তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর উপর ভরসা
তাওহীদের ডাক ডেস্ক
তাওহীদের ডাক ডেস্ক 2581 বার পঠিত
আল-কুরআনুল কারীম :
1 -وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْرِي نَفْسَهُ ابْتِغاءَ مَرْضاتِ اللَّهِ وَاللَّهُ رَؤُوفٌ بِالْعِبادِ
‘আর কোন কোন লোক এরূপ আছে যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য আত্মবিক্রয় করে। আর আল্লাহ হচ্ছেন তার বান্দাদের উপর স্নেহপরায়ণ’ (বাক্বারাহ ২০৭)।
২ -لَا خَيْرَ فِي كَثِيرٍ مِنْ نَجْواهُمْ إِلَّا مَنْ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوْ مَعْرُوفٍ أَوْ إِصْلاحٍ بَيْنَ النَّاسِ وَمَنْ يَفْعَلْ ذلِكَ ابْتِغاءَ مَرْضاتِ اللَّهِ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْراً عَظِيماً-
‘তাদের অধিকাংশ গুপ্ত পরামর্শে কোন কল্যাণ নিহিত থাকে না। তবে যে ব্যক্তি দান করে অথবা কোন সৎকাজ করে কিংবা লোকের মধ্যে পরস্পর সন্ধি স্থাপনে উৎসাহ প্রদান করে। আর যে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এরূপ করবে, আমি তাকে মহান বিনিময় প্রদান করব’ (নিসা ১১৪)।
৩- يَحْلِفُونَ بِاللَّهِ لَكُمْ لِيُرْضُوكُمْ وَاللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَقُّ أَنْ يُرْضُوهُ إِنْ كانُوا مُؤْمِنِينَ-
‘তারা তোমাদের কাছে আল্লাহর শপথ করে থাকে, যেন তারা তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করতে পারে। তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল হচ্ছেন সন্তুষ্টি পাওয়ার অধিক হক্বদার যদি তারা সত্যিকারের মুমিন হয়’ (তওবা ৬২)।
4- لِلْفُقَرَاءِ الْمُهَاجِرِينَ الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِنْ دِيارِهِمْ وَأَمْوالِهِمْ يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِنَ اللهِ وَرِضْوَاناً وَيَنْصُرُونَ اللهَ وَرَسُولَهُ أُولئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ-
‘এ (সম্পদ) অভাবগ্রস্থ মুহাজিরদের জন্যে যারা নিজেদের ঘরবাড়ী ও সম্পত্তি হ’তে উৎখাত হয়েছে। তারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনা করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (ছাঃ)-কে সাহায্য করে। তারাই তো সত্যবাদী’ (হাশর ৮)।
৫- يا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لا تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِياءَ تُلْقُونَ إِلَيْهِمْ بِالْمَوَدَّةِ وَقَدْ كَفَرُوا بِمَا جَاءَكُمْ مِنَ الْحَقِّ يُخْرِجُونَ الرَّسُولَ وَإِيَّاكُمْ أَنْ تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ رَبِّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ خَرَجْتُمْ جِهَاداً فِي سَبِيلِي وَابْتِغاءَ مَرْضَاتِي تُسِرُّونَ إِلَيْهِمْ بِالْمَوَدَّةِ وَأَنَا أَعْلَمُ بِما أَخْفَيْتُمْ وَما أَعْلَنْتُمْ وَمَنْ يَفْعَلْهُ مِنْكُمْ فَقَدْ ضَلَّ سَواءَ السَّبِيلِ-
‘হে মুমিনগণ! আমার শত্রু ও তোমাদের শত্রুকে বন্ধুরূপে গ্রহন করো না। তোমরা কি তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করছো, অথচ তারা তোমাদের নিকট যে সত্য এসেছে তা প্রত্যাখান করেছে। তোমরা তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহর উপর ঈমান আনয়নের কারণে তারা রাসূল (ছাঃ) ও তোমাদেরকে বহিষ্কার করেছে। আর যদি তোমরা আমার সন্তুষ্টি লাভের জন্যে আমার পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে বের হয়ে থাক, তবে তোমরা তাদেরকে কেন বন্ধুরূপে গ্রহণ করছো?
