ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও তার অসারতা
তাওহীদের ডাক ডেস্ক
ভূমিকা :
মানব জীবন বড়ই বন্ধুর। জীবনে নানা ঘাত-প্রতিঘাত জীবনকে প্রতিনিয়ত যেমনি শুধরিয়ে দেয় তেমনি আবার কলুষিতও করে থাকে। পৃথিবীতে সৃষ্ট প্রাণীর মধ্যে মানুষই সর্বশ্রেষ্ঠ। এ শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের পেছনে যে বিষয়গুলো সদা ক্রিয়াশীল তা হলো তার বিবেক, বুদ্ধি, বিচক্ষণতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। বিবেক হলো মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তি যার দ্বারা ন্যায়, অন্যায়, ভালোমন্দ, ধর্মাধর্ম বিচার-বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা অর্জিত হয়। বুদ্ধি হলো তার ধীশক্তি বা বোধশক্তি যার দ্বারা তার জীবন ও জগতে সংগঠিত যাবতীয় ক্রিয়াকলাপে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়ার বিজ্ঞানময় দক্ষতা নির্ণীত হয়। বিচক্ষণতা হলো তার দূরদর্শীতা যার মাধ্যমে মানুষ জীবনে আগত ও অনাগত বিষয়ে পান্ডিত্য প্রদর্শন করে নিজেকে সর্বত্র সাবলীল ও সফল করে তুলতে সক্ষম হয়। আর নিয়ন্ত্রণ হলো সংযম যার দ্বারা মানুষ তার জীবনের সর্বত্র সংযত ও শৃংখলিত জীবনবোধ অনুধাবনে সক্ষম হয়। সুন্দর ও আদর্শ জীবন গঠনের উল্লেখিত সূচকগুলো যার কারণে প্রায়শ বাধাগ্রস্থ ও প্রতিহত হয় তা হলো ‘ষড়রিপু’।
মানুষের এ রিপু ছয়টি সর্ম্পকে সামান্য পরিচিতি হওয়া যাক। ষড়রিপু অর্থাৎ মানুষের চরম ও প্রধান ছয়টি শক্র হলো- কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য। ইংরেজী ও সংস্কৃতিতে বলে- 1. Sex urge (Sanskrit: Kama), 2. Anger (Sanskrit: Krodha), 3. Cupidity, Greed (Sanskrit: Lobha), 4. Attachment, Illusion (Sanskrit: Moha), 5. Arrogance, Pride (Sanskrit: Mada), 6. Envy, Covetousness (Sanskrit: Matsarya).
প্রতিটি রিপুই মানুষের প্রয়োজনে সৃষ্ট এবং প্রতিটির দক্ষ ব্যবহার কাম্য। যেমন টক-ঝাল-মিষ্টি-লবণ প্রতিটিই প্রয়োজন। কিন্তু অধিক ব্যবহারে প্রতিটিই ক্ষতিকর। জীবনের চলার পথে ষড়রিপু আমাদের সার্বক্ষণিক সাথী। এগুলি ডাক্তারের আলমারিতে সাজানো ‘পয়জন’ (Poison)-এর শিশির মত। যা তিনি প্রয়োজনমত রোগীর প্রতি ব্যবহার করেন। নিমেণ বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
এক. কাম রিপু :
কাম শব্দের আভিধানিক প্রতিশব্দ হলো সম্ভোগেচ্ছা। কাম শব্দটির বহুবিধ ব্যবহার থাকলেও যৌনবিষয়ক সম্ভোগশক্তিকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। এ কামশক্তি মানুষের জন্য অপরিহার্য। কামশক্তি নেই সম্ভবত এমন কোন প্রাণীই নেই। এ শক্তি ব্যতিরেকে একজন মানুষ গতানুগতিক রীতিতে সে অপূর্ণ মানুষ বলে বিবেচিত হয়। এ শক্তিতে অপূর্ণ হলে স্বামী তার স্ত্রীর কাছে যেমন মূল্যহীন আবার স্ত্রী তার স্বামীর কাছেও মূল্যহীন হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয় পৃথিবীতে মানুষ আবাদের কাজটিই অচল হয়ে পড়ে। পৃথিবীর সমুদয় মূল্যই মূল্যহীন হয়ে পড়ে। মোটকথা পৃথিবীতে নারী- পুরুষের জীবন ও যৌবন ঘটিত কোন প্রকার সর্ম্পকই থাকে না। থাকে না প্রেম, ভালবাসা এবং থাকে না রূপ, রস, গন্ধ, শব্দ, স্পর্শ এ পঞ্চগুণের উজ্জীবিত ও সজীব জীবনের উপস্থিতি।
সুতরাং মানুষ মাত্রই থাকা চাই কামশক্তি, তবে তা হতে হবে নিয়ন্ত্রিত। এই নিয়ন্ত্রিত কামশক্তি যখন অনিয়ন্ত্রিত, বেপরোয়া ও বেসামাল হয়ে যায় তখনই তা হয়ে যায় শত্রু। অনিয়ন্ত্রিত কামশক্তি জন্ম দেয় অশালীন প্রেম, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে অবিশ্বাস ও কলংক। এমর্মে মহান আল্লাহ বলেন,وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا ‘তোমরা যিনা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না, কেননা তা অত্যন্ত নির্লজ্জ কাজ এবং খুবই খারাপ পথ’ (ইসরা-১৭/৩২)। প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে কোনভাবেই এই অশ্লীলতার নিকটে গমন করা যাবে না, এসম্পর্কে আল্লাহ বলেন, وَلَا تَقْرَبُوا الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ ‘লজ্জাহীনতার যত পন্থা আছে, উহার নিকটবর্তী হবে না, তা প্রকাশ্যেই হোক অথবা অপ্রকাশ্যে হোক’ (আন‘আম-৬/১৫১)।
কামশক্তি যখন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লাগামহীন হয়ে বেপরোয়াভাবে চলতে থাকে তখন মানুষের নানা প্রকার বিপর্যয় নেমে আসে। অবৈধ ভালবাসা, পরকিয়া, ব্যাভিচার, অনাচার, অশ্লীলতা, ধর্ষণ, খুন, ইত্যাদির মত নানা প্রকার গর্হিত কাজে মানুষ জড়িয়ে পড়ে।
