ইসমাঈলী শী‘আদের ভ্রান্ত আক্বীদা-বিশ্বাস

মুখতারুল ইসলাম 1035 বার পঠিত

বিভ্রান্ত শী‘আরা ইমামত বা নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে বিভিন্ন দলে-উপদলে বিভক্ত। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুসা কাযেম ইবন জা‘ফরের অনুসারী ইছনা আশারিয়া ইমামিয়্যাহ এবং অপর দলটি হ’ল ইসমাঈল ইবন জা‘ফরের অনুসারী ইসমাঈলী শী‘আ।

বাগদাদী বলেন, শী‘আরা মূলতঃ দু’টি দলে বিভক্ত। ইসমাঈলী দলটি ইসমাঈল ইবন জা‘ফরের প্রতীক্ষায় রইল। ঐতিহাসিকরা এ বিষয়ে একমত যে, ইসমাঈল তার পিতার জীবদ্দশাতেই মারা যায়। ফলে ইসমাঈলীরা বলতে থাকল ইমাম জা‘ফরের নাতি মুহাম্মাদ ইবন ইসমাঈল ইবন জা‘ফর পরবর্তী নেতা হিসাবে মনোনীত হবে। কেননা ইমাম জা‘ফর পরবর্তী নেতা হিসাবে ইসমাঈলের নামই ঘোষণা করেছিল। অতএব পিতার মৃত্যুর পর ইমামতের সেই হকদার। সেমতে বাতেনী ইসমাঈলীরা সে পথই বেছে নিল। বিভ্রান্ত ইসমাঈলী দল এ নামকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠে এবং নতুন ভ্রান্তু মতাদর্শের জন্ম দেয়। তারা মহান আল্লাহকে নামহীন ও নির্গুণ সত্তা মনে করে’।[1] নিম্নে তাদের প্রধান প্রধান ভ্রান্ত আক্বীদাগুলো উল্লেখ করা হ’ল-

ক. মহান আল্লাহ সম্পর্কে আক্বীদা :

বাতেনী ইসমাঈলীরা[2] আল্লাহ সম্পর্কে মাজূসী বা অগ্নি উপাসক ও মূর্তি পূজারীদের ন্যায় আক্বীদা পোষণ করে। তাদের আক্বীদা হ’ল- আল্লাহকে নাম ও গুণহীন সত্তা মনে করা, যা কুরআন-সুন্নাহর স্পষ্ট লংঘন। তারা এ আক্বীদার বিবরণের ক্ষেত্রে দূরতম ব্যাখ্যার আশ্রয় নেয়, যা নিষ্প্রাণ, পরিত্যাজ্য ও বিকৃত। দ্বৈতবাদ, মূর্তিপূজা ও অগ্নিপূজারীদের পথে তারা চলে। তারা এক আল্লাহকে বহু আল্লাহ ও এক রবকে নানান রবে পরিণত করেছে। কুরআনে বর্ণিত আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ব্যাপারে তারা উদ্ধত ও ঝগড়াটে। অথচ আল্লাহ তা‘আলার সুন্দর সুন্দর নাম ও গুণাবলী রয়েছে। সেগুলো নিষ্পাপ, মর্যাদা মন্ডিত, অহি লাভে ধন্য নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত’।[3]

তাদের মতে, তাওহীদ হ’ল মহান আল্লাহ যাবতীয় নাম ও গুণাবলী থেকে মুক্ত। তার নাম দ্বারা উর্ধ্বজগৎ বা মহাবিশ্বের প্রথম জ্ঞান, প্রথম সৃষ্টিকারী, অগ্রগামী ইত্যাদি বুঝায়। আর নিম্নজগতে কথক ও ইমামকে বুঝায়। আল্লাহ তা‘আলা অস্তিত্বশীল এবং অস্তিত্বহীন কোনটিই নয়’।[4]

তাদের ঈমান বিধ্বংসী আক্বীদাসমূহ :

১. কিরমানী বলেন, আল্লাহ ছাড়া কোন মা‘বূদ নাই। তাঁর অবস্থান নেই। অবস্থান থাকলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। তাঁর অবস্থানও নেই, আবার অস্তিত্বও নেই। আর তিনি যদি অস্তিত্বশীল হন, তবে তা অগ্রহণীয়’।[5]

২. সে আরো বলেছে, আল্লাহ তা‘আলার কোন গুণাগুণ নেই। তিনি কোন শরীরী সত্ত্বা নন। তাঁর কোন দৈহিক রূপ নেই’।[6]

৩. হুসাইন ইবন আলী বলেছে, আমি অদৃশ্যের অদৃশ্যকে জানি। তাঁর ব্যাপারে কোন দুঃসাহসিকতা দেখিও না। তাকে কোন বক্র হৃদয় ও সীমায়িত চিন্তাচেতনা খুঁজে পাবে না। তাঁর নাম, গুণ বলে কিছু নেই’।[7]

