَاهُ ‘মুসলিম ব্যক্তির উপর যে সকল যাতনা, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকন্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানী আপতিত হয়, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে বিদ্ধ হয়, এসবের দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন’।[1] সুতরাং সকল বিপদাপদে একমাত্র আল্লাহর উপরেই মুমিনদের ভরসা করা উচিত। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে জনমনে রোগ সম্পর্কে ব্যাপক ভয়-ভীতি তৈরী হয়েছে। এ ব্যাপারে একজন মুমিনের করণীয় কী হবে, সে বিষয়ে নিম্নে আলোচনা করা হ’ল।
প্রথমতঃ তাক্বদীরের উপর দৃঢ় বিশ্বাস ও ধৈর্য ধারণ করা : প্রতিটি ইনসানের জীবন চক্র আবর্তিত হয় একটি বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে। অসুখ-বিসুখ, বালা-মুছীবতে মহান আল্লাহ সকলের জন্য সৃষ্টি করেছেন। এ ক্ষেত্রে নাস্তিক, মুরতাদ, নৈরাশ্যবাদী কাফেররা অব্যক্ত যাতনায় ভোগে। কিন্তু মুসলমানদের ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। কেননা তাদের চিরন্তন অভিভাবক হলেন মহান আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা। ফলে তাকদীরে বিশ্বাস মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় সমাধান। আল্লাহ বলেন, وَإِنْ يَمْسَسْكَ اللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهُ إِلَّا هُوَ وَإِنْ يُرِدْكَ بِخَيْرٍ فَلَا رَادَّ لِفَضْلِهِ يُصِيبُ بِهِ مَنْ يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَهُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ ‘যদি আললাহ তোমাকে কোন কষ্টে নিপতিত করেন, তবে তিনি ছাড়া তা দূর করার কেউ নেই। আর তিনি যদি তোমার প্রতি কোন কল্যাণ চান, তবে তার অনুগ্রহকে প্রতিরোধ করার কেউ নেই। স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যাকে খুশী তিনি তা দান করেন। তিনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (ইউনুস ১০/১০৭)।
তিনি স্বীয় রাসূলকে বলেন, قُلْ لَنْ يُصِيبَنَا إِلَّا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَنَا هُوَ مَوْلَانَا وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ ‘তুমি বল, আল্লাহ আমাদের ভাগ্যে যা লিখে রেখেছেন, তা ব্যতীত কিছুই আমাদের নিকট পৌঁছবে না। তিনিই আমাদের অভিভাবক। আর আল্লাহর উপরেই মুমিনদের ভরসা করা উচিত’ (তওবা ৯/৫১)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ইবনু আববাস (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বলেন, হে যুবক! আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিখাবো। আল্লাহকে সংরক্ষণ করবে। তাহলে তিনি তোমাকে সংরক্ষণ করবেন। আল্লাহকে স্বরণ করলে, তাকে তোমার সামনেই পাবে। যখন তুমি চাইবে, তখন আল্লাহর নিকট চাইবে। আর যখন সাহায্য প্রার্থনা করবে, তখন আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করবে। জেনে রাখ, যদি উম্মতের সবাই তোমার কোন উপকারের জন্য একত্রিত হয়, তারা তোমার কোন উপকার করতে সক্ষম হবে না অতটুকু ব্যতীত, যতটুকু আল্লাহ তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। আর তারা যদি সবাই তোমার কোন ক্ষতি করতে চায়, তবে কেবল অতটুকুই পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। কলম তুলে নেয়া হয়েছে এবং পৃষ্ঠা শুকিয়ে গেছে’।
অন্য বর্ণনায় রয়েছে, احفظ