তোমরা যা গোপন কর এবং তোমরা যা প্রকাশ কর সে বিষয়ে আমি সম্যক অবগত। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এটা করবে সে সরল পথ থেকে বিচ্যুত হবে’ (মুমতাহিনাহ ১)।
৬- وَعَدَ اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ وَرِضْوَانٌ مِنَ اللهِ أَكْبَرُ ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ-
‘আল্লাহ মুমিন পুরুষ এবং মুমিন নারীদেরকে জান্নাতের ওয়াদা দিয়েছেন, যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ, তাতে তারা চিরদিন থাকবে এবং (ওয়াদা দিচ্ছেন) স্থায়ী জান্নাতসমূহে পবিত্র বাসস্থানসমূহের। আর আল্লাহর পক্ষ হতে সন্তুষ্টিই সবচেয়ে বড়। এটাই মহা সফলতা’ (আলে-ইমরান ১৫)।
৭- أَفَمَنِ اتَّبَعَ رِضْوانَ اللَّهِ كَمَنْ بَاءَ بِسَخَطٍ مِنَ اللَّهِ وَمَأْواهُ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ-
‘যে আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণ করেছে, সেকি তার মত হতে পারে যে আল্লাহর আক্রোশে পতিত হয়েছে? বরং তার আবাসস্থল হ’ল জাহান্নাম। যা কতই না নিকৃষ্টতর আবাসস্থল’ (আলে-ইমরান ১৬২)।
8- قالَ اللَّهُ هَذَا يَوْمُ يَنْفَعُ الصَّادِقِينَ صِدْقُهُمْ لَهُمْ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهارُ خَالِدِينَ فِيها أَبَداً رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ-
‘আল্লাহ বলবেন, এটা সেদিন যেদিন সত্যবাদীদের সত্যবাদিতা কাজে আসবে। আর তাদের জন্য থাকবে জান্নাত, যার নিম্নদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত, যেখানে তারা চিরস্থায়ীভাবে বসবাস করবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আর এটিই হচ্ছে মহা সফলতা’ (মায়েদা ১১৯)।
9- لَقَدْ رَضِيَ اللَّهُ عَنِ الْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبايِعُونَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِي قُلُوبِهِمْ فَأَنْزَلَ السَّكِينَةَ عَلَيْهِمْ وَأَثابَهُمْ فَتْحاً قَرِيباً-
‘মুমিনরা যখন বৃক্ষতলে তোমার নিকট বায়‘আত গ্রহন করল তখন আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্টি হলেন। আর তাদের অন্তরে যা কিছু ছিল সে বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন। সুতরাং তাদের প্রতি তিনি প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং পুরস্কার দিলেন আসন্ন বিজয়’ (ফাতাহ ১৮)।
10- وَكَمْ مِنْ مَلَكٍ فِي السَّمَاوَاتِ لا تُغْنِي شَفاعَتُهُمْ شَيْئاً إِلَّا مِنْ بَعْدِ أَنْ يَأْذَنَ اللَّهُ لِمَنْ يَشاءُ وَيَرْضى-
‘আকাশসমূহে কত ফেরেশতা রয়েছে! তাদের কোন সুফারিশ কাজে আসবে না যতক্ষণ না আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন এবং যার প্রতি সন্তুষ্ট না হয়ে তাকে অনুমতি না দেন’ (নাজম ২৬)।
হাদীছে নববী থেকে :
11- عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللَّهَ لَيَرْضَى عَنِ الْعَبْدِ أَنْ يَأْكُلَ الأَكْلَةَ فَيَحْمَدَهُ عَلَيْهَا أَوْ يَشْرَبَ الشَّرْبَةَ فَيَحْمَدَهُ عَلَيْهَا-
আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘বান্দা যখন কোন কিছু আহারের পর এবং কোন কিছু পান করার পর আল্লাহর প্রশংসামূলক ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ বলে, তখন আল্লাহ তার উপর সন্তুষ্ট হয়ে যান’ (ছহীহ মুসলিম হা/৭১০৮; মিশকাত হা/৪২০০)।
12- عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللَّهَ يَرْضَى لَكُمْ ثَلاَثًا وَيَكْرَهُ لَكُمْ ثَلاَثًا فَيَرْضَى لَكُمْ أَنْ تَعْبُدُوهُ وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَأَنْ تَعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلاَ تَفَرَّقُوا وَيَكْرَهُ لَكُمْ قِيلَ وَقَالَ وَكَثْرَةَ السُّؤَالِ وَإِضَاعَةَ الْمَالِ-
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের তিনটি বিষয় পছন্দ করেন এবং তিনটি বিষয় অপছন্দ করেন। পছন্দনীয় বিষয়গুলো হ’ল, একমাত্র তাঁরই ইবাদত করবে, তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক স্থাপন করবে না এবং আল্লাহর রজ্জুকে মজবুতভাবে ধারণ করবে ও পরস্পর ছিন্নভিন্ন হবে না। আর অপছন্দনীয় তিনটি বিষয়গুলো হ’ল, মূল্যহীন অধিক কথাবার্তা বলা, অধিকহারে প্রশ্ন করা এবং সম্পদ বিনষ্ট করা’ (ছহীহ মুসলিম হা/৪৫৭৮)।
13- عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ لِأَهْلِ الْجَنَّةِ يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ فَيَقُولُونَ لَبَّيْكَ رَبَّنَا وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ فِي يَدَيْكَ فَيَقُولُ هَلْ رَضِيتُمْ فَيَقُولُونَ وَمَا لَنَا لَا نَرْضَى يَا رَبِّ وَقَدْ أَعْطَيْتَنَا مَا لَمْ تُعْطِ أَحَدًا مِنْ خَلْقِكَ فَيَقُولُ أَلَا أُعْطِيكُمْ أَفْضَلَ مِنْ ذَلِكَ فَيَقُولُونَ يَا رَبِّ وَأَيُّ شَيْءٍ أَفْضَلُ مِنْ ذَلِكَ فَيَقُولُ أُحِلُّ عَلَيْكُمْ رِضْوَانِي فَلَا أَسْخَطُ عَلَيْكُمْ بَعْدَهُ أَبَدًا-
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুূল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘আল্লাহ জান্নাতের অধিবাসীদের লক্ষ্য করে বলবেন, হে জান্নাতবাসীরা! তারা উত্তর দিয়ে বলবে, আমরা উপস্থিত হে আমাদের রব! তোমার কাছেই কল্যাণের চাবিকাঠি। অতঃপর তিনি বলবেন, তোমরা কি সন্তুষ্ট? তারা বলবে, কেন সন্তুষ্ট হব না হে আমাদের রব! আমাদেরকে এমন পুরষ্কারে ভূষিত করেছেন, যা আপনার সৃষ্টির আর কাউকে দেননি। তখন আল্লাহ বলবেন, আমি কি তোমাদেরকে এর চেয়েও উত্তম পুরস্কার দিব না? জান্নাতবাসীরা বলবে, হে প্রভু, এর চেয়ে উত্তম পুরস্কার কি হতে পারে? আল্লাহ বলবেন, সেটা হল আমার সন্তুষ্টি তোমাদের জন্য অবধারিত হয়েছে। সুতরাং এরপর থেকে আমি আর কখনো তোমাদের উপর অসন্তুষ্ট হব না (মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/৫৬২৬)।
14- عَنْ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنِ الْتَمَسَ رِضَاءَ اللَّهِ بِسَخَطِ النَّاسِ كَفَاهُ اللَّهُ مُؤْنَةَ النَّاسِ وَمَنِ الْتَمَسَ رِضَاءَ النَّاسِ بِسَخَطِ اللَّهِ وَكَلَهُ اللَّهُ إِلَى النَّاسِ-
আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের অসন্তুষ্টির বিনিময়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে, আল্লাহ মানুষের দায়িত্ব নির্বাহে তার সাহায্যকারী হিসাবে যথেষ্ট হয়ে যাবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লা্র অসন্তুষ্টির বিনিময়ে মানুষের সন্তুষ্টি কামনা করে, আল্লাহ তাকে মানুষের উপরই সোপর্দ করে দেবেন’ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫১৩০, হাদীছ ছহীহ)।
15- قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مِنْ رِضْوَانِ اللَّهِ مَا يَظُنُّ أَنْ تَبْلُغَ مَا بَلَغَتْ فَيَكْتُبُ اللَّهُ لَهُ بِهَا رِضْوَانَهُ إِلَى يَوْمِ يَلْقَاهُ...
রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ কেউ (কখনও কখনও) আল্লাহর সন্তুষ্টি নিহিত রয়েছে এমন কোন কথা বলে ফেলে, অথচ সে নিজেও জানে না এর মূল্য কত বেশী। কিন্তু আল্লাহ এর বদৌলতে তার জন্য কিয়ামত পর্যন্ত স্বীয় সন্তুষ্টি লিপিবদ্ধ করে দেন’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪৮১৩)।
16- عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- أَنَّهُ قَالَ «إِنَّ عِظَمَ الْجَزَاءِ مَعَ عِظَمِ الْبَلاَءِ وَإِنَّ اللَّهَ إِذَا أَحَبَّ قَوْمًا ابْتَلاَهُمْ فَمَنْ رَضِىَ فَلَهُ الرِّضَا وَمَنْ سَخِطَ فَلَهُ السُّخْطُ-
রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই বড় পরীক্ষার সাথে বড় পুরস্কার জড়িত। এবং আল্লাহ যখন কোন কওমকে ভালবাসেন তখন সে কওমকে পরীক্ষা করেন। অতঃপর যে ব্যক্তি সে পরীক্ষায় সন্তুষ্ট থাকে, তার জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি, আর যে তাতে অসন্তুষ্ট থাকে, তার প্রতি আল্লাহর অসন্তুষ্টি’ (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/১৫৬৬, হাসান)।
মনীষীদের বক্তব্য থেকে :
১. লোকমান হেকীম তাঁর পুত্রকে বলেন, আমি তোমায় এমন বিষয়ে অছিয়ত করছি যা তোমাকে আল্লাহর নিকটবর্তী করবে এবং অন্যায় কাজ থেকে দূরে রাখবে। ১-তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক স্থাপন করবে না। ২-তোমার পছন্দে-অপছন্দে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করবে।
২. ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন, فإنّ الخير كلّه في الرّضى، فإن استطعت أن ترضى وإلّا فاصبر ‘আল্লাহর ফয়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকার মধ্যেই সকল কল্যাণ নিহিত। সুতরাং তুমি যদি পার আল্লাহর ফয়সালায় সন্তুষ্ট হও, নতুবা ধৈর্য ধারণ কর’।
৩. মাইমুন ইবনু মিহরান (রহঃ) বলেন, من لم يرض بالقضاء فليس لحمقه دواء ‘যে ব্যক্তি তাক্বদীরের উপর সন্তুষ্ট থাকে না, তার নির্বুদ্ধিতার কোন প্রতিষেধক নেই’।
৪. রবী ইবনু আনাস (রহঃ) বলেন, আল্লাহ তাআলা ভালবাসেন এমন ব্যক্তির আলামত হ’ল সে অধিকহারে যিকর করে। সুতরাং তুমি আল্লাহর অধিক যিকর ছাড়া অন্যকিছুকে ভালবাসতে পার না। আর তাক্বওয়ার আলামত হ’ল, গোপনে ও প্রকাশ্যে আল্লাহর প্রতি খুলুছিয়াত বজায় রাখা এবং কৃতজ্ঞতার আলামত হ’ল, আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট থাকা এবং তাঁর সিদ্ধান্তে প্রশান্তিবোধ করা।
৫. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, ثمرة الرّضى: الفرح والسّرور بالرّبّ تبارك وتعالى ‘সন্তুষ্টিবোধের ফলাফল হ’ল, প্রভুর প্রতি প্রফুল্লতা ও আনন্দচিত্ততা’।
৬. আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক বলেন, দাঊদ (আঃ) তাঁর পুত্র সুলায়মান (আঃ)-কে উপদেশ দিয়ে বলেন, একজন ব্যক্তির তাক্বওয়া তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। যথা-বিপদের সময় আল্লাহর প্রতি যথাযথ ভরসা রাখা, সর্বাবস্থায় তাক্বদীরের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা এবং যা সে হারিয়েছে তার প্রতি অনাসক্তি বোধ করা।
সারবস্ত্ত