৪. তারা বলে, সৃষ্টিকর্তার মান-মর্যাদার সমস্ত গুণাবলী এলাহী ভাবভঙ্গির সীমা অতিক্রম করেছে’।[8]

৫. কিরমানী বলেছে, সমস্ত ইলাহ দ্বারা প্রথম সৃষ্টিকর্তাকে বুঝায়।[9]

৬. সিজিস্তানী বলেছে, দৈহিক জগতে রাসূলের বাস এবং রূহানী জগতে সাবেক বা সৃষ্টিকর্তার বাস’।[10]

৭. ইসমাঈলীরা আকলুল কুল্লী বলতে মাওজূদুল আওয়াল অথবা সাবেক অথবা মুবদিঊল আওয়াল অথবা আল-কলাম অথবা কালিমাহ তথা সৃষ্টিকর্তাকে বুঝায়। তারা নিম্নজগতের আকলুছ ছানীর সাথে উর্ধ্বজগতের আকলুল আওয়ালের মাঝে তুলনা করে’।[11]

৮. আকলুল আওয়াল, মুবদিঊল আওয়াল, মাওজূদুল আওয়াল, সাবেক, কলম ইত্যাদি দ্বারা তারা মহান আল্লাহকে বুঝায়। যিনি সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা, আকৃতিদানকারী, নানাগুণে গুনান্বিত। অনুরূপভাবে আকলুছ ছানী, মাওজূদুছ ছানী, তালী, লাওহ, আকলুল আশের ইত্যাদি দ্বারা নবী, অছি, ভিত্তি, ইমাম তথা তাদের সমস্ত প্রভুকে বুঝায়। তারা কখনো এগুলো দ্বারা মহা শাস্তিদাতা এক আল্লাহকে বুঝায় না। তারা কুরআনে বর্ণিত আল্লাহ, সৃষ্টিকর্তা, অবয়বদানকারী, রুযীদাতা, সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী ইত্যাদি নামের ব্যাপারে সীমালংঘন করেছে’।[12]

৯. আধুনিক ইসমাঈলী পন্ডিত মুছত্বাফা গালিব বলেন, মূলত সাবেক, তালী, আকল, নাফস বা আল্লাহকে সমস্ত সৃষ্টিজীবের মধ্যে পাওয়া যায়’।[13]

১০. জা‘ফর ইবন মানছূর ইয়ামান বলেন, মহান বলেন, وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَاضِرَةٌ- إِلَى رَبِّهَا نَاظِرَةٌ ‘সেদিন অনেক চেহারা উজ্জ্বল হবে। তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে’।[14] অর্থাৎ আমীরুল মুমিনীন আলী (আঃ)-কে বুঝানো হয়েছে’।[15]

১১. ইসমাঈলী দাঈ শিহাবুদ্দীন আবুল ফারাস বলে, আলীর বংশধররা আরশে সমাসীন হয়েছে’।[16]

পর্যালোচনা ও জবাব :

মূলতঃ ইসমাঈলীরা হযরত আলী (রাঃ)-কে প্রভু বানিয়ে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা তাদের ইমামদেরকেও প্রভু গণ্য করে। তাদের ইলাহের দাবী শুধুমাত্র আলী, নবী, অছি, ইমাম বা নেতাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং তাদের ইমামরা স্বঘোষিত মা‘বূদ হওয়ার দাবীর পাশাপাশি আল্লাহর সমস্ত গুণাবলীর অধিকারী হয়েছে। তাদের পিতা, পিতামহ ও বংশধরেরাও আল্লাহর প্রভূত্বকে ছিনতাই করেছে’।[17]

‘ইসমাঈলীদের নিকট তাওহীদ হ’ল সৃষ্টিজীবকে আল্লাহর গুণে গুণান্বিত করা। মাখলূককে আল্লাহর সুন্দর সুন্দর নামগুলোর নামে নামাংকিত করা। তাদের নিকট শিরক হ’ল মানুষকে ইমাম ছাড়া অন্যে কিছুর দিকে দাওয়াত দেয়া। আল্লাহ ভিন্ন অন্য কিছুর দিকে নয়’।[18]

