কুরআন শিক্ষা : ফযীলত ও প্রয়োজনীয়তা
হোসাইন আল-মাহমূদ
ওযূর শিষ্টাচার
ওযূর পরিচিতি : আভিধানিক অর্থ স্বচ্ছতা (الوَضَاءَةُ)। পারিভাষিক অর্থে পবিত্র পানি দ্বারা শারঈ পদ্ধতিতে হাত, মুখ, পা ধৌত করা ও (ভিজা হাতে) মাথা মাসাহ করাকে ওযূ বলে।[1]
ওযূর ফযীলত (فضائل الوضوء) :
(أ) عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِمَا يَمْحُو اللَّهُ بِهِ الْخَطَايَا وَيَرْفَعُ بِهِ الدَّرَجَاتِ إِسْبَاغُ الْوُضُوءِ عَلَى الْمَكَارِهِ وَكَثْرَةُ الْخُطَا إِلَى الْمَسَاجِدِ وَانْتِظَارُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ.
(ক) আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, আমি কি তোমাদের এমন বিষয় সম্পর্কে বলে দেব না, যে কারণে আল্লাহ তোমাদের গুনাহ সমূহ মুছে দিবেন এবং তোমাদের মর্যাদাকে সমুন্নত করবেন? (ছাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! তখন তিনি বললেন,) কষ্ট সত্ত্বেও পূর্ণরূপে ওযূ করা, মসজিদের দিকে অধিকহারে গমন করা এবং এক ছালাত শেষ করার পর অপর ছালাতের অপেক্ষায় থাকা। আর এটিই ‘রিবাত’, এটিই ‘রিবাত’, এটিই ‘রিবাত’।[2]
(ب) إِسْحَاقُ بْنُ سَعِيدِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ كُنْتُ عِنْدَ عُثْمَانَ فَدَعَا بِطَهُورٍ فَقَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَا مِنِ امْرِئٍ مُسْلِمٍ تَحْضُرُهُ صَلاَةٌ مَكْتُوبَةٌ فَيُحْسِنُ وُضُوءَهَا وَخُشُوعَهَا وَرُكُوعَهَا إِلاَّ كَانَتْ كَفَّارَةً لِمَا قَبْلَهَا مِنَ الذُّنُوبِ مَا لَمْ يُؤْتِ كَبِيرَةً وَذَلِكَ الدَّهْرَ كُلَّهُ.
(খ) ইসহাক্ব ইবনু সাঈদ (রহঃ) তাঁর পিতা তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, একদা আমি ওছমান (রাঃ)-এর নিকটে ছিলাম। অতঃপর তিনি ওযূর পানি আনতে বললেন এবং বললেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, যখন কোন মুসলমানের নিকট ফরয ছালাত উপস্থিত হয়, তখন সে উত্তমরূপে ওযূ করে। অতঃপর বিনয়-নম্রভাবে সুন্দর করে ছালাত আদায় করে, তাহলে সে ছালাত তার পূর্বের সমস্ত (ছগীরা) গুনাহের কাফ্ফারা হয়ে যায়, যতক্ষণ না সে পুনরায় কাবীরা গুনাহে লিপ্ত হয়। আর এটা সব সময় হয়ে থাকে।[3]
(ج) عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ أُمَّتِى يُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ غُرًّا مُحَجَّلِينَ مِنْ آثَارِ الْوُضُوءِ فَمَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ أَنْ يُطِيلَ غُرَّتَهُ فَلْيَفْعَلْ.
(গ) আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, নিশ্চয় আমার উম্মতকে ক্বিয়ামতের দিন ডাকা হবে (জান্নাতের দিকে) পঞ্চকল্যাণ ঘোড়ার (উজ্জ্বল হাত, মুখ ও পা-এর) ন্যায় তাদের ওযূর আলামতের কারণে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তার উজ্জ্বলতা বাঁড়াতে চায়, সে যেন তা করে।[4]
(د( عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ خَرَجَتْ خَطَايَاهُ مِنْ جَسَدِهِ حَتَّى تَخْرُجَ مِنْ تَحْتِ أَظْفَارِهِ.