মানুষ কামশক্তির নিয়ন্ত্রণ হারানোতে চূড়ান্ত ফলাফল হ’ল মানব সমাজে অসামাজিকতা, অনৈতিকতা, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, নগ্নতা ও অবৈধ যৌনতার বিষাক্ত ছোবলে মানবিক, নৈতিক, পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ মারাত্মক ভাবে হ্রাস পায়, ফলে সমাজ জীবনে এর তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদী নানা ধরনের মারাত্মক পারিবারিক ও সামাজিক বিরূপ প্রতিক্রয়ার বিষাক্ত ফলাফল প্রকাশিত হয় এবং মহামারী আকারে তা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। সমাজে দায়-দায়িত্বহীন অবাধ অবৈধ যৌনতার প্রসার ঘটে এবং বিবাহ নামক পবিত্র দায়িত্বপূর্ণ সামাজিক বন্ধনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত বৈধ যৌন সম্পর্কের প্রতি মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। ফলে মানব সমাজ ও সভ্যতা ধীরে ধীরে দায়-দায়িত্বহীন অসভ্য-বর্বর পাশবিক সমাজের দিক দ্রুত ধাবিত হয়। ফলে মনুষত্ব হারিয়ে পশুত্ব বরণ করে নেয়। ফলে পারিবারিক ও সামাজিক পবিত্র বন্ধন শিথিল হয়ে যায় এবং নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় সমাজের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। বাঁধাহীন অশ্লীলতার মারাত্মক সয়লাবে কলুষিত সমাজে ধর্ষণ, পরকীয়া, অবৈধ গর্ভধারণ, অবৈধ গর্ভপাত, আত্মহত্যা, মানসিক বিকৃতি, সংসার ভাঙ্গন ও অবৈধ সন্তানের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব ঘটে। নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ফলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটে। ফলে সমাজে চুরি, ডাকাতি, লুট, ছিনতাই, রাহাজানি, গুম ও খুন এর ব্যাপক সয়লাব ঘটে।
মুসলমান হিসাবে আমাদের জানা থাকা দরকার যে, বিবাহের পূর্বে নারী-পুরুষের পরস্পর অবাধ দেখা-সাক্ষাত, কথা-বার্তা, মেলা-মেশা, প্রেম-ভালবাসা ইসলামী সংবিধানে সম্পূর্ণভাবে হারাম। ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহের পূর্বে যুবক-যুবতীদের প্রেম-ভালবাসা বলতে কিছুই নেই। পবিত্র কুরআন ও হাদীছের আলোকে ভালবাসা কেবল বিবাহের পর। বিয়ের পরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে ভালবাসা সৃষ্টি হয় এর মধ্যে বহুবিধ কল্যাণ রয়েছে । এসম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُمْ مَوَدَّةً وَرَحْمَةً إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ ‘তোমাদের নিজেদের মধ্য থেকেই তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি লাভ কর এবং তোমাদের পরস্পরের মাঝে হৃদ্যতা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন’ (রূম: ৩০/২১)। দাম্পত্য জীবনের জন্য রোমান্টিক প্রেমের পরিবর্তে বাস্তব প্রেম ও পরস্পরের প্রতি দয়া, সহমর্মিতা ও সহনশীলতাপূর্ণ ভালবাসা একান্ত প্রয়োজন।
ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে যারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের উপর বিশ্বাসী তারা শুধুমাত্র হৃদয়ের আবেগে বা নফসের কামনা-বাসনায় বা জৈবিক লালসায় অবৈধ ভালবাসার লাগামহীন পথে পা বাড়ায় না, বরং তারা জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে সর্বদা আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা মেনে চলেন। কেবলমাত্র ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণের লক্ষ্যে কামশক্তিতে প্রভাবিত হয়ে বিবাহ নামক পবিত্র সামাজিক বন্ধনের মাধ্যমেই নারী-পুরুষের স্বীকৃত বৈধ দাম্পত্য সম্পর্ক গড়ে তোলেন। মুমিনদের এই পবিত্র ভালবাসার দায়-দায়িত্ব ও কল্যাণকর প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা বলেন,وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَيُطِيعُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُولَئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ وَعَدَ اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ وَرِضْوَانٌ مِنَ اللَّهِ أَكْبَرُ ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ ‘মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী একে অপরের অভিভাবক ও বন্ধু। তারা ভাল কাজের আদেশ দেয়, খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে, ছালাত কায়েম করে, যাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। আল্লাহ তাদের প্রতি অচিরেই রহমত নাযিল করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, মহাপ্রজ্ঞাময়। আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্য এমন জান্নাতের অঙ্গীকার করেছেন যে জান্নাতের নীচে দিয়ে ঝর্ণাসমূহ বয়ে যায়। সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেন মহাপবিত্র স্থায়ী বাসস্থান আদন নামক জান্নাতের। বস্ত্তত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই সর্বশ্রেষ্ঠ এবং এটাই সবচেয়ে বড় সফলতা’ (তাওবা ৯/৭১-৭২)।
