সফল খতীব হওয়ার উপায় (৩য় কিস্তি)
শরীফুল ইসলাম
লিলবর আল-বারাদী 1249 বার পঠিত
দ্বীনী জ্ঞানার্জনে কিছু দিক-নির্দেশনা
তাক্বওয়ার সাথে ইলম অর্জন করতে হয়। কেননা তাক্বওয়া প্রকৃত ইলমের বাহক। তাক্বওয়াবিহীন ইলম মূলত ফলবিহীন একটি পুষ্ট গাছের মত যা মালিকের বিশেষ কোন কাজে আসেনা। ইলম অর্জনের ক্ষেত্রে একজন জ্ঞান আহরণকারীর জন্য অবশ্য পালনীয় চারটি ধাপ রয়েছে। বিখ্যাত তাবেঈ সুফিয়ান ছাওরী (রহঃ) বলেন, ইলমের প্রথম ধাপ হ’ল চুপ থাকা। দ্বিতীয় ধাপ হ’ল মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করা এবং শ্রবণকৃত বিষয়সমূহ মুখস্থ রাখা। তৃতীয় ধাপ হ’ল ইলম অনুযায়ী যথাসাধ্য আমল করা। চতুর্থ ধাপ হ’ল ইলমের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করা এবং অন্যকে তা শিক্ষা দেয়া’।[1]
ইলম অর্জনের আগে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। ছালিহ আল-ফাওযান (হাফিঃ) বলেন, ‘যে সকল ব্যক্তি দাওয়াহ্-র সাথে সম্পৃক্ত, তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া অত্যাবশ্যক। যথা- তাদের জ্ঞানার্জনের মাধ্যম, আক্বীদাহ ও মানহাজ কী? তাদের কার্যকলাপ সম্বন্ধে অবশ্যই খোঁজখবর নেওয়া উচিত। কেননা তাদের কথা এবং কার্যকলাপের দ্বারা (মানুষ) পথভ্রষ্ট হওয়ার পূর্বে সর্তকতা নেওয়া উচিত। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে, যখন ফিতনার দিকে আহবানকারী প্রচুর’।[2]
১. জ্ঞানার্জনে প্রথমে কুরআন হিফয করা : কুরআন মুখস্থ করার মাধ্যমে একজন ইলম অর্জনকারীর শিক্ষাজীবন শুরু করা উচিৎ। কেননা অগ্রগণ্য ও অগ্রবর্তীতার ক্ষেত্রে এটা মহিমান্বিত জ্ঞান। তারপর আল্লাহ যদি তাকে কুরআন হিফয করার তাওফীক্ব দান করেন, তাহ’লে তার উচিত হবে না সাথে সাথেই হাদীছ অথবা এমন কোন জ্ঞান আহরণে মশগূল হয়ে পড়া, যা তাকে কুরআন ভুলে যাওয়ার দিকে ঠেলে দিবে। কুরআন মুখস্থের পর শিক্ষার্থী রাসূলের হাদীছের প্রতি মনোনিবেশ করবে। কারণ মানুষের কর্তব্য হ’ল হাদীছের জ্ঞান অর্জন করা। কেননা হাদীছ শরী‘আতের অন্যতম মৌলিক উৎস ও ভিত্তি। এ সম্পর্কে ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, ‘শিক্ষাজীবনের শুরুতে সর্বপ্রথম কুরআন মুখস্থ করতে হয়। কেননা কুরআনই সর্বাধিক গুরুতবপূর্ণ জ্ঞান। সালাফগণ কেবলমাত্র তাদেরকেই হাদীছ ও ফিক্বহ শিক্ষা দিতেন, যাদের কুরআন মুখস্থ থাকত।[3]
হাফেয ইমাম ইবনু আব্দিল বার্র (রহঃ) বলেন, فَأَوَّلُ الْعِلْمِ حِفْظُ كِتَابِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ ‘জ্ঞানের প্রথম ধাপই হ’ল মহান
আল্লাহর কিতাব ‘আল-কুরআন’ মুখস্থ করা’।[4]
প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বালেগ হওয়ার পূর্বেই কুরআন হিফয করা উচিৎ। অন্যত্র তিনি বলেন, وَتَفَهُّمُهُ وَكُلُّ مَا يُعِيْنُ عَلَى فَهْمِهِ فَوَاجِبٌ طَلَبُهُ مَعَهُ، ‘কুরআন বুঝা এবং অনুধাবনের জন্য সহায়ক সকল জ্ঞান অর্জন করাও আবশ্যক’।[5]
