পারিবারিক বন্ধন (শেষ কিস্তি)
মুখতারুল ইসলাম
ভূমিকা : পবিত্র মাহে রামাযান সমাগত। মুমিন-মুসলমানের রামাযানের প্রতিটি ক্ষণ যেন ভরে উঠে রহমত, বরকত, মাগফিরাতের উষ্ণ আভায়। নিম্নে সফল রামাযান উদযাপনে রামাযানের আমলনামা পেশ করা হ’ল।
১. ছিয়াম : মহান
আল্লাহ বলেন, يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ
كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ-‘হে
বিশ্বাসীগণ! তোমাদের উপর ছিয়াম ফরয করা হ’ল, যেমন তা ফরয করা হয়েছিল
তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা আল্লাহভীরু হ’তে পার’ (বাক্বারাহ ২/১৮৩)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন,مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ
لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ‘যে ব্যক্তি ঈমান ছওয়াবের আশায় রামাযানের
ছিয়াম পালন করবে তার পূর্ববর্তী গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে’।[1]
২. একনিষ্ঠ নিয়ত : মহান
আল্লাহ বলেন,وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ
الدِّينَ حُنَفَاءَ وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ
وَذَلِكَ دِينُ الْقَيِّمَةِ ‘অথচ তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি যে,
তারা খালেছ অন্তরে একনিষ্ঠভাবে কেবলমাত্র আল্লাহর ইবাদত করবে এবং ছালাত
কায়েম করবে ও যাকাত আদায় করবে। আর এটাই হ’ল সরল দ্বীন’ (বাইয়েনাহ ৯৮/৫)।
ইবনুল মুবারক (রহঃ) বলেন,رُبَّ عَمَلٍ صَغِيْرٍ تُعَظِّمُهُ النِّيَّةُ
وَرُبَّ عَمَلٍ كَبِيْرٍ تُصَغِّرُهُ النِّيَّةُ ‘নিয়ত গুণে অনেক ছোট আমলও
বড় আমলে পরিণত হয়; আবার অনেক বড় আমলও ছোট আমলে পরিণত হয়’।[2]
৩. সাহারী গ্রহণ ও আলহামদুলিল্লাহ বলা : মহান আল্লাহ বলেন,وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ- ‘আর তোমরা খানাপিনা কর যতক্ষণ না রাতের কালো রেখা থেকে ফজরের শুভ্র রেখা তোমাদের নিকট স্পষ্ট হয়। অতঃপর ছিয়াম পূর্ণ কর রাত্রির আগমন পর্যন্ত’ (বাক্বারাহ ২/১৮৭)। রাসূল (ছাঃ) বলেন,تَسَحَّرُوا فَإِنَّ فِى السَّحُورِ بَرَكَةً ‘তোমরা সাহারী খাও, কেননা সাহারীতে বরকত রয়েছে’।[3] রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা সেই বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট, যে খাওয়ার পরে তার জন্য আলহামদুলিল্লাহ বলে এবং পানীয় পান করার পরে তার শুকরিয়া স্বরূপ আলহামদুলিল্লাহ বলে’।[4]
৪. মিসওয়াকসহ অযূ ও জান্নাত পাওয়ার পূর্ণ নিশ্চয়তা : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, আমার উম্মাতের জন্য (বা তিনি বলেন, লোকদের জন্য) যদি কঠিন মনে
না করতাম, তা হ’লে প্রত্যেক ছালাতের সাথে তাদের মিসওয়াক করার নির্দেশ
দিতাম’।[5] রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ওযু করে
এবং তা উত্তমরূপে করে, তার দেহ থেকে সমুদয় গুনাহ বের হয়ে যায়, এমন কি তার
নখের ভিতর থেকেও (গুনাহ) বের হয়ে যায়’।[6] রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওযু করার পর বলে, أَشْهَدُ أَنْ لاَ
إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ
مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِى مِنَ
التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِى مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ ‘তার জন্য জান্নাতের
আটটি দরজাই খুলে দেওয়া হবে। সে নিজ ইচ্ছামত যে কোন দরজা দিয়েই তাতে যেতে
পারবে’।[7]
৫. ওযুর পরে দু’রাক‘আত ছালাত : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ‘যে কোন মুসলমান উত্তমরূপে ওযু করে অন্তর ও স্বীয় মুখমন্ডলকে
সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করে তার জন্য
জান্নাত যরূরী হয়ে যায়’।[8]
৬. আযানের দো‘আ : জাবের
ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি
আযান শুনে আযানের দো‘আ পাঠ করবে ক্বিয়ামতের দিন সে আমার শাফা‘আত লাভের
অধিকারী হবে’।[9]
৭. আযান ও ইক্বামতের মাঝে দো‘আ : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, لاَ يُرَدُّ الدُّعَاءُ بَيْنَ الأَذَانِ وَالإِقَامَةِ
‘আযান ও ইক্বামতের মধ্যবর্তী সময়ে কৃত দো‘আ কখনই প্রত্যাখ্যাত হয়না’।[10]
৮. সকাল-বিকেল মসজিদে গমন : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, مَنْ غَدَا إِلَى الْمَسْجِدِ وَرَاحَ أَعَدَّ اللَّهُ لَهُ
نُزُلَهُ مِنَ الْجَنَّةِ كُلَّمَا غَدَا أَوْ رَاحَ ‘যে ব্যক্তি সকাল বা
বিকালে যতবার মসজিদে যায়, আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য ততবার মেহমানদারীর আয়োজন
করেন’।[11]
৯. পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, কোন মুসলিম ব্যক্তির যখন কোন ফরয ছালাতের সময় হয় আর সে
ছালাতের ওযূকে উত্তমরূপে আদায় করে, ছালাতের বিনয় ও রুকুকে উত্তমরূপে আদায়
করে তাহ’লে যতক্ষণ না সে কোন কবীরা গুনাহে লিপ্ত হবে, তার এই ছালাত তার
পূর্ববর্তী সকল গুনাহের জন্য কাফফারা হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আর এ অবস্থা
সর্বযুগেই বিদ্যমান’।[12]
১০. জামা‘আতে ছালাত আদায় : রাসূল (ছাঃ) বলেন, জামা‘আতে ছালাতের ফযীলত একাকী আদায়কৃত ছালাতের থেকে সাতাশ গুণ বেশী’।[13]
১১. আওয়াল ওয়াক্তে ছালাত আদায় করা : হাদীছে এসেছে, এক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, কোন আমলটি সবচাইতে উত্তম? তিনি বললেন, ছালাত সঠিক সময়ে আদায় করা’।[14]
১২. প্রথম কাতারে ছালাত : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ‘আযানে ও প্রথম কাতারে কী (ফযীলত) রয়েছে, তা যদি লোকেরা জানত,
লটারি মাধ্যমে নির্বাচন ব্যতীত এ সুযোগ লাভ করা যদি সম্ভব না হত, তাহ’লে
অবশ্যই তারা লটারির মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নিত’।[15]