(ঘ) ওছমান ইবনু ‘আফ্ফান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওযূ করে, তার গুনাহ সমূহ তার শরীর থেকে বাহির হয়ে যায়; এমনকি তার নখের নিচ হতেও গুনাহ সমূহ ঝরে যায়।[5]
(ه) عَنْ عُقْبَةُ بْنُ عَامِرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَتَوَضَّأُ فَيُحْسِنُ وُضُوءَهُ ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّى رَكْعَتَيْنِ مُقْبِلٌ عَلَيْهِمَا بِقَلْبِهِ وَوَجْهِهِ إِلاَّ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ.
(ঙ) ওক্ববাহ ইবনু ‘আমের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, কোন মুসলিম যদি উত্তমরূপে ওযূ করে অন্তর ও চেহারাকে (আল্লাহর দিকে খুশু-খুযূভাবে) নত করে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করে তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।[6] অন্য রেওয়ায়াতে রয়েছে যে, ‘দু’ছালাতের মধ্যবর্তী সময়ে কৃত পাপ সমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে’।[7]
১. নিয়ত করা :
মানুষের যাবতীয় কাজ সংগঠিত হয় তার নিয়তের উপর ভিত্তি করে। মানুষ যা নিয়ত করে তাই পায়। নিয়ত ((النيات আরবী শব্দ। অর্থ অন্তরের সংকল্প।[8] সুতরাং নিয়ত হল অন্তরে সংকল্প করার নাম, যা প্রত্যেক ইবাদতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করা যাবে না। শুধুমাত্র হজ্বের তালবিয়া ছাড়া।
عن عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْه قال سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّةِ وَإِنَّمَا لِكُلْ لِّامْرِئٍ مَا نَوَى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ فَهِجْرَتُهُ إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوْ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْه.
ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, প্রত্যেক কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল। সে যা নিয়ত করে তাই পাই। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর দিকে হিজরত করে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর দিকেই গণ্য হবে। আর যার হিজরত দুনিয়া লাভ ও কোন নারীকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে হয়, তার হিজরত সে দিকেই গণ্য হবে যে দিকে সে হিজরত করেছে।[9] উল্লেখ্য প্রচলিত আরবী বাক্যে তৈরী নিয়তের শরী‘আতে কোন ভিত্তি নেই।[10] সুতরাং তা অবশ্যই পরিতাজ্য।
২. পবিত্র পানি দ্বারা ওযূ করা :
ওযূর জন্য পবিত্র পানি নির্ধারণ করা যরূরী। যদিও পানি নিজেই পবিত্র ও পবিত্রকারী। কোন বস্ত্ত তাকে অপবিত্র করতে পারে না।[11] এছাড়া মুহাদ্দিছগণ তাদের সংকলিত হাদীছ গ্রন্থ সমূহে পানি সম্পর্কে অর্থাৎ পানির পবিত্রতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার প্রয়াস পেয়েছেন। ইমাম আবুদাঊদ (২০২-২৭৫ হিঃ) (রহঃ) তাঁর গ্রন্থে ৯ পৃষ্ঠা থেকে ১৩ পৃষ্ঠা পর্যন্ত ৫ পৃষ্ঠায় ১১টি অনুচ্ছেদে মোট ২৮টি হাদীছ বর্ণনা করেছেন, ইমাম নাসাঈ (২১৫-৩০২হিঃ) (রহঃ) তাঁর গ্রন্থে ৮ পৃষ্ঠা থেকে ১১ পৃষ্ঠা পর্যন্ত ৪ পৃষ্ঠায় ১৭টি অনুচ্ছেদে মোট ২৪টি হাদীছ বর্ণনা করেছেন, ইমাম ইবনু মাজাহ (২০৯-২৭১ হিঃ) (রহঃ) তাঁর গ্রন্থে ৩০ পৃষ্ঠা থেকে ৩২ পৃষ্ঠা পর্যন্ত ৩ পৃষ্ঠায় ৮টি অনুচ্ছেদে মোট ২৯টি হাদীছ বর্ণনা করেছেন। এছাড়া অন্যান্য হাদীছ গ্রন্থ সমূহে এ বিষয়ে আলোচনা পরিলক্ষিত হয়। এটা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ওযূর জন্য পবিত্র পানি নির্ধারণ করা আবশ্যক। হাদীছে এসেছে,
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْمَاءِ وَمَا يَنُوبُهُ مِنَ الدَّوَابِّ وَالسِّبَاعِ فَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم َإِذَا كَانَ الْمَاءُ قُلَّتَيْنِ لَمْ يَحْمِلِ الْخَبَثَ.
আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করে বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে পানিতে চতুষ্পদ জন্তু ও হিংস্র প্রাণীর পানি পান করার জন্য বারবার আগমন এবং তার যথেচ্ছা ব্যবহৃত পানির হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, উক্ত পানি দুই কুল্লা[12] পরিমাণের বেশী হলে তা অপবিত্র হবে না।[13] সুতরাং পবিত্র পানি দ্বারা ওযূ করতে হবে। এটাই শরী‘আতের বিধান।
৩. পানির অপচয় না করা :
বিশ্ব মানবতার জন্য মহান আল্লাহ প্রদত্ত অসংখ্য নে‘মতরাজির মধ্যে পানি অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ নে‘মত। পানি ছাড়া কোন সৃষ্টিজীব এই পৃথিবীতে বসবাস করতে পারে না। তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি অপচয় করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা অপচয় বা অপব্যয় শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে হয়ে থাকে। মহান আল্লাহ বলেন,إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهِ كَفُورًا ‘নিশ্চয় অপচয়কারী শয়তানের ভাই। আর শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ’ (বনী ইসরাঈল ১৭/২৭)। হাদীছে এসেছে,
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو بْنِ الْعَاصِ أَنَّ الْنَّبِيَّ صَلَّى الله ُعَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ بِسَعْدٍ وَهُوَ يَتَوَضَّأُ فَقَالَ مَا هَذَا السَّرَفُ يَا سَعْدُ؟ قَالَ أَفِيَ الْوَضُوءِ سَرَفٌ؟ قَالَ نَعَمْ وَإِنْ كُنْتَ عَلَى نَهْرٍ جَارٍ.
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা নবী করীম (ছাঃ) সা‘দ ইবনু আবি ওয়াক্কাস (রাঃ)-এর পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। এমতাবস্থায় তিনি (সা‘দ) ওযূ করছিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে বললেন, হে সা‘দ! এটা কেমন অপচয়? সা‘দ (রাঃ) বললেন, ওযূতেও কী অপচয় আছে? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, হ্যাঁ, যদিও তুমি সমুদ্রে ওযূ কর।[14]
ওযূতে পানির পরিমাণ কী হবে সে সম্পর্কে আয়েশা (রাঃ) বলেন,كَانَ يَغْتَسِلُ بِالصَّاعِ وَيَتَوَضَّأُ بِالْمُد. ‘নিশ্চয় নবী করীম (ছাঃ) এক ‘ছা’ পানি দিয়ে গোসল এবং এক ‘মুদ’ পানি দিয়ে ওযূ করতেন’।[15] উল্লেখ্য, এক ‘মুদ’ সমান ৬০০ গ্রাম এবং এক ‘ছা’ সমান ৪/৫ মুদ পরিমাণ পানিকে বুঝায়।[16] বর্তমানে আধুনিকতার চরম উৎকর্ষতার যুগে ওযূ বা গোসলে অতিরিক্ত পানি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। গোসলখানার ঝর্ণায় অথবা পানির ট্যাপে অসাবধাবনশতঃ গোসল বা ওযূ করার কারণে সাধারণত এমনটি হয়ে থাকে। অথচ পানি স্বল্পতার কারণে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অনেক ছাহাবী পবিত্রতা অর্জনের নিয়তে মাটিতে গড়াগড়ি পর্যন্ত দিয়েছেন। যদিও সঠিক পদ্ধতি পরে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছিল।[17] অতএব অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা বাঞ্চণীয়।
৪. ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে হাত ধৌত করার পূর্বে পানির পাত্রে হাত না ডুবানো :
ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে ভালভাবে তিনবার হাত পরিষ্কার না করে ওযূর পানির পাত্রে হাত ডুবানো ঠিক নয়। কেননা ঘুমন্তাবস্থায় মানুষ স্বাভাবিক থাকে না। এই জন্য আল্লাহ তা‘আলা ঘুমন্ত ব্যক্তির জাগ্রত না হওয়া পর্যন্ত তার উপর থেকে সকল বিষয়ের কলম উঠিয়ে নিয়েছেন।[18] হাদীছে এসেছে,
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا قَامَ أَحَدُكُمْ مِنَ اللَّيْلِ فَلاَ يَغْمِسْ يَدَهُ فِى الإِنَاءِ حَتَّى يَغْسِلَهَا ثَلاَثَ مَرَّاتٍ فَإِنَّهُ لاَ يَدْرِى أَيْنَ بَاتَتْ يَدُهُ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ ঘুম থেকে জাগ্রত হলে তিনবার হাত পরিষ্কার না করে যেন পানির পাত্রে হাত না ডুবায়। কেননা সে জানে না তার হাত দু’টি কোথায় রাত্রি যাপন করেছিল।[19]
৫. ওযূর শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা :
ওযূর শুরতে বিসমিল্লাহ বলতে হবে। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) (১৬১-২৪১হি:) বলেন, ওযূর শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা ওয়াজিব। এটি ছাড়া ওযূ বিশুদ্ধ হবে না।[20] নওয়াব ছিদ্দিক হাসান খান ভূপালী (রহঃ) একে ‘ফরয’ বলে অভিহিত করেছেন।[21] হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বলেন,
عن أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا صَلَاةَ لِمَنْ لَا وُضُوءَ لَهُ وَلَا وُضُوءَ لِمَنْ لَمْ يَذْكُرْ اسْمَ اللَّهِ تَعَالَى عَلَيْهِ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ছালাত হয় না ওযূ ছাড়া আর ওযূ হয় না বিসমিল্লাহ বলা ছাড়া।[22]
৬. ডান দিক দিয়ে আরম্ভ করা :
ডান দিক ইতিবাচক ইঙ্গিতের পরিচয়। ওযূ সহ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রত্যেক ভাল কাজ ডান দিক দিয়ে আরম্ভ করতে ভালবাসতেন।[23] অন্য বর্ণনায় রয়েছে যে,
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ الله ُعَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله ُعَلَيْهِ وَسَلَّمَ ِإذَا لَبِسْتُمْ وَإِذَا تَوَضَّأتُمْ فَابْدُؤوَابِأَيْمانِكُمْ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যখন তোমরা পোশাক পরিধান করবে অথবা ওযূ করবে তখন ডান দিক থেকে আরম্ভ করবে।[24]
৭. ওযূর অঙ্গগুলো এক, দুই ও তিনবার পর্যন্ত ধৌত করা :
ওযূর সময় ওযূর অঙ্গগুলো এক, দুই অথবা তিনবার পর্যন্ত ধৌত করা যায়। এ সম্পর্কে অনেক ছহীহ হাদীছ রয়েছে।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ تَوَضَّأُ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّةً مَرَّةً وفي رواية مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ وفي رواية ثَلاَثًا ثَلاَثًا .
আব্দুল্লাহ ইবনু আবক্ষাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) (ওযূর সময় ওযূর অঙ্গগুলো) এক, দুই অথবা তিনবার করে ধৌত করতেন।[25] উল্লেখ্য যে, ওযূর অঙ্গগুলো তিনবারের বেশী ধৌত করা বাড়াবাড়ি ও সীমালংঘন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ جَاءَ أَعْرَبِىٌّ إِلَى النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْأَلُهُ عَنِ الْوُضُوءِ فَأَرَاهُ الْوُضُوءَ ثَلاَثًا ثَلاَثًا ثُمَّ قَالَ هَكَذَا الْوُضُوءُ فَمَنْ زَادَ عَلَى هَذَا فَقَدْ أَسَاءَ وَتَعَدَّى وَظَلَمَ.