'ভালবাসা' পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর কোমল দুরন্ত মানবিক অনুভূতি। ভালবাসা নিয়ে ছড়িয়ে আছে কত শত পৌরাণিক উপাখ্যান। সাহিত্য-শিল্প-সংস্কৃতি সর্বত্রই পাওয়া যায় ভালবাসার সন্ধান। এই ভালবাসা গড়ে উঠে পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন এবং স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে। স্বামী-স্ত্রীর ভালবাসার অকৃত্রিম বন্ধন গড়ে বিবাহের পর। তাই বলা হয়, দু’টি মনের অভিন্ন মিলনকে ভালবাসা বলে। এই ভালবাসার রূপকার মহান আল্লাহ। ভালবাসা’ শব্দটি ইতিবাচক। মহান আল্লাহ সকল ইতিবাচক কর্ম-সম্পাদনকারীকেই ভালবাসেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ وَأَحْسِنُوا إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ ‘এবং স্বহস্তে নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়ো না। তোমরা সৎকর্ম কর, নিশ্চয়ই (বাক্বারাহ ২/১৯৫)। ভুলের পর ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং পবিত্রতা অবলম্বন করা এ দুটিই ইতিবাচক কর্ম। তাই আল্লাহ তাওবাকারী ও পবিত্রতা অবলম্বনকারীদেরকেও ভালবাসেন। মহান আল্লাহ বলেন, إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ (বাক্বারাহ ২/২২২)। তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতি সকল কল্যাণের মূল। আল্লাহ তা’আলা মুত্তাকীদেরকে খুবই ভালবাসেন। এমর্মে বলেন, فَإِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِينَ ‘আর নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালবাসেন’ (ইমরান ৩/৭৬)।
ভালবাসা হৃদয়ে লুকিয়ে থাকা এক অদৃশ্য সুতোর টান। কোন দিন কাউকে না দেখেও যে ভালবাসা হয় এবং ভালবাসার গভীর টানে রূহের গতির এক দিনের দূরত্ব পেরিয়েও যে দুই মুমিনের সাক্ষাত হ’তে পারে তা ইবন আববাস (রাঃ) এক বর্ণনা থেকে আমরা পাই। তিনি বলেন, النِّعَمُ تُكْفَرُ ، والرَّحِمُ تُقْطَعُ ، ولَم نَرَ مِثَل تَقَارُبِ القُلُوبِ ‘কত নিয়ামতের শুকরিয়া করাকে অগ্রাহ্য করা হয়, কত আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা হয়, কিন্তু অন্তরসমূহের ঘনিষ্টতার মত (শক্তিশালী বন্ধন) কোন কিছুই আমি কখনও দেখিনি’।[1]
কাউকে ভালবাসতে হ’লে সেই ভালবাসার মানদন্ড থাকতে হবে ইসলামী শরী‘আত মোতাবেক। কাউকে ভালবাসার আগে আল্লাহর জন্য হৃদয়ের গভীরে সুদৃঢ় ভালবাসা রাখতে হবে। কিছু মানুষ এর ব্যতিক্রম করে। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِلَّهِ ন্তু যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ভালবাসায় তারা সুদৃঢ়’ (বাক্বারাহ: ২/১৬৫)। শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসতে হবে, নতুবা কোন ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পাবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ثَلاَثٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ حَلاَوَةَ الإِيمَانِ أَنْ يَكُونَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا ، وَأَنْ يُحِبَّ الْمَرْءَ لاَ يُحِبُّهُ إِلاَّ لِلَّهِ ، وَأَنْ يَكْرَهَ أَنْ يَعُودَ فِى الْكُفْرِ كَمَا يَكْرَهُ أَنْ يُقْذَفَ فِى النَّارِ ‘তিনটি গুণ যার মধ্যে থাকে সে ঈমানের স্বাদ পায়। ১. আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার কাছে অন্য সব কিছু থেকে প্রিয় হওয়া। ২. শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসা। ৩. কুফূরীতে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মত অপসন্দ করা’।[2] কোন ব্যক্তির সাথে শত্রুতা রাখার মানদন্ড হলো একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি। শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসতে হবে অথবা শত্রুতা রাখতে হবে। এটাই শ্রেষ্ঠতম কর্মপন্থা। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, إِنَّ أَحَبَّ الأَعْمَالِ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ الْحُبُّ فِى اللَّهِ وَالْبُغْضُ فِى اللَّهِ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট শ্রেষ্ঠ আমল হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসা এবং শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কারো সাথে শত্রুতা পোষণ করা’।