সৌভাগ্যবান জীবন
মুহাম্মাদ আমীনুল ইসলাম
(১৯) চার মাযহাব মানা ফরয। কেউ বলেন, কোন একটির অনুসরণ করা ফরয।
পর্যালোচনা :
এই প্রচারণা ইসলামের বিরুদ্ধে তথ্য সন্ত্রাসের শামিল। কারণ এই ফরয হওয়ার ঘোষণা কে দিল? চার মাযহাবের জন্ম হল কখন? হানাফী, মালেকী, শাফেঈ ও হাম্বলী নামে চার মাযহাব প্রতিষ্ঠা করা এবং তা প্রচার করার অনুমতি কে দিল? এটা মুসলিম উম্মাহকে বিভক্ত করার সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়।
সুধী পাঠক! নিঃসন্দেহে উক্ত চার ইমামের জন্মের পূর্বে মাযহাব সৃষ্টি হয়নি। তাহলে তাদের জন্ম ও মৃত্যু তারিখটা আমরা জেনে নিই। ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর জন্ম ৮০ হিজরীতে আর মৃত্যু ১৫০ হিজরীতে। ইমাম মালেক (রহঃ) ৯৩ হিজরীতে জন্ম গ্রহণ করেন এবং ১৭৯ হিজরীতে মৃত্যু বরণ করেন। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) জন্ম গ্রহণ করেন ১৫০ হিজরীতে আর মৃত্যু বরণ করেন ২০৪ হিজরীতে। এছাড়া ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) জন্ম গ্রহণ করেন ১৬৪ হিজরীতে আর মারা যান ২৪১ হিজরীতে। তাহলে ৮০ হিজরীর পূর্বে এই মাযহাবী ফেৎনার সূত্রই ছিল না।
এখন দেখার প্রয়োজন তাঁদের নামে মাযহাবের সূচনা হল কখন? হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম (৬৯১-৭৪১ হিঃ) প্রচলিত মাযহাব সমূহের উৎপত্তি সম্পর্কে বলেন, إِنَّمَا حَدَثَتْ هَذِهِ الْبِدْعَةُ فِى الْقَرْنِ الرَّابِعِ الْمَذْمُوْمِ ‘মূলতঃ এই বিদ‘আতের (তাক্বলীদী মাযহাবের) উৎপত্তি হয়েছে ৪র্থ শতাব্দী হিজরীর নিন্দিত যুগে’।[1] শাহ অলিউল্লাহ দেহলভী (১৭০৩-১৭৬২ খৃঃ) বলেন,
إِعْلَمْ أَنَّ النَّاسَ كَانُوْا قَبْلَ الْمِائَةِ الرَّابِعَةِ غَيْرَ مُجْمَعِيْنَ عَلَى التَّقْلِيْدِ الْخَالِصِ لِمَذْهَبٍ وَّاحِدٍ بِعَيْنِهِ.
‘জেনে রাখ হে পাঠক! ৪র্থ শতাব্দী হিজরীর পূর্বে কোন মুসলিম ব্যক্তি নির্দিষ্টভাবে কোন একজন বিদ্বানের মাযহাবের তাক্বলীদের উপরে সংঘবদ্ধ ছিল না’।[2]
উক্ত আলোচনায় বুঝা যাচ্ছে মাযহাব ফরয হওয়ার প্রশ্নই আসে না। কারণ কোন বিধান ফরয করার মালিক একমাত্র আল্লাহ। আর তা হবে নবী (ছাঃ)-এর জীবদ্দশায়। রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর প্রায় ৭০ বছর পরে যদি ইমামদের জন্ম হয়, তবে মাযহাব ফরয হওয়ার বিষয়টি কি নিরেট মূর্খতা নয়?
দ্বিতীয়তঃ বিদ্বানগণের বক্তব্য অনুযায়ী বুঝা যাচ্ছে, ৪০০ হিজরীতে মাযহাবের সূচনা হয়েছে। তাহলে ইমাম আবু হানীফার মৃত্যুর ২৫০ বছর পর তার নামে মাযহাবের সূচনা হয়েছে। আর সর্বকনিষ্ঠ ইমাম আহমাদ বিন হাম্বলের মৃত্যুর প্রায় ১৫৯ বছর পর তার নামে মাযহাবের সূচনা হয়েছে। তাহলে তারা মাযহাব প্রতিষ্ঠা করে গেছেন এই দাবীটা কোন্ ধরনের অজ্ঞতা তা কি পরিমাপ করা যাবে? অতএব চার মাযহাব বা কোন একটি মাযহাবের অনুসরণ করা ফরয এ কথা উদ্ভট ও বানোয়াট।
অন্যদিকে তারা কি তাদের মাযহাব বা ফাতাওয়ার অনুসরণ করতে বলেছেন? না কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। আসুন তাদের বক্তব্যগুলো বিশ্লেষণ করি-
(ক) ইমাম আবু হানীফা (৮০-১৫০ হিঃ) বলেন,
لَايَحِلُّ لِأَحَدٍ أَنْ يَّأْخُذَ بِقَوْلِنَا مَا لَمْ يَعْلَمْ مِنْ أَيْنَ أَخَذْنَاهُ.