الله تجده أمامَك ، تَعرَّفْ إلى اللهِ في الرَّخاء يَعْرِفْك في
الشِّدَّةِ واعلَمْ أنَّ ما أخطَأَكَ لم يَكُن لِيُصِيبَكَ، وما أصابَكَ
لم يَكُن ليُخطِئَكَ واعلَمْ أنَّ النَّصْرَ مَعَ الصَّبرِ، وأنَّ الفَرَجَ
مَعَ الكَرْبِ، وأنَّ معَ العُسْرِ يُسراً ‘আল্লাহকে স্মরণ করবে তো তাঁকে
তোমার সম্মুখে পাবে, তুমি স্বচ্ছল অবস্থায় আল্লাহকে স্বরণ করবে তো তিনি
তোমাকে কঠিন অবস্থায় স্মরণ করবেন। মনে রেখ, যা তুমি পেলে না, তা তোমার
পাবার ছিল না, আর যা তুমি পেলে তা তুমি না পেয়ে থাকতে না। আর জেনে রেখ,
ধৈর্য্যধারণের ফলে (আল্লাহর) সাহায্য লাভ করা যায়। কষ্টের পর স্বাচ্ছন্দ্য
আসে। কঠিন অবস্থার পর স্বচ্ছলতা আসে’।[2]
রাসূল
(ছাঃ) আরো বলেন, মুমিন বিষয়টি বিস্ময়কর। তার যাবতীয় ব্যাপারই তার জন্য
কল্যাণকর। এ বৈশিষ্ট্য মুমিন ছাড়া আর কারো নেই। যদি তার সুখ-শান্তি আসে তবে
সে শোকর আদায় করে, আর যদি দুঃখ মুছীবত আসে তবে সে ছবর করে। অতএব
প্রত্যেকটাই তার জন্য কল্যাণকর হয়ে থাকে’।[3]
দ্বিতীয়তঃ আল্লাহর নিকট পানাহ চাওয়া : রাসূল
(ছাঃ)-এর অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল বালা-মুছীবত থেকে আল্লাহ
সুবহানাহু তা‘আলার নিকট আশ্রয় চাইতেন। মহান আল্লাহ বলেন,وَلَقَدْ
أَخَذْنَاهُمْ بِالْعَذَابِ فَمَا اسْتَكَانُوا لِرَبِّهِمْ وَمَا
يَتَضَرَّعُونَ ‘আমরা তাদেরকে আযাব দ্বারা পাকড়াও করেছিলাম। কিন্তু তারা
তাদের প্রতিপালকের প্রতি নত হয়নি এবং তারা মিনতিও করেনি’ (মুমিনুন ২৩/৭৬)। মহান আল্লাহ বলেন, وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ ‘যখন আমি পীড়িত হই, তখন তিনিই আমাকে আরোগ্য দান করেন’ (শো‘আরা ২৬/৮০)।
রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ جَهْدِ الْبَلاَءِ،
وَدَرَكِ الشَّقَاءِ، وَسُوءِ الْقَضَاءِ، وَشَمَاتَةِ الأَعْدَاءِ- ‘তোমরা
বালা মুছীবতের কঠোরতা, দুর্ভাগ্যে পতিত হওয়া, অশুভ পরিণতি এবং দুশমনের
আনন্দিত হওয়া থেকে আশ্রয় চাও’।[4] রাসূল (ছাঃ)
বলেছেন, إِنَّ الدُّعَاءَ يَنْفَعُ مِمَّا نَزَلَ وَمِمَّا لَمْ يَنْزِلْ
فَعَلَيْكُمْ عِبَادَ اللهِ بِالدُّعَاءِ ‘যে বিপদ-আপদ এসেছে আর যা (এখনও)
আসেনি তাতে দো‘আয় কল্যাণ হয়। অতএব হে আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা দো‘আকে
আবশ্যিক করে নাও’।[5]
রোগাক্রান্ত অবস্থায় যেমনটি আইয়ুব (আঃ) দো‘আ করেছিলেন। যা পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ভাষায়, وَأَيُّوْبَ إِذْ نَادَى رَبَّهُ أَنِّيْ مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنْتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِيْنَ- فَاسْتَجَبْنَا لَهُ فَكَشَفْنَا مَا بِهِ مِنْ ضُرٍّ وَّآتَيْنَاهُ أَهْلَهُ وَمِثْلَهُم مَّعَهُمْ رَحْمَةً مِّنْ عِنْدِنَا وَذِكْرَى لِلْعَابِدِيْنَ ‘আর স্মরণ কর আইয়ূবের কথা, যখন তিনি তার পালনকর্তাকে আহবান করে বলেছিলেন, আমি কষ্টে পতিত হয়েছি এবং আপনি সর্বোচ্চ দয়াশীল’। ‘অতঃপর আমরা তার আহবানে সাড়া দিলাম এবং তার দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিলাম। তার পরিবারবর্গকে ফিরিয়ে দিলাম এবং তাদের সাথে তাদের সমপরিমাণ আরও দিলাম আমাদের পক্ষ হ’তে দয়া পরবশে। আর এটা হ’ল ইবাদতকারীদের জন্য উপদেশ স্বরূপ’ (আম্বিয়া ২১/৮৩-৮৪)। এছাড়া আল্লাহর নিকট পানাহ চাওয়ার জন্য নিমোক্ত দো‘আগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
১.