আমর ইবনু শু‘আইব (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে অতঃপর তাঁর পিতা তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, জনৈক বেদুইন এসে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে ওযূ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি তাকে ওযূর অঙ্গগুলো তিন-তিনবার ধৌত করে দেখালেন। অতঃপর বললেন, এভাবেই ওযূ করতে হয়। যে ব্যক্তি এর অতিরিক্ত করল সে অন্যায় ও যুলুম করল।[26] তাছাড়া নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) বলেছেন, ‘এটি (ওযূতে তিনবারের অধিক ধৌত করা) বিদ‘আত’।[27] ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, وَإِنَّمَا تَكُونُ الرَّابِعَةُ بِدْعَةً وَمَكْرُوهَةً ‘চতুর্থবার ধৌত করা বিদ‘আত ও অপসন্দীয়’।[28]
৮. পূর্ণরুপে ওযূ করা :
ওযূর সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পূর্ণরূপে ধৌত করতে হবে। কেননা ওযূর স্থান শুকনো থাকলে তা জাহন্নামের কারণ হবে।[29] হাদীছে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
عَنْ عَاصِمَ بْنَ لَقِيطِ بْنِ صَبْرَةَ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخْبِرْنِى عَنِ الْوُضُوءِ قَالَ أَسْبِغِ الْوُضُوءَ وَخَلِّلْ بَيْنَ الأَصَابِعِ وَبَالِغْ فِى الاِسْتِنْشَاقِ إِلاَّ أَنْ تَكُونَ صَائِمًا.
‘আ-ছেম ইবনু লাক্বীত ইবনু ছাবরাহ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! ওযূ সম্পর্কে আমাকে কিছু বলুন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ওযূতে ওযূর সমস্ত স্থান পূর্ণরূপে ধৌত করবে, আঙ্গুল সমূহ খিলাল করবে এবং নাকে উত্তমরূপে পানি পৌঁছবে; যদি তুমি ছিয়াম পালনকারী না হও।[30]
৯. ওযূর পর গুপ্তাঙ্গের দিকে পানি ছিটানো :
ওযূ করার পর লজ্জাস্থান বরাবর কাপড়ের উপর[31] পানি ছিটিয়ে দিতে হবে, যাতে সন্দেহ দূরীভূত হয়।[32] হাদীছে বলা হয়েছে, كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَإِذَا بَالَ يَتَوَضَّأُ وَيَنْتَضِحُ ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন ওযূ শেষ করতেন তখন তাঁর লজ্জাস্থান বরাবর পানি ছিটিয়ে দিতেন’।[33]
১০. ওযূর পর দো‘আ পাঠ করা :
ওযূর যাবতীয় কার্যক্রম পরিসমাপ্তির পর আল্লাহর প্রশংসামূলক একটি দো‘আ পাঠ করতে হয়, যার ফযীলত অনেক বেশী।
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ ثُمَّ قَالَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِى مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِى مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ فُتِحَتْ لَهُ ثَمَانِيَةُ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ يَدْخُلُ مِنْ أَيِّهَا شَاءَ.
