মাদ্রাসা শিক্ষার উদ্দেশ্য
সারোয়ার মেছবাহ
অধ্যাপক আকবার হোসাইন 1368 বার পঠিত
নবুয়তের
তেইশ বছরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জাহেলী যুগের সকল কুসংস্কার এবং মানবতা
বিরোধী মন্দ কাজগুলোর উচ্ছেদ সাধনে নিরলসভাবে সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। তিনি
ছাহাবাদের নিকট থেকে মন্দ কাজ বর্জন ও সৎ কাজ করার অঙ্গীকার গ্রহণ করতেন।
বর্তমানে জাহেলিয়াতের অত্যাধুনিক রূপ সমাজে চলমান এবং এর গতিধারা বৃদ্ধির
লক্ষ্যে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান, গোষ্ঠী ও দলের নেতার কাছে শপথ গ্রহণ করছে।
জাহেলিয়াতের মুকাবেলায় বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘের অহির বিধান প্রতিষ্ঠার
শপথও চলমান আছে এবং থাকবে ইনশাআল্লাহ।
|
শপথের পরিচিতি :
আরবী ‘বায়‘আত’ (بيعة)-এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে অঙ্গীকার করা, চুক্তিবদ্ধ হওয়া, শপথ করা, বিক্রি করা। পরিভাষায় নির্দিষ্ট কাজের উপর নেতার কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়াকে বায়‘আত বা শপথ বলে। কারো কারো মতে- কারো আনুগত্যের অঙ্গীকার করে তার কথা পালনে চুক্তিবদ্ধ হওয়াকে বায়‘আত বলে। রাসূল (ছাঃ)-এর ছাহাবীগণ কী চমৎকার কথাই না সেদিন বলেছিলেন, نحن الذين بايعوا محمدا * على الجهاد ما بقينا ابدا ‘আমরাতো তারাই যারা মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর নিকট বায়‘আত করেছি জিহাদের উপর, যতদিন আমরা জীবিত থাকব’।
আদর্শ প্রতিষ্ঠার শপথ :
বীজ যত উন্নত হয়, ফসল তত ভাল হয়। মানুষের নিয়ত বা সংকল্প যত ভাল ও দৃঢ় হবে তার কর্মফল তত বেশী ভাল ও সুন্দর হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই সমস্ত আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল’ (ছহীহ বুখারী হা/১)। তাই শপথকে পোক্ত করার জন্য বিশুদ্ধ নিয়ত আবশ্যক। সে জন্য রাসূল (ছাঃ) কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য ছাহাবীদের নিকট থেকে শপথ গ্রহণ করতেন।
عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ بَايَعْتُ رَسُوْلَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِىْ رَهْطٍ فَقَالَ أُبَايِعُكُمْ عَلَى أَنْ لاَ تُشْرِكُوا بِاللَّهِ شَيْئًا وَلاَ تَسْرِقُوا وَلاَ تَزْنُوا وَلاَ تَقْتُلُوا أَوْلاَدَكُمْ وَلاَ تَأْتُوا بِبُهْتَانٍ تَفْتَرُونَهُ بَيْنَ أَيْدِيكُمْ وَأَرْجُلِكُمْ وَلاَ تَعْصُونِى فِى مَعْرُوفٍ فَمَنْ وَفَى مِنْكُمْ فَأَجْرُهُ عَلَى اللَّهِ وَمَنْ أَصَابَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا فَأُخِذَ بِهِ فِى الدُّنْيَا فَهْوَ لَهُ كَفَّارَةٌ وَطَهُورٌ وَمَنْ سَتَرَهُ اللَّهُ فَذَلِكَ إِلَى اللَّهِ إِنْ شَاءَ عَذَّبَهُ وَإِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُ.