[3] আর আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ভালবাসার ফযীলত হ’ল মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও মহত্ত্বের নিমিত্তে যারা পরস্পর পরস্পরের মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক স্থাপন করে, ক্বিয়ামতের দিন তাদেরকে তিনি তাঁর রহমতের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। এ মর্মে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَيْنَ الْمُتَحَابُّونَ بِجَلاَلِى الْيَوْمَ أُظِلُّهُمْ فِى ظِلِّى يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلِّى ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, আমার মহত্ত্বের নিমিত্তে পরস্পর ভালবাসার সম্পর্ক স্থাপনকারীরা কোথায়? আজ আমি তাদেরকে আমার বিশেষ ছায়ায় ছায়া দান করব। আজ এমন দিন, যে দিন আমার ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া নেই’।[4]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আরও বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এমন কিছু মানুষ আছে যারা নবীও নয়, শহীদও নয়; কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হ’তে তাঁদের সম্মানজনক অবস্থান দেখে নবী এবং শহীদগণও ঈর্ষান্বিত হবেন। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাদেরকে বলুন, তারা কারা? তিনি বললেন, তারা ঐ সকল লোক, যারা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই একে অপরকে ভালবাসে। অথচ তাদের মধ্যে কোন রক্তের সম্পর্ক নেই, কিংবা কোন অর্থনৈতিক লেন-দেনও নেই। আল্লাহর শপথ! নিশ্চয়ই তাঁদের চেহারা হবে নূরানী এবং তারা নূরের মধ্যে থাকবে। যে দিন মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত থাকবে, সেই দিন তাঁদের কোন ভয় থাকবে না এবং যে দিন মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকবে, সে দিন তাঁদের কোন চিন্তা থাকবে না..’।[5]
পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য স্থাপিত না হলে পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়া যায় না, শান্তিও নিরাপত্তা লাভ করা যায় না, এমনকি জান্নাতও লাভ করা যাবে না। তাই রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মুমিনদের পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির জন্য একটি চমৎকার পন্থা বাতলে দিয়েছেন। তিনি বলেন, لَا تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا وَلَا تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا أَوَلَا أَدُلُّكُمْ عَلَى شَيْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ أَفْشُوا السَّلَامَ بَيْنَكُم ‘তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার না হবে, তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য স্থাপন করবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন বিষয়ের কথা বলব না, যা করলে তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠিত হবে? ছাহাবীগণ বললেন, নিশ্চয়ই ইয়া রাসূলাল্লাহ! (তিনি বললেন) তোমাদের মধ্যে বহুল পরিমাণে ছালামের প্রচলন কর’।[6]
মানব প্রকৃতির মধ্যে লজ্জা প্রবণতা জন্মগত এক অতীব স্বাভাবিক প্রবণতা। আর এই লজ্জাশীলতা মানুষকে তার তাক্বওয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা ও শালীনতা প্রবৃদ্ধি করে। পক্ষান্তরে কাম রিপুর দাসত্ব প্রবল হলে নির্লজ্জতা মানুষকে আল্লাহভীতি থেকে বিরত রাখে ও অশ্লীলতার দিকে আহবান করে। যার ফলে মানুষ পশুর পর্যায়ে চলে যায়। শালীনতা ও অশালীনতার মধ্যে পার্থক্য ভুলে যায়। বিবেক নামের স্বচ্ছ যন্ত্রটি অকেজো হয়ে যায়। হিতাহিত জ্ঞান লোপ পায়। এছাড়াও মানব শরীরের যে সকল অংশ নারী পুরুষের জন্য যৌন আকর্ষণ আছে, তা প্রকাশ্যে লজ্জা বোধের সাথে আচ্ছাদিত ও কাম রিপুকে নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রচেষ্টা করা মানব প্রকৃতির স্বাভাবিক স্বভাব। যদি কেউ তা না করে, তবে সে নিজেকে নির্লজ্জ বেহায়ার মত নিজের কুরুচি প্রকাশ করে, যা ইসলামী শরী‘আতে গর্হিত কাজ। অবশ্য শয়তান মানুষের কাম রিপুকে অনিয়ন্ত্রণ করতে প্রলুব্ধ করে থাকে, যেন মানুষ লজ্জাকে পিছনে ফেলে নিজের নির্লজ্জতা প্রকাশ করে। শয়তান মানুষকে এব্যাপারে প্ররোচিত করে এমর্মে মহান আল্লাহ বলেন,فَوَسْوَسَ لَهُمَا الشَّيْطَانُ لِيُبْدِيَ لَهُمَا مَا وُورِيَ عَنْهُمَا مِنْ سَوْآَتِهِمَا ‘অতঃপর শয়তান আদম ও তার স্ত্রীকে প্ররোচিত করলো, যেন তাদের যে অংশ আচ্ছাদিত ছিল তা তারা উন্মুক্ত করে’ (আ‘রাফ ৭/২০)।