১৩. ফজর ও আসর ছালাত : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, مَنْ صَلَّى الْبَرْدَيْنِ دَخَلَ الْجَنَّةَ ‘যে ব্যক্তি
শান্ত-স্নিগ্ধ দুই সময়ে ছালাত অর্থাৎ ফজর ও আসর আদায় করবে সে জান্নাতে
প্রবেশ করবে’।[16]
১৪. ফরয ছালাতান্তে যিকির সমূহ : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ছালাতের শেষে তেত্রিশবার ‘সুবহানাল্লাহ’
তেত্রিশবার ‘আলহামদুল্লিাহ’ এবং তেত্রিশবার ‘আল্লাহু আকবার’ বর্ণনা বলবে
আর এইভাবে নিরানববই বার হওয়ার পর শততম পূর্ণ করতে বলবে- লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহূ লা-শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া ‘আলা-কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। তার গোনাহসমূহ সমুদ্রের ফেনারাশির মত অসংখ্য হলেও মাফ করে দেয়া হয়’।[17] রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি দিনের মধ্যে একশ বার পড়বে লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহূ লা শারীকা লাহূ, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর।-সে
একশ’ গোলাম আযাদ করার ছওয়াব অর্জন করবে এবং তার জন্য একশ’টি নেকী লেখা
হবে, আর তার একশ’টি গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে। আর সে দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত এটা
তার জন্য রক্ষা কবচে পরিণত হবে এবং তার চাইতে বেশী ফযীলত ওয়ালা আমল আর
কারো হবে না। তবে যে ব্যক্তি এ আমল তার চাইতেও বেশী করবে’।[18]
রাসূল (ছাঃ) অন্যত্র বলেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের ছালাত জামা‘আতে আদায় করে, তারপর সূর্য উঠা পর্যন্ত বসে বসে আল্লাহ তা‘আলার যিকর করে, তারপর দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করে-তার জন্য একটি হজ্জ ও একটি ওমরার ছওয়াব রয়েছে। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেন, পূর্ণ, পূর্ণ, পূর্ণ (হজ্জ ও ওমরার ছওয়াব)।[19]
১৫. জুম‘আর দিনে বিশেষ আমল ও ছালাত : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, পাঁচ ছালাত এবং এক জুম‘আ থেকে আরেক জুম‘আ পর্যন্ত এসব তাদের
মধ্যবতী সময়ের জন্য কাফফারা হয়ে যায় যতক্ষণ পর্যন্ত কবীরা গুনাহে লিপ্ত না
হয়’।[20] রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, ‘জুম‘আর দিনে এমন
একটি মুহূর্ত আছে যদি সে মুহূর্তটিতে কোন মুসলমান দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় করে
আল্লাহর নিকট কোন কল্যাণের জন্য দো‘আ করে, তবে আল্লাহ তাকে দান করবেন’।[21] রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুম‘আর দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে তার জন্য দুই জুম‘আর মধ্যবর্তীকাল জ্যোতির্ময় হবে’।[22]
১৬. বাড়ীতে নফল ছালাত আদায় : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, اجْعَلُوا فِى بُيُوتِكُمْ مِنْ صَلاَتِكُمْ، وَلاَ
تَتَّخِذُوهَا قُبُورًا ‘তোমাদের ঘরেও কিছু ছালাত আদায় করো এবং ঘরকে তোমরা
কবরে পরিণত করো না’।[23]
১৭. ছালাতুয যুহা : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ যখন ভোরে উঠে, তখন তার প্রতিটি জোড়ার উপর একটি
ছাদাক্বাহ রয়েছে। প্রতি সুবহানাল্লাহ ছাদাক্বাহ, প্রতি আলহামদুলিল্লাহ
ছাদাক্বাহ, প্রতি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ ছাদাক্বাহ, প্রতি আল্লাহু আকবার
ছাদাক্বাহ, আমর বিল মারুফ (সৎকাজের আদেশ) ছাদাক্বাহ, নাহী আনিল মুনকার
(অসৎকাজের নিষেধ) ছাদাক্বাহ। অবশ্য চাশতের সময় দু’ রাক‘আত ছালাত আদায় করা এ
সবের পক্ষ থেকে যথেষ্ট’।[24]
১৮. দিনে ১২ রাক‘আত ছালাত আদায় : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, مَنْ صَلَّى اثْنَتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً فِى يَوْمٍ
وَلَيْلَةٍ بُنِىَ لَهُ بِهِنَّ بَيْتٌ فِى الْجَنَّةِ ‘যে ব্যক্তি
দিবা-রাত্রি বারো রাক‘আত (সুন্নাত) ছালাত আদায় করবে তার প্রতিদানে তার জন্য
জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করা হবে’।[25]
১৯. কুরআন পাঠ : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, اقْرَءُوا الْقُرْآنَ فَإِنَّهُ يَأْتِى يَوْمَ الْقِيَامَةِ
شَفِيعًا لأَصْحَابِهِ ‘তোমরা কুরআন তিলাওয়াত করবে। কেননা, ক্বিয়ামতের দিন
তা তিলাওয়াতকারীদের জন্য সুপারিশকারীরূপে উপস্থিত হবে’।[26]
২০. কুরআন শিক্ষা দেওয়া : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْآنَ وَعَلَّمَهُ ‘তোমাদের
মধ্যে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম যে কুরআন শিখে এবং অন্যকে শিখায়।[27]
২১. সন্তানদের ছালাতের নির্দেশনা : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, مُرُوا أَوْلاَدَكُمْ بِالصَّلاَةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ
سِنِينَ وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرِ سِنِينَ
وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِى الْمَضَاجِعِ ‘যখন তোমাদের সন্তানরা সাত বছরে
উপনীত হবে, তখন তাদেরকে ছালাত পড়ার নির্দেশ দেবে এবং তাদের বয়স যখন দশ বছর
হবে তখন ছালাত না পড়লে এজন্য তাদেরকে মারপিট কর এবং তাদের (ছেলে-মেয়েদের)
বিছানা পৃথক করে দিবে’।[28]
২২. সন্তাদের ছিয়ামের প্রতি নির্দেশনা : রুবায়্যি‘
বিনতে মু’আবিবয (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আশূরার সকালে নবী করীম
(ছাঃ) আনছারদের সকল পল্লীতে এ নির্দেশ দিলেন, যে ব্যক্তি ছিয়াম পালন করেনি
সে যেন দিনের বাকি অংশ না খেয়ে থাকে, আর যার ছিয়াম অবস্থায় সকাল হয়েছে, সে
যেন ছিয়াম পূর্ণ করে। তিনি (রুবায়্যি) (রাঃ) বলেন, পরবর্তীতে আমরা ঐ দিন
ছিয়াম রাখতাম এবং আমাদের শিশুদের ছিয়াম রাখাতাম। আমরা তাদের জন্য পশমের
খেলনা তৈরী করে দিতাম। তাদের কেউ খাবারের জন্য কাঁদলে তাকে ঐ খেলনা দিয়ে
