অমুসলিমদের যবানীতে হযরত মুহাম্মাদ (ছাঃ)-১
মেহেদী আরীফ
হাসীবুল ইসলাম 1103 বার পঠিত
১. প্রখ্যাত ইংরেজ লেখক বসওয়ার্থ স্মীথ (১৮৩৯-১৯০৮)
৭ মার্চ ১৮৭৪ সালে লন্ডনের রয়াল ইনিস্টিটিউশনে এক জনাকীর্ণ সম্মেলনে
বক্তব্য প্রদানকালে রাসূল (ছাঃ)-এর উচ্ছসিত প্রশংসা করে বলেন- ‘Head of the
State as well as of the Church, he was Caesar and Pope in one; but he
was Pope without the Pope's pretensions, and Caesar without the legions
of Caesar. Without a standing army, without a bodyguard, without a
palace, without a fixed revenue, if ever any man had the right to say
that he ruled by a right Divine, it was Mohammed; for he had all the
power without its instruments and without its supports. He rose superior
to the titles and ceremonies, the solemn trifling, and the proud
humility of court etiquette. To hereditary kings, to princes born in the
purple, these things are, naturally enough, as the breath of life; but
those who ought to have known better, even self-made rulers, and those
the foremost in the files of time — a Caesar, a Cromwell, a Napoleon —
have been unable to resist their tinsel attractions. Mohammed was
content with the reality, he cared not for the dressings, of power. The
simplicity of his private life was in keeping with his public life (Reginald Bosworth Smith, in "Mohammedanism and Christianity" (7 March 1874), published in Mohammed and Mohammedanism (1889), p. 289).
‘তিনি ছিলেন একাধারে রাষ্ট্রনেতা এবং ধর্মনেতা। একই সাথে সিজার এবং পোপ; কিন্তু পোপের কোন জাঁকজমক ছাড়াই পোপ এবং সিজারের রাজকীয় বাহিনী ছাড়াই সিজার। কোন প্রতিষ্ঠিত সেনাবাহিনী, দেহরক্ষী, রাজপ্রাসাদ কিংবা নির্ধারিত রাজস্বের ব্যবস্থাপনা না থাকা সত্ত্বেও কোন ব্যক্তির যদি এ কথা বলার অধিকার থাকে যে, তিনি যথার্থই স্বর্গীয় আইন দ্বারা শাসনকার্য পরিচালনা করেছেন, তবে তিনি হলেন মুহাম্মাদ (ছাঃ)। কারণ ক্ষমতায় থাকার কোন উপায়-উপকরণ এবং মওজুদ উপস্থিত না থাকা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। পদবী, আনুষ্ঠানিকতা, তুচ্ছ ভাবগাম্ভীর্য এবং রাজদরবারের বৈশিষ্টসূচক গর্বোদ্ধত বিনীতভাব থেকে তাঁর অবস্থান ছিল অনেক ঊর্ধ্বে। বংশানুক্রমিক রাজ-রাজড়া, রাজবংশের সন্তানদের নিকটে এসব বিষয় প্রাত্যহিক জীবনে নিঃশ্বাস গ্রহণের মতই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু যারা সুখ্যাতি লাভ করেছেন, এমনকি সে সব লব্ধপ্রতিষ্ঠ শাসকগণ এবং ইতিহাসের পাতায় যে সকল শাসকদের নাম সর্বাগ্রে উচ্চারিত হয় যেমন-সিজার, ক্রমওয়েল, নেপোলিওনরা; তারাও পর্যন্ত এসব জেল্লাদার, আকর্ষণীয় বিষয়-আশয়ের উচ্চাভিলাষ থেকে আত্মসংবরণ করতে সক্ষম হননি। মুহাম্মাদ (ছাঃ) ছিলেন বাস্তববাদী পুরুষ। ক্ষমতার পোশাকী বাহাদুরী নিয়ে তাঁর কোন উদ্বেগ ছিল না। সামাজিক জীবনের সাথে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও ছিল একই রকম সারল্যে ভরপুর’।
তিনি আরো বলেন, “By a fortune absolutely unique in history , Mohammed is a threefold founder of a nation, of an empire, and of a religion”.
‘সন্দেহাতীতভাবে ইতিহাসের একমাত্র দৃষ্টান্ত হিসাবে মুহাম্মাদ (ছাঃ) হলেন ত্রিবিধ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী; যিনি একাধারে একটি জাতি, একটি রাষ্ট্র এবং একটি ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা।
২- খ্যাতনামা স্কটিশ ঐতিহাসিক এবং এডিনবেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এমিরেটাস অধ্যাপক উইলিয়াম মন্টেগোমারী ওয়াট (১৯০৯-২০০৬) বলেন, “His readiness to undergo persecutions for his beliefs, the high moral character of the men who believed in him and looked up to him as leader, and the greatness of his ultimate achievement - all argue his fundamental integrity. To suppose Muhammad an impostor raises more problems than it solves. Moreover, none of the great figures of history is so poorly appreciated in the West as Muhammad” (William Montgomery Watt, Muhammad at Mecca, Oxford : 1953, P. 52).
