শায়খ রবী‘ আল-মাদখালী
তাওহীদের ডাক ডেস্ক
আব্দুল হাকীম 1259 বার পঠিত
ভূমিকা : আধুনিক যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ ছিলেন শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু আলী ইবনু আদম আছয়ুবী (রহ.) (১৯৪৬-২০২০ইং)। মুহাদ্দিছ, ফক্বীহ, নাহুবীদ, উছূলবীদসহ বহুমূখী জ্ঞানের আধার ছিলেন তিনি। তাঁকে একবিংশ শতাব্দীতে ইলমে হাদীছের সবচেয়ে বেশী জ্ঞানের অধিকারী হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। শায়খ আলবানী (রহ.)-এর পরে ইলমে হাদীছে এত জ্ঞানের অধিকারী বিগত দুই দশকে আর কাউকে পাওয়া যায়নি।
জন্ম ও বেড়ে ওঠা :
শায়খ মুহাম্মাদ আল-আছয়ূবী ১৩৬৫ হিজরী মোতাবেক ১৯৪৬ সালে আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন প্রখ্যাত আলেম, ফক্বীহ, উছূলবীদ, মুহাদ্দিছ শায়খ আলী ইবনু আদম ইবনু মূসা আছয়ূবী রাহিমাহুল্লাহ। যিনি আফ্রিকা অঞ্চলের প্রখ্যাত বিদ্বান ছিলেন। শায়খ বলেন, ‘আমার পিতা সকল ভাইবোনের মধ্যে আমাকে আলিম বানানোর জন্য নির্বাচন করেন। আমি পিতার নিকটে সর্বাধিক শাসনে ছিলাম। এমনকি আমার সামান্য শিশুসুলভ ভুলগুলোর জন্যেও পিতার নিকট থেকে অনেক কঠিন শাস্তি পেতে হত। আর জ্ঞান-বিজ্ঞানের এ যুগে যার ফলাফল আপনারা দেখতে পাচ্ছেন’।
শিক্ষাজীবন ও উস্তাযবৃন্দ:
শায়খ মুহাম্মদ ইবনু আদম আছয়ূবী প্রথমতঃ স্বীয় পিতার কাছেই ইলম অর্জন শুরু করেন। পবিত্র কুরআন হিফযের মাধ্যমে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়। তাঁর পিতা তাঁকে পূর্ণাঙ্গ কুরআন হিফয করার জন্য মাহমূদ বিন কুয়াহর নিকট প্রেরণ করেছিলেন। অতঃপর গ্রামের মাদ্রাসাতেই পড়াশুনায় মনোনিবেশ করেন। মূলতঃ শায়খের শিক্ষাজীবন ছিল উস্তাযকেন্দ্রীক ও বিষয় ভিত্তিক। নিম্নে তাঁর কতিপয় উস্তাযের পরিচিতি উপস্থাপন করা হ’ল।-
(১) শায়খ স্বীয় পিতার কাছেই প্রথম আল কুরআন মুখস্থ করেন। এরপর পিতার কাছে আক্বীদার গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্যবই, ফিক্বহে হানাফীর গ্রন্থসমূহ; যেমন মুখতাছার কুদূরী ব্যাখ্যাসহ, কানযুদ দাক্বাইক্ব আল্লামা আইনীর ব্যাখ্যাসহ, উছূলে ফিক্বহের বই আল মানার ব্যাখ্যা ও টিকাসহ, আত তাওযীহর ব্যাখ্যাগ্রন্থ আত-তানকীহসহ, গণিত ও বীজ গণিতের গ্রন্থ, ভূগোল সংক্রান্ত গ্রন্থ সম্পর্কে ইলম অর্জন করেন। এসময় তিনি তাঁর পিতার কাছেই ছহীহ বুখারীর অধিকাংশ হাদীছ পড়েন। মোটকথা তিনি সমসাময়িক প্রয়োজনীয় প্রায় সব ধরনের ইলম তাঁর পিতার কাছেই শেখেন। শুধু তাই নয় তিনি পিতার নিকট থেকে ইলমে হাদীছের বিভিন্ন গ্রন্থের মৌখিক এবং লিখিত ইজাযাহ গ্রহণ করেন।