ইবনুল মুফলিহ (রহঃ) বলেন, মায়মুনী বলেছেন, ‘আমি আবু আব্দুল্লাহ (ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল)-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, আমি আমার সন্তানকে আগে কুরআন শিক্ষা দিব নাকি হাদীছ শিক্ষা দিব? এই দুই পদ্ধতির মধ্যে কোনটা আপনার নিকট বেশী পসন্দনীয়? তখন তিনি বললেন, না, বরং আগে কুরআন শিখাও। আমি বললাম, পুরা কুরআনই কি শিখাব? তিনি বললেন, যদি কঠিন না হয়, তাহ’লে পুরা কুরআনই শিখাও, তাহ’লে সে কুরআন থেকে আস্তে আস্তে জ্ঞানে সমৃদ্ধ হবে। তারপর তিনি আমাকে বললেন, যদি সে প্রাথমিকভাবে কুরআন তেলাওয়াত করতে পারে, তাহ’লে তাকে নিয়মিত তেলাওয়াতে অভ্যস্ত করবে। ইমাম আহমাদের অনুসারীরা আমাদের যুগ পর্যন্ত পাঠদানের ক্ষেত্রে এই নীতিমালাই অনুসরণ করে এসেছেন’।[6]
দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞানার্জন। এর কোন বয়স বা সময়সীমা নেই। জীবনের দীর্ঘ সময় এ পথে ব্যয় করতে হবে। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জ্ঞানার্জন করতে হবে। তবেই জ্ঞানের সকল শাখায় বিচরণ করা সম্ভব হবে এবং পরিপক্ক জ্ঞানী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যাবে। হাসান বিন মানছূর আল-জাসসাস বলেন, আমি ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কত বছর পর্যন্ত একজন মানুষ লেখা পড়া শিখবে? তিনি বললেন, মৃত্যু পর্যন্ত’।[7]
আর সমাজে নেতৃত্ব দিতে হ’লে সর্বপ্রথম জ্ঞানার্জন করা আবশ্যক। ওমর (রাঃ) বলেন, تَفَقَّهُوْا قَبْلَ أَنْ تُسَوَّدُوْا ‘নেতৃত্ব দেওয়ার পূর্বে তোমরা বিদ্যা অর্জন কর’। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, ‘নেতা হওয়ার পরেও তোমরা বিদ্যা অর্জন করতে থাক। নবী করীম (ছাঃ)-এর ছাহাবীগণ তো বৃদ্ধ বয়সে বিদ্যা শিখেছেন’।[8]
কুরআন হিফয সম্পন্ন হ’লে হাদীছসহ যাবতীয় জ্ঞানার্জনে ব্রত হওয়া। তবেই অর্জিত জ্ঞানে জ্ঞানীর মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং জ্ঞানের সমৃদ্ধি অনুভব করবে।
২. যাচাই সাপেক্ষে জ্ঞান আহরণ : ইলম বা জ্ঞান যাচাই করে অর্জন করতে হবে। কেননা ফাসিক, মিথ্যাবাদী, খেয়ানতকারী প্রভৃতি ব্যক্তিদের নিকট থেকে যাচাই ব্যতীত জ্ঞান আহরণ করতে আল্লাহ তাআলা নিষেধ করেছেন। আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنْ جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَنْ تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَى مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ ‘হে মুমিনগণ! যদি কোন ফাসেক ব্যক্তি তোমাদের নিকট কোন সংবাদ নিয়ে আসে, তবে তোমরা সেটা যাচাই কর, যাতে অজ্ঞতাবশে তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতি সাধন না করে বস। অতঃপর নিজেদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হও’ (হুজুরাত ৪৯/৬)।
অন্যত্র তিনি বলেন,وَلَا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا ‘যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই তার পিছে পড়ো না। নিশ্চয়ই কান, চোখ ও হৃদয় প্রত্যেকটির বিষয়ে তোমরা (ক্বিয়ামতের দিন) জিজ্ঞাসিত হবে’ (ইসরা ১৭/৩৬)।
প্রশান্ত পবিত্র আতমা সর্বদা ন্যায়পরায়ণ হয়। সে ভালমন্দ বিচার করে এবং তা জানিয়ে দেয়। ওয়াবেছাহ বিন মা‘বাদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেন,اسْتَفْتِ نَفْسَكَ، وَإِنْ أَفْتَاكَ الْمَفْتُونَ ‘তুমি তোমার হৃদয়ের কাছে ফৎওয়া নাও, যদিও মুফতীরা তোমাকে ফৎওয়া দিয়েছে’।[9] হযরত আবি ছা‘আলাবা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, الْبِرُّ مَا سَكَنَتْ إِلَيْهِ النَّفْسُ وَاطْمَأَنَّ إِلَيْهِ الْقَلْبُ وَالإِثْمُ مَا لَمْ تَسْكُنْ إِلَيْهِ النَّفْسُ وَلَمْ يَطْمَئِنَّ إِلَيْهِ الْقَلْبُ وَإِنْ أَفْتَاكَ الْمُفْتُونَ. ‘সৎ কর্মে আত্মা প্রশান্ত থাকে এবং অন্তর থাকে ধীরস্থির। আর গুণাহের কাজে আত্মা অস্থির হয়ে যায় এবং অন্তরও ধীরস্থির থাকে না। যদিও মুফতিগণ সে বিষয়ে তোমাকে ফৎওয়া প্রদান করেন’।[10]
৩. ধারণাকৃত জ্ঞান পরিহার করা : যে সকল ব্যক্তি ধারণা করে কথা বলে তাদের নিকট থেকে জ্ঞান গ্রহণের নিষেধ রয়েছে। কেননা মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে, সে যা শুনে তাই বলে বেড়ায়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, كَفَى بِالْمَرْءِ كَذِبًا أَنْ يُحَدِّثَ بِكُلِّ مَا سمع ‘কোনো লোক মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে (সত্যতা যাচাই না করে) তা-ই বলে বেড়ায়’।[11] ধারণাপ্রসূতভাবে সত্য-মিথ্যার সংমিশ্রণ ঘটানো নিষেধ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَلَا تَلْبِسُوا الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَتَكْتُمُوا الْحَقَّ وَأَنْتُمْ تَعْلَمُونَ ‘তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনেশুনে সত্যকে গোপন করো না’ (বাক্বারাহ ২/৪২)।
সুতরাং কোন বিষয়ে জানা না থাকলে, তা জানার ভান করে বা অনুমান করে কোন কথা না বলাই উচিৎ। আর জানা না থাকলে সরাসরি বলতে হয় ‘আল্লাহু আ‘লাম’ বা আল্লাহ সর্বাধিক জ্ঞাত। আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,مَنْ عَلِمَ فَلْيَقُلْ، وَمَنْ لَمْ يَعْلَمْ فَلْيَقُلِ اللهُ أَعْلَمُ. فَإِنَّ مِنَ الْعِلْمِ أَنْ يَقُولَ لِمَا لاَ يَعْلَمُ لاَ أَعْلَمُ ‘যে জানে সে যেন বলে, আর যে জানে না সে যেন বলে, আল্লাহ সর্বাধিক অবগত। কারণ এটাও একটা জ্ঞান যে, যার যে বিষয় জানা নেই সে বলবে, আমি এ বিষয়ে জানি না’।[12] ওমর বিন আব্দুল আযীয (রহঃ) বলেন, مَن قال لاَ أدْرِيْ فقد أحرز نصفَ العلم ‘যে বলবে, আমি জানি না। সে অর্ধেক জ্ঞান অর্জন করল’।[13]
৪. আমানতদারী নেই, এমন ব্যক্তির জ্ঞান বর্জন করা :
যার আমানত নেই, তার ঈমান ও দ্বীন নেই। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরূপ খুৎবা খুব কমই দিয়েছেন যাতে এ কথাগুলো বলেননি, لا َإِيْمَانَ لِمَنْ لاَ أَمَانَةَ لَهُ وَلاَ دِيْنَ لِمَنْ لاَ عَهْدَ لَه.ُ ‘যার আমানতদারী নেই, তার ঈমানও নেই এবং যার অঙ্গীকার ঠিক নেই, তার দ্বীনও নেই’।[14]
হযরত হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে দু’টি হাদীছ শুনানোর উদ্দেশ্যে বলেন, أَنَّ الأَمَانَةَ نَزَلَتْ فِى جَذْرِ قُلُوبِ الرِّجَالِ، ثُمَّ عَلِمُوا مِنَ الْقُرْآنِ، ثُمَّ عَلِمُوا مِنَ السُّنَّةِ. ‘আমানত মানুষের অন্তরসমূহের অন্তস্থলে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) অবতীর্ণ হয়। অতঃপর তারা কুরআন হ’তে শিক্ষাগ্রহণ করেন, তারপর শিক্ষাগ্রহণ করেন সুন্নাহ হ’তে’।
অপর হাদীছে এসেছে,يَنَامُ الرَّجُلُ النَّوْمَةَ فَتُقْبَضُ الأَمَانَةُ مِنْ قَلْبِهِ، فَيَظَلُّ أَثَرُهَا مِثْلَ أَثَرِ الْوَكْتِ، ثُمَّ يَنَامُ النَّوْمَةَ فَتُقْبَضُ فَيَبْقَى أَثَرُهَا مِثْلَ الْمَجْلِ، كَجَمْرٍ دَحْرَجْتَهُ عَلَى رِجْلِكَ فَنَفِطَ، فَتَرَاهُ مُنْتَبِرًا، وَلَيْسَ فِيهِ شَىْءٌ، فيُصْبِحُ النَّاسُ يَتَبَايَعُونَ فَلاَ يَكَادُ أَحَدٌ يؤَدِّى الأَمَانَةَ، فَيُقَالُ إِنَّ فِى بَنِى فُلاَنٍ رَجُلاً أَمِينًا وَيُقَالُ لِلرَّجُلِ مَا أَعْقَلَهُ وَمَا أَظْرَفَهُ وَمَا أَجْلَدَهُ وَمَا فِى قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةِ خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ، وَلَقَدْ أَتَى عَلَىَّ زَمَانٌ وَمَا أُبَالِى أَيَّكُمْ بَايَعْتُ لَئِنْ كَانَ مُسْلِمًا رَدَّهُ الإِسْلاَمُ، وَإِنْ كَانَ نَصْرَانِيًّا رَدَّهُ عَلَىَّ سَاعِيهِ، فَأَمَّا الْيَوْمَ فَمَا كُنْتُ أُبَايِعُ إِلاَّ فُلاَنًا وَفُلاَنًا. নবী (ছাঃ) আমানতদারিতা তুলে নেয়া সম্পর্কে বলেন, ‘এমন সময় মানুষ নিদ্রা যাবে, এমতাবস্থায় তার অন্তর হতে আমানত তুলে নেয়া হবে। তখন শুধুমাত্র কালো দাগের মতো একটি সাধারণ চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে। অতঃপর মানুষ আবার নিদ্রা যাবে, তখন আমানত উঠিয়ে নেয়া হবে। এতে এমন ফোসকা সদৃশ চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে, যেমন জ্বলন্ত অগ্নিশিখা; তাকে তুমি নিজের পায়ের উপর রেখে রোমন্থন করলে তথায় ফুলে উঠে। তুমি অবশ্য স্ফীতি দেখতে পাবে, কিন্তু তার ভিতরে কিছুই নেই। আর লোকজন ক্রয়-বিক্রয় করতে থাকবে বটে; কিন্তু কাউকেই আমানত রক্ষাকারী পাবে না। তারপর লোকরা বলাবলি করবে যে, অমুক সম্প্রদায়ে একজন বিশ্বস্ত ও আমানতদার লোক রয়েছে। আবার কোন ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হবে যে, সে কতই জ্ঞানী! সে কতই চালাক ও হুশিয়ার! এবং সে কতই সচেতন ও দৃঢ় প্রত্যয়ী! অথচ তার অন্তরে সরিষা দানার পরিমাণও ঈমান থাকবে না’। রাবী বলেন, ‘আমার উপর এমন একটি সময় অতিবাহিত হয়েছে যে, আমি তোমাদের কারো সঙ্গে বেচাকেনা করতে একটুও চিন্তা করতাম না। কারণ সে মুসলিম হলে ইসলামই তাকে (প্রতারণা) থেকে ফিরিয়ে রাখবে। আর সে খৃষ্টান হলে তার শাসকই তাকে (প্রতারণা থেকে) ফিরিয়ে রাখবে। অথচ এখন অবস্থা এমন যে, আমি অমুক অমুককে ব্যতীত বেচাকেনা করি না’।[15]
৫. দুনিয়া নয়, আখিরাতের জন্য ইলম অর্জন করা : জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে নিয়ত পরিশুদ্ধ হতে হবে। দুনিয়াকে পরিহার করে আখিরাতকে প্রাধান্য দিতে হবে। নচেৎ নিজের ধ্বংস অনিবার্য। আব্দুর রহমান বিন আবান বিন ওছমান তার পিতা হ’তে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, نَضَّرَ اللَّهُ امْرَأً سَمِعَ مِنَّا حَدِيثًا، فَحَفِظَهُ فَأَدَّاهُ إِلَى مَنْ هُوَ أَحْفَظُ مِنْهُ، فَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ لَيْسَ بِفَقِيهٍ، وَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ إِلَى مَنْ هُوَ أَفْقَهُ مِنْهُ لَا يَعْتَقِدُ قَلْبُ مُسْلِمٍ عَلَى ثَلَاثِ خِصَالٍ، إِلَّا دَخَلَ الْجَنَّةَ ‘আল্লাহ সেই ব্যক্তির চেহারা উজ্জ্বল করুন যে আমার কোন একটি হাদীছ শুনল, তা হিফাযত (মুখস্থ) রাখল এবং তার চেয়ে অধিক হিফাযতকারী কারু নিকট পৌঁছে দিল। কেননা অনেক জ্ঞান বহনকারী প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানী হয় না এবং কোন কোন জ্ঞানের বাহকের চাইতে জ্ঞানার্জনকারী অধিক জ্ঞানী হয়ে থাকে। যে মুসলিমের অন্তরে তিনটি বিষয়ে দৃঢ় বিশ্বাস থাকবে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে’।
রাবী বলেন, আমরা বললাম, সেই বিষয়গুলি কী কী? তিনি বললেন, إِخْلَاصُ الْعَمَلِ، وَالنَّصِيحَةُ لِوُلَاةِ الْأَمْرِ، وَلُزُومُ الْجَمَاعَةِ، فَإِنَّ دَعْوَتَهُمْ تُحِيطُ مَنْ وَرَاءَهُمْ وَمَنْ كَانَتِ الْآخِرَةُ نِيَّتَهُ، جَعَلَ اللَّهُ غِنَاهُ فِي قَلْبِهِ، وَجَمَعَ لَهُ شَمْلَهُ، وَأَتَتْهُ الدُّنْيَا وَهِيَ رَاغِمَةٌ، وَمَنْ كَانِتِ الدُّنْيَا نِيَّتَهُ، فَرَّقَ اللَّهُ عَلَيْهِ شَمْلَهُ، وَجَعَلَ فَقْرَهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ، وَلَمْ يَأْتِهِ مِنَ الدُّنْيَا إِلَّا مَا قُدِّرَ لَهُ.
১. আমলে একনিষ্ঠতা, ২. শাসকের কল্যাণ কামনা করা এবং ৩. জামা’আত আকঁড়ে থাকা। কেননা তাদের দো’আ তাদের পেছনের সকলকে বেষ্টন করে নেয়। আর যার নিয়ত থাকবে আখিরাত, আল্লাহ তার অন্তরে অভাবমুক্তি দান করবেন, তার সকল কাজ সুন্দর করে দেবেন এবং দুনিয়া তুচ্ছ অবস্থায় তার সামনে হাযির হবে। আর যার নিয়ত হবে দুনিয়া, আল্লাহ তার সব কিছুতে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করে দেবেন, আর দারিদ্রকে তার দু’চোখের সামনে রেখে দেবেন। আর সে দুনিয়ার ততটুকুই লাভ করবে, যা তার তাকদীরে নির্ধারিত আছে’।[16]
অন্যত্র এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আলিমরা যদি জ্ঞানার্জনের পর তা সংরক্ষণ করে এবং তা যোগ্য আলিমদের সামনে রেখে দেয়, তাহলে অবশ্যই তারা নিজ যুগের জনগণের নেতৃত্ব দিবে। কিন্তু তারা পার্থিব স্বার্থ লাভের জন্য দুনিয়াদারদের সামনে ইলম পেশ করেছে। ফলে তারা হেয় প্রতিপন্ন হয়েছে’। তিনি আরো বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, مَنْ جَعَلَ الْهُمُومَ هَمًّا وَاحِدًا هَمَّ آخِرَتِهِ كَفَاهُ اللَّهُ هَمَّ دُنْيَاهُ وَمَنْ تَشَعَّبَتْ بِهِ الْهُمُومُ فِى أَحْوَالِ الدُّنْيَا لَمْ يُبَالِ اللَّهُ فِى أَىِّ أَوْدِيَتِهَا هَلَكَ. ‘যে ব্যক্তি তার সমস্ত চিন্তাকে আখিরাতের চিন্তায় কেন্দ্রীভূত করেছে, আল্লাহ তার দুনিয়ার চিন্তার জন্য যথেষ্ট। অপর দিকে যে ব্যক্তি যাবতীয় পার্থিব চিন্তায় নিমগ্ন থাকবে, সে যে কোন উন্মুক্ত মাঠে ধ্বংস হোক, তাতে আল্লাহর কিছু আসে যায় না’।[17]
৬. বাহাদুরী যাহির ও মানুষকে আকৃষ্ট করার লক্ষ্য পরিহার করা : একজন ইলম অর্জনকারী জ্ঞানের ভারে নুয়ে পড়ে। তারা দুনিয়াতে বিনয়ী ও আখিরাতমুখী হয় এবং বাক-বিতন্ডায় লিপ্ত হয় না। পক্ষান্তরে বাহাদুরী যাহির ও মানুষকে আকৃষ্ট করা ব্যক্তিগণ বৈষ্যয়িক কথাবার্তায় চমৎকার মিষ্টভাষী। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এরা ভীষণ ঝগড়াটে ব্যক্তি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُعْجِبُكَ قَوْلُهُ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيُشْهِدُ اللَّهَ عَلَى مَا فِي قَلْبِهِ وَهُوَ أَلَدُّ الْخِصَامِ ‘আর মানুষের মধ্যে এমনও কিছু লোক রয়েছে, যাদের পার্থিব জীবনের কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করবে। আর তারা নিজের মনের কথার ব্যাপারে আল্লাহকে সাক্ষ্য স্থাপন করে। প্রকৃতপক্ষে তারা কঠিন ঝগড়াটে লোক’ (বাক্বারাহ ২/২০৪)।
বাহাদুরী যাহির করা ও ঝগড়াটে ব্যক্তি জাহানণামে প্রবেশ করবে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَنْ تَعَلَّمَ الْعِلْمَ لِيُبَاهِىَ بِهِ الْعُلَمَاءَ وَيُمَارِىَ بِهِ السُّفَهَاءَ وَيَصْرِفَ بِهِ وُجُوهَ النَّاسِ إِلَيْهِ أَدْخَلَهُ اللَّهُ جَهَنَّمَ. ‘যে ব্যক্তি আলিমদের উপর বাহাদুরী যাহির করার জন্য, নির্বোধদের সাথে ঝগড়া করার জন্য এবং নিজের দিকে সাধারণ মানুষের মনোযোগ আকৃষ্ট করার জন্য জ্ঞানার্জন করে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামে দাখিল করবেন’।[18] মালিক বিন দীনার (রহঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমল করার উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জন করে, তার অর্জিত জ্ঞান তাকে ভদ্র-বিনয়ী ও নম্র বানায়। আর যে ব্যক্তি অন্য কোনো উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জন করে, তার অর্জিত জ্ঞান তাকে অহংকারী ও বখাটে বানায়’।
একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য জ্ঞানার্জন করতে হবে। অন্যথায় কিয়ামতের মাঠে লাঞ্চিত হতে হবে এবং জান্নাতের সুগন্ধিও হারাম হয়ে যাবে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَنْ تَعَلَّمَ عِلْمًا مِمَّا يُبْتَغَى بِهِ وَجْهُ اللَّهِ لاَ يَتَعَلَّمُهُ إِلاَّ لِيُصِيبَ بِهِ عَرَضًا مِنَ الدُّنْيَا لَمْ يَجِدْ عَرْفَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ. ‘যে ব্যক্তি এমন কোন জ্ঞান অর্জন করল, যার দ্বারা আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি লাভ করা যায়, তা সে কেবল পার্থিব স্বার্থ লাভের উদ্দেশ্যে অর্জন করল, কিয়ামতের দিন সে ব্যক্তি জান্নাতের সুগন্ধ পর্যন্ত পাবে না’।[19]
৭. ইলম অর্জনের ক্ষেত্রে লজ্জাবোধ না করা : দ্বীন শিক্ষার ক্ষেত্রে কোন প্রকার লজ্জা না রাখা যরূরী। এমনকি বৃদ্ধ বয়সেও জ্ঞান অর্জনে লজ্জাবোধ করা অনুচিত। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, وَبَعْدَ أَنْ تُسَوَّدُوا وَقَدْ تَعَلَّمَ أَصْحَابُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي كِبَرِ سِنِّهِمْ ‘আর নেতা বানিয়ে দেয়ার পরও, কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছাহাবীগণ বৃদ্ধ বয়সেও ইলম অর্জন করেছেন’।[20]
তাছাড়া না জানা অজ্ঞ ব্যক্তির অন্তরে ব্যাধি বাসা বাঁধে। তাই রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, فَإِنَّمَا شِفَاءُ الْعِىِّ السُّؤَالُ ‘নিশ্চয়ই অজ্ঞতার চিকিৎসা হ’ল জিজ্ঞাসা’।[21] এই জন্য জিজ্ঞাসা করে সঠিক জেনে নিতে হয়। আল্লাহ সুবহানা ওয়া তা‘আলা জ্ঞানীদের নিকটে লজ্জা না করে অজানা বিষয় সমূহ জেনে নিতে বলেছেন, فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ ‘সুতরাং জ্ঞানীদের জিজ্ঞেস করো যদি তোমরা না জান’ (আন-নাহল ১৬/৪৩)।
তাছাড়া লজ্জা, অহংকার ও ভয় অন্তর থেকে মুছে দিতে হবে যখন জ্ঞানার্জনে মনোনিবেশ করবে। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, لاَ يَتَعَلَّمُ الْعِلْمَ مُسْتَحْىٍ وَلاَ مُسْتَكْبِرٌ ‘লাজুক এবং অহংকারী ব্যক্তি জ্ঞান অর্জন করতে পারে না’।[22] অন্যত্র বলেন, ‘লজ্জা ও ভয় হ’ল জ্ঞানার্জনের প্রতিবন্ধকতা’।[23]
আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِنَّ مِنَ الشَّجَرِ شَجَرَةً مَثَلُهَا كَمَثَلِ الْمُسْلِمِ. ‘মুমিনের দৃষ্টান্ত হ’ল এমন একটি সবুজ গাছ, যার পাতা ঝরে না এবং একটির সঙ্গে আর একটির ঘষা লাগে না’। তখন কেউ বলল, এটি অমুক গাছ, অমুক গাছ। তখন আমি বলতে চেয়েছিলাম, এটি খেজুর গাছ। তবে যেহেতু আমি অল্প বয়সী তরুণ ছিলাম, তাই বলতে লজ্জাবোধ করলাম। তখন রাসূল (ছাঃ) বলেন, هِىَ النَّخْلَةُ ‘সেটি খেজুর গাছ’।[24]
সোনালী যুগে নারীরাও দ্বীনের জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে লজ্জাবোধ করতেন না। উম্মে সালামা (রাঃ) বলেন, একদিন উম্মে সুলায়ম রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট এসে বললেন, يَا رَسُولَ اللَّهِ ، إِنَّ اللَّهَ لاَ يَسْتَحْيِى مِنَ الْحَقِّ ، هَلْ عَلَى الْمَرْأَةِ مِنْ غُسْلٍ إِذَا هِىَ احْتَلَمَتْ. ‘হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তো সত্য বলার ক্ষেত্রে লজ্জা করতে নির্দেশ দেন না। সুতরাং মেয়ে লোকের স্বপ্নদোষ হলে কি তার উপরও গোসল করা ফরয’? তিনি বললেন,نَعَمْ إِذَا رَأَتِ الْمَاءَ ‘হ্যাঁ, যখন সে বীর্য দেখতে পায়’।[25] অন্যত্র এসেছে, তখন উম্মে সালামা (রাঃ) হেসে দিলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, أَتَحْتَلِمُ الْمَرْأَةُ ‘মেয়ে লোকেরও কি স্বপ্নদোষ হয়’? রাসূল (ছাঃ) বললেন, فَفِيمَ يُشْبِهُهَا الْوَلَدُ ‘তা না হলে, সন্তানের সাথে মায়ের সাদৃশ্য হয় কীভাবে’?[26] অন্যত্র বলেন, نَعَمْ مَاءُ الرَّجُلِ غَلِيظٌ أَبْيَضُ وَمَاءُ الْمَرْأَةِ رَقِيقٌ أَصْفَرُ فَأَيُّهُمَا سَبَقَ أَوْ عَلاَ أَشْبَهَهُ الْوَلَدُ. ‘হ্যাঁ, পুরুষের বীর্য গাঢ় সাদা এবং স্ত্রীলোকের বীর্য পাতলা হলদে রং বিশিষ্ট। সুতরাং এদের মধ্যে যার বীর্য আগে স্খলিত হয়, সন্তান তার সদৃশ হয়’।[27]
আয়েশা (রাঃ) বলেন, نِعْمَ النِّسَاءُ نِسَاءُ الأَنْصَارِ لَمْ يَمْنَعْهُنَّ الْحَيَاءُ أَنْ يَتَفَقَّهْنَ فِى الدِّينِ. ‘আনছার মহিলারা কতই না উত্তম। ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করতে লজ্জা তাদের বিরত রাখে না’।[28]
(ক্রমশঃ)
লিলবর আল-বারাদী
যশপুর, তানোর, রাজশাহী
[1]. হিলয়াতুল আউলিয়া ৬/৩৬২ পৃ.।
[2]. আল-ইজাবাতুল-মুহিম্মাহ্ ফীল মাশাকীলিল মুলিম্মাহ্, ৩৪ পৃ. ।
[3]. আল-মাজমূ‘ ১/৬৯ পৃ.।
[4]. জামি‘উ বায়ানিল ইলমি ওয়া ফাযলিহী, ২/১১৩০ পৃ.।
[5]. জামি‘উ বায়ানিল ইলমি ওয়া ফাযলিহী, ২/১১৩০ পৃ.।
[6]. আল-আদাবুশ শারঈয়্যাহ ২/৩৫ পৃ.।
[7]. ত্বাবাকাতুল হানাবিলাহ ১/১৪০ পৃ.।
[8]. বুখারী তালীকান ১/৩৯ পৃ.।
[9]. ছহীহুল জামি‘ হা/৯৪৮; হাসান হাদীছ।
[10]. ছহীহুল জামি‘ হা/২৮৮১; ছহীহ হাদীছ।
[11]. মুসলিম হা/৫; মিশকাত হা/১৫৬; ছহীহুল জামি‘ হা/৪৪৮২।
[12]. বুখারী হা/৪৭৭৪; মুসলিম হা/২৭৯৮; ছহীহ ইবনু হিববান ৬৫৮৫।
[13]. আবু ওছমান আল-জাহেয, আল-বায়ান ওয়াত তাবয়ীন ১/৩১৪ পৃ.।
[14]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, মিশকাত হা/৩৫; আহমাদ হা/১২৪০৬।
[15]. বুখারী হা/৬৪৯৭; মিশকাত হা/৫৩৮১।
[16]. দারেমী হা/২২৯; সনদ ছহীহ।
[17]. ইবনু মাজাহ হা/২৫৭; মিশকাত হা/২৬৩; ছহীহুল জামি‘ হা/৬১৮৯।
[18]. ইবনু মাজাহ হা/২৬০; হাসান হাদীছ।
[19]. আবূ দাঊদ হা/৩৬৬৪; মিশকাত হা/২২৭; আহমাদ হা/৮৪৩৮; ইবনু হিববান হা/৭৮।
[20]. বুখারী হা/৭৩-এর ‘ইলম ও হিকমাহ-এর ক্ষেত্রে সমতুল্য হবার উৎসাহ’-পরিচ্ছেদ ৩/১৫।
[21]. আবূ দাঊদ হা/৩৩৬; মিশকাত হা/৫৩১; দারাকুৎনী হা/৭৪৪; ছহীহুল জামি‘ হা/৪৩৬২; হাসান ছহীহ।
[22]. বুখারী, ১/২৩২; ‘ইলম অর্জনে লজ্জা’ অধ্যায় ৫০।
[23]. ইবনে হাজার, ফাৎহুল বারী ১/২২৮ পৃ.।
[24]. বুখারী হা/৭২, ২২০৯; আহমাদ হা/৪৫৯৯; ইবনু হিববান হা/২৪৩; দারেমী হা/২৮২।
[25]. বুখারী হা/১৮২, ৩৩২৮; মুসলিম হা/৩১৩; নাসাঈ হা/১৯৭।
[26]. বুখারী হা/৬০৯১; ইবনু মাজাহ হা/৬০০; আহমাদ হা/২৬৫৪৬।
[27]. ইবনু মাজাহ হা/৬০১; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৩৪২।
[28]. মুসলিম হা/৩৩২; ইবনু মাজাহ হা/৬৪২; আহমাদ হা/২৫১৮৮।