‘ঐ ব্যক্তির পক্ষে আমাদের কোন বক্তব্য গ্রহণ করা হালাল নয়, যা সম্পর্কে সে জানে না আমরা তা কোথায় থেকে গ্রহণ করেছি’।[3]
(খ) ইমাম মালেক (৯৩-১৭৯ হিঃ) বলেন,
إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ أُخْطِئُ وَأُصِيْبُ فَانْظُرُوْا فِىْ رَأْيِىْ فَإِنْ وَافَقَ الْكِتَابَ وَالسُّنَّةَ فَخُذُوْهُ وَمَا لَمْ يُوَافِقْهُمَا فَاتْرُكُوْهُ.
‘আমি একজন মানুষ মাত্র। আমি ভুলও করি, সঠিকও করি। অতএব আমার সিদ্ধান্তগুলো তোমরা যাচাই কর। যেগুলো পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর সাথে মিলে যাবে সেগুলো গ্রহণ কর, আর যেগুলো মিলবে না সেগুলো বর্জন কর’।[4]
(গ) ইমাম শাফেঈ (১৫০-২০৪ হিঃ) বলেন,
إِذَا رَأَيْتَ كَلاَمِىْ يُخَالِفُ الْحَدِيْثَ فَاعْمَلُوْا بِالْحَدِيْثِ وَاضْرِبُوْا بِكَلاَمِىْ الْحَائِطَ.
‘যখন তুমি আমার কোন কথা হাদীছের বরখেলাফ দেখবে, তখন হাদীছের উপর আমল করবে এবং আমার কথাকে দেওয়ালে ছুঁড়ে মারবে’।[5]
(ঘ) ইমাম আহমাদ (১৬৪-২৪১ হিঃ) বলেন,
لَاتُقَلِّدْنِىْ وَلَا تُقَلِّدَنَّ مَالِكًا وَالْأَوْزَعِىَّ وَلَا النَّخْعِىَّ وَخُذِ الْأَحْكَامَ مِنْ حَيْثُ أَخَذُوْا مِنَ الْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ.
‘তুমি আমার তাক্বলীদ কর না, মালেক, আওযাঈ, নাখঈ বা অন্য কারো তাক্বলীদ কর না। বরং সমাধান গ্রহণ কর কিতাব ও সুন্নাহ থেকে, যেখান থেকে তাঁরা গ্রহণ করেছেন’।[6]
সুধী পাঠক! উক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হয়, তারা কোন মাযহাব প্রতিষ্ঠা করে যাননি, প্রতিষ্ঠা করার অনুমতি দেননি, তাদেরকে অনুসরণ করতে হবে মর্মেও কোন নির্দেশ দিয়ে যাননি; বরং দলীলসহ কুরআন ও ছহীহ হাদীছের অনুসরণ করার জন্য নির্দেশ দিয়ে গেছেন। এক্ষণে আমরা বলতে পারি- হানাফী, মালেকী, শাফেঈ এবং হাম্বলী বলে পরিচয় দেওয়ার চেয়ে চার খলীফার নামে বাকারিয়া, উমারিয়া, ওছমানিয়া এবং আলিয়া নামে পরিচয় দেয়া কি ভাল ছিল না? কিন্তু ছাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈনে ইযাম এবং তাদের পরবর্তীরা কেন তাঁদের নামে মাযহাব সৃষ্টি করেননি? অথচ রাসূল (ছাঃ) তাঁদেরকে অনুসরণ করার জন্য নির্দেশ দিয়ে গেছেন।
(২০) ইমামগণ কোন ভুল করেননি। তারা ছিলেন ভুলের ঊর্ধ্বে। সুতরাং তারা যা বলে গেছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালনযোগ্য।
পর্যালোচনা :
আদম সন্তান হলে তার ভুল হবেই। এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। কারণ কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, كُلُّ ابْنِ آدَمَ خَطَّاءٌ وَخَيْرُ الْخَطَّائِيْنَ التَّوَّابُوْنَ. ‘প্রত্যেক আদম সন্তান ভুলকারী আর ভুলকারীদের মধ্যে তারাই শ্রেষ্ঠ যারা তওবাকারী’।[7] তাহলে ইমামগণের ভুল হয়নি এই দাবী অবান্তর। আশ্চর্যজনক হল, রাসূল (ছাঃ) আদম সন্তান হিসাবে তাঁরও ভুল হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা অহি নাযিলের মাধ্যমে তা সংশোধন করে দিয়েছেন। সাহো সিজদার বিধান এ জন্যই চালু হয়েছে।[8] অনুরূপ চার খলীফাসহ অন্যান্য ছাহাবীদেরও ভুল হয়েছে।