শিরক ও তার ভয়াবহ পরিণতি
ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
বযলুর রহমান 574 বার পঠিত
ভূমিকা :
ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। মানব জীবনের সকল দিক ও বিভাগের সঠিক দিক-নির্দেশনা এখানে মওজুদ রয়েছে। ধর্মীয় ও বৈষয়িক ব্যবস্থাপনার সুনিয়ন্ত্রিত কর্মপদ্ধতি ও কর্মসূচির পূর্ণাঙ্গ ধারাপাত এখানে ঘোষিত হয়েছে। বিশ্ব মানবতার একমাত্র সংবিধান অভ্রান্ত সত্যের চূড়ান্ত উৎস পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের প্রতিটি ছত্রে ছত্রে যার প্রতিধ্বনি পরিলক্ষিত হয়। আর ইবাদতে তাওক্বীফী ও মু‘আমালাতের যাবতীয় বিধি-নিষেধ ও নির্দেশনার সার্বিক কর্মতৎপরতা বিশুদ্ধতার নিরিখে মূল্যায়িত হয়ে থাকে। সুতরাং যাবতীয় কার্যক্রমের সমর্থনে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের বিশুদ্ধ মানদন্ড থাকতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, মুসলিম সমাজ আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল (ছাঃ) প্রদর্শিত ব্যবস্থাপনা থেকে যোজন যোজন দূরে অবস্থান করছে। মানুষ ধর্ম পালনের ক্ষেত্রে বিশুদ্ধতার প্রতি লক্ষ্য করে না। ফলে মানুষের আমলী যিন্দেগীর অধিকাংশ কার্যক্রম ধারণা নির্ভর এবং পারিবারিক ও সামাজিক ঐতিহ্যের স্মারক হিসাবে প্রতিপালিত হয়ে থাকে। যা তার যাবতীয় কৃত আমলকে বিনষ্ট করে দেয়। নিমেণ প্রাথমিক পর্যায়ে মুসলিম সমাজে প্রচলিত ‘পবিত্রতার সাথে সম্পর্কিত বিদ‘আত সমূহ’ উল্লেখ করব ইনশাআল্লাহ।
১. ওযূ ও তায়াম্মুমের নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা :
اَلنِّيَّةُ শব্দটি আরবী। যার শাব্দিক অর্থ পরিকল্পনা করা, ইচ্ছা করা, মনস্থ করা, অন্তরে কোন কিছুর সংকল্প করা, স্থির সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রভৃতি। মূলতঃ এটি نوي মাসদার থেকে উৎসারিত। যার শাব্দিক অর্থ শক্ত আঁটি বা বীচি, দানা বা বীজ। আল্লামা সাইয়েদ সাবেক্ব (রহঃ) বলেন, النية وحقيقتها الارادة المتوجهة نحو الفعل، ابتغاء رضا الله تعالى وامتثال حكمه، وهي عمل قلبي محض لا دخل للسان فيه، والتلفظ بها غير مشروع ‘নিয়ত হ’ল, আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কোন কাজ করার সংকল্প করা। এটি শুধুমাত্র মনের সাথে সম্পৃক্ত একটি কাজ। নিয়তের সাথে মৌখিক উচচারণের কোন সম্পর্ক নেই। তাছাড়া এটি শরী‘আতসিদ্ধও নয়।[1] আর মূলতঃ মনের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়কে নিয়ত বলে। তাছাড়া ত্রুটিযুক্ত দানায় যেমন ত্রুটিযুক্ত ফল উৎপাদন হয়, তেমনি নিয়ত পরিশুদ্ধ না হ’লে জীবনের কৃত সকল আমল বা ইবাদতই বরবাদ হয়ে যাবে। আর এ কথা স্বতঃসিদ্ধ যে, বিশ্ব মানবতার প্রত্যেক কাজ তার অন্তরে পরিকল্পিত চিন্তা-চেতনার বহিঃপ্রকাশ মাত্র। তাই মানুষের সকল কাজ তার নিয়তের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং একনিষ্ঠচিত্তে ও নিবিষ্ট মনে কেবলমাত্র আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি ও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অনুসরণই হবে বিশুদ্ধ নিয়তের মৌলিক দাবী। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ ‘প্রত্যেক কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল’।[2]
ওযূ ও তায়াম্মুমের নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা স্পষ্টরূপে বিদ‘আত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ), ছাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন ও তাবে‘-তাবেঈনগণের মধ্যে কেউ সশব্দে নিয়ত করতেন মর্মে কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। এমনকি আইম্মাতুস সালাফও এর অনুমোদন দেননি। কেননা এটি মানুষের তৈরী বিধান। বরং সুন্নাত হ’ল ওযূ ও তায়াম্মুমের পূর্বে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এমনটি করতেন। যেমন-
عن أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا صَلَاةَ لِمَنْ لَا وُضُوءَ لَهُ وَلَا وُضُوءَ لِمَنْ لَمْ يَذْكُرِ اسْمَ اللَّهِ تَعَالَى عَلَيْهِ.