(২) বিশিষ্ট নাহুবীদ, ভাষা বিশারদ ও সাহিত্যিক শায়খ আল্লামা মুহাম্মদ সা‘দ ইবনুশ শায়খ আলী আদ-দাররী-এর নিকটে তিন বছর ইলম অর্জন করেন। শায়খ আছয়ূবী তাঁর কাছে ছহীহাইনের অংশবিশেষ অধ্যয়ন করেন। এছাড়া নাহু, ছারফ, বালাগাত, মানতিক্ব, গবেষণা ও মুনাযারা পদ্ধতি এবং উছূলে ফিক্বহ বিষয়ে জ্ঞানার্জন করেন। এছাড়া তিনি তাঁর কাছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বই পড়েন। যেমন- আল ফাকিহীর আল ফাকিহুল জানিয়্যাহ, আলফিয়্যাহ ইবনু মালিক, শারহ ইবনু আক্বীল [আলফিয়্যাহ ইমাম মালিক এর ব্যাখ্যা], ইমাম খুযারীর হাশিয়া [আলফিয়্যাহ ইমাম মালিক এর টিকাগ্রন্থ], মুজীবুন নিদা আলা কাতরুন নাদা [ইয়াসিন হিমছীর টিকাসহ], আরবী ই‘রাব সংক্রান্ত গ্রন্থ মুগনীল লাবীব [দাসূক্বী এবং আমীর এর টিকাসহ], ইবনু হাজিব এর আশ-শাফিয়াহ [ব্যাখ্যসহ], ইলমুল বালাগাত এর গ্রন্থ; যেমন, তালখীসুল কাযভীনী [ব্যাখ্যা ও টীকাসহ], ইলমুল মানতিক্ব সংক্রান্ত গ্রন্থ; যেমন, সালমুল মুনাওরাক [ব্যাখ্যা ও টীকাসহ], আল ইসাগূজী [ব্যাখ্যা ও টীকাসহ]। মোটকথা তিনি আরবী সাহিত্য ও ব্যাকরণের সামষ্টিক ইলম অর্জন করেন।
(৩) বিশিষ্ট নাহুবীদ আল্লামা শায়খ আব্দুল বাছীর ইবনু মুহাম্মদ ইবনু হাসান আছয়ূবী আল মিন্নাসী (রহ.)। শায়খ তাঁর কাছে আরবী ভাষা সংক্রান্ত ইলম অর্জন করেন। যেমন মুকাদ্দিমাহ আল-আজরুমিয়্যাহ, মিলহাতুল ইরাব ও তার ব্যাখা কাশফুন নিকাব, আল ফাওয়াকিহুল জানিয়্যাহ, নাযমুল আনওয়ার ফী মুছত্বলাহিল হাদীছ ইত্যাদি।
(৪) শায়খ মুহাম্মদ যাযন ইবনু মুহাম্মদ আছয়ূবী আদ-দানী (রহ.)। তাঁর কাছে ছহীহ মুসলিম পড়েন [ইমাম নববীর ব্যাখ্যাসহ], সুনান বায়হাকীর প্রথমাংশ, ছহীহ বুখারীর অনেক হাদীছ শুনেছেন তাঁর কাছে, আল কুরআনের তাফসীর, ইলমুল বালাগাত সংক্রান্ত বই আল-জাওহিরুল মাকনুন, ত্বলআতুল আনওয়ার [ব্যখ্যাসহ], তাদরীবুর রাবী ইত্যাদি।
(৫) হাবশার প্রখ্যাত মুহাদ্দিছ শায়খ আল্লামা মুহাম্মদ ইবনু রাফি' ইবনু বাছরী। তাঁর কাছে জামে‘ তিরমিযী পড়েন। এছাড়া সুনান আবূ দাঊদ, সুনান নাসাঈ, ইবনু মাজাহ ও ছহীহ মুসলিমের কিছু অংশ পড়েন। তিনি তাঁর কাছ থেকে সম্ভাব্য সকল ইজাযাহ এবং সনদ গ্রহণ করেন। এছাড়া ইলমের বিভিন্ন শাখায় পারদর্শিতা অর্জনের জন্য হাবশার বড় বড় বিদ্বানদের সাহচর্যে তিনি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেন। মোটকথা শায়খ মুহাম্মদ বিন আদম আছয়ূবী (রহ.) অনেক বিজ্ঞ উস্তাদদের নিকট থেকে জ্ঞানার্জন করেন। যাদের কতিপয়ের বর্ণনা শায়খ নিজেই তাঁর 'মাওয়াহিবুছ ছামাদ লিআবদিহী মুহাম্মদ' নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। উল্লেখ্য যে, শায়খের ইলমী জীবনে বিভিন্ন উস্তাযের নিকট থেকে গ্রহণ করা বিভিন্ন বিষয়ের উপর ইজাযাহ ও সনদের সংখ্যা হাযারের অধিক সুবহানাল্লাহ।
কর্মজীবন:
শিক্ষাজীবন শেষে তিনি মক্কাস্থ দারুল হাদীছ আল-খাইরিয়্যাহতে শিক্ষাদান শুরু করেন এবং ইলমের বিভিন্ন ময়দানে গ্রন্থ রচনার মাধ্যমে লেখনীর খেদমতে ব্রত হন। মূলতঃ তিনি দারুল হাদীছ আল-খাইরিয়্যাহতে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন। কিন্তু পরীক্ষকগণ তাঁর ইলমী পারদর্শীতায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেন। তিনি দিনের বেলায় দারুল হাদীছ আল-খাইরিয়্যাহতে এবং রাতে মক্কার হারামে দারস দিতেন। আমৃত্যু তিনি এই দারসে নিমগ্ন ছিলেন। একবার তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আপনি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন না কেন? প্রতিউত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় তো সার্টিফিকেট প্রদানের জায়গা’। শায়খের দারসী জীবনে হাযার হাযার ছাত্র সরাসরি তাঁর নিকট থেকে ইলম অর্জন করেছেন। এছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে তাঁর দারস সারাবিশ্বের লাখ লাখ ছাত্রের মাঝে ছড়িয়ে যেত।
তাঁর সম্পর্কে আলেমদের মন্তব্য:
শায়খ আব্দুল আযীয ইবনু বায, ছালিহ আল উছাইমীন, নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহ.), ছালিহ আল ফাওযান, আব্দুল কারীম আর খুযাইর (হাফি.) প্রমুখ তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
শায়খ বিন বায (রহ.) তাঁর সাথে সাক্ষাতের পর তাঁকে আল্লামা এবং মহান আলেম হিসাবে উল্লেখ করেছেন। শায়খ আব্দুর রহমান আস-সুদাইসী (হাফি.) তাঁকে দেখলে মাথায় চুমু দিয়ে বলেন, ‘হে হাদীছের ইমাম! হাদীছের উস্তায ও ডাক্তার! আপনি আমাকে ইমাম মুসলিম (রহ.)-এর ঐ কথা মনে করিয়ে দিলেন যা তিনি ইমাম বুখারী (রহ.)-কে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, হে উস্তাযদের উস্তায, মুহাদ্দিছদের শিরোমণি, ইলালুল হাদীছের ডাক্তার! আপনি আমাকে সুযোগ দেন, আমি আপনার পদযুগল চুম্বন করি। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনার মত দ্বিতীয় কোন ব্যক্তি বর্তমানে পৃথিবীতে নেই’।
আল্লামা শায়খ রাবী ইবনু হাদী আল মাদখালী (হাফি.) তাঁর সম্পর্কে বলেন, ‘প্রত্যেক বিষয়েই তিনি আলেম’। শায়খ মুক্ববীল বিন হাদী ওয়াদিঈ (হাফি.) তাঁর সম্পর্কে বলেন, ‘তিনি হচ্ছেন জ্ঞানের সমুদ্র’। তাঁর সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে যে, তিনি ছিলেন সাত বা আটশত বছর পূর্বের মহামতি আলেমদের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি, যারা দুনিয়াবিমূখতার সাথে সাথে ইলমী গভীর পান্ডিত্যের অধিকারী ছিলেন। বর্তমান সময়ে যা খুবই বিরল।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলী:
শায়খ আল-আছয়ূবী (রহ.) কর্তৃক রচিত বিভিন্ন শাস্ত্রের উপর বহু গ্রন্থাবলী তাঁর নানামুখী প্রতিভার স্বাক্ষর বহন করে। তিনি তাঁর একনিষ্ঠ ইখলাছ ও অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় হাযারের অধিক খন্ডে রচিত বিশাল লেখনীর খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন। নিম্নে তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহের বিবরণ দেয়া হ’ল-