ওমর ইবনুল খাত্বাব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওযূ করে। অতঃপর বলে যে, أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِى مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِى مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত উপাস্য নেই। তিনি একক ও তাঁর কোন অংশীদার নেই। অতঃপর আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত কর’। তাহলে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা সবকটি খুলে দেওয়া হবে। যেটা দিয়ে ইচ্ছা সে প্রবেশ করবে।[34]
১১. ওযূর যাবতীয় আহকাম ছহীহ দলীল ভিত্তিক হওয়া :
ইসলামী শরী‘আতের যাবতীয় হুকুম-আহকাম ছহীহ দলীল ভিত্তিক হতে হবে। কেননা প্রমাণহীন বিষয় অপূর্ণাঙ্গ ও আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণ। আর এ কারণেই আল্লাহ তা‘আলা যারা জানে তাদের নিকট থেকে যারা জানে না তাদেরকে জেনে নেওয়ার তাকীদ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন,فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ- بِالْبَيِّنَاتِ وَالزُّبُر... ‘সুতরাং যারা জানে না তারা আহলুয যিকর বা জ্ঞানীদের নিকট থেকে শক্ত দলীল সহকারে জেনে নাও’ (নাহল ১৬/৪৩-৪৪)। মহান আল্লাহ তাঁর রাসূল (ছাঃ)-কে হুমকীস্বরূপ বলেন,وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَيْنَا بَعْضَ الْأَقَاوِيلِ- لَأَخَذْنَا مِنْهُ بِالْيَمِينِ- ثُمَّ لَقَطَعْنَا مِنْهُ الْوَتِينَ. ‘অতঃপর যদি তিনি (নবী ছাঃ) নিজের কোন কথা আমার কথা বলে প্রচার করতেন, তাহলে আমি তাঁর ডান হাত ধরে ফেলতাম এবং মস্তক শাহরগ থেকে দ্বিখন্ডিত করে দিতাম’ (হা-ক্কাহ ৬৯/৪৪-৪৬)।
সুধী পাঠক! যার পূর্বেকার সকল গুনাহ ক্ষমা করা সত্ত্বেও দলীল-প্রমাণহীন ও মনগড়া কথা না বলার জন্য আল্লাহ তা‘আলা এমন কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করলেন তখন আমাদের মত গুনাহগার বান্দার পক্ষে এমন কথাটা ভাবা বা বলা কোন মতেই উচিত নয়; বরং তা পাপ হিসাবে পরিগণিত হবে। অতএব ওযূর যাবতীয় আহকাম ছহীহ দলীল ভিত্তিক হতে হবে। কেননা ছালাতের চাবি হল ওযূ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, لاَ صَلاَةَ لِمَنْ لاَ وُضُوءَ لَهُ ‘ছালাত হয় না ওযূ ছাড়া’।[35](চলবে)
[1]. উল্লেখ্য যে, ওযূ (الوضوء) শব্দের ‘و’ বর্ণটি তিন ভাবে পড়া যায়। যেমন- الوضوء এর ‘و’ বর্ণে পেশ দিয়ে পড়লে অর্থ হবে, ওযূ করা। আর ‘و’ বর্ণে যবর দিয়ে পড়লে অর্থ হবে, ওযূর পানি। আর ‘و’ বর্ণে যের দিয়ে পড়লে অর্থ হবে, পানির পাত্র। সুতরাং এ বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
[2]. নাসাঈ ১/১৮ পৃঃ, হা/১৪৩; মুসলিম ১/১২৭ পৃঃ, হা/৬১০; মিশকাত হা/২৮২-৮৩; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২৬৩, ২/৩৮-৩৯ পৃঃ। উল্লেখ্য যে, ‘রিবাত’ বলা হয় সীমান্তের অতন্দ্রপ্রহরীকে। আর এখানে ওযূ হল মানুষের মনের অতন্দ্রপ্রহরী। যা যাবতীয় অন্যায় কাজ থেকে নফসকে রক্ষা করে।