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ছালাত হয় না ওযূ ছাড়া আর ওযূ হয় না বিসমিল্লাহ বলা ছাড়া’।[3] সুতরাং বর্তমান মুসলিম সমাজে ওযূ ও তায়াম্মুমের নামে যে লিখিত ও প্রচলিত নিয়ত চালু আছে তা স্পষ্ট বিদ‘আত ও ভ্রষ্টতা। অতএব তা পরিত্যাগ করতে হবে। বরং মনে মনে নিয়ত করতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, মাযহাবী ফিক্বহী গ্রন্থসমূহে এটিকে সুন্নাত মনে না করে মনের ইচ্ছার সাথে মিল করার জন্য নিয়ত মুখে উচ্চারণ করাকে ‘উত্তম’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। প্রসিদ্ধ হানাফী ফক্বীহ সারাখসী বলেন, وَالتَّكَلُّمُ بِالنِّيَّةِ لَا مُعْتَبَرَ بِهِ، فَإِنْ فَعَلَهُ لِيَجْتَمِعَ عَزِيمَةُ قَلْبِهِ فَهُوَ حَسَنٌ ‘(ওযূ বা তায়াম্মুমের শুরুতে) মুখে নিয়ত বলা ধর্তব্য নয়। তবে কেউ যদি মনের ইচ্ছার সাথে মিল করার জন্য মুখে নিয়ত উচ্চারণ করে থাকে, তাহলে তা ভাল’।[4] ফক্বীহদের এই মনগড়া বক্তব্যের প্রতিবাদে আল্লামা শায়খ উছায়মীন (রহঃ) পরিষ্কারভাবে বলেছেন, ‘নিয়তের স্থান হ’ল অন্তর। তা মুখে উচ্চারণ করার কোন প্রয়োজন নেই। আপনি যখন ওযূ করবেন তখন এটা একটা নিয়ত। একজন বিবেকবান ও সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ কোন কাজ করবে অথচ নিয়ত করবে না, এটা অসম্ভব....। তাছাড়া রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামগণের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোন প্রমাণসিদ্ধ দলীল নেই। যারা মুখে উচ্চারণ ও শুনিয়ে নিয়ত করে তাদেরকে দেখবেন হয় তারা মূর্খ নতুবা তারা কোন আলেমের তাক্বলীদ বা অন্ধ অনুসরণ করে থাকে। মুখে উচ্চারণকারীদের যুক্তি হচ্ছে, অন্তরের ইচ্ছার সাথে মুখের কথা ও কাজের মিলের জন্য নিয়ত পাঠ করা উচিত। কিন্তু আমাদের বক্তব্য হ’ল, তাদের এ যুক্তি অসার ও ভিত্তিহীন। কেননা একাজ যদি শরী‘আতসম্মত হ’ত, তা’হলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কথা ও আমলের মাধ্যমে উম্মতের সামনে বর্ণনা করতেন’।[5]
(২) ওযূর অঙ্গগুলো তিনবারের অধিক ধৌত করা :
ইসলাম পূর্ণাঙ্গ একটি জীবন বিধান। সেখানে কারো কোনরকম কমবেশী করার সুযোগ নেই। অতএব ওযূর ক্ষেত্রে অযাচিত সন্দেহ পোষণ করে অতিরিক্ত পানি ব্যবহার কিংবা তিনবারের অতিরিক্তি ওযূ ও তায়াম্মুমের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধৌত ও মাসাহ করা স্পষ্ট সীমালঙ্ঘন এবং বিদ‘আত। যা রাসূল (ছাঃ) কখনো করেননি। বরং তিনি এ ব্যাপারে অত্যন্ত কঠিন সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন।
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ جَاءَ أَعْرَابِىٌّ إِلَى النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْأَلُهُ عَنِ الْوُضُوءِ فَأَرَاهُ الْوُضُوءَ ثَلاَثًا ثَلاَثًا ثُمَّ قَالَ هَكَذَا الْوُضُوءُ فَمَنْ زَادَ عَلَى هَذَا فَقَدْ أَسَاءَ وَتَعَدَّى وَظَلَمَ.