[9] বিশেষ করে ওমর (রাঃ) ছাহাবীদের মধ্যে সর্বাধিক জ্ঞানী হওয়া সত্ত্বেও অনেক বিষয় অজানা ও স্মরণ না থাকার কারণে ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু সঠিক বিষয় জানার পর বিন্দুমাত্র দেরী না করে সঙ্গে সঙ্গে তা মেনে নিয়েছেন, গোঁড়ামী প্রদর্শন করেননি।[10] এমনকি আল্লাহ তা‘আলা যাকে নির্বাচন করে মুজাদ্দিদ হিসাবে পৃথিবীতে পাঠান, তিনিও ভুল করতে পারেন বলে রাসূল (ছাঃ) ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।[11]
তাছাড়া অনেক সময় আল্লাহ তা‘আলা এবং রাসূল (ছাঃ) কোন বিধানকে রহিত করেছেন এবং তার স্থলে অন্যটি চালু করেছেন (বাক্বারাহ ১০৬)। তখন সেটাই সকল ছাহাবী গ্রহণ করেছেন। গোঁড়ামী করেননি, কোন প্রশ্ন করেননি। তাদের থেকেও আমরা শিক্ষা নিতে পারি। কারণ ভুল সংশোধন না করে বাপ-দাদা বা বড় বড় আলেমদের দোহাই দেওয়া অমুসলিমদের স্বভাব (বাক্বারাহ ১৭০; লোকমান ২১)।
প্রসিদ্ধ চার ইমামসহ অন্যান্য ইমাম ও মুজতাহিদ সবাই ভুলের কথা স্বীকার করে গেছেন এবং ভুলটা বর্জন করে সঠিকটা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। ইমাম গাযালী (৪৫০-৫০৫ হিঃ) স্বীয় ‘কিতাবুল মানখূলে’ বলেন, أَنَّهُمَا خَالَفَا أَبَا حَنِيْفَةَ فِىْ ثُلُثَىْ مَذْهَبِه ‘ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মাদ (রহঃ) তাঁদের উস্তাদ ইমাম আবু হানীফার মাযহাবের দুই-তৃতীয়াংশের বিরোধিতা করেছেন’।[12] মুহাম্মাদ বিন আব্দুস সাত্তার বলেন, আবু হানীফার নিম্নোক্ত বক্তব্যের কারণে তারা ফাতাওয়া বর্জন করেছেন, ইমাম আবু হানীফা (৮০-১৫০ হিঃ) বলেন, لَايَحِلُّ لِأَحَدٍ أَنْ يَّأْخُذَ بِقَوْلِنَا مَا لَمْ يَعْلَمْ مِنْ أَيْنَ أَخَذْنَاهُ ‘ঐ ব্যক্তির জন্য আমাদের কোন বক্তব্য গ্রহণ করা হালাল নয়, যে জানে না আমরা উহা কোথা থেকে গ্রহণ করেছি’।[13]
আবু ইউসুফ এবং মুহাম্মাদ তাদের উসত্মাদের কথা দলীল দ্বারা যাচাই করতে গিয়ে যেগুলোর দলীল পাওয়া যায়নি সেগুলো বর্জন করেছেন।[14]
সুধী পাঠক! ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর প্রিয় ছাত্রের চেয়ে কথিত ভক্তরা বেশী ভক্তি দেখাচ্ছে। এভাবে তারা ইমামের নীতি লংঘন করছে, তার নামে উদ্ভট ফৎওয়া প্রচার করছে এবং মিথ্যা অপবাদ দিচেছ।
অতএব আসুন! ইমামগণের যে সমস্ত ফৎওয়া পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর দলীলের সাথে মিলে যাবে সেগুলো আমল করি এবং তাদের সকলকে শ্রদ্ধা করি। আর যেগুলো মিলবে না সেগুলো বর্জন করি এবং আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভে ধন্য হই। আল্লাহ বলেন, ‘যারা ভুল করার পর তওবা করে এবং সংশোধন করে নেয়, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন এবং চিন্তামুক্ত রাখবেন’ (আন‘আম ৪৮, ৫৪)।
(২১) ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) ইমাম বুখারীসহ অন্যান্য হাদীছের ইমামগণের সিনিয়র। সুতরাং অন্যদের চেয়ে ইমাম আবু হানীফার মাযহাব ও ফাতাওয়াই সঠিক।
পর্যালোচনা :