এছাড়াও মানুষ যখন কাম রিপুর গোলাম হয়ে অবৈধ ও অশ্লীলতার প্রতি আগ্রহশীল হবে তখন ব্যাভিচার ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়বে। যার ফলে দুনিয়াতে নতুন নতুন রোগ-ব্যাধীর প্রাদুর্ভাব ঘটবে। তাছাড়া জনপদ বিধ্বংসী মহামারী ব্যাধিও ছড়িয়ে যাবে মর্মে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘পাঁচটি জিনিস দিয়ে তোমাদেরকে পরীক্ষা করা হবে। সেই জিনিসগুলোর সম্মুখীন হওয়া থেকে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। যখন কোন জাতির মাঝে ব্যাভিচার ও অশ্লীলতা প্রকাশ পায় এমনকি তা তারা ঘোষণা দিয়ে প্রকাশ্যে করতে থাকে তখন তাদের মাঝে মহামারি, প্লেগ ও জনপদ বিধ্বংসী ব্যাধি দেখা দিবে যা তাদের পূর্ব পুরুষদের মাঝে ছিল না’।[7] অন্যত্র, ‘যদি কোন শহরে যেনা ও সুদের লেনদেন সাধারণ ভাবে প্রচলিত হ’তে থাকে, তখন ঐ শহরবাসীর উপর আল্লাহর বিবিধ প্রকার আযাব গযব নাযিল করা হালাল হয়ে যায়’। ‘যখন কোন সমাজে ব্যাপক ভাবে ব্যাভিচার প্রকাশ পাবে তখন তাদের মাঝে চিকিৎসার অনুপযোগী ব্যাধিসহ মহামারী আকারে রোগ ব্যাধি বৃদ্ধি পাবে’।
যেনার সাথে আরও একটি জঘন্যতম ব্যভিচারের নাম সমমৈথুন ও সমকামিতা। সমমৈথুন সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে যখন পাঁচটি জিনিস আরম্ভ হবে তখন তাদেরকে নানা প্রকার রোগ ব্যাধি ও আযাবের মাধ্যমে ধ্বংস করে দেয়া হবে। তন্মধ্যে একটি হল নর ও নারীর মধ্যে সমমৈথুন প্রচলিত হওয়া’।
সমকামিতা একটি ঘৃণ্য অপরাধ এবং কবীরা গুনাহ। এই পাপের কারণেই বর্তমান পৃথিবী এইডস-এর মত মরণ ব্যধিতে ভরে গেছে। এটাই আল্লাহর গযব। এ অপরাধের কারণে বিগত যুগে আল্লাহ তা‘আলা কওমে লূতকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন (আ‘রাফ ৭/৮০-৮৪; হিজর ১৫/৭২-৭৬)। এর শাস্তি হ’ল সমকামীদের উভয়কে হত্যা করা। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা যাকে লূত (আঃ)-এর সম্প্রদায়ের মত পুরুষে পুরুষে অপকর্ম করতে দেখবে তাদের উভয়কে হত্যা কর।[8] তিনি আরো বলেন, আল্লাহ তা‘আলা কওমে লূতের ন্যায় অপকর্মকারীদের প্রতি লা‘নত করেছেন, তিনি এ কথাটি তিনবার বললেন’।[9] বর্তমানে পুরুষে পুরুষে, নারী-নারীতে ও নারী-পুরুষে উভয়েই সমকামিতায় লিপ্ত হচ্ছে। নারী-পুরুষ অবৈধ যৌন মিলনে সিফিলিস, প্রমেহ, গণরিয়া, এমনকি এইডস-এর মত মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যে সমস্ত বিবাহিতা নারীর দেহে অস্ত্রপচার করা হয়, তাদের শতকরা ৭৫ জনের মধ্যেই সিফিলিসের জীবাণু পাওয়া যায় (Her self, Dr. Lowry, P-204)।
সিফিলিস রোগে আক্রান্ত রোগী সুচিকিৎসা গ্রহণ না করলে মারাত্মক সব রোগের সৃষ্টি হয়। এইডস রোগের ভাইরাসের নাম এইচ. আই. ভি (HIV)। এ ভাইরাস রক্তের শ্বেত কণিকা ধ্বংস করে। এ রোগ ১৯৮১ সালে প্রথম ধরা পড়ে এবং ১৯৮৩ সালে একজন ফরাসী বিজ্ঞানী এইচ. আই. ভি ভাইরাসকে এই রোগের কারণ হিসাবে দায়ী করেন’ (কারেন্ট নিউজ (ডিসেম্বর সংখ্যা ২০০১), পৃঃ ১৯)।
আজ একবিংশ শতাব্দীতে এসে দ্বীন ইসলামের নির্ভুল বিধানের মাঝে বিজ্ঞানীরা পেয়েছেন সত্যের সন্ধান ও আশ্রয়। বর্তমানে আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকাসহ অন্যান্য উন্নত দেশে মাত্র কয়েক বছর পূর্বে এমন রোগ দেখা দিয়েছে এবং তারপর তা বিভিন্ন দেশে দ্রুত প্রসার লাভ করে অল্প সময়ে হাযার হাযার মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই ভয়ঙ্কর রোগটি Accrued Immune Deficiency Syndrome (AIDS) (একোয়ার্ড ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি সিন্ড্রম) আরবীতে বলা হয়, انهيار وسائل الدفاع الطبيعية فى الجسم ‘দেহে অর্জিত শরীর সুরক্ষিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিলুপ্ত হওয়া’।
এটি এইচ.আই.ভি. (HIV) Human Immune Deficiency Virus দ্বারা সংক্রমিত হয়। এইডস-এর ফলে সকল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বিনষ্ট হয়ে যায়। ফলে ঐ ব্যক্তি যে কোন সময় যে কোন রোগে আক্রান্ত হ’তে পারে। এখন পর্যন্ত এইডস এর কোন প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। তাই এইডস হ’লে মৃত্যু অবধারিত। একুশ শতকে বিজ্ঞানীদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এইডস-এর প্রতিষেধক আবিষ্কার করা। ১৯৮১ সালের ৫ই জুন যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম এইডস শনাক্ত করা হয়। এশিয়ার মধ্যে থাইল্যান্ডে ১৯৮৪ সালে, ভারতীয় উপমহাদেশে ১৯৮৬ সালে এবং বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ১৯৮৯ সালে এইডস শনাক্ত করা হয়। যেসব কারণে এইডস হ’তে পারে সেগুলো হচ্ছে- অবাধ যৌন মিলন, পতিতালয়ে গমন, কোন প্রাণীর সাথে যৌন মিলন, সমকামিতা ইত্যাদি।