[3]. মুসলিম হা/৫৬৫; মিশকাত হা/২৮৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২৬৬, ২/৪০ পৃঃ।
[4]. বুখারী হা/১৩৬, ১/২৫ পৃঃ; মুসলিম ১/১২৬ পৃ:, হা/৬০৩; মিশকাত হা/২৯০; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২৭০,২/৪২ পৃঃ।
[5]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মুসলিম ১/১২৫ পৃঃ, হা/৬০১; মিশকাত হা/২৮৪-৮৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২৬৪-৬৫, ২/৩৯ পৃঃ।
[6]. মুসলিম হা/৫৭৬; মিশকাত হা/২৮৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২৬৮,২/৪১ পৃঃ।
[7]. من أتم الوضوء كما أمره الله عز وجل فالصلوات الخمس كفارات لما بينه-নাসাঈ ১/১৮ পৃঃ, হা/১৪৫, সনদ ছহীহ।
[8]. মু‘জামুল ওয়াসীত্ব ২/৯৬৬ পৃঃ।
[9]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১; নাসাঈ ১/১১ পৃঃ, হা/৪৫।
[10]. মুহাম্মাদ ইবনু ছালেহ উছায়মীন, ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম (তাবি), প্রশ্ন নং-২২২, পৃঃ ৬৭ ‘ছালাত সংক্রান্ত ফাতাওয়া সমূহ’ অধ্যায়।
[11]. হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী (৭৭৩-৮৫২হিঃ), বুলূগুল মারাম মিন আদিল্লাতিল আহকাম (রিয়ায : মাকতাবাতু দারিস সালাম, ১৪১৪ হিঃ/১৯৯৪ খৃঃ) হা/২, পৃঃ ১০, সনদ ছহীহ।
[12]. মাটির তৈরী বড় পাত্রকে বুঝায়, যা ২২৭ কেজির সমান। বুলূগুল মারাম ১১ পৃঃ, হা/৪-এর ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।
[13]. আবুদাঊদ হা/৬৩; তিরমিযী ১/৯৭ পৃঃ, হা/৬৭; নাসাঈ ১/৯ পৃঃ, হা/৫২; বুলূগুল মারাম হা/৪,সনদ ছহীহ।
[14]. ‘আওনুল মা‘বুদ ১/১১৮ পৃঃ, মিশকাত হা/৪২৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৯৩, ২/৮৯ পৃঃ, সনদ হাসান।
[15]. বুখারী ১/৩৩ পৃঃ, হা/২০১।
[16]. বঙ্গানুবাদ ছহীহুল বুখারী (ঢাকা : তাওহীদ পাবলিকেশন্স, ১ম প্রকাশ-২০০৩) ১/১১৪ পৃঃ, হা/২০১-এর ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।
[17]. বুখারী ১/৪৮ পৃঃ, হা/৩৩৬; আবুদাঊদ ১/৪৭ পৃঃ, হা/৩২২।
[18].رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلاَثَةٍ عَنِ الْمَجْنُونِ الْمَغْلُوبِ عَلَى عَقْلِهِ حَتَّى يُفِيقَ وَعَن النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ وَعَنِ الصَّبِىِّ حَتَّى يَحْتَلِمَ-আবুদাঊদ হা/৪৪০৩; ইবনু মাজাহ হা/২০৪১; তিরমিযী হা/১৪২৩; মুসনাদে আহমাদ হা/১১৮৩; মিশকাত হা/৩২৮৭; আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবনু কাছীর (রহঃ), তাফসীরে কুরআনুল আযীম (আল মাদীনাতুল মুনাওয়ারা : মাকতাবাতুল উলুমি ওয়াল হিকাম, ১৪১৩ হি:/১৯৯৩ খৃঃ) ২/২১৫ পৃঃ, সূরা নিসার ৫ নং আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য।
[19]. আবুদাঊদ ১/১৪ পৃঃ, হা/১০৩; নাসাঈ ১/৩, হা/১; ইবনু মাজাহ ১/৩২ পৃঃ, হা/৩৯৩-৩৯৪, সনদ ছহীহ; মুসলিম ১/১৩৬ পৃঃ, হা/৬৬৫; মিশকাত হা/৩৯১; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৬১, ২/৭৭ পৃঃ।
[20]. انه واجبة لا يصح الوضوء الا بها-‘আওনুল মা‘বুদ ১/১২১ পৃঃ, হা/১০১-এর ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।