‘আমর ইবনু শু‘আয়ব (রাঃ) তাঁর পিতার সূত্রে তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন জনৈক বেদুঈন এসে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে ওযূ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি তাকে ওযূর অঙ্গগুলো তিন-তিনবার ধৌত করে দেখালেন। অতঃপর বললেন, এভাবেই ওযূ করতে হয়। তবে যে ব্যক্তি এর অতিরিক্ত করল সে সীমালঙ্ঘন ও যুলুম করল’।[6] শায়খ আল্লামা আলবানী (রহঃ) বলেন, ‘এটি (ওযূতে তিনবারের অধিক ধৌত করা) বিদ‘আত’।[7] ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, وَإِنَّمَا تَكُونُ الرَّابِعَةُ بِدْعَةً وَمَكْرُوهَةً ‘অর্থাৎ চতুর্থবার ধৌত করা বিদ‘আত ও অপছন্দীয়’।[8] ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রহঃ) বলেন, ‘সন্দেহপোষণকারী ছাড়া কেউ তিনবারের অতিরিক্ত ধৌত করে না’। ইবনুল মুবারক বলেন, ‘এটি একটি মহাপাপ’।[9] অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, إِنَّهُ سَيَكُونُ فِى هَذِهِ الأُمَّةِ قَوْمٌ يَعْتَدُونَ فِى الطُّهُورِ وَالدُّعَاءِ ‘আমার উম্মতের মধ্যে এমন কতিপয় লোকের আবির্ভাব ঘটবে, যারা দু‘আ এবং পবিত্রতা অর্জনের সময় সীমালঙ্ঘন করবে’।[10] সুতরাং ওযূ ও তায়াম্মুমের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। অযাচিত সন্দেহ করে অতিরিক্ত পানির ব্যবহার পরিত্যাগ করতে হবে। কেননা এটা রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক সমর্থিত নয়। আর যা রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক সমর্থিত নয় তা নিঃসন্দেহে বিদ‘আত। অতএব ওযূতে তিনবারের অতিরিক্ত পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
(৩) ওযূতে ঘাড় মাসাহ করা :
ওযূতে ঘাড় মাসাহ সংক্রান্ত কোন বিশুদ্ধ প্রমাণ পাওয়া যায় না। এ প্রসঙ্গে যে হাদীছগুলো বর্ণিত হয়েছে তার সবগুলো নিতান্তই দুর্বল, মিথ্যা ও বানোয়াট। বাজারে অসংখ্য ‘নামাজ শিক্ষা’ বই রয়েছে, যেখানে ‘ওযূতে ঘাড় মাসাহ’ সম্পর্কে যে হাদীছগুলোর দ্বারা দলীল পেশ করা হয়েছে তার সবগুলোই মুহাদ্দিছগণের সর্বসম্মতিক্রমে যঈফ ও জাল। হাদীছগুলো নিমণরূপ :
(1) عَنْ طَلْحَةَ بن مُصَرِّفٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّهُ رَأَى رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمْسَحُ رَأْسَهُ حَتَّى بَلَغَ الْقَذَالَ وَمَا يَلِيهِ مِنْ مُقَدَّمِ الْعُنُقِ بِمَرَّةٍ.
(১) ত্বালহা ইবনু মুছাররিফ তার পিতার সূত্রে তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে দেখলেন যে, তিনি মাথা মাসাহ করতে গিয়ে ঘাড়ের উপরিভাগ পর্যন্ত একবার মাসাহ করলেন।[11]
তাহক্বীক্ব : হাদীছটি যঈফ।[12] ইবনু উ‘আইনা বলেন, হাদীছটি মুনকার বা অস্বীকৃত।[13] ইমাম শাওকানী বলেন, হাদীছটি অত্যন্ত দুর্বল। উক্ত হাদীছে লায়ছ নামক রাবী অত্যন্ত দুর্বল ও সমালোচিত।[14] ইবনু হিববান (রহঃ) বলেন, তিনি (লায়ছ) হাদীছের সনদ উলট-পালট করতেন, মুরসাল বর্ণনাকে মারফূ‘ রূপে বর্ণনা করতেন এবং বিশ্বস্ত রাবীদের নামে এমন সব হাদীছ বর্ণনা করতেন, যা মূলতঃ তাদের বর্ণিত হাদীছ নয়। ইয়াহইয়া ইবনুল কাত্তান, ইবনুল মাহদী, ইবনু মঈন ও আহমাদ ইবনু হাম্বল (রহঃ) প্রমুখ হাদীছ বিশেষজ্ঞগণ তার বর্ণনা গ্রহণ করতেন না।[15]
(2) عَنْ اِبْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ إِذَا تَوَضَّأ مَسَحَ عُنُقَهُ وَيَقُوْلُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ تَوَضَّأ وَمَسَحَ عُنُقَهُ لَمْ يَغِلُّ بِالْأَغْلَالِ يَوْمَ القِيَامَةِ.
(২) ইবনু ওমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, নিশ্চয়ই তিনি যখন ওযূ করতেন তখন তার ঘাড় মাসাহ করতেন, এবং বলতেন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ওযূ করবে এবং ঘাড় মাসাহ করবে তাকে ক্বিয়ামতের দিন বেড়ী দ্বারা বেড়ী পরানো হবে না।[16] অন্য বর্ণনায় রয়েছে যে, যে ব্যক্তি মাথার সাথে ঘাড়ের নিমণদেশ মাসাহ করবে, ক্বিয়ামতের দিন সে বেড়ী থেকে রক্ষা পাবে।[17]
তাহক্বীক্ব : হাদীছটি জাল বা মিথ্যা।[18] উক্ত বর্ণনায় মুহাম্মাদ ইবনু আমর আল-আনছারী ও মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু মুহাররম নামের দু’জন ব্যক্তি ত্রুটিপূর্ণ। মুহাদ্দিছগণ তাদেরকে দুর্বল বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।[19]
(3) عَنْ وَائِلِ بن حُجْرٍ فِي صِفَةِ وَضُوْءِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ حَضَرْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ... ثُمَّ مَسَحَ عَلَى رَأْسِهِ ثَلاثًا، وَمَسَحَ ظَاهِرَ أُذُنَيْهِ، وَمَسَحَ رُقْبَتَهُ وَبَاطِنَ لِحْيَتَهُ بِفَضْلِ مَاءِ الرَّأْسِ...
(৩) ওয়ায়েল বিন হুজর (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর ওযূর পদ্ধতি সম্পর্কে বর্ণনা করে বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম... (তিনি তাঁর ওযূতে) তিনবার মাথা মাসাহ করলেন এবং দুই কানের পিঠ মাসাহ করলেন ও ঘাড় মাসাহ করলেন এবং মাথার অতিরিক্ত পানি দিয়ে দাড়ির পেট মাসাহ করেন..।[20]
তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল।[21] ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, ‘এটা জাল হাদীছ। নবী করীম (ছাঃ)-এর বক্তব্য নয়’।[22]
(3) مَسْحُ الرُّقْبَةِ أَمَانٌ مِنَ الْغِلِّ.
(৪) ঘাড় মাসাহ করলে বেড়ী থেকে নিরাপদ থাকবে।[23]
তাহক্বীক্ব : হাদীছটি জাল ও ভিত্তিহীন।[24] বিশিষ্ট হাদীছ বিশারদ আল্লামা ইবনুছ ছালাহ (রহঃ) বলেন,
قَالَ ابْنُ الصَّلَاحِ: هَذَا الْخَبَرُ غَيْرُ مَعْرُوفٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ مِنْ قَوْلِ بَعْضِ السَّلَفِ.
‘এটি রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছ হিসাবে পরিচিত নয়। বরং এটি পূর্ববর্তী কোন নেককার ব্যক্তির বক্তব্য মাত্র’।[25]
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে বর্ণিত হাদীছগুলো সম্পর্কে ইমাম নববী (রহঃ) দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, لَمْ يَصِحَّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ فِيْهِ شَيْءٌ قَالَ وَلَيْسَ هُوَ بِسُنَّةٍ بَلْ بِدْعَةٌ ‘এ বিষয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর দিকে নিসবত করা হয় এমন কোন বিশুদ্ধ বর্ণনা নেই’। তিনি আরো বলেন, ‘এটা তো সুন্নাত নয় বরং বিদ‘আত’।[26] ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, ‘ঘাড় মাসাহ সম্পর্কিত বর্ণিত হাদীছগুলো সবই যঈফ’।[27] আব্দুর রহমান আস-সাহীম (রহঃ) বলেন, لا يُشرع مسح الرقبة عند الوضوء بل هو من المُحدَثات وكل مُحدثة بدعة وكل بدعة ضلالة ‘ওযূতে ঘাড় মাসাহ করা কোন শরী‘আত নয়, বরং এটি একটি নতুন আবিষ্কার। আর (শরী‘আতের নামে) প্রত্যেক নতুন আবিষ্কারই বিদ‘আত। আর প্রত্যেক বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা’।[28] উপরিউক্ত আলোচনায় প্রমাণিত হল যে, ঘাড় মাসাহ করা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) থেকে কোন আমল কিংবা কোন নির্দেশনা নেই। সুতরাং ঘাড় মাসাহ করার ভুল অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।
(৪) ওযূর পর সূরা ক্বদ্র পড়া :
ওযূর পর সূরা ক্বদ্র পড়া সম্পর্কে বিভিন্ন গ্রন্থে কিছু বর্ণনা পরিলক্ষিত হয়। আবার এটা প্রমাণের জন্য হাদীছও উল্লেখ করা হয়। অথচ ওযূর পর সূরা ক্বদ্র পড়া সুস্পষ্টরূপে বিদ‘আত। কেননা এ সম্পর্কিত বর্ণিত হাদীছ মিথ্যা ও বানোয়াট। যা রাসূল (ছাঃ) থেকে বর্ণিত নয়। কথিত হাদীছটি নিমণরূপ :
عَنَ أَنَسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ قَرَأَ فِيْ إِثْرِ وُضُوْئِهِ إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِيْ لَيْلَةِ الْقَدْرِ مَرَّةً وَاحِدَةً كَانَ مِنَ الصَّدِيْقِيْنَ وَمَنْ قَرَأَهَا مَرَّتَيْنِ كَانَ فِيْ دِيْوَانِ الشُّهَدَاءِ وَمَنْ قَرَأَهَا ثَلَاثًا يَحْشُرُهُ اللهُ مَحْشَرَ الْأَنْبِيَاءِ.
আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি তার ওযূ শেষ করে সূরা ক্বদ্র একবার পড়বে, সে সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। আর যে ব্যক্তি দুই বার পাঠ করবে, সে শহীদগণের তালিকাভুক্ত হবে। যে ব্যক্তি তিন বার পাঠ করবে, আল্লাহ তাকে নবীগণের সাথে হাশর-নাশর করাবেন।[29]
তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল। এর কোন সনদই নেই।[30] আলাউদ্দীন আলী ইবনু হিসামুদ্দীন আল-মুত্তাক্বী (রহঃ) বলেন, ‘ওযূর পর সূরা ক্বদ্র পাঠ করার ছহীহ হাদীছ সম্মত নয়’।[31] ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, أَنَّهُ لَمْ يَثْبُتْ مِنْهَا شَيْءٌ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا مِنْ قَوْلِهِ وَلَا مِنْ فِعْلِهِ ‘এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কোন বাণী কিংবা তাঁর কোন আমল প্রমাণিত নেই’।[32] অতএব ওযূর পর মিথ্যা ফযীলতের ধোঁকায় পড়ে সূরা ক্বদ্র পড়া পরিত্যাগ করতে হবে। ওযূর পরে রাসূল (ছাঃ) যে সুন্দর দো‘আ শিক্ষা দিয়েছেন তা পাঠ করতে হবে। যেমন,
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِى مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِى مِنَ الْمُتَطَهِّرِين.
উচ্চারণ : আশহাদু আন লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আব্দুহূ ওয়া রাসূলুহু। আল্লা-হুম্মাজ্‘আল্নী মিনাত্ তাউওয়াবীনা ওয়াজ্‘আলনী মিনাল মুতাত্বাহ্হিরীন।
অর্থ : ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি এই মর্মে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত উপাস্য নেই। তিনি একক ও তাঁর কোন অংশীদার নেই। অতঃপর এই মর্মে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত কর’। তাহ’লে তাঁর জন্য জান্নাতের আটটি দরজার সবকটি খুলে দেওয়া হবে। যেটা দিয়ে ইচ্ছা সে প্রবেশ করবে’।[33]
(৬) ওযূর প্রত্যেক অঙ্গ ধৌত করার সময় নির্ধারিত দো‘আ পাঠ করা :
ওযূর প্রত্যেক অঙ্গ ধৌত করার সময় পৃথক পৃথক দো‘আ পাঠ করার কথা বিভিন্ন গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু বর্ণিত দো‘আর পক্ষে কোন প্রমাণ বা দলীল উপস্থাপন করা হয়নি। তাছাড়া এটি রাসূল (ছাঃ), ছাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন, তাবে‘ তাবেঈনসহ সালাফে সালেহীনের পক্ষ থেকেও প্রমাণিত নয়। বরং তা বিদ‘আত। তবে অন্য শব্দে একটি জাল হাদীছ পাওয়া যায়।[34] যেমন-‘আলী ইবনু আবু তালেব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাকে ওযূর সময় কতিপয় পঠিতব্য দো‘আ শিক্ষা দিয়েছিলেন, যা আমি কখনো ভুলে যায়নি। অতঃপর রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট যখন (ওযূর জন্য) পানি আনা হ’ল, তখন তিনি দু’হাতের কব্জি পর্যন্ত ধৌত করলেন। অতঃপর তিনি বললেন, বিসমিল্লা-হিল ‘আযীম ওয়াল হামদুল্লিাহি আলাল ইসলাম, আল্লা-হুম্মাজ্‘আলনী মিনাত তাউওয়াবীনা ওয়াজ‘আলনী মিনাল মুতাত্বাহ্হিরীন, ওয়াজ‘আলনী মিনাল্লাযীনা ইযা ‘আত্বায়তাহুম শাকারূ ওয়া ইযা আবতালায়তাহুম ছাবারূ। যখন মুখমন্ডল ধৌত করলেন, তখন বললেন, আল্লা-হুম্মা হাচ্ছিন ফারজী। এটা তিনি তিনবার বললেন। যখন কুলি করলেন তখন বললেন, আল্লা-হুম্মা আঈন্নী ‘আলা তিলাওয়াতি কিতাবাকা ওয়া যিকরিকা। অতঃপর নাক ঝেড়ে বললেন, আল্লা-হুম্মা আরহানী রা-য়েহাতাল জান্নাহ। যখন মুখমন্ডল ধৌত করলেন তখন বললেন, আল্লা-হুম্মা বাইয়িয ওয়াজহী ইয়াওমা তাবইয়ায্যু ওযূহুন ওয়া তাসওয়াদ্দু ওযূহুন। ডান হাত ধৌত করে বলেন, আল্লা-হুম্মা আতিনী কিতাবী বিইয়ামিনী ওয়া হা-সিবনী হিসাবাই ইয়াসীরা। অতঃপর যখন বাম হাত ধৌত করলেন তখন বললেন, আল্লা-হুম্মা লা তা‘তিনী বললেন, আল্লা-হুম্মাজ‘আলহু শাইয়ান মাশকূরান ওয়া যানাবান মাগফূরান ওয়া তিজা-রাতান লান তাবূরা। অতঃপর তিনি তাঁর মাথা আসমানের দিকে উঠালেন এবং বললেন, আল-হামদুলিল্লা-হিল্লাযী রাফ‘আহা বিগায়রি ‘আমাদিন। অতঃপর নবী করীম (ছাঃ) বললেন, এমতাবস্থায় ফেরেশতারা তার মাথার উপরে অবস্থান করে যা সে বলে তারা তার খাতায় লিখে নেন। অতঃপর তারা তা বন্ধ করে আরশের নিচে রেখে দেন। যা ক্বিয়ামত পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।[35]
তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল। হাদীছটি আবু ইসহাক্ব আস-সাবিঈ আলী থেকে মুনক্বাতে‘ সূত্রে বর্ণনা করেছেন। ইবনুল মুলাক্কিন (রহঃ) বলেন, হাদীছটি মিথ্যা ও বানোয়াট। উক্ত হাদীছের বর্ণনায় আবু মুক্বাতিল সুলায়মান ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ফযল নামে একজন দুর্বল রাবী রয়েছে।[36] ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, وَأَحَادِيثُ الذِّكْرِ عَلَى أَعْضَاءِ الْوُضُوْءِ كُلُّهَا بَاطِلٌ لَيْسَ فِيْهَا شَيْءٌ يَصِحُّ ‘ওযূর প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জন্য পৃথক পৃথক নির্ধারিত দো‘আ পাঠের হাদীছগুলো সবই ভিত্তিহীন। আর এ হাদীছগুলোর মধ্যে কোনটিই বিশুদ্ধ নয়।[37]
সুধী পাঠক! ইসলামী শরী‘আত রাসূল (ছাঃ)-এর যুগে পূর্ণাঙ্গতা পেয়েছে। তাঁর পরে শরী‘আতে কোন কিছু সংযোজন-বিয়োজন করা জঘন্যতম অপরাধ। অধিক ফযীলতের আশায় তৈরী করা কোন বিধান পালন করা আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-কে অপমান করার নামান্তর। আর রাসূল (ছাঃ)-এর অপমান করা আল্লাহকে অপমান করার শামিল।[38] সুতরাং ওযূর পরে মানুষের এই বানোয়াট ও বিদ‘আতী দো‘আ পাঠ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। হে আল্লাহ! আমাদেরকে রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত মোতাবেক জীবন-যাপন করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
(৭) কুলুফ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করা :
পবিত্রতা অর্জনে সন্দেহ থাকার অজুহাতে কুলুফ নিয়ে পরিধেয় কাপড় উঁচু করে চল্লিশ কদম হাঁটাহাঁটি, বিভিন্ন শারীরিক কসরত, কাশি দেওয়া, নাচানাচি করা, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকা, টয়লেটে কুলুফের স্তূপ তৈরী করা সবই বর্তমান যুগের নিকৃষ্ট জাহেলিয়াত। ইসলামে এরকম অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও বেলেল্লাপনার কোন স্থান নেই। কতিপয় ফযীলতপ্রেমী মুসলিম ভাই এমনটি করে থাকেন। বরং এটি করা সুস্পষ্ট বিদ‘আত। সুতরাং ইসলামের বিশ্বজনীন মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণকারী এই বদঅভ্যাস ও নোংরামী অবশ্যই পরিত্যাজ্য। অন্যদিকে পেশাবের ছিটা কাপড়ে লেগে থাকার আশংকা দূরীভূত করার জন্য ইসলাম সুন্দর বিধান দিয়েছে। আর তা হ’ল, ওযূ সম্পাদনের পর হাতে পানি নিয়ে লজ্জাস্থানের দিকে ছিটিয়ে দেওয়া। যেমন-
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا بَالَ يَتَوَضَّأُ وَيَنْتَضِحُ.
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন পেশাব করতেন তখন ওযূ করতেন এবং (লজ্জাস্থান বরাবর) পানি ছিটিয়ে দিতেন।[39] অতএব প্রচলিত বদ অভ্যাস অবশ্যই পরিত্যাগ করতে হবে। মুসলিম জনসাধারণের সকলকে এ বাপারে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে।
উপসংহার :
ইসলাম একটি সার্বজনীন ও পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মাধ্যমে ইসলাম পূর্ণতা পেয়েছে। আল্লাহর ভাষ্য অনুযায়ী রাসূলের নিঃশর্ত অনুসরণ করা আল্লাহর অনুসরণ করার শামিল (নিসা ৪/৮০)। আর তার বিরুদ্ধাচরণ করা আল্লাহর সাথে বিরুদ্ধাচরণের নামান্তর। সুতরাং পূর্ণাঙ্গ একটি ধর্মে মনুষ্য মস্তিষ্ক প্রসূত বিধানাবলী প্রবেশ করে ইসলামের বিশ্বজনীন মর্যাদাকে চরমভাবে বাধাগ্রস্থ করছে। এমনকি মুসলমানের বহু কষ্টে কৃত আমলসমূহ কুরে কুরে নষ্ট করে দিচ্ছে। অথচ বিদ‘আত থেকে আমরা বিরত থাকতে পারছি না। আর এ কথা সত্য যে, ইবাদতের মধ্যে রাসূলের পূর্ণ ইত্তেবা না থাকলে তা আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে না। তাছাড়া ইসলামে নতুন কোন বিধানের আবিষ্কারক ও প্রতিপালনকারীদের ক্বিয়ামতের দিন রাসূল (ছাঃ) হাউযে কাওছারের পানি পান করাবেন না এবং শাফা‘আতও করবেন না। সুতরাং হে বিদ‘আতী মুসলিম ভাই ও বোন! সাবধান হোন। বিদ‘আত পরিহার করুন। আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে ফিরে আসুন পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের পতাকাতলে। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন। আমীন!!
বযলুর রহমান
[1]. আল্লামা সাইয়েদ সাবেক্ব (মৃত ১৪২০ হিঃ), ফিক্বহুস সুন্নাহ (তাবি) ১/৪২-৪৩ পৃঃ।
[2]. ছহীহুল বুখারী হা/১ ও ৬৬৮৯; ছহীহ মুসলিম হা/৫০৩৬।
[3]. আবুদাঊদ ১/১৪ পৃঃ, হা/১০১,১০২, ‘ওযূতে বিসমিল্লাহ বলা’ অনুচ্ছেদ-৪৮, ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়; ইবনু মাজাহ ১/৩২-৩৩ পৃঃ, হা/৩৯৭-৩৯৯; মিশকাত হা/৪০২।
[4]. ইমাম সারাখসী (রহঃ) (মৃত ৪৮৩ হিঃ), আল-মাবসূত (তাবি) পৃঃ ১৯।
[5]. মুহাম্মাদ ইবনু ছালেহ উছায়মীন, ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম (তাবি), প্রশ্ন নং : ২২২, ৬৭ পৃঃ ‘ছালাত সংক্রান্ত ফাতাওয়া সমূহ’ অধ্যায়।
[6]. নাসাঈ হা/১৪০, ১/১৮ পৃঃ, ‘ওযূতে সীমালঙ্ঘন’ অনুচ্ছেদ, ইবনু মাজাহ হা/৪২২, ১/৩৪ পৃ:; আবুদাঊদ হা/১৩৫; ইবনু খুযায়মাহ হা/১৭৪; মিশকাত হা/৪১৭; মুসনাদে আহমাদ হা/৬৬৮৪; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৯৮০।
[7]. আলবানী, ছহীহ আবুদাঊদ (কুয়েত, প্রথম সংস্করণ ২০০২ খ্রিঃ/১৪২৩ হিঃ) ১/২৩০ পৃঃ, হা/১২৪-এর আলোচনা দ্র:।
[8]. শায়খ মুহাম্মাদ ছালেহ আল-মুনাজ্জিদ, ফাতাওয়াউল ইসলাম সাওয়াল ওয়াল জাওয়াব (তাবি), প্রশ্ন নং-৭১১৬৯-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য।
[9]. ফাতাওয়া : দারুল ইফতা (মিসর, তাবি) ৮/৪৩২ পৃঃ।
[10]. আবুদাঊদ হা/৯৬; ইবনু মাজাহ হা/৩৬৮৪; মিশকাত হা/৪১৮।
[11]. মুসনাদে আহমাদ হা/১৫৯৯৩; আবুদাঊদ হা/১৩২।
[12]. যঈফ আবুদাঊদ হা/১৩২।
[13]. মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদীছিয যঈফাহ ওয়াল মাওযূ‘আহ (রিয়ায, ১৯৯২ খ্রিঃ/১৪১২ হিঃ) ১/১৭০ পৃঃ, হা/৭৯-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য।
[14]. ইমাম শাওকানী, নায়লুল আওত্বার তাহক্বীক্ব : ঈছামুদ্দীন আছ-ছাবাবাতী, (দারুল হাদীছ : মিসর, ১ম সংস্করণ ১৪১৩ হিঃ/১৯৯৩ খ্রিঃ) ১/২০২ পৃঃ।
[15]. ইবনু আবী হাতেম, আল-মাজরূহীন, তাহক্বীক্ব : মাহমুদ ইবরাহীম যায়েদ, (তাবি), ২/২৩১ পৃঃ।
[16]. আবু নু‘আইম ইস্পাহানী, আখবা-রু আছবাহান, (তাবি) হা/৪০৪৮৮, ২/১১৫ পৃঃ।
[17]. আল-আজলূনী, কাশফুল খাফা (তাবি) হা/২৩০০, ২/২০৮ পৃঃ।
[18]. সিলসিলা যঈফাহ হা/৭৪৪, ২/১৬৭ পৃঃ।
[19]. আল-মাছনূ‘ ফী মা‘আরেফাতিল হাদীছিল মাওযূ‘; পৃঃ ৭৩; দ্র : সিলসিলা যঈফাহ ১/১৬৯ পৃঃ।
[20]. আত্ব-তাবারানী, আল-মু‘জামুল কাবীর, তাহক্বীক্ব : হামদী ইবনু আব্দুল মাজীদ আস-সালাফী, (মাকতাবাতুল ঊলূম ওয়াল হিকম, দ্বিতীয় সংস্করণ ১৪০৪ হিঃ/১৯৮৩ খ্রিঃ) হা/১৭৫৮৪, ২২/৫০ পৃঃ।
[21]. সিলসিলা যঈফাহ হা/৬৯, ১/১৬৭ পৃঃ।
[22]. সিলসিলা যঈফাহ হা/৬৯, ১/১৬৭ পৃঃ; ইমাম নববী, আল-মাজমু‘ শারহুল মুহাযযাব, (তাবি), ১/৪৬৫ পৃঃ, ‘মিসওয়াক’ অনুচ্ছেদ।
[23]. আবু মানছূর আদ-দায়লামী, মুসনাদুল ফিরদাউস ১/১৩৩ পৃঃ; ইবনু হাজার আসক্বালানী, তালখীছুল হাবীর ফী তাখরীজি আহাদীছিল রা-ফিঈল কাবীর (দারুল কুতুবিল ইলমিইয়্যাহ, ১৪১৯ হিঃ/১৯৮৯ খ্রিঃ) ১/৪৩৩ পৃঃ।
[24]. সিলসিলা যঈফাহ হা/৬৯, ১/১৬৭ পৃঃ।
[25]. নায়লুল আওত্বার ১/২০৬ পৃঃ; হা/১৯৮-এর আলোচনা দ্রঃ; তালখীছুল হাবীর ১/২৮৭; হা/৯৭-এর আলোচনা দ্রঃ।
[26]. নায়লুল আওত্বার (তাবি) ১/২০২ পৃঃ; তালখীছুল হাবীর ১/২৮৭ পৃঃ; হা/৯৭-এর আলোচনা দ্রঃ।
[27]. নায়লুল আওত্বার ১/২০২ পৃঃ।
[28]. আব্দুর রহমান আস-সাহীম, ইত্তিহাফুল কেরাম বিশারহি উমদাতুল আহ্কাম ১/৩৯ পৃঃ।
[29]. কানযুল উম্মাল (আল-মুওয়াস্সাসাতুর রিসালাহ, ৫ম সংস্করণ, ১৪০১ হিঃ/১৯৮১ খ্রিঃ) হা/২৬০৯০, ৯/২৯৯ পৃঃ; জালালুদ্দীন সুয়ূতী, জা-মিঊল আহাদীছ, হা/২৩৪৫০; দায়লামী, মুসনাদুল ফেরদাঊস-এর বরাতে সুয়ূতী আল-হাবী লিল ফাতাওয়া ২/১১ পৃঃ।
[30]. সিলসিলা যঈফাহ হা/১৪৪৯ ও ১৫২৭।
[31]. কানযুল উম্মাল হা/২৬০৮৯, ৯/২৯৯ পৃঃ।
[32]. ইবনু আবেদীন, রদ্দুল মুহতার ১/৩৫৬ পৃঃ ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়, ‘ওযূর সুন্নাত সমূহ’ অনুচ্ছেদ।
[33]. তিরমিযী ১/৭৭-৭৮, হা/৫৫; ছহীহ মুসলিম হা/৫৭৬,৫৭৭; আবুদাঊদ ১/২২-২৩, হা/১৬৯; ইবনু মাজাহ ১/৩৬, হা/৪৬৯-৪৭০; মিশকাত হা/২৮৯; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২৬৯, ২/৪১-৪২।
[34]. তাযকিরাতুল মাওযূ‘আত পৃঃ ৩২; আল-ফাওয়াইদুল মাওযূ‘আত পৃঃ ১৩, ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়, হা/৩৩।
[35]. জামে‘উল আহাদীছ হা/৩৩৬৭২; কানযুল ঊম্মাল হা/২৬৯৯১।
[36]. কানযুল উম্মাল ৯/৪৬৭পৃঃ, হা/২৬৯৯১-এর আলোচনা দ্রঃ; জামে‘ঊল আহাদীছ ৩১/২১; ইবনুল মুলাক্কিন, আল-বাদরুল মুনীর, তাহক্বীক্ব : মুছত্বফা আবুল গায়ত্ব এবং আব্দুল্লাহ ইবনু সুলায়মান ও ইয়াসির ইবনু কামাল (রিয়ায : দারুল হিজরাহ, ১ম সংস্করণ ১৪২৫ হিঃ/২০০৪ খ্রিঃ) ২/২৭৩ পৃঃ।
[37]. ইবনুল ক্বাইয়িম, আল-মানারুল মুনীফ, তাহক্বীক্ব : আবু গাদ্দাহ (মাকতাবাতুল মাত্ববূ‘আতিল ইসলামিইয়্যা : আলেপ্পো, ১৪০৩ হিঃ) ১২০ পৃঃ, অনুচ্ছেদ-৩৯।
[38]. ছহীহুল বুখারী হা/৭১৩৭; ছহীহ মুসলিম হা/৪৮৫২; মিশকাত হা/৩৬৬১।
[39]. আবুদাঊদ ১/২২ পৃঃ, হা/১৬৬; নাসাঈ ১/১৭ পৃঃ, হা/১৩৪-১৩৫; ইবনু মাজাহ ১/৩৬ পৃঃ, হা/৪৬১,৬২,৬৪; মিশকাত হা/৩৬৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৩৮, ২/৬৮ পৃঃ।