ইসমাঈলীরা আল্লাহর সুন্দর সুন্দর নাম ও আবশ্যিক গুণাবলীকে ছিনতাই করে বান্দার ঘাড়ে চাপিয়েছে। অথচ সেই বান্দারা নিজেরাই নিজেদের ভাল, মন্দ, উপকার বা অপকার কিছুই করার ক্ষমতা রাখে না। তারা আল্লাহকে গুণ, নাম ও কর্মশূন্য সত্তা মনে করে। আল্লাহ জীবিত, সক্ষম, জ্ঞানী, পরিপূর্ণতা দানকারী, পরিপূর্ণ, কর্মক্ষম কোন কিছুই নন। শুধু তিনি সত্তাগতভাবে জীবিত ও জ্ঞানী, বাস্তবে কিছু নন। এমনকি কাউকে ইশারা করার ক্ষমতা পর্যন্ত তিনি রাখেন না। তারা হযরত আলীর ব্যাপারে বলে, তিনি নিজের ব্যাপারে সত্যায়ন করেছেন। আমি জীবন, মৃত্যু, রিযিক দিই। আমি জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে সুস্থ করে তুলি। আমি এও বলতে পারি, তোমরা তোমাদের বাড়িতে কি খাও ও জমা কর’।[19]

অথচ ইসলামের সঠিক আক্বীদা হল, এক আল্লাহ, ফেরেশতাগণ, কিতাবসমূহ, রাসূলগণ, বিচার দিবস এবং তাক্বদীরের ভালমন্দের উপরে ঈমান আনা, যেভাবে আল্লাহ নিজে নিজেকে গুণান্বিত করেছেন এবং রাসূল (ছাঃ) তা কোন রূপক, গৌণ, বিকৃত ব্যাখ্যা ছাড়াই পেশ করেছেন। নতুন করে নয়, যা কিছু নিষেধযোগ্য তা আল্লাহ নিজেই নিষেধ করেছেন এবং রাসূল (ছাঃ) তাঁর প্রতিনিধি হিসাবে সে বিষয়ে বারণ করেছেন’।[20]

এ বিষয়ে কুরআন সুন্নাহ দলীলসমূহ নিম্নরূপ-

১. মহান আল্লাহ বলেন, وَلِلَّهِ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى فَادْعُوهُ بِهَا ‘আর আল্লাহর জন্য সুন্দর নামসমূহ রয়েছে। সেসব নামেই তোমরা তাঁকে ডাক’।[21]

২. মহান আল্লাহ বলেন, لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ ‘তাঁর তুলনীয় কিছুই নেই। তিনি সবকিছু শোনেন ও দেখেন’।[22]

৩. মহান আল্লাহ বলেন,قُلِ ادْعُوا اللَّهَ أَوِ ادْعُوا الرَّحْمَنَ أَيًّا مَا تَدْعُوا فَلَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى وَلَا تَجْهَرْ بِصَلَاتِكَ وَلَا تُخَافِتْ بِهَا وَابْتَغِ بَيْنَ ذَلِكَ سَبِيلًا ‘তুমি বল, তোমরা ‘আল্লাহ’ নামে ডাক বা ‘রহমান’ নামে ডাক, তোমরা যে নামেই ডাকো না কেন, সকল সুন্দর নাম তো কেবল তাঁরই জন্য আর তুমি তোমার ছালাতের ক্বিরাআতে স্বর অধিক উঁচু করো না বা একেবারে নীচু করো না। বরং দুইয়ের মধ্যবর্তী পথ অবলম্বন কর’।[23]

৪. মহান আল্লাহ বলেন, قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ-اللهُ الصَّمَدُ-لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ-وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ ‘বল, তিনি আল্লাহ এক। আল্লাহ মুখাপেক্ষীহীন। তিনি (কাউকে) জন্ম দেননি এবং তিনি (কারও) জন্মিত নন। তাঁর সমতুল্য কেউ নেই’।[24]

৫. মহান আল্লাহ বলেন, اللهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ وَكِيلٌ ‘আল্লাহ সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা এবং তিনিই সবকিছুর তত্ত্বাবধায়ক’।[25]

৬. মহান আল্লাহ বলেন,

هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ-هُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِي الْأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ-

‘তিনিই আদি, তিনিই অন্ত, তিনি প্রকাশ্য, তিনি গোপন, তিনি সকল বিষয়ে জ্ঞাত। তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে। অতঃপর সমুন্নীত হয়েছেন আরশে। তিনি জানেন যা কিছু ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা কিছু সেখান থেকে নির্গত হয়। আর যা কিছু আকাশ থেকে অবতীর্ণ হয় ও যা কিছু সেখানে উত্থিত হয়। তিনি তোমাদের সাথে আছেন, যেখানেই তোমরা থাক না কেন। আর তোমরা যা কিছু কর সবই আল­াহ দেখেন’।[26]

৭. মহান আল্লাহ বলেন, هَلْ يَنْظُرُونَ إِلَّا أَنْ يَأْتِيَهُمُ اللهُ فِي ظُلَلٍ مِنَ الْغَمَامِ وَالْمَلَائِكَةُ وَقُضِيَ الْأَمْرُ وَإِلَى اللهِ تُرْجَعُ الْأُمُورُ ‘তারা কি কেবল এ অপেক্ষাই করছে যে, আল্লাহ ও ফেরেশতাগণ সাদা মেঘমালার ছায়াতলে তাদের নিকট সমাগত হবেন এবং তাদের সমস্ত বিষয় নিষ্পত্তি করা হবে। বস্ত্ততঃ আল্লাহর নিকটেই সকল বিষয় প্রত্যাবর্তিত হয়ে থাকে’।[27]