|
উবাদাহ বিন ছামেত (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছা.)-এর নিকটে তাঁর ছাহাবীদের একটি জামা‘আতসহ আমি বায়‘আত করেছিলাম। অতঃপর তিনি বলেন, তোমরা আমার নিকট এই মর্মে শপথ কর যে, তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না, তোমরা চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, সন্তান হত্যা করবে না, মিথ্যা অপবাদ দিবে না যা তোমরা পরস্পরে তোমাদের হাত ও পায়ের মাধ্যমে দিয়ে থাক এবং তোমরা সৎ কাজের ক্ষেত্রে অবাধ্যতা করবে না। আর তোমাদের মধ্যে যে এগুলো পূরণ করবে তার জন্য প্রতিদান রয়েছে আল্লাহর নিকটে। আর যে ব্যক্তি এগুলোর মধ্যে কোনটা করবে না তাকে দুনিয়াতে শাস্তি দেওয়া হবে। তখন এটা তার জন্য কাফফারা হয়ে যাবে। এছাড়া যে এ এগুলোর সাথে জড়িত হবে আল্লাহ তা গোপন রাখবেন। তিনি ইচ্ছা করলে মাফ করে দিবেন আবার তাকে শাস্তিও দিতে পারেন। রাবী বলেন, অতঃপর আমরা তাঁর কাছে এর উপর শপথ করলাম (ছহীহ বুখারী হা/১৮, ‘ঈমান’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১১; ছহীহ মুসলিম হা/৪৫৫৮, ‘দণ্ডবিধি’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১০; মিশকাত হা/১৮)। উক্ত হাদীছে বর্ণিত ৬টি শর্তে নবুওয়াতের একাদশ বর্ষে রাসূল (ছাঃ) মদীনা হতে আগত ১২ জন ব্যক্তির শপথ গ্রহণ করেন। এটা আক্বাবার প্রথম শপথ। এই শর্তগুলো ছিল সব ব্যক্তিগত। আক্বাবার দ্বিতীয় শপথে মোট ৭৩ জন অংশগ্রহণ করেন। সেখানে রাসূল (ছাঃ) মোট পাঁচটি বিষয়ে সামাজিক কাজের উপর বায়‘আত গ্রহণ করেন।
فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ عَلاَمَا نُبَايِعُكَ قَالَ تُبَايِعُوْنِىْ عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فِى النَّشَاطِ وَالْكَسَلِ والنَّفَقَةِ فِى الْعُسْرِ وَالْيُسْرِ وَعَلَى الأَمْرِ بِالْمَعْرُوْفِ وَالنَّهْىِ عَنِ الْمُنْكَرِ وَأَنْ تَقُوْلُوْا فِى اللهِ لاَ تَخَافُوْنَ فِى اللهِ لَوْمَةَ لاَئِمٍ وَعَلَى أَنْ تَنْصُرُوْنِىْ فَتَمْنَعُوْنِىْ إِذَا قَدِمْتُ عَلَيْكُمْ مِمَّا تَمْنَعُوْنَ مِنْهُ أَنْفُسَكُمْ وَأَزْوَاجَكُمْ وَأَبْنَاءَكُمْ وَلَكُمُ الْجَنَّةُ.
জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমরা আপনার নিকট কিসের উপর বায়‘আত করব? তিনি বললেন, (১) তোমরা আমার নিকট বায়‘আত করো সন্তুষ্টি ও অলসতায় কথা শ্রবণ করবে ও আনুগত্য করবে, (২) সচ্ছল ও অসচ্ছল সর্বাবস্থায় আল্লাহর পথে ব্যয় করবে (৩) সৎ কাজের আদেশ দিবে এবং অসৎ কাজে বাধা দিবে, (৪) আল্লাহর পক্ষে কথা বলবে তাতে তোমাদেরকে যেন নিন্দুকের নিন্দা পাকড়াও না করে এবং (৫) আমি যখন ইয়াছরিব (মদীনায়) আগমন করব তখন তোমরা আমাকে সাহায্য করবে। অতঃপর তোমরা আমাকে অনুরূপ নিরাপত্তা দিবে যেমন নিরাপত্তা দাও তোমাদেরকে, তোমাদের স্ত্রীদেরকে এবং তোমাদের সন্তানদেরকে। তাহলে তোমাদের জন্য জান্নাত রয়েছে (ছহীহ ইবনু হিববান হা/৭০১২; মুসনাদে আহমাদ হা/১৪৬৯৪; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৬৭)। হাদীছটি ছহীহ মুসলিমে নিম্নরূপ এসেছে-
عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الْوَلِيْدِ قَالَ بَايَعْنَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فِى الْعُسْرِ وَالْيُسْرِ وَالْمَنْشَطِ وَالْمَكْرَهِ وَعَلَى أَثَرَةٍ عَلَيْنَا وَعَلَى أَنْ لاَ نُنَازِعَ الأَمْرَ أَهْلَهُ وَعَلَى أَنْ نَقُوْلَ بِالْحَقِّ أَيْنَمَا كُنَّا لاَ نَخَافُ فِى اللهِ لَوْمَةَ لاَئِمٍ.