‘আপন বিশ্বাস তথা ঈমান রক্ষার্থে তাঁর (মুহাম্মাদ ছাঃ-এর) যে কোন দুর্ভোগ স্বীকারে সদা প্রস্ত্তত থাকা এবং তাঁকে নবী হিসাবে বিশ্বাস স্থাপনকারী ও নেতা হিসেবে শ্রদ্ধা প্রদর্শনকারী মানুষদের মাঝে সুউচ্চ নৈতিক গুণাবলীর সমাবেশ এবং তাঁর চূড়ান্ত সাফল্যের মাঝে যে মাহাত্ব্য ফুটে উঠেছে-তা তাঁর মৌলিক সত্যশীলতার প্রতি সাক্ষ্য দেয়। তাই মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে একজন কপট ব্যক্তি হিসেবে ধরে নিলে সমাধানের চেয়ে সমস্যাই বেশী তৈরী হবে। অধিকন্তু পশ্চিমা বিশ্বে ইতিহাসের কোন মহান ব্যক্তিকেই মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর মত এত অবহেলিতভাবে মূল্যায়িত হতে হয়নি’।
‘বিশটি জাগতিক সাম্রাজ্য এবং একটি আধ্যাত্মিক সাম্রাজ্যের যিনি প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, তিনি হলেন মুহাম্মাদ (ছাঃ)। একজন মানুষের মহত্ত্বকে পরিমাপ করা যেতে পারে এমন সর্বপ্রকার মাপকাঠিতে বিচার করলে আমরা খুব যথার্থভাবেই প্রশ্ন তুলতে পারি যে, পৃথিবীতে তার চেয়ে মহত্তর কোন মানুষ আর আছেন কি?
‘আমি যে সর্বদা মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর ধর্মকে উচ্চ দৃষ্টিতে মূল্যায়ন করি। তার কারণ হল এ ধর্মের বিস্ময়কর জীবনীশক্তি। আমার নিকট এটাই একমাত্র ধর্ম যা পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে নিজেকে অঙ্গীভূত করে নেয়া বা খাপ খাইয়ে নেয়ার ক্ষমতা রাখে। ফলে সকল যুগেই সমানভাবে তার আবেদন বজায় রাখতে পারে। আমি তাঁকে (রাসূল ছাঃ) খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছি। একজন বিস্ময়কর মানুষ তিনি এবং আমার মতে তাঁকে এন্টি-ক্রাইস্ট বা যীশু-বিরোধী না বলে অবশ্যই আখ্যায়িত করা উচিৎ ‘সেভিয়ার অব হিউম্যানিটি’ বা ‘মানবতার ত্রাণকর্তা’ হিসেবে। আমি বিশ্বাস করি তাঁর মত একজন মানুষ যদি আধুনিক বিশ্বের একনায়ক শাসক হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করতেন, তাহলে তিনি আধুনিক বিশ্বের যাবতীয় সমস্যার সমাধান এমনভাবে করতেন যে, তা সেই অতি কাংখিত সুখ-শান্তি বয়ে নিয়ে আসত। আমি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর ধর্ম সম্পর্কে ভবিষ্যৎদ্বাণী করেছি যে, এটা আগামীর ইউরোপের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে যেমনিভাবে তা ইতিমধ্যেই বর্তমান ইউরোপে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে আরম্ভ করেছে’।
তিনি আরও বলেন, "If any religion had the chance of ruling over England, nay Europe within the next hundred years, it could be Islam."
‘যদি কোন ধর্ম আগামী ১০০ বছরের মধ্যে ইংল্যান্ড তথা সমগ্র ইউরোপ শাসন করার সুযোগ পায়, তবে সেটা হল ইসলাম’।
৫- বিশিষ্ট দার্শনিক ও লেখক জন অস্টিন লিখেছেন, "In little more than a year he was actually the spiritual, nominal and temporal ruler of Medina, with his hands on the lever that was to shake the world." (John Austin, Muhammad the Prophet of Allah in T.P.'s and Cassel's Weekly for 24th September 1927).
‘মদীনায় আগমনের এক বছরের কিছু বেশী সময়ের মধ্যে তিনি সত্যিকারঅর্থেই মদীনার এমন একজন আধ্যাত্মিক, জাগতিক এবং পরাক্রমশালী শাসক হয়ে উঠেছিলেন যার হাতের সুইচ সমগ্র বিশ্ব কাঁপিয়ে দিতে পারত’।
৬- বৃটিশ বংশোদভূত আমেরিকান বিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং ডাক্তার জন উইলিয়াম ড্রেপার (১৮১১-১৮৮২) বলেন, "Four years after the death of Justinian, A.D. 569, was born at Mecca, in Arabia the man who, of all men exercised the greatest influence upon the human race...Mohammed" (John William Draper, M.D., L.L.D., A History of the Intellectual Development of Europe, London 1875, Vol.1, pp.329-330).