৮. মহান আল্লাহ বলেন, وَرُسُلًا قَدْ قَصَصْنَاهُمْ عَلَيْكَ مِنْ قَبْلُ وَرُسُلًا لَمْ نَقْصُصْهُمْ عَلَيْكَ وَكَلَّمَ اللهُ مُوسَى تَكْلِيمًا ‘বহু রাসূল সম্পর্কে ইতিপূর্বে আমরা তোমাকে বলেছি এবং অনেক রাসূল সম্পর্কে বলিনি। আর আল্লাহ মূসার সঙ্গে সরাসরি কথোপকথন করেছেন’।[28]

৯. মহান আল্লাহ বলেন, الرَّحْمَنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوَى ‘দয়াময় (আল্লাহ) আরশে সমুন্নীত’।[29]

১০. রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘মহামহিম আল্লাহ তা‘আলা প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকাকালে পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ঘোষণা করতে থাকেন, কে আছে এমন, যে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দিব। কে আছে এমন যে, আমার নিকট চাইবে। আমি তাকে তা দিব। কে আছে এমন যে আমার নিকট ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব’।[30]

১১. রাসূল (ছাঃ) বলেন, يَضْحَكُ اللهُ إِلَى رَجُلَيْنِ يَقْتُلُ أَحَدُهُمَا الآخَرَ يَدْخُلاَنِ الْجَنَّةَ ، يُقَاتِلُ هَذَا فِى سَبِيلِ اللهِ فَيُقْتَلُ ، ثُمَّ يَتُوبُ اللهُ عَلَى الْقَاتِلِ فَيُسْتَشْهَدُ-‘দু’ব্যক্তির ক্ষেত্রে আল্লাহ হাসেন। যারা একে অপরকে হত্যা করে উভয়ই জান্নাতবাসী হবে। একজন তো এ কারণে জান্নাতবসী হবে যে, সে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে শহীদ হয়েছে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা হত্যাকরীর তওবা কবুল করেছেন। ফলে সেও আল্লাহর রাস্তার শহীদ বলে গণ্য হয়েছে’।[31]

১২. রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘জাহান্নামীদের জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হতে থাকবে। তখন জাহান্নাম বলতে থাকবে আরো অধিক আছে কি? আর শেষে আল্লাহ রাববুল আলামীন, তাঁর কুদরতের কদম জাহান্নামে রাখবেন। তখন এর এক অংশে আরেক অংশের সাথে মিশ্রিত হয়ে স্থির হতে থাকবে। আর বলবে আপনার ইযয্ত ও করমের কসম! যথেষ্ট হয়েছে। জান্নাতের কিছু জায়গা শূন্য থাকবে। অবশেষে আল্লাহ সেই শূন্য জায়গায় জন্য নতুন করে কিছু মাখলূক সৃষ্টি করবেন এবং এদের জন্য জান্নাতের সেই শূন্যস্থানে বসতি স্থাপন করে দেবেন’।[32]

১৩. রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلاَّ سَيُكَلِّمُهُ رَبُّهُ ، لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ تُرْجُمَانٌ وَلاَ حِجَابٌ يَحْجُبُهُ ‘তোমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে শীঘ্রই তার প্রতিপালক কথা বলবেন, তখন প্রতিপালক ও তার মাঝে কোন অনুবাদক ও আড়াল করে এমন পর্দা থাকবে না’।[33]

উপরোক্ত আয়াত ও হাদীছগুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, ইসমাঈলীদের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। কেননা তাদের আক্বীদায় এটাই পরিষ্কার হয়েছে যে, তারা এক ইলাহে নয়, বরং বহু ইলাহে বিশ্বাসী, যারা একে অপরকে সার্বিক কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করেন। নাঊযুবিল্লাহ![34]

(খ) নবী ও নবুঅত সম্পর্কে আক্বীদা :

ইসমাঈলীদের নিকট নবুঅত হ’ল অর্জিত জ্ঞানের মত একটি বিষয়। শর্ত সাপেক্ষে ব্যক্তির নবী হওয়ার মনোষ্কামনা পূরণ হ’তে পারে। তারা বিশ্বাস করে যে, তাদের দশম জ্ঞানের অন্যতম ফয়েয হ’ল নবুঅতী। অহির ব্যাখ্যাকারী নবী-রাসূল অর্জিত জ্ঞান থেকে মানুষদের শিক্ষা দেয়। কুরআন কখনো আল্লাহর কালাম নয়। বরং রাসূলের চিন্তাজগতের আবর্তিত ও আবিস্কৃত কথামালার ফুলঝুঁড়ি। আবু তালিব সে যুগে আল্লাহর ইমাম তথা রাসূল ছিলেন, নাঊযুবিল্লাহ। তিনি রাসূল-নবীগণের প্রেরণকারী ছিলেন। বস্ত্তত তিনি মুহাম্মাদের চেয়ে উত্তম মানুষ ছিলেন। এ হ’ল তাদের নবী ও নবুঅত বিষয়ক আক্বীদার সারসংক্ষেপ’।[35]