ইফতার পর্যন্ত ভুলিয়ে রাখতাম’।[29]
২৩. পরিবার-পরিজনদের সুশিক্ষা দেওয়া : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ‘তিন ধরনের লোকের জন্য দু’টি ছওয়াব রয়েছেঃ (১) আহলে কিতাবের
যে ব্যক্তি তার নবীর ওপর ঈমান এনেছে এবং মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর
উপরও ঈমান এনেছে। (২) যে ক্রীতদাস আল্লাহর হক আদায় করে এবং তার মালিকের হকও
(আদায় করে)। (৩) যার একটি বাঁদী ছিল, যার সাথে সে মিলিত হত। তারপর তাকে সে
সুন্দরভাবে আদব-কায়দা শিক্ষা দিয়েছে এবং ভালভাবে দীনী ইলম শিক্ষা দিয়েছে,
এরপর তাকে আযাদ করে বিয়ে করেছে; তার জন্য দু’টি ছওয়াব রয়েছে’।[30]
২৪. মজলিস ভঙ্গের দো‘আ পাঠ করা : কেউ
যদি কোন মজলিসে বসে আর তাতে সে অধিক অনর্থক কথাবার্তা বলে ফেলে তবে
প্রস্থানের পূর্বে মজলিস ভঙ্গের দো‘আটি পড়লে সমস্ত ত্রুটি মাফ হয়ে যায়’।[31]
২৫. রাস্তা হতে কষ্টদায়ক বস্ত্ত সরানো : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, আমি জান্নাতে এক ব্যক্তিকে একটি বৃক্ষে আনন্দ উপভোগ করতে
দেখেছি। এই বৃক্ষটি সে রাস্তার উপর থেকে অপসারণ করেছিল যেটি লোকদের কষ্ট
দিত’।[32]
২৬. হাসিমুখে সাক্ষাৎ : রাসূল (ছাঃ) বলেন, কোন কিছু দান করাকে তুচ্ছজ্ঞান করো না, এমনকি তোমার ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করাকেও’।[33]
২৭. সালামের প্রচলন : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, হে লোকসকল! তোমরা পরস্পর সালাম বিনিময় করো, অভুক্তকে আহার দাও
এবং রাতের বেলা মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন ছালাত পড়ো। তাহ’লে তোমরা
নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে’।[34]
২৮. মুছাফাহা করা : রাসূল (ছাঃ) বলেন, দু’জন মুসলমান পারস্পরিক সাক্ষাতে মুছাফাহা করলে তারা বিচ্ছিন্ন হওয়ার পূর্বেই তাদের ক্ষমা করা হয়’।[35]
২৯. মানুষের নিকট না চাওয়া : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমাকে নিশ্চয়তা দিবে যে, সে অন্যের কাছে কিছু চাইবে না, তাহ’লে আমি তার জান্নাতের যিম্মাদার হবো’।[36]
৩০. নিচের হাত থেকে উপরের হাত উত্তম : রাসূল (ছাঃ) বলেন, উপরের হাত নীচের হাত অপেক্ষা উত্তম। উপরের হাত দাতার, আর নীচের হাত ভিক্ষুকের’।[37]
৩১. নিজ হাতে উপার্জন : হাদীছে এসেছে, রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কোন প্রকার জীবিকা উত্তম? উত্তরে তিনি বললেন, নিজ হাতের কামাই এবং সৎ ব্যবসা’।[38]
৩২. ক্রয়-বিক্রয়ে সততা ও উদারতা অবলম্বন করা : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ‘ক্রেতা-বিক্রেতা যতক্ষণ পরস্পর বিচ্ছিন্ন না হয়, ততক্ষণ
তাদের ইখতিয়ার থাকবে। যদি তারা সত্য বলে এবং অবস্থা ব্যক্ত করে তবে তাদের
ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে আর যদি মিথ্যা বলে এবং দোষ গোপন করে তবে তাদের
ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত চলে যাবে’।[39] রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি ক্রয়-বিক্রয় এবং পাওনা তাগাদায় নম্র ব্যবহার করে, মহান আল্লাহ তা‘আলা তার উপর রহম করেন’।[40]
৩৩. স্ত্রী-পরিবারের জন্য খরচ : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, إِذَا أَنْفَقَ الْمُسْلِمُ نَفَقَةً عَلَى أَهْلِهِ وَهْوَ
يَحْتَسِبُهَا، كَانَتْ لَهُ صَدَقَةً ‘ছওয়াবের আশায় কোন মুসলমান যখন তার
পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করে, তা তার ছাদাক্বাহ হিসাবে পরিগণিত হয়’।[41]
৩৪. বিধবা, মিসকিন ও ইয়াতীম প্রতিপালন : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ‘বিধবা ও মিসকীন-এর জন্য (খাদ্য যোগাতে) সচেষ্ট ব্যক্তি
আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের ন্যায় অথবা রাত জেগে ইবাদতকারী ও দিনভর ছিয়াম
পালনকারীর মত’।[42] রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘আমি ও
ইয়াতীমের তত্ত্বাবধানকারী জান্নাতে এভাবে (পাশাপাশি) থাকবে। এ কথা বলার সময়
তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল মিলিয়ে ইশারা করে দেখান’।[43]
হাদীছে এসেছে, জনৈক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে নিজের কঠিন হৃদয় সম্পর্কে
অভিযোগ করল। তিনি (ছাঃ) তাকে প্রতিকার হিসাবে বললেন যে, ইয়াতীমের মাথায়
হাত বুলাও এবং নিঃস্বদেরকে খাদ্য খাওয়াও’।[44]
৩৫. অসহায়কে সাহায্য করা : রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি কোন অভাবগ্রস্ত লোকের দুর্দশা লাঘব করবে, আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দুর্দশা মোচন করবেন’।[45]
রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, শরীরের প্রতিটি জোড়ার উপর প্রতিদিন একটি করে
ছাদাক্বাহ রয়েছে। কোন লোককে তার সাওয়ারীর উপর উঠার ব্যাপারে সাহায্য করা,
অথবা তার মাল-সরঞ্জাম তুলে দেওয়া ছাদাক্বাহ। উত্ত কথা বলা ও ছালাতের
উদ্দেশ্যে গমনের প্রতিটি পদক্ষেপ ছাদাক্বাহ এবং (পথিককে) রাস্তা বাতলিয়ে
দেওয়া ছাদাক্বাহ।[46] রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, যে
ব্যক্তি আল্লাহর নামে নিরাপত্তা চায়, তাকে নিরাপত্তা দাও। যে ব্যক্তি
আল্লাহর নামে ভিক্ষা চায়, তাকে দাও। যে ব্যক্তি তোমাদেরকে দাওয়াত করে তার
ডাকে সাড়া দাও। যে ব্যক্তি তোমাদের সাথে সদ্ব্যবহার করে তোমরা তার উত্তম
প্রতিদান দাও। প্রতিদান দেয়ার মতো কিছু না পেলে তার জন্য দো‘আ করতে থাকো,
যতক্ষণ না তোমরা অনুধাবন করতে পারো যে, তোমরা তার প্রতিদান দিতে পেরেছো’।[47]
৩৬. আল্লাহর রাস্তায় দান : মহান আল্লাহ বলেন, وَمَا تُقَدِّمُوا لِأَنْفُسِكُمْ مِنْ خَيْرٍ تَجِدُوهُ عِنْدَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ ‘আর তোমরা নিজেদের জন্য যে সকল সৎকর্ম অগ্রিম প্রেরণ করবে, তা তোমরা আল্লাহর নিকটে প্রাপ্ত হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমরা যা কর তা প্রত্যক্ষ করেন’ (বাক্বারাহ ২/১১০)।