উবাদা বিন ওয়ালী (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট বায়‘আত করেছিলাম এই মর্মে যে, সচ্ছল-অসচ্ছল ও সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি সর্বাবস্থায় আপনার কথা শুনব ও মেনে চলব, আমাদের উপরে কাউকে প্রাধান্য দিলেও, আমরা নেতৃত্ব নিয়ে ঝগড়া করব না এবং আমরা যেখানেই থাকি হক্ব কথা বলব আল্লাহর জন্য নিন্দুকের নিন্দাকে পরোয়া করব না (ছহীহ মুসলিম হা/৪৮৭৪; মিশকাত হা/৩৬৬৬)।
আল্লাহ প্রদত্ত দ্বীনকে তাঁর যমীনে প্রতিষ্ঠা করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞাবদ্ধ একদল নিবেদিত প্রাণ কর্মী বাহিনী অপরিহার্য। উক্ত হাদীছগুলোতে তাই প্রতিভাত হয়েছে। আর একাজ যে একাকী সম্ভব নয় তাও পরিষ্কার হয়েছে। কারণ রাসূল (ছাঃ) সকলের নিকট থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন। তাছাড়া আল্লাহ সংঘবদ্ধ ভাবে শরী‘আত পালনের নির্দেশ দান করেছেন, وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا ‘তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর, আর পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না (আলে-ইমরান ১০৩)। রাসুলুল্লাহ (ছা.) জামা‘আতবদ্ধ যিন্দেগীর বিষয়ে তাকিদ দিয়ে বলেন,
عَنِ الْحَارِثِ الأَشْعَرِىِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم آمُرُكُمْ بِخَمْسٍ بِالْجَمَاعَةِ وَالسَّمْعِ وَالطَاعَةِ وَالْهِجْرَةِ وَالْجِهَادِ فِى سَبِيْلِ اللَّهِ فَإِنَّهُ مَنْ خَرَجَ مِنَ الْجَمَاعَةِ قِيْدَ شِبْرٍ فَقَدْ خَلَعَ رِبْقَةَ الإِسْلاَمِ مِنْ عُنُقِهِ إِلاَّ أَنْ يُرَاجِعَ وَمَنْ دَعَا بِدَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ فَهُوَ مِنْ جُثَاءِ جَهَنَّمَ قَالُوا يَا رَسُوْلَ اللَّهِ وَإِنْ صَامَ وَإِنْ صَلَّى قَالَ وَإِنْ صَامَ وَصَلَّى وَزَعَمَ أَنَّهُ مُسْلِم.
হারিছ আল-আশ‘আরী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আমি তোমাদেরকে পাঁচটি বিষয়ে নির্দেশ দিচ্ছি। যথা: ১. জামা‘আতবদ্ধ জীবন যাপন করা ২. আমীরের নির্দেশ শ্রবণ করা ৩. তার আনুগত্য করা ৪. হিজরত করা ও ৫. আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। যে ব্যক্তি জামা‘আত হতে এক বিঘত পরিমাণ বের হয়ে গেল তার গর্দান হ’তে ইসলামের গন্ডী ছিন্ন হল। যতক্ষণ না সে ফিরে আসে। যে ব্যক্তি মানুষকে জাহিলিয়াতের দাওয়াত দ্বারা আহবান জানায় সে ব্যক্তি জাহান্নামীদের দলভুক্ত হবে। যদিও সে ছিয়াম পালন করে, ছালাত আদায় করে ও ধারণা করে যে সে একজন মুসলিম (আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৩৬৯৪, হাদীছ ছহীহ)।
উক্ত আলোচনা হতে প্রমাণিত হয়েছে যে, আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য নিবেদিতপ্রাণ অনুগত এবং ঐক্যবদ্ধ একটি আপোসহীন কাফেলা শর্ত, যারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
মতবাদ প্রতিষ্ঠায় শপথ : আহলেহাদীছ সমাজের পরিণতি :
১৬ কোটি জনসংখ্যার দেশ আমাদের বাংলাদেশ। এদেশে ৯০% লোক মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও মানব রচিত অসংখ্য মতবাদ প্রতিষ্ঠিত আছে। তাক্বলীদ এমন একটি মতবাদ যা একজন মুসলমানকে খোলা মনে ইসলামকে অনুসরণ করার ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করে। এটি আবার দুই প্রকার। যথা : ১. জাতীয় তাক্বলীদ, যা মুসলিম সমাজে ধর্মের নামে প্রচলিত বিভিন্ন মাযহাব ও তরীকার অন্ধ অনুসরণকে বুঝায় ২. বিজাতীয় তাক্বলীদ, যা বৈষয়িক ব্যাপারে নামে সমাজে প্রচলিত পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ প্রভৃতি বিজাতীয় মতবাদের অন্ধ অনুসরণ বুঝায়। উক্ত মতবাদ সমূহ সবই জাহেলিয়াত। আর এই জাহেলী মতবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়। এর হিংস্র ছোবলে আহলেহাদীছ সমাজ আক্রান্ত। কারণ আহলেহাদীছ ঘরে জন্ম নিয়ে প্রগতির স্রোতে নিজের মেধা, শ্রম ও অর্থ, প্রতিভা সবকিছু জাহেলী মতবাদের পিছনে ব্যয় করছে।