ইসমাঈলীদের নবী, নবুঅত ও বিশ্বস্ত সত্যবাদী রাসূল সম্পর্কে আক্বীদা পবিত্র কুরআন-ছহীহ সুন্নাহর স্পষ্ট বিরোধী এবং নিরেট কুফুরীর উপরে ভিত্তিশীল’।[36]

তাদের ঈমান বিধ্বংসী আক্বীদাসমূহ নিম্নরূপ :

১. ইসহাক সিজিস্তানী বলে, নবুঅতের যোগ্যতা এমনিতেই কোন নবীর মধ্যে তৈরী হয় না। বরং অনেক চেষ্টা-প্রচেষ্টার পর সামান্যই অর্জিত হয়। অতঃপর এই প্রক্রিয়ার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। সবশেষে পরিপূর্ণতার শিখরে আরোহন করে।[37]

২. যখন নবুঅতী বৈশিষ্ট্যগুলো একজন মানুষের মাঝে সন্নিবেশিত হয়। তখন সময়কে কেন্দ্র করে তা পরিণতির দিকে এগুতে থাকে। এক সময় ঐ লোকটি জীবনভর মানুষের মাঝে ইমাম হিসাবে বরিত হন। মানুষের মাঝে তার অর্জিত রিসালাত পোঁছাতে থাকে। অতঃপর আমানত সংরক্ষণ, সদুপোদেশ, শারঈ ব্যাখ্যা, শারঈ মূলনীতি প্রণয়ন, সুন্নাতের বাস্তবায়ন, জাতির ভবিষ্যতের দিক-নির্দেশনামূলক লেখালেখিসহ সার্বিক দেখভালের মধ্য দিয়ে তার জীবনসূর্য অস্তমিত হয়। তার জীবনকর্মগুলো পরবর্তী খলীফার অধিকারে চলে যায়’।[38]

৩. সিজিস্তানী বলেন, জনগণের প্রয়োজনে আল্লাহ রিসালাতসহ রাসূল প্রেরণ করেন। অতঃপর তার নিকট ফেরেশতা প্রেরণ করেন’।[39]

৪. হামেদী বলেন, ইমাম একাই সব। জিবরাঈল তার খেয়ালীপনা মাত্র’।[40]

৫. তাহের বিন ইবরাহীম হারেছ ইয়ামেনী বলেন, প্রত্যেক ইমাম অছি। ইমামের শিক্ষাগ্রহণ বাধ্যতামূলক এবং তার শিক্ষার স্তর ধীরে ধীরে উন্নতির সর্বোচ্চ সোপানে পৌঁছে। যেমন আল্লাহ বলেন, وَاللهُ أَخْرَجَكُمْ مِنْ بُطُونِ أُمَّهَاتِكُمْ لَا تَعْلَمُونَ شَيْئًا وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ ‘আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের মায়ের গর্ভ থেকে বের করে এনেছেন এমন অবস্থায় যে তোমরা কিছুই জানতে না। আর তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয়; যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর’।[41] মুহাম্মাদ (ছা.) প্রাথমিক পর্যায়ে উবাই ইবন কা‘বের নিকট কুরআনের তা‘লীম নিয়েছিলেন। সে অর্থে তাকে জিবরাঈল (আঃ) বলা যায়’।[42]

ইসমাঈলীদের আক্বীদানুযায়ী উবাই ইবন কা‘ব রাসূল (ছাঃ)-এর শিক্ষক ছিল। শুধু তাই নয়, তারা এর চেয়ে বড় বড় কুফুরী ও মিথ্যা কথা বলেছে। ইসমাঈলীদের বড় দাঈ ও আলেম হামেদী বলেছে, রাসূল (ছাঃ) উবাই ইবন কা‘ব ব্যতীত আরো এমন পাঁচজন ব্যক্তির কাছ থেকে তা‘লীম, বিদ্যা প্রতিপালন ও অহি গ্রহণ করেছেন। এভাবে তারা রাসূল (ছাঃ)-এর উপর মিথ্যারোপ করেছে’।[43]

৬. তাহের হারেছী আল-ইমানী বলেন, রাসূল (ছাঃ) উবাই ব্যতীত যে পাঁচজন ব্যক্তির নিকট বিভিন্ন বিষয়ে তা‘লীম নিয়েছেন, তারা হলেন, যায়েদ ইবন আমর, আমর ইবন নুফাইল, মায়সারাহ, খাদীজা বিনত খুওয়াইলিদ এবং তাঁর চাচা আবু তালিব।[44]