এটা নিরেট মূর্খতা ছাড়া কিছুই নয়। রাসূল মুহাম্মাদ (ছাঃ) প্রদর্শিত আদর্শকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য এটি একটি অপকৌশল মাত্র। কারণ শরী‘আত গ্রহণের ক্ষেত্রে বয়স ও জ্ঞানকে মাপকাঠি করা হয়নি; বরং যার কাছে সঠিকটা পাওয়া যাবে তার নিকট থেকেই গ্রহণ করতে হবে। হক্ব সকল মানুষের মতামতের ঊর্ধ্বে। তাই তা গ্রহণের ক্ষেত্রে কে ছোট আর কে বড় তা কখনো ছাহাবায়ে কেরাম দেখেননি। যারা হাদীছ সংগ্রহ করেছেন তাদের হাদীছ ছহীহ হলে গ্রহণ করতে হবে। ইমাম বুখারীর সংকলিত ছহীহ হাদীছকে রাসূল (ছাঃ)-এর বাণী ও শরী‘আত হিসাবে মুসলিম উম্মাহকে বিশ্বাস করতেই হবে। বিকল্প কোন পথ নেই। তিনি তার ব্যক্তিগত রায়কে ছহীহ বুখারীতে হাদীছ বলে চালিয়ে দেননি। ইমাম বুখারী (রহঃ) সম্পর্কে কেন সমালোচনা করা হয়? আমরা ইমাম মালেক, ইমাম শাফেঈ এবং ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-এর সংকলিত ছহীহ হাদীছকেও গ্রহণ করে থাকি; তাদের ব্যক্তিগত রায়কে নয়। অথচ ইমাম আবু হানীফার চেয়ে ইমাম মালেক মাত্র ১৩ বছরের ছোট। এখানে সিনিয়র জুনিয়রের তারতম্য কী থাকল? ইমাম আবু হানীফার যদি সংকলিত হাদীছ গ্রন্থ থাকত তবে সেখানকার ছহীহ হাদীছগুলো মানুষ অনুসরণ করত। মনে রাখা আবশ্যক যে, শরী‘আত গ্রহণের ক্ষেত্রে কে ছোট কে বড় এর মধ্যে কোন ফারাক নেই। ওমর (রাঃ) কনিষ্ঠ ছাহাবী আবু সাঈদ (রাঃ)-এর হাদীছ গ্রহণ করেছেন।[15] আলী (রাঃ) ইবনু আববাসকে খারেজীদের কাছে পাঠিয়েছিলেন কুরআনের আয়াতের ব্যাখ্যা জানানোর জন্য।[16] এ ধরনের অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে।
ইমাম আবু ইউসুফ এবং ইমাম মুহাম্মাদ তাদের উস্তাদ ইমাম আবু হানীফার দুই-তৃতীয়াংশ ফাতাওয়ার বিরোধিতা করেছেন।[17] আর হানাফী মাযহাবের অনুসারীরা সেটাই মেনে নিয়েছে। এখন চিন্তা করুন ইমাম আবু হানীফা সিনিয়র হওয়া সত্ত্বেও কেন তারা তার ফাতাওয়া বাদ দিয়ে ছাত্রদের কথা গ্রহণ করেছেন?
(২১) পীর ধরা ফরয। যার পীর নেই, তার পীর শয়তান।
পর্যালোচনা :
এটি একশ্রেণীর পথভ্রষ্ট ভন্ডদের মন্তব্য, যারা বিনা পূজিতে সমাজে শিরকের ব্যবসা করে থাকে। মূর্খ মুরীদদের ধোঁকা দেওয়ার জন্য তারা খানকা ও মাযারের নামে মরণ ফাঁদ পেতে বসে আছে। পীর ধরা আর মাযহাব মানা এই দু’টি ধোঁকাবাজি একই সূত্রে গাঁথা। যেখানে পীর-মুরীদ নামে শরী‘আতে কোন ইঙ্গিত নেই, সেখানে তাকে ফরয করার কোন কারণ থাকতে পারে কি? মূলতঃ উক্ত ব্যবসাকে জমজমাট রাখা এবং সকল মানুষকে উক্ত ফাঁদে বন্দি করার জন্যই উক্ত দাবী করা হয়েছে; বরং যারা পীর-মুরীদের ব্যবসা করছে তারাই যে ইবলীস শয়তানের এজেন্ট তা হাদীছ থেকে স্পষ্ট জানা যায়। যেমন-
عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها قَالَتْ سَأَلَ أُنَاسٌ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْكُهَّانِ فَقَالَ إِنَّهُمْ لَيْسُوا بِشَىْءٍ فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللَّهِ فَإِنَّهُمْ يُحَدِّثُوْنَ بِالشَّىْءِ يَكُوْنُ حَقًّا قَالَ فَقَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم تِلْكَ الْكَلِمَةُ مِنَ الْحَقِّ يَخْطَفُهَا الْجِنِّىُّ فَيُقَرْقِرُهَا فِىْ أُذُنِ وَلِيِّهِ كَقَرْقَرَةِ الدَّجَاجَةِ فَيَخْلِطُوْنَ فِيْهِ أَكْثَرَ مِنْ مِائَةِ كَذْبَةٍ.
আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)-কে একদা লোকেরা গণকদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। তিনি উত্তরে বললেন, নিশ্চয় তারা কিছু করতে পারে না। লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! তারা যা বর্ণনা করে তা কখনো সত্য হয়। তিনি বললেন, উক্ত সত্য কথা মেয়ে জিন ছূঁ মেরে নিয়ে আসে এবং তার ভন্ড অলীর কানে বলে দেয়, যেভাবে মুরগী করকর করে। অতঃপর তারা তার সাথে একশ’র বেশী মিথ্যা কথা মিশ্রিত করে।[18] অন্য হাদীছে এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْمَلاَئِكَةُ تَتَحَدَّثُ فِى الْعَنَانِ وَالْعَنَانُ الْغَمَامُ بِالأَمْرِ يَكُوْنُ فِى الأَرْضِ فَتَسْمَعُ الشَّيَاطِيْنُ الْكَلِمَةَ فَتَقُرُّهَا فِىْ أُذُنِ الْكَاهِنِ كَمَا تُقَرُّ الْقَارُوْرَةُ فَيَزِيْدُوْنَ مَعَهَا مِائَةَ كَذِبَةٍ.
আয়েশা (রাঃ) রাসূল (ছাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, দুনিয়ায় ঘটবে এমন বিষয় নিয়ে ফেরেশতামণ্ডলী মেঘের মাঝে আলোচনা করেন। তখন কোন কথা শয়তানরা শুনে ফেলে। অতঃপর তা গণকের কানে হুবহু বর্ণনা করে। যেভাবে কাঁচকে স্বচ্ছ করা হয়। অতঃপর তারা ঐ কথার সাথে আরো একশ’ মিথ্যা কথা যোগ দেয়।[19] অন্য হাদীছে এসেছে, শয়তানরা একজনের উপর আরেকজন উঠে। এভাবে আসমানের কাছাকাছি গিয়ে উক্ত কথা শ্রবণ করে এবং উপর থেকে নীচ পর্যন্ত পৌঁছে দেয়।[20]
অতএব ভন্ড ফকীরেরা যে ইবলীস শয়তানের স্পেশাল এজেন্ট, তা উক্ত হাদীছগুলো দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে। তাই ঈমান বাঁচানোর স্বার্থেই তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে।
(২২) পীরের মুরীদ হলে ছালাত, ছিয়াম ও হজ্জ করা লাগে না। কবরে সওয়াল-জওয়াব হবে না। ক্বিয়ামতের মাঠে সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যাবে।
পর্যালোচনা :
এই সমস্ত নোংরা কথা মানুষের মুখ থেকে কিভাবে বের হয়, তা ভাবতেও আশ্চর্য লাগে। রাসূল (ছাঃ) হলেন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ নবী এবং রাসূল। আর ক্বিয়ামতের মাঠে আল্লাহ কেবল তাঁরই সুপারিশ কবুল করবেন। কোন নবীর পক্ষে সেদিন কারো জন্য সুপারিশ করা সম্ভব হবে না। এরপরও ছাহাবীদেরকে এমনকি তাঁর মেয়ে ফাতেমাকে পর্যন্ত উক্ত প্রতিশ্রুতি দিতে পারেননি। বরং নিজ নিজ বাঁচার জন্য সতর্ক করেছেন।
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رضى الله عنه أَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَا بَنِى عَبْدِ مَنَافٍ اشْتَرُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ اللَّهِ يَا بَنِى عَبْدِ الْمُطَّلِبِ اشْتَرُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ اللَّهِ يَا أُمَّ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ عَمَّةَ رَسُولِ اللَّهِ يَا فَاطِمَةُ بِنْتَ مُحَمَّدٍ اشْتَرِيَا أَنْفُسَكُمَا مِنَ اللَّهِ لاَ أَمْلِكُ لَكُمَا مِنَ اللَّهِ شَيْئًا سَلاَنِى مِنْ مَالِى مَا شِئْتُمَا.