(ক) হাদীছ ও ঊলুমুল হাদীছ :
১. সুনান আন নাসাঈর ব্যাখ্যাগ্রন্থ যাখীরাতুল ঊক্ববা ফী শারহিল মুজতবা যা ৪২খন্ডে রচিত। প্রতিটি খন্ড প্রায় ৫০০-৭০০ পৃষ্ঠা সমৃদ্ধ। গ্রন্থটি সম্পর্কে শায়খ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহ.) বলেন, ‘সুনান নাসাঈর উপর এরূপ আর কোন ব্যাখ্যাগ্রন্থ আছে বলে আমার জানা নেই’।
২. ছহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যাগ্রন্থ আল-বাহরুল মুহীত্ব আছ-ছাজ্জাজ শারহু ছহীহ মুসলিম ইবনিল হাজ্জাজ। যা ৪৫খন্ডে রচিত। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ ফযীলাতুশ শায়খ উস্তায আব্দুল মুহসিন আল-আববাদ (হাফি.)-কে ছহীহ মুসলিমের সর্বোত্তম ব্যাখ্যাগ্রন্থ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হ’লে তিনি শায়খ মুহাম্মদ ইবনু আদম আছয়ূবী কর্তৃক লিখিত উল্লেখিত ব্যাখ্যাটির কথা উল্লেখ করেন।
৩. সুনান ইবনু মাজাহ’র ব্যাখ্যাগ্রন্থ মাশারিকুল আনওয়ার আল-ওয়াহহাজাহ ওয়া মাতালিঊল আসরার আল বাহহাজাহ ফী শারহি সুনানি ইবনি মাজাহ। যা ১০খন্ডে রচিত।
৪. ছহীহ মুসলিমের ভূমিকার ব্যাখ্যাগ্রন্থ কুররাতু আয়নিল মুহতাজ ফী শারহি মুকাদ্দিমাতি মুসলিম ইবনিল হাজ্জাজ। যা ২খন্ডে রচিত।
৫. ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম (রহ.)-এর জীবনী সংক্রান্ত গ্রন্থ কুররাতুল আঈন ফী তালখীছি তারাজিমীছ ছহীহায়ন।
৬. ইমাম সুয়ূত্বী (রহ.) রচিত উছূলে হাদীছ সংক্রান্ত গ্রন্থ 'আলফিয়্যাতুস সুয়ূত্বী'-এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ইস‘আফু যাভীল ওয়াতর ফী শারহী নাযমিদ দুরার। যা ২খন্ডে রচিত।
৭. নাযমু শাফিয়াতিল গিলাল ফী আলফিয়্যাতিল ঈলাল।
৮. মুযীলুল খালাল শারহু শাফিয়াতিল গিলাল ।
৯. নাযমু জাওয়াহিরিন নাফীস ফী নাযমীল আসমা-ই ওয়া মারাতিবীল মাওসূফীনা বিত-তাদলীস।
১০. আল জালীসুল আনীস ফী শারহি জাওয়াহিরিন নাফীস।
১১. তাযকিরাতুত ত্বলিবীন ফী যিকরিল মাওযূঈ ওয়া আছনাফিল ওয়াযযাঈন।
১২. আল জালীসুল আমীন ফী শারহি তাযকিরাতিত ত্বলিবীন।
১৩. নাযমু ইতহাফি আহলিস সাআ‘দাহ বিমা‘রিফাতি আসবাবিশ শাহাদাহ।
১৪. রফঊল গয়নি ফী ছূবূতী যিয়াদাতি ওয়া বারাকাতিহী ফিত তাসলীমি মিনাল জানিবাইন।
১৫. ঊমদাতুল মুহতাত্ব ফী নাযমি আসমাই মান রুমিয়া মিনাস ছিকাতি বিল ইখতিলাত্ব।
১৬. ঊদ্দাতু উলিল ইগতিবাত্ব ফী শারহি ঊমদাতিল মুহতাত্ব।
১৭. বুগয়াতু ত্বলিবিস সা‘আদাহ ফী শারহি ইতহাফি আহলিস সাআ‘দাহ বিমা‘রিফাতি আসবাবিশ শাহাদাহ।
১৮. ইতহাফুন নাবীল বিমুহিম্মাতি ইলমিল জারহি ওয়াত তা‘দীল।
১৯. ইযাহুস সাবীল ফী শারহি ইতহাফিন নাবীল।
২০. ক্বাসীদাতুন ফী মাদখালি শারহিন নাসাঈ।
২১. ক্বাসীদাতুন ফির রদ্দি আলা বকর ইবনি হাম্মাদ আশ শাঈর আল মাগরিবী ফী যাম্মিহী ইলমিল হাদীছ ওয়া আহলিহী।