‘জাস্টনিয়ান-এর মৃত্যুর চার বছর পর ৫৬৯ খৃষ্টাব্দে আরবের মক্কায় এমন একজন মানুষের জন্ম হয়েছিল, যিনি গোটা মানবজাতির উপর সর্বোচ্চ প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি হলেন মুহাম্মাদ (ছাঃ)’।
৭- সাবেক ইন্ডিয়ান পার্লামেন্ট সদস্য দেওয়ান চাঁদ শর্মা লিখেছেন, "Muhammad was the soul of kindness, and his influence was felt and never forgotten by those around him." Diwan Chand Sharma, The Prophets of the East, Calcutta 1935, p. l 22.
‘মুহাম্মাদ (ছাঃ) ছিলেন দয়ার্দ্র হৃদয়। তাঁর প্রভাব তাঁর সহচররা সবসময় অনুভব করতো; কখনোই তা বিস্মৃত হতো না’।
৮- আমেরিকান মনোবিদ এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর ড. জুলিয়াস ম্যাসারমান (১৯০৫-১৯৯৪) লিখেছেন, "People like Pasteur and Salk are leaders in the first sense. People like Gandhi and Confucius, on one hand, and Alexander, Caesar and Hitler on the other, are leaders in the second and perhaps the third sense. Jesus and Buddha belong in the third category alone. Perhaps the greatest leader of all times was Mohammed, who combined all three functions. To a lesser degree, Moses did the same." (Jules Masserman, 'Who Were Histories Great Leaders?', TIME Magazine, July 15, 1974)
‘লুই পাস্ত্তর এবং জোনাস সাল্কের মত মানুষরা ছিলেন প্রথম ধারার (জনহিতকর) নেতা। আর একদিকে গান্ধী ও কনফুসিয়াস, অপরদিকে আলেকজান্ডার, সিজার এবং হিটলারের মত নেতারা ছিলেন ২য় বা ৩য় ধারার (রাজকীয় ও ধর্মীয়) নেতা। যিশুখৃষ্ট এবং বুদ্ধকে কেবল ৩য় ধারার (ধর্মীয়) মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত করা যায়। তবে সম্ভবত: সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট নেতা হলেন মুহাম্মাদ (ছাঃ) যিনি এই তিনটি ধারারই সুসমন্বয় করেছিলেন। কিছুটা স্বল্প পরিমাণে হলেও মূসা (আঃ) ঠিক একই কাজ করেছিলেন’।
৯- প্রখ্যাত বৃটিশ নারী অধিকার কর্মী, সমাজতত্ত্ববিদ ও লেখিকা এ্যানি বেসান্ত (১৮৪৭-১৯৩৩) বলেন, But do you mean to tell me that the man who in the full flush of youthful vigour, a young man of four and twenty [24], married a woman much his senior, and remained faithful to her for six and twenty years, at fifty years of age when the passions are dying married for lust and sexual passion? Not thus are men's lives to be judged. And you look at the women whom he married, you will find that by every one of them an alliance was made for his people, or something was gained for his followers, or the woman was in sore need of protection. (Annie Besant, The Life and Teachings of Muhammad (1932), p. 4)
‘কিন্তু তুমি কি আমাকে বুঝাতে চাইছ ভরা যৌবনের উচ্ছাসে পরিপূর্ণ সেই টগবগে যুবক সম্পর্কে, যে যুবক ২৪ বছর বয়সে তার চেয়ে অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন এবং ২৬ বছর যাবৎ তার কাছে বিশ্বাসযোগ্য ছিলেন, তিনি ৫০ বছর বয়সের পড়তি যেŠবনে এসে বিয়ে করেছিলেন কেবল যৌনাকাংখা ও যৌন তাড়না মেটাতে? না, মানুষের জীবনকে এভাবে বিচার করতে হয় না। অধিকন্তু, যদি তুমি ঐসব মহিলাদের দিকে লক্ষ্য কর যাদেরকে তিনি বিয়ে করেছিলেন, তাদের প্রত্যেকের সাথেই হয় মৈত্রীচুক্তির ব্যাপার ছিল, অথবা তাঁর ছাহাবীদের জন্য কিছু প্রাপ্তিযোগের বিষয় ছিল কিংবা মহিলাটির জন্য আশ্রয় ও নিরাপত্তার খুব প্রয়োজন ছিল’।
১০- আমেরিকান কূটনীতিবিদ, ইতিহাসবিদ ও লেখক ওয়াশিংটন আরভিং (১৭৮৩-১৮৫৯) লিখেছেন, His military triumphs awakened no pride nor vain glory as they would have done had they been effected by selfish purposes. In the time of his greatest power he maintained the same simplicity of manner and appearance as in the days of his adversity. So far from affecting regal state, he was displeased if, on entering a room, any unusual testimonial of respect was shown to him. If he aimed at a universal dominion, it was the dominion of faith; as to the temporal rule which grew up in his hands, as he used it without ostentation, so he took no step to perpetuate it in his family.” (Washington Irving, 'Mahomet and His Successors', New York, 1920).