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, হে আব্দে মানাফ সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিজেদেরকে বাঁচাও। হে আব্দুল মুত্ত্বালিবের সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিজেদেরকে বাঁচাও। হে উম্মে যুবাইর এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর মেয়ে ফাতেমা! তোমরা দুইজন আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিজেদেরকে বাঁচাও। তোমাদের জন্য আল্লাহর সামনে আমি কোনই উপকার করতে পারব না। সুতরাং আমার সম্পদ থেকে যা প্রয়োজন তা তোমরা গ্রহণ কর।[21]
তাছাড়া ছাহাবায়ে কেরাম আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার জন্য কত পরিশ্রম করেছেন তা কি উল্লেখ করা সম্ভব? জিহাদের ময়দানে শহীদ হওয়াসহ নানা নির্যাতন, অপমান ভোগ করার পরও তারা কি উক্ত মর্মে ফৎওয়া পেয়েছেন?
ক্বিয়ামতের মাঠে সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যাওয়ার যে প্রলোভন দেখানো হয় তা শয়তানী ওসওয়াসা ছাড়া কিছু নয়। কারণ তাদেরই যে পরিণতি হবে তা তারা কখনো ভাবেনি। অনুরূপ মুরীদরাও চিন্তা করেনি। আল্লাহর ভাষায় শুনুন-
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِلَّهِ وَلَوْ يَرَى الَّذِينَ ظَلَمُوا إِذْ يَرَوْنَ الْعَذَابَ أَنَّ الْقُوَّةَ لِلَّهِ جَمِيعًا وَأَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعَذَابِ- إِذْ تَبَرَّأَ الَّذِينَ اتُّبِعُوا مِنَ الَّذِينَ اتَّبَعُوا وَرَأَوُا الْعَذَابَ وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ الْأَسْبَابُ- وَقَالَ الَّذِينَ اتَّبَعُوا لَوْ أَنَّ لَنَا كَرَّةً فَنَتَبَرَّأَ مِنْهُمْ كَمَا تَبَرَّءُوا مِنَّا كَذَلِكَ يُرِيهِمُ اللَّهُ أَعْمَالَهُمْ حَسَرَاتٍ عَلَيْهِمْ وَمَا هُمْ بِخَارِجِينَ مِنَ النَّارِ
‘মানুষের মধ্যে এরূপ কিছু লোক আছে, যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কিছুকে উপাস্য মনে করে, আল্লাহকে ভালবাসার ন্যায় তাদেরকে ভালবাসে। তবে যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকে অত্যধিক ভালবাসে। আর যারা অত্যাচার করেছে, তারা যদি শান্তি দেখতে পেত, তবে বুঝতে পারত- যাবতীয় ক্ষমতার উৎস আল্লাহই এবং আল্লাহ শান্তি দানে কঠোর। যখন নেতারা তাদের অনুসারীদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে এবং শান্তি প্রত্যক্ষ করবে ও সমস্ত সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। অনুসারীরা বলবে, আমরা যদি ফিরে যেতে পারতাম, তবে তারা যেমন আমাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে আমরাও তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করতাম। এভাবে আল্লাহ তাদের কর্মসমূহকে দুঃখজনকভাবে প্রদর্শন করাবেন। আর তারা কখনো জাহান্নাম হতে মুক্তি পাবে না’ (বাক্বারাহ ১৬৫-৬৭)।
সুধী পাঠক! যে সমস্ত ভক্ত তাদের পীর-ফকীরকে আল্লাহর আসনে বসিয়েছে, তাদের অবস্থা কী হবে তা উক্ত আয়াতে ফুটে উঠেছে। অথচ কথিত প্রভুরা যেমন সতর্ক নয়, তেমনি ভক্তরাও সচেতন নয়।
(২৩) পীরের দরগায় দান করলে সব পাপ ক্ষমা হয়ে যায় এবং সকল বিপদ দূর হয়ে যায়।
অসংখ্য মানুষ দুর্নীতি, আত্মসাৎ ও অবৈধ পথে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে আর তা থেকে বাঁচার জন্য কিছু অংশ মাযার, খানকা ও পীরের দরগায় দান করে থাকে। অনুরূপ কোন বিপদে পড়লে বা কিছু চাওয়ার প্রয়োজন হলে দরগায় গরু, খাসি, উট, দুম্বা মানত করে।
পর্যালোচনা :
সম্পদশালী একশ্রেণীর তথাকথিত শিক্ষিত ব্যক্তি এ ধরনের বাজে কাজে জড়িত। এরা অধিকাংশই ছালাত আদায় করে না, ছিয়াম পালন করে না। অর্থাৎ কোন নিয়মিত ইবাদতের সাথে জড়িত নয়। তারা এরূপ প্রতারণা করেই দিন অতিবাহিত করে থাকে। একদিকে তার আয়ের পথ অবৈধ, অন্যদিকে এটাকে দান হিসাবে ব্যবহার করছে। এছাড়া শিরকের আড্ডাখানায় দান করছে এবং শিরকের উৎপাদন কেন্দ্রকে জোরদার করছে।
অবৈধ পথে সম্পদ উপার্জন করা যেমন অন্যায়, তেমনি অবৈধ সম্পদ থেকে সামান্য অংশ দান করাও প্রতারণার শামিল। يَا أَيُّهَا النَّاسُ كُلُوا مِمَّا فِي الْأَرْضِ حَلَالًا طَيِّبًا ‘হে মানবমণ্ডলী! যমীনের যা বৈধ তা খাও’ (বাক্বারাহ ১৬৮)। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَنْفِقُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ হে ঈমানদারগণ! তোমরা যা উপার্জন করেছ তা হতে বৈধ বস্তু থেকে খরচ কর’ (বাক্বারাহ ২৬৭)। রাসূল (ছাঃ) বলেন,
مَنْ تَصَدَّقَ بِعَدْلِ تَمْرَةٍ مِّنْ كَسْبٍ طَيِّبٍ وَلاَيَقْبَلُ اللهُ إِلاَّ الطَّيِّبَ وَإِنَّ اللهَ يَتَقَبَّلُهَا بِيَمِيْنِهِ ثُمَّ يُرَبِّيْهَا لِصَاحِبِهِ كَمَا يُرَبِّيْ أَحَدُكُمْ فَلُوَّهُ حَتَّى تَكُوْنَ مِثْلَ الْجَبَلِ.
‘যে ব্যক্তি তার হালাল রোযগার থেকে একটি খেজুর পরিমাণ দান করবে- কারণ আল্লাহ হালাল বস্তু ছাড়া কোন কিছুই কবুল করেন না, আল্লাহ তা তাঁর ডান হাতে গ্রহণ করবেন। অতঃপর দানকারীর জন্য তা প্রতিপালন করতে থাকেন, যেরূপ তোমাদের কেউ তার ঘোড়ার বাচ্চাকে লালন-পালন করে বড় করতে থাকে। অবশেষে তা পাহাড় সমতুল্য হয়ে যায়’।[22]
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كُنْتُ خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا فَقَالَ يَا غُلَامُ احْفَظِ اللَّهَ يَحْفَظْكَ احْفَظِ اللَّهَ تَجِدْهُ تُجَاهَكَ وَإِذَا سَأَلْتَ فَاسْأَلِ اللَّهَ وَإِذَا اسْتَعَنْتَ فَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ وَاعْلَمْ أَنَّ الْأُمَّةَ لَوِ اجْتَمَعَتْ عَلَى أَنْ يَنْفَعُوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَنْفَعُوكَ إِلَّا بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ لَكَ وَلَوِ اجْتَمَعُوا عَلَى أَنْ يَضُرُّوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَضُرُّوكَ إِلَّا بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ عَلَيْكَ رُفِعَتِ الأقلام وجفَّت الصُّحُف.
ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, আমি একদিন রাসূল (ছাঃ)-এর পিছনে ছিলাম। তিনি বললেন, হে বৎস! আল্লাহর অধিকার সংরক্ষণ কর, আল্লাহও তোমাকে সংরক্ষণ করবেন। তুমি আল্লাহর উপর ভরসা কর, তোমার প্রয়োজনে তাঁকে পাবে। যখন তুমি চাইবে আল্লাহর কাছেই চাইবে। যখন সাহায্য চাইবে তখন আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইবে। তুমি জেনে রাখ! সমস্ত মানুষ যদি তোমার উপকার করার চেষ্টা করে তারা সক্ষম হবে না, যদি আল্লাহ তা তোমার জন্য নির্ধারণ না করেন। আর যদি সকলে কোন বিষয়ে তোমার ক্ষতি করার চেষ্টা করে, আল্লাহ যদি তা নিধারণ না করেন, তাহলে তারা পারবে না। কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে এবং খাতা বন্ধ করা হয়েছে।[23](চলবে)
[1]. ইবনুল ক্বাইয়িম আল-জাওযিয়াহ, ই‘লামুল মুওয়াক্কেঈন (বৈরূত : দারুল কুতুব আল-ইলমিইয়াহ, ১৯৯৩ খৃঃ/১৪১৪ হিঃ), ২/১৪৫ পৃঃ।
[2]. শাহ অলিউল্লাহ, হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ ১/১৫২-৫৩।
[3]. ই‘লামুল মুআক্কেঈন ২য় খ-, পৃঃ ৩০৯; ইবনু আবেদীন, হাশিয়া বাহরুর রায়েক্ব ৬ষ্ঠ খ-, পৃঃ ২৯৩; ছিফাতু ছালাতিন নাবী, পৃঃ ৪৬।
[4]. শারহু মুখতাছার খলীল লিল কারখী ২১/২১৩ পৃঃ।
[5]. আল-খুলাছা ফী আসবাবিল ইখতিলাফ, পৃঃ ১০৮; শাহ অলিউল্লাহ দেহলভী, ইক্বদুল জীদ ফী আহকামিল ইজতিহাদ ওয়াত তাক্বলীদ (কায়রো : আল-মাকতবাতুস সালাফিয়াহ, ১৩৪৫হিঃ), পৃঃ ২৭।
[6]. ইক্বদুল জীদ ফী আহকামিল ইজতিহাদ ওয়াত তাক্বলীদ, পৃঃ ২৮।
[7]. ছহীহ তিরমিযী হা/২৪৯৯, ২/৭৬ পৃঃ,; মিশকাত হা/২৩৪১, পৃঃ ২০৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২২৩২, ৫/১০৪ পৃঃ।
[8]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, বুখারী হা/১২২৯, ১/১৬৪ পৃঃ এবং ১/৬৯ পৃঃ, (ইফাবা হা/১১৫৭, ২/৩৪৬); মিশকাত হা/১০১৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৯৫১, ৩/২৫ পৃঃ।
[9]. ইবনুল ক্বাইয়িম, ই‘লামুল মুআক্কেঈন ২/২৭০-২৭২।
[10]. বুখারী হা/৪৪৫৪, ২/৬৪০-৬৪১ পৃঃ, (ইফাব হা/৪১০২, ৭/২৪৪ পৃঃ), ‘মাগাযী’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৮৩; ছহীহ মুসলিম হা/৫৭৫৩, ২/২১০ পৃঃ, ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৭।
[11]. ছহীহ বুখারী হা/৭৩৫২, ২/১০৯২ পৃঃ, (ইফাবা হা/৬৮৫০, ১০/৫১৮ পৃঃ), ‘কিতাব ও সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২১; মিশকাত হা/৩৭৩২, পৃঃ ৩২৪।
[12]. শারহু বেক্বায়াহ -এর মুক্বাদ্দামাহ (দেওবন্দ : আশরাফী বুক ডিপু, তাবি), পৃঃ ৮।
[13]. ইবনুল ক্বাইয়িম, ই‘লামুল মুআক্কেঈন আন রাবিবল আলামীন (বৈরুত : দারুল কুতুব আল ইলমিয়াহ, ১৯৯৯৩/১৪১৪), ২য় খ-, পৃঃ ৩০৯; ইবনু আবেদীন, হাশিয়া বাহরুর রায়েক্ব ৬ষ্ঠ খ-, পৃঃ ২৯৩; মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, ছিফাতু ছালাতিন নাবী (ছাঃ) মিনাত তাকবীর ইলাত তাসলীম কাআন্নাকা তারাহু (রিয়ায : মাকতাবাতুল মা‘আরিফ, ১৯৯১/১৪১১), পৃঃ ৪৬।
[14]. শারহু বেক্বায়াহ -এর মুক্বাদ্দামাহ, পৃঃ ৮।
[15]. ছহীহ মুসলিম হা/৫৭৫৩, ২/২১০ পৃঃ, ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৭।
[16]. আল-ফারকু বায়নাল ফিরাক, পৃঃ ৬১।
[17]. শারহু বেক্বায়াহ-এর মুক্বাদ্দামাহ (দেওবন্দ : আশরাফী বুক ডিপু, তাবি), পৃঃ ৮।
[18]. বুখারী হা/৭৫৬১; মিশকাত হা/৪৫৯৩।
[19]. বুখারী হা/৩২৮৮; মিশকাত হা/৪৫৯৪।
[20]. বুখারী হা/৪৮০০; মিশকাত হা/৪৫০০।
[21]. বুখারী হা/৩৫২৭; মিশকাত হা/৫৩৭৩।
[22]. বুখারী হা/১৪১০, ‘যাকাত’ অধ্যায়।
[23]. তিরমিযী হা/২৫১৬, ‘ক্বিয়ামতের বিবরণ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৫৯; মিশকাত হা/৫৩০২, সনদ ছহীহ।