৩৭. ছাদাক্বাহ ও যাকাত প্রদান : রাসূল (ছাঃ) বলেন, وَالصَّدَقَةُ تُطْفِئُ الْخَطِيئَةَ كَمَا يُطْفِئُ الْمَاءُ النَّارَ. ‘পানি যেমন আগুন নিভিয়ে দেয় তেমনি ছাদাক্বাহও গুনাহসমূহকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়’।[48] হাদীছে এসেছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! কোন ধরনের দান অতি উত্তম? তিনি বললেন, সামান্য সম্পদের মালিক নিজ সামর্থ্যানুযায়ী যা দান করো এবং নিজের পোষ্যদের থেকেই দান করা আরম্ভ করো’।[49] রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘গোপনে দান আল্লাহর ক্রোধকে দমন করে’।[50] রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যখন মানুষ মৃত্যুবরণ করে, তখন তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়। কেবল তিনটি আমল ব্যতীত। (১) ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ (২) এমন ইলম, যার দ্বারা জনগণের কল্যাণ সাধিত হয় এবং (৩) সুসন্তান, যে তার জন্য দো‘আ করে’।[51] রাসূল (ছাঃ) বলেন, تَصَدَّقْنَ يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ وَلَوْ مِنْ حُلِيِّكُنَّ ‘হে নারী সমাজ! তোমাদের অলংকার দিয়ে হলেও তোমরা ছাদাক্বাহ কর’।[52] রাসূল (ছাঃ) বলেন, স্ত্রী যদি তার ঘর থেকে বিপর্যয় সৃষ্টির উদ্দেশ্য ব্যতিরেকে খাদ্যদ্রব্য ছাদাক্বাহ করে তবে এ জন্যে সে ছওয়াব পাবে। আর উপার্জন করার কারণে স্বামীও ছওয়াব পাবে এবং খাজাঞ্চীও অনুরূপ ছওয়াব পাবে। তাদের একজনের কারণে অন্যজনের ছওয়াবের কোন কম হবেনা’।[53] মহান আল্লাহ বলেন,وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ وَذَلِكَ دِينُ الْقَيِّمَةِ ‘ছালাত কায়েম করবে ও যাকাত আদায় করবে। আর এটাই হ’ল সরল দ্বীন (বাইয়েনাহ ৯৮/৫)।
৩৮. ওমরাহ পালন : রাসূল
(ছাঃ) বলেন,فَإِنَّ عُمْرَةً فِى رَمَضَانَ تَقْضِى حَجَّةً مَعِى ‘অতঃপর
নিশ্চয় রামাযান মাসে একটি ওমরাহ আদায় করা আমার সাথে একটি হজ্জ আদায় করার
সমান’।[54]
৩৯. মসজিদ নির্মাণ : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, مَنْ بَنَى لِلَّهِ مَسْجِدًا، بَنَى اللَّهُ لَهُ بَيْتًا
فِي الْجَنَّةِ. ‘যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি মসজিদ নির্মাণ
করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন’।[55]
৪০. সদাচরণ : হাদীছে
এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কোন আমল দ্বারা মানুষ
বেশী জান্নাতে প্রবেশ করবে? তিনি বললেন, আল্লাহভীতি ও সদাচরণের কারণে।[56]
৪১. পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণ ও আনুগত্য : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, তার নাক ধূলিমলিন হোক, আবার তার নাক ধূলিমলিন হোক, আবার তার
নাক ধূলিমলিন হোক। জিজ্ঞাসা করা হ’ল, কার হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)? তিনি
বললেন, যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতার উভয়কে অথবা তাদের একজনকে বৃদ্ধাবস্থায়
পেল, এর পরও সে জান্নাতে প্রবেশ করল না’।[57]
৪২. ছোটদের স্নেহ ও বড়দের সম্মান করা : রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ছোটদের স্নেহ করে না এবং বড়দের মর্যাদা বুঝে না, সে আমাদের দলভুক্ত নয়’।[58]
৪৩. স্বামীর আনুগত্য : রাসূল
(ছাঃ) বলেন,الْمَرْأَةُ إِذَا صَلَّتْ خَمْسَهَا وَصَامَتْ شَهْرَهَا
وَأَحْصَنَتْ فَرْجَهَا وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا فَلْتَدْخُلْ مِنْ أَيِّ
أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ- ‘কোন মহিলা যদি পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করে,
রামাযান মাসের ছিয়াম পালন, লজ্জাস্থানের হেফাযত করে, স্বামীর একান্ত অনুগত
হয়। তার জন্য জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশের সুযোগ থাকবে’।[59]
৪৪. পিতা-মাতার বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে সদ্ব্যবহার করা : রাসূল (ছাঃ) বলেন, কোন ব্যক্তির সর্বোত্তম নেকীর কাজ হচ্ছে তার পিতার বন্ধুর সংগে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা’।[60]
৪৫. আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, রেহম আল্লাহর আরশের সাথে ঝুলন্ত রয়েছে। সে বলে, যে ব্যক্তি
আমার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক রাখবেন। আর যে আমার
সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে আল্লাহ তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন’।[61]
৪৬. স্ত্রীর প্রতি সদয় হওয়া : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম যে নিজের পরিবারের কাছে
উত্তম। আর আমি তোমাদের চেয়ে আমার পরিবারের কাছে অধিক উত্তম’।[62]
৪৭. প্রতিবেশীর সাথে উত্তম আচরণ করা : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের উপর বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে সম্মান করে’।[63]
৪৮. মেহমানকে সম্মান প্রদর্শন করা : রাসূল (ছাঃ) বলেন, আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের উপর বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে।[64]
৪৯. লজ্জাশীলতা গ্রহণ :
রাসূল
(ছাঃ) বলেন, লজ্জা ঈমানের অঙ্গ; ঈমানের স্থান হ’ল জান্নাতে। অশ্লীলতা হ’ল
অবাধ্যতা ও অন্যায়াচারের অঙ্গ ; অন্যায় আচরণের স্থান হ’ল জাহান্নামে’।[65]
৫০. সত্যবাদী হওয়া : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ‘সত্যবাদিতা নেকীর দিকে পথ প্রদর্শন করে আর নেকী জান্নাতের
পথের নির্দেশ দেয়। কোন মানুষ সত্য কথা রপ্ত করতে থাকলে অবশেষে আল্লাহর কাছে
(সত্যবাদী)... হিসেবে (তার নাম)... লিপিবদ্ধ হয়’।[66]
