নজ্দী-ওহাবী সম্প্রদায় সম্পর্কে বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সাংবাদিক মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর মন্তব্য

তাওহীদের ডাক ডেস্ক 470 বার পঠিত

বর্ত্তমান যুগে পৃথিবীতে এছলাম ধর্ম্মনীতির খুব নিকটবর্তী যদি কোন দল থাকে তাহা নজদিরা। ইহাদের চালচলন, ধর্ম্মবিশ্বাস অনেকটা এছলামি প্রাথমিক যুগের মোছলমানগণের অনুরূপ। ইহাদের মধ্যে শের্ক, বেদআৎ আদৌ নাই। তাহারা নমাজ, রোজা ইত্যাদি ধর্ম্মকর্ম্মের পুরোপুরি পাবন্দ্। তাহাদের প্রদেশে কোন প্রকার মাদক দ্রব্যের ব্যবহার আদৌ নাই। শরাব, তাড়ি, আফিম, ভাঙ্গ, সিদ্ধি, তামাক, চরুট, সিগারেট ইত্যাদি একটী প্রাণীও ব্যবহার করে না। চা পান করিলে তাহাতেও সামান্য নেশার ভাব আসিতে পারে মনে করিয়া চা, কফি পর্য্যপ্ত তাহারা পান করে না। অথচ তাহাদের প্রতিবেশী হেজাজি আরবদের ন্যায় চা-পায়ী লোক খুবই বিরল। ইহারা নিতান্ত মত্তকি পরহেজগার। দুঃখের বিষয় শিক্ষাক্ষেত্রে অত্যন্ত পশ্চাৎপদ। দুনিয়ার বড় একটা খোজ খবর রাখে না। গোঁড়ামীতে চুড়ান্ত। ইহারাও কারো বশ্যতা স্বীকার করে নাই। ইহারা এক সময় সমগ্র আরব দেশে প্রাধান্য স্থাপন করিয়াছিলেন। আববাছ বংশীয় ও ওছমানীয় বংশীয় পূবর্ববর্ত্তী খলিফাদের সহিত নজদবাসীরা টক্কর দিতে কুন্ঠিত হন নাই।

আরবদেশও আরব জাতির মধ্যে আজও এয়মন ও নজদ এই দুইটী ক্ষুদ্র রাজ্য নিজ নিজ স্বাধীনতা রক্ষা করিয়া আসিয়াছেন এবং বলিতে গেলে সমগ্র পৃথিবীর মধ্যে এই দুই স্থানের আরবদের মধ্যে এখনও প্রাথমিক যুগের এছলামের শিক্ষা দীক্ষা অনেকাংশে বিদ্যমান আছে। সম্ভবতঃ এই কারণেই তাহারা কাহারোও অধীন হয় নাই। ইহাদের মধ্যে তেমন উল্লেখযোগ্য কোন উচ্চ লক্ষ্য ও উচ্চ চিন্তা না থাকিলেও তাহাদের স্বাভাবিক শৌর্য-বির্য্য ও নৈতিকবল বিশেষ প্রশংসার্হ।

[মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী (১৮৭৫-১৯৫০ খৃ.) রচনাবলী, প্রবন্ধ শিরোনাম : এছলাম জগতের অভ্যুত্থান (ঢাকা : বাংলা এডেমী, ১৯৯৩); ১/২৮৩ পৃ.]



আরও