পর্যালোচনা ও জবাব :

রাসূল (ছাঃ) আল্লাহ প্রেরিত একজন নবী-রাসূল। তিনি নিজের প্রচেষ্টায় নবী হয়ে যাননি এবং তাঁর নবুঅত অর্জিত কোন জ্ঞান ভান্ডার নয়। আল্লাহ স্বয়ং নবী-রাসূল মনোনীত করেন এবং তাঁর রিসালাত দিয়ে দুনিয়ায় প্রেরণ করেন। এটা ইসমাঈলীদের আক্বীদার তথাকথিত দশম জ্ঞানের অংশ বিশেষও নয়। আল্লাহ তা‘আলা রাসূল (ছাঃ)-কে জাহান্নামের ভীতি প্রদর্শনকারী, জান্নাতের সুসংবাদদানকারী এবং মানবতার মুক্তির দিশারী হিসাবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ তাঁর সাহায্য-সহযোগিতা, অহি ও মু‘জিযা দ্বারা এ পথে তাঁকে দৃঢ় রেখেছেন এবং আমাদেরকে তাঁর আনুগত্য করার আদেশ দিয়েছেন’।[45]

১. মহান আল্লাহ বলেন,اللهُ يَصْطَفِي مِنَ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا وَمِنَ النَّاسِ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ بَصِيرٌ ‘আল্লাহ ফেরেশতা ও মানুষের মধ্য থেকে রাসূল মনোনীত করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও দেখেন’।[46]

২. মহান আল্লাহ বলেন, وَإِذَا جَاءَتْهُمْ آيَةٌ قَالُوا لَنْ نُؤْمِنَ حَتَّى نُؤْتَى مِثْلَ مَا أُوتِيَ رُسُلُ اللهِ اللهُ أَعْلَمُ حَيْثُ يَجْعَلُ رِسَالَتَهُ سَيُصِيبُ الَّذِينَ أَجْرَمُوا صَغَارٌ عِنْدَ اللهِ وَعَذَابٌ شَدِيدٌ بِمَا كَانُوا يَمْكُرُونَ- ‘যখন তাদের কাছে কোন আয়াত পৌঁছে, তখন তারা বলে আমরা এতে বিশ্বাস করব না, যতক্ষণ না আমাদেরকে তা দেওয়া হয়, যেমন আল্লাহর (বিগত) রাসূলগণকে দেওয়া হয়েছিল (ফেরেশতাদের মাধ্যমে অথবা আল্লাহ সরাসরি)। অথচ আল্লাহ ভালভাবেই জানেন রিসালাতের গুরুদায়িত্ব কোথায় অর্পণ করতে হবে। পাপীরা তাদের প্রতারণার কারণে আল্লাহর পক্ষ হতে সত্বর লাঞ্ছনা ও কঠিন শাস্তিপ্রাপ্ত হবে’।[47]

৩. মহান আল্লাহ বলেন, هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَكَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا ‘তিনিই স্বীয় রাসূলকে প্রেরণ করেছেন সরল পথ ও সত্য ধর্ম সহকারে। যাতে তিনি একে অন্য সকল ধর্মের উপর বিজয়ী করতে পারেন। আর এজন্য সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট’।[48]

৪. মহান আল্লাহ বলেন, إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ ‘আমরাই কুরআন নাযিল করেছি এবং আমরাই এর হেফাযতকারী’।[49]

৫. মহান আল্লাহ বলেন, قَالَ يَامُوسَى إِنِّي اصْطَفَيْتُكَ عَلَى النَّاسِ بِرِسَالَاتِي وَبِكَلَامِي فَخُذْ مَا آتَيْتُكَ وَكُنْ مِنَ الشَّاكِرِينَ ‘আল্লাহ বললেন, হে মূসা! আমি তোমাকে আমার রিসালাত ও বাক্যালাপের মাধ্যমে তোমাকে লোকদের মধ্য থেকে বাছাই করে নিয়েছি। অতএব যা তোমাকে দেই তা গ্রহণ কর এবং কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হও’।[50]

৬. মহান আল্লাহ বলেন,وَرُسُلًا قَدْ قَصَصْنَاهُمْ عَلَيْكَ مِنْ قَبْلُ وَرُسُلًا لَمْ نَقْصُصْهُمْ عَلَيْكَ وَكَلَّمَ اللهُ مُوسَى تَكْلِيمًا ‘বহু রাসূল সম্পর্কে ইতিপূর্বে আমরা তোমাকে বলেছি এবং অনেক রাসূল সম্পর্কে বলিনি। আর আল্লাহ মূসার সঙ্গে সরাসরি কথোপকথন করেছেন’।[51]