৫১. আমানত ও ওয়াদা পূর্ণ করা : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যার আমানতদারী নেই তার ঈমানও নেই এবং যার ওয়াদা-অঙ্গীকারের মূল্য নেই তার দ্বীনও নেই’।[67]
৫২. ক্ষমা প্রদর্শন করা ও রাগ নিয়ন্ত্রণ করা : মহান আল্লাহ বলেন, وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ ‘যারা ক্রোধ দমন করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। বস্ত্ততঃ আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন (আলে ইমরান ৩/১৩৪)।
৫৩. ধৈর্যধারণ করা : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, মুসলিম ব্যক্তির উপর যে সকল যাতনা, রোগ-ব্যাধি,
উদ্বেগ-উৎকন্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানী আপতিত হয়, এমনকি যে কাঁটা তার
দেহে বিদ্ধ হয়, এ সবের দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন’।[68]
রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِنَّ فِيكَ خَصْلَتَيْنِ يُحِبُّهُمَا اللَّهُ
الْحِلْمُ وَالأَنَاةُ ‘তোমার মধ্যে দু’টি বিশেষ গুণ রয়েছে যা আল্লাহ পসন্দ
করেন ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা’।[69]
৫৪. জিহবা ও লজ্জাস্থানের হেফাযত করা : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার (সন্তুষ্টির) জন্য তার দু’চোয়ালের মধ্যবর্তী
বস্তু (জিহবা) এবং দু’রানের মাঝখানের বস্তু (লজ্জাস্থান)-এর হেফাযত করবে
আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব গ্রহণ করব’।[70]
৫৫. দুর্বলদের প্রতি দয়া : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, রহমকারীদের উপর রহমান অর্থাৎ আল্লাহ রহম করেন। তোমরা
যমীনবাসীদের উপর রহম কর, তাহ’লে আসমানের অধিপতি আল্লাহ তোমাদের উপর রহম
করবেন’।[71]
৫৬. অধীনস্ত কর্মচারীদের প্রতি সদয় হওয়া : রাসূল
(ছাঃ) দো‘আ করেছিলেন যে, ‘হে আল্লাহ! যে ব্যক্তি আমার উম্মতের কোন কাজের
দায়িত্বশীল হয় এবং সে তাদের সাথে কঠোরতা করে তুমিও তার প্রতি নির্দয় ও কঠোর
হও। আর যে ব্যক্তি আমার উম্মাতের শাসক হয় এবং তাদের সাথে সদয় ব্যবহার করে,
তুমিও তার সাথে সদয় ব্যবহার কর’।[72]
৫৭. জীব-জন্তুর প্রতি দয়া করা : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, (পূর্ব যুগে) এক ব্যক্তি একটি কুকুরকে পিপাসার তাড়নায় ভিজা
মাটি চাটতে দেখতে পেল। তখন সে ব্যক্তি তাঁর মোজা নিল এবং কুকুরটির জন্য
কুয়া থেকে পানি এনে দিতে লাগল। এভাবে সে ওর তৃষ্ণা মিটাল। আল্লাহ এর বিনিময়
দিলেন এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালেন’।[73]
৫৮. ভাল কথা বলা : রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে থাক এক টুকরা খেজুর দিয়ে হলেও। যদি তা না পাও, তাহ’লে মধুর ভাষার বিনিময়ে’।[74]
৫৯. ভাল কথা বলা নয়তো চুপ থাকা : রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে নয়তো চুপ থাকে।[75]
৬০. মন্দ কাজের পর ভাল কাজ করা : আবু
যার (রাঃ)-কে লক্ষ করে রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যেখানেই থাকবে আল্লাহকে ভয়
করবে; মন্দ কাজের অনুবর্তীতে কোন নেককাজ করে ফেলবে তাতে মন্দ অপসৃত হয়ে
যাবে; আর মানুষের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করবে’।[76]
৬১. পাপ হয়ে গেলে দু‘রাক‘আত ছালাত পড়া : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, যখন কোনো বান্দা কোনরূপ গুনাহ করার পর উত্তমরূপে ওযূ করে
দাঁড়িয়ে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করে এবং আল্লাহর নিকট গুনাহের জন্য ক্ষমা
প্রার্থনা করে, নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন’।[77]
৬২. কম আমল হলেও সৎকাজ নিয়মিত করা : হাদীছে
এসেছে, নবী (ছাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হ’ল যে, আল্লাহ তা‘আলার কাছে সবচাইতে
প্রিয় আমল কি? তিনি বললেন, যে আমল নিয়মিত করা হয়, যদিও তা অল্প হোক’।[78]
৬৩. সৎ লোকদের সাথে উঠা-বসা করা : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, কোন সম্প্রদায় আল্লাহর যিকর করতে বসলে একদল ফিরিশতা তাদের
পরিবেষ্টন করে নেন এবং রহমত তাদের উপর আচ্ছাদন হয়ে যায়। আর তাদের প্রতি
প্রশান্তি অবতীর্ণ হয় এবং আল্লাহ তা‘আলা তার কাছের ফিরিশতাগণের মাঝে তাদের
স্বরণ করেন’।[79]
৬৪. ভাল কাজের শুকরিয়া আদায় করা ও প্রতিদান দেওয়া : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, যার সাথে ভাল ব্যবহার করা হয় সে যেন তাকে তার অনুরূপ বিনিময়
দান করে। যদি বিনিময় দান করার সামর্থ্য না থাকে তাহ’লে সে যেন তার প্রশংসা
করবে। কেননা সে যখন তার প্রশংসা করলো তখন সে যেন তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
করলো। যে ব্যক্তি তা (ভাল ব্যবহার) গোপন রাখলে সে যেন তার প্রতি অকৃজ্ঞতা
প্রকাশ করলো’।[80]
৬৫. আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেওয়া : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কাউকে সৎ পথের দিকে আহবান করে, তার জন্য সেই
পরিমাণ ছওয়াব রয়েছে, যা তার অনুসারীদের জন্য রয়েছে। অথচ এতে তাদের নিজস্ব
ছওয়াবে কোনরূপ কমতি হবে না’।[81]
৬৬. ভালো কাজ করা ও ভালোর পথ দেখিয়ে দেওয়া : রাসূল (ছাঃ) বলেন, كُلُّ مَعْرُوفٍ صَدَقَةٌ ‘প্রত্যেক ভাল কাজ হ’ল ছাদাক্বাহ’।[82]
অপর হাদীছে এসেছে, مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مِثْلُ أَجْرِ
فَاعِلِهِ ‘যে ব্যক্তি কোন সৎ কাজের পথ প্রদর্শন করে তার জন্য উক্ত কাজ
সম্পাদনকারীর সমপরিমাণ নেকী রয়েছে’।[83]
৬৭. সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ যদি অন্যায় কাজ দেখে, তাহ’লে সে যেন হাত দ্বারা
এর সংশোধন করে দেয়। যদি এর ক্ষমতা না থাকে, তাহ’লে মুখের দ্বারা, যদি তাও
সম্ভব না হয়, তাহ’লে অন্তর দ্বারা (উক্ত কাজ ঘৃণা করবে), আর এটাই ঈমানের
নিম্নতম স্তর’।[84]
৬৮. আল্লাহর জন্য অপর ভাইকে দেখতে যাওয়া : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, নবীগণ জান্নাতী, ছিদ্দীকগণ জান্নাতী, গর্ভের মৃত শিশু
জান্নাতী, আর ঐ ব্যক্তি যে শহরের একপ্রান্তে অবস্থিত তার ভাইয়ের নিকট
আল্লাহর জন্যই যিয়ারত করে সেও জান্নাতী’।[85]
৬৯. অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি কোন রোগীর সেবা করে, সে জান্নাতের ফলমূলের মাঝে
অবস্থান করতে থাকে। জিজ্ঞাসা করা হ’ল, হে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)! (জান্নাতের
ফলমূলে অবস্থান করা) কী? তিনি বললেন, এর ফলমূল সংগ্রহ করা’।[86]
৭০. মুসলমানদের প্রতি দয়া ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করা এবং তাদের কাজের গুরুত্ব দেওয়া : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, তুমি মু‘মিনদের পারস্পারিক দয়া, ভালবাসা ও সহানুভূতি
প্রদর্শনে একটি দেহের ন্যায় দেখতে পাবে। যখন দেহের একটি অঙ্গ রোগে আক্রান্ত
হয়, তখন শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রতঙ্গ রাত জাগে এবং জ্বরে অংশ গ্রহণ করে’।[87]
৭১. মুসলমানের ইযযত রক্ষা করা : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, যে লোক তার কোন ভাইয়ের মান-সম্মানের উপর আঘাত প্রতিরোধ করে,
ক্বিয়ামত দিবসে আল্লাহ তার মুখমন্ডল হ’তে জাহান্নামের আগুন প্রতিরোধ
করবেন’।[88]
৭২. যুলুম ছেড়ে হক্বদারের হক্ব দেওয়া : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার ভাই এর ওপর যুলুম করেছে সে যেন তা থেকে মাফ
নিয়ে নেয়, তার ভাই-এর জন্য তার কাছ থেকে নেকী কেটে নেওয়ার পূর্বে। কেননা
সেখানে (হাশরের ময়দানে) কোন দীনার বা দিরহাম পাওয়া যাবে না। তার কাছে যদি
নেকী না থাকে তবে তার (মযলুম) ভাই-এর গুনাহ এনে তার উপর ছুঁড়ে মারা হবে’।[89]
৭৩. মুসলমানদের কষ্ট না দেওয়া : হাদীছে
এসেছে, ‘এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করল, সর্বোত্তম মুসলিম
কে? তিনি বললেন, সেই ব্যক্তি যার মুখ ও হাত থেকে সকল মুসলিম নিরাপদ থাকে’।[90]
৭৪. মুসলমানদের মাঝে পারস্পরিক সহযোগিতা করা : মহান
আল্লাহ বলেন, وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلَا
تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ‘তোমরা সৎকর্ম ও আল্লাহভীতির
কাজে পরস্পরকে সাহায্য কর এবং পাপ ও সীমা লংঘনের কাজে একে অপরকে সাহায্য
করো না (মায়েদাহ ৪/২)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন মুমিনের
দুনিয়ার কষ্টসমূহ হ’তে কোন একটি কষ্টও দূর করে দিবে, আল্লাহ তা‘আলা তার
ক্বিয়ামতের দিনের কষ্টসমূহের মধ্য হ’তে একটি কষ্ট দূর করে দিবেন’।[91]
অপর হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বলেন, মুমিন মুমিনের জন্য ইমারতের ন্যায়, যার এক
অংশ আরেক অংশকে মজবুত করে রাখে। এরপর তিনি (হাতের) আঙ্গুলগুলো (আরেক হাতের)
আঙ্গুল (এর ফাঁকে) ঢুকালেন’।[92]
৭৫. মুসলমানদের প্রয়োজন পূরণে সুফারিশ করা : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা সুফারিশ কর ছওয়াব পাবে, আল্লাহ যেন তাঁর ইচ্ছা তাঁর রাসূলের মুখে চূড়ান্ত করেন’।[93]
৭৬. মানুষের গোপনীয়তা রক্ষা করা : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘আল্লাহ দুনিয়াতে যে বান্দার দোষ-ক্রটি গোপন রেখেছেন, ক্বিয়ামত দিবসেও তার দোষ-ক্রটি গোপন রাখবেন’।[94]
৭৭. বাদী-বিবাদীর মাঝে সমাধান করে দেওয়া : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, আমি কি তোমাদের ছালাত, ছিয়াম এবং যাকাত হ’তে উত্তম আমল
সম্পর্কে অবহিত করবো না? ছাহাবীগণ বলেন, হ্যাঁ; তিনি বললেন, তা হ’ল
পরস্পরের মাঝে আপোষ-মীমাংসা করে দেয়া। কেননা পরস্পরের মধ্যেকার ঝগড়া-বিবাদ
লোকদের ধ্বংস করে দেয়’।[95]
৭৮. অন্তরের প্রশান্তি রাখা ও শত্রুতা ছেড়ে দেওয়া : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করা
হয়। এরপর এমন সব বান্দাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়, যারা আল্লাহর সঙ্গে শরীক
স্থাপন করে না। তবে সে ব্যক্তিকে নয়, যার ভাই ও তার মধ্যে শক্রতা বিদ্যমান।
এরপর বলা হবে, এই দু’জনকে আপোষ মিমাংসা করার জন্য অবকাশ দাও, এই দু’জনকে
আপোষ মিমাংসা করার জন্য অবকাশ দাও, এই দু’জনকে আপোষ মিমাংসা করার জন্য
অবকাশ দাও’।[96]
৭৯. ছিয়াম অবস্থায় দো‘আ : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তিন শ্রেণীর ব্যক্তির দো‘আ আল্লাহ ফেরত দেননা। (১) ছায়েমের দো‘আ ইফতারের সময়ের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত। (২) ন্যায়পরায়ণ শাসকের দো‘আ ও (৩) মযলুমের দো‘আ’।[97]
৮০. দ্রুত ইফতার করা : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, لاَ يَزَالُ النَّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الْفِطْرَ
‘লোকেরা যতদিন যাবৎ সময় হওয়ামাত্র ইফতার করবে, ততদিন তারা কল্যাণের উপর
থাকবে’।[98]
৮১. খেজুর দিয়ে ইফতার : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ ছিয়াম রাখে, তখন সে যেন খেজুর দ্বারা ইফতার
করে। আর সে যদি খেজুর না পায়, তবে সে যেন পানি দ্বারা ইফতার করে, কেননা
পানি পবিত্র’।[99]
৮২. ইফতার করানো :
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا كَانَ لَهُ مِثْلُ
أَجْرِهِمْ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا ‘কেউ যদি
কোন ছায়েমকে ইফতার করায় তবে তার জন্যও অনুরূপ (ছিয়ামের) ছওয়াব হবে। কিন্তু
এতে ছিয়াম পালনকারীর ছওয়াবে কোন ঘাটতি হবে না’।[100]
৮৩. ইফতারের দো‘আ : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوقُ وَثَبَتَ الأَجْرُ
إِنْ شَاءَ اللَّهُ ‘তৃষ্ণা নিবারিত হয়েছে, শিরা-উপশিরা পরিতৃপ্ত হয়েছে এবং
আল্লাহ চাহে তো বিনিময় নির্ধারিত হয়েছে’।[101]
৮৪. ক্বিয়ামুল লাইল : রাসূল (ছাঃ) বলেন,أَفْضَلُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ صَلاَةُ اللَّيْلِ ‘ফরয ছালাতের পর সর্বোত্তম ছালাত হচ্ছে রাতের ছালাত’।[102]
অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا
غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ যে ব্যক্তি রামাযানের রাতে ঈমানের
সাথে ও ছওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদত করে, তার পূর্বের গুনাহ্ মাফ করে
দেওয়া হয়’।[103] রাসূল (ছাঃ) বলেন, أَقْرَبُ مَا
يَكُونُ الْعَبْدُ مِنْ رَبِّهِ وَهُوَ سَاجِدٌ فَأَكْثِرُوا الدُّعَاءَ
‘বান্দার সিজদারত অবস্থাই তার প্রতিপালকের অনুগ্রহ লাভের সর্বোত্তম অবস্থা
(বা মুহূর্ত)। অতএব তোমরা অধিক পরিমাণ দো‘আ পড়।[104]
৮৫. আল্লাহর স্মরণ : রাসূল
(ছাঃ) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের সর্বোত্তম আমল সম্পর্কে তোমাদের অবহিত করব?
যে আমল হবে তোমাদের মালিকের নিকট সবচেয়ে পরিশুদ্ধ তোমাদের মর্যাদা
সমুচ্চকারী, সোনা ও রূপা আল্লাহর পথে ব্যয় করার চেয়েও তোমাদের জন্য
কল্যাণকর, আর এর চেয়েও মঙ্গলকর হবে যে তোমরা শত্রুর সম্মুখীন হয়ে তাদের
গর্দানে আঘাত করবে আর তারা তোমাদের গর্দানে আঘাত করবে। ছাহাবীরা বললেনঃ
হ্যাঁ বলুন। তিনি বললেন, এ হ’ল আল্লাহর যিকর’।[105]
৮৬. রাসূল (ছাঃ)-এর উপর দরূদ পাঠ করা : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করে, আল্লাহ তার বিনিময়ে তার ওপর দশবার রহমত নাযিল করেন’।[106]
৮৭. নিভৃতে দো‘আ : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, আমার বান্দার ধারণানুরূপ আমি আছি। আর আমি তার সঙ্গে থাকি যখন সে আমাকে ডাকে’।[107]
৮৮. পিতা-মাতার জন্য দো‘আ করা : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে তাঁর কোন নেক বান্দার মর্যাদা বাড়িয়ে
দিবেন। এ অবস্থা দেখে সে (নেক বান্দা) বলবে, হে আমার রব! আমার এ মর্যাদা
কিভাবে বৃদ্ধি হ’ল? তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তোমার সন্তান-সন্তুতি তোমার
জন্য মাগফিরাত কামনা করার কারণে’।[108]
৮৯. অনুপস্থিত ভাইয়ের জন্য দো‘আ করা : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, কোন মুসলমান বান্দা তার ভাই এর অনুপস্থিতিতে তার জন্য দো’আ
করলে একজন ফিরিশতা তার জবাবে বলে আর তোমার জন্যও অনুরূপ’।[109]
৯০. সমস্ত মুসলমানদের জন্য দো‘আ ও ইস্তিগফার করা : মহান আল্লাহ বলেন, (আর এই সম্পদ তাদের জন্য) যারা তাদের পরে এসেছে। যারা বলে হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের এবং আমাদের ভাইদের ক্ষমা কর, যারা আমাদের পূর্বে ঈমান এনেছে। আর ঈমানদারগণের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোন বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয়ই তুমি স্নেহশীল, পরম দয়ালু (হাশর ৫৯/১০)।
৯১. ইতিক্বাফ : আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘রামাযানের শেষ দশকে নবী করীম (ছাঃ) ইতিকাফ করতেন’।[110]
৯২. কদর রাত্রি জাগরণ : রাসূল
(ছাঃ) বলেন, مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا
غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ছওয়াবের
আশায় লায়লাতুল কদর-এ ইবাদতে রাত্রি জাগরণ করবে, তার অতীতের গুনাহ মাফ করে
দেওয়া হবে’।[111]
৯৩. শেষ দশক জাগরণ : আয়েশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, إِذَا دَخَلَ الْعَشْرُ أَحْيَا اللَّيْلَ
وَأَيْقَظَ أَهْلَهُ وَجَدَّ وَشَدَّ الْمِئْزَرَ ‘রামাযানের শেষ দশ দিন
শুরু হওয়ার সাথে সাথে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সারা রাত জেগে থাকতেন ও নিজ
পরিবারের সদস্যদের ঘুম থেকে জাগাতেন এবং তিনি নিজেও ইবাদতের জন্য জোর
প্রস্তুতি নিতেন’।[112]
৯৪. যাকাতুল ফিতর আদায় : হাদীছে
এসেছে, রাসূল (ছাঃ) ছাদাক্বাতুল ফিতর ফরয করেছেন- অশ্লীল কথা ও বেহুদা কাজ
হতে (রামাযানের) ছিয়ামকে পবিত্র করতে এবং মিসকীনদের খাদ্যের ব্যবস্থার
জন্য। যে ব্যক্তি (ঈদের) ছালাতের পূর্বে তা আদায় করে সেটা কবুল ছাদাক্বাহ
হিসাবে গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি ছালাতের পরে আদায় করে, তা সাধারণ দান
হিসেবে গৃহীত হবে’।[113]
৯৫. তওবাহ : হাদীছে
এসেছে, قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ تَابَ قَبْلَ أَنْ
تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِ ‘রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হওয়ার পূর্বে তাওবাহ
করবে আল্লাহ তার তাওবাহ কবুল করবেন’।[114]
[লেখক : মাস্টার্স, দাওয়া এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া ও সভাপতি, বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ, ইবি, কুষ্টিয়া ]
[1]. বুখারী হা/৩৮, ২০১৪; মুসলিম হা/৭৬০; মিশকাত হা/১৯৫৮।
[2]. জামেউল উলূম ওয়াল হিকাম ১/১৩।
[3]. বুখারী হা/১৯২৩; মুসলিম হা/১০৯৫; মিশকাত হা/১৯৮২।
[4]. মুসলিম হা/২৭৩৪; তিরমিযী হা/১৮১৬; মিশকাত হা/৪২০০।
[5]. বুখারী হা/৮৮৭; আবু দাঊদ হা/৪৭; মিশকাত হা/৩৭৬।
[6]. মুসলিম হা/২৪৫; মিশকাত হা/২৮৪।
[7]. তিরমিযী হা/৫৫; মিশকাত হা/২৮৯।
[8]. (মুসলিম হা/৩৩৪; আবু দাঊদ হা/৯০৬; মিশকাত হা/২৮৮।
[9]. বুখারী হা/৬১৪; আবু দাঊদ হা/৫২৯; মিশকাত হা/৬৫৯।
[10]. আবু দাঊদ হা/৫২১; তিরমিযী হা/২১২; মিশকাত হা/৬৭১।
[11]. বুখারী হা/৬৬২; মুসলিম হা/৬৬৯; মিশকাত হ/৬৯৮;।
[12]. মুসিলম হা/২২৮; ইবনু হিববান হা/১০৪৪; মিশকা হা/২৮৬।
[13]. বুখারী হা/৬৪৫; মুসিলম হা/৬৫০; মিশকাত হা/১০৫২।
[14]. বুখারী হা/৭৫৩৪; মুসলিম হা/৮৫; মিশকাত হা/৫৬৮।
[15]. বুখারী হা/৬১৫; মুসিলম হা/৪৩৭; মিশকাত হা/৬২৮।
[16]. বুখারী হা/৫৭৪; মুসলিম হা/৬৩৫; মিশকাত হা/৬২৫।
[17]. মুসলিম হা/৫৯৭; আবু দাঊদ হা/১৫০৪; মিশকাত হা/৯৬৭।
[18]. বুখারী হা/৬৪০৩; মুসলিম হা/২৬৯১; মিশকাত হা/২৩০২।
[19]. তিরমিযী হা/৫৮৬; মিশকাত হা/৯৭১।
[20]. মুসলিম হা/২৩৩; হাকেম হা/৭৬৬৬।