২২. মুখতাছার মাজমাঊল ফাওয়ায়েদ ওয়া মানবাঊল আওয়ায়েদ বিযিকরিল আছবাত ওয়াল আসানী। যা মাওয়াহিবুছ ছামাদ লিআবদিহী মুহাম্মদ নামে প্রসিদ্ধ।
(খ) ইলমুন নাহু, ফিক্বহ, কবিতা ও অন্যান্য বিষয়:
২৩. ইলমুন নাহু বিষয়ে রচিত 'ফাতহুল করীবিল মুজীব শারহু মুদনীল হাবীব নাযমু মুগনীল লাবীব'। যার কবিতা লিখেছেন শায়খ আব্দুল বাসিত্ব ইবনু মুহাম্মদ (রহ.)। ২ খন্ডে রচিত।
২৪. উছূলে ফিক্বহ বিষয়ে রচিত 'আল-জালীসুছ ছালিহুন নাফি' শারহুল কাওকাবিস সাত্বি।
২৫. ইলমুন নাহু বিষয়ে কবিতার গ্রন্থ আত তুহফাতুল মারযিয়্যাহ নাযমুন ফী উছূলিল ফিক্বহী আলা ত্বরিক্বাতি আহলিস সুন্নাতিস সানিয়্যাহ'। উল্লেখিত গ্রন্থটিতে মোট ৩০৭২টি কবিতার পংক্তি সন্নিবেশিত হয়েছে।
২৬. আল মিনহাতুর রযিয়্যাহ ফী শারহিত তুহফাতিল মারযিয়্যাহ। যা ৩ খন্ডে রচিত।
২৭. ফাতহুল কারীমিল লাত্বীফ শারহু আরজূযাতিত তাছরীফ। আলোচ্য গ্রন্থে লেখক রাহিমাহুল্লাহ শায়খ আব্দুল বাসিত্ব (রহ.) কর্তৃক রচিত 'আল মুরাহ ফিছ ছরফ' গ্রন্থের ব্যাখ্যা করেছেন।
২৮. আল ফাওয়াইদুস সামিয়্যাহ ফী ক্বাওয়াঈদি ওয়া যওয়াবিতি ইলমিয়্যাহ।
২৯. ক্বাছীদাতুর রদ্দিল মুবকী লিলমুজরিমিদ দায়নুমারকী। ইলমুন নাহু, ভাষা, হাদীছ এবং ফিক্বহ বিষয়ে কবিতা ও গদ্য সমৃদ্ধ ফাওয়ায়েদ গ্রন্থ 'জামিঊল ফাওয়ায়েদ ওয়া যওয়াবিতুল আওয়ায়েদ’।
৩০. ইবনু তাইমিয়্যাহ (রহ.) কর্তৃক রচিত মুক্বাদ্দিমাতুত তাফসীর গ্রন্থের কবিতার সংকলন 'নাযমু মুক্বাদ্দিমাতিত তাফসীর।
৩১. তাওহীদ বিষয়ে কবিতার গ্রন্থ নাযমুন ফী ইলমিত তাওহীদ।
৩২. নাযমু খতিমাতিল মিসবাহ আল-মুনীর।
৩৩. রিজযুন ফী ইলমিল আরুয ওয়াল ক্বাওয়াফী।
৩৪. আগন্তুক ব্যক্তির সম্মানার্থে দাঁড়ানো, হাতে চুম্বন ও তদ্বসংশ্লিষ্ট বিধি বিধান সংক্রান্ত বিষয়ে রচিত ‘ইতহাফু যাভীল হিম্মাহ বিফাওয়াইদিন মুহিম্মাহ।
এর বাইরে শায়খের ছহীহ বুখারীর ব্যাখ্যার অডিও রয়েছে। এছাড়াও শায়খের প্রকাশিত এবং অপ্রকাশিত অনেক গ্রন্থ রয়েছে।
মৃত্যু :
বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ ও ফক্বীহ এবং প্রখ্যাত সালাফী বিদ্বান শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু আলী ইবনু আদম আল-আছয়ূবী গত ৮ই অক্টোবর ২০২০ রোজ বৃহস্পতিবার সকালে মক্কাস্থ আন-নূর হাসপাতালে ৭৪ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন)। মক্কার জামিঊল মুহাজিরীন মসজিদে মাগরিব ছালাতের পর প্রথম জানাযা এবং মাসজিদুল হারামে এশার ছালাতের পর দ্বিতীয় জানাযার পর তাঁকে শুহাদাউল হারাম কবরস্থানে দাফন করা হয়। আল্লাহ রাববুল আলামীন তাঁর পাপমোচন করুন এবং জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন। আমীন!
আব্দুল হাকীম
লেখক : ছাত্র, হাদীছ বিভাগ, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব।