চিন্তার মানহাজ
ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
মুযাফফর বিন মুহসিন 883 বার পঠিত
হক্ব সংগঠন : ছিরাতে মুস্তাক্বীম ও নির্ভেজাল তাওহীদী দাওয়াতের অতন্দ্রপ্রহরী
‘ছিরাতে মুস্তাক্বীম’ মানব জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ। তাই প্রত্যেক ছালাতের প্রত্যেক রাক‘আতে সারা জীবন আল্লাহর কাছে এ জন্য প্রার্থনা করতে হয়। ছালাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা এ জন্যই ফরয। ছিরাতে মুস্তাক্বীমের সন্ধান পেয়ে গেলে ইনশাআল্লাহ ঐ ব্যক্তি এক সময় গন্তব্যে পৌঁছাবেই। আস্তে হোক বা ধীরে হোক, একাকী হোক বা কারো সহযোগিতায় হোক- যদি মাঝপথে দিক বিভ্রান্ত না হয় এবং ছিটকে না পড়ে। আর এই পথিক যেন কোন সময় পথ না হারায় সে জন্য হক্ব সংগঠন অতন্দ্রপ্রহরীর ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে উক্ত সংগঠনকে যাচাই করে নির্ধারণ করতে হবে। আর তা হল রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের বৈশিষ্ট্যমন্ডিত জামা‘আত (তিরমিযী হা/২৬৪১)।
অনুরূপভাবে নির্ভেজাল তাওহীদের দাওয়াতটা কী, একজন দাঈ কোন্ দাওয়াত মানুষের সামনে পেশ করবেন, জনসাধারণ কোন্ দাওয়াত গ্রহণ করবে এবং কাদের সাথে অবস্থান করবে তার জন্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হল হক্ব সংগঠন। কারণ অগণিত নোংরা মতবাদ, অসংখ্য ভ্রান্ত পথ, শত শত বাতিল ফের্কা, হাযার হাযার জাহান্নামী আলেম এবং লক্ষ লক্ষ মিথ্যা ও ভুয়া আমল সমাজে প্রচলিত আছে। প্রত্যেকেই নিজ নিজ মতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের খপ্পরে কেউ পড়ে গেলে তার আর বাঁচার পথ নেই। তারা তাকে জাহান্নামে ফেলে দিবে (বুখারী হা/৭০৮৪; আবুদাঊদ হা/৪৫৯৭)।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহর রজ্জুকে শক্ত করে ধারণ কর; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না’ (আলে ইমরান ১০৩)। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘জামা‘আত হল রহমত এবং বিচ্ছিন্নতা হল গযব’ (আহমাদ হা/১৮৪৭২; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৬৬৭, সনদ হাসান )। অন্য হাদীছে এসেছে, ‘জামা‘আতের উপর আল্লাহর হাত থাকে। আর শয়তান তার সাথে থাকে, যে জামা‘আত হতে বিচ্ছিন্ন থাকে’ (তিরমিযী হা/২১৬৬; মিশকাত হা/১৭৩, সনদ ছহীহ)। রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, ‘তিনজন লোকের জন্যও কোন নির্জন ভূমিতে অবস্থান করা হালাল নয়, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে একজনকে আমীর নিযুক্ত করা হয়’ (আবুদাঊদ হা/২৬০৮, সনদ হাসান)। ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমরা আমার ছাহাবীদেরকে সম্মান কর। কারণ তারা তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম মানুষ। অতঃপর তাদের পরবর্তীদেরকে, অতঃপর তাদের পরবর্তীদেরকে সম্মান কর। এরপর মিথ্যার আবির্ভাব ঘটবে। এমনকি কোন ব্যক্তি (স্বেচ্ছায়) কসম করবে, অথচ তার নিকট কসম চাওয়া হবে না। সে সাক্ষ্য দিবে, অথচ সাক্ষ্য চাওয়া হবে না। সাবধান! যে ব্যক্তি জান্নাতের মধ্যভাগে থাকার আশা পোষণ করে, সে যেন জামা‘আতকে আঁকড়ে ধরা ওয়াজিব করে নেয়। কেননা শয়তান ঐ ব্যক্তির সাথে থাকে, যে জামা‘আত হতে পৃথক থাকে (নাসাঈ হা/৩৮০৯)। অন্য হাদীছে এসেছে যে, ফেৎনার যুগে যাবতীয় ভ্রান্ত দল পরিত্যাগ করে হক্ব জামা‘আতকে আঁকড়ে ধরতে হবে (বুখারী হা/৩৬০৬)। এ ধরনের নির্দেশনা কুরআন-হাদীছে আরো অনেক রয়েছে।
উক্ত দলীলগুলো প্রমাণ করে যে, প্রত্যেক ব্যক্তির শিরোধার্য কর্তব্য হল, ছিরাতে মুস্তাক্বীম বা ছাহাবায়ে কেরামের রাস্তা খুঁজে বের করা এবং হক্ব জামা‘আত নির্ধারণ করা। সেই সাথে অন্যান্য ভ্রান্ত ফের্কা ও বিদ‘আতী দলগুলোকে প্রত্যাখ্যান করা। কারণ আল্লাহ বলেন, ‘যে সকল ব্যক্তি তাদের দ্বীনকে টুকরা টুকরা করেছে এবং নিজেরা বিভিন্ন দলে-উপদলে বিভক্ত হয়েছে, হে রাসূল! তাদের কার্যপলাপের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই’ (আন‘আম ১৫৯)। এক্ষণে প্রশ্ন হল, উক্ত জামা‘আত কি সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া শর্ত? প্রশ্নই আসে না। কারণ ইসলাম কখনোই কোন অবস্থাতেই সংখ্যার দাম দেয়নি। বরং হক্বকে প্রাধান্য দিয়েছে (মুসলিম হা/৩৮৯)। তাই ইবনু মাসঊদ (রাঃ) জামা‘আতের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘নিশ্চয় জামা‘আত তাকেই বলে, যার সাথে হক্বের মিল রয়েছে, যদিও তার সদস্য তুমি একজন হও’ (তারীখে ইবনে আসাকির ১৩/২২৩; সনদ ছহীহ)। এক্ষণে দেখার বিষয়, জামা‘আতবদ্ধ জীবন যাপন করার প্রতি কেন এত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে? বিভিন্ন উদাহরণের মাধ্যমে কেন বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে? এই অনুভূতিটুকু কি আমাদের মধ্যে আছে? এর মৌলিক কারণ হল, হক্ব জামা‘আতের উপর আল্লাহর রহমত থাকে। ফলে ছিরাতে মুস্তাক্বীম থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না। তাছাড়া এর নেতৃত্ব দেন আল্লাহ কর্তৃক নির্বাচিত উলুল আমর বা শরী‘আত অভিজ্ঞ দূরদর্শী যোগ্য ব্যক্তি, যিনি সালফে ছালেহীনের মূলনীতির আলোকে উপযুক্ত সময়ে কিতাব ও সুন্নাহ ভিত্তিক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পেশ করতে পারেন। এ জন্যই আল্লাহ এবং রাসূল (ছাঃ)-এর আনুগত্যের সাথে উলুল আমরের আনুগত্যকেও শর্তযুক্ত করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, রাসূলের আনুগত্য কর এবং তোমাদের ঊলুল আমরের। যদি তোমাদের মধ্যে কোন বিষয়ে কোন মতবিরোধ হয়, তবে সে বিষয়কে আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও- যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস করে থাক। এটাই কল্যাণকর ও শ্রেষ্ঠ পরিসমাপ্তি’ (নিসা ৫৯)।
প্রশ্ন হল, উক্ত ‘ঊলুল আমর’ কে? তিনি কি ব্যঙের ছাতার মত যত্রতত্র গজিয়ে উঠেন? প্রত্যেক গ্রামে, মহল্লায় নাযিল হন? সকলেই কি উক্ত গুণে ভূষিত হতে পারেন? তিনি কি জনবিচ্ছিন্ন তথাকথিক পাতি নেতা? তিনি কি আনুগত্যশূন্য স্বঘোষিত মূর্খ আমীর? তিনি কি পেটপূজারী বিদ‘আতী আলেম? যে খানকা-মাযারে বসে কোটি কোটি মানুষকে মুশরিক বানাচ্ছে সেই ভন্ড পীর কি উলুল আমর? তিনি কি ইবলীস শয়তানের স্পেশাল এজেন্ট ত্বাগূতের ধ্বজাধারী রাষ্ট্রীয় নেতা? কখনোই না। প্রশ্নই আসে না। এ সমস্ত স্বেচ্ছাচারী, অহংকারী, অজ্ঞ, প্রতারক, ধান্দাবাজ, দালাল, পথভ্রষ্ট ব্যক্তি কখনো উলুল আমর হতে পারে না। নেতৃত্বপূজারী ঐ নির্লজ্জ ব্যক্তিরা নিজেরা দাবী করতে পারে, কিন্তু তারা আল্লাহ কর্তৃক নির্বাচিত নয়। কুরআনে অবশ্যই তাদের কথা বলা হয়নি। মূলতঃ তিনি হলেন আল্লাহ কর্তৃক নির্বাচিত খলীফা।
খলীফার অনুপস্থিতিতে তিনি হবেন প্রত্যেক যুগের নেতৃত্বের গুণাবলীসম্পন্ন শরী‘আত অভিজ্ঞ তাক্বওয়াশীল ও দূরদর্শী নেতা বা আমীর, মুজাদ্দিদ ও মুজতাহিদ, যাকে আল্লাহ দ্বীনের অফুরন্ত জ্ঞান দান করেন (বাক্বারাহ ২৬৯; বুখারী হা/৭১)। আর আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত উলুল আমর দ্বারা পরিচালিত জামা‘আত কখনো ব্যর্থ হতে পারে না। দুনিয়া থেকেও তারা নিশ্চিহৃ হবে না; বরং ক্বিয়ামত পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত হবে ইনশাআল্লাহ (মুসলিম হা/৫০৫৯)। এই জামা‘আতের নেতৃত্বের পরিবর্তন হবে কিন্তু নীতির পরিবর্তন হবে না। ছাহাবায়ে কেরামের যুগ থেকে আজ পর্যন্ত সেটাই প্রমাণিত হয়েছে। ফালিল্লা-হিল হামদ।
জামা‘আত থেকে পৃথক থাকলে পথভ্রষ্ট হওয়া খুব স্বাভাবিক। কারণ পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের প্রকৃত মর্ম ও তাৎপর্য সকল মানুষের পক্ষে বুঝা এবং সেখান থেকে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত বের করা সম্ভব নয়। এই বিশেষ জ্ঞান যে আল্লাহ সকলকে দেন না, তা পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ দ্বারাই প্রমাণিত। আর এই সূত্রের অনুসরণ না করে নিজের মত করে কুরআন-হাদীছ বুঝতে গিয়ে অসংখ্য মানুষ সালফে ছালেহীন তথা ছাহাবায়ে কেরামের পথ থেকে ছিটকে পড়ছে। ইসলামের নামে ভ্রান্ত থিওরি আমদানী করছে; নতুন নতুন রাস্তা ও ফের্কার জন্ম দিচ্ছে; উদ্ভট ফৎওয়া দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তাই হক্ব সংগঠনের সাথে জড়িত থাকলে এই আশংকা থাকবে না। যেমন আল্লাহর নির্দেশ, হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক (তওবা ১১৯)।
অনুরূপ ঐক্যবদ্ধভাবেই একজন নেতার অধীনে নির্ভেজাল তাওহীদের কার্যক্রম পরিচালনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটাও আল্লাহর নির্দেশ। আল্লাহ বলেন, ‘বলুন! এটাই আমার পথ। আমি ও আমার অনুসারীগণ ডাকি আল্লাহর দিকে, জাগ্রত জ্ঞান সহকারে। আল্লাহ পবিত্র এবং আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই’ (ইউসুফ ১০৮)। উক্ত আয়াতে একাকী ডাকার কথা বলা হয়নি; বরং একজন নেতার অধীনে কর্মীদেরকে দলীলসহ দাওয়াত দেয়ার কথা বলা হয়েছে। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা উচিত যারা সৎ কর্মের প্রতি আহবান জানাবে, নির্দেশ দিবে ভাল কাজের এবং নিষেধ করবে অন্যায় কাজ থেকে। আর তারাই হ’ল সফলকাম’ (আলে ইমরান ১০৪)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, ‘তোমরাই সর্বোত্তম উম্মত। মানবজাতির কল্যাণের জন্যই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দিবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে’ (আলে ইমরান ১১০)। উক্ত নির্দেশগুলোর কারণেই রাসূল (ছাঃ) বিভিন্ন স্থানে দাওয়াতী কাফেলা প্রেরণ করেছেন বিভিন্ন ব্যক্তির নেতৃত্বে (বুখারী হা/৭৩৭২)।
দুঃখজনক হল, একশ্রেণীর ব্যক্তি নির্দিষ্ট নেতৃত্বের অধীনে ঐক্যবদ্ধভাবে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনায় চরম নাখোশ। বরং বিরোধিতা করাই তাদের দাওয়াতের মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা সঊদী, কুয়েত ইত্যাদি দেশের দোহাই দিয়ে অনেক মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। যদিও তাদের দাওয়াতী কার্যক্রমের পরিধি একেবারেই সীমিত। কিন্তু দাওয়াতী কার্যক্রম যে হেকমতপূর্ণ এবং তার ধরণ যে পরিবর্তনশীল তা তারা মানতে রাযী নন। অথচ নবী-রাসূলদের যুগেও দাওয়াতী কার্যক্রমের ধরণ পরিবর্তনশীল ছিল। মূসা (আঃ)-এর যুগে ছিল যাদুর প্রভাব। লাঠির মাধ্যমে আল্লাহ তা খর্ব করেছেন। ঈসা (আঃ)-এর যুগে ছিল ঝাড়ফুঁকের প্রভাব। তাঁকে মু‘জিযা দ্বারা তা দমন করেছেন। মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর সময়ে ছিল সাহিত্যের প্রভাব। তাই পবিত্র কুরআনের মত পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্য দ্বারা তাদের অহংকার ভেঙ্গে দিয়েছেন। সুতরাং যে দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত সে দেশের সাথে বাংলাদেশের অবস্থা তুলনীয় নয়। দাওয়াতী মূলনীতি এক ও অভিন্ন হবে কিন্তু কৌশল ভিন্ন হতেই হবে।
অন্যদিকে হক্বপন্থী সংগঠনের অনুসারী হওয়া সত্ত্বেও এবং নির্ভেজাল তাওহীদের একনিষ্ঠ দাঈ হওয়ার পরও অনেকের মাঝে একটু শূন্যতা অনুভব করা যায়। তা হল- দ্বিধাভক্ত উম্মত কিভাবে ঐক্যবদ্ধ হবে? ওলামায়ে কেরাম কিভাবে এক প্লাটফরমে সমবেত হবে? অবস্থা যদি এমন হয় তবে কিভাবে সর্বত্র ইসলামের পুনর্জাগরণ ঘটবে? এরূপ হতাশা আছে অনেকের মাঝে। অথচ উক্ত ভাবনাটাই ভুল। কারণ দাঈর কাজ শুধু শরী‘আতের বাস্তব অবস্থাটা মানুষের কাছে তুলে ধরা এবং এ জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা চালানো। সফলতা দানের মালিক আল্লাহ। দাঈর দায়িত্ব হেদায়াতের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া। হেদায়াত করার মালিক আল্লাহ (ক্বাছাছ ৫৬)। দাঈ তার প্রতিদান পুরোপুরি পেয়ে যাবেন। আর ওলামায়ে কেরামের বিভক্তি, দ্বীনের ইখতেলাফ, উম্মতের দলাদলি প্রকৃত দাঈর কাছে কোন চিন্তার বিষয় নয়। কারণ এগুলো বন্ধ করা যাবে না। কারণ বিভক্তির পক্ষে ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে। তাই ঘৃণা করতে হবে। দাওয়াতী কার্যক্রমের ফলাফল আল্লাহ যখন দুনিয়াতে দেখাতে চাইবেন, তখন এগুলোর কোন অস্তিত্ব থাকবে না ইনশাআল্লাহ। যেমন ওমর বিন আব্দুল আযীয (রহঃ)-এর যুগ। এত বিভক্তি, মতানৈক্য, দ্বন্দ্ব ও দাঙ্গার মাঝে তিনি কিভাবে দ্বিতীয় ওমর ও পঞ্চম খলীফার মর্যাদায় ভূষিত হলেন? উপমহাদেশে শাহ ইসমাঈল (রহঃ)-এর যুগ। অসংখ্য আলেমের বিরোধিতা ও হাযার হাযার ফের্কার ভেদাভেদ সত্ত্বেও বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন কিভাবে সফল হয়েছিল? ঐ বিভক্ত ফের্কাগুলো কোথায় হারিয়ে গিয়েছিল? এগুলো সব আল্লাহর খাছ মদদে হয়েছিল। যেমন একটি বাঁশ গাছ কোথাও ঝাড় নিয়ে গজিয়ে উঠলে তার তলায় কোন আগাছার অস্তিত্ব থাকে না বা মাথা চাড়া দিতে পারে না। এ ধরনের প্রমাণ সমাজে ভুরি ভুরি রয়েছে।
অতএব আসুন! আমরা নির্ভেজাল তাওহীদের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্য হক্ব সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হই এবং আল্লাহর সাহায্য কামনা করি। আল্লাহ আমাদেরকে ছিরাতে মুস্তাক্বীমের উপর অটল থাকার তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!!