বর্তমান বিশ্বের সর্বাপেক্ষা ভয়াবহ আতঙ্ক সৃষ্টিকারী মরণ ব্যাধি এই এইডস, যার পরিণাম নিশ্চিত মৃত্যু। ১৯৮১ সালের দিকে বিজ্ঞানীরা এ রোগের খবর পেলেন। ডাঃ রবার্ট রেডিফিল্ড বলেন, AIDS is a sexully transmitted disease. অর্থাৎ এইডস হচ্ছে যৌন অনাচার থেকে সৃষ্ট রোগ।
রেডফিল্ড বলেন, ‘আমাদের সমাজের (মার্কিন সমাজের) অধিকাংশ নারী-পুরুষের নৈতিক চরিত্র বলতে কিছুই নেই। কম বেশী আমরা সকলেই ইতর রতিঃপ্রবণ মানুষ হয়ে গেছি। এইডস হচ্ছে স্রষ্টার তরফ থেকে আমাদের উপর শাস্তি ও অন্যদের জন্য শিক্ষাও বটে’।
আমেরিকার প্রখ্যাত গবেষক চিকিৎসক ডনডেস সারলাইস বলেন’ বিভিন্ন ধরনের পতিতা আর তাদের পুরুষ সঙ্গীরা এইডস রোগের জীবাণু তৈরী, লালন পালন করে ও ছড়ায়। ডাঃ জেমস চীন বলেছিলেন, দু’হাজার সালের আগেই শিল্পোন্নত দেশগুলোতে ইতর রতিঃপ্রবণতা প্রাধান্য লাভ করবে। পেশাদার পতিতা ও সৌখিন পতিতাদের সংস্পর্শে যারা যায় এবং ড্রাগ গ্রহণ করে তারাই এইডস জীবানু সৃষ্টি করে এবং তা ছড়ায়। এক কথায় অবাধ যৌনাচার, পতিতাদের সংস্পর্শ, সমকামিতার কু-অভ্যাস ও ড্রাগ গ্রহণকেই এইডসের জন্য দায়ী করা হয়।
ডঃ নযরুল ইসলাম বলেন, এইডস সংক্রমণের প্রধান পন্থা যৌন মিলন। শতকরা ৭০-৭৫ ভাগ আক্রান্ত ব্যক্তিই এ পদ্ধতিতে আক্রান্ত হয়েছে। সারা বিশ্বের সমাজ বিজ্ঞানীসহ বিশ্বে মানবাধিকারের প্রবর্তকরা ঐ সমস্ত ভয়াবহ যৌন সংক্রামক ব্যধিতে আক্রান্ত হওয়া এবং তা দ্রুত ছড়াবার প্রধান কারণ হিসাবে সমকামিতা, বহুগামিতা এবং অবাধ যৌনচারকে চিwহ্নত করেছেন। যৌন সংক্রামক রোগগুলি যেমন এইডস, সিফিসিল, গনোরিয়া, শ্যাংক্রয়েড, লিম্ফোগ্র্যানুলোমা, ভেনেরিয়াম, ডানোভেনোসিস ও অন্যান্য। এর মধ্যে এইডস সবচেয়ে ভয়াবহ। এই রোগগুলিতে আক্রান্ত রোগীর সাথে মেলামেশা বা যৌন মিলনের মাধ্যমে সুস্থ লোক আক্রান্ত হয়। অত্যন্ত আতঙ্ক ও হতাশা সৃষ্টিকারী মরণ ব্যাধি এইডস আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে ১৯৭৯ ইং সালে সমকামী এক ব্যক্তির কাছে প্রকাশ পায়। তারপর এই ভয়াবহ রোগে যারা আক্রান্ত হ’তে থাকে তাদের অধিকাংশ লোকই সমকামী।
ডাঃ মুহাম্মাদ মনছুর আলী বলেন, বর্তমান কালের সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাধি এইচ.আই.ভি। এইডস এমনই এক সময়ে সমগ্র বিশ্বে চরম আতঙ্ক এবং নিরতিশয় হতাশা সৃষ্টি করেছে যখন চিকিৎসা বিজ্ঞান উন্নতির অত্যুঙ্গ শিখরে অবস্থান করছে। এই মরণ ব্যাধির উৎপত্তি এবং বিস্তারের কারণ হিসাবে দেখা গেছে চরম অশ্লীলতা, যৌন বিকৃতি ও কুরুচিপূর্ণ সমকাম ও বহুগামীতার মত পশু সুলভ যৌন আচরণের উপস্থিতি। শতকরা প্রায় ৯৫ ভাগ সমকামী এবং বহুগামী পুরুষ ও মহিলাদের মাধ্যমে এইডস সমগ্র বিশ্বে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে এবং দিন দিন এইচ.আই.ভি/এইডস এ আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে যাচ্ছে। সারা পৃথিবীতে বল্গাহীন ব্যাভিচারের ফলে এই রোগ উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। ডাঃ হিরোশী নাকজিমা বলেন, জনসাধারণের মধ্যে এইডস বিস্তার লাভ করলে সমগ্র মানবজাতির বিলুপ্তি ঘটতে পারে (The New Straits Jimes, (Kualalampur, Malaysia, 23 june 1988), P-9)।
অথচ মহান আল্লাহ সতর্ক করে বলেন, فَأَصَابَهُمْ سَيِّئَاتُ مَا كَسَبُوا وَالَّذِينَ ظَلَمُوا مِنْ هَؤُلَاءِ سَيُصِيبُهُمْ سَيِّئَاتُ مَا كَسَبُوا وَمَا هُمْ بِمُعْجِزِينَ ‘তাদের দুষ্কর্ম তাদেরকে বিপদে ফেলেছে, এদের মধ্যে যারা পাপী তাদেরকেও অতি সত্ত্বর তাদের দুষ্কর্ম বিপদে ফেলবে। তারা তা প্রতিহত করতে সক্ষম হবে না (যুমার ৩৯/৫১)।قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلَى أَنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عَذَابًا مِنْ فَوْقِكُمْ أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ ‘আপনি বলুন, তিনি (আল্লাহ) তোমাদের উপর থেকে অথবা নীচে থেকে তোমাদের ওপর আজাব পাঠিয়ে দিতে সক্ষম’ (সূরা আনআম, ৬/৬৫)।
নিশ্চয়ই এই এইডস নামক শাস্তি যা বর্তমান বিশ্বকে ঘিরে রেখেছে তাতে শারীরিক ও মানসিক শাস্তি ও বেদনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে মৃত্যুর পূর্বেই হাযার বার হত্যা করে থাকে। জিম শ্যালী এইডস রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৮৭ সালে ৭ই মার্চ মারা যায়। মৃত্যুর পূর্বে সে বলেছে আমার শরীরে একটা ভাইরাস আছে, সেটা আমার সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ খেয়ে ফেলছে। মাঝে মাঝে আমি জেগে উঠি, তখন আমি ওর অস্তিত্ব টের পাই, আমাকে কুরে কুরে খেয়ে ফেলেছে।