৭. মহান আল্লাহ বলেন, وَأَوْحَيْنَا إِلَى مُوسَى أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ ‘অতঃপর আমরা মূসাকে অহি করলাম যে, তুমি তোমাদের লাঠি নিক্ষেপ কর। অতঃপর তা সহসাই তাদের জাদুকৃত সবকিছুকে গিলতে লাগল’।[52]

৮. মহান আল্লাহ বলেন, وَمَا نُرْسِلُ الْمُرْسَلِينَ إِلَّا مُبَشِّرِينَ وَمُنْذِرِينَ فَمَنْ آمَنَ وَأَصْلَحَ فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ ‘আমরা নবীগণকে স্রেফ এজন্যই প্রেরণ করে থাকি যে, তারা (ঈমানদারগণকে জান্নাতের) সুসংবাদ দিবে ও (মুশরিকদের জাহান্নামের) ভয় প্রদর্শন করবে। অতএব যে ব্যক্তি ঈমান আনে ও নিজেকে সংশোধন করে নেয়, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিত হবে না’।[53]

৯. মহান আল্লাহ বলেন,

وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ رَسُولٍ إِلَّا لِيُطَاعَ بِإِذْنِ اللهِ وَلَوْ أَنَّهُمْ إِذْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ جَاءُوكَ فَاسْتَغْفَرُوا اللهَ وَاسْتَغْفَرَ لَهُمُ الرَّسُولُ لَوَجَدُوا اللهَ تَوَّابًا رَحِيمًا-مَا أَصَابَكَ مِنْ حَسَنَةٍ فَمِنَ اللهِ وَمَا أَصَابَكَ مِنْ سَيِّئَةٍ فَمِنْ نَفْسِكَ وَأَرْسَلْنَاكَ لِلنَّاسِ رَسُولًا وَكَفَى بِاللهِ شَهِيدًا-

‘আমরা রাসূল পাঠিয়েছি কেবল এই উদ্দেশ্যে যে, আল্লাহর অনুমতিক্রমে তার আনুগত্য করা হবে। আর যদি তারা নিজেদের জীবনের উপর যুলুম করার পর তোমার নিকটে আসে, অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং রাসূলও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তাহ’লে তারা আল্লাহকে তওবা কবুলকারী ও দয়াশীলরূপে পেত।[54] তোমার যে কল্যাণ হয়, তা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়। আর যে অকল্যাণ হয়, তা তোমার (কর্মের) ফলে হয়। বস্ত্ততঃ আমরা তোমাকে মানব জাতির জন্য রাসূল হিসাবে প্রেরণ করেছি। আর (এজন্য) সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট’।[55]

শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবন তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, ‘ইসমাঈলীদের নিকট আম্বিয়ায়ে কেরামের যেসমস্ত গুণাবলীর খবর পৌঁছেছে, তারা তার যৎসমান্যই মানে, অধিকাংশই অস্বীকার করে। তারা ছূফী, কালাম শাস্ত্রবিদ, গূঢ় তত্ববাদী বাতেনী দার্শনিকদের মত নবীদের যাবতীয় গুণাবলী অস্বীকার করে। ইহুদী, খিস্টানরাও নবীদের যাবতীয় গুণাবলীর স্বীকৃতি দেয়, কিন্তু তাদের উপর মিথ্যারোপ করে। তারা একথা নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ তা‘আলা আকাশ-যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং একদিন ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে। কিন্তু এ বিষয়েও তারা মিথ্যারোপ করে এবং মুহাম্মাদী শরী‘আতকে নামকোয়াস্তে স্বীকৃতি দেয়। ফলে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ইসমাঈলীরা এ আক্বীদার ক্ষেত্রে ইহুদী, খ্রিস্টানদের চেয়েও জঘন্য’।[56]

ড. মুখতারুল ইসলাম

লেখক : কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’।


[1]. ইসলামী বিশ্বকোষ, ৫ম খন্ড, পৃ. ২৮০; ইহসান ইলাহী যহীর, আল-ইসমাঈলিয়াহ : তারীখ ওয়া আক্বাইদ পৃ. ২৭৩।

[2]. বাগদাদী, আল-ফারাকু বায়নাল ফিরাকু, ৬২-৬৩ পৃ.; শাহরাস্তানী, আল-মিলাল ওয়ান নিহাল, ১/১৭০ পৃ.।

[3]. আল-ইসমাঈলিয়াহ : তারীখ ওয়া আক্বাইদ পৃ. ২৭৩।

[4]. তদেব।

[5]. তদেব, পৃ. ২৭৮; গৃহীত : কিরমানী, রাহাতুল আকল, ১৩০ পৃ.।

[6]. তদেব, পৃ. ২৭৯; তদেব।

[7]. তদেব।

[8]. তদেব, পৃ. ২৮৫; গৃহীত : আলী ইবন ওয়ালীদ, রিসালাতুল মাবদা ওয়াল মা‘আদ, ১০১ পৃ.।