اللَّهُمَّ إِنِّى أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ وَالْجُنُونِ وَالْجُذَامِ
وَمِنْ سَيِّئِ الأَسْقَامِ ‘আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল বারাছি
ওয়াল জুনূনি ওয়াল জুযা-মি ওয়া মিন সাইয়িইল আসক্বা-ম’ (হে আল্লাহ! আমি তোমার
নিকট আশ্রয় চাই শ্বেত রোগ, মস্তিষ্ক বিকৃতি, কুষ্ঠ এবং সব ধরনের দুরারোগ্য
ব্যাধি হ’তে’।[6]
২.
اللَّهُمَّ جَنِّبْنِي مُنْكَرَاتِ الْأَخْلَاقِ، وَالْأَهْوَاءِ،
وَالْأَعْمَالِ وَالْأَدْوَاءِ- ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মন্দ চরিত্র, মন্দ
কামনা, মন্দ কাজ ও মন্দ ব্যধি হতে দূরে রাখ’।[7]
৩.
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ ‘আ‘ঊযু
বিকালিমা-তিল্লা-হিত তাম্মা-তি মিন শার্রি মা খালাক্ব’ (আমি আল্লাহর
পরিপূর্ণ কালেমা সমূহের মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির যাবতীয় অনিষ্টকারিতা হ’তে
পানাহ চাচ্ছি’।[8]
এতদ্ব্যতীত নিমোক্ত পদ্ধতিতে আমরা বিভিন্ন রোগব্যাধিতে বাঁচতে পারি।
১. পাত্র ঢেকে রাখা : পাত্র
ঢেকে রাখা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, غَطُّوا الْإِنَاءَ، وَأَوْكُوا
السِّقَاءَ، فَإِنَّ فِي السَّنَةِ لَيْلَةً يَنْزِلُ فِيهَا وَبَاءٌ، لَا
يَمُرُّ بِإِنَاءٍ لَيْسَ عَلَيْهِ غِطَاءٌ، أَوْ سِقَاءٍ لَيْسَ عَلَيْهِ
وِكَاءٌ، إِلَّا نَزَلَ فِيهِ مِنْ ذَلِكَ الْوَبَاءِ- ‘তোমরা পাত্রগুলো
ঢেকে রাখবে এবং মশকসমূহের মুখ এটে রাখবে। কেননা বছরে একটি রাত আছে, যে রাতে
মহামারী নাযিল হয়। যে কোন অনাবৃত পাত্র এবং বন্ধনমুক্ত মশকের উপর দিয়ে তা
অতিক্রম করে তাতেই সে মহামারী নেমে আসে’।[9]
২. সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহর নিকট সুস্থতা কামনা করা :
হাদীছে
এসেছে, عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ لَمْ يَكُنْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَعُ هَؤُلَاءِ الْكَلِمَاتِ حِينَ يُمْسِي
وَحِينَ يُصْبِحُ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ فِي
الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ
وَالْعَافِيَةَ فِي دِينِي وَدُنْيَايَ وَأَهْلِي وَمَالِي، اللَّهُمَّ
اسْتُرْ عَوْرَاتِي وَآمِنْ رَوْعَاتِي، اللَّهُمَّ احْفَظْنِي مِنْ بَيْنِ
يَدِي وَمِنْ خَلْفِي وَعَنْ يَمِينِي وَعَنْ شِمَالِي وَمِنْ فَوْقِي
وَأَعُوذُ بِعَظَمَتِكَ أَنْ أُغْتَالَ مِنْ تَحْتِي يَعْنِي الْخَسْفَ-
ইবনু উমার (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সকাল ও সন্ধ্যায় এ দো‘আ কখনই
পরিত্যাগ করতেন না। হে আল্লাহ! আমি দুনিয়া ও আখিরাতে আপনার কাছে সুস্থতা
চাই। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে দীন ও দুনিয়ার ক্ষমা ও কল্যাণ চাই; আর আমার
পরিবার-পরিজন ও সম্পদের জন্য ও কল্যাণ চাই! হে আল্লাহ! আমার দোষ-ক্রটি
গোপন রাখুন এবং আমার অন্তরে শান্তি প্রদান করুন। হে আল্লাহ! আমাকে রক্ষা