এমনকি পুরো সমাজই সব সময় ভীত সন্ত্রস্ত, অশান্তি ও অস্থিরতার মধ্যে অবস্থান করছে। আর এর জন্য আমরা মানব জাতিই প্রকৃত দায়ী। আমাদের কৃতকর্মের জন্যই আজ এই বিপর্যয়। এসম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ لِيُذِيقَهُمْ بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ ‘স্থলে ও পানিতে মানুষের কৃতকর্মের জন্য বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে, আল্লাহ তাদের কৃতকর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান যাতে তারা ফিরে আসে’ (রূম ৩০/৪১)। এমর্মে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, اذَا ظَهَرَ السُّوءُ فى الارْضِ أنْزَلَ اللهُ بأْسَهُ بِأهْلِ الْاَرضِ ‘পৃথিবীতে যখন অশ্লীল কাজ বেশী বেশী প্রকাশ পায়, তখন আল্লাহ দুনিয়ার অধিবাসীর প্রতি দুঃখ দুর্দশা ও হতাশা নাযিল করেন’।
১৯৮৫ সনে অপর এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ১৪,৭৩৯ জন এইডস রোগে আক্রান্ত রুগীর মধ্যে ১০৬৫৩ জন রুগীই পুরুষ সমকামী অর্থাৎ লূত (আঃ)-এর সম্প্রদায় যে ব্যাভিচার করেছিল তথা পুরুষে-পুরুষে অপকর্মে লিপ্ত হয়েছিল। এসম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَلُوطًا إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ أَتَأْتُونَ الْفَاحِشَةَ مَا سَبَقَكُمْ بِهَا مِنْ أَحَدٍ مِنَ الْعَالَمِينَ إِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الرِّجَالَ شَهْوَةً مِنْ دُونِ النِّسَاءِ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ مُسْرِفُونَ ‘আমি লূতকে প্রেরণ করেছি, যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বলল, তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বের কেউ করেনি? তোমরা তো নারীদের ছেড়ে কামবশতঃ পুরুষদের কাছে গমন কর। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ (আ‘রাফ ৭/৮০-৮১)। أَتَأْتُونَ الذُّكْرَانَ مِنَ الْعَالَمِينَ وَتَذَرُونَ مَا خَلَقَ لَكُمْ رَبُّكُمْ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ بَلْ أَنْتُمْ قَوْمٌ عَادُونَ ‘সারা জাহানের মানুষের মধ্যে তোমরাই কি পুরুষদের সাথে কুকর্ম কর? আর তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের জন্য যে স্ত্রীগণকে সৃষ্টি করেছেন তাদেরকে বর্জন কর। বরং তোমরা সীমালংঘনকারী সম্প্রদায় (আশ-শু‘য়ারা ২৬/১৬৫-১৬৬)। তারা বর্বর সম্প্রদায়, সীমা অতিক্রমকারী, ফাসাদ সৃষ্টিকারী, পাপিষ্ঠ ও অত্যাচারী সম্প্রদায়। এগুলোর যে কোন একটি বৈশিষ্ট্যই একটি সমাজ ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট। বর্তমান আমেরিকার মত উচ্চ শিক্ষিত সুসভ্য এবং সর্বদিক থেকে শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার হয়ে সমকামীতার মত নিকৃষ্ট ঘৃণিত মানবতা বিরোধী অশ্লীলতাকে যদি আইন করে বৈধ করে তাহলে কি ভাবে সম্ভব অশ্লীলতাসহ মানব সভ্যতা ধ্বংসের সকল ধরণের কর্মকান্ডগুলো প্রতিরোধ প্রতিহত করে বিশ্ব সমাজে মানব সভ্যতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা? কাম প্রবৃত্তি ও লোভ-লালসার জালে আবদ্ধ হয়ে লজ্জা-শরম ও ভাল-মন্দের স্বভাবজাত পার্থক্য বিসর্জন দিয়ে পার্লামেন্টে সমকামিতা বিল পাশ করে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রকাশ্যে বৈধ ঘোষণা করেছে। ব্যভিচার যখন পার্লামেন্টে বৈধ ঘোষণা করা হয় তখন স্বাভাবিক ভাবেই তা সমাজে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। আর তখনই সেই সমাজ আল্লাহর গযবের উপযুক্ত হয়ে যায়। তারা এমন প্রকৃতির বিরুদ্ধে নির্লজ্জতায় লিপ্ত হয় যা হারাম ও গোনাহ তো বটেই, সুস্থ স্বভাবের কাছে ঘৃণ্য হওয়ার কারণে সাধারণ জন্তু-জানোয়ারও এর নিকটবর্তী হয় না। মানুষের পাশবিক ও লজ্জাকর অশোভন আচরণ যে কত দ্রুত সমাজ সভ্যতাকে ধ্বংসের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়, আধুনিক শিক্ষিত পাশ্চাত্য সমাজ ব্যবস্থা কিভাবে ভয়াবহ ধ্বংসের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে তা সমস্ত বিশ্ববাসী আজ হাড়ে হাড়ে উপলদ্ধি করতে পারছে। নিকৃষ্টতার বিনিময় নিকৃষ্ট হয় এসম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَالَّذِينَ كَسَبُوا السَّيِّئَاتِ جَزَاءُ سَيِّئَةٍ بِمِثْلِهَا وَتَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ مَا لَهُمْ مِنَ اللَّهِ مِنْ عَاصِمٍ ‘যারা নিকৃষ্ট বস্ত্ত অর্জন করেছে তার বদলাও সেই পরিমাণ নিকৃষ্ট এবং অপমান তাদের চেহারাকে আবৃত করে ফেলবে। তাদেরকে আল্লাহর হাত থেকে বাঁচাতে পারবে এমন কেউ নেই (সূরা ইউনুস ১০/২৭)।