[21]. বুখারী হা/৫২৯৪; মুসিলম হা/৮৫২; মিশকাত হা/১৩৫৭।
[22]. হাকেম হা/৩৩৯২; দারেমী হা/৩৪০৭ মিশকাত হা/২১৭৫।
[23]. বুখারী হা/৪৩২; মুসলিম হা/৭৭৭; মিশকাত হা/৭১৪।
[24]. মুসলিম হা/৭২০; মিশকাত হা/১৩১১।
[25]. মুসিলম হা/৭২৮; নাসাঈ হা/১৭৯৪; মিশকাত হা/১১৫৯।
[26]. মুসলিম হা/৮০৪; মিশকাত হা/২১২০।
[27]. বুখারী হা/৫০২৭; আবুদাঊদ হা/১৪৫২; মিশকাত হা/২১০৯;।
[28]. আবুদাউদ হা/৪৯৫; আহমাদ হা/৬৬৮৯; মিশকাত হা/৫৭২।
[29]. বুখারী হা/১৯৬০; ইবনু হিববান হা/৩৬২০।
[30]. বুখারী হা/৯৭; মিশকাত হা/১১।
[31]. তিরমিযী হা/৩৪৩৩; আবু দাঊদ হা/৪৮৪৯; মিশকাত হা/২৪৩৩।
[32]. মুসলিম হা/১৯১৪; মিশকাত হা/১৯০৫।
[33]. মুসলিম হা/২৬২৬; তিরমিযী হা/১৮৩৩; মিশকাত হা/১৮৯৪।
[34]. তিরমিযী হা/২৪৮৫; ইবনু মাজাহ হা/১৩৩৪; মিশকাত হা/১৯০৭।
[35]. তিরমিযী হা/২৭২৭; ইবনু মাজাহ হা/৩৭০৩; মিশকাত হা/৪৬৭৮।
[36]. আবু দাঊদ হা/১৬৪৩; মুসনাদে আহমাদ হা/২২৪২৮।
[37]. বুখারী হা/১৪২৯; মুসলিম হা/১০৩৩; মিশকাত হা/১৮৪৩।
[38]. হাকেম হা/২১৫৮; আহমাদ হা/১৭৭২৮; মিশকাত হা/২৭৮৩।
[39]. বুখারী হা/২০৮২।
[40]. বুখারী হা/২০৭৬; মিশকাত হা/২৭৯০।
[41]. বুখারী হা/৫৩৫১; মুসলিম হা/১০০২; মিশকাত হা/১৯৩০।
[42]. বুখারী হা/৬০০৬; মুসলিম হা/২৯৮২; মিশকাত হা/৪৯৫১।
[43]. বুখারী হা/৫৩০৪; আবু দাঊদ হা/৫০৫১; মিশকাত হা/৪৯৫২।
[44]. আহমাদ হা/৭৫৬৬; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৮৫৪; মিশকাত হা/৫০০১।
[45]. মুসলিম হা/২৬৯৯; ইবনু মাজাহ হা/২২৫; মিশকাত হা/২০৪।
[46]. বুখারী হা/২৮৯১; মুসলিম হা/১০০৯; মিশকাত হা/১৮৯৬।
[47]. আবু দাঊদ হা/১৬৭২; নাসাঈ হা/২৫৬২; মিশকাত হা/১৯৪৩।
[48]. তিরমিযী হা/২৬১৬; ইবনু মাজাহ হা/২৯৭৩; মিশকাত হা/২৮।
[49]. আবু দাঊদ হা/১৬৭৭; হাকেম হা/১৫০৯; মিশকাত হা/১৯৩৮।
[50]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৯০৮।
[51]. মুসলিম হা/১৬৩১; আবু দাঊদ হা/২৮৮০; আহমাদ হা/৮৮৩১।
[52]. মুসলিম হা/১০০০।
[53]. বুখারী হা/১৪২৫; মুসলিম হা/১০২৪; আহমাদ হা/২৬৪১৩।
[54]. বুখারী হা/১৭৮২, ১৮৬৩; মুসলিম হা/১২৫৬; মিশকাত হা/২৫০৯।
[55]. বুখারী হা/৪৫০; মুসলিম হা/৫৩৩; মিশকাত হা/৬৯৭।
[56]. তিরমিযী হা/২০০৪; ইবনু হিববান হা/৪৭৬; মিশকাত হা/৪৮৩২।
[57]. মুসলিম হা/২৫৫১; মিশকাত হা/৪৯১২।
[58]. হাকেম হা/২০৯; আবু দাঊদ হা/৪৯৪৩; তিরমিযী হা/১৯১৯।
[59]. ইবনু হিববান হা/৪১৬৩; মিশকাত হা/৩২৫৪।
[60]. মুসলিম হা/২৫৫২; মিশকাত হা/৪৯১৭।
[61]. মুসলিম হা/২৫৫৫; মিশকাত হা/৪৫২১।
[62]. তিরমিযী হা/৩৮৯৫; ইবনু মাজাহ হা/১৯৭৭; মিশকাত হা/৩২৫২।
[63]. বুখারী হা/৬০১৯; মুসলিম হা/৪৭; ছহীহ ইবনু হিববান হা/৫২৮৭।
[64]. বুখারী হা/৬০১৮; মুসলিম হা/৪৭; মিশকাত হা/৪২৪৩।
[65]. তিরমিযী হা/২০০৯; ইবনু মাজাহ হা/৪১৮৪; মিশকাত হা/৫০৭৬।
[66]. বুখারী হা/৬০৯৪; মুসলিম হা/২৬০৭; মিশকাত হা/৪৮২৪।
[67]. আহমাদ-১২৪০৬; ছহীহ ইবনু হিববান-১৯৪; মিশকাত হা/৩৫।
[68]. বুখারী হা/৫৬৪১; মুসলিম হা/২৫৭৩; মিশকাত হা/১৫৩৭।
[69]. মুসলিম হা/১৮; আবু দাঊদ হা/৫২২৫; মিশকাত হা/৫০৫৪।
[70]. বুখারী হা/৬৪৭৪; মিশকাত হা/৪৮১২।
[71]. আবু দাঊদ হা/৪৯৪১; তিরমিযী হা/১৯২৪; মিশকাত হ/৪৯৬৯।
[72]. মুসলিম হা/১৮২৮; ইবনু হিববান হা/৫৫৩; মিশকাত হা/ ৩৬৮৯।
[73]. বুখারী হা/১৭৩; আহমাদ হা/১০৭৬২।
[74]. বুখারী হা/৬০৬৩; মুসলিম হা/১০১৬; মিশকাত হা/৫৮৫৭।
[75]. বুখারী হা/৬১৩৬; মুসলিম হা/৪৭; মিশকাত হা/৪২৪৩।
[76]. তিরমিযী হা/১৯৮৭; আহমাদ হা/২১৩৯২; মিশকাত হা/৫০৮৩।
[77]. আবু দাঊদ-১৫২১; ছহীহ ইবনু হিববান-৬২৩; ইবনু খুযাইমা-৫৩৪।
[78]. বুখারী হা/৬৪৬৫; মুসলিম হা/৭৮৩; মিশকাত হা/১২৪২।
[79]. মুসলিম হা/২৭০০; আহমাদ হা/১১৮৯৩; মিশকাত হা/২২৬১।
[80]. আদাবুল মুফরাদ হা/২১৪; আবু দাঊদ হা/৪৮১৪।
[81]. মুসলিম হা/৫৬৯; আবু দাঊদ হা/৪৬০৯; মিশকাত হা/১৫৮।
[82]. বুখারী হা/৬০২১; মুসলিম হা/১০০৫; মিশকাত হা/১৮৯৩।
[83]. মুসলিম হা/১৬৭৭; আবু দাঊদ হা/৫১২৯; মিশকাত হা/২০৯।
[84]. মুসলিম হা/৪৯; ইবনু মাজাহ হা/৪০১৩; মিশকাত হা/৫১৩৭।
[85]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৮৭; আবু দাঊদ হা/২৫২১।
[86]. মুসলিম হা/২৫৬৪; আহমাদ হা/২২৪৪৩।
[87]. বুখারী হা/৬০১১; মুসলিম হা/২৫৮৬; মিশকাত হা/৪৯৫৩।
[88]. তিরমিযী হা/১৯৩১; আহমাদ হা/২৭৫৭৬; মিশকাত হা/৪৯৮২।
[89]. বুখারী হা/৬৫৩৪; তিরমিযী হা/২৪১৯।
[90]. বুখারী হা/১১; মুসলিম হা/৪২; মিশকাত হা/৪৬।
[91]. মুসলিম হা/২৬৯৯; আবু দাঊদ হা/৪৯৪৬; মিশকাত হা/২০৪।
[92]. বুখারী হা/৬০২৬; মুসিলম হা/২৫৮৫; মিশকাত হা/৪৯৫৫।
[93]. বুখারী হা/১৪৩২; মুসলিম হা/২৬২৭; মিশকাত হা/৪৯৫৬।
[94]. মুসলিম হা/২৫৯০।
[95]. আবু দাঊদ হা/৪৯১৯; তিরমিযী হা/২৫০৯; মিশকাত হা/৫০৩৮।
[96]. মুসলিম হা/২৫৬৫; তিরমিযী হা/২০২৩; মিশকাত হা/৫০২৯।
[97]. ছহীহ ইবনে হিববান হা/৩৪২৮।
[98]. বুখারী হা/১৯৫৭; মুসলিম হা/১০৯৮; মিশকাত হা/১৯৮৪।
[99]. আবু দাঊদ হা/২৩৫৫; হাকেম হা/১৫৭৫।
[100]. তিরমযী হা/৮০৭; ইবনু মাজাহ হা/১৭৪৬; মিশকাত হা/১৯৯২।
[101]. আবু দাঊদ হা/২৩৫৭; হাকেম হা/১৫৩৬; মিশকাত হা/১৯৯৩।
[102]. মুসলিম হা/১১৬৩; তিরমিযী হা/৪৩৮; মিশকাত হা/২০৩৯।
[103]. বুখারী হা/৩৭, ২০০৯; মুসলিম হা/৭৫৯, মিশকাত হা/১২৯৬।
[104]. মুসলিম হা/৪৮২; আবু দাঊদ হা/৮৭৫; মিশকাত হা/৮৯৪।
[105]. তিরমিযী হা/৩৩৭৭; মিশকাত হা/২২৬৯।
[106]. মুসলিম হা/৩৮৪; আবু দাঊদ হা/৫২৩; মিশকাত হা/৬৫৭।
[107]. বুখারী হা/৭৪০৫; মুসলিম হা/২৬৭৫; মিশকাত হা/২২৬৪।
[108]. আহমাদ হা/১০৬১৮; ইবনু মাজাহ হা/৩৬৬০; মিশকাত হা/২৩৫৪।
[109]. আহমাদ হা/১০৬১৮; ইবনু মাজাহ হা/৩৬৬০; মিশকাত হা/২৩৫৪।
[110]. বুখারী হা/২০৩৩; মুসলিম হা/১১৭১; মিশকাত হা/২১০২।
[111]. বুখারী হা/৩৫, ২০১৪; মুসলিম হা/৭৬০; মিশকাত হা/১৯৫৮।
[112]. বুখারী হা/২০২৪; মুসলিম হা/১১৭৪; মিশকাত হা/২০৯০।
[113]. আবু দাঊদ হা/১৬০৯; ইবনু মাজাহ হা/১৮২৭; হাকেম হা/১৪৮৮।
[114]. মুসলিম হা/২৭০৩; মিশকাত হা/২৩৩১।