করুন-আমার ডান দিক হতে, বাম দিক হতে, সামনে হতে, পেছন হতে এবং উপর ও নীচের
দিকের ক্ষতি থেকে। রাবী ওয়াকী (রহঃ) বলেন, যমীনের মধ্যে ধ্বসে যাওয়া থেকে।[10]
রোগ আসার পূর্বে নিম্নোক্ত দো‘আটি পাঠ করা। এ বিষয়ে হাদীছ, উসমান ইবন আফফান (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় এ দো‘আ তিনবার পড়বে, সকাল পর্যন্ত তার উপর কোন আকস্মিক বিপদ আপতিত হবে না। দো‘আটি হ’ল, بِسْمِ اللهِ الَّذِى لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَىْءٌ فِى الأَرْضِ وَلاَ فِى السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ-
অর্থাৎ আমি শুরু করছি সে আল্লাহর নাম নিয়ে, যার নাম নিলে যমীন ও আসমানের কিছুই কোন ক্ষতি করতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।
আর যে ব্যক্তি সকালে এ দো‘আ তিনবার পাঠ করবে, সন্ধ্যা পর্যন্ত তার উপর কোন আকস্মিক বিপদ আপতিত হবে না’।[11]
৩. অধিক পরিমাণে দো‘আয়ে ইউনুস পাঠ করা :
আল্লাহ বলেন, ‘আর স্মরণ কর মাছওয়ালা (ইউনুস)-এর কথা। যখন সে ক্রুদ্ধ অবস্থায় চলে গিয়েছিল এবং বিশ্বাসী ছিল যে, আমরা তার উপর কোনরূপ কষ্ট দানের সিদ্ধান্ত নেব না। অতঃপর সে (মাছের পেটে) ঘণ অন্ধকারের মধ্যে আহবান করল (হে আল্লাহ!) তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি পবিত্র। আমি সীমালংঘণকারীদের অন্তর্ভুক্ত’। ‘অতঃপর আমরা তার আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাকে দুশ্চিন্তা হতে মুক্ত করলাম। আর এভাবেই আমরা বিশ্বাসীদের মুক্তি দিয়ে থাকি’ (আম্বিয়া ২১/৮৭-৮৮)।
ইবনু কাছীর বলেন, وَكَذَلِكَ نُنْجِي الْمُؤْمِنِينَ ‘আর এভাবেই আমরা বিশ্বাসীদের মুক্তি দিয়ে থাকি’ এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, যখন তারা অত্যাধিক কষ্টে উপনীত হন তখন একনিষ্ঠ চিত্তে আল্লাহকে ডাকে। বিশেষ করে তারা যখন কঠিন রোগে আক্রান্ত হতেন তখন তারা এই দো‘আ করতেন’ (ইবনু কাছীর ৫/৩৬৮ পৃঃ)।
অতঃপর
তিনি নিম্নোক্ত হাদীছটি বর্ণনা করেছেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ
তা‘আলার নবী যুন-নূন ইউনুস (আঃ) মাছের পেটে থাকাকালে যে দো‘আ করেছিলেন তা
হ’ল, لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّى كُنْتُ مِنَ
الظَّالِمِينَ ‘তুমি ব্যতীত কোন মা’বূদ নেই, তুমি অতি পবিত্র। আমি নিশ্চয়
যালিমদের দলভুক্ত নই (সূরা আম্বিয়া ৮৭)। যে কোন মুসলিম লোক কোন বিষয়ে কখনো এ দো‘আ করলে অবশ্যই আল্লাহ তা‘আলা তার দো‘আ কবুল করেন’।[12]
হাদীছে
এসেছে, ইবরাহীম ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু সা‘দ তার পিতা থেকে, তার পিতা তার
দাদা থেকে আমাকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, একদা আমরা নবী করীম (ছাঃ)-এর
নিকটে বসে ছিলাম। তিনি বলেন, আমি কি তোমাদের এমন একটি বিষয়ে জানাবো না যে,
তোমাদের কোন ব্যক্তি দুনিয়ার কোন কষ্ট বা মুছীবতে নিপতিত হয় এবং দো‘য়া করলে
তা থেকে মুক্ত হয়? উনাকে বলা হল, জী, আপনি বলুন। তিনি বলেন, (দো‘আ যিন