আজ এইডস, এবোলা আতংকে সমগ্র বিশ্ব প্রকম্পিত, সমস্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। সারা বিশ্বের চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ এই ভয়াবহ মরণব্যধি ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। এই মহামারী এইডস থেকে মানব জাতিকে রক্ষা করার জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে। কিন্তু সকল প্রচেষ্টা সমূলে ব্যর্থ হয়েছে এবং তারা বলছে, এইডস রোগের কোন চিকিৎসা নেই।
বর্তমান দুনিয়ায় পারিবারিক, সামাজিক, জাতীয়, এমন কি আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে যে অশান্তি বিরাজমান রয়েছে তার কারণ হলো পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে মানব জীবনকে না পরিচালনা করার কুফল। তাই আজকের অশান্ত পৃথিবীতে শান্তি এবং বিভিন্ন জটিল, দুরারোগ্য ও ধ্বংসাত্মক ব্যাধি থেকে মুক্তি লাভের একমাত্র উপায় হ’ল মহান আল্লাহর প্রেরিত পবিত্র কুরআনের শিক্ষা গ্রহণ ও যাবতীয় বিধি নিষেধ যথাযথভাবে পালন এবং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মহান আদর্শ জীবনের সকল ক্ষেত্রে পরিগ্রহণ ও বাস্তবায়ন। এমর্মে মহান আল্লাহ বলেন,اسْتَجِيبُوا لِرَبِّكُمْ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَ يَوْمٌ لَا مَرَدَّ لَهُ مِنَ اللَّهِ مَا لَكُمْ مِنْ مَلْجَأٍ يَوْمَئِذٍ وَمَا لَكُمْ مِنْ نَكِيرٍ ‘আল্লাহর পক্ষ থেকে অবশ্যম্ভাবী দিবস আসার পূর্বে তোমরা তেমাদের পালনকর্তার আদেশ মান্য কর। সেদিন তোমাদের কোন আশ্রয়স্থল থাকবে না এবং তা নিরোধকারী কেউ থাকবে না’ (শুরা ৪২/ ৪৭)।
বিশ্বের এই মহা দূর্যোগের সময় ইসলামের এই ধ্রুব সত্য ও হুশিয়ারী বাণী উপলদ্ধি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এইডস প্রতিরোধে ধর্মীয় অনুশাসনের গুরুত্ব অনুধাবন করতে বাধ্য হয়েছে। তাই WHO এ মর্মে ঘোষণা করেছে: Nothing can be more helful in this preventive effort than religious teachings and the adoption of proper and decent behavior as advocated and urged by all divine religions. অর্থাৎ, ‘এইডস প্রতিরোধ প্রচেষ্টায় ধর্মীয় শিক্ষাদান এবং যথাযথ নির্মল আচরণ প্রবর্তনের চেয়ে আর কোন কিছুই অধিক সহায়ক হতে পারে না যার প্রতি সকল ঐশ্বরিক ধর্মে সমর্থন প্রদান ও গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে’ (The role of Religion and ethics in the prevention and control of AIDS. Page 3, Para 9, Published by WHO) ।
মহান আল্লাহর বিরুদ্ধে কোনপ্রকার চ্যালেঞ্জ চলেনা। আমরা যতই কুট কৌশল করে হারামকে হালাল বানানোর পথকে সুগম করি না কেন, আল্লাহ হ’লেন সর্বোত্তম সুকৌশলী। কাম রিপুকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতা জাগিয়ে অবাধ যৌনাচার থেকে বিরত রাখার মধ্যেই রয়েছে প্রতিবিধান। চরিত্রের উত্তম গুণাবলী দিয়ে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলে কাম রিপুর প্রতিরোধ গড়ে তোলতে হবে। রিপুর তাবেদারী মানুষকে ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি দিতে পারে না। প্রত্যেক মানুষকে সোচ্চার হতে হবে। সকলের মাঝে আল্লাহভীতি ও স্ব স্ব মূল্যবোধের ধারনা দিয়ে তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে। নচেৎ আমাদের ধ্বংস অনিবার্য।
সুতরাং কাম রিপু মানুষের জন্যে এক চরম শত্রু হয়ে দাড়ায়, যখন তার ব্যবহার অনিয়ন্ত্রিত হয়। পারিপার্শ্বিক ও বহিঃজগতের যেকোন শত্রুর কাছে হার মানতে বাধ্য। জাগতিক জীবনে যারা এ কাম শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তারাই প্রকৃত প্রস্তাবে যৌনজীবনে লাভ করেছে সুখ, সমৃদ্ধি ও আদর্শ সংসার জীবন। কাম রিপু প্রত্যেক ব্যক্তির জীবনে থাকতে হবে কিন্তু তা হবে নিয়ন্ত্রিত। নিয়ন্ত্রিত রিপু ঔষুধের মত কাজ করে এবং তা যথাস্থানে প্রয়োগ করে থাকে। আর অনিয়ন্ত্রিত রিপু নিশা জাতীয় দ্রব্যের মত মাতাল করে এবং তা অপচয় করে ও অপাত্রে প্রয়োগের ফলে ক্রিয়া না করে প্রতিক্রিয়াতে পরিণত হয়। সুতরাং হে মানব সমাজ! রিপুকে নিয়ন্ত্রণ করো, সুখী-সমৃদ্ধি জীবন গড়ো।
[ লেখক : যশপুর, তানোর, রাজশাহী]
[1]. আদাবুল মুফরাদ: হা/২৬২।
[2]. বুখারী, কিতাবুল ঈমান অধ্যায়, হা /১৬, ২১ ও ৬৯৪১।
[3]. আহমাদ, মিশকাত হা/৫০২১।
[4]. মুসলিম, মিশকাত হা/৫০০৬।
[5]. আবু দাঊদ, মিশকাত হা/৫০১২।
[6]. মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, হা/ ৯৩।
[7]. ইবনে মাজাহ হা/৪০১৯।
[8]. তিরমিযী হা/১৪৫৬; আবুদাউদ হা/৪৪৬২; মিশকাত হা/৩৫৭৫।
[9]. আহমাদ হা/২৯১৫; ছহীহাহ হা/৩৪৬২।