[21]. আর রওযাতুন নাদিইয়াহ ১/১১৭ পৃঃ, গৃহীত : ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ৫৯ পৃঃ, টীকা-১৭৩ দ্রষ্টব্য।
[22]. আবুদাঊদ ১/১৪ পৃঃ, হা/১০১, ১০২; ইবনু মাজাহ ১/৩২-৩৩ পৃঃ, হা/৩৯৭-৩৯৯; মিশকাত হা/৪০২; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৭০, ২/৮২ পৃঃ, সনদ ছহীহ।
[23].كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُحِبُّ التَّيَمُّنَ مَا اسْتَطَاعَ فِي شَأْنِهِ كُلِّهِ فِي طُهُورِهِ وَتَرَجُّلِهِ وَتَنَعُّلِهِ-মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪০০, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৬৮, ২/৮১ পৃঃ।
[24]. মুসনাদে আহমাদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪০১, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৬৯, ২/৮১ পৃঃ, সনদ ছহীহ।
[25]. বুখারী ১/২৭-২৮ পৃঃ, হা/১৫৭-১৫৯; মিশকাত হা/৩৯৫, ৩৯৬, ৩৯৭, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৬৩, ৬৪, ৬৫; ২/৮০ পৃঃ।
[26]. নাসাঈ ১/১৮ পৃঃ, হা/১৪০ ‘ওযুতে সীমালংঘন’ অনুচ্ছেদ; ইবনু মাজাহ ১/৩৪ পৃঃ, হা/৪২২, সনদ ছহীহ।
[27]. শায়খ নাছিরুদ্দীন আলবানী, ছহীহ আবুদাঊদ (কুয়েত, প্রথম সংস্করণ ২০০২ খ্রিঃ/১৪২৩ হিঃ) ১/২৩০ পৃঃ, হা/১২৪-এর আলোচনা দ্রঃ।
[28]. শায়খ মুহাম্মাদ ছালেহ আল-মুনাজ্জিদ, ফাতাওয়াউল ইসলাম সাওয়াল ওয়াল জাওয়াব (তাবি), প্রশ্ন নং-৭১১৬৯-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য।
[29].رَأَى قَوْمًا وَأَعْقَابُهُمْ تَلُوحُ فَقَالَ وَيْلٌ لِلأَعْقَابِ مِنَ النَّارِ أَسْبِغُوا الْوُضُوءَ-আবুদাঊদ ১/১৩ পৃঃ, হা/৯৭; তিরমিযী ১/৫৮ পৃঃ, হা/৪১; মিশকাত হা/৩৯৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৬৬, ২/৮০ পৃঃ, সনদ ছহীহ।
[30]. আবুদাঊদ ১/১৯ পৃঃ, হা/১৪২ ‘নাক পরিষ্কার করা’ অনুচ্ছেদ; নাসাঈ ১/১২ পৃঃ, হা/৮৭ ‘নাকে ভালভাবে পানি দেওয়া’ অনুচ্ছেদ; মিশকাত হা/৪০৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৭১; ২/৮২ পৃঃ, ‘ওযুর নিয়ম ও সুন্নাত সমূহ’ অনুচ্ছেদ, সনদ ছহীহ।
[31]. الانتضاح رش الماء علي الثوب -‘আওনুল মা‘বুদ ১/১৯৬ পৃঃ, হা/১৬৫-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য ।
[32]. মুসনাদে ত্বয়ালিসিয়াহ ১/২৩৯ পৃঃ।
[33]. আবুদাঊদ ১/২২ পৃঃ, হা/১৬৬; নাসাঈ ১/১৭ পৃঃ, হা/১৩৪-১৩৫; ইবনু মাজাহ ১/৩৬ পৃঃ, হা/৪৬১,৬২,৬৪; মিশকাত হা/৩৬৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৩৮, ২/৬৮ পৃঃ, সনদ ছহীহ।
[34]. তিরমিযী ১/৭৭-৭৮ পৃঃ, হা/৫৫; ছহীহ মুসলিম হা/৫৭৬, ৫৭৭; আবুদাঊদ ১/২২-২৩ পৃঃ, হা/১৬৯; ইবনু মাজাহ ১/৩৬ পৃঃ, হা/৪৬৯-৪৭০; মিশকাত হা/২৮৯; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২৬৯, ২/৪১-৪২ পৃঃ, সনদ ছহীহ।
[35]. আবুদাঊদ ১/১৪ পৃঃ, হা/১০১; ইবনু মাজাহ ১/৩২ পৃঃ, হা/৩৯৭-৩৯৯; মিশকাত হা/৪০৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৭০, ২/৮২ পৃঃ, সনদ ছহীহ।