নূন) দো‘আ ইউনুস পাঠ করবে’।[13]
৪. অধিক পরিমাণ কুরআন তেলাওয়াত করা :
অধিক পরিমাণে কুরআন তেলাওয়াত করুন। কেননা এটা মুমিনের জন্য আরোগ্য দানকারী। মহান আল্লাহ বলেন, وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ وَلَا يَزِيدُ الظَّالِمِينَ إِلَّا خَسَارًا شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ ‘আর আমরা কুরআন নাযিল করি, যা বিশ্বাসীদের জন্য আরোগ্য ও রহমত স্বরূপ। কিন্তু পাপীদের জন্য তা কেবল ক্ষতিই বৃদ্ধি করে’ (বনী ইস্রাইল ১৭/৮২)।
তিনি আরও বলেন, يَاأَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ ‘হে মানব জাতি! তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে এসে গেছে উপদেশবাণী (কুরআন) এবং অন্তরের রোগসমূহের নিরাময়কারী এবং বিশ্বাসীদের জন্য পথ প্রদর্শক ও রহমত’ (ইউনুস ১০/৫৭)।
অপর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, وَلَوْ جَعَلْنَاهُ قُرْآنًا أَعْجَمِيًّا لَقَالُوا لَوْلَا فُصِّلَتْ آيَاتُهُ أَأَعْجَمِيٌّ وَعَرَبِيٌّ قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ آمَنُوا هُدًى وَشِفَاءٌ وَالَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ فِي آذَانِهِمْ وَقْرٌ وَهُوَ عَلَيْهِمْ عَمًى أُولَئِكَ يُنَادَوْنَ مِنْ مَكَانٍ بَعِيدٍ- ‘যদি আমরা আজমী (অনারব ভাষায়) কুরআন নাযিল করতাম, তাহলে ওরা বলতঃ যদি এই আয়াতগুলি (আমাদের ভাষায়) বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হত। কি আশ্চর্য! কুরআন হ’ল আজমী অথচ রাসূল হলেন আরবী!! তুমি বলে দাও যে, এটি বিশ্বাসীদের জন্য পথনির্দেশ ও ব্যাধির আরোগ্য। আর যারা অবিশ্বাসী, তাদের কর্ণে রয়েছে বধিরতা এবং কুরআন তাদের উপর অন্ধকার। ওদেরকে যেন বহু দূর থেকে আহবান করা হচ্ছে’ (হা-মীম সাজদাহ ৪১/৪৪)।
৫. ক্বিয়ামুল লাইল :
রাসূল
(ছাঃ) বলেছেন, عَلَيْكُمْ بِقِيَامِ اللَّيْلِ فَإِنَّهُ دَأَبُ
الصَّالِحِينَ قَبْلَكُمْ، وَإِنَّ قِيَامَ اللَّيْلِ قُرْبَةٌ إِلَى
اللهِ، وَمَنْهَاةٌ عَنِ الإِثْمِ، وَتَكْفِيرٌ لِلسَّيِّئَاتِ،
وَمَطْرَدَةٌ لِلدَّاءِ عَنِ الجَسَدِ. ‘তোমরা অবশ্যই রাতের ইবাদাত করবে।
কেননা তা তোমাদের পূর্ববর্তী সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের নিত্য আচরণ ও প্রথা।
রাতের ইবাদাত আল্লাহ তা'আলার সান্নিধ্য অর্জনের উপায়, পাপকর্মের
প্রতিবন্ধক, গুনাহসমূহের কাফফারা এবং দেহের রোগ দূরকারী’।[14]
৬. বাড়ীতে থেকে বের হওয়ার সময় দো‘আ :
বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় এ দো‘আটি পড়া, بِسْمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ। কেননা হাদীছে এসেছে, ‘যখন কেউ ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এ দো‘আ পড়ে, ‘আল্লাহর নামে শুরু করছি, ভরসা করছি আল্লাহর উপর, আল্লাহ ছাড়া আর কারো কোন ক্ষমতা নেই’। তখন ফেরেশতা তাকে বলে, তুমি হিদায়াত পেয়েছ, তোমাকে সব ধরনের বিপদাপদ থেকে রক্ষা করা হয়েছে এবং এ দো‘আ তোমার জন্য যথেষ্ট। তখন শয়তান তার থেকে আলাদা হয়ে যায়, আর অন্য শয়তান তাকে বলে, এখন তুমি তার কি ক্ষতি করতে পার? যে হিদায়াত পেয়েছে, এ দো‘আ তার জন্য যথেষ্ট হয়েছে এবং তাকে সমস্ত বালা-মসীবত থেকে রক্ষা করা হয়েছে’।[15]