[9]. তদেব, পৃ. ২৮৬; গৃহীত : মাসায়েলুন মাজমূ‘আহ মিনাল হাকাইকিল ‘আলিয়াহ, ১৮০ পৃ.।

[10]. তদেব, পৃ. ২৮৭; গৃহীত : সিজিস্তানী, ইছবাতুন নবুঅত, ৫৭ পৃ.।

[11]. তদেব।

[12]. তদেব, পৃ. ২৮৮-২৮৯।

[13]. তদেব, পৃ. ২৯৪; মুকাদ্দামাতু রাহাতুল আকল, ৩৪ পৃ.।

[14]. সূরা ক্বিয়ামাহ, ৭৫/২২,২৩।

[15]. আল-ইসমাঈলিয়াহ : তারীখ ওয়া আক্বাইদ, প্রাগুক্ত, পৃ. ৩০০; গৃহীত : জা‘ফর ইবন মানছূর ইয়ামান, কিতাবুল কাশফ, ৩৭ পৃ.।

[16]. তদেব, পৃ. ৩০৩।

[17]. তদেব, পৃ. ৩০১।

[18]. তদেব, পৃ. ২৮৯।

[19]. তদেব, পৃ. ২৯৯; ইদরীস, যাহরাতুল মা‘আনী, ৭৭ পৃ.।

[20]. তদেব, পৃ. ৩১৫।

[21]. সূরা আ‘রাফ, ৭/১৮০।

[22]. সূরা শূরা, ৪২/১১।

[23]. সূরা বনী ইস্রাঈল, ১৭/১১০।

[24]. সূরা ইখলাছ, ১১২/১-৪।

[25]. সূরা যুমার, ৩৯/৬২।

[26]. সূরা হাদীদ, ৫৭/৩-৪।

[27]. সূরা বাক্বারাহ, ২/২১০।

[28]. সূরা নিসা, ৪/১৬৪।

[29]. সূরা ত্বোয়াহা, ২০/৫।

[30]. বুখারী হা/১১৪৫, ১০৭০; মুসলিম হা/৭৫৮; তিরমিযী হা/৪৪৬।

[31]. বুখারী হা/২৮২৬, ১০২০; মুসলিম হা/১৮৯০; নাসাঈ হা/৩১৬৬।

[32]. বুখারী হা/৭৩৮৪,১৫১২; মুসলিম হা/২৮৪৮; তিরমিযী হা/৩২৭২।

[33]. বুখারী হা/৭৪৪৩, ২৩১১; মুসলিম হা/১০১৬;ইবনু মাজাহ হা/১৮৫।

[34]. আল-ইসমাঈলিয়াহ : তারীখ ওয়া আক্বাইদ, প্রাগুক্ত, পৃ. ৩১৯।

[35]. তদেব, পৃ. ৩৩৮।

[36]. তদেব, পৃ. ৩৩৮।

[37]. তদেব, পৃ. ৩২৫; গৃহীত : সিজিস্তানী, কিতাবু ইছবাতিন নবুঅত, লেবানন, বৈরূত, পৃ. ১১১।

[38]. তদেব, পৃ. ৩২২; গৃহীত: রাসায়েলু ইখওয়ানুছ ছাফা ৪/১২৯ পৃ.।

[39]. তদেব, পৃ. ৩২৬; গৃহীত : সিজিস্তানী, কিতাবুল ইফতিখার, লেবানন, বৈরূত, পৃ. ১১১।

[40]. তদেব।

[41]. সূরা নাহল, ১৬/৭৮।

[42]. আল-ইসমাঈলিয়াহ : তারীখ ওয়া আক্বাইদ, প্রাগুক্ত, পৃ. ৩২৬।

[43]. তদেব, পৃ. ৩২৭।

[44]. তদেব, পৃ. ৩২৮,৩২৯।

[45]. তদেব, পৃ. ৩২৮,৩২৯।

[46]. সূরা হজ্জ, ২২/৭৫।

[47]. সূরা আন‘আম, ৬/১২৪।

[48]. সূরা ফাৎহ, ৪৮/২৮।

[49]. সূরা হিজর, ১৫/৯।

[50]. সূরা আ‘রাফ, ৭/১৪৪।

[51]. সূরা নিসা, ৭/১৬৪।

[52]. সূরা আ‘রাফ, ৭/১১৭।

[53]. সূরা আন‘আম, ৬/৪৮।

[54]. সূরা নিসা, ৪/৬৪।

[55]. সূরা নিসা, ৪/৭৯।

[56]. আল-ইসমাঈলিয়াহ : তারীখ ওয়া আক্বাইদ, প্রাগুক্ত, পৃ. ৩৪১।



বিষয়সমূহ: আক্বীদা বিশ্বাস
আরও