ছাত্র ও যুব সমাজের প্রতি আবেদন :
দেশের ছাত্র ও যুব সমাজের অবস্থা আমাদের সকলের নিকট পরিষ্কার। হক্ব ও বাতিলের বর্তমান প্রেক্ষাপট জাতিকে সত্যিকারর্থে ভাবিয়ে তুলেছে। এমনকি প্রতিটি সেক্টরে ইসলাম অপমাণিত হচ্ছে, সুন্নাতের অনুসারীরা লাঞ্চিত হচ্ছে। কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহকে তোয়াক্কা না করে শয়তানের দোসররা নিজেদের মনগড়া বিধানকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছে। তবে শয়তানের কর্ম কৌশল দূর্বল। এমতাবস্থায় ইসলামকে সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠার জন্য একদল প্রতিভাবান, মেধাবী, কর্মঠ ও পরিশ্রমী ছাত্র ও যুব সমাজকে বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ আহবান জানাচ্ছে। প্রখ্যাত ছাহাবী আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) কোন মুসলিম যুবককে দেখলে খুশী হয়ে বলতেন,
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ كَانَ إِذَا رَأَى الشَّبَابَ قَالَ مَرْحَبًا بِوَصِيَّةِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْصَانَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ نُوَسِّعَ لَكُمْ فِي الْمَجْلِسِ وَأَنْ نُفَهِّمَكُمُ الْحَدِيثَ فَإِنَّكُمْ خُلُوفُنَا، وَأَهْلُ الْحَدِيثِ بَعْدَنَا-
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) যখন কোন যুবককে দেখতেন তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অছিয়ত অনুযায়ী তাদেরকে ‘মারহাবা’ জানাতেন। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে তোমাদের জন্য মজলিস প্রশস্ত করার ও তোমাদেরকে হাদীছ বুঝাবার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। কেননা তোমরাই আমাদের পরবর্তী বংশধর ও পরবর্তী আহলেহাদীছ (বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/১৬১)।
বিশ্বের সর্বাধিক আহলেহাদীছ এ দেশে বসবাসরত। সুতরাং হে আহলেহাদীছ ছাত্র ও যুবক সমাজ! আমরা যদি চীন বিপ্লব, ফরাসী বিপ্লব, ভাষা আন্দোলন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের দিকে তাকায় তাহ’লে দেখতে পাই একদল যুবক বিজয় সাধনের জন্য ঐক্যবদ্ধ ভাবে শপথ করেছিল এবং তাদের সেই দৃঢ় শপথ ও ইষ্পাত কঠিন মনোবলের ফলে বিজয় অর্জিত হয়েছিল। আজও যদি আহলেহাদীছ ছাত্র ও যুবকরা আল্লাহর উপর ভরসা করে অহি-র বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে শপথ করে তাহ’লে মানব রচিত বিধান বাংলার যমীন থেকে চির বিদায় নিবে এবং আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। যত বাঁধায় আসুক সম্মুখপানে এগিয়ে যেতে হবে। কারণ আমাদের সব কিছুই তো আল্লাহর জন্য। এ মর্মে আল্লাহ বলেন-قُلْ إِنَّ صَلاَتِى وَنُسُكِى وَمَحْيَاىَ وَمَمَاتِى لِلَّهِ رَبِّ ٱلْعَالَمِينَ- ‘হে নবী (ছাঃ) আপনি বলুন! নিশ্চয়ই আমার ছালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ সবই জগৎ সমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য’ (আন‘আম ১৬২)।
উপসংহার :
পরিশেষে বলব অন্যের ঘরে আর নয় ফিরে আসুন নিজের ঘরে। আসুন! অহি-র বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য শপথ করি। আমরা আমাদের সময়, শ্রম, অর্থ এ পথেই ব্যয় করি এবং পরকালীন পাথেয় সঞ্চয় করি। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের এ প্রত্যয়কে কবুল কর- আমীন!
অধ্যাপক আকবার হোসাইন
প্রভাষক, আরবী বিভাগ, হামিদপুর আল-হেরা ডিগ্রী কলেজ, যশোর