৭. মধু ও কালোজিরা খাওয়া :
মধু হ’ল এক মহা প্রতিষেধক, যা যেকোন রোগের জন্য প্রতিকারক। মহান আল্লাহ মধুন গুণাগুণ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বলেন, ثُمَّ كُلِي مِنْ كُلِّ الثَّمَرَاتِ فَاسْلُكِي سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلًا يَخْرُجُ مِنْ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاءٌ لِلنَّاسِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَةً لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ ‘অতঃপর তুমি সর্বপ্রকার ফল-মূল হতে ভক্ষণ কর? অতঃপর তোমার প্রভুর পথ সমূহে (অর্থাৎ গাছে, পাহাড়ে প্রভৃতিতে) প্রবেশ কর বিনীতভাবে। তার পেট থেকে নির্গত হয় নানা রংয়ের পানীয়। যার মধ্যে মানুষের জন্য আরোগ্য নিহিত রয়েছে। নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য’ (নাহল ১৬/৬৯)।
আর কালোজিরা সম্পর্কে
রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِنَّ هَذِهِ الْحَبَّةَ السَّوْدَاءَ شِفَاءٌ مِنْ
كُلِّ دَاءٍ إِلاَّ مِنَ السَّامِ ‘কালোজিরা মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের ঔষধ’।[16]
৮. আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য দো‘আ :
এসময়
আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য বেশী বেশী দো‘আ করতে হবে। আর সেটি হ’ল- أَذْهِبِ
الْبَأْسَ رَبَّ النَّاسِ وَاشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ
شِفَاؤُكَ شِفَاءً لاَّ يُغَادِرُ سَقَمًا ‘আযহিবিল বা’স, রববান না-স!
ওয়াশ্ফি, আনতাশ শা-ফী, লা শিফা-আ ইল্লা শিফা-উকা, শিফা-আল লা ইউগা-দিরু
সাক্বামা’ (কষ্ট দূর কর হে মানুষের প্রতিপালক! আরোগ্য দান কর। তুমিই আরোগ্য
দানকারী। কোন আরোগ্য নেই তোমার দেওয়া আরোগ্য ব্যতীত; যা কোন রোগকে বাকী
রাখেনা’।[17]
৯. মহামারী এলাকায় না যাওয়া ও আক্রান্ত এলাকা থেকে বের না হওয়া :
রাসূল
(ছাঃ) বলেছেন, إِذَا سَمِعْتُمْ بِهِ بِأَرْضٍ فَلاَ تَقْدَمُوا عَلَيْهِ،
وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَأَنْتُمْ بِهَا فَلاَ تَخْرُجُوا فِرَارًا
مِنْهُ ‘তোমরা যখন কোন এলাকায় (মহামারীর) প্রাদুর্ভাবের কথা শোন, তখন
সেখানে প্রবেশ করো না। আর যদি কোন এলাকায় এর প্রাদুর্ভাব নেমে আসে, আর
তোমরার সেখানে থাক, তাহ’লে পলায়ন করে সেখান থেকে বেরিয়ে যেয়ো না’।[18] অপর এক হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, لاَ تُورِدُوا الْمُمْرِضَ عَلَى الْمُصِحِّ ‘রোগাক্রান্ত উট সুস্থ উটের মধ্যে মিশাবে না’।[19]
অপর হাদীছে এসেছে, عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهَا أَخْبَرَتْنَا أَنَّهَا سَأَلَتْ رَسُولَ
اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الطَّاعُونِ، فَأَخْبَرَهَا
نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ كَانَ عَذَابًا
يَبْعَثُهُ اللَّهُ عَلَى مَنْ يَشَاءُ، فَجَعَلَهُ اللَّهُ رَحْمَةً
لِلْمُؤْمِنِينَ، فَلَيْسَ مِنْ عَبْدٍ يَقَعُ الطَّاعُونُ، فَيَمْكُثُ فِي
بَلَدِهِ صَابِرًا، يَعْلَمُ أَنَّهُ لَنْ يُصِيبَهُ إِلَّا مَا كَتَبَ
اللَّهُ لَهُ، إِلَّا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ الشَّهِيدِ- নবী (ছাঃ)-এর
সহধর্মিণী আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে মহামারী
রোগের কথা জিজ্ঞাসা করেন। তখন আল্লাহর নবী রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে অবহিত
করেন যে, এটি হচ্ছে এক প্রকারের আযাব। আল্লাহ যার উপর তা পাঠাতে ইচ্ছা
করেন, পাঠান। কিন্তু আল্লাহ এটিকে মুমিনদের জন্য রহমতস্বরূপ বানিয়ে
দিয়েছেন। অতএব মহামারী রোগে কোন বান্দা যদি ধৈর্যধারণ করে, এই বিশ্বাস
নিয়ে আপন শহরে অবস্থান করতে থাকে যে, আল্লাহ তার জন্য যা নির্ধারণ করে
রেখেছেন তা ব্যতীত আর কোন বিপদ তার উপর আসবে না; তাহ’লে সেই বান্দার জন্য
থাকবে শহীদ ব্যক্তির ছওয়াবের সমান ছওয়াব’।[20]
উপসংহার : মহান আল্লাহ প্রতিটি অসুখের জন্য ঔষধের ব্যবস্থা করেছেন, তবে মৃত্যু ব্যতীত। চিকিৎসা করার পরেও যদি রোগব্যাধি ভাল না হয়, তাহলে মুমিন বান্দাকে সর্বদা এ বিশ্বাস রাখতে হবে যে, যা কিছু হচ্ছে, সবকিছু মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে হচ্ছে এবং এতেই ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ নিহিত রয়েছে। আল্লাহ আমাদের সকলকে যাবতীয় বালা-মুছীবত থেকে হেফাযত করুন। আমীন!
[ লেখক : মাস্টার্স, দাওয়া এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া]
[1]. বুখারী হা/৫৬৪১; মুসলিম হা/২৫৭২; মিশকাত হা/ ১৫৩৭।
[2]. তিরমিযী হা/২৫১৬; আহমাদ হা/২৮০৪; মিশকাত হা/৫৩০২।
[3]. মুসিলম হা/২৯৯৯; মিশকাত হা/৫২৯৭; ছহীহ ইবনু হিববান২৮৯৬।
[4]. বুখারী হা/৬৬১৬; ছহীহ ইবনু হিববান হা/১০১৬।
[5]. তিরমিযী হা/৩৫৪৮; হাকেম হা/১৮৩৩; মিশকাত হা/২২৩৯।
[6]. আবূদাঊদ হা/১৫৫৪; ছহীহ ইবনু হিববান হা/১০১৭, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/২৪৭০।
[7]. হাকেম হা/১৯৪৯।
[8]. মুসলিম হা/২৭০৮, মিশকাত হা/২৪২২।
[9]. মুসলিম হা/২০১৪; মিশকাত হা/৪২৯৮।
[10]. আবু দাঊদ হা/৫০৭৬; আহমাদ হা/৪৭৮৫; মিশকাত হা/২৩৯৭।
[11]. আবু দাঊদ হা/৫০৮৮; ইবনু মাজাহ হা/৩৮৬৯; মিশকাত হা/২৩৯১।
[12]. তিরমিযী হা/৩৫০৫; আহমাদ হা/১৪৬২; মিশকাত হা/২২৯২।
[13]. হাকেম হা/১৮৬৪; ছহীহাহ হা/১৭৪৪।
[14]. তিরমিযী হা/৩৫৪৯।
[15]. আবু দাঊদ হা/৫০৯৫; ইবনু মাজাহ হা/৩৮৮৬; মিশকাত হা/২৪৪৩।
[16]. বুখারী হা/৫৬৮৭; মুসিলম হা/২২১৫; মিশকাত হা/৪৫২০।
[17]. বুখারী হা/৫৭৫০; মুসলিম হা/; মিশকাত হা/১৫৩০।
[18]. বুখারী হা/৫৭২৯; মুসিলম হা/২২১৯; মিশকাত হা/১৫৪৮।
[19]. বুখারী হা/৫৭৭৪; মুসলিম হা/২২২১; আহমাদ হা/৯৬১০।
[20]. বুখারী হা/৫৭৩৪; আহমাদ হা/২৪৪০৩।