‘তাঁর সামরিক বিজয়গুলো কোন অহংকার বা অসার গৌরব মহিমা জাগিয়ে দিত না। কেননা সেগুলো নিজস্ব লক্ষ্যে পরিচালিত হত। সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার সময়ও তিনি তাঁর দুঃখ-দুর্দশার দিনের মত সাধারণ জীবন-যাপন করে এসেছেন। রাজকীয়তার প্রভাব থেকে ছিলেন এতই দূরে যে, তিনি তাঁর ঘরে প্রবেশকালে কেউ নীতিবিরোধীভাবে সম্মানসূচক কিছু প্রকাশ করলে তা অপছন্দ করতেন। যদি তিনি বিশ্বজনীন আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নির্ধারণ করে থাকেন, তবে সেটা ছিল বিশ্বাসের আধিপত্য। যেমনটি তার হাতে গড়ে ওঠা রাষ্ট্রটি এবং সে রাষ্ট্র পরিচালনায় তাঁর ঈর্ষাজাগানিয়া কোন জাকজমককে প্রশ্রয় না দেয়া থেকে অনুভব করা যায়। একই কারণে এই আধিপত্যকে স্বীয় পরিবারের জন্য চিরস্থায়ী করার কোন পদক্ষেপ নেননি তিনি’।
১১- আমেরিকার প্রখ্যাত লেখক ও ইতিহাসবিদ জেমস আলবার্ট মিচেনার (১৯০৭-১৯৯৭) লিখেছেন, “Like almost every major prophet before him, Muhammad fought shy of serving as the transmitter of God’s word sensing his own inadequacy. But the Angel commanded ‘Read’. So far as we know, Muhammad was unable to read or write, but he began to dictate those inspired words which would soon revolutionize a large segment of the earth: "There is one God".
‘পূর্ববর্তী সকল গুরুত্বপূর্ণ নবীর মত তিনি নিজেকে অযোগ্য ভেবে আল্লাহর রাসূল হিসাবে দায়িত্ব পালন করা থেকে দূরে দূরে থাকতে চেয়েছেন। কিন্তু ফেরেশতা নির্দেশ দিলেন, ‘‘পড়ুন’’। আমরা যতদূর জানি, তিনি পড়তে বা লিখতে অক্ষম ছিলেন; অথচ তিনি ঐ সকল ঐহিক বাণী শব্দ করে পড়তে লাগলেন যা শীঘ্রই পৃথিবীর এক বিরাট অংশের মধ্যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করল এই মর্মে যে, ‘‘আল্লাহ ব্যতীত কোন প্রভু নেই’’। সকল ব্যাপারেই মুহাম্মাদ (ছাঃ) ছিলেন খুব ব্যবহারিক ও বাস্তববাদী। যখন তাঁর প্রিয় ছেলে ইবরাহীম মারা গেল এবং একই সময়ে তূর্যগ্রহণ লাগল। তখন শীঘ্রই মানুষের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ল যে, প্রভু শোক প্রকাশ করছেন। সেসময় কথিত আছে মুহাম্মাদ (ছাঃ) এই ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, ‘‘সূর্যগ্রহণ হল একটা প্রাকৃতিক ব্যাপার। এ ধরনের বিষয়কে কোন মানুষের জন্ম বা মৃত্যুর প্রতি আরোপিত করা নিছক বোকামী ছাড়া কিছুই নয়’’। স্বয়ং মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর মৃত্যুকালে তাঁকে দেবত্বজ্ঞান করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু তার নির্বাহী উত্তরসূরী হওয়ার কথা ছিল যেই মহামানবের, তিনি ধর্মীয় ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ট এক বক্তব্যের মাধ্যমে এই আবেগের উন্মাদনাকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে বলে দিলেন যে, ‘‘তোমাদের মধ্যে যদি এমন কেউ থাকে যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে পূজা করেছ, (তাহলে শোন) তিনি এখন মৃত। আর তোমরা যদি কেবল প্রভুরই ইবাদত করে থাক, তাহলে জেনে রেখ তিনি চিরঞ্জীব’’।
অনুবাদ : আব্দুল হাসীব
লেখক : কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রকাশনা সম্পাদক, বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